নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯ নিয়ে ভারত জুড়ে যে বিক্ষোভ দানা বেঁধেছিল, অতিমারী করোনা এসে তাকে স্তিমিত করে দিয়েছে। ক্ষোভ কিন্তু এখনও ছাই চাপাই রয়েছে। এনআরসি বা নাগরিকপঞ্জি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলে আবার এ ক্ষোভ ফুটে উঠতে পারে।বস্তুত, এর মূলে আছে আইন প্রনয়ণকারী সরকারের প্রতি অবিশ্বাস। একই রকম অবিশ্বাস কৃষি আইনের ক্ষেত্রেও লক্ষ করা গেছে।যার জেরে লক্ষ লক্ষ কৃষক তিন মাসের অধিক দিল্লী সীমান্ত অবরোধ করে বসে আছেন।কোনও আইন নিয়ে সরকারের উদ্দেশ্য ও ব্যাখ্যার প্রতি এমন সন্দেহ ও অবিশ্বাস ইতিপূর্বে ভারতবর্ষে পরিলক্ষিত হয়নি।
সিএএ ২০১৯ নিয়ে যে অসন্তোষ, তার মূল সূত্রগুলি নিহিত আছে সিএএ ২০০৩-এ।ওই সময়েই NRC এবং NPR তৈরিকে আইনসিদ্ধ করা হয়।নাগরিকত্ব আইনেও বড় রদবদল ঘটানো হয়। কেউই তখন বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি। ২০০৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত কেন্দ্রে কংগ্রস নেতৃত্বাধীন সরকার থাকায় বিষয়টি লোকচক্ষুর অগোচরে চলে যায়। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকারের ক্ষমতা লাভের পর আসামকে কেন্দ্র করে নাগরিকপঞ্জি বিষয়টি সকলের সামনে চলে আসে। মোদি সরকার ২০১৬ সালে নতুন করে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনে উদ্যোগ নিলেও ২০১৯-এ তা পাশ হয়।তার আগে নাগরিকপঞ্জি ঘিরে আসামে লক্ষ লক্ষ মানুষের হয়রানি এবং সর্বস্তরের নাগরিকের যে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তায় প্রহর কাটানো, তাতে বাকি ভারতবর্ষ শিউরে ওঠে এবং এই পরিস্থিতির সম্মুখিন হওয়ার আগেই একে প্রতিরোধ করতে সচেষ্ট হয়।কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রতি অবিশ্বাস গড়ে ওঠে এ সময় থেকেই। কারণ, ওঁরা বলেছিলেন, নাগরিকপঞ্জি তৈরির উদ্দেশ্য অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করা; প্রকৃত কোনও উদ্বাস্তু (হিন্দু-বৌদ্ধ ইত্যাদি)এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।
এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হলে দেখা গেল তাঁদের সে দাবি ভিত্তিহীন। যে ১৯ লক্ষ মানুষ নাগরিকপঞ্জিতে ঠাঁই পেলেন না, তাঁদের প্রায় ১৪ লক্ষই হিন্দু।শরণার্থীর মর্যাদা পাওয়ার বদলে তাঁদের ঠাঁই হতে লাগলো ডিটেনশন ক্যাম্পে। আশ্চর্যজনক ভাবে প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেউই এঁদের পাশে দাঁড়ালেন না। শুধু বাঙালি নয়, অনেক আদিবাসী, হিন্দি ও নেপালীভাষীর নামও নাগরিকপঞ্জিতে স্থান পায়নি। ফলে এনআরসি নিয়ে সর্বস্তরের ভারতীয়দের মধ্যে ত্রাসের সঞ্চার হলো।
আগেই বলেছি, সিএএ ২০০৩ ছিল নাগরিকত্ব আইনের ক্ষেত্রে একটা বড় পরিবর্তন।এই প্রথম নাগরিকত্ব আইনে ‘ইললিগাল মাইগ্রান্ট’ শব্দটি প্রযুক্ত হয়। কোনও সময়সীমা বেঁধে না দিয়ে বলা হয় [২(১)বি], কোনও বৈধ অনুমতিপত্র ছাড়া যাঁরা ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাঁরা সকলেই অনুপ্রবেশকারী। তাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার যোগ্য হবেন না। তাঁদের সন্তানরা যাতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব না পায়, সেজন্যও আইন সংশোধন করে বলা হলো, বাবা-মা দুজনেই ভারতীয় নাগরিক নাহলে বা একজন নাগরিক, অন্যজন অনুপ্রবেশকারী হলে সেই শিশু এদেশে জন্মালেও নাগরিকত্ব পাবে না। আইনের শর্তানুসারে ১৯৪৮ সালের ১৯ জুলাইয়ের পরে আসা সকলেই এর আওতার মধ্যে পড়ে গেলেন। কার্যত আসামে প্রবেশের ক্ষেত্রে কাট অব ডেট ২৪ মার্চ ১৯৭১ হলেও, বাকি ভারতের ক্ষে্ত্রে তা দাঁড়ালো ১৯৪৮-এর ১৯ জুলাই। বিজেপি যতই নিজেকে হিন্দুপ্রেমী বলে ঘোষণা করুক, এই আইনের বলে শরণার্থী হয়ে আসা হিন্দুদের তাঁরা চরম সর্বনাশের মুখে ঠেলে দিল।
দেশভাগ যেহেতু সংঘটিত হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে, নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষকে লোক বিনিময়ের মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্থানে আসার সুযোগ করে দেওয়া ছিল রাষ্ট্রেরই কর্তব্য। রাষ্ট্র সে কাজ তো করেইনি, উল্টে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা উদ্বাস্তুদের ফেরৎ পাঠানো বা ১৯৫০-এর দাঙ্গার পরেও সে দেশেই তাঁরা যাতে থেকে যান, সেজন্য নেহেরু সরকার দুজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাঠিয়ে তাদের নিরস্ত করেছেন। বাংলাভাগের উদ্দেশ্য মেনে নিলে পূর্ববঙ্গের সংখ্যালঘুরা পশ্চিমবঙ্গের স্বাভাবিক অংশীদার। দীর্ঘদিন কৌশলে সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করার পর, ২০০৩-এ পাকাপোক্ত আইনই করে ফেলা হলো।
২০১৪-এ মোদি সরকার এসে ঘোষণা করল, উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবার জন্য তারা আইন করবেন। সেটাই সিএএ ২০১৯। বলা হলো, আফগানিস্থান বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কোনও হিন্দু বৌদ্ধ শিখ জৈন পারসি ও খ্রিস্টান মানুষ, যাঁরা ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪-এর আগে ভারতে প্রবেশ করেছেন এবং যাদের কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা কিম্বা পাসপোর্ট (ভারতে প্রবেশ)আইন ১৯২০-র ৩ নম্বর ধারার(২)উপধারায় (গ) শর্তে অথবা বিদেশি আইন ১৯৪৬-র নিয়ম প্রযুক্ত করে বা এদের অন্তর্ভুক্ত কোনও নিয়ম বা আদেশ জারি করে ছাড় দেওয়া হয়েছে, তাদের এই আইনের আওতায় অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য করা হবে না। এই আইনের প্যাঁচে একদিকে যেমন মুসলমানদের অনুপ্রবেশকারী বলা হলো, তেমনি শর্তের বাইরে থাকা বাকিরাও অনুপ্রবেশকারীই রইলেন। নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবি তুলে উদ্বাস্তুরা যতই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রতিশ্রুতি চান, তাঁরা রুলস তৈরিতে গড়িমসি করেই চলেছেন।
আইনের ভাষা থেকে পরিষ্কার, মোদি সরকার মুসলিমদের প্রতি নির্মম হবে। কিন্তু হিন্দু বৌদ্ধ ইত্যাদিদের প্রতিও সদয় হবে না। তা যদি হত, এই আইন পাশ হওয়ার পর আসামের ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে উদ্বাস্তুদের মুক্তি মিলতো। সরকারের প্রতি সন্দেহ এভাবেই তৈরি হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে এরা কি সত্যিই বাঙালি উদ্বাস্তুদের প্রতি সহানভূতিশীল? অনেকের স্মৃতিতে ভেসে উঠছে ২০০১ সালের রুদ্রপুরের (উত্তরাখণ্ড) ঘটনা। নবসৃষ্ট উত্তরাখণ্ডের ক্ষমতায় এসে বিজেপি সরকার পাঞ্জাবি উদ্বাস্তুদের ডোমিসাইল সার্টিফিকেট দিলেও, বাঙালি উদ্বাস্তুদের তা দিতে অস্বীকার করে(২২.০৯.২০০১ তারিখের দৈনিক প্রতিদিন, গণশক্তি ও হিন্দি জনসত্তা)। উল্টে বিজেপি কর্মীরা মিছিল করে আওয়াজ তোলে: বাঙালি ঘুসপেটিয়াদের দেশ থেকে বহিষ্কার করতে হবে।১৯৫২ সাল থেকে পুনর্বসতি পেয়ে রয়েছেন যে উদ্বাস্তুরা, তারা ঘুসপেটিয়া! বিজেপি কর্মীদের মিছিলের এই আওয়াজই শেষে যেন আইনি সমর্থন পেল বাজপেয়ী সরকারের ২০০৩ আইনে।
সুতরাং, সন্দেহ করার অবকাশ আছে যে, সিএএ ২০১৯ আসলে উদ্বাস্তুদের বড়শির টোপ দিয়ে গেঁথে তোলা ছাড়া আর কিছুই নয়।গোটা পৃথিবীতে এমন কোনও নজির নেই যে, কোনও দেশের প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একদল মানুষের কাছে গিয়ে বলছেন, আপনারা আমাদের ভোট দিন, আমরা আপনাদের নাগরিকত্ব দেব। যে উদ্বাস্তুদের ভোটাধিকার রয়েছে, অথচ, ২০০৩ আইনে যাদের সঙ্কটগ্রস্ত করে তোলা হয়েছে, আসাম আইনের ৬এ/২ ধারানুসারে তাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে নেওয়াই ছিল সহজতম পথ। কিন্তু, সরকার সে পথে হাঁটতে রাজি নয়। তাদের মনের গোপনে কী আছে, বাঙালি উদ্বাস্তুদের জন্য দরদ না গারদ, আইনের রুলস তৈরি না হওয়া পর্যন্ত তা নিয়ে শুধু গবেষণাই চলতে পারে।
"১৯ লক্ষ এনআরসি ছুটদের মধ্যে ১৪ লক্ষ (?) হিন্দুদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আশ্রয় হতে লাগলো" -- এই তথ্য কোত্থেকে পেলেন লেখক?
ডিটেনশন ক্যাম্পে এখনও ঢুকানো হয় নি 19 লাখ কে। Rejection letter ও পাঠায়নি। ভোটের পরেই সম্ভবত nrc কার্যকরী করবে নতুন আসাম সরকার (যেই আসুক)।
যেটা লেখক বলেন নি সেটা হলো কোনো রাজনৈতিক দলই আসামের বাঙালিদের পিছনে দাঁড়ায় নি। প্রত্যেকেই nrc র রাজনৈতিক লাভ কুড়াতে ব্যস্ত।
বাংলায় কোন রাজনৈতিক দলের মুখে nrc বিরোধিতা শুনবেন না। কখন বললেও নম নম করে। এরা কেউ ই nrc বিরোধী নয়, সুবিধাবাদী।
কমলবাবু
এন আর সির ফাইনাল রিপোর্টের পর 11 /12/ 2019 তারিখের টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবর দেখুন।
1. মোট 312 লক্ষ আবেদনের মধ্যে 19 লক্ষ বাতিল হয়।
2 তারমধ্যে 12 লক্ষ হিন্দু, 7 লক্ষ মুসলিম।
তাই পরে হতাশ বিজেপির দাবি---- গণনা ঠিক হয়নি, আবার গুনতে হবে নতুন করে। সুপ্রিম কোর্ট মানেনি।
এখন বিজেপি বলছে সিএএর জোরে কিছু বাদপড়া হিন্দুর নাগরিকত্ব হতে পারে। তাতে অল আসাম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন ইত্যাদির আপত্তি-- বাঙালির সংখ্যা বেড়ে যাবে।
হিমন্ত এই সংখ্যা টা কোটি তে হওয়ার কথা বলে লোক খ্যপায়। আসুর মতও তথৈবচ।
দু,
ঠিক। ওরা ২০১৮তে গুণে বলেছিল ৪০ লক্ষ লোক নাগরিকত্বের বাইরে। রেজিস্টারে নাম তোলা গেলনা। ডকু নেই। অনেক চেঁচামেচি। কোটির উপর বাইরের লোক ইত্যদি হ্যাজ। তারপর সুপ্রীম কোর্টের প্রতিনিধি প্রতীক হাজেলার মনিটরিং্ করে ডিসেম্বর ২০১৯শে যে ফাইনাল লিস্ট তাতে সংখ্যাটা ১৯ লক্ষ হয়ে গেল। ফলে এখনও কোটির গল্প চলছে।
আর এর জোরে যেটা হয়েছে, বাঙালী হিন্দু ভোট একেবারেই বিজেপির দিকে কনসলিডেট করে গ্যাছে।
আর কতদিন চলবে এই খেলা ???ঠাকুর দাদা রা ??রুজি রোজগার ভুলে ..কিছু চোর , লুটেরা , বাটপার রাজনৈতিক নেতা দের (সব দল কেই লক্ষ্য করে bolchi) সঙ্গে তালে তালে নাচছো, সবাই কে নাচতে বাধ্য করছো ??চাকরি দিতে পেরেছো নমো শুদ্র নিচু জাত তেলি জোলা নাপিত বলে যাকে তোমরা ""মতুয়া ""সম্বোধন করো কটা মুসলিম লোক আছে তোমাদের ওই সম্প্রদায় ভুক্ত পার্টি তে আম্বেদকর/ যোগেন মন্ডল রা কি এই মতুয়া চেয়েছিলো ?? বৌ যাচ্ছে তৃণমূলে ।..তো স্বামী যাচ্ছে বিজেপি তে ।..আবার গোসা করে কেউ নির্দল হচ্ছে ।..লোক গুলোকে নিয়ে বাদর নাচ নাচ্চাচ্ছ ।..সালা ?????আগে নিজের ঘর টাকে গোছাও বাবা !!!!
আসামের ক্ষেত্রে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। ২০১৫ সালের তাদের সংখ্যা ছিল এক কোটি বাংলাদেশী অবৈধভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে আসাম রাজ্যে। সেটা এখন মিথ্যা প্রমাণিত হলো। কেন্দ্রীয় সরকার বুঝতে পেরেছে যে এই ১৯ লক্ষের মধ্যে অনেকের নাম ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল মারফত এসে যাবে। তাহলে এই এক কোটির গল্প কোথায় গেল ? সেইজন্যই কেন্দ্রীয় সরকার কিছুই করতে চাইছে না। এদিকে এনআরসি ছুটদের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করার জন্য ২০০ টি নতুন ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তৈরি করার কথা। সেটাও করে উঠতে পারেনি। কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় সরকার বলে দিয়েছে, আসামে এনআরসির জন্য আর এক টাকাও দেবে না। আসাম বিজেপি সরকার ৩.৩০ কোটি টাকা চেয়েছিল।
আপনারা নিজেরাই হিসেব করে দেখতে পারেন, ১৯ লক্ষ মানুষ ২০০ টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করার পর, একদিন তো হিসেব কষে বের করতে হবে, কতজন ভারতীয় এবং কতজন বিদেশি হলো এই এনআরসি মারফত? সেই সময়টার জন্য কতোদিন অপেক্ষা করতে হবে? আমার হিসেবে কম করেও পঞ্চাশ বছর। আপনাদের কি মনে হয়, রাজনৈতিক দলগুলো পঞ্চাশ বছর অপেক্ষা করবে ?
নাগরিকত্ব আইন আসামে কার্যকর কোনোদিনও হবে না। আসাম হচ্ছে একটি ঔপনিবেশিক রাজ্য। এখানে অসমিয়া দের কথাই শেষ কথা। আর হিন্দু বাঙালিরা নাগরিকত্ব আইনের সুবিধে আসামে পাবে না। তার কারণ এনআরসি ফর্ম পূরণ করার সময় তারা যে ডকুমেন্টস জমা দিয়েছিল, এখন আইনের সুবিধে পাওয়ার জন্য মিথ্যে কথা বলতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গে নো সিএএ নো এনআরসি নো এনপিআর আন্দোলন আমি নিজেই দেখে এসেছি। আপনাদের পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চালু হতে , কম করেও পাঁচ বছর পর হবে। যেটা হতে যাচ্ছে, সেটি হলো এনপিআর! এই বিষয়টিকে সিরিয়াসলি না নিতে পারলে, ভয়াবহ অবস্থা হবে পশ্চিমবঙ্গে।
পশ্চিম বঙ্গে এই নিয়ে সবচেয়ে সরব আই এস এফ। এই মেরুকৃত পরিস্থিতি তে জান বাজি রেখেছে তারা। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে লড়ার কথা বলছে এবং এটা তাদের মঞ্চ তৈরির প্রধান কারন।
কমলবাবু
সঠিক এবং দামি কথা। লেখকও এই জায়গাটায় জোর দিয়েছেন যে সি এ এর সুবিধে নিতে হলে আগে এন আর সি বা আগামীদিনে এন পি আর দেয়া ডকুমেন্টগুলোকে অস্বীকার করে নিজেকে অবৈধভাবে প্রবেশকারী ঘোষণা করতে হবে।
আর করা মাত্র আপনার ক্লেইম বিচারাধীন। আপনি তৎক্ষণাৎ রেশনকারড, ভোটারকার্ড ব্যাংক একাউন্ট এবং চাকরি হারাবেন। কেন্দ্রের সরকার আর এক পয়সাও খরচ করবেনা বলার সঙ্গে ওই 19 লাখকে নোটিশ ধরানোর আদেশ দিয়েছে।
সিএএর মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়ার অলীক স্বপ্নে পাতকুয়োয় পড়ে যাবার প্রবল সম্ভাবনার কথা বারবার প্রচার করা দরকার।
১৯ লক্ষ এনআরসি ছুটদের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা নিয়ে টাগ্ অব ওয়ার চলছে - এনআরসি কতৃপক্ষ , আরজিআই আর সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে। আরজিআই এখনো এনআরসির অনুমোদন দেয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দিলে এখন প্রায় ৪৪০ জন কর্মচারী যারা এনআরসির কাজে যুক্ত, তাদের পরবর্তী কাজের জন্য টাকা জোগাড় কোত্থেকে হবে ? দেয় বছর অতিক্রান্ত হলো, ২০০ জন বিচারক কে মাসে আশি হাজার টাকা বেতন দিচ্ছে জাষ্ট ঘরে বসিয়ে। নতুন ২০০ টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তৈরি না হওয়ায়, ওরা দিব্বি আয়েশে জীবন কাটাচ্ছে! নতুন ২০০ টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তৈরি করতে টাকা কে দেবে? রাজার সরকার না কেন্দ্রীয় সরকার?
দু এর সাথে একমত, আব্বাস বলছে আমরা সবাই নাগরিক, সবাই ভারতীয়।
কামাল বাবু,
"আসাম হচ্ছে একটি ঔপনিবেশিক রাজ্য। এখানে অসমিয়া দের কথাই শেষ কথা।"
মানে এই বিশ্বাস নিয়ে যদি আসামিরা (আপনাকে বলছি না, বলাই বাহুল্য) ভাবে রাজ্যের ও নিজেদের উন্নতি করবে, যদি ভাবে 100 শতাংশ আসন সংরক্ষণ করে আসামি রা চাকরি পাবে তাহলে সম্পূর্ণ ভুল ভাবছে। Neo liberalism এর যুগে খুঁটে খেতে হয়, পরিশ্রম করতে হয়। কম্পিটিশন কে যারা ভয় পায় এই যুগ তাদের জন্য নয়। তাছাড়া শর্টকাটে কোন মহৎ কাজ কোন দিন ই বা সম্পন্ন হয়েছে? এটা আপনি লিখে রাখতে পারেন, overall NRC ব্যাপারটা আসামের competitiveness এর ক্ষতি করবেই। (এছাড়া পার্টিশন এর উদ্বাস্তু কে ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢোকানোর ' 'karma ' বিষয়টা তো আছেই।)। NRC ব্যাপারটা কতটা অমানবিক সেটা আমরা যারা উদ্বাস্তু তারাই শুধু উপলদ্ধি করতে পারি। যে ঘর বাড়ি জলের দরে বিক্রি করে এদেশে আসে, সেই শুধু বোঝে NRC কত বড় অন্যায়। আমি যেটা মানি যে ঈশ্বর আছেন এবং ' karma ' র খাতাটা তিনি সময়মত নিয়ে বসবেন।