এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  রাজনীতি  সিরিয়াস৯

  • বলিভিয়ায় প্রতিবিপ্লব ব্যর্থ হয়েছে

    অর্ণব সাহা
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ | ৩০৫৯ বার পঠিত
  • আমেরিকা সরগরম। শুধু ট্রাম্প-বাইডেন-বার্নি-কমলা নয়, ওদিকে, আরও দক্ষিণ, ঘটনবহুলতায় ভরপুর। এই আমেরিকার নানা দিক নিয়ে সিরিয়াস৯-র এবারের সংখ্যা - আমেরিকা: বামে ও দক্ষিণে। এ সংখ্যায় লিখেছেন ডেমোক্র্যাট প্রচারে অংশগ্রহণকারী অনামিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, বলিভিয়ার উথালপাথাল ধরা পড়েছে অর্ণব সাহার লেখায়, আর চিলির টানাপোড়েন বিশ্লেষণ করেছেন শুভময় মৈত্র

    বলিভিয়ায় যা ঘটেছিল

    ২০ অক্টোবর ২০১৯, বলিভিয়ায় সাধারণ নির্বাচনের ফল গণনা চলছিল। প্রায় ৮৫ শতাংশ ভোট-গণনার পর দেখা যায় ইভো মোরালেসের নেতৃত্বাধীন ‘মুভমেন্ট টুওয়ার্ডস সোশ্যালিজম’ ৪৫.৬% ভোট পেয়ে তাদের নিকটতম দক্ষিণপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী কার্লোস মেসার চেয়ে প্রায় দশ শতাংশ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। তখনও গ্রামাঞ্চলের একটা বড়ো অংশের ফল ঘোষণা বাকি। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল চতুর্থবারের মতো প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন, পপুলিস্ট বামপন্থী নেতা ইভো মোরালেস। সন্ধে ৭:৪০ নাগাদ সুপ্রিম ইলেক্টোরাল ট্রাইবুনালের প্রেসিডেন্ট মারিয়া ইউজেনিয়া চোক ঘোষণা করেন, প্রাথমিক ফলঘোষণার প্রক্রিয়া এখানেই থামিয়ে দেওয়া হল। এরপর অন্তিম ফলঘোষণার আগে পর্যন্ত আর কোনওরকম নির্বাচনী ফল-সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হবে না। রাত ৯:২৫ নাগাদ প্রেসিডেন্ট মোরালেস নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। তিনি নিশ্চিত ছিলেন, গ্রামাঞ্চলে তাঁর পার্টি বিপুল মার্জিনে এগিয়ে থাকবে। গোটা নির্বাচনের পর্যবেক্ষক, ‘অর্গানাইজেশন অফ আমেরিকান স্টেটস’ (OAS) মোরালেসের এই দাবি মানতে অস্বীকার করে। পরদিন, ২১ অক্টোবর, বলিভিয়ান নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, গণনা প্রায় সম্পূর্ণ। ৯৫% ভোটের ফলপ্রকাশের পর এটা নিশ্চিত হয় মোরালেস বিপুল মার্জিনে জিততে চলেছেন। তাঁকে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে না। খেলা শুরু হয় ঠিক এর পরেই। ষড়যন্ত্রের নীল নকশা আঁকা ছিল আগে থেকেই। এইবার মাঠে নামল বলিভিয়ান সুপ্রিম ট্রাইবুনাল। তারা আগের অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ঘুরে গিয়ে জানাল নির্বাচন-প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ, গণনায় প্রচুর কারচুপি হয়েছে। দেশের যাবতীয় দক্ষিণপন্থী বিরোধীপক্ষ এইবার একযোগে রাস্তায় নেমে এল, তাদের সমর্থন জানাল বেশ কয়েকটি লাতিন আমেরিকান দেশের সরকার। অবশেষে স্পেন, মেক্সিকো এবং প্যারাগুয়ের পরিদর্শকবৃন্দ ৩১ অক্টোবর নির্বাচনী অডিটের সিদ্ধান্ত নিলেন। এর একসপ্তাহের মধ্যেই, ৬ নভেম্বর, বিরোধী জোট একটি ১৯০ পাতার নির্বাচনী রিপোর্ট দাখিল করল, যাতে রিগিং, ইচ্ছেকৃত নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গাফিলতি এবং তথ্য লোপাট ও তথ্য পরিবর্তনের মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়। বলা হয় দেশের রেজিস্টার্ড ভোটার সংখ্যার চেয়েও বেশি সংখ্যায় ভোট পড়েছে, সম্পূর্ণ বে-আইনি এই ভোট।

    দেশজোড়া মোরালেস-বিরোধী আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। সেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে দেশের সেনাবাহিনী এবং শীর্ষ পুলিশ-কর্তারা এই আন্দোলনকারীদের সমর্থনে এসে দাঁড়ায়। সেনাবাহিনী সরাসরি ঘোষণা করে তারা মোরালেস-বিরোধী আন্দোলনকারীদের পক্ষে। এমনকী এই হিংস্র জনতার বিরুদ্ধে কেউ যদি পালটা আক্রমণ করে তাদের বিরুদ্ধে থাকবে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। ইতিমধ্যেই আন্দোলনকারীরা একাধিক পুলিশ ফাঁড়ি, একের পর এক সরকারি দপ্তর-সহ মোরালেস-অনুগামীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ শুরু করে দিয়েছে। ৮ নভেম্বর প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে ডাকা এক গোপন মিটিং-এ দেশের সর্বোচ্চ পুলিশ- কর্তারা মিলিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় তারা মোরালেসের পাশ থেকে সরে দাঁড়াবে এবং তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করবে। তাদের এই সরে দাঁড়ানোর ফলে মোরালেস আরও অরক্ষিত হয়ে পড়লেন। ১০ নভেম্বর, বলিভিয়ার আর্মড ফোর্সের প্রধান, কম্যান্ডার-ইন-চিফ জেনারেল উইলিয়ামস ক্যালিমান সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করলেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসকে পদত্যাগে বাধ্য করবেন তাঁরা। একই দিনে বলিভিয়ার সবচেয়ে বড়ো শ্রমিক সংগঠন ‘বলিভিয়ান ওয়ার্কার্স সেন্টার’ মোরালেসের পদত্যাগ দাবি করে সম্পূর্ণ নতুন নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর পক্ষে মত দিল। ওইদিন সন্ধেয় এক অজ্ঞাত স্থান থেকে পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস এক টেলিভিশন-বক্তৃতায় শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার আবেদন জানালেন। বললেন, তিনি পদত্যাগ করছেন যাতে আরও বড়ো কোনও রক্তক্ষয় না হয়। যাতে ‘মুভমেন্ট ফর সোশ্যালিজম’-এর কর্মীদের উপর আক্রমণ বন্ধ হয়। ওইদিন এল আল্টো বিমানবন্দর থেকে মেক্সিকান এয়ারফোর্সের প্লেনে ওঠেন তিনি। পরদিন, ১১ নভেম্বর, মেক্সিকোর বিদেশমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্দ মোরালেসকে রাজনৈতিক আশ্রয়দানের কথা ঘোষণা করেন। কিউবা, মেক্সিকো, নিকারাগুয়া, উরুগুয়ে এবং ভেনেজুয়েলার সরকার বলিভিয়ার ঘটনাকে ‘সামরিক-আমলাতান্ত্রিক ক্যু’ হিসেবে ঘোষণা করে। পরদিন, ১২ নভেম্বর, অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন অতি দক্ষিণপন্থী জেনাইন অ্যানেজ। মোরালেস মন্ত্রিসভার সমস্ত সদস্যকে পদত্যাগে বাধ্য করানো হয়। এমনকী ৩৮ সদস্যের ইলেক্টোরাল কমিশনের সমস্ত সদস্যকেই বরখাস্ত করা হয়। রাজধানী লা পাজ এবং এল আল্টো—দুটি প্রধান শহরকেই সম্পূর্ণ নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলে গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। সরাসরি সামরিক অভ্যুত্থানের বদলে সম্পূর্ণ ভিন্ন পদ্ধতিতে একটি প্রতিবিপ্লবী ক্যু সফল হয় সমাজতান্ত্রিক বলিভিয়ায়।

    ইভো-বিরোধী আন্দোলন পুরোটাই ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। ২১ অক্টোবর, শহরের কেন্দ্রে মূল গণনাকক্ষের সামনে বিরাট মিছিল এসে জমায়েত হয়। বিশেষত, সোপোকাচি এবং মিরাফ্লোরেস—লা-পাজের এই দুটো অঞ্চলে শুরু থেকেই উত্তেজনা ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোটযন্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম লুটের চেষ্টা রুখে দেয় পুলিশ। আন্দোলন হিংস্র হয়ে ওঠে, চুকিসাকা অঞ্চলে ইভোর একটি নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই মহিলা পুলিশদের একটি বাহিনী সার্জেন্ট সিসিলা চালানির নেতৃত্বে একটি শান্তিমিছিল বের করে, এরা উত্তেজিত জনতার উপর কোনওরকম বলপ্রয়োগের পক্ষপাতী ছিল না। তারিজায় ব্যালট বক্সে আগুন লাগানো হয়। কার্লোস মেসার সমর্থক ছাত্র ইউনিয়ন রীতিমতো ধ্বংসাত্মক আন্দোলন শুরু করে এবং সেন্ট্রাল ইলেকশন কমিশনের নিকটবর্তী বাড়িগুলোয় পরপর আগুন লাগাতে থাকে। হোটেল প্রেসিদেন্তে, হোটেল রিয়াল, ক্যাম্পো ফেরিয়াল দ্য কোচাবাম্বা সর্বত্র আক্রমণ সংগঠিত হয়। হোটেল রিয়ালে ইভো-বিরোধী জমায়েতের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের মারে জখম হন সা আন্দ্রেস ইউনিভার্সিটির রেক্টর ওয়াল্ডো আলবারাসিন। হোটেল প্রেসিদেন্তের ভোটগণনা স্থগিত হয়ে যায়। পরদিন রিবেরালতার মেয়র ওমর রড্রিগেজের বাড়ির সামনে প্রাক্তন ভেনেজুয়েলান প্রেসিডেন্ট উগো শাভেজের মূর্তির ভাঙা মাথা পাওয়া যায়, যে মূর্তিটি তার ঠিক আগেরদিন বিক্ষোভকারীরা চূর্ণ করেছিল। চুকিসাকা, সান্তাক্রুজ, তারিজা, বেনি এবং কোচাবাম্বায় অনির্দিষ্টকালীন পাবলিক স্ট্রাইক আরম্ভ হয়। ২৫ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ রেজাল্ট বেরোনোর পর যখন দেখা যায়, মোরালেস ফের বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন, হাজার হাজার বিরোধী জনতার মিছিল লা-পাজের সড়ক দখল করে নেয়। তাদের হাতে প্ল্যাকার্ড—‘বলিভিয়াকে কিউবা অথবা ভেনেজুয়েলা হতে দিচ্ছি না’। ৮ নভেম্বর পুলিশবাহিনী সরাসরি বিদ্রোহে সামিল হয়। লা-পাজ, সান্তাক্রুজ সহ একাধিক শহরের পুলিশস্টেশনের মাথায় ইভো-বিরোধী পতাকা উড়তে থাকে। পরদিন মোরালেস সরাসরি বিরোধীদলগুলোর সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বিরোধী দলনেতা কার্লোস মেসা সরাসরি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ১১ নভেম্বর রাজধানী লা-পাজের রাস্তার দখল নেয় বিদ্রোহী জনতা, দেদার বাজি-পটকা ফাটতে থাকে এবং পুলিশ কার্যত সরে যায়। ১২ নভেম্বর মোরালেসের দেশত্যাগের পরপরই দেশ ছাড়েন আলভারো গার্সিয়া। সন্ধে ৬:৪৮-এ জেনাইন অ্যানেজ বলিভিয়ান সংসদীয় আইনের ১৬৯ নং ধারায় প্রেসিডেন্ট পদ দখল করেন। ঠিক এরপরেই গোটা পৃথিবী জুড়ে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যাতে দেখা যায়, বলিভিয়ার পুলিশ তাদের ইউনিফর্ম থেকে জনজাতির চিহ্ন ‘উইফালা’ অংশটি কেটে ফেলছে। এমনকী অসংখ্য সরকারি অফিস থেকেও এই জনজাতির স্মারক অপসারিত হয়, বলা হয়, বলিভিয়া যিশুখ্রিস্টের দেশ, এখানে উপজাতি আর জনজাতির রাজত্ব খতম হয়েছে।

    জেনাইন অ্যানেজের এই অবৈধ প্রেসিডেন্ট পদে বসার প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ময়দানে নেমে পড়ে ইভোর সমর্থকেরা। বিশেষত বলিভিয়ার গ্রামাঞ্চলে, যেখানে ‘মুভমেন্ট টুওয়ার্ডস সোশ্যালিজম’-এর পোক্ত ঘাঁটি, সেখান থেকে হাজার হাজার উপজাতি ও জনজাতির মানুষ পায়ে হেঁটে মিছিল করে আসতে থাকে শহরগুলোর দিকে। রাজধানী লা-পাজের চারিপাশে যে পার্বত্য এলাকা, সেখান থেকে লক্ষাধিক মানুষের মিছিল ঢুকে পড়ে শহরের কেন্দ্রস্থলে। তাদের হাতে ছিল দেশজ হাতিয়ার, লাঠি এবং অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র। তাদের হাতে বিশাল ব্যানার আর ফেস্টুনে লেখা ছিল—‘প্রয়োজন হলে গৃহযুদ্ধই পথ’। ১২ অক্টোবরই রাজধানী লা-পাজ আর মোরালেসের গড় বলে পরিচিত ‘এল আল্টো’ দখল করে নেন হাজার হাজার মানুষ। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তাঁদের হাতে ছিল দেশজ ‘উইফালা পতাকা’, যা তাঁরা মার্কিন-নির্দেশিত ‘ক্যু’-র বিরুদ্ধে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেছিল। বিশেষত শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসাররা নিজেদের উর্দি থেকে ওই বহুবর্ণ ব্যাজ ছিঁড়ে ফেলছে, এই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর বিদ্রোহ আর ‘উইফালা’ পতাকা হয়ে ওঠে সমার্থক। ১৪ নভেম্বর পুলিশ একডজন মোরালেস-পন্থী সেনেটরকে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকতে দিতে অস্বীকার করে। এরপরেই বিক্ষোভ আরও হিংস্র হয়ে ওঠে। এইসময় থেকেই বলিভিয়ান আর্মি এবং পুলিশ মোরালেস-পন্থীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে। গোটা দেশজুড়ে বিদ্রোহীরা নিহত হন। সবচেয়ে বড়ো গণহত্যার ঘটনাটি ঘটে কোচাবাম্বায়, এটি ইভো মোরালেস সমর্থকদের দুর্গ বলে পরিচিত। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার-কমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট একে ‘ভয়ানক ঘটনা’ বলে অভিহিত করেন। ২১ নভেম্বর যখন সঙ্গীদের মৃতদেহ নিয়ে হাজার হাজার ইভোর সমর্থক এল আল্টো থেকে লা-পাজে ঢোকার চেষ্টা করে, পুলিশ নির্মমভাবে বাধা দেয়। টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয় এবং বিক্ষুব্ধ জনতাকে শহরের সানফ্রান্সিস্কো স্কোয়ারে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হয়। মোরালেস অজ্ঞাত স্থান থেকে পাঠানো এক টেলিভিশন বার্তায় ঘোষণা করেন, মার্কিন মদতপুষ্ট বলিভিয়ার দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীগুলো এই জনবিরোধী ‘ক্যু’ এবং গণহত্যা সংগঠিত করছে।

    ১৪ নভেম্বর, অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট জেনাইন অ্যানেজ একটি ডিক্রি জারি করেন, যার ফলে গোটা দেশ জুড়ে মিলিটারির হাতে কার্যত যাবতীয় শক্তি তুলে দেওয়া হয়, যে কোনও প্রতিরোধ ভেঙে দেবার জন্য বলপ্রয়োগের। এরপরেই কোচাবাম্বার কোকো-চাষীদের উপর নির্বিচার গুলিচালনা শুরু হয়। লাতিন আমেরিকান দেশগুলোর মিলিত মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান হোসে মিগুয়েল ভিভাঙ্কো পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বলেন, অ্যানেজ-সরকার মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। মিশেল ব্যাশেলেট জানান—“পূর্ববর্তী সংঘর্ষগুলো ঘটছিল দুই বিপক্ষীয় রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে, কিন্তু ক্রমশ একতরফা শাসকগোষ্ঠী এইবার তাদের সেনাবাহিনী এবং পুলিশের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছে যথেচ্ছ বলপ্রয়োগ করার। এইধরনের বলপ্রয়োগ সমস্ত ডায়ালগের সম্ভাবনা খারিজ করে দেবে”। তিনি আরও অভিযোগ করেন, গণহারে গ্রেপ্তার এবং ভুয়ো সংঘর্ষে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। বলিভিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার যদি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার-বিধি মেনে না চলেন তবে দ্রুত পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। পাওলো অ্যাব্রাও, ইন্টার-আমেরিকান কমিশন অন হিউম্যান রাইটস, তিনদিনের বলিভিয়া সফর শেষে জানিয়েছেন, ভয়ঙ্করতম মানবাধিকার-লঙ্ঘন ঘটে চলেছে বলিভিয়ায়। পরিস্থিতি ক্রমশ বাস্তব গৃহযুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। প্রায় উইচ-হান্টিং-এর মতো পুরো দেশব্যাপী ‘মুভমেন্ট টুওয়ার্ডস সোশ্যালিজম’-এর সদস্য ও নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে নয়তো তুলে নিয়ে গিয়ে জাস্ট নিকেশ করে দেওয়া হচ্ছে।

    মেক্সিকোয় একমাস থাকার পর আর্জেন্টিনায় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন মোরালেস। তারপর থেকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা করছে। তিনিও একের পর এক ভিডিও বার্তায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন না। বরং আসন্ন বলিভিয়ান নির্বাচনে জোরকদমে অংশ নিচ্ছে তাঁদের ‘মুভমেন্ট টুওয়ার্ডস সোশ্যালিজম’। ইতিমধ্যে জেনাইন অ্যানেজ সরকার এক বিশেষ ডিক্রির মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করেছে, বলিভিয়ায় দু দফার বেশি কেউই আর প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবে না। এর পিছনে মোরালেসকে আর নির্বাচনী পরিসরে দাঁড়াতে না দেবার উদ্দেশ্যই প্রধান। মোরালেসের সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী হিসেবে যে-দুটো নাম উঠে আসছে তাঁরা হলেন দীর্ঘ একদশকেরও বেশি বলিভিয়ার অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব যিনি সামলেছেন, সেই প্রবীণ অর্থনীতিবিদ লুই আর্কে কাতাকোরা এবং কোকা চাষি ইউনিয়নের অতি তরুণ নেতা আন্দ্রোনিকো রডরিগেজ। কাতাকোরার নেতৃত্বেই বলিভিয়ার পৃথিবীবিখ্যাত দারিদ্র-দূরীকরণ কর্মসূচি সফল হয়েছিল, গণ-দারিদ্র হ্রাস পেয়েছিল বিপুল হারে। কিন্তু পার্টির মধ্যেই কাতাকোরাকে অনেকেই মানতে চাইছেন না, কারণ জনজাতির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ কম, তিনি কিছুটা উদারনৈতিক পাশ্চাত্যঘেঁষা রাজনীতিক। তাঁর বিপক্ষে উঠে আসছে প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ডেভিড চোকুয়েহুয়াঙ্কার নাম, যিনি নিজে জনজাতির মানুষ এবং একেবারে তৃণমূল-স্তর থেকে রাজনীতি করে এসেছেন। আর রড্রিগেজের বয়স খুবই কম, মাত্রই ২৯ বছর, তাঁর রাজনৈতিক পরিপক্বতা নিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন রয়েছে। নির্বাচনে পরাজয়ের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য খোলাখুলি জেনাইন অ্যানেজের স্বৈরাচারী শাসনের পক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন। এই মুহূর্তে কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে মে মাসের নির্বাচন-প্রক্রিয়া স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করবে সমস্ত দল এবং সংগঠন ও তাদের নেতারা। ইতিমধ্যেই বলিভিয়ায় কোভিড সংক্রমণ একটা অন্যতম প্রধান নির্বাচনী ইস্যু হতে চলেছে। অ্যানেজ-সরকার সমস্ত স্কুলে নথিভুক্ত বাচ্চাদের ৭৫ মার্কিন ডলার করে মাসিক অনুদানের ব্যবস্থাও করেছে। কিন্তু দেশের আইনব্যবস্থায় সামগ্রিক বদল এনে দেশকে সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক ফান্ডব্যাঙ্কের কাছে বিক্রি করে দেবার চক্রান্ত করছে অন্তর্বর্তী সরকার—দাবি, কাতাকোরার।

    নির্বাচনে বামপন্থীদের বিপুল জয়, মোরালেসের দেশে ফেরা এবং তারপর...

    এই দক্ষিণপন্থী অভ্যুত্থানকে এককথায় বলা যায় রক্ষণশীল সামরিকতন্ত্র এবং ক্রিশ্চান ফ্যাসিজমের মেলবন্ধন যা বলিভিয়ার বিগত দেড়দশকব্যাপী সমাজতান্ত্রিক নির্মাণকাজ, জনজাতির অভূতপূর্ব উন্নয়নের চাকাকে সম্পূর্ণ উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দেবার চেষ্টা। কোভিড অতিমারীর কারণে দীর্ঘ কয়েকমাস পেরিয়ে অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হল বলিভিয়ার সাধারণ নির্বাচন। দক্ষিণপন্থী অ্যানেজ-সরকারের যাবতীয় হিসেব উলটে দিয়ে বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় ফিরল ‘মুভমেন্ট ফর সোশ্যালিজম’(MAS)। রাষ্ট্রপতি হলেন মোরালেস- সরকারের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী লুই আর্কে। তিনি এবং তাঁর সরকার ক্ষমতায় এসে প্রথমেই বাতিল করলেন জেনাইন অ্যানেজ সরকারের সমস্ত কালাকানুন। ঘোষণা করলেন ক্রিশ্চান রিপাবলিক নয়, বলিভিয়া ছিল, আছে এবং থাকবে ‘প্লুরিন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট স্টেট’, যেখানে উন্নয়নের প্রধান অভিমুখ হবেন জনজাতির বঞ্চিত মানুষেরা। নতুন সরকার খুব দ্রুত নিজেদের পুনরায় যুক্ত করে নিল মার্কিন-সরকার বিরোধী লাতিন আমেরিকান জোট ‘আলবা’ ( বলিভারিয়ান অল্টারনেটিভ ফর দ্য আমেরিকা) এবং ‘ইউনিয়ন অফ সাউথ আমেরিকা’-র সঙ্গে। জেনাইন অ্যানেজ সরকার মুখ্যত গঠিত হয়েছিল ‘লিথিয়াম ক্যু’-র উপর ভিত্তি করে যাতে দেশের বিপুল খনিজ লিথিয়াম আর প্রাকৃতিক গ্যাসের বিপুল ভাণ্ডার মার্কিন-ফান্ডব্যাঙ্ক-নির্দেশিত পথে বৃহৎ মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করে দেওয়া যায়। নতুন সরকার ফের ওই বিপুল খনিজ সম্পদের জাতীয়করণ নিশ্চিত করেছেন। সামরিক সরকার কিউবার ডাক্তারদের দেশ থেকে বহিষ্কার করেছিল, কিউবা-নিকারাগুয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল, ভেনেজুয়েলার উগ্র দক্ষিণপন্থী রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হুয়ান গুইয়াদোকে সরাসরি সমর্থন করেছিল। নতুন সরকার পুনরায় লাতিন আমেরিকার প্রত্যেকটা বাম অথবা মধ্য-বাম সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে, দক্ষিণপন্থী সামরিক সরকাগুলোর বিরুদ্ধে চলতে-থাকা প্রবল জনবিক্ষোভগুলোকে সমর্থন করেছে। ১৯৯০-এর দশকের একেবারের শেষদিকে ব্রাজিল আর ভেনেজুয়েলার বামপন্থী লুলা ও উগো শাভেজ সরকারের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছিল লাতিন আমেরিকায়, ক্রমে ইকুয়েদর, উরুগুয়ে, নিকারাগুয়া, মেক্সিকোয় বামপন্থী সরকারগুলো আসার মধ্য দিয়ে যা আরও জোরালো হয়, সেই পরিবর্তনের ধারাতেই ২০০৫ সালে প্রথম জনজাতির মানুষ হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নেন ইভো মোরালেস। সেই ধারা অব্যাহত থাকছে। প্রবল অসম লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে কিউবা, ভেনেজুয়েলার নিকোলাস মাদুরো সরকার, মেক্সিকোর ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর, নিকারাগুয়ার ড্যানিয়েল ওর্তেগা, আর্জেন্টিনার আলবার্তো ফার্নান্ডেজ যে বাম অথবা বাম-ঘেঁষা পপুলিস্ট সরকারগুলো পরিচালনা করে চলেছেন, সেই ক্যাম্পে ফের যুক্ত হল বলিভিয়ার নাম। ৯ নভেম্বর ২০২০, মেক্সিকো এবং আর্জেন্টিনায় একবছরের রাজনৈতিক অ্যাসাইলাম শেষ করে দেশে ফিরেছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। এসেই ঘোষণা করেছেন তাঁর এবারের কাজ হবে দলের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী এবং মজবুত করা।

    বলিভিয়ার বিগত একবছরের ঘটনাক্রম কী শিক্ষা দিচ্ছে? ১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন-মদতপুষ্ট সেনা অভ্যুত্থান হয়েছিল চিলিতে। জেনারেল পিনোশের নেতৃত্বে সেই দক্ষিণপন্থী ক্যু-তে হত্যা করা হয় বামপন্থী রাষ্ট্রপতি সালভাদোর আলেন্দেকে, হাজার হাজার বামপন্থী কর্মী-সমর্থককে পরবর্তী কয়েকবছর ধরে খতম করা হয় অথবা গায়েব করে দেওয়া হয়। লাতিন আমেরিকার এই দেশটিকে করে তোলা হয় মিল্টন ফ্রিডম্যান-প্রবর্তিত নিওলিবারাল ‘শক্‌-থেরাপি’ অর্থনীতির পরীক্ষাগার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন বলেছিলেন—“চিলি এবং লাতিন আমেরিকার অর্থনীতিকে আর্ত চিৎকার করতে বাধ্য করো”। তখনও পর্যন্ত লাতিন আমেরিকায় দুটি দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে সমাজতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্টিত হয়েছিল। একটি ১৯৫৪ সালে গুয়াতেমালায় আরবেন্‌জ সরকার এবং ১৯৭০-এ চিলিতে আলেন্দে সরকার। দুটো দেশেই সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে বামপন্থী সরকার ফেলে দেওয়া হয়। টিঁকে গিয়েছিল একমাত্র সশস্ত্র উপায়ে ক্ষমতায় আসা কিউবার সমাজতান্ত্রিক সরকার। এরপর ১৯৭৯ সালে সান্দিনিস্তা ফ্রন্টের নেতৃত্বে সশস্ত্র লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে নিকারাগুয়ায় ড্যানিয়েল ওর্তেগা সরকার ক্ষমতায় আসে। তারাও ১৯৯০ সালে মার্কিন মদতপুষ্ট ভিওলেতা চামোরোর দক্ষিণপন্থী ‘ন্যাশনাল অপোজিশন ইউনিয়ন’ দলের কাছে ভোটে হেরে যায়। যদিও ফের সান্দিনিস্তারা সরকারে ফিরে আসে ২০০৬, ২০১১ এবং ২০১৬ সালে। ততোদিনে লাতিন আমেরিকা বহুলাংশে বদলে গেছে। আগেকার সশস্ত্র দলগুলো নিজেদের কার্যক্রম বদলে ফেলেছে। প্রাক্তন গেরিলা যোদ্ধারা রাজনৈতিক দল গঠন করে নির্বাচনে নামছেন এবং ভোটে জিতে সরকার তৈরি করছেন। এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে গণতান্ত্রিক উপায়ে, কূটনৈতিক বিচক্ষণতা অবলম্বন করেই সরকার দখল সম্ভব। সেই তীক্ষ্ণ বিচারবোধ আমরা দেখলাম বলিভিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনায়। যদি সত্তরের দশকের মতো নির্বোধ সশস্ত্র লড়াইয়ের পথে যেত ইভোর ‘মুভমেন্ট ফর সোশ্যালিজম’, সামরিক সরকারের পক্ষে রক্তবন্যা বইয়ে দেওয়ার কাজটা করা অনেক বেশি সহজ হত। ঠিক যে ভুল পথে হেঁটে একদা ধ্বংস হয়ে গেছে পেরুর ‘শাইনিং পাথ’ বা পরবর্তী সময়ে কলম্বিয়ার ‘ফার্ক’ আজ প্রায় অবলুপ্ত হতে বসেছে ক্রমশ জমি হারিয়ে।

    আজ এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার দখল করেই সমাজতান্ত্রিক কর্মসূচি চালু রাখা যায়, কূটনৈতিক পদ্ধতিতে মূলত অর্থনীতি উপর রাশ ধরে রেখে সমাজতান্ত্রিক গঠনকাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। এইমুহূর্তে ব্রাজিলে ভোট হলে লুলা এবং দিলমা রুজেফের নেতৃত্বাধীন ‘ওয়ার্কার্স পার্টি’ ফের ক্ষমতায় আসার মতো অবস্থানে রয়েছে। চিলিতে লক্ষ লক্ষ মানুষের মাসের পর মাসব্যাপী গণজাগরণ ওখানকার দক্ষিণপন্থী সরকারকে বাধ্য করেছে পিনোশে-প্রবর্তিত সামরিক সংবিধান বাতিল করতে। চিলি এবং পেরুতে বামপন্থী অথবা বাম-ঘেঁষা সরকার আসা আজ কেবল সময়ের অপেক্ষা। ইভো অত্যন্ত সুকৌশলে রক্তপাত এড়িয়ে দেশত্যাগ করেছিলেন। মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, ভেনেজুয়েলার সরকার তাঁর পাশে ছিল। তিনি সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। MAS-এর বিপুল জয় তাঁর দেশে ফিরে আসার সম্ভাবনা বাস্তব করেছে। এটা আজ পরিষ্কার অন্যান্য বামপন্থী দেশের সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ ছিল বলেই জেনাইন অ্যানেজ সরকার শেষ অব্দি বলিভিয়ায় নৃশংস গণহত্যা চালাতে পারেনি। যদিও ‘মুভমেন্ট ফর সোশ্যালিজম’-এর সমর্থকদের উপর অত্যাচার যথেষ্টই চলেছে। কিন্তু তাঁরা একবার অস্ত্র হাতে তুলে নিলে মার্কিন-মদতপুষ্ট অ্যানেজ সরকার ঢের বেশি অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যেত। বলিভিয়ার বামপন্থীরা সেই সুযোগ তাঁদের দেননি। তাই গোটা লাতিন বিশ্ব জুড়ে যে বিকল্প সমাজতান্ত্রিক লড়াইয়ের প্রস্তুতি জোরদার হচ্ছে প্রতিদিন, বলিভিয়ার ঘটনাক্রম তার একটি মাইলফলক হয়ে রইল।





    গ্রাফিক্স: pexels.com
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ | ৩০৫৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ramit Chatterjee | ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ ১১:২৬101024
  • জেগে ওঠে চেতনা


    ফিরে আসে বিপ্লব


    বলিভিয়া জুড়ে 


    গণতন্ত্রের উৎসব !

  • Biplab roy | 2409:4060:e8a:621c:8025:9ae9:1f1:***:*** | ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:১২101318
  • Khub সুন্দর 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন