এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো  গুরুচন্ডা৯ নয়

  • পাইথনের গপ্পো

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়
    গপ্পো | ০১ সেপ্টেম্বর ২০০৬ | ৯৪৬ বার পঠিত
  • গোলমালটা ঠিক কিভাবে শুরু হল বলা খুব কঠিন। কলম্বিয়ান ছেলেটা একটা পাইথন পুষেছিল, সেটাও কারণ হতে পারে। এভাবে বললে অবশ্য ডাক্তারকেও দোষ দেওয়া যায়, কারণ কালো ইঁদুরের বদলে সাদা ইঁদুর খাওয়ানোর প্ল্যানটা ডাক্তারেরই ছিল। নেট ঘেঁটে দেখেছিল, যে, কালোর চেয়ে সাদা ইঁদুরের পুষ্টিগুণ নাকি বেশি। আর পাইথনের মাসলের বাড়বৃদ্ধি নাকি সাদা ইঁদুর খেলে ভালো হয়। বুদ্ধিশুদ্ধিও নাকি খোলে ভালো। ডাক্তার অবশ্য নামেই ডাক্তার, ওর কোনো ডাক্তারির সার্টিফিকেট কেউ কখনও দেখেনি। তবে হ্যাঁ, লোকটা নেটটা ঘাঁটে ভালো। একবার কাস্ত্রো না ভিটগেনস্টাইন নিয়ে কি একটা সমস্যা হয়েছিল আমাদের, তা থেকে মারদাঙ্গা হবার জোগাড়, তা ডাক্তারই তো নেট ঘেঁটে প্রবলেমটা সলভ করে দিল। পরিষ্কার বলল, ভিটগেনস্টাইনকে যদি ভালো আর্দালি বলা যায়, তাহলে কাস্ত্রো ও কমিনিস্ট। ব্যস সব ঠান্ডা।

    তা এরকম গোলমাল আমাদের লেগেই থাকে বছরে তিরিশবার। কিন্তু তা বলে পাইথনের ব্রেন আর তার ডেভেলাপমেন্ট? ব্রেন থাকবে কোথায় ওদের? এমনিতে মালটা সাইজে সাড়ে চারফুট হলে কি হবে, ঐটুকু তো মাথা, একটা আধুলির সাইজের, তাতে আবার আলপিনের সাইজের চোখ। এর মধ্যে ব্রেন কোথায় অ্যাঁ? রবিন বলছিল সাপটার গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে। ঘরের কোণে একটা কাচের ঘর বানিয়েছে কলম্বিয়ান ছেলেটা। তার মধ্যে একটা গুহা, গুহার মধ্যে থাকে পাইথনের বাচ্চা। কাচের ঘরে থার্মোস্ট্যাট দিয়ে টেম্পারেচার কন্টোল করা হয়, সেখান থেকে নাকি বিশেষ বেরোয় টেরোয় না। আজ স্পেশাল অকেশান বলে বার করে এনেছে। আজ পঁচিশে ডিসেম্বর। আজ বড়দিন। আজ উহার শ্বেত মূষিক ভক্ষণের হাতেখড়ি।

    তখনও গোলমালটা পেকে ওঠেনি। কলম্বিয়ান ছেলেটা তখনও আসেনি, সে তখন গেছিল ইঁদুর কিনতে। রবিন উবু হয়ে বসে পাইথনের ল্যাজে হাত বোলাচ্ছিল। কোনো প্রয়োজন ছিলনা, এমনিই বোলাচ্ছিল। ডাক্তার ওকে বারণ করেনি। উল্টে "সাপের লেজে হাত দিচ্ছিস?' বলে খিকখিক করে হাসছিল। ডাক্তারের স্বভাবই ওরকম। নইলে বলা উচিত ছিল, যে পাইথন খপ করে জাপটে ধরতে পারে। এমনকি বাচ্চা পাইথন হলেও। প্রথমে ওরা লেজ দিয়েই জাপটে ধরে। তারপর গোটা শরীর দিয়ে পেঁচিয়ে নেয়। ওদের শরীরে কোনো হাড় নেই, শুধু পেশি। ঘিনঘিনে রকম ঠান্ডা সেই পেশিতে অসম্ভব জোর। জাপ্টে ধরে পিষতে থাকে। শরীরের হাড়গোড় ক্রমশ: গুঁড়ো গুঁড়ো করে ফেলে। তারপর টপ করে গিলে নেয়।

    পরে অবশ্য ডাক্তার বলেছিল, পাইথন যে জাপটে ধরে মেরে ফেলে সেটা জানার জন্য তো নেট ঘাঁটার দরকার নেই, সেই জন্য বলেনি। এসব সাধারণ জ্ঞানের বইতেই লেখা থাকে। ইন ফ্যাক্ট রবিনের কালেকশানে একটা ছোটোবেলার জেনারাল নলেজের বই ছিল, সেখানেও পাইথন সম্পর্কে এইসব শিশুপাঠ্য লেখালিখি ছিল, ডাক্তার নিজের চোখে দেখেছে। রবিন যে এইসব সিম্পল জিনিসও জানতনা, সেটা ডাক্তার জানবে কিকরে? নেট নিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে তর্ক করা বৃথা। বইয়ের ব্যাপারটাও মিথ্যে বলেনি নিশ্‌চয়ই। কিন্তু তা হলেও দোষটা ডাক্তারের স্বভাবেরই। একে তো কলম্বিয়ান ছেলেটাকে সাদা ইঁদুর কিনতে পাঠিয়েছিল। তা পাঠিয়েছিস পাঠিয়েছিস, তারপর চুপচাপ থাকলেই হত। ঘরে একটা আস্ত পাইথন আছে, ইয়ার্কি তো নয়। কিন্তু স্বভাব যাবে কোথায়। সাপের ল্যাজে হাত দিচ্ছিস? বলে খিকখিক করে হাসলে কারই বা মেজাজ ঠিক থাকে।

    ফলে পাইথন যখন স্যাটাক করে রবিনের হাতটা পাকড়ে ধরল, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। কলম্বিয়ান ছেলেটাও গেছে ইঁদুর কিনতে। ওর একটা ইঁদুরের কৌটো আছে। কৌটো মানে জর্দার ডিপে টাইপের ব্যাপার নয়, রীতিমতো দোকান থেকে পয়সা দিয়ে কিনেছে। হাইফান্ডা কৌটো। বাইরে থেকে ভিতরটা স্পষ্ট দেখা যায়, কিন্তু ভিতর থেকে বাইরে দেখা যায়না, বেরোনো তো যায়ইনা। এসব এলাকায় ঐসব আজব জিনিস কিনতে পাওয়া যায়। গ্যাস সিলিন্ডারের মতো ফান্ডা। প্রথমবার ইঁদুর কিনতে গেলে তোমাকে কৌটোটাও কিনতে হবে। ইঁদুরটা সাবাড় হয়ে গেলে পরের বার থেকে সুপারমার্কেটে ঐ কৌটোটা নিয়ে গেলেই হবে, ওরা দোকান থেকে ইঁদুর রিফিল করে দেবে। পুরো প্রসেসটাই ক্লিন অ্যান্ড সিম্পল, বলপ্রয়োগ, রক্তারক্তির কোনো ব্যাপার নেই। ইঁদুরটা নড়াচড়া করছে, খলবল করছে, বাইরে থেকে টের পাবে, তোমাকে হাত নোংরা করতে হবেনা। সেই ফাঁদ পেতে ধর রে, তারপর কৌটোতে ভর রে, এইসব বিশ্রী ব্যাপারস্যাপারের বালাই নেই -- এরা মাথা খাটিয়ে বারও করে বটে, সাধে কি আর এতো উন্নতি করেছে?

    হতে পারে পাইথনটার ক্ষিধে পেয়েছিল। আবার নাও হতে পারে। ল্যাজে হাত দিলেই জড়িয়ে ধরা ওদের স্বভাব, ডাক্তার পরে বলেছিল। এর সঙ্গে ক্ষিধের কোনো সম্পর্ক নেই। সত্যি-মিথ্যে জানিনা। পাইথনের বাচ্চার পেটের নিচটা ফ্যাটফ্যাটে সাদা, স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। বাকি শরীরটা হলদেটে, তার উপর বাদামী চাকা চাকা। এই অপূর্ব গ্রাফিত্তিময় তার পেশীবহুল শীতল শরীর দিয়ে সে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে রবিনের হাত, এমন সময় ভাগ্যক্রমে কলম্বিয়ান ছেলেটি সিনে প্রবেশ করে। তখন রবিন ভয়ে আঁ আঁ করছিল, ফেন্ট হয়ে যাবার আগের স্টেজ প্রায়। রবিন পরে বলেছে, পুরো ব্যাপারটার মধ্যেই একটা ভ্যাম্পায়ার ভ্যাম্পায়ার গপ্পো ছিল। বা অক্টোপাস জড়িয়ে ধরার মতো। হাতের উপর পেশিগুলো নড়াচড়া করছে, আর সেগুলো মৃত মানুষের মতো ঠান্ডা -- পুরো হরর ফিল্মের এফেক্ট। আর সেই সময় ডাক্তার নাকি রবিনকে বলছিল, চিন্তার কিছু নেই রে, হাড়গোড় ভাঙবেনা। এটা একটা ভুল ধারণা, পরে ডাক্তার বলেছিল, যে, পাইথন জড়িয়ে ধরে প্রথমেই হাড়গোড় ভেঙে ফেলে। আসলে শরীরের সব হাড়-টাড় ভেঙে যে একটা মাংসের মন্ড হয়ে যায়, যে মন্ডটাকে হড়াক করে গিলে ফেলে পাইথন, সেটা অনেক পরের দিকে হয়, প্রথমেই ঐ চাপে হার্ট টা বন্ধ হয়ে যায়। সেটা চাপেই হয়, না ভয়ের চোটে, সেটা ঠিক জানা নেই, কিন্তু হয়। আর হার্টই যদি বন্ধ হয়ে যায়, তখন হাড় ভাঙল, না আস্ত থাকল তাতে কিই বা যায় আসে। সেতো চিতায় তুলেও বাঁশ দিয়ে ডেডবডির মাথায় বাড়ি মেরে মাথা ভেঙে দেওয়া হয়, তাতে কি আর ব্যথা লাগে?

    রবিন এসব শুনছিল কিনা কে জানে। শুনছিলনাই মনে হয়, কারণ তখন তার আঁআঁ করে খাবি খাবার অবস্থা। তবে বিপদ-আপদ বিশেষ ঘটেনি, কারণ কলম্বিয়ান ছেলেটি ততক্ষণে এসে গেছে। কোন যাদুমন্ত্রবলে কে জানে, সে রবিনের হাত থেকে পাইথনকে ছাড়িয়ে আনে। হতে পারে, পাইথনের তখন ক্ষিধে পায়নি। বা এও হতে পারে, যে, পাইথনটা কলম্বিয়ান ছেলেটার কথা শোনে। তবে, যাই হোকনা কেন, ঘরের মধ্যে তখন সে এক হাস্যকর দৃশ্য। একদিকে রবিন কেলিয়ে পড়ে আছে। সোফার উপর ডাক্তার, নির্বিকার। কলম্বিয়ান ছেলেটা মাঝখানে, হাতে তার একখানা ইঁদুরের খাঁচা, সেখান থেকে একটা সাদা ইঁদুর লাল চোখ বার করে পালাবার ফন্দিফিকির খুঁজছে আর কিচকিচ আওয়াজ করছে। ওদিকে কাচের ঘরের মধ্যের গুহায় সুড়সুড় করে ঢুকে যাচ্ছে ভয়াল পাইথন, গুহার পাশেই একটা ছোটো ডালে ঝুলে আছে একটা আধমরা পাতা। পরে রবিন বলেছিল, হাড় ভাঙার আগেই যে হার্টফেল হয়, কথাটা বোধহয় ডাক্তারের গুল নয়। হাতের মধ্যে ওর মাসলগুলো ফিল করছিলাম, বুঝলি? সে কি প্রেশার, সে বলে, আরেকটু হলে আমার হাতের হার্টফেল হয়ে যেত।

    সে যাই হোক, একটু ব্র্যান্ডি-ট্যান্ডি দিয়ে রবিনকে খাড়া করার পরে ডাক্তার বলে, কি রে, পাইথনের ব্রেন আছে কিনা জিজ্ঞাসা করছিলি? দেখলি, নিজের মালিককে কেমন চিনল?

    ব্রেন না হাতি। জখম ডান হাতে বাঁ হাত বোলাতে বোলাতে রবিন বলে, মালটার ক্ষিধে পেয়েছে। বেসিক ইনস্টিংকট শালা। শিগ্গির খেতে দে। নইলে আমাদের কাউকে একটা ধরে খাবে।

    খাবার তো রেডিই ছিল হাতে গরম। খাঁচার ভিতর খলবল করছে। মুখে ধরে দিলেই হত। কিন্তু সেটা করা যাবেনা। ডাক্তারের বারণ আছে। এমনিতে প্রকৃতির বুকে পাইথন ইঁদুর ধরলে একটা উত্তাল ঝাড়পিট হয়। পাইথন ইঁদুর ধরতে যায়, আর ইঁদুর, হলই বা ইঁদুর, তার কি প্রাণের মায়া নেই? ফলে সেও খুদে খুদে দাঁত নিয়ে পাইথনকে আক্রমণ করে। সব মিলিয়ে কামড়া-কামড়ি, আঁচড়া-আঁচড়ি -- সে একটা কমপ্লিট ক্যাওস। রক্তারক্তির চূড়ান্ত -- চরম অসভ্য একটা ব্যাপার। সেটা এই ঘরের মধ্যে হতে দেওয়া চলেনা। তাছাড়া এই ঝাড়পিটে পাইথনটার চোটও লাগতে পারে। সে অনেক ঝক্কি। পেশীর বৃদ্ধি তো হবেইনা, পুরো এফর্টটাই জলে যাবে, সঙ্গে ফালতু বার্ডেন। তাছাড়া পোষাই যখন হয়েছে, তখন পাইথনকে একটি নিশ্‌চিন্ত, নিরুদ্বিগ্ন আহার দেওয়া আমাদের মানবিক কর্তব্যও বটে। এতো সেই বাবুদের মুর্গী লড়াই কিংবা অ্যাম্ফিথিয়েটারের কাল না, যে দুটো জানোয়ার কি মানুষকে লড়িয়ে দিলাম, একে অন্যকে আঁচড়াচ্ছে, কামড়াচ্ছে, একটা জন্তু মরলে রক্তের উপর বালি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, আর সম্রাটের কণ্ঠলগ্না হয়ে বসে সুন্দরীশ্রেষ্ঠা আরাম করে সেই দৃশ্য দেখতে দেখতে পোষা বিল্লীর মতো নিপলে সুড়সুড়ি খাচ্ছে ...

    অল্টারনেটিভলি, এই ঝক্কি এড়ানোর জন্য আরেকটা জিনিস করা যেতে পারত। ইঁদুরটাকে ল্যাজ ধরে দুটো আছাড় মারলেই ল্যাটা চুকে যেত। তারপর একটা লাঠিসোটা কিছু একটা দিয়ে দুটো দড়াম করে বাড়ি মারলেই ফিনিশ ডান। কিন্তু সেখানেও সেই হাত নোংরা করার ব্যাপার। ঘরের মধ্যে রক্তারক্তি তো হবেই, তার চেয়েও বড়ো কথা, দুমদাম করে লাঠিপেটা করে একটা জ্যান্ত জিনিসকে মারতে হবে। সেই হত্যার দায় কে নেবে? মৃত্যু হতে হবে সহজ। কলঙ্কহীন। ডাক্তার বলেছে। প্রকৃতির নিয়মে একটি জীব আরেকটি জীবকে খাবে। আমরা তো এখানে নিমিত্ত মাত্র। আমাদের হাতে যেন কোনো রক্তের দাগ না লাগে।

    অতএব, আমরা তৃতীয় বিকল্প বেছে নিই। কলম্বিয়ান ছেলেটা ফ্রিজের দরজা খোলে। তারপর খাঁচা সমেত ইঁদুরটাকে সিধে ফ্রিজারে ভরে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর টেম্পারেচার কমিয়ে কুলেস্ট, অর্থাৎ মাইনাস কুড়ি ডিগ্রি ফারেনহাইটে সেট করে দেয়। ডাক্তারের সেইরকমই প্রেসক্রিপশন। দরজা বন্ধ করার পরেও, স্পষ্ট শুনতে পাওয়া যায় ইঁদুরটা খাঁচার ভিতর খলবল করছে। কিন্তু কিচকিচ আওয়াজ আর পাওয়া যায়না।

    ঘন্টা দুই লাগবে। ডাক্তার বলে। আমরাও একটু খাওয়া দাওয়া করে নিই নাকি?

    রবিন তখনও কেলিয়ে। ব্র্যান্ডি খেয়ে একটু চাঙ্গা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ফর্মে ফেরেনি। ডাক্তার ওকে প্রায় লাথিয়েই তোলে। শরীরটাকে তো রাখতে হবে, অ্যাঁ? খাবার দাবার বলতে অবশ্য কটা শুকনো বার্গার। তার একটাতে কামড় দিয়ে রবিন একটা দার্শনিক প্রশ্ন তোলে। -- পাইথন কি রেগুলার ইঁদুর খায়?

    --হ্যাঁ। বলে ডাক্তার। কাঁটা সমেতই খায়।

    -- কিন্তু, রবিন বলে, ইঁদুর তো ম্যামাল, না?

    -- তাতে কি?

    -- তাহলে। রবিন বলে। পাইথনকে ইঁদুর খাওয়ানোয় আমার একটা মরাল আপত্তি আছে।

    -- তাই নাকি? ডাক্তার বলে। কিরকম?

    -- থিয়োরি অফ ইভোলিউশন অনুযায়ী। রবিন ব্যাখ্যা করে। স্তন্যপায়ীরা সরীসৃপদের চেয়ে উন্নততর। তাহলে পাইথন কেন ইঁদুর খাবে? এগেইনস্ট দা ল অফ নেচার নয় কি?

    -- আ মোলো যা। ডাক্তার বলে। কুমীরে মানুষ খায়না?

    -- প্রশ্নটা এড়িয়ে যাবেননা কমরেড। রবিন বলে। এক আধটা কুমীর এক আধটা মানুষ খেতেই পারে। কিন্তু মানুষ কি কুমীরের স্টেপল ফুড?

    এইখানে একটা প্রবল গোলমালের আশঙ্কা ছিল। কিন্তু কলম্বিয়ান ছেলেটা ঝানু মাল। ছোটো থেকে ড্রাগ বন্দুক মাফিয়া আর মাওবাদীদের নিয়ে কাজ কারবার। সে কেসটা প্রোঅ্যাকটিভলি ধামাচাপা দেয়। প্রাঞ্জল ভাষায় বুঝিয়ে দেয়, যে, এইসব গালভরা জিনিস, যার নাম প্রকৃতির নিয়মই হোক বা থিয়োরি অফ ইভোলিউশন, ওগুলো জাস্ট থিয়োরি। পারসেপশন অফ রিয়েলিটি, হুইচ ইজ নট রিয়েলিটি ইন ইটসেল্ফ। বাংলা কথা হল, যদি থিয়োরি দিয়ে এসব ব্যাখ্যা করতে পারো তো ভালো, নইলে জাস্ট চেঞ্জ দা থিয়োরি। জঙ্গল তোমার কথায় চলবেনা বাবা, ইউ উইল হ্যাভ টু অ্যাডাপ্ট টু দা রিয়েলিটিজ অফ জাঙ্গল।

    ফলে গোলমালটা তখনকার মতো ধামাচাপা পড়ে। আমরা চুপচাপ বার্গার আর কোক সাঁটাই। চাট্টি বিয়ারের ক্যানও খোলা হয়। এই মার্কেটে একবার টিভিও চালানো হয়। ডাক্তার নিউজ চ্যানেল দেখে মন দিয়ে। দুনিয়ার খবরে আপটুডেট থাকা দরকার। পুরো নিউজটা আধঘন্টা ধরে চলে। ইরাক থেকে শুরু করে বৃষ্টির পূর্বাভাষ অবধি ডাক্তার মন দিয়ে দেখে। কমার্সিয়াল ব্রেকগুলোও বাদ দেয়না। মনে হয় খবরের মধ্যের ব্রেকগুলোয় বিটুইন দা লাইন পড়ার চেষ্টা করে। তারপর খেলার রেজাল্ট শেষ করে বলে, আর তো আওয়াজ পাচ্ছিনা রে। ওদিকে কি রেজাল্ট?

    কলম্বিয়ান ছেলেটা ফ্রিজ খুলে ইঁদুরের স্ট্যাটাস চেক করে আসে। কি অবস্থা? খুউল, সে বলে। অর্থাৎ ইঁদুর বাবাজি আর নড়ছেও না চড়ছেও না। তার শিক্ষা সমাপ্ত হয়েছে কিনা অবশ্য জানা যায়না। তার জন্য আরও এক ঘন্টা অপেক্ষা করা দরকার। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন।

    কিন্তু। রবিন বার্গারে শেষের আগের কামড়টা দিয়ে বলে, সবই যদি থিয়োরি হবে, তাহলে এটা যে একটা শুয়োরের মাংস, সেটাও তো তাহলে বলা যাবেনা।

    অতএব আমাদের আলোচনা রিয়েলিটি আর পারসেপশনের দিকে ঘুরে যায়। ডাক্তার বলে হুঁ। বলে অনেকক্ষণ চুপ করে বসে থাকে। তারপর আস্তে আস্তে বলে, ঠিকই বলছিস। একেকটা বার্গার ফ্যাক্টরিতে এখন একসাথে হাজার-হাজার গোরু আর শুয়োর কাটা হয় রে। তারপর মেকানিক্যালি পিস করা হয়। একেকটা বার্গারে মিনিমাম দুশোটা আলাদা শুয়োরের মাংস থাকে। ফলে এটা যে একটা শুয়োরেরই মাংস, সেটা বলা যাবেনা। বলে চুপ করে যায়। হাজার বদগুণ সত্ত্বেও এই জন্যই ডাক্তারকে আমরা ভালোবাসি। মালটা খারাপ-ভালো যাই হোক নেটটা ঘাঁটে ভালো। এমন এমন সব ফান্ডা দেয়, যে বাকি সবাই চুপ মেরে যায়। পৃথিবীতে মানুষ দুরকম হয়। ডাক্তার হল থিংকার। আর কলম্বিয়ান ছেলেটা ক্যাডার।

    ডাক্তার অবশ্য পরে বলেছিল, কথার পিঠে কথাটা বলেছিল বটে, কিন্তু জিনিসটা ওর মোটেও পছন্দ হয়নি। ভাব, অনেকগুলো কনভেয়ার বেল্টের উপর দিয়ে চলেছে হাজার হাজার শুয়োরের লাখ লাখ মাংসের পিস। সেগুলো একসঙ্গে থেঁতো হচ্ছে, তারপর সেই মন্ড থেকে তৈরি হচ্ছে রাশিরাশি বার্গার। ভাব। ডাক্তার বলেছিল। বলতে বলতে ডাক্তারের চোখ বন্ধ হয়ে যায়। মুখ বন্ধ হয়ে যায়। টিভি আগেই বন্ধ। আর ইঁদুরটাও কোনো শব্দ করছেনা। ফলে ঘরের মধ্যে একটা অস্বস্তিকর নীরবতা নেমে আসে।

    সবাই চুপ করে যায়। রবিন প্রচন্ড বকবক করে সারাদিন, কিন্তু কে জানে, পাইথনের আক্রমনে কেলিয়ে পড়েই বোধহয়, কথা বন্ধ করে রাখে। কলম্বিয়ান ছেলেটা অবশ্য এমনিই চুপচাপ। সাউন্ড অফ সাইলেন্স ওর প্রিয় গান। আর প্রেমিকার নাম নাকি ইটার্নাল সাইলেন্স। ইংরিজিতে নয়, ওদের ভাষায়। স্প্যানিশ বা পর্তুগিজ কিছু একটা হবে। সেই ভাষারই একটা গান চালিয়ে দেয় ছেলেটা। মিউজিক সিস্টেমে। লাতিনো মিউজিক, পাগল করা ছন্দ আর সঙ্গে গুমগুম বাস। এই বাসের আওয়াজটা নাকি পাইথনটাও খুব ভালোবাসে। ওরা তো এমনিতে কানে শোনেনা, শব্দ ফিল করে শরীর দিয়ে। সেই লাতিন আমেরিকার জঙ্গলে যখন শিকার থপথপ করতে করতে কাছে এসে দাঁড়ায়, তখন ক্ষুধার্থ পাইথনের যে ফিলিং হয়, এই বাসটা নাকি সেই শব্দটাই রেপ্লিকেট করে। পাইথনের বাচ্চা বোঝে, খাবার এসে গেছে। সত্যি মিথ্যে জানিনা, তবে এইসব বলেই কলম্বিয়ান ছেলেটা আমাদের তাড়া লাগায়। হাতে আর নাকি সময় বিশেষ নেই। পাইথন জেগে উঠে খাবার না পেলে ভীষণ দু:খ পাবে।

    অতএব আমরা ঝপাঝপ বাকি বিয়ারগুলো মেরে দিই। ঘরের মধ্যে ঐ অদ্ভুত বাজনা, আর ওদিকে অর্ধজাগ্রত পাইথন। অবশ্য, কলম্বিয়ান ছেলেটা পরে বলেছিল, যে ও ঘড়ি দেখেছিল, যে, আমাদের বিয়ারগুলো শেষ করতে পাক্কা পঁয়তাল্লিশ মিনিট লেগেছে। তারপর কলম্বিয়ান ছেলেটা বলে, দেখব নাকি একবার?

    ডাক্তার পারমিশন দেয়। ফ্রিজ খোলে কলম্বিয়ান ছেলেটা। ফ্রিজারের দরজা খোলে। কোনো শব্দ নেই। ফ্রিজার থেকে খাঁচাটা বার করে আনে । ভিতরে নড়াচড়ার কোনো আওয়াজ নেই। খাঁচা নাড়ালেও ভিতরে কিছু নড়ছে মনে হয়না। মালটা আছে তো ভিতরে? দরজা খুলে দেখা যায়, আছে। ইঁদুরখানা কাঠের মতো শক্ত হয়ে আছে। গায়ের রঙ এমনিতেই সাদা। দেখলে মনে হয় গায়ে বরফ জমে আছে। তার চোখ অবশ্য আগের মতই লাল। খাঁচার মধ্যে সেঁটে লেগে গেছে, নাড়ালেও নড়েনা। মালটার লেজ ধরে টেনে বার করে আনতে বেশ কসরৎ করতে হয়। কলম্বিয়ান ছেলেটা পারছিলনা, ডাক্তার একটা হেঁচকা টান মারতে চড়চড় করে খাঁচার গা থেকে খুলে আসে। ডাক্তারে হাতে একটা কাঠের টুকরোর মতো ঝুলে থাকে জিনিসটা। ফ্রিজের গায়ে দুবার ধাক্কা খায়, তাতে খটখট আওয়াজ হয়। ডাক্তার ভালো করে ইন্সপেক্ট করে, নি:শ্বাস-টিশ্বাস পড়ছে কিনা। তারপর গ্রিন সিগনাল দেয়। বুড়ো আঙুল তোলে। অর্থাৎ, বয়েজ, গো টু ওয়ার্ক।

    একটা বড়ো গামলায় হাফ গামলা জল গরম করা হয়। ইষদুষ্ণ। ইঁদুর টাকে ল্যাজে ধরে সেই জলে বার কতক চোবায় কলম্বিয়ান ছেলেটা। দুবার ডোবানোর পরে ইঁদুরটা কিঞ্চিৎ নড়ে ওঠে মনে হয়। কলম্বিয়ান ছেলেটা ডাক্তারের দিকে তাকায়। অর্থাৎ, অত:কিম? ডাক্তার মাথা নাড়ে। অর্থাৎ নো প্রবলেম, আবার চোবাও। কলম্বিয়ান ছেলেটা এবার ইঁদুরটাকে চুবিয়ে ধরে থাকে। নাক না মুখ কোথা দিয়ে বোঝা যায়না, কিছুটা বুদবুদ বেরিয়ে আসে। অবশ্য ডাক্তার পরে বলেছিল, গরম জলে ওরকম এমনিই নাকি হতে পারে। জলের নিচে কোনো শার্প এজ থাকলে সেখানে অনেক সময় বুদবুদ জমা হয়, তারপর নাড়াচাড়া হলে এমনিই বেরিয়ে আসে। সে যাই হোক, ইঁদুরটা আর নড়েনা। এবার তুলে নে না -- রবিন বলে। ডাক্তার বিরক্ত চোখে তাকায়। তুলব মানে? ঠান্ডা ইঁদুর খাবে পাইথন? এটাকে একদম অরিজিনাল বডি টেম্পারেচারে নিয়ে আসতে হবে।

    তোর শালা কেওড়াতলায় চাকরি পাওয়া উচিত ছিল। রবিন বলে। জ্যান্ত ইঁদুরের টেম্পরেচার নিয়ে এতো ফান্ডা।

    ডাক্তার ইঁদুরটাকে নিজের হাতে নিয়ে নেয়। জলে ডোবায়। মাঝে মাঝে তোলে, টেম্পারেচার চেক করে, আবার চোবায়। করতেই থাকে করতেই থাকে। ওদিকে ততক্ষণে কলম্বিয়ান ছেলেটা পাইথনকে তার গুহা থেকে বার করে এনেছে। আর কতক্ষণ? হয়ে গেছে। উই আর গুড টু গো। জানায় ডাক্তার। তারপর ল্যাজে ঝুলিয়ে ইঁদুরকে নিয়ে যায় পর্বতের কাছে। যেখানে অজগর অপেক্ষা করছে।

    ঠিক এই সময়েই সম্ভবত: গোলমালটা শুরু হয়। রবিন ভয়ের চোটে পাইথনটার কাছে ঘেঁষেনি। অনেক দূরে ফ্রিজের কোণে দাঁড়িয়ে ছিল। রবিন পরে বলেছে, যে, ঐ সময়েই প্রথমবার আওয়াজটা শুনেছিল। কিন্তু তখন তেমন গুরুত্ব দেয়নি। একবার নাকি বলেওছিল, ফ্রিজের ভিতর কিসের যেন একটা আওয়াজ হচ্ছে, কিন্তু কেউ পাত্তা দেয়নি। সবাই তখন নিজের নিজের কাজে ব্যস্ত। ডাক্তার ইঁদুরটাকে নিয়ে পাইথনের নাকের ডগায় নাড়াচ্ছে, যাতে বোঝা যায় ওটা একটা জ্যান্ত ইঁদুর। আর কলম্বিয়ান ছেলেটা পাইথনের খুদে মাথায় আলতো করে টোকা মারছে। ইন ফ্যাক্ট বিরক্ত করছে, যাতে বিরক্ত হয়ে ইঁদুরটাকে ধরে সাপটা। পাইথনকে খাওয়ানোর সবচেয়ে বড়ো সুবিধেটা হল, একবার খেতে শুরু করলে আর বাবা-বাছা বলে সাধ্যসাধনা করার দরকার হয়না। মাঝখানে আর ওরা থামতে পারেনা। থামার উপায় নেই।

    এইসময়েই আওয়াজটা আরেকবার হয়। ফ্রিজের মধ্যে কি যেন একটা দুম করে পড়ে যায়। এবার আমরাও শুনতে পাই, কিন্তু তখন গুরুত্ব দেবার প্রয়োজন মনে করিনি। তখন পুরো ওয়ানডে ম্যাচের লাস্ট ওভারের উত্তেজনা। ডাক্তার আর কলম্বিয়ান ছেলেটা ক্লোজ ইন ফিল্ডার। এবং, ডাক্তার পরে বলেছে, পাইথনটা ঠিক কখন ইঁদুরটাকে ধরল সেটা ও বুঝতেই পারেনি। ওর হাত থেকে ইঁদুরটা ছিটকে যাবার পরে টের পেল ওটা পাইথনের মুখে। মুখ বলতে তো একটা আধুলির সাইজের জায়গা, তাতে আবার একটা জিভ। ওর মধ্যে ইঁদুরটা ঢুকবে কিকরে কে জানে? ম্যাচের পরে যেমন প্রাইজ গিভিং সেরিমনি, তেমনই এই জিনিসটাই সব থেকে ইন্টারেস্টিং, যে, ঐটুকু জায়গায় একটা ধেড়ে ইঁদুর ঢোকে কিকরে। অ্যাকচুয়ালি যদি কেউ পুরো জিনিসটা না দেখে থাকেন, তো বিশ্বাস করবেননা, ইঁদুরটা একটু একটু করে মুখের ভিতরে ঢুকতে থাকে, আর পাইথনের মাথার পিছনটা ফুলতে থাকে। হ্যাঁ মাথার পিছনটা। মানুষ যেখানে ব্রেন থাকে বলে দাবী করে। নইলে আর জায়গা কোথায়?

    ঠিক এই সময়, ফ্রিজের সামনে থেকে দাঁড়িয়ে রবিন বলে, কিরে খুব যে ব্রেন বলছিলি, এর তো পুরোটাই মুখ দেখি, ব্রেনটা কই, অ্যাঁ? আর বলার সঙ্গে সঙ্গেই ফ্রিজের ভিতর আবার কি যেন একটা দুম করে পড়ে যায়।

    কি করছিস, রে? বলে ডাক্তার।

    আমি? রবিন বলে। আমি কিছু করিনি। তোর ফ্রিজ নিজেই দুমদাম আওয়াজ করছে।

    তখনও আমরা ব্যাপারটা খেয়াল করিনি। তখনও সাপ দেখতেই ব্যস্ত। গোটা ইঁদুরটা আস্তে আস্তে ঢুকে যায় সাপের মাথার পিছনে, এবার আস্তে আস্তে ওটা নিচে নামবে। পুরো জিনিসটা নাকি সাড়ে তিনদিনে হজম হবে। কলম্বিয়ান ছেলেটা পাইথনকে যত্ন করে গুহার ভিতর ভরে দিয়ে আসে।

    তারপর, ঠিক তারপরই আমরা শুনতে পাই আওয়াজটা। ততক্ষণে আওয়াজটা বেড়ে গেছে। এবং সেটা ফ্রিজের মধ্যে থেকে আসছে। ফ্রিজের ভিতর কি যেন একটা খলবল করছে। লাফালাফি করছে। দুম করে একটা বোতল পড়ে ভাঙল শুনতে পাই। দুচারটে বাটি ঝনঝন আওয়াজ করে। কাছে গিয়ে একটা ভিতর থেকে একটা তীক্ষ্ম আওয়াজ আসছে টের পাই। কিচ কিচ কিচ। আওয়াজটা বাড়তে থাকে, সবকিছু ফ্রিজের দরজায় দুমদাম শব্দ পাই ...

    আমাদের পাইথনসোনা ততক্ষণে গভীর নিদ্রায় মগ্ন। গোটা ইঁদুরটা হজম করতে তার তিন দিন লাগবে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • গপ্পো | ০১ সেপ্টেম্বর ২০০৬ | ৯৪৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন