এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • যে আঁধার আলোর অধিকঃ পর্ব ১১

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০৯ অক্টোবর ২০২৪ | ২৭১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)


  • ইগলু'র মত দেখতে লাল ইঁটের ক্লাসরুম গুলো। আধুনিক ইকো-ফ্রেন্ডলি লো-কস্ট আর্কিটেকচারের নমুনা। ওগুলোর বাইরে দু'পা ফেললেই টেবিলের ওপর চা-কফি-বিস্কুট রাখা।
    -- আবদুল্লার কি মাথা ধরেছে? তাহলে আমার কাছে বাম্‌ আছে, একটু লাগিয়ে দেব কি?
    বিনীতার গলায় উৎকন্ঠা। কিন্তু আবদুল্লা কেমন ভেবড়ে মাথা নেড়ে কফির মগ হাতে একদল জুনিয়র ব্যাচের গুলতানির ভীড়ে মিশে গেল।
    বিনীতা অপ্রস্তুত ভাব ঝেড়ে ফেলে হাসে, দাসকে বলে-- দেখলে তোমার বন্ধুর অ্যাটিচুড? যাকগে, মরুকগে।

    সেকন্ড সেশন শুরু হবে বলে সবাই বসে বকবকম শুরু করেছে কিন্তু ফেসিলিটেটর ওয়ালিয়ার দেখা নেই।
    নিজেকে কি ভাবে লোকটা? ও এই প্রোগ্রামের ডীন বলে কি মাথা কিনে নিয়েছে? নিজে নিয়ম বানিয়েছে , তো নিজেকে কি নিয়মের উর্দ্ধে ভাবছে নাকি? কেমন আত্মকেন্দ্রিক অহংসর্বস্ব লোক রে বাবা!
    হাসিঠাট্টা ও কিছু পুওর জোকস্‌ এর মাঝখানে ওয়ালিয়া ঢুকলেন। হাতে মশা তাড়ানোর ধূপের প্যাকেট ও তিনটে জলের বোতল।
    দেশলাই চেয়ে নিয়ে ম্যাটার অফ ফ্যাক্ট ভঙ্গিতে উনি ধূপ জ্বালিয়ে জান্‌লায় পর্দাগুলো টেনে নামাতে বল্লেন। তারপর আবার শেষনাগের শয্যায় ভগবান বিষ্ণুর ভঙ্গিতে কাত হলেন।
    -এবার কার কনফেশনের পালা?
    সবাই উশখুশ করে। বিনীতা একটু ফিচেল হাসি হেসে বলে-- আমি এবারের হট সীটে বসার জন্যে বাবু গঙ্গারাম দাসের নাম প্রোপোজ করছি।
    দাস একটু হকচকিয়ে যায়। মেয়েটা লেগ পুল করছে নাকি?
    শুভা মুদগলের তো সাহস কম নয়! দেবে নাকি কড়কে?
    -- আপনাকে ফোঁপর-দালালি করতে কে বলেছে?
    --নিজের চরখায় তেল দিন ম্যাম!
    নাঃ, ওপরের কোনটাই ঠিক জমছে না।
    -- কেন, বাবুমশায়ের কোন আপত্তি আচে?
    -- আপত্তি? না, নেই।
    ধৈর্য্য ধর, ধৈর্য্য ধর, ধৈর্য্যে বাঁধো বুক। নাঃ, যা থাকে কপালে, এবার দুর্গা বলে ঝুলে পড়লেই হয়।
    দাস বলতে শুরু করে।

    - গতবার যখন বেসিক হিউম্যান ল্যাবে এসেছিলাম সেই মুসৌরির কাছে হিমালয়ের কোলে কেমটি গ্রামে, তখন ল্যাব শেষে আমাকে বলা হয়েছিল গায়ে পড়ে সবাইকে ঝোলার থেকে বিপত্তারিণী বটিকা-বিশল্যকরণীর শেকড় দেয়া বন্ধ কর। বড় বড় সমাজবাদী-নারীবাদী বুকনি ঝাড়া বন্ধ করে বাড়িতে নিজের নব্বই ছোঁয়া মাকে, খেটে যাওয়া বউকে একটু সহমর্মিতা দেখাও। আর কথায় কথায় নিজের অভিজ্ঞতার গল্প শোনানোর অভ্যেসটি ছাড়। ওসব তোমার ওই কি বলে ফেসবুকের'র পাতাতেই ছাড়তে থাক, রিয়েল লাইফে একটু অব্জেক্টিভ, একটু প্র্যাকটিক্যাল হও। নিজেকে বদলাও।
    -- তা আপনি হয়েচেন? বদলেছেন?
    হরিদাসবাবু আমতা আমতা করে, মাথা চুলকোয়। এত বড় মিথ্যে কথা বলা? ধম্মে সইবে?
    -- না মানে, চেষ্টা করছি, কিছুটা হয়েচে।
    -- তা কী কী করেন শুনি?
    বিনীতা-শুভামুদগলের চোখ হাসছে।
    -- মানে তখন তো রিটায়ার করিনি, এখন রিটায়ার্ড লাইফ। মা’র সঙ্গে সকালে চা খাই, হিন্দি-বাংলা নিউজপেপার ভাগাভাগি করে পড়ি, একসঙ্গে টিভিতে ক্রিকেট দেখি। বউয়ের সঙ্গে বাজারে যাই। ওয়াশিং মেশিন চালাই। কখনো কখনো চা করি। রোজ আড্ডা মারি।
    -- ব্যস্?
    -- আপাততঃ, চেষ্টা করছি তো।
    ( ছাড় না ভাই, একটা অসহায় বুড়ো হাবড়াকে কতক্ষণ জ্বালাবি? অন্য ছোঁড়াগুলোকে দেখ না!)

    ওয়ালিয়া এবার সাইড রোল করে আধশোয়া অবস্থান থেকে মাথা বের করে সমুদ্রের খাঁড়ির ফাঁক-ফোকর থেকে বেরিয়ে আসা অ্যানাকোন্ডার ভঙ্গিতে বল্লেন-এসব দেয়র এন্ড দেন সিন্ড্রোম।
    এসব অদেখা হিস্ট্রি, আপনার নিজের মুখে ঝাল খাওয়া, আপনি বাড়িতে কী করছেন কে দেখচে?
    রামজীবন বল্লেন,-- আচ্ছা, আপনার বদলে যাওয়া নিয়ে পরে কথা হবে।
    এখন বলুন আপনি এই অ্যাডভান্সড্‌ বেসিক ল্যাবে কি এক্সপেক্টেশন নিয়ে এসেছেন?

    -- আমি গ্রামীণ ব্যাংকের চাকরি থেকে রিটায়ার করে মহানন্দে আছি। সোশ্যাল সেক্টরে এনজিওদের বা গ্রামের সেল্ফ হেল্প গ্রুপের সদস্যদের ট্রেনিং দিই। ইন্সিডেন্টালি, দিল্লির একটি কন্সালটেন্সি-কাম- ট্রেনিং সংস্থার আমি অ্যাসোসিয়েটেড মেম্বার। বর্তমান ট্রেনিং প্রোগ্রামটিতে আইস্যাব এর একজন অর্গানাইজার এসেছেন না? মিঃ তেজিন্দর ভোগল! উনি আমার মেন্টর। আমাকে তৈরি করছেন ছত্তিশগড়ের রিজিয়নের একজন ভবিষ্যত স্পেশালিস্ট হিসেবে। আমি ছত্তিশগড়ের একটি এনজিওর বোর্ড মেম্বার এবং কন্সাল্ট্যান্ট ও বটি!
    দাসের গলায় আত্মপ্রসাদের সুর আর লুকনো নেই।
    -- বুঝলাম, কিন্তু আপনার এক্সপেক্টেশন কি এখনো জানলাম না। ঝেড়ে কাশবেন।
    কৈলাশের গলায় কি একটু বিরক্তির ভাঁজ?
    -- আমি স্বপ্ন দেখি অ্যাপ্লায়েড বিহেভিরিয়াল সায়েন্সের একজন ডাকসাইটে ট্রেনার হওয়ার। আমি জানি যে এই ট্রেনিং এর পর আরো দুটো ধাপ আছে সেগুলো আগামী একবছরে ক্লিয়ার করে তার পর একবছর প্রোবেশন, তারপর ফুল-ফ্লেজেড্‌ রেজিস্টার ট্রেনার অব আইস্যাব্‌স্‌! তখন সারা ভারতে এই ট্রেনিং শিবিরগুলোতে ট্রেনার বা ফেসিলিটেটর হিসেবে আসবো।
    দাসবাবুর মুখে পরিতৃপ্তির হাসি!
    -- ট্রেনার কেন হতে চান?
    উঃ, অ্যানাকোন্ডা যে আমাকে তাগ করে রয়েছে।
    -- মানে, আমার চোখে ট্রেনার মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন ঘটান, প্রায় ভগবানের মত। ধরুন, একজন ডি-মোটিভেটেড স্টাফকে চারপাশটা নতুন করে দেখতে শেখান , ভাবতে শেখান, এইভাবে ওকে সক্রিয়, মোটিভেটেড করে তোলেন।
    আমার চোখে একজন ট্রেনার ক্রিয়েটিভ আর্টিস্টের মত, জাদুকরী ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি।
    -- ওঃ, ক্ষমতা! পাওয়ার?
    অ্যানাকোন্ডা আবার খাঁড়ির গর্তে মাথা ঢুকিয়ে ফেলেছে, বাঁচা গেল!
    --দাদা! আপনি আমাদের থেকে বয়সে বড়, আপনাকে শ্রদ্ধা করি, ভালোও বাসি। অন্যভাবে নেবেন না, এখানে আমাকে কিছু অপ্রিয় কথা বলতেই হচ্ছে।
    আপনি বাড়িতে কী করেন সত্যিই জানি না, কোন নিরপেক্ষ এভিডেন্স নেই। কিন্তু এখানে এই দুদিনে যা দেখলাম তা ভালো লাগচেনা। প্রথম দিন যখন কিছু জুনিয়র ছেলেমেয়ে বেসিক হিউম্যান ল্যাব নিয়ে আপনার কাছে জানতে চাইলো আপনি এমন ভাব দেখালেন যে --হুঁ হুঁ বাবা! ও প্রায় বজরঙ্গবলীর লংকা পৌঁছনোর মতন দারুণ ব্যাপার! তবে আপনি খুব তালেবর, এক চান্সেই পেরিয়ে গেছেন।
    আপনার অ্যাটিচুড দেখবার মত! আমি কো-অর্ডিনেটরের সঙ্গে ঝগড়া করে আমার রুম বদলে আপনার পাশের বেডে এলাম-- শুধু আপনার সঙ্গে ক'টা দিন কাটাব বলে। এখন ভাবছি ভুল করলাম কী না!
    এসব কে বলছে? আবদুল্লা? যে গতবার হিমালয়ের বৃষ্টিবেজা পাথরের ওপর আমার হাত ধরে গোটা রাস্তাটা নিয়ে গেছল! এর চেয়ে আর একবার ধাক্কা দিয়ে খাদে ফেলে দিল না কেন?
    -- আরে কি মুশকিল! সেটাতো আমি বাচ্চা ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মজা করছিলাম। একটু মস্তির মুডে ছিলাম।
    -- না, মজাটাও হিয়ার অ্যান্ড নাউয়ের মধ্যে পড়ে। কে কী মজা করে কী জোকস্‌ শোনায় তার থেকে শুধু তার রুচি নয়, তার জেন্ডার বায়াস, রিলিজিয়ন বা কাস্ট বায়াস ইত্যাদিও ফুটে ওঠে। এসব তো আপনার অজানা নয়, বাবুমশায়!
    অ্যানাকোন্ডার হাঁ-মুখ, চেরা জিভ, দাঁত সব দেখা যাচ্চে।
    বাবু গঙ্গারাম এবার দেয়ালে হেলান দিয়ে সবার কথা শুনতে থাকে। অল্প রানে আউট হয়ে রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা দামী প্লেয়ার।
    কখন অন্যমনস্ক হয়ে গেছল, সবার মিলিত হাসি ও পাশের থেকে কৈলাশের ঠেলায় চটকা ভাঙে।

    - দাদা, আপনাকে বলা হচ্ছে। কোথায় আছেন?
    উঠে দাঁড়ান, বলছি।
    রামজীবনের কথা মাথায় ঢোকে না। দেখে উল্টো দিক থেকে জয়ন্ত এগিয়ে এসেছে, কৈলাশ ও আবদুল্লার সঙ্গে কোলাকুলি করছে, সবাই তালি বাজাচ্ছে।
    কী, হয়েছেটা কী?
    রামজীবন বুঝিয়ে বলে। -- লাজুক বুদ্ধিজীবি টাইপ জয়ন্তের আবদুল্লার সঙ্গে আগে পরিচয় ছিল না। এখন হওয়ায় আবদুল্লা বল্ল-- জয়ন্ত! আপ মুঝে বহুত পসন্দ হো। আপসে গলে মিলনেকা দিল চাহতা হ্যায়!
    কৈলাশ বলে- লজ্জা কিসের! এখানে আমরা বন্ধু, সাথী, দাদার ভাষায় কমরেডস্‌! তাহলে?
    দাসদা, আপনার পালা। আপনি কাকে কাকে বন্ধু, সাথী এইসব মনে করেন?
    --সবাইকে!
    -- বহুত আচ্ছা! তাহলে সবার সাথে এগিয়ে এসে কোলাকুলি করুন, নইলে বুঝব আপনার ওসব ঢপের চপ! কথার কথা। রাত গয়ী, তো বাত গয়ী।
    -- কোলাকুলি করতেই হবে?
    -- কোন আপত্তি?
    -- না, না! আসলে আমি ঠিক অভ্যস্ত নই তো!
    -- সে কি! ঈদ বা বিজয়াদশমীতে? তখন কি করেন? লোকে তো অপরিচিত লোককেও তব গলে লাগা লেতে! কাম অন্ দাদা! কাম্ অন!
    বার খেয়ে বিপন্ন দাসবাবু এক এক করে কোলাকুলি করে,-- জয়ন্ত,আবদুল্লা, কৈলাশ, রামজীবন সবার সঙ্গে।
    মুচকি হাসে বিনীতা।
    -- ক্যা হুয়া দাস? আমি কি আপনার বন্ধু নই? না কি আমাকে আপনার ঠিক পছন্দ হচ্ছে না?
    -- তা - তা কেন? আপনিও বন্ধু। আর আপনাকে অপছন্দ করবে এমন সাধ্যি কার!
    ও কষ্ট করে স্মার্ট হবার অভিনয় করে।
    --মিথ্যে কথা! তা না হলে কোলাকুলি প্রোগ্রামে আমি বাদ পড়লাম কেন?
    হটাৎ আসা ইয়র্কারে মিডলস্টাম্প ছিটকে গেছে, ব্যাট নামানোর সময় পাওয়া গেল না।
    -- ধরা পড়ে গেলেন তো! কিসের মশাই আপনার জেন্ডার সেন্সিটাইজেশন! কিসের ইকুয়ালিটি! সব কথার কথা, ফক্কিকারি।
    গঙ্গারাম উঠে দাঁড়ায়, পা-পা করে এগোয় মোটাসোটা হাসিখুশি পাঞ্জাবী মেয়েটির দিকে। সেই স্কুলজীবনে হোস্টেলে একবার আর্শোলাকে ভয় পায় না এই মিথ্যে কথাটা প্রমাণ করতে একটার শুঁড় ধরে তুলে চোখ বুঁজেছিল। বুড়ো বয়সে আর একবার--। নাঃ, এটা তো ফাঁসিকাঠের দিকে এগিয়ে যাওয়া। যাকগে , মরে যাওয়ার পর কোন ভয় থাকে না।
    কোন মন্ত্র পড়তে পড়তে যেতে হবে। কি মন্ত্র!
    কোত্থেকে মাথায় ঘুরছে মণীশ ঘটকের কবিতার একটি লাইন---
    "দেবী তো নহ, বল তো তোমায় কেমনে পূজা করি?
    তোমার মুখে দিব্যবিভা বৃথাই খুঁজে মরি।
    আছে তোমার ললিত বাহু নিটোল দুই স্তন--''

    একি? এসব কী মনে আসছে? নিদানকালে মার্ক্সকে ফ্রয়েড হারিয়ে দিচ্ছেন?
    অবশেষে----।
    না, ফাঁসি হয়ে গেছে। এখন কোন জ্বালা-যন্ত্রণা-উৎকন্ঠা নেই। ভ্যাবাগঙ্গারাম অতীতের বস্তু, অন্য গঙ্গারাম জন্ম নিচ্ছে।

    না, আবার ভুল হল। ফাঁসির পরেও কিছু থাকে; নাড়ি দেখা, ঘাড়ের অপেক্ষিত নমনীয় পেশি এবং নরম হাড়টি ভেঙেছে কি না দেখা। অর্ডার যে বলছে – শ্যাল বি হ্যাংগড টিল ডেথ।
    হেসে উঠেছে শুভা মুদগল।
    -- দেখুন! আপনারা সবাই দেখুন! এটা কেমন কোলাকুলি? ক্যায়সা গলে মিলনা? বুকে বুক না ঠেকালে কেমন কোলাকুলি! ও তো তেরচা হয়ে দাঁড়িয়ে কোন রকমে আমার দিকে ওর একটা কাঁধ ঠেকিয়ে রেখেছে! অ্যাত্তো ন্যাকামি!
    অগত্যা হরিদাস ঠিকমত ফাঁসিতে ঝোলে। যাক, সব চুকেবুকে যাক।
    ‘এই তবে শেষ বেলা!
    হে ভূমিশায়িনী শিউলি,
    আর কি কোনই সান্ত্বনা নেই?

    হরিদাস নিজের জায়গায় ফিরে এসে বসেছে, বোকা-বোকা হাসছে।
    বিনীতা উবাচ,"তুমি কেমন মানুষ হে? নিজের ইমোশন ভাললাগা লুকিয়ে রাখ? প্রকাশ করতে লজ্জা পাও। আমি তো ভাবতেই পারিনা। আমার সঙ্গে কোন পুরনো বন্ধুর দেখা হলে , ছেলে-মেয়ে যাই হোক, বা বহুত দিন বাদ ভাইয়া বাড়ি এলে, আমি হাগ না করে, খানিকক্ষণ হাত না ধরে থাকতে পারি নে। তুমি হাত ধর না, হাগ কর না, তো কেমন করে ভাললাগা, ইমোশন, খুশি কমিউনিকেট কর?''
    -- আমি কোলকাতায় বড় হয়েছি। আমাদের একটু হাসি, একটু চাউনিই যথেষ্ট। তাতেই আমাদের ভালোলাগা, প্রেম-বিরহ সবই ফুটে ওঠে। গায়ে জড়ানোর দরকার পরে না। এটা টাইম বা কালচারাল ডিফারেন্স, আমি যেটায় কমফর্টেবল তাই তো করবো। মেয়েটি ভুল বুঝতে পারে সে ভয়ও থাকে।

    বিনীতার ফিচেল হাসি আরও চওড়া হয়।
    -একটা কথা বলি? তুই কিন্তু চাইছিলি আমাকে জড়িয়ে ধরতে। তোর মুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম। খালি তোর সংকোচ কাটছিল না। অন্যদের আমার সঙ্গে কোলাকুলি করতে দেখে তোরও ইচ্ছে করছিল। আমরা মেয়েরা ঠিক বুঝতে পারি। এতে দোষের কিছু নেই। তাই তোকে অপরাধবোধ থেকে মুক্তি দিলাম। যা, আজকে রাত্তিরে ভাল করে ঘুমুতে পারবি।

    বাবু ভাবাগঙ্গারামের ডেডবডির শ্মশানক্রিয়া সম্পন্ন হইল।



    সন্ধ্যে হয়ে গেছে। চা-বিস্কুট খেয়ে সব ছেলেমেয়ের দল ফিরে যাচ্ছে নিজ নিজ কামরায়। দাসবাবুর সব সময় আলাদা কিছু করা চাই। উনি জয়ন্তের থেকে ভোপালের "একলব্য'' নামের একটি এনজিও'র সম্বন্ধে বিশদ জ্ঞান আহরণ করতে লাগলেন।
    ওরা নাকি গত বিশবছর ধরে গাঁয়ের ছেলেদের স্কুলশিক্ষার পেডাগগি নিয়ে লাগাতার ভালো কাজ করে যাচ্ছে।
    এবার ফিরতে হয়। উনি জয়ন্তকে জিগাইলেন যে লাউঞ্জটি কোন দিকে। এখন টি-২০' বিশ্বকাপের ইংল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচটা দেখতে হবে।
    জয়ন্ত বিষণ্ণ হেসে জানালো যে ওর ক্রিকেট নিয়ে কোন কৌতূহল নেই। তবে সামনের লনটি পেরিয়ে সাদা বাড়িটার ডানদিকের সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠলেই দেখা যাবে টিভি চলছে আর ওখানে অ্যানিমেটর ট্রেনি সবাই চেঁচাচ্ছে।
    দাসবাবু বিড়বিড় করতে করতে লন পেরোলেন।
    -- আমি ক্রিকেট দেখি না! তবে কী দেখ? বিশ্বনাথন আনন্দের চেসবোর্ড? যত্ত পাতি আঁতলেমি!
    এবার দশ কদম গেলেই সামনের সাদা বাড়ি। কিন্তু বিজলীখাম্বার নীচে জটলা কিসের? কাছে গিয়ে দেখা গেল জনাপাঁচেক মেয়ে, ফিসফিস করছে।
    -- কী হল? আমি কি আপনাদের কোন সাহায্য করতে পারি? একাজন কৃষ্ণাঙ্গী কলিঙ্গ কন্যা চোখ বড় বড় করে বলল-- ভূত!
    দাসবাবু থতমত খেলেন। -- কী? কী বল্লে?
    জটলার থেকে বেরিয়ে এসেছে বিনীতা।
    -- দাস, এই মেয়েটি তুলসী। আমার এনজিওর স্টাফ, এখানে বেসিক ল্যাবে আছে। ও বাগানে কিছু একটা দেখে ভয় পেয়েছে।
    তুলসী বলতে থাকে---- বাগানের ওপারে ওই ফোয়ারার নীচে এলোচুলে অন্ধকারে কেউ বসে আছে, নড়ছে না। আর তার চারপাশে নীল আলোর ফুলকি, মাঝে জ্বলে উঠে নিভে যাচ্ছে।
    -- তাতে কী হল? কেউ বসে থাকতেই পারে, আর তার চারপাশে জোনাকিরা জ্বলতেই পারে।
    মেয়ের দল সবেগে মাথা নাড়ে।
    -- বাইরে এসে দেখুন। ঘুরঘুট্টি অন্ধকারে রাত্তিরে একা কে বসে থাকবে? অনেকক্ষণ ধরে বসে আছে, কোন হেলদোল নেই। মানুষ হতে পারে না।

    এতগুলো মেয়ে একই কথা বলছে! ও বাইরে এসে দাঁড়ায়। চোখ কুঁচকে তাকায়।
    কৃষ্ণপক্ষের নিকষকালো রাত। কোন হাওয়া বইছে না। বড় বড় আম-জাম-সেগুন-রাধাচূড়ার পাতা নড়ছে না। তারার আলোয় মনে হচ্ছে প্রায় তিনশ' মিটার দূরে ফোয়ারার কাছে আবছা ছায়াশরীর, নারী না পুরুষ বোঝা দায়।
    -- ভূত বলে কিছু নেই। আমি কাছে গিয়ে দেখে আসছি। মিনিট দশেক লাগবে গিয়ে দেখে আসতে। তোমরা এখান থেকেই আমাকে দেখতে থাক।

    ফোয়ারার কাছাকাছি আসতেই নারীশরীরের অবয়ব স্পষ্ট হল। কিন্তু এমন এলোচুলে ? এই রাতে একা অন্ধকারে? ও এক পা' দু পা' করে কাছে এগিয়ে যায়। তখনই মেয়েটির খুব কাছে জ্বলে ওঠে নীল আলো।
    চমকে ওঠে হরিদাস পাল। পেছন ফিরে তাকায়। মেয়ের দল তিনশ' মিটার পেছনে অস্পষ্ট।

    না, ভয় পেলে চলবে না। আরো কাছে যায়। তার পরেই চিনতে পারে।
    হবু ফেসিলিটেটর স্মৃতি ম্যাডাম। এখানে বসে একা একা মোবাইলের বোতাম টিপে চলেছেন। তারই আলো বার বার ছিটকে উঠছে।
    হোস্টেল ছেড়ে এই অন্ধকার বাগানে কেন এসেছেন? কার সঙ্গে একান্তে গোপন কথা বলতে চান!

    -- স্মৃতি ম্যাম আপ? আপহী হো না?
    বেঁটে মোটা বাচ্চা মেয়েটি এলোচুলে ঝাঁকুনি দিয়ে যেন ঘুমের ঘোরে তাকাল, কোন জবাব দিল না।
    -- ম্যাম, সেন্টার সে জ্যামার লাগা দিয়ে হ্যায়। আট বাজে কে বাদ বাত হো পায়েগা। ইঁহা ওস্‌ গির রহী হ্যায়। চলিয়ে মেরে সাথ, ওয়াপস্।
    রাত আটটার পরে জ্যামার সরে যাবে। তখন নিজের রুম থেকেই মোবাইলে কথা বলা যাবে। এখন হিম পড়ছে, আপনি আমার সঙ্গে ফিরে চলুন দিকি!
    ওদিকে মেয়ের দল আপনাকে অন্ধকারে এমন একা বসে থাকতে ভয় পেয়ে গেছে।

    স্মৃতি কোন উত্তর দিলেন না। ভূতে পাওয়া লোকের মত দাসবাবুর পেছন পেছন ফিরে চললেন।
    মেয়েগুলো সব শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। কিন্তু তুলসী বলে-- দাসজী, কি দরকার ছিল এটা বলার যে মেয়েরা অন্ধকারে এলোচুলে আপনাকে বসে থাকতে দেখে ভয় পেয়েছে! উনি আধা ফেলিসিটেটর, যদি আমাদের ওপর রেগে যান!
    এবার দাস রেগে যায়। এমনিতেই আগ বাড়িয়ে এসব ছেলেমানুষী ব্যাপারে নাক গলিয়ে ভুল হয়েছে। টুয়েন্টি-টুয়েন্টি শেষ হয়ে যাচ্ছে, তারপর যত বাজে কথা!
    -- রেগে গেলে কি করবে? রাত্তিরে দুটো রুটি বেশি খাবে !
    ওর গজগজানি দেখে বিনীতা ভূতের অস্তিত্ব, বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে গল্প জুড়ে দেয়। আর দাস ক্রিকেট ভুলে মেয়েগুলোকে সত্যজিত রায়ের ভূতের গল্প শোনাতে থাকে।
    ওদের চোখ বড় বড় , সিটি বাজার মত করে শ্বাস টানার আওয়াজ। এই প্রীতিকর কাঙ্ক্ষিত ভয়ের ছোঁয়া পেয়ে ওরা খুশি হয়। কথা আদায় করে যে রোজ খেতে যাবার আগে এদের দলকে অমনই সব ভূতের গল্প শোনাতে হবে।
    এসব কথা কেউ রাখে না। তবু হরিদাস পাল ওদের গোটা পাঁচেক গল্প শুনিয়েছিল।
    সেই খাড়া বাবার গল্প-- সাপের ভাষা সাপের বিষ, ফিস্‌ফিস্‌ ফিস্‌ফিস্‌। সেই বাজি ধরে ভুতুড়ে বাগানবাড়িতে একা রাত কাটানো ইত্যাদি ইত্যাদি।
    কিন্তু ভোরে ঘুম ভেঙে নিজের বিছানায় উঠে বসে ও ভাবতে লাগলো-- কেন ক্রিকেট ছেড়ে ও মেয়েগুলোর ভুতের ভয়ের চক্করে গায়ে পড়ে ভিড়ে গেল? শুধু অন্ধবিশ্বাস দূর করার চেষ্টা? শুধুই অন্ধজনে দেহ আলো? হ্যাঁ, নাস্তিক দাসবাবুর অমনি একটু বাই আছে বটে। কোথাও ভূত-ভগবান নিয়ে কথা উঠলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে।
    পরশুরামের গল্পের গণিতের অধ্যাপকের মত ভূত=০, আর ভগবান= স্কোয়ার রুট অফ ০, গোছের বিতর্কে মেতে ওঠে। কিন্তু বয়সের সঙ্গে এসব তো অনেক কমে গেছল। তবে?
    মেয়েগুলোর মধ্যে আদ্দেক তো ওর মেয়েদের বয়সী। তবে?
    এই তবের ঠ্যালায় পড়ে ভাবলো এখানে হিউম্যান ল্যাবের সাইকো অ্যানালিসিস পদ্ধতি গুলো কাজে লাগিয়ে নিজের অন্তর্মনের মোটিভ খুঁজে দেখা যাক।
    খানিকক্ষণ পরে যা দেখতে পেল তাতে ওর মনটা বিস্বাদ হয়ে গেল।
    নাঃ, আমি এখনো ঠিক করে শিখি নি তো, কোথাও ভুল হচ্ছে, এইসব বলে প্যান্ডোরার ঝাঁপিটি বন্ধ করে ও ঘুমিয়ে পড়ল।
    -- ও দাদা! উঠুন। চা দিয়ে গেছে অনেকক্ষণ। ব্রেকফাস্টের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। সবাই চান করে ফেলেছে আর আপনি অসময়ে ঘুমোচ্ছেন?

    (চলবে)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৯ অক্টোবর ২০২৪ | ২৭১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 172.56.***.*** | ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ২০:০৩538363
  • এই সিরিজটা আমার খুবই ভালো লাগছে। তার একটা বড় কারণ হলো ঘটনার ফ্লোয়ের সঙ্গে যে দাস সাহেবের ইন্ট্রোস্পেকশন গুলো তুলে দেওয়া হয়েছে। 'প্রসেস' অনেক আছে। কিন্তু সেই একই প্রসেস একেক  জনের মনে একেক রকম ভাবে আকার নেয়, গড়ায়, ধাক্কা খায়, ধাক্কা দেয়। সেগুলো জানার আগ্রহ আমার খুবই। শুধু নিজের মনে হওয়াটুকু নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারিনা। সবকিছু অসম্পূর্ণ লাগে।
  • স্বাতী রায় | 117.194.***.*** | ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:১৯538368
  • অনেকদিন বাদে এল এটা। অধৈর্য হয়ে পড়ছিলাম। 
  • রঞ্জন | 2402:e280:3d02:20a:ec1d:74b4:d5c7:***:*** | ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:৪৭538370
  • @কেকে, @স্বাতী রায়
     
    আপনারা বইমেলায় আসছেন কি?
    কিছু না, কোন এক দুপুরে একটু অড্ডা দিতাম। 
    অনেক দিন আড্ডা দিইনি।
    পেট ফুলে উঠেছে।
  • কালনিমে | 103.244.***.*** | ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:৫৯538371
  • রঞ্জনবাবু- দাসবাবুর এই self-introspection তৎক্ষণাৎ ও কি এতই উদাসীন নাকি লেখার সময় third person's critical view point এ আরো কিছু analysis যুক্ত হয়? কৌতূহল মাত্র 
  • kk | 172.56.***.*** | ১০ অক্টোবর ২০২৪ ০০:১৮538374
  • দেখি। বইমেলা কত থেকে কত তারিখ?
  • ৱঞ্জন | 223.185.***.*** | ১০ অক্টোবর ২০২৪ ০৫:১৪538376
  • @কেকে
    28 জানুয়ারি, 2025
     
    @কালনিমে
    90% introspection তক্ষুণি হয়েছিল,  10% লেখার সময়।
    লেখাটা 14 বছর আগের।
     
  • স্বাতী রায় | 117.194.***.*** | ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০৭538642
  • @রঞ্জনদা,যাওয়ার তো অবশ্যই প্লান আছে। দেখা হবে। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন