এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • নভেম্বর মাসের কনফেশন (অসীম নন্দনের ১ম কবিতার বই)

    asim nondon লেখকের গ্রাহক হোন
    ৩০ নভেম্বর ২০২৫ | ৩৭ বার পঠিত
  • নভেম্বর মাসের কনফেশন। ১টি কবিতা পুস্তিকা। এক ফর্মা। ১১টা কবিতার সমাবেশ! ২০১৬ সালে পুস্তিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। প্রকাশক: চৈতন্য। 

    এখানে পুস্তিকাটির সবগুলো কবিতা এবং ১টি নাতিদীর্ঘ সমালোচনাগদ্য পোস্ট করা হলো। সমালোচনাগদ্যটি Goodreads এ ২০১৭ সালে  প্রকাশিত। মানে Book Review... 

    সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: কবিতার টেক্সটগুলো বিষাদগ্রস্ত এবং আত্মহত্যার প্রতি অনুপ্রেরণাযোগ্য। আমি জানি পাঠক নিশ্চয়ই নিজেকে সামলে নেবেন। এই কামনাই করি। পুস্তিকায় বিভিন্ন শব্দের বানানে কখনো কখনো কবি প্রচলিত নিয়মভঙ্গ করেছেন। হয়তো স্পর্ধা দেখাতেই করেছেন! পাঠক যেন আবার বানানের জন্য কান্নাকাটি না জুড়ে দেন। ভাষা অশুদ্ধ হয়ে গেল, হেনতেন ইত্যাদি অনুভূতির প্রতি কবি সদা শ্রদ্ধাশীল।  তবে কবি কিনা একটু ঘাড়ত্যাড়া! হুদাই একটু জ্ঞান দিলাম, শুনলে ভালো না শুনলেও ক্ষতি নাই! ধূমপান/ মদ্যপান কিংবা আত্মহত্যা মানুষের তথা প্রকৃতির ভারসাম্যের জন্য ক্ষতিকর!

    পুস্তিকার কবিতাগুলো ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসেই লিখেছিলাম। পাক্কা দশটা বছর চলে গেছে। সময় এক দুরন্ত ঘোড়া। কেবল টগবগিয়ে তরতরিয়ে ছুটে চলে। তখন আমার প্রেমিকা এবং প্রেম ছিল। অভিমান এবং স্বীকারোক্তিও ছিল। এখন নেই। অভিমান কিংবা প্রেমিকা কোনোটাই নেই। 
    হ্যাপী রিডিং...

    বইটি সম্পর্কে লেখক ও গবেষক মেহেরাব ইফতি'র রিভিউ :
     
    নভেম্বর মাসের কনফেশনঃ A full of contradictory fleck
    মেহেরাব ইফতি
     
    ♦ ওয়েল, কন্ট্রাডিকশন! ♦
    প্রথম থেকেই একপ্রকার বোধ-যুক্ত কন্ট্রাডিকশন স্থাপন কইরা আগাইছেন, লেখক। ১১ খানা কবিতার এই ছোট্ট পুস্তিকায় ‘বিসমিল্লাহ্‌’ কওয়ার আগেই এক কন্ট্রাডিকশন হাজির-নাজিরের নজরানা দেখি আমরা। উৎসর্গে লেখক বলেন, ‘শার্ল বোদলেয়ার এবং একজন শ্যামাপাখি’। মানে বৈপরীত্যের শুরু এখান হইতেই; একলগে ‘এসথেটিক্স’ এবং ‘প্রগাঢ় বিষণ্ণতারে’ শব্দমালায় একলগে গাঁইথা লেখক জানান দিলেন, এই বহি’র কবিতাগুলার বৈপরীত্যের যাত্রা শুরু করলাম। ফি আমানিল্লাহ!
    যে পড়তেছেন বসি এই রিবিয়ুখানা; কইতেই পারেন, ‘কন্ট্রাডিকশন’ এর বোধগম্য তর্জমা কি হইবে? তাহাঁদের সুবিধার্থে বলা যায়, ইহার বোধগম্যতার বঙ্গান্তর আমার দিক হইতেঃ ‘স্ব-বিরোধ’। আপনার দিক হইতে মূল কবিতার বহি পাঠ করা ব্যাতিরেক যাহাই দাঁড়া করাইবেন, নিপাট ধান্ধাবাজি হইবে।

    #টিপ্পনী ৩

    লেখক, ‘কনফেশন অব নভেম্বর’ নামের কবিতায় বলতেছেন, ‘যে মানুষ ভালোবাসা জানে/ তার জন্য আমার দুঃখ হয় খুব’ আবার একই লগে বলতেছেন ‘বুলিয়ান এক্সপ্রেশন’ কবিতায়, ‘একজন মানুষের মাঝে দ্বৈতভাবে/বাস করেন শয়তান ও ভগবান’। সুবিবেচক পাঠক খেয়াল কইরা দেখেন, যদি এক রূহে দুই পদের বসবাস হয়, তাহা হইলে না তার ভালোবাসা জানা লইয়া দুঃখ করা যায়, না সে ভগবান হইল সেইটা নিয়া বড়ত্ব করা যায়! বস্তুত, পয়লা কবিতা ‘মানুষ’-এ লেখক এর কিছুটা দায় উন্মোচন করবার পারছেন। লেখক বলেন, ‘মানুষ বৃক্ষ নয়, বৃক্ষের তো শেকড় থাকে’। ফলে, এই যে ‘কসমোলজি’র সত্যনিষ্ঠ বয়ান, সেখান হইতেই বুঝতে পারি এই বৈপরীত্য রইয়া যাইবে মৃতকাল অবধি। লেখক কিংবা কসমোলজি, কেহই এই দশা এড়াইতে পারবেন না। দশা যে এড়ানো যাইবে না, এই বিষয়ে লেখক বিলকুল ওয়াকিবহাল। লেখক তবুও বলেন,
    ‘...বিশ্বাস করুন প্রভু আপনাকে
    ঘেন্নার পেছনে তেমন কোনো মহৎ তাত্ত্বিক কারণ নেই
    আমি আপনাকে ঘেন্না করি কারণ, আপনি
    এবং আপনাদের নিষ্ক্রিয় অস্তিত্বে
    আমার ধ্রুপদী প্রেমিকা হারিয়ে গেছে।’ (ম্যানহোল)

    তো, ‘ধ্রুপদী প্রেমিকা’ হারাইয়া গেছে, ইহা লইয়া এত খণ্ডের শোকগ্রস্থ-কোলাহল কেনো? লেখক তো এই দশা সম্পর্কে পূর্ব হইতেই অবগত আছেন। লেখক নিজেই জানেন এবং বলেন প্রভুর অস্তিত্ব নিষ্ক্রিয়; সাথে-সাথে এই ঠাডাও ফ্যালেন প্রভুর উপরে, প্রভুর খামখেয়ালির কার্যেই প্রেমিকা হারাইয়া গেছেন! এইভাবে লেখক ‘কন্ট্রাডিকশন’ হইতে ‘নিয়তি’র সিঁড়ির দিকে ধাপে-ধাপে আগাইতে শুরু করলেন।

    #টিপ্পনী ২

    যাহা কিছুই নিয়তির দিকে ধাবিত করে তাহাই কালশেষে দেখা যায়, ‘আত্ম-জৈবনিক’ হইয়া উঠিতেছে। ‘আমার বাবা’, ‘প্রেমিকার বাবা’, ‘ভেজিটেরিয়ান’, ‘ড্রিমার’, এ সকল কবিতা শেষ পর্যন্ত নিয়তির ঘেরাটোপে বান্ধা পইড়া আত্ম-জৈবনিক হইয়া উঠে। ১১ খানা কবিতার মধ্যে বোধ করি সবচে’ স্বাদু কবিতাখানার নাম হইলঃ প্রেমিকার বাবা। লেখকের অবস্থান, প্রেমিকার বাবার ক্লাস-কনশাসনেস লগে কলোনিয়াল হ্যাংওভার কাটাইতে না পারার নাকউঁচা ভাব সকল নকশা-ই ধরা খায় এই কবিতার ফ্লেকে। সবচে’ সমস্যা হইয়া দাঁড়ায় প্রেমিকার বাবার ‘সেলফ-সেন্টারড’ মনোভাব; অর্থাৎ আত্মপ্রেমীতা। কিন্তু লেখক প্রেমিকার বাবারে জমিনে নামাইয়া আনবার লাগি বলেন, ‘অথচ উক্ত চরিত্রদ্বয়ের প্রত্যেকেই তারই মতন খায়, ঘুমায় এবং হাগে।’
    উল্লেখ করি, ‘প্রেমিকার বাবা’রে লেখক আলগা সম্মান দেখান নাই। তাই, ‘তারই মতো’-রচনার সময় লেখকের আনকনশাস কনসাশনেসে ‘তার’-এর উপর চন্দ্রবিন্দুর (ঁ) মতাদর্শ গায়েব কইরা দেন!

    এবং,
    ‘চলুন এক কাজ করি, মানচিত্র থেকে বাইরে
    গিয়ে দেখি-পৃথিবীটা কার?’ (ড্রিমার)

    আহারে আমার অস্তিত্ব লইয়া টানাটানি! হায়, গজুরাম হরেরাম পূজারী।

    #টীকা ১

    তবুও লেখকের লগে সুর মিলাইয়া তিলাওয়াত করি,
    ‘...কিন্তু এখানে উল্লেখ্য যে, রাবণ একই
    সাথে রামায়ণের ভিলেন এবং মেঘনাদবধের হিরো ছিলেন।’ (প্রেমিকার বাবা)

    _______________________
    Majumder Lyceum (M. L.)
    25-11-17
    Sarulia, Dhaka: 1361

    নোট: মেহেরাব ইফতি প্রথমত শান্তিনিকেতনের ছাত্র ছিলেন। স্নাতক শেষে তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এবং এখন পিএইচডি করার জন্য অফারলেটার হাতে অপেক্ষায় আছেন। এবং তিনি বাংলাদেশি।
     
    রিভিউ পড়া হয়ে গেলে পাঠক এখানে বইয়ের লেখাগুলো পড়তে পারবেন।

    উৎসর্গ: শার্ল বোদলেয়ার এবং একজন শ্যামাপাখি

    মানুষ
    ***
    মানুষ বৃক্ষ নয়, বৃক্ষের তো শেকড় থাকে
    যদি প্রকৃত স্বাধীন হতে চাও
    চৈতন্যে নাড়ীর স্মৃতি ভুলে যাও
    বস্তুত পক্ষীকূল স্বাধীন হলে
    তাহারা পালকের সঠিক ব্যবহার শিখে নিলে
    ভুলে যায় মা পাখির প্রসববেদনা। 

    আমার বাবা
    ***
    তিনি যথেষ্ট পরিমাণে পালংশাক ভালোবাসেন। আমি তাকে বহুবার দেখেছি শাক বাছতে এবং আগুনে ঝলসাতে। তাকে দেখেই আমি প্রথম বুঝেছি শাকসবজি খুবই স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাস। এছাড়া তাকে দেখেই জেনেছি, সিগারেট মানুষের অমৃত পানীয়। তিনি আমার জন্মদাতা বাবা। আমাদের পরিবারে বাবা মানে একজন প্রতিভাবান রাজা। আর একই সাথে নেশাগ্রস্ত বটের ছায়া। পালংশাকের হেতু লাল চোখ আর গুম্ফরাশি দেখে ছেলেবেলায় তাকে যমের মতন ভয় পেতাম। বড় হবার পর বাবাকে কেমন অসহায় লাগে। মনে হয়, টাকার গাছ। তিনি একসময় ভ্রমণপ্রিয় ড্রাইভার ছিলেন। অথবা হতে পারে পেটের দায়ে ভ্রমণপাখি। তিনি আমায় যথেষ্টই ভালোবাসেন, আমিও হয়তো তাই। অবশ্য বেশ অনেকটা দূরত্বও বজায় রাখি। তিনি আমায় কখনো চুমু খেয়েছেন কিনা; তেমন দুর্লভ স্মৃতি আমার ওয়্যারড্রোবে নেই।

    প্রেমিকার বাবা 
    ***
    তিনি পলিটেকনিক স্টুডেন্ট এবং রিকশাচালক দুজনকে একই স্ট্যান্ডার্ড মনে করেন। আমি তার ভাবনাকে সম্মান করি। অবশ্য তিনি নিজেকে এর ব্যতিক্রম অর্থাৎ উঁচুস্তরের সিভিলিয়ান ভেবে থাকেন, যেহেতু তিনি একজন ডাক্তার। অথচ উক্ত চরিত্রদ্বয়ের প্রত্যেকেই তারই মতন খায়, ঘুমায় এবং হাগে। তিনি আমার প্রেমিকার বাবা। তাকে আমি সম্মান করি। আমার প্রেমিকা একদিন কথার কথা বলেছিল, তার বাবা হয়তো রাবণের বংশধর হতে পারে। কিন্তু এখানে উল্লেখ্য যে, রাবণ একই সাথে রামায়ণের ভিলেন এবং মেঘনাদবধের হিরো ছিলেন।

    ম্যানহোল
    ***
    তিন বছর হলো আমি কোনো প্রার্থণালয়ে যাইনি, অবশ্য 
    প্রেমিকার কাছে গিয়েছি ১১ বার; যে আমায় ছেড়ে চলে গ্যাছে
    তাকে আমি দেবী এবং দেবালয় দুটোই ভাবতাম।
    এছাড়া তিন বছরের প্রত্যেকদিন টয়লেটে গিয়েছি, প্রতি দুই 
    সপ্তাহে একবার বাজারে গিয়েছি, রাজধানী ঢাকায় গিয়েছি
    পাঁচ কি ছয়বার, ব্রোথেলেও গিয়েছি একবার
    তবে প্রার্থণালয়ে যাইনি। প্রভু, আপনি কি রাগ করেছেন?
    বিশ্বাস করুন প্রভু, আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না
    আমি আপনাকে ঘেন্না করি। বিশ্বাস করুন প্রভু আপনাকে
    ঘেন্নার পেছনে তেমন কোনো মহৎ তাত্ত্বিক কারণ নেই
    আমি আপনাকে ঘেন্না করি কারণ, আপনি 
    এবং আপনাদের নিষ্ক্রিয় অস্তিত্বে
    আমার ধ্রুপদী প্রেমিকা হারিয়ে গ্যাছে।

    ভেজিটারিয়ান
    ***
    সন্ধ্যা হলেই আমি বেরিয়ে পড়ি
    সোনিয়া ক্লিনিকের সামনে সবজিওয়ালা বসে
    সন্ধ্যার পর থেকেই আমি ভেজিটারিয়ান
    শুকনো শাকসবজি খাই
    আর হারানো প্রেমিকার থেকে ছুটে বেড়াই
    সোনিয়া ক্লিনিক মূলত অসুখ নিরাময় কেন্দ্র 
    রোগী কিম্বা বিচ্যুত প্রেমিক উভয়েই যেতে পারে।

    কনফেশন অফ নভেম্বর 
    ***
    একটি কাজ করুন
    জানালাটা খুলে দিন

    'নভেম্বর রেইন' গানটা শুনেছেন? 
    প্রথমে শুনুন গান

    তারপর মানুষের জন্য 
    একটু দুঃখ করুন, দুঃখ করুন হারানো
    প্রেমিকার শোকে। স্মৃতি 
    রোগ মনোটনি সব ভুলে
    জানালার কাছে প্রতিজ্ঞা করুন আজ

    যে মানুষ শেষ রাতে
    মারা গেল, তাকে কি চেনেন? 
    কিম্বা যে মানুষ মারা যাবে রোববার? 
    চলুন মৃত্যুর শোকে
    গান করি কিছুকাল আমরা সবাই

    আমরা তো এইটুকু জানি
    ঘোড়া বা ঘোড়ার খুর আকাশে উড়ে না।
    প্রিয় বাবা, আপনি কি একবার-- শুধু
    একবার হলেও কখনো
    প্রেমে পড়েছেন? যে প্রেম নিষিদ্ধ ছিল আপনার জন্য

    যে মানুষ ভালোবাসা জানে
    তার জন্য আমার দুঃখ হয় খুব

    দয়া করে আপনার
    সকল ভাবনায় তালাচাবি লাগান

    মন খারাপের দিনে
    কখনো কি ভেবেছেন, যে মানুষ অন্ধ
    তাকে রাস্তা দেখানোর কথা?
    যদি ভেবে থাকেন কখনো--
    বাস্তবায়ন করুন আজ

    প্রত্যেক মানুষ জীবনে অন্তত একবার আত্মহত্যা চায়
    যেহেতু মানুষ মূলত নাটক ভালোবাসে আর
    ভয় পায় সকল মৃত্যুতে
    তবু আমরা সবাই পক্ষী শিকার করি এবং
    আনন্দ করি জন্মের উৎসবে

    আমার প্রেমিকা একটি নিশ্চিত ভবিষ্যৎ চেয়েছিল,
    যা আমার কাছে নেই।
    হতে পারে, এই কবিতার
    পরই আমি মরে যেতে পারি। কারণ 
    পরম বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই

    জানা কথা, মানুষ বাঁচে বর্তমানে অথচ
    কান্না করে অতীতের জন্যে
    আর ভয় পায় ভবিষ্যতে 

    টাকা হলো ভগবান
    যদি ভালোবাসা চান
    যদি সত্যিই বেঁচে থাকতে চান; তাহলে অবশ্য
    টাকার পেছনে দৌড় দেন।

    ড্রিমার
    ***
    এখন আমাকে যদি বলা হয় আর
    পনেরো মিনিট পর আমি মারা যাচ্ছি 
    এবং জানতে চাওয়া হয়; আমার শেষ ইচ্ছে 
    তাহলে আমি বলবো-
    Let's have a couple of drinks with soda ice

    পল ওয়াকার, আপনাকে আমার ভাল লাগতো
    দারুণ হাসতে পারতেন ওয়াকার
    আচ্ছা, CAR Accident 
    কী দারুণ একটি নিশ্চিত মৃত্যু তাই না? অন্তত
    মানুষ জানতে পারে না কখন তার
    নিজস্ব ভ্রমণ বিশ্বাসঘাতক হয়

    ঘুম ভাঙার পর শুনুন 
    জন লেননের গান:
    "You may say I'm a dreamer
    But I'm not the only one
    I hope someday you'll Join Us
    And the world will be so one."

    শোন, তুই বরং একবার সমুদ্র দেখে আয়
    যে মানুষ সমুদ্র দ্যাখেনি
    সে জানে না মানুষ সত্যিকার অর্থেই কতটা গরিব

    2nd December রাস্তা দেখুন আর
    নীল গাড়ি পেলেই উঠে বসুন সিটে

    ট্রাভেলে যাবার আগে
    তুলে নিন চিপস, সিগার, Water
    পকেটে রাখুন হেডফোন
    অস্তিত্বের দিন থেকে 
    মানুষ ভ্রমণ ভালোবাসে

    Safety ক্যাচ খুলে নেয়া হয়েছে 
    আপনার কপালে পিস্তল 
    এখনো সত্য বলুন

    আমি চাইতাম, ব্যথা জাগানিয়া রাতে
    তুমি পাঠ কর শুধু আমার কবিতা
    যদিও কবিতার জন্য তোমার কোনো
    ভালোবাসা ছিল না কখনো

    একজন মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত  
    ফিলিস্তিনি কবি বলেছেন:
    "ঈশ্বর আজ তাঁর নিজস্ব গৌরব হারিয়েছেন "

    যে মানুষ ঈশ্বরে বিশ্বাস করে আর
    আস্থা রাখে স্বর্গে তার জন্য
    আমার করুণা হয়
    আমি স্বপ্নে দেখি সেই নারী
    যে আমার জন্য কেঁদেছিল তিনদিন

    Amsterdam এ মারিজুয়ানা হচ্ছে বৈধ পানীয়
    আর বাঙলায় কিন্তু প্রণয় নিষিদ্ধ 
    চয়েজটা আপনার
    আপনি কি যেতে চান আমেরিকায়? সেখানে 
    বৈধ আছে সমকাম
    ভেবে দেখার আগে বলবো:
    চলুন এক কাজ করি, মানচিত্র থেকে বাইরে
    গিয়ে দেখি, পৃথিবীটা কার?

    প্যানথার সম্পর্কিত যাবতীয় স্বীকারোক্তি 
    ***
    এইখানে ভালুকের লোমে সাজানো বুকের অরণ্যে। বুনো প্যানথার ঘুমিয়ে থাকে। এই ঘাস-ঘাস ফুলের শহরে। কাগজের ভুল আর প্লাস্টিক জ্যোৎস্নামাখা প্রহরে; তুমি চলে এসো, চলে এসো অতন্দ্রিতা,প্যানথার বুকে। আমি জানি প্রণয়ের চেয়ে সর্বগ্রাসী মাদকতা আর কিছু নেই। আমাদের এই কসমিক জীবনে প্রেম এবং মৃত্যুই সঠিক স্বাভাবিক। আজকের এই বৃষ্টিসঙ্গম রাতে তোমার পিতা এবং বিগত প্রপিতামহদের ভুলে তুমি চলে এসো। ভেঙে ফ্যাল তাদের শিখিয়ে দেয়া সকল সংস্কার। বস্তুত সংস্কারের আড়ালে থাকে শৃঙ্খল এবং পরাধীন সাক্ষর। চলো আজ দুজনাকে আকাশ বানাবো। আর ডুব দেব দুজনের বুকের গভীরে। পরস্পর হয়ে উঠবো সুপক্ব আদিম এবং সবচেয়ে অভিনব। এইসব সরীসৃপ চামড়ার লহড়ে আগুন জ্বলছে নিবিড়। এইখানে, এখানে প্রেম এবং সঙ্গমই পৃথিবীর অস্তিত্বের প্রধান কারণ। আমরা এই শাশ্বত রহস্যকে কখনোই অস্বীকার করতে পারি না। তাই আজ রাতে আমাদের প্রথম কিংবা প্রধান দায়িত্ব হবে, সবুজ শ্যামল শঙ্খচিলের বুকে আকাশ বানানো।

    এইখানে আমাদের মৃত্যু না হোক
    ***
    বাবাকে খুন করে পালিয়ে এসেছি। 
    আমার হাতে রক্ত নেই।
    শরীরে খুনের গন্ধ নেই।
    তিনি আমার সমৃদ্ধ অগ্রজ;
    যার কাছে আমি পেয়েছি প্রিয়তম নরক।

    রবীন্দ্রনাথ, আপনার লজ্জা হওয়া উচিত। আপনার প্রেমিকা আত্মহত্যা করেছিলেন।  আর আপনি তার চিতায় নির্বিকার কবিতা লিখে গেলেন। অথচ রমণী চেয়েছিল প্রেম । প্রেমিকা চেয়েছিল একান্ত আপনার সূর্যমুখী। চলুন গুরুদেব সেই ঝড়ের রাতে ফিরে যাই। আপনিও প্রেমিকার শোকে আত্মঘাতী হতে পারেন। যেহেতু আত্মহত্যা একটি চমৎকার বিরহসঙ্গীত। আপনারও গাওয়া উচিত শ্রেষ্ঠ বিরহের গান।

    জীবন একটা উৎকৃষ্ট ভ্রমণের নাম
    শয়তান সেইদিকে হেঁটে চলেছেন,
    ভ্রমণে আছ তুমি
    মহামান্য তোমারে স্বীকৃতি দিয়েছেন, 
    তুমি থেকেই সৃষ্ট এই পৃথিবী 
    ধর্মাবতার সৃষ্টিকে ভালোবেসেছেন, 
    পৃথিবী বস্তুত নরকের নাম
    বিরহী কবিগণ তাকে সমৃদ্ধ করেছেন।

    বুলিয়ান এক্সপ্রেশন 
    ***
    'আমার খুউব মরে যেতে ইচ্ছে করে'
    এমন কথা যে মানুষ বলে থাকেন
    অর্থাৎ সে পাখি আর ঘরে ফিরছে না
    আপনারা নিশ্চিত থাকুন 
    তার বৈরাগ্য মনন তাকে নিয়ে চলে গ্যাছে
    হয়তো কোনো নরকে অথবা কালো জঙ্গলে 

    আপনি কি কখনোই প্রেমে পড়েননি?
    কখনো কি মনে হয়নি?...গাড়ির 
    গোল-গোল চাকা পৃথিবীর সব থেকে বেশি 
    আকাঙ্খিত বস্তু।যখন রাস্তায় হেঁটে
    যাচ্ছেন কখনো কি মনে হয়নি
    এক সেকেন্ডের জন্য সাহসী হতে পারলে
    আপনি হয়ে উঠতে পারেন মহান একজন!

    অন্ধকারে প্রেতাত্মারা হচ্ছে অমূলক ভয়।
    ঠিক যে সময়টাতে আপনি সিগারেট ধরিয়াছেন 
    আপনার মা যদি ফোন দিয়ে থাকেন আপনাকে
    ফোন ধরুন এবং নিদারুণ সুখী হওয়ার
    অভিনয় করুন। মুখোশে আড়াল থাকুন।
    সাধারণত প্রত্যেকের মাঝেই প্রেতাত্মার বসবাস। 

    একজন মানুষের মাঝে দ্বৈতভাবে
    বাস করেন শয়তান এবং ভগবান
    প্রার্থণালয়ে গিয়েই যদি 
    আপনি ভাবেন; স্বর্গের শাদা দরোজা, 
    তাহলে আমি বলবো: 
    এখানে বোকার স্বর্গ খুবই সুলভ মূল্যে বিক্রি হয়। 

    বুঝতে পারছি কবিতার কথাগুলো
    আপনার মগজে এক ধরনের শর্টসার্কিট 
    সৃষ্টি করেছে। যেহেতু এটা
    কোনো যুদ্ধ কিংবা প্রেমের কবিতা নয়।

    আমি বলতে চাইছি,
    বারবার প্রথম থেকে পাঠ করুন
    সবশেষে নিজেকে প্রশ্ন করুন।

    শেষরাতে যদি কারো মনে হয়
    পৃথিবীতে আত্মহত্যা ব্যতীত তেমন 
    কিছু কাজ বাকী নেই
    তার মানে সেই ব্যক্তি তখনো প্রস্তুত নন।

    সুখবর! সুখবর!
    ***
    কৃষ্ণচূড়া ধারণের ক্ষমতা তোমার 
    নেই, তুমি তোতাপাখি 
    শিখেছো নামতা শিখেছো শুদ্ধ হিসেব
    ফুলের পরাগে থাকে কৃমি
    থাকে স্নিগ্ধ জলভূমি
    প্রকৃত স্বভাবে ফুল আদি পাপে পাপী

    কৃষ্ণচূড়া ধারণের ক্ষমতা তোমার 
    নেই, তুমি তোতাপাখি। 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন