এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • স্বাভাবিক তাপমাত্রায় অতিপরিবাহিতা ও সেই সংক্রান্ত সাম্প্রতিক বিতর্ক

    মিঠুন ভৌমিক লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৪ জুন ২০১৯ | ১২০৯ বার পঠিত
  • সম্প্রতি ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্সের একটি গবেষণাপত্র নিয়ে বিতর্কের সূচনা হয়েছে। গবেষণার বিষয় সুপারকন্ডাক্টিভিটি বা অতিপরিবাহীতা। গবেষকদলের মধ্যে অন্যতম IISC র অধ্যাপক অংশু পান্ডে, যাঁর লুমিনিসেন্স নিয়ে গবেষণায় সুনাম রয়েছে। খুব সহজ করে বললে, লুমিনিসেন্স হলো পদার্থের আলোক নিঃসরণ ধর্ম সংক্রান্ত বিষয়। এল ই ডির যুগের অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন পদার্থের আলোক নিঃসরণের ক্ষমতা সংক্রান্ত গবেষণা চলে আসছে। এই লেখায় আমরা লুমিনিসেন্স নিয়ে কথা বাড়াবো না, শুধু দুটো কথা জেনে রাখবো। বিভিন্ন পদার্থের ধর্ম নিয়ে যাঁরা পরীক্ষামূলক গবেষণা করেন (পরিভাষায় যাঁদের বলা হয় এক্সপেরিমেন্টালিস্ট, আর তাত্ত্বিক গবেষকেরা হলেন থিওরিস্ট) তাঁদের অনেক সময় লক্ষ্য থাকে পদার্থটির আলোক নিঃসরণ ক্ষমতা আছে কিনা জানা যা আমরা লুমিনিসেন্সের মাধ্যমে জানতে পারি, বা এটা দেখা, যে পদার্থটি তাপ বা তড়িতের সুপরিবাহী কিনা। বলা বাহুল্য, এই দুই ধরণের ধর্মেরই বিস্তৃত কারিগরি উপযোগিতা আছে, ফলে ব্যাপারটা অর্থনৈতিকভাবেও খুবই লাভজনক। এই ধরণের কাজে সাফল্য আসলে কর্পোরেট সংস্থাগুলো হামলে পড়ে পরবর্তী গবেষণার ফান্ডিং স্পনসর করে অনেক সময়। এখন, যেকোন যন্ত্রকেই ব্যবহার করতে হবে ঘরের তাপমাত্রায় (আপাতত প্রচন্ড গরম জায়গাগুলোকে অগ্রাহ্য করে আমরা ধরে নিচ্ছি সেটা ২০-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। আর সেই জায়গাটাতেই গোলমাল। যেকোন পদার্থের যান্ত্রিক উপযোগিতার জন্য প্রয়োজনীয় ধর্মসমূহ সবথেকে ভালোভাবে কাজ করে ঠান্ডায়, ঘরের উষ্ণতা থেকে বহু নীচে, প্রায়শই কয়েক কেলভিন উষ্ণতায়। কয়েক কেলভিন মানে মাইনাস তিনশোর কাছাকাছি তাপমাত্রা (1 K = -272oC), মানে কিনা ভয়ানক ঠান্ডা আবহাওয়া। তাই বিজ্ঞানীদের অন্যতম লক্ষ্য থাকে যেকোন "উপযোগী" পদার্থকে ৩০০ কেলভিনের কাছাকাছি তাপমাত্রায় কাজ করানো। যে আলো দেয়, সে যেন ঐ উষ্ণতাতেও আলো দেয়, যে তড়িতের ভালো পরিবাহী সে যেন ঐ উষ্ণতাতেও একইরকম বা প্রায় কাছাকাছি পরিবাহী থাকে ইত্যাদি। এরকম ভাবার কোন কারণ নেই দরকারী ব্যাপার শুধু এই দুটিই, কিন্তু মনে রাখার সুবিধের জন্য এই দুটিই যথেষ্ট। শিরোনামে আমি স্বাভাবিক তাপমাত্রা বলতে ঘরের উষ্ণতাই বুঝিয়েছি। যাই হোক, এবার মূল ঘটনায় ঢোকা যাক।

    ২০১৮ সালের জুলাই মাসে অধ্যাপক পান্ডে এবং এবং তাঁর ছাত্র দেব কুমার থাপা একটি গবেষণাপত্রে ঘোষণা করেন যে তাঁরা এমন একটি পদার্থের সন্ধান পেয়েছেন যা ঘরের উষ্ণতায় অতিপরিবাহী [1]। এইরকম একটি পদার্থের খোঁজ বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরেই করছেন, কাজেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার পরেই গবেষকমহলে ব্যাপক সাড়া পড়ে। এবং খুব ভালো কোন কাজের ক্ষেত্রে যেমন হয়, বিশেষজ্ঞরা নানাভাবে খতিয়ে দেখার চেষ্টা করতে থাকেন, যে দাবিটি যথেষ্ট সঙ্গতিপূর্ণ কিনা। সেই সঙ্গতি খুঁজতে গিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠে এসেছে যা তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়। এই বিতর্কের মীমাংসা এখনও সম্পূর্ণভাবে হয়নি, তবে ২০১৯ সালের মে মাসে ঐ একই গবেষণাপত্র আরো বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এই পরিবর্ধিত সংস্করণে পূর্বোক্ত গবেষকেরা ছাড়াও আরো কয়েকজন যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু এই বিতর্কের আরো গভীরে ঢোকার আগে আমাদের গবেষণার বিষয়টি নিয়ে সামান্য একটু জেনে নেওয়া দরকার। সুপারকন্ডাক্টিভিটি বা অতিপরিবাহিতা খুবই জটিল তত্ত্ব, তাই আমরা যথাসম্ভব সহজ করে, যতটুকু না জানলেই নয় ততটুকুই জানবো।

    তো কথা হলো, এই অতিপরিবাহী ব্যাপারটা কী?

    মাধ্যমিকের পদার্থবিজ্ঞানেই আমাদের পড়ানো হয়েছে তড়িতের সুপরিবাহী পদার্থ বলতে কী বোঝায়, অপরিবাহী বলতেই বা কী বুঝবো। তামার তার সুপরিবাহী, কারণ তার মাধ্যমে তড়িৎ সহজে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে কাঠের টুকরো অপরিবাহী যার মধ্যে দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত প্রায় হয় না বললেই চলে। পরিবাহীতা মাপার একটা উপায় হলো কোন পদার্থের মধ্যে দিয়ে ইলেক্ট্রন চলাচলে কতটা বাধা পায় সেটা মাপা। সেই বাধার পরিমাপক হলো রেসিস্টিভিটি। এবং সেই বাধার কারণ হলো পদার্থের কণাগুলোর সাথে ইলেক্ট্রনের সংঘর্ষ। ধরে নেওয়া যাক একটি তামার তারের দুই প্রান্ত ব্যাটারির সাথে যুক্ত, এবং ফলে তার মধ্যে দিয়ে ইলেকট্রনের স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। তারটি কী উষ্ণতায় রাখা আছে তার ওপর নির্ভর করে ইলেকট্রন প্রবাহ কম বেশি বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই বাধা, যা পদার্থের নিজস্ব ধর্ম, তার আরেক নাম রোধ বা রেসিস্টেন্স (সংজ্ঞা অনুযায়ী রেসিস্টিভিটি হলো একটি পদার্থের একক ঘনকের রোধ। উদাহরণস্বরূপ তামার কথা ভাবুন। একটা তামার ঘনক (cube) যার দৈর্ঘ্য-প্রস্থ-উচ্চতা ১ মিটার, তার যেকোন দুটি বিপরীত তলের মধ্যেকার রোধ হলো রেসিস্টিভিটি) । এর উৎস হলো পদার্থের কণাগুলোর নিজস্ব গতিবিধি। আমাদের উদাহরণে যে তামার তারটির কথা বলা হচ্ছে, তার পরমাণুগুলি সর্বক্ষণ পেন্ডুলামের মত দুলছে। উষ্ণতা যত কম হয়, দোলন তত মৃদু হয়। ইলেকট্রনের স্রোত যখন এই সদা দোদুল্যমান পরমাণু সমবায়ের মধ্যে দিয়ে যায় তখন তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হতে পারে। ব্যাপারটা যদি এরকম হয় যে পরমাণুগুলি খুব একটা নড়াচড়া করছেনা, তাহলে সংঘর্ষের সম্ভাবনা কমে যায়। ফলে কমে যায় রোধ, যা আমরা রেসিস্টিভিটি মেপে বুঝতে পারি। অন্যদিকে উষ্ণতা যত বাড়ে, ততই পরমাণুর দোলন তীব্র হতে থাকে। ফলে প্রবহমান ইলেকট্রনগুলোর কোন না কোন পরমাণুর সামনে পড়ে গিয়ে ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবণাও বাড়তে থাকে। প্রতিটি সংঘর্ষের ফলে ইলেকট্রনগুলোর শক্তিক্ষয় হয়, সেই শক্তিক্ষয় আমরা তাপের মাধ্যমে টের পাই (তড়িৎ পরিবাহী তার কিছুক্ষণের মধ্যেই গরম হয়ে ওঠে)।

    ফিরে যাই কাঠ ও ধাতুর তুলনামূলক আলোচনায় যাতে তড়িৎ পরিবহণের বাধার স্কেলটা আমরা বুঝতে পারি। কাঠের টুকরোর রেসিস্টিভিটি ধাতুর প্রায় 1012 গুণ। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে এদের মধ্যে উপযোগীতার পার্থক্য এত বিশাল কেন। ধাতুর রেসিস্টিভিটি খুবই কম 10-9 Ohm.m কিন্তু খুব কম হলেও এটা যেহেতু একটা সংখ্যাই, তাই এটা স্বাভাবিক যে তড়িৎ পরিবহণে ধাতুগুলিও সামান্য হলেও বাধার সৃষ্টি করে। এই বাধা কাটিয়ে উঠে ক্রমাগত পরিবহণ চালিয়ে যেতে চাইলে দরকার নিরন্তর শক্তিপ্রবাহ, যা আমরা ব্যাটারির মাধ্যমে করে থাকি। এবার ভাবুন, যদি এই বাধা না থাকতো? তাহলে ঐ রেসিস্টিভিটির মান হত শূন্য এবং পরিবাহীতা বেড়ে হত অসীম। এরকম কোন পদার্থ দিয়ে সার্কিট বানালে তাতে শক্তির ব্যয় (energy consumption) প্রচন্ড কমে গিয়ে ব্যাপারটা অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত দিক থেকে ভয়ানক লাভজনক হয়ে যায়। কারণ শক্তির ক্ষয় মানে শক্তির রূপান্তর, প্রধাণত তাপশক্তিতে পরিণত হওয়া। যাই হোক, তড়িৎ পরিবহণে শূন্যের কাছাকাছি বাধা দেয় এরকম পদার্থ অনেক আগেই আবিষ্কার হয়েছে।

    ১৯০৮ সালে H.K.Onnes প্রথম তরল হিলিয়াম বানাতে সক্ষম হন, যার উষ্ণতা চার কেলভিন। অত কম উষ্ণতায় তড়িৎ পরিবহণ ঠিক কেমন হবে সে বিষয়ে এরপর তাঁর গবেষণা শুরু হয়, যা তার আগে কখনও হাতে কলমে করে দেখার সুযোগ কারো হয়নি। সূচনা হয় পদার্থবিদ্যার নতুন একটি শাখার, যার পরিভাষায় নাম Low Temperature Physics।

    ১৯১১ সালে ওনেস পারদকে ক্রমশ ঠান্ডা করতে করতে দেখেন যে চার কেলভিন তাপমাত্রায় নিয়ে গেলে তার রেসিস্টিভিটি আচমকাই শূন্যের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে। শুরু হয় সুপারকন্ডাক্টিভিটি নিয়ে গবেষণা। প্রসঙ্গত চার কেলভিন মানে -২৬৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য Onnes ১৯১৩ সালে নোবেল পান।

    ১৯৩৩ সালে দুজন জার্মান পদার্থবিদ  Walther Meissner ও Robert Ochsenfeldr মিলে একটা পরীক্ষায় দেখান যে সুপারকন্ডাক্টর শুধু শূন্যের কাছাকাছি রেসিস্টিভিটিই দেয়না, তা ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা চৌম্বকক্ষেত্রকে প্রতিহত করে। ঠিক যেভাবে নদীর স্রোতে একটা ভারি পাথর রেখে দিলে জল প্রতিহত হয়ে পাশ কাটিয়ে বয়ে যায়, ঠিক সেরকম কোন অদৃশ্য স্বচ্ছ পাথরের দেওয়াল যেন অতিপরিবাহী বস্তুটিকে ম্যাগনেটিক ফিল্ড থেকে রক্ষা করছে (চিত্র-১)। তাহলে আমরা জানলাম সুপারকন্ডাক্টরের দুটি ধর্ম, ১) একটি নির্দিষ্ট উষ্ণতার নিচে তার পরিবাহীতা অসীম (বা রোধ বা তড়িৎ প্রবাহে বাধা শূনের কাছাকাছি হবে), আর ২) একই সঙ্গে সেই পদার্থ চৌম্বকক্ষেত্রকে প্রতিহত করবে একটা ঢালের মত। যে নির্দিষ্ট উষ্ণতায় একটি সাধারণ পদার্থ এইরকম "অসাধারণ" হয়ে ওঠে, তাকে বলা হয় ক্রিটিকাল টেম্পারেচার (Tc)।

    এর কিছুদিনপরে দেখা যায়  সুপারকন্ডাক্টর দুরকম। একদলের ক্ষেত্রে উষ্ণতা বাড়াতে থাকলেই একইসঙ্গে উপরোক্ত দুটো ধর্মই লোপ পায় (Type I superconductor), আরেকদলের ক্ষেত্রে প্রথমে ম্যাগনেটিক ফিল্ডের একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্তই দুটি ধর্ম বজায় থাকে। তারপর চৌম্বকক্ষেত্রের শক্তি একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে প্রথমেই চৌম্বকক্ষেত্র প্রতিহত করার ক্ষমতাটি লোপ পায়। ম্যাগনেটিক ফিল্ড আরো বাড়াতে থাকলে দ্বিতীয় আরেকটি সীমার পর রোধশূন্য অবস্থার ধর্মটিও লোপ পায় (Type II superconductor)। এই দুরকম সুপারকন্ডাক্টরের শ্রেণীবিভাগ ১৯৫০ সালের দুজন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীদের কাজের ওপর দাঁড়িয়ে। ঐ বছর Ginzburg-Landau theory প্রকাশিত হয়। আলেক্সেই আব্রিকোসভ (Abrikosov) এই তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে সুপারকন্ডাক্টরের শ্রেণীবিভাগ করলেন। ২০০৩ সালে সুপারকন্ডাক্টিভিটি নিয়ে তাত্ত্বিক কাজের জন্য আব্রিকোসভ, গিন্সবার্গ, এবং Anthony Legget নোবেল পান। অন্যদিকে ১৯৫৭ সালে বিখ্যাত BCS theory প্রকাশিত হয়, যা তিনজন বিজ্ঞানীর নামের আদ্যক্ষর দিয়ে অঙ্কিত (John Bardeen, Leon Cooper, John Robert Schrieffer)। এই তত্ত্বে দেখানো হয় কীভাবে দুটি ইলেকট্রন, যাদের পরষ্পরকে স্বাভাবিক অবস্থায় বিকর্ষণ করার কথা, তারা পরষ্পরের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে এবং এই entangled অবস্থায় তারা পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে একত্রে চলাফেরা করছে। এই ইলেকট্রনদ্বয় পদার্থবিজ্ঞানে Cooper-pair নামে পরিচিত। এইরকম একাধিক ইলেকট্রন-জোড় তৈরী হওয়ার পর তারা পরষ্পরের সাথে একটি সমবায় গঠন করে। শুধু তাই না, ঐ অবস্থায় তাদের চলাচলে কোন শক্তিক্ষয় হচ্ছেনা কারণ কণাগুলোর প্রত্যেকেই তাদের সর্বনিম্ন শক্তি যা হওয়া সম্ভব সেখানেই অবস্থান করছে। এই কারণে তারা তড়িৎ পরিবহণ করলেও তাদের শক্তিক্ষয় হচ্ছেনা, ফলে অনন্তকাল ধরে তড়িৎপ্রবাহ চলছে। উষ্ণতা বাড়তে থাকলে পরিবাহীর পরমাণুগুলির আন্দোলন বেড়ে গিয়ে এই সমবায় ভেঙে দেয়, ফলে রোধশূন্য অবস্থাটি লোপ পায়। প্রসঙ্গত সুপরকন্ডাক্টিভিটির তাত্ত্বিক গবেষণার পীঠস্থান ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্বানা-শ্যাম্পেন (UIUC) ক্যাম্পাস। উপরোক্ত পাঁচজন নোবেল প্রাপকদের মধ্যে চারজনই (Anthony Legget, John Bardeen, Leon Cooper, John Robert Schrieffer) আর্বানা-শ্যাম্পেনের অধ্যাপক ছিলেন।

    এবার আমরা আবার আগের ঘটনার খেই ধরে পৌঁছে যাব ২০১৮ সালের জুলাই মাসে। ২৩শে জুলাই গবেষণাপত্রটির প্রথম সংস্করণে প্রকাশিত হলো যে এই নতুন পদার্থের কথা যা আসলে খুব ছোট (1 nm) রৌপ্যকণিকা, অপেক্ষাকৃত বড়ো (8-10 nm) স্বর্নকণিকায় আবদ্ধ (embedded)। পরিভাষায় যাকে বলে silver particles embedded in gold matrix এবং জিনিসটা একটি কোলয়েড।  আমাদের চেনা কোলয়েডের উদাহরণ হিসেবে দুধ বা রক্তের কথা ভাবা যেতে পারে।

    এই পদার্থটি, যাকে অতিপরিবাহী বলে ঘোষণা করে হয়েছে, তাকে এখন থেকে আমরা সুবিধার জন্য পরীক্ষাধীন স্যাম্পল sample বলবো। ন্যানোস্ট্রাকচার আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান/রসায়ণ মিলেমিশে আরেক নতুন দিগন্ত, এবং এই লেখার গোষ্পদে সেই বিষয়ে কথা না বাড়ানোই ভালো। আপাতত বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে এটুকু জেনে রাখলেই চলবে যে আলোচ্য গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথেই বহু ল্যাবরেটরিতে এই কাজটি পরীক্ষা করে দেখার চেষ্টা শুরু হয়।

    একই সঙ্গে তাত্ত্বিক পদার্থবিদরাও কাজটি সম্পর্কে খুবই উৎসাহিত ছিলেন। এম আই টি'র একজন পোস্ট ডক ব্রায়ান স্কিনার  (Brian Skinner) সুপারকন্ডাক্টর নিয়ে কাজ না করলেও স্বাভাবিক উৎসাহে পেপারটি পড়তে শুরু করেন এবং খেয়াল করেন যে পরীক্ষালব্ধ ফল নিয়ে যেসব গ্রাফ আঁকা হয়েছে তার মধ্যে একাধিক কার্ভের noise একরকম [2]। যেকোন এক্সপেরিমেন্টেই ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েস থাকে, কিন্তু সেই নয়েস হয় র‌্যান্ডম। সাধারণতঃ কোন একটি ডেটা সেটের নয়েস অন্য আরেকটি সেটের নয়েসের সাথে মেলার কথা না। কিছু বিরল ক্ষেত্রে অবশ্য এটা সম্ভব হতে পারে। তার মধ্যে একটা হলো যদি পরীক্ষালব্ধ ফলটি বানানো অর্থাৎ ডেটা ফ্যাব্রিকেটেড হয়ে থাকে। অন্য একটি কারণ হতে পারে যদি নয়েসটি পরীক্ষাধীন স্যাম্পলের কোন ধর্মের ওপর নির্ভরশীল হয়। 

    সাধারণভাবে, যেকোন স্তরের গবেষণাই প্রশ্ন এবং প্রতিপ্রশ্ন তথা বিতর্কের মাধ্যমেই এগোয়। অধ্যাপক পান্ডের গবেষণা নিয়ে স্কিনারের প্রশ্ন তাই খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু অতীতের আরেকটি ঘটনার স্মৃতি সম্ভবত এই বিষয়টিকে অত্যন্ত বিস্ফোরক করে তুলেছে। এই র‌্যান্ডম নয়েসের মাধ্যমেই মাত্র কুড়ি বছর আগের কুখ্যাত বিতর্কের মীমাংসা হয়েছিলো, পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে যা Schon Scandal নামে পরিচিত [3]। বেল ল্যাবসের এক তরুণ বিজ্ঞানী, Jan Hendrik Schön ২০০০ সাল নাগাদ খুব দ্রুত শিরোনামে উঠে আসেন অর্গানিক সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে কাজ করে। তাঁর একাধিক গবেষণা নেচার ও সায়েন্সে প্রকাশিত হয়। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রাইজ টাইজও পেয়ে যান। ইতিমধ্যে গবেষকমহল খুবই হতভন্ব হয়ে আবিষ্কার করতে থাকে যে সেই একই কাজ তারা কিছুতেই করে উঠতে পারছেনা। এরপর এক সময় দেখা যায় যেসব মহামূল্যবান কাজ নেচার আদি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে তাদের ডেটায় নয়েস প্যাটার্ন একরকম। বেল ল্যাবস পরবর্তীকালে তদন্ত করে দেখে যে সিংহভাগ ডেটা ফ্যাব্রিকেটেড, তা কম্পিউটারে ম্যাথেম্যাটিকাল ফাংশনের সাহায্যে তৈরী করা হয়েছে, এবং করা হয়েছে খুবই চাতুর্যের সঙ্গে যা এক্সপেরিমেন্ট এবং প্রেডিক্টেড থিওরির সাথে মেলে। Science এর মত জার্নালে আটটি পেপার প্রকাশিত হয়েছিল যাতে এইসব জালিয়াতি রয়েছে। 

    সুপারকন্ডাক্টিভিটি নিয়ে কাজটিও এই গোত্রের সমস্যায় আক্রান্ত কিনা তা সময়েই বলবে, তবে আপাতত দেখাই যাচ্ছে যে কুড়ি বছর আগের ন্যক্কারজনক অসততার ভূত তাড়া করছে গবেষকমহলকে। অধ্যাপক পান্ডের কাজ নিয়ে স্কিনারের টুইট এবং বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ কাজটিকে নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা একরকম করে থামিয়েই দিয়েছে। গতবছর আগস্ট মাসে নেচার একটি প্রবন্ধে মূল কাজটির থেকেও বেশি গুরুত্ব দিয়ে লেখে স্কিনারের পর্য্যবেক্ষণ [4]। সেখানে এও জানানো হয় যে আরো অন্তত তিনটি গবেষণাগারে ঐ একই কাজ ঐ একই পদ্ধতিতে করার কথা ভাবা হচ্ছিলো, বিতর্কের পরে তা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

    এর মধ্যেই অন্যান্য বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের প্রতিক্রিয়া এবং তাত্ত্বিক আলোচনা চলতে থাকে। টাটা ইনস্টিটিউট অফ  ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের অধ্যাপক প্রতাপ রায়চৌধুরী একইরকম প্যাটার্নের নয়েস পাওয়ার একটি বিকল্প সম্ভাবনা আলোচনা করেন। এই সম্ভাবনা বলে যে যাকে noise বলে মনে করা হচ্ছে তা যদি আসলে সিগনালেরই অংশ হয়, তাহলে এইরকম হলেও হতে পারে। The Wire এর বিজ্ঞান বিভাগে এই গবেষণাপত্রটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় যেখানে অধ্যাপক রায়চৌধুরীর প্রস্তাবিত সম্ভাবনাটি আলোচিত হয়েছে [5]। সেখানে আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। এ যাবৎ জানা ছিলো যে ২০১৮ সালে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হওয়ার পরে পরেই বেশ কিছু গবেষক একই কাজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। The wire এর প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে এই ব্যর্থতা থেকেও প্রমাণিত হয়না যে অধ্যাপক পান্ডের কাজটি ভিত্তিহীন, কারণ যে স্যাম্পলটি নিয়ে এত হইচই, তা কীভাবে তৈরী হচ্ছে সেই গোপন রেসিপি না জানলে একেবারে সেইরকম স্যাম্পল বানানো অন্যদের পক্ষে খুবই কঠিন। সেই বিশেষ রেসিপি প্রকাশ না করায় অধ্যাপক রায়চৌধুরী বিশেষভাবে অলোচ্য গবেষণাপত্রটির লেখকদের সমালোচনা করেন। 

    ইতিমধ্যে এক বছর কেটে গেছে। ২০১৯ সালের মে মাসে অধ্যাপক পান্ডে ঐ একই গবেষণাপত্রের একটি বিস্তারিত সংস্করণ প্রকাশ করেন [6,7]। সেখানে দেখা যাচ্ছে তাঁরাও মনে করেন noise নিয়ে যে বিতর্ক তার মূলে স্যাম্পলটির বিচিত্র ব্যবহার, এর মূল বৈজ্ঞানিক কারণ তাঁরা এই মুহূর্তে ব্যাখ্যা করতে পারছেন না তবে মনে করছেন এটি পদার্থটির একটি নতুন ধর্ম। ইতিমধ্যে তিনি তাঁর গবেষণালব্ধ ফল, যাবতীয় raw data অন্য গবেষকদের সাথে শেয়ার করেছেন, যাঁদের মধ্যে ব্রায়ান স্কিনারও আছেন। পেপারটির নতুন সংস্করণে স্যাম্পল বানানোর রেসিপি দেওয়া হয়েছে, সর্বোপরি IISC র আরেকদল গবেষক ঐ স্যাম্পলটি অধ্যাপক পান্ডের থেকে নিয়ে ঐ একই পরীক্ষা করে দেখতে শুরু করেছেন। 

    কুখ্যাত Schon Scandal এর সাথে যত আপাত মিলই থাকুক, ধরা পড়ে যাওয়ার সময় Jan Hendrik Schön কোনরকম ল্যাব নোটবুক, raw data, আবিষ্কৃত স্যাম্পল দেখাতে পারেননি যার থেকে কোনভাবেই প্রমাণ করা যায় যে কাজটি তিনি করেছেন। তাঁর ল্যাবের যাবতীয় স্যাম্পল নষ্ট করে ফেলা হয়েছিলো তদন্ত কমিটি পৌঁছবার আগেই। এর বিপরীতে অধ্যাপক পান্ডে যেভাবে এই বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন এবং চেষ্টা করছেন প্রশ্নের উত্তর দিতে তার থেকে এটিকে আরেকটা ডেটা ফ্যাব্রিকেশনের কেস বলে মনে হয়না।

    অধ্যাপক পান্ডের এই গবেষণাপত্রের দাবিগুলি অচিরেই আরো স্পষ্টভাবে ভুল বা ঠিক বলে প্রমাণিত হবে। যদি তাঁদের দাবি সত্যি হয়, এটি একটি অসামান্য বৈজ্ঞানিক গবেষণার উদাহরণ হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁই পাবে। আর অভূতপূর্ব আবিষ্কার যদি না ঘটে থাকে, স্বাভাবিক উষ্ণতায় অতিপরিবাহীর খোঁজ সম্ভবত অনিচ্ছাকৃত গবেষণাগত ভুলের উদাহরণ যা গবেষকদের নিত্যদিনের সঙ্গী।

    মেইসনার এফেক্টের ছবি। সুপারকন্ডাক্টর কীভাবে ম্যাগনেটিক ফিল্ডকে প্রতিহত করে। এই প্রতিরোধ যখন ভেঙে পড়ে, তখন চৌম্বকক্ষেত্র পদার্থটির অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে। (source: Wikipedia)


    এই লেখা তৈরীর জন্য তথ্য নিচের লিংকগুলো থেকে নেওয়া হয়েছে।আগ্রহীরা উইকিপিডিয়া থেকে আরো বিস্তারিত পড়তে পারেন, বিশেষ করে লেভিটেশন সংক্রান্ত নানা কারিগরি প্রয়োগে কীভাবে সুপারকন্ডাক্টিভিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে তা খুবই কৌতূহলোদ্দীপক (8)। একেবারে শেষে [9] একটা ভিডিওর লিংক রইলো, যেখানে সুপারকন্ডাক্টিভিটির উৎস ভারি চমৎকার করে ভিস্যুয়াল এইডের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে। কুপার-পেয়ার নিয়ে আমার আলোচনা যদি জটিল লাগে তাহলে ঐ ভিডিওটির সাহায্য নিলে সুবিধে হবে। 

    1. https://arxiv.org/ftp/arxiv/papers/1807/1807.08572.pdf
    2. https://arxiv.org/pdf/1808.02929.pdf
    3. https://en.wikipedia.org/wiki/Sch%C3%B6n_scandal
    4. https://www.nature.com/articles/d41586-018-06023-x
    5. https://thewire.in/the-sciences/why-so-many-twists-and-turns-in-the-ongoing-iisc-superconductivity-saga
    6. https://www.deccanherald.com/city/iisc-scientists-revise-superconductivity-paper-736797.html
    7. https://www.thehindu.com/sci-tech/science/iisc-team-provides-video-evidence-of-superconductivity-at-room-temperature/article27271786.ece
    8. https://en.wikipedia.org/wiki/Superconductivity
    9. https://en.wikipedia.org/wiki/Meissner_effect

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৪ জুন ২০১৯ | ১২০৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • রিভু | ***:*** | ১৪ জুন ২০১৯ ১১:৫৩78850
  • বাহ্ খুব সহজে বোঝানো হয়েছে ।
  • hu | ***:*** | ১৫ জুন ২০১৯ ০২:২০78858
  • গুরু পপুলার সায়েন্স, ইতিহাস, ভূগোল ইত্যাদির ওপর চটি ছাপিয়ে স্কুলে স্কুলে ডিস্ট্রিবিউট করতে পারে না? খনুদা রাগ করবে জানি, কিন্তু আমাদের বাল্যকালে আনন্দমেলা, কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান তবু এসব বিষয় নিয়ে ভাবত। এখন কিজ্ঞাবির খবর রাখি না, কিন্তু আমেলা উনিশ কুড়ি নামে একটা কিম্ভুত ম্যাগাজিন ছাপায় যার দৌড় কিশোর কিশোরীদের ডেটিং টিপস পর্যন্ত। তাতে অবশ্য অসুবিধে নেই কারণ যাঁরা বই কিনে পড়েন তাঁদের বাড়ির ছেলেপিলেরা আর বাংলা পড়ে না। তবে তার মানে এই না যে বাংলা ইশকুল উঠে গেছে। ইশকুল থেকে পাশ করার পর তারা কেন গোমূত্র নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, তাদের বড় হয়ে ওঠার সময়টায় পুষ্টিকর কিছু দেওয়া যায় ? খরচ বওয়ার জন্য অনেকেই এগিয়ে আসবেন মনে হয়। লেখক আর প্রকাশক পাওয়া গেলেই ...
  • dc | ***:*** | ১৫ জুন ২০১৯ ০২:৪৭78851
  • মিঠুনবাবুকে লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ। এটা খুব আগ্রহের সাথে ফলো করছি, কারন আমরা সবাই জানি রুম টেম্পারেচার সুপারকন্ডাকটিভিটি আবিষ্কার হলে সেটা স্টিম ইঞ্জিন বা ইলেকট্রিসিটির মতো বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে ঃ-)

    ইন ফ্যাক্ট সাম্প্রতিক কালে দুটো অতিপরিবাহিতার রেজাল্ট ঘোষনা করা হয়েছে। একটা এই ন্যানোস্ট্রাকচারের অতিপরিবাহিতা, অন্যটা হলো হাই প্রেশারে ল্যান্থানাম হাইড্রাইডের অতিপরিবাহিতা। একটি অ্যামেরিকান গ্রুপ ঘোষনা করেছে -১৫ ডিগ্রিতে আর ১৯০ গিগাপাসকেল প্রেশারে অতিপরিবাহিতা দেখা যাচ্ছে।

    আইআইসসি গ্রুপের রেজাল্ট গত বছর থেকেই দেখছি। প্রফ স্কিনার যে ত্রুটিটা ধরেছেন, মানে র‌্যান্ডম নয়েজের মধ্যে একইরকম প্যাটার্ন, সেটা খুবই অদ্ভুত (আপাতত সন্দেহজনক বলছি না)। এটা নিয়ে অবশ্য অধ্যাপক অনশু পান্ডে নিজেও বলেছেন যে এরকম প্যাটার্ন কেনো আসছে সেটা ওনারা বুঝতে পারছেন না। অবশ্যই সাধারনভাবে বলা যেতে পারে যে সত্যিই যদি এরকম কোন প্যাটার্ন থাকে তো সেটাকে আর র‌্যান্ডম নয়েজ বলা যায়না, সেটা সিস্টেম্যাটিক, আর নতুন কোন তত্ত্বের দিকে ইঙ্গিত করছে।

    এছাড়াও, সুপারকন্ডাকটিভিটি ব্যপারাটাই আমরা এখনও খুব কম বুঝতে পেরেছি। মিঠুনবাবু যে বিসিএস তত্ত্বের কথা বললেন সেটা শুধু টাইপ ১ সুপারকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে চলে, টাইপ ২ বা হাই টেম্পারেচার সুপারকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে চলে না। আবার টাইপ ২ এর ক্ষেত্রে যে ভরটেক্স স্টেট দেখা যায় সেটা টাইপ ১ এর ক্ষেত্রে দেখা যায়না।

    প্রফেসর পান্ডের টিম যে নতুন পেপার জমা দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে যে ১২৮ টা ন্যানোস্ট্রাকচার্ড স্যাম্প বানানো হয়েছিল, যার মধ্যে নটা স্যাম্পলে অতিপরিবাহিতা দেখা গেছে। তবে এই পেপারেও আগের ডেটা ব্যবহার করা হয়েছে আর আগের মতোই নয়েজ প্যাটার্ন দেখা গেছে। এখন বোধায় অন্য ল্যাবরেটরিতেও স্যাম্পল তৈরি করার কাজ চলছে। দেখা যাক কি হয়।
  • সুকি | ***:*** | ১৫ জুন ২০১৯ ০৫:২৫78852
  • লেখা খুব ভালো লাগল - তবে আজকাল যে হারে ডাটা ফেব্রিকেশনের গল্প শুনি, অন্যেরা যে এত বড় আবিষ্কার একটু বাঁকা চোখে দেখবে না সেটাই অস্বাভাবিক। তব আশা করব এর মধ্যে জালিয়াতির কিছু নেই - নয় যুগান্তকারী আবিষ্কার, নয় অনেষ্ট মিস্টেক।
  • | ***:*** | ১৫ জুন ২০১৯ ০৭:২৪78853
  • চমৎকার প্রবন্ধ। আমার মাইরি স্ট্রাসবার্গ এ লো টেম্পারেচার ফিজিক্স ল‍্যাবে যাওয়ার খুব স্বপ্ন ছেল, সে দুঃখ উথলে উঠলো, আরও অন‍্যান‍্য কড়া স্বপ্ন থাকায় এটা আর পারসু করা হয়নি, অনেকটা সেই যাদের সময় থাগলেই প্রবন্ধ হত তাদের মত শোনা চ্ছে যদিও
  • | ***:*** | ১৫ জুন ২০১৯ ০৭:৩০78854
  • মিঠুন এর একেকটা প্রবন্ধ পড়ি আর বার বার ভাবি গুরু যদি সায়েন্স রাইটিং এর জন্য একটা বার্ষিক পুরষ্কার ইনস্টিটিউশনালাইজ করে আমি চাঁদা দিতে রাজি। গোমুত্র আর রামসেতুর বাজারে এটা জরুরি কাজ হত।
  • dc | ***:*** | ১৫ জুন ২০১৯ ০৮:২৩78855
  • খুব ভালো প্রস্তাব। এরকম কিছু হলে আমিও এক টাকা চাঁদা দিতে রাজি আছি।
  • PM | ***:*** | ১৫ জুন ২০১৯ ০৮:৫৮78856
  • মিঠুন বাবু , দারুন লেখা। আশা করি এর ফলো আপ লেখা লিখবেন ভবিষ্যতে

    আমিও রাজি চাদা দিতে ঃ)
  • | ***:*** | ১৫ জুন ২০১৯ ০৯:৫৪78857
  • ভারী ভাল হয়েছে।
    ফুটবলের লেখাগুলোর তুলনায় বিজ্ঞানের প্রবন্ধগুলো আমার বেশী পছন্দ।
  • dc | ***:*** | ১৬ জুন ২০১৯ ০২:৪১78859
  • এটাও খুব ভালো প্রস্তাব, আমাদের ছোটবেলার রাশিয়ান সায়েন্স বইগুলোর মতো ছোট ছোট বই বের করতে পারলে তো খুবই ভালো হয়। বিশেষ করে ন্যানোটেকনোলজি আর জেনেটিক্স, এই দুটো ফিল্ডে তো দুটো আলাদা আলাদা সিরিজে বই বার করা উচিত।
  • Tim | ***:*** | ১৬ জুন ২০১৯ ০৪:০৫78860
  • সবাইকে থ্যাঙ্কু পড়ার ও প্রতিক্রিয়া দেওয়ার জন্য।

    ডিসি খুব ভালো লিখেছেন। আমি ইচ্ছে করেই টাইপ টু'র তাত্ত্বিক কচকচিতে যাইনি। ভোরটেক্স স্টেট তারপর কুপ্রেট পেরোভস্কাইটদের অপেক্ষাকৃত বেশি তাপমাত্রায় সুপারকন্ডাক্টিভিটি নিয়ে তাত্ত্বিকদের সমস্যা এইসব এড়িয়ে গেছি। মনে হচ্ছিলো যেন খুব বেশি টেকনিকাল জিনিসপত্র এসে যাচ্ছে। পাঠক আগ্রহ হারাবেন।

    কিছুদিন গেলে একবার আপডেট দেওয়ার ইচ্ছে রইলো। সেটা এখানেই কমেন্টে বা আরেকটা পর্ব করে যেভাবেই হোক। তখন প্রসঙ্গ এলে আবার এইসব বিষয় ছুঁয়ে যাব।
  • | ***:*** | ১৬ জুন ২০১৯ ০৪:৩৩78865
  • হুচির প্রস্তাবটা চমৎকার।
  • dc | ***:*** | ১৬ জুন ২০১৯ ০৪:৪৯78861
  • নানা টেকনিকাল বিষয় এড়িয়ে যাওয়া ঠিক না। আমার মতে যে বিষয়টা কঠিন সেটাকে দুধেভাতে করে দেখানোটা ঠিক না, বরং পাঠককে একটু ব্যয়াম করার সুযোগ দেওয়া উচিত ঃ-) ইন ফ্যাক্ট এটা পপুলার সায়েন্স বইগুলোর বিরুদ্ধে আমার একটা অনেক পুরনো অভিযোগ। আশা করবো গুরুর থেকে চটি বই বার করা হলেও যেন বিষয়ের গভীরতা পুরোটা থাকে। বই বার হওয়া কিন্তু খুব দরকার।

    মিঠুনবাবুই যে টিম সেটা জানতাম না ঃ-)
  • dc | ***:*** | ১৬ জুন ২০১৯ ০৪:৫০78862
  • আপডেটের অপেক্ষায় থাকলাম। গুরুর টিমের থেকেও, আর প্রফ পান্ডের টিমের থেকেও।
  • Tim | ***:*** | ১৬ জুন ২০১৯ ০৬:১৪78866
  • হুচির প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন। এরকম কিছুতে নামলে খুব পরিকল্পনা করে তবেই এগোনো উচিত।

    ডিসি ও খনুদা, না অতিসরলীকরণ আমারো পছন্দ নয়। তবে এই দুটো লেখা মূলত নিউজে চলে আসা বিজ্ঞান নিয়ে। তাই ব্রড অডিয়েন্সের কথা মাথায় রেখে লেখা।
  • Sumit Roy | ***:*** | ১৬ জুন ২০১৯ ০৮:৩১78867
  • দেব কুমার থাপা আর অংশু পাণ্ডের কাজ নিয়ে আমি খুব আশা করেছিলাম। কিন্তু পরে দেখি পিয়ার রিভিউ এর অভাবের কারণে তাদের গবেষণা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। পরে দেখলাম এই বছরে তারা তাদের লেটেস্ট পেপারে তাদের ফাইন্ডিংগুলো ভ্যালিডেট করেছেন, তবে এখনও একে ভেরিফিকেশনের পথ অতিক্রম করতে হবে। যাই হোক, খবরটা শুনে ভাল লেগেছিল। আপনার লেখা পড়ে বিষয়টা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলাম। ভাল কথা, সম্প্রতি এটা নিয়ে আরেকটা আশা জাগানিয়া কাজ হয়েছে। ল্যান্থানাম হাইড্রাইডকে -২৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসেও অতিপরিবাহী হিসেবে কাজ করানো গেছে। সম্প্রতি এটি অতিপরিবাহিতার ৩টি টেস্টের দুটোতে পাস করেছে। অতিপরিবাহী নিয়ে নিকটভবিষ্যতে খুব ভাল খবরই শুনতে যাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে।

    পেপারটি - https://arxiv.org/ftp/arxiv/papers/1812/1812.01561.pdf

    অতিপরিবাহী নিয়ে ইন্টারমিডিয়েট লেভেলের স্টুডেন্টদেরকে বোঝানোর জন্য এই লেখাটি লিখেছিলাম। অত ভাল হয়নি, তাও দিয়ে গেলাম...

    "তোমরা কি সুপারকন্ডাক্টর নিয়ে কিছু শুনেছ? কন্ডাক্টিভিটি বা তরিৎ পরিবাহিতা নিয়ে নিশ্চই জানো, এটা রেজিস্টেন্স বা রোধের বিপরীত। সুপারকন্ডাক্টিভিটি তখনই সম্ভব হয় যখন এই রেজিস্টেন্স বা রোধ শূন্য হয়ে যায়। এটা কী সম্ভব? হ্যাঁ সম্ভব। কিভাবে সম্ভব সেটা বলার জন্য কিছু তাত্ত্বিক আলোচনা প্রয়োজন। একটু মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

    একটি সাধারণ কন্ডাক্টরের বেলায়, তরিৎ প্রবাহকে একটি বিশালাকার আয়ন ল্যাটিসের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ইলেকট্রন প্রবাহী হিসেবে কল্পনা করা যেতে পারে। ইলেকট্রনগুলো অনবরত ল্যাটিসের আয়নের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, আর এই সংঘর্ষের সময় এই বিদ্যুৎ অর্থাৎ ইলেক্ট্রনের প্রবাহ যে শক্তি বহন করছিল তার কিছু অংশ সেই ল্যাটিস দ্বারা শোষিত হয় আর তাপে পরিণত হয়। এই তাপ হচ্ছে ল্যাটিস আয়নগুলোর মধ্যকার কম্পমান গতিশক্তি। এর ফলে বিদ্যুৎ প্রবাহ যে শক্তি বহন করছিল তা ক্রমাগতভাবে কমতে থাকে। এই ঘটনাটাই হল বৈদ্যুতিক রোধ এবং জুল হিটিং।

    অতিপরিবাহী বা সুপারকন্ডাক্টরের বেলায় পরিস্থিতিটি ভিন্ন। একটি সাধারণ সুপারকন্ডাক্টরে ইলেকট্রন প্রবাহী আলাদা আলাদা ইলেকট্রন নিয়ে গঠিত হয় না, বরং এটি গঠিত হয় দুটো ইলেক্ট্রনের জোড়া বা পেয়ার নিয়ে, অর্থাৎ অনেকগুলো ইলেকট্রন জোড়া নিয়েই ইলেকট্রন প্রবাহ তৈরি হয়। এই জোড়াগুলোকে বলা হয় কুপার পেয়ার। এই জোড়াটি যে আকর্ষণ বল নিয়ে গঠিত হয় সেটি আসে ইলেকট্রনগুলোর মধ্যকার ফোননের আদান প্রদানের ফলে। কোয়ান্টাম বলবিদ্যা অনুসারে বলা যায় এই কুপার পেয়ারের শক্তি বর্ণালী বা এনার্জি স্পেকট্রামে শক্তি পার্থক্য বা এনার্জি গ্যাপ থাকে। এর অর্থ হচ্ছে সেই প্রবাহকে উত্তেজিত করতে একটি সর্বনিম্ন পরিমাণ শক্তি ΔE সরবরাহ করতে হবে। তাই যদি এই ΔE ল্যাটিসের তাপশক্তি kT এর চেয়ে বেশি হয় (এখানে, k হচ্ছে বোলটজম্যান ধ্রুবক, এবং T হচ্ছে এর তাপমাত্রা) তাহলে ল্যাটিসের দ্বারা ইলেকট্রনের প্রবাহ বিক্ষিপ্ত হবে না। এজন্য কুপার পেয়ার প্রবাহ হচ্ছে একটি সুপারফ্লুইড বা অতিপ্রবাহী, অর্থাৎ কোন রকম শক্তির খরচ ছাড়াই এটি প্রবাহিত হতে পারে।

    সুতরাং ভেবে দেখো, কোন পরিবাহীত তাপমাত্রা যদি এতটাই কমানো যায় যে ইলেকট্রনের এনার্জি গ্যাপ পরিবাহী এর kT এর চেয়ে বেশি হয়ে গেল, তাহলে বিনা রোধেই বিদ্যুৎ প্রবাহ সম্ভব। সুতরাং একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার নিচে কোন পরিবাহী অতিপরিবাহী বা সুপারকন্ডাক্টর হিসেবে কাজ করে, আর সেই তাপমাত্রাকে এখানে ক্রিটিকাল টেমপারেচার বলে।

    যাই হোক, এই সুপারকন্ডাক্টিভিটি বা অতিপরিবাহিতা কেন গুরুত্বপূর্ণ? নিশ্চই এর কোন প্রয়োগ আছে, যার ফলে অনেক উপকারী ও নতুন প্রযুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু অনেক কম তাপমাত্রায় এটা পাওয়া যায় বলে এখনও কিছু সমস্যা আছে। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এখানে আশার আলো দিচ্ছে। অতিপরিবাহী নিয়ে প্রযুক্তি ও সাম্প্রতিক আবিষ্কার নিয়ে বলব বলেই আসলে লেখাটি শুরু করেছিলাম। কিন্তু অতিপরিবাহীর ব্যাখ্যা দিতে গিয়েই লেখাটি বড় হয়ে গেল। তাই আর বাড়াচ্ছি না। এসব নিয়ে বরং পরেই লিখব..."
  • | ***:*** | ১৬ জুন ২০১৯ ১২:৩১78863
  • আ্যবাউট তিরিশ বছর আগে লাইব্রেরী র সায়েন্টিফিক আমেরিকার ন এ মাইরি ভোরটেক্স স্টেট নিয়ে পড়া র রে আমি মেসমারাইজড হয়ে গেছি লাম, এসব বিষয়ে আরও লেখ
  • | ***:*** | ১৬ জুন ২০১৯ ১২:৪৬78864
  • কম্প্লেকসিটি না কমানোই ভালো, জেনে রালি একেকটা রিডার শিপের জন্য লিখলি, এই করতে করতে আমি মরার আগেই দর বাংলায় ছেলে মেয়েরা পেপার লিখতে শুরু করল, দারুন হবে
  • ষষ্ঠ পাণ্ডব | ***:*** | ১৭ জুন ২০১৯ ০৮:৩৬78868
  • ১. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানবিষয়ক লেখা পড়তে কিঞ্চিৎ অনীহা বোধ করি কারণ বেশিরভাগ লেখা অতিসরলীকরণ, অতিসংক্ষিপ্তকরণ, বিস্তারিত আলোচনা এড়িয়ে যাওয়া, বিষয়ের গভীরে না যাওয়ার দোষে দুষ্ট। কে যে এদেশের মানুষের মাথায় ঢুকিয়েছিল বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান মানে 'জনপ্রিয় বিজ্ঞান', পত্রিকার পাতায় লেখা 'সর্বজনবোধ্য বিজ্ঞান' (যদিও সর্বজনবোধ্য কথাটারই কোন মানে নেই)! সেই থেকে সর্বনাশের শুরু (হয়তো শুরুই হয়েছে সর্বনাশ দিয়ে)। এই কারণে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানের জার্নাল প্রায় শূন্যের কোঠায়। যাও আছে সেগুলোর গ্রহনযোগ্যতা আরও কম। তাই গুরুর বিজ্ঞান লেখকদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ যখন লিখবেন তখন বিষয় সংশ্লিষ্ট যা যা দরকারী সবটার গভীরে গিয়ে লিখুন। তাতে জটিল ম্যাথমেটিকেল মডেল, ইকুয়েশন, রাসায়নিক সমীকরণ, গ্রাফ ইত্যাদি ইত্যাদি যা আসে আসুক। আশ-বিষয়, পাশ-বিষয় যা কিছু আসবে সেগুলোর বিস্তারিত লেখার দরকার নেই, উইকি বা এইপ্রকার কোন কিছুর লিঙ্ক ধরিয়ে দিয়ে মূল আলোচনার গতিপথ ঠিক রাখতে হবে।

    ২. বাংলা ভাষায় মিথবাস্টার ধরনের ছোট ছোট ভিডিও বানানো দরকার। অবৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা, গোঁড়ামী, কুসংস্কার, অলৌকিকত্ব ইত্যাদির মূলোৎপাটন করার জন্য এটা একটা ভালো উপায় হতে পারে।

    ৩. কোন কিছুর ওপর বিশ্বাস বা অবিশ্বাস না করেও সাধারণ তাপমাত্রা ও চাপে সোনার মাঝে রূপোর কলয়ডাল দ্রবণের অতিপরিবাহী আচরণে আস্থা আনতে পারছি না। তবে প্রাপ্ত তথ্যে যে 'নেপথ্যে কোলাহল'-এর কথা বললেন সেখানে কিছু একটা থাকতে পারে বলে ধারণা হচ্ছে।

    ৪. স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও চাপে কোন বিশেষ উপযোগের ব্যবস্থা ছাড়া এমন কিছু কি হয় যাতে অতিপরিবাহী না হোক তার কাছাকাছি পর্যায়ের কিছু পাওয়া যায়? কিছু বস্তু আছে যাদের পরমাণুর ভৌত সুস্থিতি, সুনির্দিষ্ট স্ফটিক গঠন ইত্যাদি পেতে শূন্য কেলভিনের কাছাকাছি যেতে হবে, আবার কিছু বস্তুতে এটা ২৭৩ বা তারচেয়ে বেশি কেলভিন তাপমাত্রাতেও সম্ভব। তাহলে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও চাপে এমন কিছু থাকা খুবই সম্ভব যার পরিবাহিতা ব্যাপক মাত্রায় হবার কথা। অমন কিছু কি সত্যিই আছে?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন