এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  কাব্য

  • রুমির কবিতার গহন অরণ্যে

    নীলাঞ্জন হাজরা লেখকের গ্রাহক হোন
    কাব্য | ১৭ অক্টোবর ২০১৮ | ২৬২২ বার পঠিত
  • বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ!
    জালালউদ্দিন মহম্মদ, ওরফে জালালউদ্দিন মহমম্মদ বলখি, ওরফে জালালউদ্দিন রুমি-র কবিতা আমি স্বাধীন ভাবে মূল ফারসিতে পড়িনি৷ আমি যেটুকু ফারসি জানি, তাতে বড়োজোর ইংরেজি অনুবাদের পাশে ফারসি মূল কবিতা রেখে অভিধান হাতে মিলিয়ে নিতে পারি৷ তথাপি আমাকে প্রায় বাধ্য হয়ে একটি কবিতা-সভায় রুমির কবিতার বিষয়ে কিছু বলতে হয়েছিল৷ এ লেখা তার পরিমার্জিত রূপ৷ মূলে পড়িনি বলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে কবিতার উদ্ধৃতি এবং কবিজীবনীর উদ্ধৃতি ইংরেজিতেই রেখেছি৷ যেখানে সাহস করা সম্ভব হয়েছে, বাংলাও জুড়ে দিয়েছি৷
    ~~~~~~~~~~~~
    জ়িক্‌রস্ত্ কমন্দ-ই-বস্‌ল-ই-মহবুব
    খামোশ কে জোশ করদ সওদা৷৷

    Remembrance is the noose of union with the Beloved.
    Be silent, for madness has begun to boil!

    উল্লেখ প্রেমাস্পদের সাথে মিলনের ফাঁস
    নীরব হও, উথলে উঠেছে আবেগের অধীর উচ্ছ্বাস৷৷
    (আমার অনুবাদ৷ জ়িক্‌র শব্দের আভিধানিক অর্থ হতে পারে mention, memory, remembering, recital, praise৷ আমি ‘উল্লেখ’ শব্দটি ব্যবহারই শ্রেয় মনে করলাম৷)

    আন রুজ় কেহ্ হোশিয়ারম ম্যান অরবদহ্-হা দারম
    ওয়্যা আন রু.জ কেহ্ খমারম চেহ্ সবর ওয়্যা চেহ্ খামোশি৷৷

    On the day I am sober, I am full of drunken brawling,
    But when I am drunk, what patience and silence!

    যে দিন থাকি সাবধানে হইচই জুড়ি মাতলামির
    মাতাল যে দিন, সে কী স্থৈর্য, কী যে সেই নীরবতা৷৷

    এমন কয়েকটি দ্বিপদীর হাত ধরে রুমির দুনিয়ায় অনিশ্চিত যাত্রা শুরু করা যেতে পারে৷ কারণ তা তৎক্ষণাত আমাদের এই যাত্রাপথের প্রথম প্রহেলিকার সামনে হাজির করে৷ খামোশ৷ খামোশি৷ নীরব৷ নীরবতা৷ রুমির সমগ্র কাব্য জুড়ে বার বার ফিরে এসেছে এই নীরবতার দিকে যাত্রার নির্দেশ৷ জালালউদ্দিন রুমির আমার পড়া সব থেকে প্রামাণ্য জীবনী, ফ্র্যাঙ্কলিন ডি লিউয়িস-এর লেখা Rumi: Past and Present, East and West: The Life, Teaching and Poetry of Jalal al- Din Rumi ৷ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারসি সাহিত্যের বিশিষ্ট অধ্যাপক জুলি স্কট মেইসামি সে বইয়ের ভূমিকাটির শুরুই করেছেন রুমির এই পংক্তি দিয়ে - Speech that rises from the soul, veils the soul. এবার রুমির কবিতা পড়তে বসে ধন্দে না পড়ে পারি না, কবির এই বার্তা যদি অক্ষরে ও অন্তরার্থে মেনে নিই তা হলে রুমির কবিতায় শব্দরে অত্যাশ্চর্য বিন্যাস যতই আনন্দঘন উত্তেজনায় ভরপুর হোক না কেন তার গোলোকধাঁধা পার করে নীরবতার উপত্যকায় পৌঁছনই কী তন্নিষ্ঠ রুমি পাঠকের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নয়? তবে এই শব্দরাশি, এত গ.জল, চৌপদ সবই সেই অভিষ্টের পথে কুহেলিকা মাত্র? এ প্রশ্নের কোনও উত্তর আমার কাছে নেই৷ বস্ত্তত রুমির কবিতা আমাকে কখনও কোনও উত্তরে পৌঁছে দেয় না, কেবল এমনই নানা প্রহেলিকার মুখোমুখি করে৷ যদ্যপি আমরা বাঙালিরা অন্তত, আমৃত্যু অতি মুখর কবি-দার্শনিকদের এমনতরো প্রহেলিকায় একেবারে অনভ্যস্ত নই — এবার নীরব করে দাও হে তোমার মুখর কবিরে… / বহুদিনের বাক্যরাশি এক নিমেষে যাবে ভাসি / একলা বসে শুনব বাঁশি অকূল তিমিরে৷

    রুমির কবিতার অরণ্যে পথ চেনার পথে আমার সামনে আর একটা বড়ো প্রশ্ন রয়েছে৷ রুমির কবিতার মর্মোদ্ধার - এখানে রসাস্বাদন আর মর্মোদ্ধরের মধ্যে একটা সতর্ক পার্থক্য করছি - কি ইসলাম ধর্মকে গভীরে না জেনে এবং তাকে সম্পূর্ণ স্বীকার না হোক তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল বিশ্বাস ছাড়া সম্ভব? আমার মনে হয়েছে ইসলামের শ্রদ্ধাশীল উপলব্ধি অস্বীকার করে রুমির মর্মে পৌঁছনোর দাবি নাব্যতাকে স্বীকার না করে সাঁতার কাটার মতো!

    মুশকিল হল পশ্চিম থেকে, মূলত মার্কিন মুলুক থেকে যে রুমি-পাঠের প্রবল বান ডেকেছে তাতে আমরা এই প্রাচ্যেও অনেকে ভেসে যেতে শুরু করেছি৷ রসের তোড়ে ভেসে যাওয়ার একটা আনন্দ আছে বইকি, কিন্তু তাতে অবগাহন আছে কি? রুমির কবিতা থেকে কী ভাবে ইসলামকে বেছে বার করে পরিবেশন করা হচ্ছে এক শতকেরও বেশি সময় ধরে তার বেশ একটা ধারণা মেলে রো‌জ়িনা আলির লেখা প্রবন্ধ “The Erasure of Islam from the Poetry of Rumi” থেকে৷

    যখন The Christian Science Monitor-এর সৌজন্যে শুনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সব থেকে জনপ্রিয় কবি হয়ে উঠেছেন রুমি, আর যখন কোলম্যান বার্ক্‌স-এর করা রমির কবিতার ‘অনুবাদের’ একের পর এক সঙ্কলনের পাতা উল্টাই (অনুবাদ কথাটাকে উদ্ধৃতি চিহ্নে রাখলাম এই কারণেই যে বার্ক্‌স ফারসিটা একেবারেই জানেন না৷ তাঁর নিজের কথায়, তিনি ফারসি সুপণ্ডিতদের করা রুমির অনুবাদগুলিকে তাদের ‘খাঁচা থেকে মুক্তি’ দিয়ে সেগুলিকে ঝরঝরে মার্কিন ইংরেজির কবিতা করে তোলেন৷) তখন মনে বড়ো শঙ্কা জাগে - যে বাস্ত্ততন্ত্রে রুমির কবিতার প্রস্ফূটন তা থেকে উপড়ে এনে তাকে এ ভাবে আধুনিক ধর্ম-অপ্রাসঙ্গিক মাটিতে লাগিয়ে বাগান তৈরি করে সেখানে উত্তেজিত ছুটোছুটি আমাদের কতটা রুমির কাছে নিয়ে যেতে পারে?

    আমি অহোরহো পড়ি, শুনি কোলম্যান বার্ক্‌স-এর অনুবাদে রুমির কবিতা পড়ে কতো মানুষের জীবন ‘বদলে’ গিয়েছে, সদর্থক অর্থে৷ লক্ষ লক্ষ কপি তাঁর অনুবাদের এক একটি সঙ্কলনের বিক্রি৷ তা ভালো৷ কিন্তু কোলম্যান বার্ক্‌স বা তাঁর সমগোত্রীয় অনুবাদে এই বদলে যাওয়া পথ রুমির কবিতার প্রহেলিকা সঙ্কুল পথ ছেড়ে সরলীকৃত অন্য পথে চলে যাচ্ছে না তো?

    রুমির কবিতাকে তার বাস্তুতন্ত্র থেকে উপড়ে আধুনিক মানসিকতার জমিতে রোপণ করলে আর একটা সমস্যাও হওয়ার আশঙ্কা প্রবল, যদিও কোনও অজ্ঞাত কারণে সে বিষয়ে জনপ্রিয় রুমি-চর্চার মহল সম্পূর্ণ নীরব৷ তুর্কি চরিত্র আর ‘হিন্দু’ (পারসিক মধ্যযুগীয় সাহিত্যে যার অর্থ ভারতীয়, হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ নন) চরিত্রচিত্রনের বৈপরিত্যের মধ্যে যে ‘বর্ণবিদ্বেষ’ রয়েছে তা চমকে দেয়৷ একটা উদাহরণ যাক, মসনবি থেকে, যে মসনবি রুমির একেবারে শেষ জীবনের লেখা - The day of judgment is the day of the great review; Whoso is fair and enlightened longs for that review; Whoso, like a Hindoo, is black (with sin), The day of review will sound the knell of his disgrace. ৷ এ অনুবাদ এডোয়ার্ড হেনরি হুইনফিল্ড-এর৷

    কিংবা ফারসি সাহিত্যে দিক্‌পাল রেনল্ড এ নিকোলসনের অনুবাদে —

    How should (unbelieving) people veil the eyes of that peerless one (the prophet or saint)? The people have (only) blinded and distorted their own eyes. (They are) like the Indian slave who bears a grudge and kills himself to spite his master: He falls headlong from the roof of the house (in the hope) that he may have done some harm to his master.

    হার্ভাডের অধ্যাপক ও ফারসি সাহিত্যে সুপন্ডিত প্রয়াত অ্যানমারি স্কিমেল এ নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁর একটি বইয়ে - The Triumphal Sun: A Study of the Works of Jalaloddin Rumi ৷ তাঁর কথায়, ‘‘…The Hindu, always regarded as ugly, black, of evil omen (like the 'black' Saturn, theHindu of the Sky, in astrology), and as a mean servant of the Turkish emperors, is the nafs, the base soul which on other occasions is compared to an unclean black dog. ৷

    আমি হুইনফিল্ড এবং নিকোলসন-এর অনুবাদ দেখেছি৷ যে কোনও প্রামাণ্য অনুবাদ দেখুন, এমন বর্ণবিদ্বেষী কথা বেশ কিছু মিলবে রুমির লেখায়৷ কিন্তু এহ বাহ্য৷ যথাযথ বাস্ত্ততন্ত্রে রুমির কবিতার অরণ্যে প্রবেশমাত্র আমরা অনুভব করব, আরে এ তো রুমি আসলে ধার করছেন মধ্যযুগীয় পারসিক সাহিত্যের পরম্পরা থেকে৷ এ তাঁর ভারতকে না জানার বৌদ্ধিক অজ্ঞানতা, তাঁর হূদয়ের তিলমাত্র সংকীর্ণতার উদাহরণ এ সব হতে পারে না৷

    তা হলে একটু বোঝা দরকার রুমির আবাক কবিতা যে বাস্ত্ততন্ত্রে ফুটেছিল ঐতিহাসিক ভাবে, কাব্যিক ধারায়, আধ্যাত্মিক উপলব্ধির নিরিখে তা ঠিক কেমন ছিল৷

    রুমির জন্ম ১২০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর৷ তাজিকিস্তানের বক্শ শহরে কিংবা আফগানিস্তানের বল্্খ শহরে৷ অঞ্চলটা মোটামুটি একই৷ বল্‌খ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, তাই তো জালালউদ্দিন মহম্মদ বলখি৷ বাবা ছিলেন বহাউদ্দিন ওয়ালাদ৷ মা মোমেন খাতুন৷ কিন্তু একটা ব্যাপার নিশ্চিত জালালউদ্দিন ছিলেন যাকে বলে, ‘বাবার ছেলে’৷ তাঁর জীবনে যে দু’ জন ব্যক্তি সব থেকে বেশি দাগ কেটে ছিলেন তাঁদের প্রথম জন তাঁর বাবা৷ বহাউদ্দিন ছিলেন মুসলমান মৌলবি৷ খুব কেউকেটা কেউ নন৷ তবে পরম ধার্মিক৷ লিউয়িস জানাচ্ছেন, “Baha al-Din’s spiritual diaries reveal the mystical concerns which preoccupied him. They also show how much Rumi’s thinking owes to his father, born in about 1152 in Khorasan, the homeland of classical Iranian Sufism…”৷ কাজেই রুমি তাঁর বাবার কাছ থেকে দুটি জিনিস পেয়ে ছিলেন- ইসলাম ধর্মে তালিম এবং সুফিবাদের বিষয়ে আগ্রহ৷

    বহাউদ্দিন প্রয়াত হন ১২৩১ সালে৷ তুরস্কের আনাতোলিয়া অঞ্চলের কোনিয়া শহরে৷ সেখানে ধর্ম প্রচার করে বেশ কিছু শিষ্য পেয়েছিলেন তিনি৷ সঙ্গে সঙ্গে তৈরি করছিলেন পুত্র জালালউদ্দিনকেও৷ যাতে তাঁর প্রয়াণের পরে তাঁর যায়গা নিতে পারেন তাঁর সন্তান৷ কাজেই, মনে রাখতে হবে, সাধারণের শিক্ষিত আগ্রহে ইসলাম ধর্ম জানেনি জালালউদ্দিন, পুরোদস্ত্তর তালিম নিয়ে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ নিজের নখদর্পণে এনেছিলেন৷ আমরা যাঁদের এ দেশে ‘পাঁচ-বক্ত-নমাজি’ বলি, একেবারে তাই ছিলেন সারা জীবন৷ লিউয়িস লিখছেন, "Rumi himself states in one of his letters (Mak 227) what should be obvious to any careful reader of his poems: he performed the five obligatory prayers that constitute one of the central tenets and requirements of an observant Muslim. Other sources indicate that Rumi performed the pilgrimage to Mecca with his father and not only observed the obligatory period of fasting during the month of Ramadan, but also pursued ascetic exercises and voluntary fasting at other times of the year, as well."৷ তবে এও মনে রাখা দরকার যে তিনি হানফি সুন্নি ছিলেন, ধার্মিক আইন মেনে চলার ক্ষেত্রে যাঁদের মধ্যে কড়াকড়িটা অপেক্ষাকৃত কম বলেই মনে করা হয় বরাবর৷ বাবা মারা যাওয়ার পর, তাঁর গুরুভার নিজে নিয়ে রুমি হলেন তিনি৷ ওই আনাতোলিয়া অঞ্চলকে তখন বলা হত ‘রুম’, সে অঞ্চলের মানুষ, তাই রুমি৷

    ইসলাম তাঁর কবিতার ছত্রে ছত্রে৷ রুমির কবিতার গহন অরণ্যে দিক্নির্ণয় করতে হলে ইসালম সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল জ্ঞান যে অনেকটা সাহায্য করতে পারে সে বিষয়ে রুমির লেখালিখি যতই পড়ছি ততই আমার মনে সন্দেহ কমছে৷ আর এও বুঝতে পারছি এই জানার ক্ষেত্রে আমার চূড়ান্ত দৈন্য আমাকে কোনও দিনই এ অরণ্যে নিশ্চিন্ত পথিক হতে দেবে না৷ রুমির যে সব লেখালিখির মধ্যে ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কোরানের প্রভাব সব থেকে বেশি তার নাম মসনবি-ই-মনওয়ি৷ ছয় খণ্ডের এক মহাকীর্তি৷ এই মহাসৃষ্টি যাঁদের জীবন দর্শন বদলে দিয়েছে তাঁদের মধ্যে একজন অল্লামা মহম্মদ ইকবাল৷ তাঁর দার্শনিক কাব্যগ্রন্থ অ্যাসরর-ই-খুদি৷ আর সেখানেই রুমিকে নিজের ‘শেখ’ বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন ইকবাল৷ আর যেমনটা আমাদের জানাচ্ছেন লিউয়িস, Iqbal regarded the Masnavi as the second most important book, after the Koran, and advised Muslim intellectuals to read it.৷ এই শেখ-এর ভূমিকার শ্রেষ্ঠ স্বরূপ আমরা শিহরণ জাগানো কাব্যরূপে পেয়ে যাচ্ছি ১৯৩২ সালে ইকবালের ফারসি ভাষায় লেখা ম্যাগনাম ওপাস ‘জাভেদ নামা’-য়৷ সৌভাগ্য, তা এখন বাঙালির একেবারে নাগালে৷ এই আশ্চর্য কেতাবের পূর্ণ অনুবাদ করেছেনে শঙ্খ ঘোষ ‘ইকবাল থেকে’ (প্রকাশক প্যাপিরাস) শিরোনামে৷ এ অনুবাদ পাঠ এক পরম অভিজ্ঞতা৷ আর আমাদের আলোচ্য প্রসঙ্গে, রুমির অরণ্যে খেই পাবার এক অত্যন্ত জরুরি সহায়ক৷

    ইরানের দার্শনির সুপন্ডিত মহম্মদ তাকি জাফরি হিসেব করেছেন মসনবির ২২০০টি কবিতার সঙ্গে কোরানের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে৷ লিউয়িস সঠিক ভাবেই বলছেন সংখ্যাটা বড়ো কথা নয়, ভাবটাই আসল নির্ণায়ক - No precise reckoning is needed to realize that Rumi’s allusions to the Islamic scriptural tradition are frequent and recurrent, and that a great many of his serious readers find this a matter of central importance. ৷ আর মনে রাখতে হবে এ হেন মসনবি রুমি রচনা করছিলেন জীবনের পরিপূর্ণতায় এসে৷ কেমন তরো কবিতা এ হেন মহাসৃষ্টির? লিউয়িসের নিজেরই অনুবাদে এক বিন্দু এ রকম —

    The Reed’s Song

    1. Listen
    as this reed
    pipes its plaint
    unfolds its tale
    of separations:

    2.
    Cut from my reedy bed
    my crying
    ever since
    makes men and women
    weep

    3.
    I like to keep my breast
    carved with loss
    to convey
    the pain of longing --

    4.
    Once severed
    from the root,
    thirst for union
    with the source
    endures

    5.
    I raise my plaint
    in any kind of crowd
    in front of both
    the blessed and the bad

    6.
    For what they think they hear me say, they love me --
    None gaze in me my secrets to discern

    7.
    My secret is not separate from my cry
    But ears and eyes lack light to see it.

    8.
    Not soul from flesh
    not flesh from soul are veiled,
    yet none is granted leave to see the soul.

    9.
    Fire, not breath, makes music through that pipe --
    Let all who lack that fire be blown away.

    10.
    It is love's fire that inspires the reed
    It's love's ferment that bubbles in the wine

    11.
    The reed, soother to all sundered lovers --
    its piercing modes reveal our hidden pain:

    12.
    (What's like the reed, both poison and physic,
    Soothing as it pines and yearns away?)

    13.
    The reed tells the tale of a blood-stained quest
    singing legends of love's mad obsessions.

    14.
    Only the swooning know such awareness
    only the ear can comprehend the tongue

    15.
    In our sadness time slides listlessly by
    the days searing inside us as they pass.

    16.
    But so what if the days may slip away?
    so long as you, Uniquely Pure, abide.

    17.
    Within this sea drown all who drink but fish
    If lived by bread alone, the day seems long

    18.
    No raw soul ever kens the cooked one's state
    So let talk of it be brief; go in peace.

    19.
    Break off your chains
    My son, be free!
    How long enslaved
    by silver, gold?

    20.
    Pour the ocean
    in a pitcher
    can it hold more
    than one day's store?

    21.
    The jug, like a greedy eye,
    never gets its fill
    only the contented oyster holds the pearl

    22.
    The one run ragged by love and haggard
    gets purged of all his faults and greed

    23.
    Welcome, Love!
    sweet salutary suffering
    and healer of our maladies!

    24.
    cure of our pride
    of our conceits.
    Our Plato
    Our Galen!

    25.
    By Love
    our earthly flesh
    borne to heaven
    our mountains
    made supple
    moved to dance

    26.
    Love moved Mount Sinai, my love,
    and it made Moses swoon [Koran7:143]

    27.
    Let me just touch those harmonious lips
    and I, reed-like, will tell what may be told

    28.
    A man may know a myriad of songs
    but cut from those who know his tongue, he's dumb

    29.
    Once the rose wilts and the garden fades
    the nightingale will no more sing his tune.

    30.
    The Beloved is everything -- the lover a veil
    The Beloved's alive -- the lover carrion.

    31.
    Unsuccored by Love, the poor lover is
    a plucked bird

    32.
    Without the Beloved's
    surrounding illumination
    how perceive what's ahead
    and what's gone by?

    33.
    Love commands these words appear;
    if no mirror reflects them
    in whom lies the fault?

    34.
    The dross obscures your face
    and makes your mirror
    unable to reflect.

    বিষয়টা নিয়ে একটু বেশিই সময় দিলাম, কারণ ‘জ্ঞানমার্গে’-র কোরান-নির্ভর রুমির লেখালিখিতে সাঁতরে ‘রসমার্গের’ রুমির মহাসাগর পার হওয়া যাবে না, এমনতরো যুক্তি বেশ চলে আজকাল৷ এই যুক্তিকে রুমির কবিতার একটি অতি ক্ষুদ্র অংশের সরলীকৃত পাঠের ফলে বিভ্রান্তিকর বিপদ বলেই আমার মনে হয়েছে৷

    জন্মের কিছু বছর পরেই গভীর রেখাপাত করার মতো একটি অভিজ্ঞতা হয়েছিল জালালুদ্দিনের জীবনে— ঘরছাড়া হওয়া৷ ঠিক কবে এই অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা নিয়ে ধন্ধ আছে৷ রুমির পুত্র সুলতান ওয়ালাদ আমাদের জানাচ্ছেন তাঁর ঠাকুদ্দা আর বাবা পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্যের সঙ্গে কোনিয়ায় হাজির হয়েছিলেন ১২২৯ সালে৷ তা হলে তাঁরা বক্শ বা বল্খ ছাড়লেন কবে? সুলতান ওয়ালাদ এবং রুমির আরও বহু সাবেকি জীবনীকার মনে করেন ১২২০ সাল নাগাদ ওই অঞ্চলের ওপর ভয়াবহ মোঙ্গল আক্রমণ শুরু হওয়ায় বাধ্য হয়ে দেশ ছাড়া হয়েছিলেন বহাউদ্দিন ও জালালউদ্দিন৷ যদি তাই হয়, তা হলে বলতে হবে মাত্র ১৩ বছর বয়স নাগাদ যুদ্ধাক্রান্ত শরণার্থী হতে হয়েছিল জালালউদ্দিনকে৷ লিউয়িস এই সাল-তারিখের হিসেব মানেন না৷ তাঁর যুক্তি, যদি মোঙ্গোলদের বিধ্বংসী হামলা থেকে রক্ষা পাওয়াই বহাউদ্দিনের উদ্দেশ্য হতো তাহলে তিনি নিজের মেয়ে ও পরিবারের অন্যান্য মহিলাকে রেখে যেতেন না৷ তাঁর মতে ১২১২ সাল নাগাদ বক্শ ছেড়ে ২৫০ কিলোমিটার সমরকন্দ শহরে চলে যান বহাউদ্দিনের পরিবার৷ এ শহর আজ উজবেকিস্তানে৷ সেখান থেকে তিনি সপরিবারে চলে যান খোরাসান, তারপর সেখান থেকে আজকের ইরানের নিশাপুর, মার্ভ অল-রুদ হয়ে দক্ষিণে আফগানিস্তানের হেরাট ছুঁয়ে ইরাকের বাগদাদ৷ বাগদাদ থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরবর্তী কুফা শহর হয়ে মক্কায় হজ সেরে সেখান থেকে কোনও এক সময়ে কোনিয়া৷ লিউয়িসের মতে বহাউদ্দিনের বক্‌শ ছাড়ার কারণ স্থানীয় শাসকের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি, এমনকী সম্ভবত গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা৷ মোট কথা, ঠিক শখ করে দেশত্যাগী হননি বহাউদ্দিন৷ এবার কল্পনা করুন৷ দশ-বারো বা হয়তো তার থেকেও ছোটো একটি শিশু মাকে, দিদিকে পরিবারের আরও অনেক কে পিছনে ফেলে বাবার সঙ্গে পালাচ্ছে দেশ ছেড়ে, তারপর কখনও হেঁটে, কখনও উটের পিঠে পাহাড়-পর্বত, মরুভূমি ডিঙিয়ে ডিঙিয়ে শহর থেকে শহরে, চলেছে তো চলেছেই৷ নতুন দেশ, নতুন মানুষ, নতুন ভাষা, আদব-কায়দা, খাদ্যাভ্যাস, সংস্কৃতি৷ জালালউদ্দিনের নবীন মনে কী ছাপ রেখে গিয়েছিল এই অভিজ্ঞতা? কবিতায় কোনও ছাপও রেখে গিয়েছে কি? কোনও রুমি বিশারদই ঠিক এই দৃষ্টিকোণ থেকে রুমি পাঠ করেছেন বলে আমার চোখে পড়েনি৷ করলে রুমি পাঠে আর একটা মাত্রা হয়তো যুক্ত হতে পারে৷

    কিন্তু জালালউদ্দিনের এই দীর্ঘ পথের একটা শহরে আমাদের একবার দাঁড়াতেই হবে তাঁর কবিতা যে বাস্ত্ততন্ত্রে ফুটেছিল তার কাব্যিক পরম্পরাটা একটু অন্তত ছুঁয়ে যেতে৷ আজকের পূর্ব ইরানের খোরাসান প্রদেশের নিশাপুর৷ এই ফিরো.জ-রঙা আকাশের ছোট্ট শহরে দু’ জনের সমাধির পাশে দু’ দণ্ড নীরবে দাঁড়ানোর সুযোগ আমার হয়েছে৷ আবু’ল ফতহ্ ওমর ইব্‌ন ইব্রাহিম অল-খইয়ামি, ওরফে ওমর খইয়াম, একাদশ শতকের গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিদ ও কবি, এবং আবু হামিদ বিন বক্‌র ইব্রাহিম, ওরফে ফরিদউদ্দিন আত্তর, দ্বাদশ শতকের শেষার্ধ ও ত্রয়োদশ শতকের প্রথমার্ধের কবি৷ অনির্বচনীয় সে অভিজ্ঞতার কথা আমার ইরান ভ্রমণ কাহিনিতে (ইরানে৷ দীপ প্রকাশন) লিখেছি৷ কাজেই এখানে থামব না সে জন্য৷ থামব এই জন্য যে রুমির ওপর যে কবির - কবি কথাটায় জোর দিচ্ছি - প্রভাব পড়েছিল সব থেকে গভীরে তিনি আত্তর৷

    আত্তর বিশেষ পরিচিত তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থের জন্য - মুন্তিক উত-তয়ের৷ Conference of the Birds৷ পাখিদের সম্মিলন৷ ইংরেজিতে পড়েই মনে হয়েছে রুদ্ধশ্বাস (Penguin Classics)৷ ১১৭৭ সালে প্রকাশিত এই বই আজও চ্যালেঞ্জ করে সৃষ্টিশীল মানুষকে৷ যেমন, তার নাট্যরূপ দিয়েছেন পিটার ব্রুক৷ আর বলেছেন, “There are very few masterpieces in the world which have gone beyond subjective experience that really touches something that involves a real witness of man’s essential experience… Conference has always been a challenge because it goes beyond one’s capacity to penetrate it completely. Nobody can completely take hold of it… it’s inexhaustible.”

    বহাউদ্দিন আর জালালউদ্দিনের সঙ্গে কি নিশাপুর পেরনোর সময় এই মহাকবির দেখা হয়েছিল? কিংবদন্তি এরকম - দলবল নিয়ে আসছেন বহাউদ্দিন, পিছনে গুটিগুটি পায়ে ছোট্টো জালালউদ্দিন৷ আত্তর দেখছেন৷ ঘুরে বললেন এক শাগির্দকে - ওই দেখ, সমুদ্র আসছে পিছনে মহাসাগরকে নিয়ে!! লিউয়িস বিশ্বাসী নন এ সাক্ষাতের বর্ণনায়৷ নাই হোন, সুফি কাব্যের শ্রেষ্ঠ ঘরানার জোব্বা যে আত্তরের পরে রুমিই পরেছিলেন তা নিয়ে বিশেষ তর্ক নেই৷ তাই আমার মনে হয় আত্তরের মতো রুমির কাব্যও ‘সম্পূর্ণ আয়ত্তে আনতে পারেন না কেউ’৷ আর রুমির কাব্যের অরণ্যে প্রবেশের আগে আত্তরের অন্যান্য লেখা না হোক অন্তত মুন্তিক উত-তয়ের পড়া থাকলে সে অরণ্যের অন্য এক চেহারা দেখা যেতে পারে৷

    এবারে আমরা এগোতে পারি নিশাপুর ছেড়ে জালালউদ্দিনের সঙ্গে দীর্ঘ পথ ধরে৷ আর এমনটা ভাবতেও পারি যে রুমির কাব্য হয়তো এক দিকে এই বহু দূর বাইরে বেরিয়ে পড়া আর অন্য দিকে বহু গভীরে অন্তরে প্রবেশ করার এক পরমাশ্চর্য আদান প্রদান৷ আমরা জানি মুন্তিক-এর পাখির দল তো এমন দুমুখী যাত্রাতেই বেরিয়ে পড়েছিল৷ অবশ্য আমরা বাঙালিরা আরও কাছের করে জানি —

    আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে, দেখতে আমি পাইনি৷
    তোমায় দেখতে আমি পাইনি৷
    বাহির পানে চোখ মেলেছি, আমার হূদয়-পানে চাইনি৷

    ভালো কথা, রবীন্দ্রনাথের মতো এমন টইটই করে দুনিয়া চষা কোনও ভারতীয় কবির কথাও আমার জানা নেই৷ রুমির প্রায় সমসাময়িক বহুধা প্রবাহিত আমির খুসরো-ও লাগাম কষে টগবগিয়ে ভারতের নানা প্রান্তে দৌড়ে বেড়িয়েছেন সুলতানদের পিছন পিছন৷ রুমির কবিতার এই বহিরগামী ও অন্তরমুখী যাত্রার কথা বিশেষ করে লিখেছেন অ্যানমারি স্কিমেল - রুমির কবিতায় "Life is a constant journey, a journey that entails separation for the sake of union… No drop could dream of being transformed into a pearl unless it had taken upon itself the hardships of the journey."৷ নিজেই অনুবাদ করে স্পষ্ট করেছেন উদাহরণ —

    Oh! If a tree could wander
    and move with foot and wings!
    It would not suffer the ax-blows
    nor feel the pain of saws!
    For if the Sun did not wander
    away in every night -
    How could at ev’ry morning
    the world be lighted up?
    And if the ocean’s water
    did not rise to the sky
    How would the plants be quickened
    by streams and gentle rains?
    The drop that left its homeland,
    the sea, then returned -
    It found an oyster waiting
    and grew into a pearl.
    Did Yusuf not leave his father
    in grief, and tears and despair?
    Did he not, by such a journey,
    gain kingdom and fortune wide?
    Did not the Prophet travel
    to far Medina, friend?
    And there found a new kingdom
    and ruled a hundred lands.
    You lack a foot to travel?
    Then journey into yourself,
    and like a mine of rubies
    receive the sunbeams’ print!
    Out of yourself -- such a journey
    will lead you to your self,
    it leads to transformation
    of dust into pure gold!
    Leave bitterness and acid,
    go forth to sweetness now!
    For even brine produces
    a thousand kinds of fruits.
    It is the Sun of Tabriz
    That does such wondrous work,
    for every tree gains beauty
    when touched by the Sun.

    আর এই কবিতা বেয়ে আমরা ঢুকে পড়বো রুমির কবিতার অরণ্যের গভীরতম প্রহেলিকাকীর্ণ অংশে৷ ত্যাবরি.জ-এর সূর্য, শাম্‌স-ই-ত্যাবরি.জ৷ কাব্যগ্রন্থটির নাম দিওয়ান-এ-শাম্্স-এ-তবরি.জি৷ প্রহেলিকার শুরু নাম দিয়েই৷ সুফি সাহিত্যে তো বটেই এমনকী সামগ্রিক বিশ্বসাহিত্যেও সাড়ে সাতশো বছর পার করেও এত বিপুল ভাবে চর্চিত, এবং শুধু পণ্ডিত আর নিখাদ কবিতা প্রেমীদের মধ্যেই নয়, জ্যাজ-পপ-রক সঙ্গীত থেকে জাতি, ধর্ম, বয়স, লিঙ্গ, দেশ নির্বিশেষে হোয়াট্সঅ্যাপ বা ফেসবুকে কবিতা আদান প্রদান করনেওয়ালাদের মধ্যেও, এমন জীবন্ত আর কোনও একটি কাব্যগ্রন্থ আছে বলে আমার জানা নেই৷ ‘দিওয়ান’ হল কবিতা সংকলন৷ কাজেই ‘দিওয়ান-এ-শাম্‌স-এ-ত্যাবরি‌জ়ি’-র বাংলা ‘শাম্‌স-ই-ত্যাবরিজ়-এর কবিতা-সংকলন’৷ ভুল নয়৷ কিন্তু ঠিক নয়৷ এর একটি কবিতাও শাম্‌স-এর লেখা নয়৷ আরও আশ্চর্য! ফারসি বা উর্দু গজ়লে কবি প্রায়শই এক্কেবারে শেষে এসে নিজের নাম উল্লেখ করে দেন৷ কাজেই আর ধন্দ থাকে না গ.জলটি কার৷ একে ‘তখল্লুস’ বলে৷ উইলিয়াম চিটিক জানাচ্ছেন দিওয়ান-এ ৩২০০টি গ.জলের প্রায় এক তৃতীয়াংশের তখল্লুস হল শাম্‌স! সাহিত্যের ইতিহাসে এমন উদাহরণও কী আর আছে? আমার জানা নেই৷ কেন রুমি এ কাণ্ড করলেন? সে এক বিপুল বিতর্ক-কণ্টকিত গবেষণা৷

    কেমন এ কাব্যগ্রন্থের কবিতা? একটা নমুনা আমরা একটু আগেই পড়েছি - Oh! If a tree could wander… ৷ নিকোলসনের অনুবাদে আর একটি গজ়ল এ রকম —

    What is to be done, O Moslems? for I do not recognize myself.
    I am neither Christian, nor Jew, nor Gabr, nor Moslem.
    I am not of the East, nor of the West, nor of the land, nor of the sea;
    I am not of Nature's mint, nor of the circling' heaven.
    I am not of earth, nor of water, nor of air, nor of fire;
    I am not of the empyrean, nor of the dust, nor of existence, nor of entity.
    I am not of India, nor of China, nor of Bulgaria, nor of Saqsin
    I am not of the kingdom of 'Iraqian, nor of the country of Khorasan
    I am not of the this world, nor of the next, nor of Paradise, nor of Hell
    I am not of Adam, nor of Eve, nor of Eden and Rizwan.
    My place is the Placeless, my trace is the Traceless ;
    'Tis neither body nor soul, for I belong to the soul of the Beloved.
    I have put duality away, I have seen that the two worlds are one;
    One I seek, One I know J One I see, One I call.
    He is the first, He is the last, He is the outward, He is the inward;
    I know none other except 'Ya Hu' and 'Ya man Hu.'
    I am intoxicated with Love's cup, the two worlds have passed out of my ken ;
    I have no business save carouse and revelry.
    If once in my life I spent a moment without thee,
    From that time and from that hour I repent of my life.
    If once in this world I win a moment with thee,
    I will trample on both worlds, I will dance in triumph for ever.
    O Shamsi Tabriz, I am so drunken in this world,
    That except of drunkenness and revelry I have no tale to tell.

    এই কবিতার একটা ছোট্টো টীকা দেওয়া প্রয়োজন এই অর্থে যে এখানে সমস্ত আত্মপরিচয় টপকে পরমেশ্বরে বিলীন হওয়ার যে আকুতি রয়েছে তা সুফি ‘জ়িক্‌র’ বা প্রার্থনার একটি অন্যতম উচ্চারণ ঘিরে - ইয়া হু৷ এবং ইয়া মন হু৷ যার সঙ্গে কোরানের যোগাযোগ একটু বুঝে নিতে আমরা দেখে নিতে পারি একটি প্রাসঙ্গিক অভিধানে ‘হু’ কথাটির এন্ট্রি —
    HU, HUWA
    The personal pronoun of the third person, singular, masculine, HE, i.e. God, or He is. It occurs in the Qur’an in this sense, e.g. Surah iii, 1. Allahu la ilaha illa Huwa, “God there is no god but HE,” which sentence is called the nafy wa isbat (or that which is rejected), “there is no god,” and that which is affirmed, “but He.” The word is often used by Sufi mystics in this form: ya hu, ya hu, ya man la ya’lamu ma hu illa hu, “O He (who is), O He (who is), O He whom no one knows what He Himself is but Himself.” Some commentators have supposed the word Hu to stand for the exalted name of God, the Ismu ‘l-a’zam, which Muslim doctors say is only known to God."

    এক্ষণে আমরা রুমির কাব্য-অরণ্যে বুঝিবা বৃত্তাকারে ঘুরে ফিরে এলাম সেই শুরুর বিন্দুতে — জ়িক্‌র-এর প্রসঙ্গ ওঠা মাত্র। সুফি দর্শনে ‘জ়িক্‌র’-এর অর্থ গভীর ও বহুস্তরীয়। একেবারে সরলীকৃত বাংলায় তাকে ‘জপ’ বলা গেলেও যেতে পারে। ঈশ্বরের বহু নাম স্মরণ করে উচ্চারণ উচ্চকণ্ঠে বা মৃদুস্বরে, ক্রমাগত প্রার্থনা। এই জ়িক্‌র সুফি সাধনার ওতপ্রোত অঙ্গ। বাংলায় যাকে ‘জিকির’ বলেও আমরা জানি। এবার যদি ফিরে পড়ি —

    জ়িক্‌রস্ত্ কমন্দ-ই-বস্‌ল-ই-মহবুব
    খামোশ কে জোশ করদ সওদা৷৷

    যদি অনুবাদ করি — পরান সখায় বিলীন হওয়ার ফাঁসই জিকির / নীরব হও, উথলে উঠেছে আবেগ অধীর।। (কারণ ফারসি অভিধান এও বলছে, ‘বস্‌ল’ শব্দের অর্থ হতে পারে — Union; joining, coupling; conjunction; attaching)। যদি ফাঁসকে নঞর্থক ভাবে না ভেবে, ভাবি একটা অর্বাচীন অস্তিত্বের শেষের নিমিত্ত?

    এই দুই, এবং সম্ভবত আরও অনেক ‘অর্থের’ মোড়ে দাঁড়িয়ে কে দেবে সঠিক পথের নির্দেশ? রুমি তো নীরব হয়েছেন। কিংবা যদি ভাবি, পথ ভুলে ফিরে মরাতেই রুমির কাব্য অরণ্যে প্রবেশের অন্তিম সার্থকতা?

    নিকোলসনের কবিতার শেষের রেশ ধরে প্রশ্ন করা যেতে পারে— কে এই শাম্‌স-ই-ত্যাবরিজ়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে ২০১৫ সালের নভেম্বরে হাজির হয়ে ছিলাম ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে ৮০০ কিলামিটার উত্তরে পশ্চিম আ‌ে.জরবইজান প্রদেশের ছোট্টো একরত্তি রাজধানী শহর খোই-তে৷

    ‘টোপের গন্ধ পরাস্ত করল ফাঁদের ভীষণ কষ্টকে৷ নইলে তো অস্তিত্বই অসম্ভব হত৷’

    মোর্তাজ়া ব্যারিন যখন ভারি অবাক হয়ে আমাকে ই-মেলে প্রশ্ন করলেন - খোইতে তো সাধারণত মুসাফিররা আসে না৷ তুমি হঠাৎ? উত্তরে আমি এই উদ্ধৃতিটি পাঠিয়ে লিখেছিলাম - বেঁচে থাকার এই আশ্চর্য বিস্ফোরণ যাঁর উচ্চারণে তাঁর সমাধিতে একবার যাবো না, তা কি হয়? শাম্‌স অল-দিন মহম্মদ৷ ওরফে শাম্‌স-ই-ত্যাবরিজ়৷ মোর্তাজ়ার মনে ধরেছিল আমার উত্তর৷ ইন্টারনেটেই তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব৷মোর্তা.জা হলেন In-Charge of the International Affairs and Relationships of the Trustee of Shams-i-Tabriz ছিলাম তাঁর বাড়িতেই৷ অতঃপর দীর্ঘতর কথোপকথন৷ তাঁর সাথে, তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে৷ উত্তরের খুব একটা কাছাকাছি পৌঁছতে পারিনি৷ আমি তো কোন ছার অ্যানমারি স্কিমেলও হার মেনেছেন এই খোঁজে, "Very little is known about the historical Shams - indeed, some have even doubted that he was a real person… Modern scholarship has made little headway in explaining who Shams was or how he was able to play such a decisive role in Rumi’s life, though a good number of theories have been advanced."৷ বলা হয় তিনি খোইয়ের কাছেই পূর্ব আ‌ে.জরবইজান প্রদেশের ত্যাবরিজ় অঞ্চলের মানুষ৷ গিয়ে দেখেছি সেখানেও৷ হদিশ মেলেনি৷ বলা হয় মারা গিয়েছিলেন খোই-তে৷ ১২৪৮ সালে৷ সেখানে রয়েছে তাঁর সমাধি৷ তবে এও তো বলা হয় যে ক্রুদ্ধ রুমির ছাত্ররাই তাঁকে খুন করেছিলেন, যদিও চিটিক-এর মতো সুপণ্ডিত গবেষক তা মানতে রাজি নন, কারণ কোনও প্রমাণ নেই৷ যদিও কোনিয়াতেও রয়েছে শাম্‌সের সমাধি!

    খোই পৌঁছেই শাম্‌স-এর সমাধিতে যাওয়ার জন্য মন ছটফট করছিল৷ কেমন মানুষেরা সেখানে যান? মানত করেন? এখানেও কী গলা ছেড়ে কাওয়ালি হয় সারাক্ষণ? সুতো বাঁধা হয় নানা রঙের? প্রদীপ, ধূপের ধোঁয়া, প্রার্থনার আকুল মাদকতা?

    ঘণ্টাখানেকের মধ্যে যেমন অবাক হয়েছিলাম, তেমনটা জীবনে খুব কম হয়েছি৷ ঝকঝকে তকতকে একটা ছোটোখাটো খোলা পার্ক৷ ঢোকার মুখেই শাম্‌স-এর একটা সুন্দর আবক্ষ মুর্তি৷ পার্কের মাঝামাঝি সম্পূর্ণ নিরাভরণ, কোনও কারুকার্যহীন সমাধি-পাথর৷ পিছনে একটা প্রাচীণ মিনার, যার সঙ্গে আসলে এ সমাধির কোনও যোগাযোগ নেই৷ কোনও দরগা নেই৷ কাওয়ালি, প্রদীপ, ধূপ, ধুনো, মানতের সুতো - কিচ্ছু নেই৷ অথছ সুফি দুনিয়ার অন্যতম পবিত্র পীঠস্থান! আমার মুখ দিয়ে কথা সরে না৷ বহুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি৷ ধীরে ধীরে মনের মধ্যে একটা খুব পরিচিত গানের লাইন ভেসে ওঠে৷ শাম্‌স-এর জীবন, তাঁর শিক্ষার সঙ্গে এটাই তো মানানসই৷ ফুলের মালা, দীপের আলো, ধূপের ধোঁয়া থেকেই তো সারা জীবন পালিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি৷ তাঁর যে ‘মকালত’, বিভিন্ন শিষ্য ও রুমির সঙ্গে নানা কথোপকথনের যে প্রতিলিপি, তার নির্যাসই তো তাই৷ লিউয়িস লিখছেন, "Shams, as revealed in his Maqalat, was an eclectic person who listened to many thinkers and Sufis without being particularly attached to any of them. Shams was not the type to fit in easily and formally join an order."

    এই আমরা প্রবেশ করলাম আমাদের রুমি সফরের অন্তিম অধ্যায়ে৷ মকালত৷ রুমির কাব্যের অরণ্যে পথ খোঁজার জন্য এটি হাতে রাখতেই হবে৷ সৌভাগ্য সেটি এখন ফারসি ও সুফিবাদের দিকপাল পন্ডিত অধ্যাপক উইলিয়াম চিটিক-এর অনুবাদে ইংরেজিতেই সম্পূর্ণ ভুল নামে সহজলভ্য - "Me and Rumi: The Autobiography of Shams-i-Tabrizi."৷ চিটিকের মতো মানুষ এ নাম কেন রাখলেন জানি না, কারণ এ আদপেই শাম্‌সের আত্মজীবনী নয়৷ মোরতাজ়াকে যে পঙক্তিটি উদ্ধৃত করেছিলাম, যার পূর্ণ অর্থের অনুধাবন করতে একটা গোটা জীবন কেটে যেতে পারে, তা এই সঙ্কলনের একটি বাক্য মাত্র! শাম্‌সের কথা৷

    নিকলসন জানাচ্ছেন ১২৪৪ সালের ২৮ নভেম্বর কালো খসখসে একটা কম্বল জড়িয়ে বিচিত্র এই চরিত্রটি কোনিয়ার বাজারে হাজির হয়েছিলেন৷ চিটিক বলছেন, না ১১ অক্টোবর৷ লিউয়িসের মতে ২৯ নভেম্বর৷ তবে বছরটা ১২৪৪-ই৷ বয়স তখন তাঁর ষাঠ৷ সাঁয়ত্রিশ বছরের রুমি তখন ডাকাবুকো পণ্ডিত৷ বহু শিষ্য৷ বাজারে দেখা দু’জনার৷ সুফি বিশ্বাসে ‘সহসা’ বা ‘হঠাৎ’ বলে কিছু নেই৷ প্রতিটি তুচ্ছাতিতুচ্ছ ঘটনার পিছনেও কোনও গূঢ় কারণ রয়েছে, মনে করেন সুফিরা৷ এর সত্যাসত্য আমার জানা নেই৷ কাজেই সে সাক্ষাৎ কতটা ‘সহসা’ ছিল তা বিতর্কের বিষয়৷ কিন্তু সকলেই জানেন এই সাক্ষাতের পরে বদলে গেলেন রুমি মানুষটাই৷ চুলোয় গেল অধ্যাপনা৷ দিন নেই রাত নেই শুধু কবিতা আর গান আর উদ্দাম নাচ৷ সুফি ভাষায় - সমা৷ আর শাম্‌স-এর সঙ্গে গভীর কথপোকথন৷ ছাত্ররা ভিষণ বিরক্ত৷ এই ভাবে কাটল দু’ বছর৷ তার পর হঠাৎ বেপাত্তা হয়ে গেলেন শাম্‌স৷ আকাশ ভেঙে পড়েছিল রুমির মাথায়৷ পাগল হয়ে উঠলেন৷ শেষে তাঁর পুত্র সুলতান ওয়ালাদ তন্ন তন্ন করে খুঁজতে খুঁজতে সিরিয়ার আলেপ্পো থেকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ফের ধরে আনলেন শাম্‌সকে৷ কিন্তু কয়েক মাসের জন্যই৷ ১২৪৭-এ চির কালের মতো কোনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন শাম্‌স৷ রুমির কলম থেকে ঝরে পড়ল ‘দিওয়ান-এ-শাম্‌স-এ-ত্যাবরি‌জ়ি’৷

    কিংবদন্তি বলে রুমি নাকি একবার বলেছিলেন, ‘‘আমার জীবনের ফল নয় তিনটি কথার বাড়া / কাঁচা , রান্না , পোড়া৷’’ এ কথা কোনও প্রামাণ্য সঙ্কলনে পাইনি৷ কিন্তু যা পেয়েছি তা জ্বলন্ত —
    হাসিল অজ়-ইন সেহ্ সুখনম বাইশ নিস্ত্
    সোখত্যাম ওয়্যা সোখত্যাম ওয়্যা সোখত্যাম৷৷
    শুধু এই তিন কথা ছাড়া পরিণতি আর কোনও কিচ্ছুটি নেই
    জ্বলে গেছি আমি, পুড়ে গেছি আমি, জ্বলেপু‌ড়ে গেছি৷৷

    পুড়ে পুড়ে সেই ধূপ ৭৭১ বছর পরেও কবিতার গভীর অরণ্যে গভীরতর গন্ধ ঢেলে আমাদের পাগল করে রেথেছে৷ এ প্রহেলিকা নয়?





    • দিওয়ান-এ-শাম্‌স-এ-তবরি‌জ়ি৷ গজ়ল ১২৭৷ বদিলুজ্জমান ফরুজানফর সম্পাদিত মূল ফারসি সংস্করণ-এর ইন্টারনেট সংগ্রহ থেকে৷ (সূত্র)

    • অনুবাদ - William Chittick৷ (সূত্র ১, সূত্র ২)

    • দিওয়ান-এ-শাম্‌স-এ-তবরি‌জ়ি৷ গজ়ল ২৬০১৷ বদিলুজ্জমান ফরু়জানফর সম্পাদিত মূল ফারসি সংস্করণ-এর ইন্টারনেট সংগ্রহ থেকে৷ (সূত্র)

    • অনুবাদ - William Chittick৷ (সূত্র ১, সূত্র ২)

    • আমার অনুবাদ৷ হোশিয়ার শব্দের আভিধানিক অর্থ Be careful, be alert৷ আর স্মর্তব্য - ‘ওরে সাবধানী পথিক, বারেক পথ ভুলে তুমি মরো ফিরে’!

    • Oneworld Publications. Kindle Edition.(সূত্র) - The New Yorker, January 5, 2017৷

    • Rumi, Maulana Jalalu-'d-din Muhammad. The Masnavi I Manavi of Rumi Complete 6 Books (p. 32). OrangeSky Project. Kindle Edition.

    • Reynold A. Nicholson. The Mathnawi Of Jalaluddin Rumi. Volume II. Cambridge University Press. Kindle Locations 4466-4468.

    • The Triumphal Sun: A Study of the Works of Jalaloddin Rumi State University of New York Press. Kindle Locations 2885-2886.

    • Lewis, Franklin D.. Rumi - Past and Present, East and West: The Life, Teachings, and Poetry of Jalal al-Din Rumi (Kindle Locations 1624-1625). Oneworld Publications. Kindle Edition.

    • Lewis, Franklin D. Rumi - Past and Present, East and West: The Life, Teachings, and Poetry of Jalâl al-Din Rumi (Kindle Locations 896-898). Oneworld Publications. Kindle Edition.

    • আমি পড়ি নিকলসনের ইংরেজি অনুবাদে - The Secrets of the Self, ম্যাকমিলন

    • Lewis, Franklin D.. Rumi - Past and Present, East and West: The Life, Teachings, and Poetry of Jalâl al-Din Rumi (Kindle Locations 13694-13695). Oneworld Publications. Kindle Edition.

    • Lewis, Franklin D. Rumi - Past and Present, East and West: The Life, Teachings, and Poetry of Jalâl al-Din Rumi (Kindle Locations 328-329). Oneworld Publications. Kindle Edition.

    • Lewis, Franklin D. Rumi - Past and Present, East and West: The Life, Teachings, and Poetry of Jalâl al-Din Rumi (Kindle Locations 10274-10275). Oneworld Publications. Kindle Edition.

    • Rumi's World: The Life and Works of the Greatest Sufi Poet. Shambhala Publications.

    • Ghazal XXXI. Selected poems of from the Diwan-i-Shams-i-Tabrizi of Maulana Jalaluddin Rumi. Translated and introduced by R.A. Nicholson. Ibex Publishers. P 125.

    • Hughes, Thomas Patrick, 1838-1911. A dictionary of Islam; being a cyclopaedia of the doctrines, rites, ceremonies, and customs, together with the technical and theological terms, of the Muhammadan religion (Kindle Location 6526). London, W. H. Allen & co.

    • আমার অনুবাদ৷ দিওয়ান-এ-শাম্‌স-এ-তবরি‌জ়ি৷ গজ়ল ১৭৬৮৷ বদিলুজ্জমান ফরুজ়ানফর সম্পাদিত মূল ফারসি সংস্করণ-এর ইন্টারনেট সংগ্রহ থেকে৷ (সূত্র)

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • কাব্য | ১৭ অক্টোবর ২০১৮ | ২৬২২ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    কবিতা  - S Azad
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • i | ***:*** | ২১ অক্টোবর ২০১৮ ০৬:০৯85730
  • অনির্বাণ ধরিত্রীপুত্রর জালালউদ্দীন রূমী ঃ জীবন ও কবিতা নিয়ে একটি অত্যাশ্চার্য লেখা ( ইন্দ্রনীল ঘোষ দস্তিদারের) গুরুচন্ডালিতেই শুরু হয়েছিল একদা। এগোয় নি লেখাটি। সেটি মনে পড়ল আজ।

    নীলাঞ্জনের এই লেখাটিতে কিছু প্রশ্ন তোলা হয়েছে যেমনঃ'যে বাস্ত্ততন্ত্রে রুমির কবিতার প্রস্ফূটন তা থেকে উপড়ে এনে তাকে এ ভাবে আধুনিক ধর্ম-অপ্রাসঙ্গিক মাটিতে লাগিয়ে বাগান তৈরি করে সেখানে উত্তেজিত ছুটোছুটি আমাদের কতটা রুমির কাছে নিয়ে যেতে পারে?' বা অহেতুক সরলীকরণ হয়ে যাচ্ছে কি না রুমী পাঠ/ অনুবাদ?
    লেখাটির প্রথমপাঠে সে উত্তর পেলাম না। কিন্তু পুনর্পাঠে আগ্রহ রইল।
    গুরুচন্ডালিকে লেখাটি প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন