এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • ওইখানে যেয়ো নাকো তুমি : পর্ব ৩

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২২ মে ২০২২ | ১৭১৮ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)

  • ‘দরজায় খিল দিল,
    রাজা রাণী শুয়ে পড়ল।
    ফন্দি আঁটে  তিনটি চোরে,
    -কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করে’।

    তিন ’সপ্তাহ পরে এক মঙ্গলবারের সকাল---
     
    সৌরভ
     
    রাজা রাণী খিল এঁটে নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুমোচ্ছেন। এদিকে যে চোরে সিঁদ কাটছে সেদিকে খেয়াল নেই। আরে ও রাজামশায়, উঠুন উঠুন। নাকে তেল দিয়ে ঘুমুচ্ছেন নাকি? আপনি কেমন রাজা বলুন তো! কুকুরটা কেন ঘেউ ঘেউ করছে? তাড়িয়ে দেব? আপনার ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে। কিন্তু কুকুরের কাজই হল ঘেউ ঘেউ করা। ও যে টের পাচ্ছে তিনটে চোর মিলেমিশে সিঁদ কাটছে। ওরা একজনকে পাহারায় রেখেছে। আর আপনি বলছেন কুকুরকে তাড়িয়ে দিতে? আমিও তো কুকুর। সব সিকিউরিটির লোক কুকুর।
     
     আমার বস্‌ মিঃ কোসলে? উনি হলেন সেন্ট বার্নার্ড। না, না- উনি বুলডগ; ধরলে আর ছাড়ান নেই।
    আমি? একটা লোমঝোলা স্পিজ, ব্যস। সিমরন হল মাদী রিট্রিভার, গোল্ডেন কিনা জানিনা। কী বললেন-আমি সন অফ আ বিচ! অ্যাই, বাপ-মা তুলে গাল দেবেন না বলছি। ওহ, ধমকাচ্ছেন! বসের কাছে চুগলি করে চাকরিটা খেয়ে নেবেন? জানি, এর বেশি আপনাদের মুরোদ নেই। কিন্তু ওভাবে আমার চাকরি খেলে আমি আপনার কী করতে পারি—সে বিষয়ে আপনার কোন ধারণাই নেই।
     
    সরি বলুন, নইলে আমি আপনার এক্ষুণি-- ।
    কিন্তু কুকুরের ডাক বড্ড বেড়ে গেল।  কোথায় ডাকছে? যেন খুব কাছে। তাহলে কি ও চোরদের কড়া পাহারায় রেখেছে, নাকি ঘেউ ঘেউ করে সবার ঘুম ভাঙাতে চাইছে। রাজা-রাণীর ঘুম কেন ভাঙছে না? ওই তিনটে চোরকে আমি কি চিনি?
     
    এবার আর কুকুর নয়, সোজা কলিং বেলের চ্যাঁ-ভ্যাঁ! কোন শালা সাতসক্কালে জ্বালাতে এল? ঘুমের দফারফা। একটা তেতো মুখ করে বিছানা ছেড়ে দরজা খুলেই আক্কেলগুড়ুম। দরজা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রয়েছে পারমিন্দর। ওর হাতে ধরা চেনের অন্য মাথাটি একটা কুকুরের গলার চামড়ার কলারে বাঁধা, কুকুরটা নেড়ি! এই আদিখ্যেতা আমার একেবারে না-পসন্দ। কুকুরটা আবার দু’পা তুলে আমার পেটের কাছে আঁচড়ে দেবার ভঙ্গিতে হাওয়ায় পা নাড়ায়।  
     
    আরেকটু খোলসা করে বলি। 
    পারমিন্দর কৌর হল  স্থানীয় ডিগ্রি কলেজে পড়া ঝকঝকে একটি মেয়ে। থাকে আমাদের পাশের পাড়ায়। আলাপ হয়েছে গত মাসে। সেই যে সোনালী মিশ্রদের আবাসনে লোকেশ বিদ্রোহী বলে একটি সিকিউরিটি এজেন্সির মাধ্যমে কাজে লাগা ছেলেটির রহস্যময় মৃত্যু হয়েছিল; তখন কোসলে স্যারের নির্দেশে আমি ও সিমরন ওই কলেজে গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য মহৎ-- লোকেশ আসলে ওই কলেজের ছাত্র, যদি কোন ক্লু পাওয়া যায়। তিফরা থানা এটাকে অ্যাকসিডেন্টাল ডেথ বলেই দেগে দিয়েছে।  কিন্তু আমরা জানি যে  গোপনে সিটি এসপি’র অধীনে তদন্ত চলছে। কারণ, ব্যালকনির রেলিংগুলো প্রায় চার ফুট উঁচু। লোকেশের হাইট পাঁচ ফিট ছয়। ও কী করে টাল সামলাতে না পেরে ওই রেলিং টপকে নিচে আছড়ে পড়বে? আর ও যে ফ্ল্যাটে প্লাম্বারের কাজ করতে গেছল বলে আবাসনের ফেসিলিটি অফিস বলছে তারা জানিয়েছে ওদের কোন পাইপ বা জলের ট্যাপের প্রবলেম ছিল না এবং ওরা সেদিন কোন প্লাম্বারকে ডেকে পাঠায় নি। টনক নড়েছে আইজি লেভেলে।
     
    সে যাই হোক, সেই সূত্রে ওই কলেজে আমার পারমিন্দরের সঙ্গে আলাপ। যদিও প্রথমে ও সিমরনের সঙ্গে বেশ নাম-পাতা-পাতি গোছের বন্ধুত্ব করে গুরুমুখীতে নিজেদের মধ্যে কীসব বলাবলি করছিল। একটু একটু করে ও আলাপ জমায় আমাদের দুজনের সাথেই।
     
    জানতে পারি, লোকেশ বিদ্রোহীর সঙ্গে ওর ভালরকম পরিচয় ছিল। আসলে ওরা তিনজন ছিল সোনালী মিশ্রের বাম-ঘেঁষা ইউনিয়নের ফাউন্ডার মেম্বার। এটাও জেনে ফেলি যে লোকেশের পদবী জাঙ্গড়ে; ‘বিদ্রোহী’ ওর কবি হিসেবে নেওয়া নাম।
    ওর হাতে লেখা কবিতার একটি  খাতাও পারমিন্দরের থেকে পেয়ে গেছি।
     
    ‘ওরা যারা ফেলে দিয়েছে আমার খিদের  ভাত,
     তাদের করি নি ক্ষমা।
     ওরা যারা ভেঙে দিয়েছে আমার কুঁড়ের চাল,
    তাদের করি নি ক্ষমা।
    আজকে আমরা দাঁড়িয়েছি উঠে- চিতিয়ে বুক,
    এবার তো চোখ নামা!
    খুলব এবার হিসেবের খাতা- দুঃখসুখ,
    --এই বুকে আছে জমা’।।
     
    খাতার পাতাগুলো উলটে পালটে দেখতে গিয়ে কোসলে স্যার এই জায়গাটায় থেমে গিয়ে ভুরু কুঁচকে অনেকক্ষণ কিছু ভাবছিলেন। এই সময় ওঁকে বিরক্ত করা যায় না। আমরা আড়ালে বলি-স্যার এখন ওনার চিন্তন-শিবিরে গেছেন।
     
    কিন্তু আরেকটি কবিতার খসড়ায় উনি দুটো লাইনকে হলদে হাইলাইটার দিয়ে দাগিয়ে দিলেনঃ
     
    ‘তুমি এসেছিলে প্রাচীর ভাঙতে তাই তো শুনেছি,
    তুমিই দেয়াল গাঁথতে লাগলে? তওবা! তওবা!
     
    এরপর উনি আমাকে ডেকে ধরে বেঁধে ওই দুটো লাইন পড়ালেন। তারপর প্রশ্ন করলেন—এই দুটো লাইন কি ওই ছেলেটাই লিখেছে? তোর  কী মনে হয়?
     
    -হ্যাঁ, হাতের লেখা তো একই। এমনকি কলম ও কালি এক।
    --ধ্যাৎ, সেটুকু তো আমিই দেখতে পাচ্ছি। জানতে চাইছি আগের কোবতেগুলো ও শেষেরটা কি একজনেরই লেখা?
    -- আমার পক্ষে বলা কঠিন। দাঁড়ান স্যার, কিছু একটা মনে পড়ছে। শেষ দুটো লাইন তো দুষ্যন্তকুমার বলে একজন বড় কবির বিখ্যাত গজলের দুটো লাইন। শ্রীমান বিদ্রোহী নিজের কবিতার খাতায় টুকে রেখেছে।
    --সেটাই তো কথা। একজন অল্পবয়েসি বিদ্রোহী মেজাজের উঠতি কবি। সে কেন একজন নামকরা কবির দুটো লাইন নিজের কবিতার খাতার একটা পাতায় আলাদা করে লিখে রাখবে? যতদূর জানি, এই বয়সের উঠতি কবিরা নিজের কবিতার খাতাটাতার ব্যাপারে বেশ স্পর্শকাতর হয়।
    --কবিরা একটু ছিটেল হয় স্যার। ওরা কখন কী ভেবে কী কাজ করে সেটা বলা মুশকিল।
    হুমম্‌ ! নাক দিয়ে একটা শব্দ করে কোসলে স্যার ফের চিন্তামগ্ন।
     
    কিন্তু বলছিলাম পারমিন্দরের কথা। কলেজে পরিচয়ের এবং স্টেটমেন্ট নেয়ার সাতদিন পরে আমি যখন একদিন সকালে জগিং করতে বেরিয়েছি তখন আবার দেখা ওর সঙ্গে। একটা জীন্সের খাটো হাফপ্যান্ট আর ছেলেদের স্যান্ডো গেঞ্জির মত পোষাকে পার্কের এককোণে  জাম্পিং জ্যাক করছে। ওর পেছনে লাফাচ্ছে ওর নেড়ি কুকুর। তারপরে ওটার চেন ধরে দৌড়ুতে শুরু করল। 
     
     আমি না দেখার ভান করে নিজের লেন ধরে যাচ্ছিলাম, ও এক চক্কর ঘুরে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল।
    --আরে ওয়াটসন যে! সক্কালে কার মুখ দেখে উঠেছিলাম। জানেন, কাল থেকে আপনার কথাই ভাবছিলাম। মানে, আপনার সঙ্গে একবার দেখা হওয়া দরকার।
    আমি চুপ করে থাকি। মেয়েটা কি একটু গায়ে পড়া? সাবধান হওয়া ভাল।
    যাই বলি না কেন, ওর দিক থেকে চোখ সরানো একটু কঠিন। সুগঠিত দেহ, বয়সের লাবণ্য—সবই ওর শরীরে বেশ প্রকট ভাবেই আছে।
    --চলিয়ে, সামনের ওই বেঞ্চটায় বসা যাক।
     
    আমার মতামতের তোয়াক্কা না করে ও এগিয়ে চলে। আমি পেছন পেছন চলতে চলতে খেয়াল করি ওর ঘামে ভেজা পিঠ ও ঘাড়, চলনে একটা ছন্দ; ও কি অ্যাথলেট? ধ্যাৎ, ও যাই হোক , আমার কি! ঠিক বললাম না। ও আমাদের ক্লায়েন্টের ঘনিষ্ঠ একজন, পসিবল্‌ ক্লু। ওর থেকে হয়ত এমন কিছু তথ্য পাওয়া যেতে পারে যে—
    একটি সবুজ রঙা কাঠের বেঞ্চের সামনে এসে প্রায় আদেশের ভঙ্গিতে আঙুল দেখিয়ে বলে—বৈঠিয়ে।
    তারপর ও আমার পাশে এসে বসে ডান হাত মাথার পেছনে বেঞ্চির মাথায় রাখে। আমার অস্বস্তি হয়। ওর জগিং করা ঘেমো শরীর থেকে একটা ভাপ বেরোচ্ছে, আর একটা গন্ধ। এ’জাতীয় গন্ধ 
     
    কোন পরিচিত বাঙালি মেয়ের শরীর থেকে পাইনি। হয়ত ওরা ঘি পরোটা এসব বেশি খায়, দই মাখে-এসব আমার শোনা কথা।
    ও যেন আমার অস্বস্তি খেয়াল করে নি। ওর মুখের চেহারা বদলে গেছে। আগের আলগা প্রগলভতা উধাও। চোখ দুটো অন্ধকারে রাস্তার সাইডে দাঁড়ানো ট্রাকের হেডলাইটের মত জ্বলে উঠল।
    --আপ কো ইসতরহ জগিং কে বীচ অচানক রোকনে কে লিয়ে মাফি চাহতা হুঁ। কিন্তু কোথাও আপনার ও আমার মিল আছে। আমাদের দু’জনের লক্ষ্য এক। তা হল লোকেশের হত্যাকারীকে শাস্তি দেওয়া। এর জন্য আমাদের মধ্যে একটা বোঝাপড়া হওয়া দরকার।
     
    -- সরি! কোথাও আপনার একটু ভুল হচ্ছে। আমার লক্ষ্য হত্যাকারীকে শাস্তি দেওয়া নয়, সেটা জুডিসিয়ারি মানে আদালতের কাজ।
    ওর ভুরু কুঁচকে ওঠে।
    --আমি কি সত্যিই ভুল বুঝেছি? আপনি চান না লোকেশের মার্ডারার ধরা পড়ুক , তাহলে কেন আমাদের কলেজে গেছলেন?  আপনি আসলে কী চান?
    --আবার বলছি, আমি ও আপনি দুজনেই চাইব খুনি ধরা পড়ুক। কিন্তু তাকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার আমার বা আপনার কারও নেই। সেটা বিচারবিভাগের কাজ। আর আমরা পুলিশ নই, খুনি কে জানতে পারলেও তাকে গ্রেফতার করার অধিকার আমাদের নেই, শুধু পুলিশের আছে। আমরা তাকে সাহায্য করে থাকি, ব্যস্‌।
    আপনাদের কলেজে গেছলাম যদি আমার ক্লায়েন্ট সোনালী মিশ্রকে কারা ধমকাচ্ছে সেটার তদন্তে যদি কিছু সুরাহা হয় সেজন্যে। সোনালী মনে করেন যে ওই থ্রেট মেসেজগুলো এবং ওনার ঘনিষ্ঠ বন্ধু লোকেশের মৃত্যুর মধ্যে কোন যোগাযোগ আছে। আপনাদের সঙ্গে কথা বলা এবং স্টেটমেন্ট নেয়ার উদ্দেশ্যও তাই।
     
    দেখুন, আমাদের ক্লায়েন্ট কিন্তু  সোনালী ও তার মা, লোকেশের ফ্যামিলি নয়। কাজেই আপনি যেরকম আশা করছেন তেমন কিছু হেল্প আমার দ্বারা হবে না। ভেরি সরি!
    একটানা এসব কথা বলে আমি উঠে পড়ি এবং ঘরের দিকে রওনা হই। ঘরে এসে ভাবি, আপদ চুকেছে। সিকিউরিটি ও ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সিদের কাজকম্মের ব্যাপারে লোকজনের অনেক ভুলভাল ধারণা থাকে। 
     
    সাংবাদিকদের ব্যাপারেও।  আম জনতা দুটো পেশাকেই প্রায় কাছাকাছি মনে করে।
     
    কিন্তু ভবি ভোলে না। একদিন অফিসে সিমরন দাঁত বের করে বলল আজ সন্ধ্যায় খালি আছিস?
    --কেন?  খাওয়াবি নাকি? চাইনিজ ব্যোল বলে নতুন একটা ঝক্কাস রেস্তোরাঁ খুলেছে।
    --ধ্যাৎ, বাঙালির খালি পেটের চিন্তা! আজ সন্ধ্যেয় ডিগ্রি কলেজে একটা নাটকের শো আছে। পারমিন্দর ডাইরেক্ট করছে –‘খাপসুরৎ বহু’। মেন রোলও ওরই। আমাকে কার্ড দিয়ে রিকোয়েস্ট করেছে—যদি তোকে নিয়ে যাই!
    --কৌন পারমিন্দর?
    -- এঃ, বেশি ন্যাকামি করিস না। ক’টা পারমিন্দরকে চিনিস তুই? কোন পারমিন্দরের সঙ্গে পার্কে জগিং করতে যাস?
     
    রাগে হাড়পিত্তি জ্বলে যায়। কিন্তু কথা ঘোরাতে বলি –কার্ডটা দেখা, আমার নাম না থাকলে—
    ও মুচকি হেসে কার্ডটা দেখায়। ওটায় শুধু আমাদের সিকিউরিটি এজেন্সির নাম লেখা।
     
    সিমরন জানায় কোসলে স্যার নিজে আমাদের দু’জনকে যেতে বলেছেন এবং তোল্লাই দিয়েছেন যে এটাকে অ্যাসাইনমেন্টের অঙ্গ হিসেবেই লগবুকে এন্ট্রি করা হবে।
    নাঃ ; কোসলে স্যার ভেবেছিলেন ডিগ্রি কলেজের সোশ্যালে হয়ত কোন তথ্য পাওয়া যাবে বা এমন কারও সঙ্গে আলাপ হবে যাতে সোনালী, লোকেশ এবং অদৃশ্য হুমকিদেনেওলার মধ্যে যে মাকড়সার জাল অনুমান করা হচ্ছে তার চেহারা বা বুনোট কিছুটা স্পষ্ট হবে। কিন্তু সে গুড়ে বালি!
     
    তবে আমি ও সিমরন মুগ্ধ হয়ে দেখলাম –এক “খাপসুরত বহু”কে, গ্রামীণ পরিবেশে বিয়ে হয়ে আসা একটি মেয়ের গোঁড়ামির বিরুদ্ধে নিজের কায়দায় পালাবদলের চেষ্টা। তারচেয়ে বড় কথা দেখলাম অন্য এক পারমিন্দরকে। ঘাগরা চোলি পরা এক গেঁয়ো মেয়ে চোখে কালো রোদচশমা পরে মুখ বেঁকিয়ে বলছে--বেলাডি ফুল!
    শেষবার কার্টেন নেমে এলে পারমিন্দর স্টেজে এসে মাইকে বলল—এই নাটক দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার বিখ্যাত প্রযোজনা।
     
    তারপর আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে সিমরনের সঙ্গে গিয়ে গ্রীনরুমে দেখা করলাম পারমিন্দরের সঙ্গে। ও মুখের রঙ তুলতে ব্যস্ত; তবে আমাদের এককোণে যত্ন করে বসিয়ে চা খাওয়ালো, অন্য অনেকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। বলা নেই, কওয়া নেই—কলেজের  মেয়েদের মধ্যে আমার কিছু ফ্যান তৈরি হল।
     
    কিন্তু ব্যাপারটা এখানেই শেষ হল না। ও আমার জগিং এর সময় যেচে এসে আলাপ করতে লাগল, যেন আগে কিছুই হয়নি ।
    ধীরে ধীরে আমারও মনে হচ্ছিল – আমাদের দু’জনের লক্ষ্য খানিকটা এক বৈকি! অনুশাসন পর্ব নিয়ে বিতর্ক থেকে গেলেও দোষী কে সেটা বের করা তো আমাদের দুজনেরই টপ প্রায়োরিটি। 
     
    আমরা রোজ সকালে পার্কে আধ ঘন্টা জগিং এর পর একঘন্টা বসে কথাবার্তা বলতে শুরু করলাম।
    কিন্তু যা ভাবছেন তা নয়। ওটা বরং দু’জন স্টুডেন্টসের মধ্যে একধরনের নোটস এক্সচেঞ্জ।
    আমি জানতে চাইলাম কেন ওর মনে হয় এটা আত্মহত্যা নয়, খুন?
     
    ও জানতে চায় যদি আত্মহত্যাই হবে তবে তার মোটিভ কী? কোন সুইসাইড নোটস? নেই। ফ্যামিলির থেকে কোন সূত্র? নেই। ওর বাবা নেই। মার সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক। দায়িত্বশীল ছেলে। সবসময় কিছু না কিছু করে ঘরে দু’পয়সা নিয়ে আসত।
     
    আমি বলি—মানুষ  সবসময় খুব ভেবেচিন্তে কাজ করে না। আত্মহত্যা হোক বা খুন, অনেক সময় ঝোঁকের মাথায় করে। হয়ত খুব বড় মানসিক আঘাত পেয়েছিল। যার থেকে পেয়েছিল তাকে খুব ভালবাসত, তাই তাকে দায়ী করতে চায়নি।
    • সে কে? কে হতে পারে যার থেকে মর্মান্তিক আঘাত পেয়েও তাকে  লোকেশ আড়াল করতে চাইল?
    • সে কি কোন নারী?
    • অথবা পুরুষ? খালি নারীদেরই দোষী ভাবেন কেন?
    • সোনালী বলেছে যে ও আর লোকেশ বয়ফ্রেন্ড ছিল? সত্যিই কি তাই?
    • সোনালী এই কথা বলেছে? যদি বলে থাকে তাহলে তাই হবে।
    • আশ্চর্য কেন? ও কি তোমারও বন্ধু ছিল? কতোখানি ?
    • সত্যি কথা বলতে গেলে আমরা তিনজনই বন্ধু ছিলাম। অন্যরকম স্বপ্ন দেখতাম।
    • কী সেই স্বপ্ন?
    • শুনবেন? শুনতে চান? আমরা মনে করতাম ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং তার অধিকারবোধ হল নষ্টের মূল।, আমি এখনও তাই ভাবি। আমরা ভাবতাম এই সমাজকে এই ব্যবস্থাকে বদলে দেব।  নতুন ব্যবস্থায়, মানে সমাজে , কেউ কারও অধীন হবে না। মানুষের বেঁচে থাকবার রসদ সাধারণের সম্পত্তি হবে; তাতে কোন গোষ্ঠীর বা রাষ্ট্রের কব্জা হবে না। পরিবার বলে কিছু থাকবে না। নারীর ওপর পুরুষের কর্তৃত্ব শেষ হয়ে যাবে।
    • ব্যস্‌ ব্যস্‌ ! আমার মাথা ধরে গেছে। এ নিয়ে আরেকদিন কথা হবে।

    ম্য্যায় তো কমলি কো ছোড় দিয়া, পর ওহ কমলি হ্যায় কি মুঝে ছোড়তী নহীঁ।
    আমি তো কমলি কে ছেড়ে দিয়েছি কিন্তু কমলি আমায় ছাড়ে না যে!
     
    ও আমাকে নতুন ভোরের স্বপ্ন বুঝিয়েই ছাড়বে।  আমি বুঝতে পারি এরা একটা অ্যানার্কিস্ট গ্রুপ যারা রাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে চায়। আমার অনুমান এবং তার ভিত্তি স্যারকে বোঝাই এবং বলি ওকে কাটিয়ে দিই?
     
    স্যার রেগে যান। বলেন পলিটিক্স আমাদের বিবেচনার বাইরে। আমরা ফি নিয়েছি মিস সোনালী মিশ্রের কাছ থেকে। আপাততঃ ওদের মা-মেয়ের জন্যে প্রটেকশনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এখন দরকার লোকেশের মৃত্যু -রহস্যের পর্দা তোলা। কাজেই শ্রীমান সৌরভকে, মানে আমাকে  এখন মেয়েটির সঙ্গে বন্ধুত্বের অভিনয় চালিয়ে যেতে হবে।
     
    ভ্যালা রে মোর বাপ!
     
    কিন্তু দুটো ঘটনা ঘটে সব হিসেব পালটে দিল।
    আমি স্যারের নির্দেশে রোজ সকালে পার্কে গিয়ে পারমিন্দরের  থেকে রাষ্ট্র, সমাজ, ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং প্রাকৃতিক ন্যায় নিয়ে বড় বড় লেকচার শুনছিলাম আর হাই উঠলে অতিকষ্টে চাপা দিচ্ছিলাম। শেষে গত শনিবারে , স্যারের কথামত, ওকে বললাম  বিক্রম  বলে কাউকে চেনে কিনা।
     
    আচমকা যেন কারেন্ট ফেল হল। শর্ট সার্কিট? নাকি গ্রিড উড়ে গেছে?
    পারমিন্দর একটু থেমে থেমে বলল—বিক্রম ? বিক্রম  হু? এই নামে আমাদের কলেজে তো কেউ নেই।
    --না, কলেজের নয়। আসলে তুমি যা বলছ এসব খুব নতুন কিছু নয়। মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলি এলাকায় গ্রামবাসীদের মধ্যে একটি সংগঠন কাজ করছে। মানে রাষ্ট্রযন্ত্র, ব্যাক্তি স্বাধীনতা, সবাই সমান, নতুন সমাজ  –এইসব কথা গাঁয়ের লোকজনের মধ্যে প্রচার করছে। অবশ্য এসব আমার শোনা কথা, খুব ভাল জানিনা। এটুকু শুনেছি যে  তাদের নেতা বিক্রম এক এনিগম্যাটিক পার্সোনালিটি। খুব ভাল বক্তা। সাধারণ লোককে কঠিন কঠিন বিষয়  ভাল করে বোঝাতে পারেন। তাই ভাবছিলাম হয়ত চিনতে পার।
     
    পারমিন্দর মাথা নাড়ে এবং সেদিনের মত আমার ক্লাস নেওয়া শেষ করে ঘরে ফিরে যায়। কোথাও যেন সুর কেটে গেছে। তারপর দিন দুই কোন পাত্তা নেই। হয়ত শরীর খারাপ। মেয়েদের এ নিয়ে জিজ্ঞেস করাও মুশকিল। ওর মোবাইলে টেক্সট করি—হোয়াটস্‌ আপ? অল ওকে?
    কোন উত্তর পাইনি।
     
    কিন্তু তৃতীয় দিন জগিং করে ফেরার সময় পার্কের গেটের পাশে দু’জন লোক আমার দিকে এগিয়ে এল। ওদের মধ্যে একজন মাঝবয়েসি চাপদাড়ি শক্তপোক্ত লোক সোজা এসে আমাকে আওয়াজ দিল—ওয়ে মাস্টর ! জরা রুকো তো।
     
    কাছে এসে আমার কাঁধে একটা ভারি থাবড়া মেরে বলল—তুমহী হো ওহ ছোটে জাসুস! রোজ সুবহ্‌  মেরি বহন কী দিমাগ চাট রহে হো?
    লোকটা আমার থেকে অন্ততঃ একফুট উঁচু। কথার ভঙ্গিতে এমন অভব্য ইঙ্গিত যে আমার মেজাজ খিঁচড়ে গেল। তবু শান্ত স্বরে বললাম—আমি আপনার কথা কিস্যু বুঝতে পারছি না। কৌন হ্যায় আপকী বহন?
     
    --শোন বে! বেশি ন্যাকামি করিস না। আমি পারমিন্দরের  বড়ে ভাইয়া প্রভজ্যোত গিল। সদরবাজারে ও বুধবারিতে দুটো সাইকেলের দোকান। নেহরু চৌকে একটা জিম আছে। তোকে ভাল করে সমঝাইস দিচ্ছি—আমার বোনের থেকে দূরে থাক। ও কলেজে গিয়ে বিগড়ে গেছে। যা মনে আসে তাই করে বেড়ায়। ইদানীং ঠিক সময়ে ঘরে ফেরে না। যত হাঘরে উচ্চিংড়ে বন্ধুবান্ধব জুটিয়েছে। আমরা ওকে ঠিক পন্থে নিয়ে আসছি। কলেজ থেকে নাম কাটিয়ে প্রাইভেটে পরীক্ষা দেবার কথা বলব। এদিকে দুটো পাড়ায় সবাই জানে যে ফিলহাল তোর সঙ্গে কিছু একটা চলছে। রোজ তোরা দু’জনে সাতসকালে পার্কে এসে গুটরগু করিস। জেনে রাখিস, তোর মতন কবুতর এর আগেও ক’জন ছিল। ওরা আমার বোনের হাতে দানা খেয়েছে। কিছু বুঝলি?
    এবার আমার বোনের থেকে সাত হাত দূরে থাকবি। নইলে মুশকিলে পড়বি। আমাদের পরিবারের মেয়েদের সমাজে খুব নাম আছে। কোই ফালতু লফড়া নহীঁ মাঙতা।
     
    আমার মুখের স্বাদ তেতো হয়ে যায়।
     
    --আমারও কোন ফালতু লফড়ার শখ নেই। আপনার বোনকে বলুন আমার থেকে দূরে থাকতে।
    ওরা চমকে ওঠে। কমবয়েসি ছেলেটি আমার দিকে এগিয়ে আসতে চায়, কিন্তু প্রভজ্যোত ওকে কড়া ইশারায় থামতে বলে। তারপর কটমটিয়ে আমার দিকে একটুক্ষণ তাকিয়ে মোরাম রাস্তার ওপারে গাছের তলায় দাঁড় করানো মোটরবাইকে উঠে পড়ে। অল্পবয়েসিটি সামনে বসে স্টার্ট দেয়।
     
    সত্যি কথা বলতে কি তারপর চারদিন আমি আর জগিং করতে যাই নি। ভয়-টয় পাইনি। কিন্তু ওই যে ফালতু লফড়া! তাও নারীঘটিত।
    তাই আজ সকালে আমার ঘরের দরজায় বেল বাজিয়ে পারমিন্দরের  আবির্ভাবে আমি হকচকিয়ে গেলাম। ব্যাপার কী? দাদার হাতে ঠ্যাঙানি খাওয়ার ভয় নেই?     (চলবে)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২২ মে ২০২২ | ১৭১৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:e49d:b54:e095:***:*** | ২৩ মে ২০২২ ০০:০৫507984
  • ওর নাম পারমিন্দর না পরমজিৎ?
  • বিপ্লব রহমান | ২৩ মে ২০২২ ০৬:৫৫507987
  • সেরাম জব্বরের বলি! মুম্বাই ছবির থ্রিল!! 
     
    এই রকম রয়েসয়ে ডিটেইলে লিখুন ভাই। শুভ কামনা yes
  • Ranjan Roy | ২৩ মে ২০২২ ২০:৩৯508014
  • kk
    অনেক ধন্যবাদ; শুধরে দিয়েছি।
    আলসে লোক, জমা দেওয়ার আগে রিভাইস করা হয়ে ওঠে না। আজ বুঝতে পারছি, যদি এই কু-অভ্যাস প্রথম জীবনেই শুধরে যেত, তাহলে স্কুল-কলেজে পরীক্ষার খাতায় নম্বর অনেক বেড়ে যেত। হায়, এ জীবনে তা হবার নয়।ঃ)))
  • স্বাতী রায় | ২৬ মে ২০২২ ০১:৪৪508059
  • এই টা কি রবিবার রাতে রাতে ? মাঝে মাঝেই চাতকপাখির মতন ঘুরে যেতে হবে না তাহলে | 
  • Ranjan Roy | ২৬ মে ২০২২ ২০:৫৭508088
  • @স্বাতী
    হ্যাঁ, কিছু কাজ নিয়ে খুব ব্যস্ত। তাই সাপ্তাহিক কিস্তি!
    ভালো থাকুন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন