এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • যে আঁধার আলোর অধিকঃ পর্ব ৩ 

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৬ আগস্ট ২০২৪ | ৩৭৩ বার পঠিত
  • 3
    এবার ভাল করে ডরমিটরি পর্যবেক্ষণ করা গেল। এখানে ছ'দিন থাকতে হবে।
    পাহাড়ের ওপর একটি ছোট ধাপে লম্বা একটি হলঘর মত। তার মধ্যে একদিকে সিমেন্টের তিনফিট উঁচু প্ল্যাটফর্মের ওপর দুটো করে খাট। তিনধাপ সিঁড়িতে পা রেখে কমন প্যাসেজে নামতে হয়। আর প্যাসেজের আরেক পাশে সিঙ্গল খাট।

    প্রত্যেকের মাথার কাছে  দেয়ালের পার্টিশনের গায়ে একটি চার ফিট করে আলমারী গেঁথে দেয়া। প্রত্যেকটি বিছানার পাশে একটি বড় জানলা, কপাটে কাঁচ লাগানো, বাইরে লোহার জাল। ফলে পোকামাকড়-সাপখোপের ভয় নেই। কোন পাখা নেই, দরকারও নেই।কারণ ঘরের মধ্যে মেঘ ঢুকছে।
    কিন্তু উত্তরাঞ্চল সরকারের বলিহারি! দূর দূর পাহাড়ের গায়ে একএকটি হ্যামলেট, তবু খাম্বা টেনে বিজলী পৌঁছে গেছে।
    যা বলছিলাম, এমনি করে গোটা বিশেক বিছানার পর লাইন দিয়ে ছটি ল্যাভোটরি। 
    পরিষ্কার, কিন্তু কমোড মাত্র একটিতেই। উল্টো লাইনে তিনটে স্নানঘর, মাঝের প্যাসেজে আয়না লাগানো তিনটে বেসিন; সেখানে দাড়ি কামানো, মুখ ধোয়া, ফেসওয়াশ, ক্রীম ইত্যাদির মাধ্যমে শ্রী তোলা, ইত্যাদি ইত্যাদি। 
     
    এর পর আরো দশটি বিছানাসম্পন্ন একই ডিজাইনের হল। সব মিলিয়ে স্পার্টান কিন্তু নান্দনিক রুচিসম্পন্ন, মনটা ভাল হয়ে গেল।
    এবার আরো জনাতিনেক নরপুঙ্গব ব্যাগম্যাগসুটকেস ইত্যাদি নিয়ে কাগভেজা হয়ে ঢুকলেন।
    বেলা বাজে এগারো, দাঁত বের করে জিগাইলেন-- চায় মিলেগা?
    আমরা ততোধিক দাঁত বের করে জানালাম- তোদের সন্ধান জানা থাকলে বল।
    ইতিমধ্যে একজন স্টাফ হাসিমুখে এসে একটি কাগজ ধরালেন।

    জানা গেল এই পুরুষ-মাত্র ডরমিটরিটির নাম গঙ্গাবিহার, আর এর উঠোন থেকে এবড়োখেবড়ো ধাপ ধরে প্রায় ছ'ফিট নীচে নামলে একই কায়দার যমুনাবিহার, তাতে মেয়েদের থাকার ব্যবস্থা।
    আরো জানা গেল -- আমরা কেউ কারো বিয়েতে বরযাত্রী হয়ে আসি নি। লো-কস্ট এনজিও ট্রেনিংয়ে এসেছি। ফলে বেড-টি পাওয়া যাবে না। সকালে ডাইনিং হলে গিয়ে চা' নিতে হবে। দুবেলা খাওয়ার সময় লাইন দিয়ে নিজের নিজের থালাতে খাবার যত চাই নেয়া যাবে। কিন্তু থালা প্লেট মেজেধুয়ে রেখে আসতে হবে।

    মেয়েদের বিহারের নীচে পাহাড়ি ধাপ কেটে ফুলবাগানের পাশ দিয়ে খাড়াই পথ ধরে দোতলা সমান নীচে নামলে যে বড় হল দেখা যাচ্ছে ওটাই হল ডাইনিং হল। তার থেকে পাহাড়ের গা বেয়ে আরো একতলা নামলে তবে ক্লাস রুম, অন্য মাথায় বড় কমিউনিটি হল।
    -- ও বউরে, তুই কনে গেলি রে! তোর ভ্যাবাগঙ্গারাম বরটি যে খালি বসে বসে বই পড়ে আর ঠ্যাং নাচায়! ও যে বাজারেও যায় না, সব তোর ঘাড়ে চাপায়।
    এই বয়সে হিমালয়ে দু'বেলা এমন ওঠবোস করালে সে কি আর ছত্তিশগড়ে ফিরতে পারবে?
     
    ভেতর থেকে কেউ বলে উঠলো-- মনে রাখিও, তুমি গ্রামীণ উন্নয়ন ও এন জি ও আন্দোলনের জন্য বলিপ্রদত্ত।
     মনে রাখিও কিশোর বয়সে রামকৃষ্ণ মিশনের হস্টেলে পাঁচ বছর ছিলে।
     
    এতেই কেলিয়ে পড়লি শ্লা!

    ঘরের মধ্যে মেঘ ঢুকছে। উইনচিটার মোজা জুতো সব ভিজে। গঙ্গারাম দাস জানলার কোণে গিয়ে সব গুলো মেলে দেয়। তারপর ভিজে ঘাস এবড়োখেবড়ো পাহাড়ি ঢাল ধরে নীচে নেমে খাবারঘর হয়ে আরো এক ধাপ নেমে একটি বড় হলঘরে পৌঁছয়। 
     
    বিশাল বড় হলঘরের এ মুড়ো থেকে ও মুড়ো অব্দি সস্তা কার্পেট পাতা। এখানে কোন এক পবন গুপ্তাজির অল্টারনেটিভ এডুকেশনের স্কুল চলে।
    একটি পেল্লায় বোর্ডে কিছু লেখা,দেয়ালে দেয়ালে ফ্রেমে বাঁধানো মহাপুরুষদের অমৃতবাণী। সিনিক এবং বিশ্বনিন্দুক গঙ্গারাম সবকিছুই সন্দেহের চোখে দেখে।
    কাছে গিয়ে একেকটি লেখা মন দিয়ে পড়তে থাকে। মনে মনে গুণগুণ করে হো চি মিন না কার জেল থেকে লেখা একটি অণু কবিতার লাইন;-- সময় কাটাতে হবে দাবাখেলা শিখেছি আমরা!

    আ মোলো যা! এই পাহাড়ি গাঁয়ে ট্রেনিং করতে এসেছিস তো হো চি মিনের কবিতা কোত্থেকে এল?
    অ! হো চি মিন মানে অ্যান্টি আমেরিকানিজম্‌, অর্থাৎ অ্যাপ্লাইড বিহেভিয়ারাল সায়েন্সের হিউম্যান ল্যাব, টি-গ্রুপ নিয়ে খিল্লি করা?
    এইসব সাইকোলজি, অবচেতন মন, ইমোশন-- সব ফক্কিকারি। আসল হল সমাজ, ওটাকে বদলাও। যার ধক নেই সে চুপ করে থাকুক। এতসব ছেড়ে দিয়ে ব্যক্তিমনের গহনে অবগাহনের চেষ্টা!
    এসব ইম্পিরিয়ালিস্ট চক্রান্ত, মানুষকে সংগ্রামবিমুখ করা।

    বেশ কথা। তবে ন্যাকাচৈতন, এখানে এলি কেন? কে তোকে মাথার দিব্যি দিয়ে এখানে আসতে বলেছে? তাও পয়সা খরচ করে? আবার খালি-পিলি গাল পাড়ছিস? ভন্ড কোথাকার!
    --- শখ করে থোড়ি এসেছি? এবারের ‘বেসিক হিউম্যান ল্যাব’ তো এনজিওদের জন্যে। আর রিটায়ারমেন্টের পর যে এনজিওতে যোগ দেব তারা শর্ত রেখেছে -- ওদের পয়সায় এই ট্রেনিং করে আসতে হবে। নইলে কোন শালা এসব ইয়াংকি ঢ্যামনামিতে আসে?
    তা বেশ, এসেছ যখন খাওয়ার ডাক না আসা অবধি ফালতু কথা না বলে দেয়ালে মাউন্টেড অমৃতবাণীগুলো পড়।

    • কে সভ্য, কে অসভ্য? সার্টিফিকেট কে দিচ্ছে?
    • প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্ব সভ্য, তৃতীয় বিশ্ব অসভ্য?
    • ইউরোপ আমেরিকা সভ্য?
    • এশিয়া আফ্রিকা ল্যাটিন আমেরিকা অসভ্য?
    • সভ্যতা মাপার মাপকাঠি কি?

    এ কী র‍্যা?
    • আবার " সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের পরিচয়-- সবচেয়ে বেশি বিরোধিমতকে সহ্য করা, স্পেস দেয়া"।
    কালীদা গো, ও কালীদা, আর পারি না।
     

    --এদিকে আসুন, নাম পরিচয় রেজিস্ট্রি করিয়ে নিন।
    ফিরে তাকাতেই দেখা গেল হলের একমাথায় বেশ কজন পুরুষ ও স্ত্রী জাঁকিয়ে বসেছেন। একজন একটি ফাইল নিয়ে কিছু ফর্ম ভরাচ্ছেন ও একটা করে কিট্‌ ধরিয়ে দিচ্ছেন।

    গঙ্গারাম ফাইল নিল, জানতে পারলো--- প্রচন্ড বৃষ্টিতে পাহাড়ে ধ্বস নামায় একদিকের রাস্তা বন্ধ। ফলে কিছু প্রতিভাগী এখনো পৌঁছয় নি। তাই ও যেন খেয়ে নেয়। বেলা আড়াইটে থেকে ওরিয়েন্টেশন  সেশন শুরু হবে।
    ও এবার মন দিয়ে ফাইল পড়তে থাকে।
    জানতে পারে ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর অ্যাপ্লায়েড বিহেভিরিয়াল সায়েন্স বা আইস্যাবস(ISABS) এদেশে সত্তরের দশকে শুরু হয়, তাতে IIM (Calcutta)'র এক বাঙালী প্রফেসরের মুখ্য ভূমিকা ছিল।
    ওর হাড় পিত্তি জ্বলে যায়।
    বাঙালী না হলে বাঙালীকে বংশদন্ড কে দেবে!
     
    সত্তরের দশক!
     তখন কোলকাতার অলিগলিতে "হীরের টুকরো ছেলেরা সব অশ্বমেধের বলি'' হচ্ছে, অধ্যাপক কোথায় পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিন্দায় মুখর হবেন, তা না? গিয়ে দেখ, এই দেশে অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজিতে আমেরিকার মডেল চালু করছে।

    একটি নামকে খুব মাথায় তোলা হচ্ছে-- উদয় পারিখ। উনি নাকি ভারতের পরিবেশে এই টি-গ্রুপ পদ্ধতি দিয়ে মানুষের নির্জ্ঞান মনকে বোঝার মডেল বানিয়েছেন।
    এবার কিছু "কী কী করিতে হইবে'' এবং "কী কী অবশ্য করিবে না'' পড়া যাক।

    এটা কি?
    - এই মেথড মানুষের ব্যক্তিত্ব বদলাতে পারে, তাকে ধ্বংস করতে পারে। কোন মানসিক চাপ থাকলে তাকে শিজোফ্রেনিক করতে পারে।
    তাই একটি ফর্মে এই মর্মে সাইন করতে হবে যে এইসব এক্সপেরিমেন্টের সম্ভাব্য রিস্কের কথা জেনেই চোখকান খুলে ও এই ট্রেনিংয়ে এসেছে। অতএব, ওর কোন শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হলে আইস্যাবস দায়ী নয়।

    বেশ, বাওয়া বেশ! এর চেয়ে বেশি ভদ্রতা তোমাদের থেকে আশা করা অন্যায়।
     
    কিন্তু এটা?
    "এই মনস্তাত্ত্বিক কার্যশালায় স্বাভাবিক ভাবেই অ্যানিমেটরের সঙ্গে প্রতিভাগীদের একটি ইমোশনাল বন্ড গড়ে উঠতে পারে। কিন্তু তার সুযোগ নিয়ে কোন স্যার বা ম্যাডাম যদি কোন প্রতিভাগীকে শোষণ করেন বা তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ব্যাপারে এথিক্স কমিটিতে কমে্‌প্লন করা যেতে পারে। কমিটি মেম্বারদের নাম ও ফোন নং— “।

    গঙ্গারাম পুলকিত! এর মানে এমন কান্ড এইসব হতচ্ছাড়া হিপি-ইয়াংকি--ডুডল-ডু ওয়ার্কশপে আকচার ঘটে থাকে।
    তাহলে হয়তো, হয়তো আমার সঙ্গেও এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে? কেন নয়?
    একটি পরকীয়া সম্পর্কের সম্ভাবনায় ওর পুলকিত মন গাইতে লাগলো-- কে আবার বাজায় বাঁশি এ ভাঙা কুঞ্জবনে?

    পুরো লাইনটা গাওয়াও হয় নি, চোখ আটকে গেলো দরজার দিকে, একটি " বৃষ্টিভেজা বাড়ির মতন রহস্যময়"হাসি হেসে হলঘরে ঢুকছেন সেরেনা উইলিয়ামস্‌। সেই ম্যাসকুলার দশাসই চেহারা, তামাটে চুলের স্ট্রিক, কালো চেহারায় একগাল হাসি, তবে একটু যেন কুঁজো! গায়ে একটি টকটকে লাল উইনচিটার।

    4
    ও সেলিব্রিটির সামনে কাঁচুমাচু, টেরিয়ে টেরিয়ে সেরেনাকে দেখছিল। হটাৎ কি মনে করে এগিয়ে গিয়ে সেরেনার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল,--- গঙ্গারাম, ফ্রম ছত্তিশগড়!
    জবাবে আবার একগাল হেসে সেরেনা বল্লেন-- সুপ্রিয়া ফ্রম রাজস্থান। য়ু বিলং টু কর্পোরেট, অর এন জি ও?
    --- এন জি ও, কর্মদক্ষ। ও একটু তোতলায়।
    -- নেভার মাইন্ড, ওয়ন্স আই অলসো থট অফ ডুইয়িং দোজ এন জি ও থিংগ্‌স্।
    একটু পেট্রনাইজিং কি? গঙ্গারাম চটে গিয়ে অসভ্যের মত জিগায়-- হুইচ কমিউনিটি ইউ বিলং টু?
    সেরেনার হাসিটি উজ্বল হয়।-- ইউ পি, কায়স্থ; নিগম ফ্যামিলি, ফ্রম আজমগড়।
    এবার দেশি সেরেনা এগিয়ে যান কোন পূর্বপরিচিতের দিকে।
    গঙ্গারাম দাস তাকিয়ে দেখে ইতিমধ্যে হলে এসে খুঁটি গেড়েছ এন প্রায় জনা তিরিশেক মেয়েমদ্দ,প্রৌড়। এদের মধ্যে ওর মত টেকো বুড়ো একজনও নেই।

    ইতিমধ্যে সামনের-চুল-টেনে- টাক- ঢাকা চল্লিশ- পার একজন ল্যাপটপ- পিঠে হাজির হয়ে বেশ পরিচিতের মত রেজিস্ট্রেশন টেবিলের সামনে জাঁকিয়ে বসলো।
    বল্লো-- আমি দু'বছর আগেও এই হিউম্যান বেসিক ল্যাব অ্যাটেন্ড করেছি। আমাকে এবারও আসতে বলা হয়েছে। আচ্ছা, সোসাইটি থেকে অমুক বা তমুক এসেছেন কি? ওঁরা আমার পরিচিত। আমার পুরনো মেন্টর।

    ---- বলে ভাল করলে বাছা, আমাদের নিয়ম অনুযায়ী এই ল্যাবে পুরনো চেনা লোক কোন ভাবে তোমার মেন্টর হতে পারবে না।
     
     পরে জেনেছিল, ওই ভদ্রলোকের অবস্থা খারাপ, কোন উন্নতি নেই । তাই এবারও বেসিক ল্যাবেই আসতে বলা হয়েছে। অ! সেই ফেল করে তিনবছর একই- ক্লাসে- আটকে -থাকা -দাদা কেস!

    ও এখন মন দিয়ে দেখছে একটি সুন্দরীকে, যে হেসে গড়িয়ে পড়ছে একটি লম্বাটে পাজামা কুর্তা পরা তরুণের কোন চুটকি শুনে।
    আরে, পাঠান কুর্তা-পাজামা পরা বড় বড় চোখ ও রোমান নাকের একজন পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলা ফেসিলিটেটর ও আছেন যে! উনি কি আমার মেন্টর হবেন?

    এমন সময় মাইক বেজে উঠলো।
    --সবাই এদিকে তাকান। আমি রাধাকৃষ্ণন, আমাকে রাধা বলেই ডাকবেন।
    রাধা? এ তো সাদা পাজামা-কুর্তা পরা সাদা গোঁফ কাঁচাপাকা চুলের কালোকোলো হাসি হাসি মুখের ছ'ফিট লম্বা তামিল ভদ্রলোক।

     প্রৌঢ় তামিল রাধার গলার স্বরে দক্ষিণীটানের মিষ্টি হিন্দি আর মাঝে মাঝে ইংরেজির পাঁচফোড়ন, বেশ লাগে।
    -- আভি আপলোগ বহুত দূর সে বহুত প্রকার কে উম্মিদ লেকর আয়া হ্যায়। শুরু মেঁ কুছ তকলিফ হোগা।
    কর্পোরেটদের জন্যে এই ওয়ার্কশপ যখন গুরগাঁও, হায়দ্রাবাদ, কোলকাতায় পাঁচতারা হোটেলে হয় তখন ওভারহেড বেড়ে যাওয়ায় একসপ্তাহের থাকাখাওয়া-খাইখরচা কুড়িহাজারের নীচে নামানো যায় না। 

    আমরা প্রফেসনালরা এই হিউম্যান ওয়ার্কশপের জন্যে নিজেদের চার্জ খুব নমিনাল নিই।
    তাই এক্সক্লুসিভলি এন জি ও দের জন্যে করতে এই ধরনের মাত্র বেসিক সুবিধাযুক্ত লো কস্ট জায়গা খুঁজি।
     
     এছাড়া খরচ কমাতে স্কেডিউল একটু ঠাসা রাখা হয়েছে। সকাল ন'টা থেকে রাত ন'টা।
    পুষ্টিকর সাধারণ খাওয়াদাওয়া, কাজেই কোন কমপ্লেন শুনবো না।

    আর এই গান্ধীয়ান ইনস্টিটুশন অনুগ্রহ করে নামমাত্র ভাড়ায় ওদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যবহার করতে দিয়েছেন। ওঁদের কিছু মূল্যবোধকে সম্মান করা আমাদের ডিউটি। অতএব, সাধারণতঃ নিজেদের ট্রেনিং সেন্টারে যেসব নিয়মভাঙা অ্যাডভেঞ্চার করে আমরা মজা পাই সেগুলো এখানে স্ট্রিক্টলি নো-নো!

    কিন্তু হিমালয়ের কোলে এই প্রিস্টাইন বিউটির মাঝে 'আপনাকে জানা, নিজেকে নানাভাবে ফিরে ফিরে দেখার'এই হিউম্যান ল্যাব ওয়ার্কশপ আপনাদের ভালো লাগবে আশা করি।
    আপনাদের দশজনের চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। মিকস্‌ড গ্রুপ। খেয়াল রাখা হয়েছে যেন আগের থেকে পরিচিত সাথীরা একই গ্রুপে না পড়েন।

    আবার বলি, এর থেকে কতটুকু লাভবান হয়ে ঘরে ফিরবেন তা ডিপেন্ড করছে আপনি কতটা নিজেকে দেবেন তার ওপর।
    এর ফলে আপনি খুব উন্নত মানুষ হবেন কি না সেটা বিতর্কিত বিষয়। কিন্তু আপনি আগের চেয়ে শক্তিমান হবেন, সার্টেনলি।
    কারণ, আপনি জানতে পারবেন নিজেকে, অন্ততঃ খানিকটা। আর জানতে পারবেন অন্যদের চোখে আপনি কেমন দেখান।
    নিজের মনের গোপন বা অন্ধ অলিগলিতে ঘুরে বেড়ানো বেশ রিস্কি! সেই সাহস বা ধক আছে তাই আপনারা এসেছেন।
    যাঁরা এই বেসিক ল্যাব উত্তীর্ণ হবেন তাঁরা আগামী ছ'মাস থেকে দু'বছরের মধ্যে অ্যাডভান্স ল্যাব অ্যাটেন্ড করার জন্যে এলিজিবল্‌ হবেন। তাঁদের ব্যক্তিগত ভাবে সেটা জানিয়ে দেয়া হবে।

    আসুন, আমরা এই বৃষ্টিঝরা অন্ধকার মেঘলা দিনে কিছু ওয়ার্ম আপ গেম খেলি।

    5
    -- আপনার অচেনা সাথীদের সাথে আলাপ পরিচয় করুন।
    --- এবার আপনারা ফিরে যান শৈশবে বা কৈশোরে। এই মিউজিকের সঙ্গে টিন এজারের মত বিহেভ করুন। নাচতেও পারেন।
    --- মনে করুন খুব হাসির কথা মনে পড়েছে। বিন্দাস হাসুন, চেষ্টা করুন পাশের সঙ্গীটিকে এই আনন্দে সামিল কড়েন।
    --- অচেনা একজনকে সাথী করুন। চোখ বুঁজুন, অন্ধ হয়ে যান। সঙ্গের ব্যক্তিটির ওপর ভরসা রাখুন । ও আপনাকে জড়িয়ে ধরে হাঁটাবে-- হলের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। ও আপনাকে নেভিগেট করবে, যাতে অন্য কোনো জোড়ার সঙ্গে বা দেয়াল-আসবাব এসবের সঙ্গে ধাক্কা না লাগে। সাথীটির ওপর ভরসা রাখুন।
    এবার রোল রিভার্স করুন। চক্ষুষ্মান ব্যক্তিটি অন্ধের ভূমিকায় আসুন।
    এবার মাইকে আপনার এক্সপিরিয়েন্স বলুন।

    ধুস্‌ শালা! যত্তো ন্যাকামি! এইসব বস্তাপচা জিনিস অসংখ্য ট্রেনিংএ করা হয়েছে, নতুন কি করাচ্ছে!  মনে হল-- ফালতু এলাম।

    -- এবার পাঁচজনের গ্রুপ তৈরি করুন।
    একজন আরেকজনকে বলুন - জীবনে সবচেয়ে আনন্দের দিনটির কথা; সবচেয়ে দুঃখের দিনটির কথা।
    যাকগে, এবার একটু কার্পেটের ওপর হাঁটুমুড়ে বসা যাবে, ও যে হাঁপিয়ে উঠেছে।

    কেয়াবাৎ! দাসের গ্রুপে এসেছে সেই লাল কুর্তা পরা সেরেনা, হাসিমুখে বসেই লীড নিয়েছে।
    -- দশ-দশ মিনিট টাইম। যদি কেউ কিছু মনে না করেন আমি এটা মডারেট করি? প্রথমে সবাই নাম-অর্গানাইজেশন বলে এক এক করে নিজের কথা বলুন।
    মহা চালু তো! কেমন সবারটা শুনে নিয়ে শেষে নিজেরটুকু পলিটিক্যালি করেক্ট ধাঁচে বলবে।

    কিন্তু গঙ্গারামের কপালে জ্যোতিষী হওয়া নেই।
    সেরেনা সবার ইতস্ততঃ ভাব দেখে বললো-- আচ্ছা, আমিই শুরু করছি।

    বাবাকে খুব ভালবাসতাম। অকালে চলে গিয়েছিলেন, তিন মেয়েকে রেখে, আমিই ছোট, মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। সেই ছিল সবচেয়ে দুঃখের দিন।
    কিন্তু কসম খেয়েছিলাম- ভালো করে পড়াশুনো করে বড় চাকরি করে সংসারের হাল ধরবো। দিদিদের আর কষ্ট করতে দেব না।
    আমি এখন একটি সর্বভারতীয় বীমা কোম্পানীর রাজস্থানের এইচ আর চিফ। সম্মানজনক মাইনে। যেদিন জয়েন করলাম বড় আনন্দ হল। মনে হল কথা রাখতে পেরেছি। বাবা নিশ্চয় ওপর থেকে দেখে খুশি হয়েছেন, কফি খেতে খেতে হাসছেন। আমাকে আশীর্বাদ করছেন।

    এরপর পালা সেই নেপালী ছেলেটির যে স্যুটকেস টেনেছে।
    -- ইনফোসিস বেঙ্গালুরুতে আড়াই বছর চাকরি করতে করতে মনে হচ্ছিল দিস ইজ নট মাই কাপ অফ টি! কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।
    একদিন চাকরি ছাড়লাম। ওরা আমাকে বোঝাতে চেষ্টা করলেন। শিলচরের রিজিওনাল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পাস করে এসেছো, এখানে তোমার ভবিষ্যত উজ্বল, কেন যাবে?

    কিন্তু আমি আর কর্পোরেটের ধারে কাছে নেই। ওসব ছেড়ে এলাম রাজস্থানে, জয়েন করলাম এই নামকরা এন জি ও তে; গরীবদের মধ্যে শিক্ষার ইনোভেটিভ কাজ করি। আনন্দে আছি। নিজের টার্মসে বাঁচছি।
    এবার পালা একটি রূপুসী-ফুলটুসি ললি-পলি চশমা চোখে মেয়েটির।

    --- সবচেয়ে আনন্দের দিন হল যেদিন আমার দশ বছরের পুরনো বন্ধুকে জীবনসাথী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মালা বদল করলাম। আর দুঃখের দিন? ওই দিনটাই।
    কেন যে আমার মায়কা থেকে কেউ বিয়েটা তখন মেনে নিলেন না! এক ছোটমামা বাদে। 
    ছোটবেলা থেকে চেনাপরিচিত আদরকাড়া-আদরদেয়া চেহারাগুলো এক লহমায় বদলে এল! কাউকেই চিনতে পারিনা!
    আজ প্রায় একবছর পরে ওঁরা মেনে নিয়েছেন, আসা-যাওয়া শুরু হয়েছেদ। কিন্তু সেদিনের শক্‌ সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে।
    এবার গঙ্গারাম দাসের পালা।

     
    6
    --কি হল গঙ্গারাম ফ্রম ছত্তিশগড় না কি চৌতিরিশগড়? চুপ করে আছেন কেন? মাত্র তিন মিনিট বাকি! শিগ্গির করুন, শুধু আপনারটাই শোনা বাকি।

    -- আমার সবচেয়ে দুঃখের দিন হল যেদিন আমার বাবা ভিলাই স্টীল প্ল্যান্টের ভেতরে বাড়ির কাজের লোকের ছোটভাই মিদনাপুরের কানুকে বাঁচাতে গিয়ে নিজে মারা গেলেন। মনে হল মাথার ওপর থেকে ছাত সরে গেল। মনে হল আমি কত তুচ্ছ, অসহায়! কিস্যু করতে পারলাম না।

     মিথ্যে কথা! গঙ্গারাম, সেদিন তুমি দুঃখের চেয়ে বেশি স্বস্তি পেয়েছিলে। কত লোক তোমার বাবার প্রশংসা করছিল, বাড়িতে ভীড় করে এসে বলছিল যে কেমন ভাবে দাসসাব নে এক লেবার কো বাঁচানে কে লিয়ে শের জ্যায়সা কুদ কর অপনা জান দে দিয়ে। ইয়াদ রখনা বেটা, আপ কেইসন বাপ কা পুত্তর হো!
    তুমি গর্বিত হলে। কিন্তু স্বস্তি পেলে এই জন্যে যে ল্যাটা চুকেছে। 
     
    যদি পিতৃদেব ভাঙা পা নিয়ে বেঁচে থাকতেন তাহলে কিছুদিন পরে ওনার কাছে পঙ্গু জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠতো আর উনিও ক্রমশঃ বৌ-ছেলের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতেন। 
    আস্তে আস্তে দৈনদিন তিক্ততার ধূলো লেগে বাবার শ্রদ্ধা-ভালবাসার ছবি ক্রমশঃ মলিন হতে থাকত। সেই দীনতার হাত থেকে উনি মরে গিয়ে রেহাই পেলেন।

    তবে কেন মিথ্যে কথা বলছো, প্রথম দিনেই?
    -- বেশ করেছি। এদের কতটুকু চিনি জানি যে নিজেকে উলঙ্গ করে মেলে ধরবো? বাকি সবাই সত্যি কথা বলেছে? কী গ্যারান্টি!
    -- সত্যি কথা হল তোমার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন -- যেদিন তোমার স্ত্রী একই শহরে আলাদা বাড়িতে থাকতে লাগলেন। ঘোষণা করে দিলেন যে এই অপদার্থ আত্মসুখী লোকটির সঙ্গে আর একছাতের নীচে থাকা যায় না।
    তোমার ইগোতে, শৈশব থেকে সযত্নে লালিত ছবিটিতে এমন লাথি কেউ এর আগে কষায়নি।
    -- চোপ শালা!
    --আর আপনার সবচেয়ে সুখের দিন? তাড়াতাড়ি করুন সাবজি, মাত্র দু'মিনিট বাকি! এর পরেই গ্রুপ প্রেজেন্টেশন।

    ---যেদিন আমার মেয়ে দিল্লি থেকে ফোন করলো-- চাকরি পেয়ে গেছি, কোন চিন্তা কর না, বাবা! তোমার লোন শোধ হয়ে যাবে।
    - সত্যি, কি ভাল আপনার মেয়ে!
    ফের মিথ্যে কথা? ওটা তোর সবচেয়ে সুখের দিন ছিল? সবচেয়ে?
    আয়নার সামনে দাঁড়া রাস্কেল! একেবার নিজের চোখে চোখ রেখে সত্যি কথা বল!

    আমার স-অ-ব চাইতে সুখের দিন? বলা মুস্কিল!

    বড্ড ন্যাকা! এখানে আয়নাকে বল, কে জানতে পারছে! সেই দিনটার কথা বল, যা তুই কাউকে আজও বলিস নি। তোর বউকেও না। জামাকাপড়ের নীচে লুকিয়ে রাখা নিষিদ্ধ হাত থেকে পাওয়া আংটির মত যাকে মাঝে মধ্যে বের করে দেখিস্-- সেই দিনটার কথা বল্।

    -- হ্যাঁ, সে এক মেঘলা টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়া মন খারাপ করা দিন। জাহিদের বাড়ি গিয়েছিলাম একটা বই ফেরৎ দিতে। ও ঘরে ছিল না। বন্ধুপত্নী রফিয়া বল্লো-- বন্ধু নেই বলে চলে যাবেন? সে কি হয়, বসুন, আমি তো আছি। চমৎকার সেমাই বানিয়েছি। ভাবীর মত হয়তো হয়নি, তবু খেয়ে যান।

    নানান হাসিঠাট্টা গল্পে সময় কেটে গেল। ফেরার সময় রফিয়া জোর করে একটা রেনকোট গছালো, প্রায় হাত গলিয়ে পরিয়ে দিল।
    আর কাছে এসে বল্লো-- একটা কথা বলি, আপনাকে আমার ভালো লাগে, অন্যরকম লাগে।

    চমকে উঠলাম। রফিয়ার গলার আওয়াজে কোন অচেনা কর্ণাটকী রাগ।
    -- বাড়ি যান, আর এটা ফেরৎ দিতে নিজে আসবেন, প্লীজ। অন্য কারো হাত দিয়ে পাঠাবেন না।
    আর এসব কথা গল্পকরে বেড়াবেন না। আপনি যা পেট আলগা ভুলো মনের লোক।

    --- কিন্তু ভীতুর ডিম! তুই ওটা অন্যের হাত দিয়েই ফেরৎ পাঠিয়েছিলি। কিন্তু বেশ ক'দিন ধরে গুনগুন করেছিলি-
    "কে মোরে ফিরালে অনাদরে, কে মোরে ডাকিলে কাছে''।

    --- গঙ্গারাম স্যার! বাবুমশায়! আপ হো কহাঁ, কিস দুনিয়ামেঁ খোয়ে হো?
     ( দেশি সেরেনা ডাকছেন।)
    আরে আমি-আপনি একই গ্রুপে, গ্রুপ নম্বর ৪। আমাদের যেতে হবে ডাইনিং হলের নীচের তলায় কামরা নং সাত। আমাদের মেন্টর বা ফেসিলেট করনেওয়ালে শোলাংকী স্যার ও নিধি ম্যাডাম। এই আপনার ফোল্ডার, বগলদাবা করুন আর আমার সঙ্গে চলুন।

    লোহার সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে সাত নম্বর কামরায় ঢোকার মুখে ও থমকে দাঁড়ায়।
    সামনে ঝুলন্ত ব্যালকনি। ক'জন প্রতিভাগী ওখানে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছে সামনে মাথা তুলে দাঁড়ানো হিমালয়ের দিকে।
    বিকেলের মুখে বৃষ্টি আর কুয়াশা কেটে গিয়ে হিমালয় অনেক নীল, আর তার শরীর যেন সবুজ   র‍্যাপারে মোড়া। একটি সোনালী মন কেমন করা পাতলা ফিল্টার আলো ওর এখানে ওখানে। কিছু কিছু পাহাড়ের গা দিয়ে দুটো তিনটে জলধারা এঁকেবেঁকে গড়িয়ে পড়ছে।

    ওর মাথায় কোন গানের কলি এলো না। বরং মনে পড়লো " সীতার বনবাস''।
    '' এই সেই জনস্থান মধ্যবর্তী প্রস্রবণগিরি। ইহার শিখরদেশ সততসঞ্চরমাণ জলধরপটল সংযোগে নিবিড়নীলিমায় অলংকৃত।''

                                                                                                                    (চলবে)

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২৬ আগস্ট ২০২৪ | ৩৭৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Kishore Ghosal | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ১০:২৩536862
  • নিজেকে আয়নার সামনে দাঁড় করানোর মতো বিড়ম্বনা আর হয় নাকি?
    খুব টেনশান ফিল করছি - পরের পর্বের জন্যে। 
  • রঞ্জন | 2001:999:70c:2083:311:b9c4:9942:***:*** | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ১৭:০১536872
  • @papangul
     
     
    কি কান্ড!
    সত্যিই খেয়াল করি নি. 
    লজ্জার কথা. 
     
    আসলে আমি এপ্রিল মাসে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম. দিল্লী গিয়ে मेदांता হাসপাতালে নানাবিধ টেস্ট করতে. 
     
    আপনাকে অনেক ধন্যবাদ. 
    শুধু রিভিউ করেছেন বলে নয়.  আপনার নিবিড় পাঠ এর জন্য. 
  • kk | 172.58.***.*** | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ২০:১৬536879
  • রঞ্জনদা,
    একটু নিটপিকিং করছি। এই লেখায় তো ন্যারেটর গঙ্গারাম দাস। এক জায়গায় হরিদাস পাল লেখা হয়েছে। এটা কি ইচ্ছাকৃত না চোখ এড়িয়ে গেছে? যদ্দুর মনে পড়ে আগের ভার্শনে হরিদাস পালই ছিলেন। অন্য প্রসঙ্গে, ওপরে পাপাঙ্গুলকে লেখা পোস্ট ও ইদানীং কালে ভাটিয়ালির আরো কিছু পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞেস করছি -- এখন ভালো আছেন তো? শরীর ঠিক আছে? এই প্রশ্নটা বেশি ব্যক্তিগত মনে হলে উত্তর না দিতেও পারেন। আমার ফস করে একেক সময় অ্যাংজাইটি ওয়েভ চলে আসে। তাই এসব প্রশ্ন করি। হয়তো ঠিক নয় করা ...
  • Ranjan Roy | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ২২:৫২536883
  • কেকে
     নো চিন্তা। ভালই আছি। 
    তবে ডাক্তারের   নির্দেশে খাওয়াদাওয়া চলাফেরায় কিছু ব্রেক লেগেছে। 
    আমার ফেভারিট ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং চকোলেট মিষ্টি এগুলো নো-নো। স্ত্রী ও মেয়েরা কড়া চোখে রাখে এবং রেফারির মত  বাজায়। বাজারে বা আড্ডায় গেলে মাস্ক পরে থাকতে হয়, কী জ্বালা! 
     
    হরিদাস পাল চেক করে বদলে দিচ্ছিলাম। কোথাও কোথাও রয়ে গেছে। আবার  দে খে নেব।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন