তাহলে কি সিপিএম, কংগ্রেস এই রাজ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল? একদা বিহারে, মহারাষ্ট্রে যথেষ্ট শক্তি থাকা সত্ত্বেও কমিউনিস্ট পার্টি গুরুত্বহীন হয়ে গিয়েছিল আইডেন্টিটি পলিটিক্সের জোয়ারে (এখন অবশ্য সিপিআই এম-এল ফের কিছুটা শক্তি সংগ্রহ করতে শুরু করেছে বিহারে)। ২০০৪-এ তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভায় মাত্র একটা আসন জিতেছিল। কিন্তু তারপর ফের নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করে ফিরে এসেছিল তৃণমূল, কারণ, সিপিএম বিরোধীদের কাছে তখন আর কোনও বিকল্প ছিল না। ফলে একটা চাহিদা ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। এখন সিপিএম-এর চাহিদাটাই কি নেই? আসলে ৩৪ বছরের অ্যান্টি ইনকামবেন্সির প্রভাব সিপিএমের ক্ষেত্রে এখনও কাজ করে চলেছে। অন্যদিকে কংগ্রেসকে মানুষ চাইছে, বেশ কিছু রাজ্যের ভোটে তার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু নেহরু-গান্ধী পরিবারের পঞ্চম প্রজন্মের নেতা রাহুল বা প্রিয়ঙ্কার সেই সেই চাহিদা অনুযায়ী কোনও ভূমিকা গ্রহণ করার যোগ্যতা নেই। ফলে একটা রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্ট হয়েছে। বিজেপির সুবিধা হয়ে যাচ্ছে। কংগ্রেসের অবস্থা জলসাঘরের নায়কের মতো। মাথায় বসা ছাড়া অন্য কোনও ভূমিকার কথা ভাবতেই পারে না কংগ্রেস। ফলে কংগ্রেস এলে ভালো, না এলে, কংগ্রেসেকে বাদ দিয়েই একটা ন্যাশনাল ফ্রন্ট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। সেই মঞ্চে, এবারের ভোটের ফল বলছে, মমতা বন্দ্যোপাথ্যেয়ের গুরুত্ব অনেকটাই বাড়তে পারে। তিনি ইংরেজি কতটা ভুল বলেন, সে তর্ক যারা করতে চান করুন, কিন্তু চাপের মুখে লড়াই করার যে গুণ একজন বড়ো নেতা বা নেত্রীরে থাকাটা জরুরি, সেটা এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে যতটা আছে তেমন আর অন্য কোনও রাজ্যের বিরোধী নেতা-নেত্রীর মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। সারা দেশে গ্রামে-গঞ্জে শুধু নামে চেনে, নেহরু-গান্ধী পরিবারের সদস্যদের বাইরে বিরোধী শিবিরে, লালু যাদবের জেল এবং রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার পর, মমতা ছাড়া আর কেউ নেই।
স্বাধীনতার পর ভারতে প্রথম নির্বাচনে, ১৯৫২ সালে, ১১ শতাংশ ভোট পেয়ে জ্যোতি বসু সহ ২৮ জন বামপন্থী জয়ী হয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এসেছিলেন। ভারতীয় জনসঙ্ঘ পেয়েছিল ৬ শতাংশ ভোট। ক্ষমতায় থাকাকালীণ বামপন্থীরা এই রাজ্যে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে ৫৪ শতাংশ। ৬৯ বছর পর এবারের ভোটে দেখা গেল একজন বামপন্থীও কোনও আসন জিততে পারলেন না। বামপন্থীদের জোট ভোট পেয়েছে ৮ শতাংশ। সিপিএমের ভোট ৫ শতাংশেরও কম। কংগ্রেসের ভোট ৩ শতাংশের কম। জনসঙ্ঘের উত্তরসূরি বিজেপির ভোট ৩৮ শতাংশ। প্রসঙ্গত, বিজেপির মূল যে ভিত্তি সেই আরএস এবং কমিউনিস্ট পার্টি, দুই সংগঠনেরই বয়স এখন একশোর কাছাকাছি।
প্রয়াত সিপিএম সাংসদ সইফুদ্দিন চৌধুরী ১৯৮৯-৯০ সালে সিপিএমের রাজনৈতিক লাইন নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, কট্টর দক্ষিণপন্থী শক্তি মাথা চাড়া দিচ্ছে, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট দরকার সিপিএমের। তারও আগে ১৯৭৪ সালে সিপিএমকে এই নিয়ে সতর্ক করেছিলেন পি সুন্দরাইয়া। সুন্দরাইয়ার সেই দলিলকে অবশ্য সিপিএম সত্যি বলে স্বীকারই করে না। সইফুদ্দিন বহিষ্কৃত হলেন এই সব দল বিরোধী কাজ-কর্মের জন্য। তার ২৬ বছর বাদে রাজ্য স্তরে সিপিএম আসন সমঝোতা করল কংগ্রেসের সঙ্গে। ২১-এ হল জোট। ততদিনে ভারতের রাজনীতি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। ২০২১-এর সেই জোট, ভোট ভাগাভাগী করতে ব্যর্থ হল। সেটা ঠি মতো পারলে বিজেপি এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসত। এটা ঠিক, তৃণমূল কংগ্রেস থেকে একটা অংশ ভোট হিন্দুত্ববাদীদের দিকে চলে গিয়েছে। তার মধ্যে কিছুটা প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোটও রয়েছে। উল্টো দিকে গত লোকসভা ভোটে বিজেপি তে চলে যাওয়া বেশ কিছু বাম ভোট এবং সংখ্যালঘু ভোট সহ কংগ্রেসের বড় অংশ ভোট তৃণমূলের বাক্সে ঢুকেছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে বেশ কয়েকজনকে বামপন্থীকে জানি, যারা তৃণমূলকে হারাতে লোকসভায় বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন, এবারে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন, বিজেপিকে আটকাতে। তাতেই তৃণমূলের ভোট বেড়ে ৪৮ শতাংশ হয়ে্ছে। কংগ্রসের ভোট যে তৃণমূলের দিকে যাচ্ছে তা অবশ্য বোঝা যাচ্ছিল অধীর চৌধুরীর নির্বাচনী বক্তৃতা শুনে। তাঁর ভাষণে আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য ছিল বিজেপি নয়, তৃণমূল। তার পর কী ঘটেছে মালদা-মুর্শিদাবাদের ফল দেখে তা বোঝা যাচ্ছে।
আমাদের এই ভাঙা-চোরা, কালি-ঝুলি মাখা অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা যে গণতন্ত্র আছে সেটাকে রক্ষা করাই আমাদের এখন প্রধান কাজ। ভবিষ্যৎ প্রমাণ করবে, কিন্তু এই মুহূর্তে বলা যায়, সেই কাজে বাঙালি একটা বড় ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করল, এবারের ভোটে বিজেপিকে রুখে দিয়ে। বাঙালি বজেপির বিরুদ্ধে একটা শক্তিকে চেয়েছিল। বিজেপিও তার বহুমাত্রিক, সর্বগ্রাসী আক্রমণ দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছিল কে তার প্রধান শত্রু। সিপিএমের ‘বিজেমূল’ প্রচারে মানুষ একেবারেই কান দেয়নি। বাঙালির কাছে এই মুহূর্তের বাস্তবতা এটাই যে, তৃণমূল নেত্রী মমতা ছাড়া তাদের কাছে নির্ভরযোগ্য কোনও শক্তি ছিল না। যারা তাঁকে ভোট দিলেন, তাঁদের অনেকেই তৃণমূল নেত্রী অতীতে কী কী বলেছেন, কী কী করেছেন এই সব অসংখ্য প্রশ্ন এবং তর্ক সরিয়ে রাখলেন। বিজেপির পরাজয় তারই পরিণতি। দিল্লির সীমান্তে যে হাজার হাজার কৃষক মাসের পর মাস ধরে সত্যাগ্রহ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে, বিজেপির এই পরাজয় সেই আন্দোলনকারীদের মনোবল বাড়াবে। কংগ্রেসের যে কাঁদুনি, ওদের সঙ্গে মিডিয়া, ওদের সঙ্গে আদালত, ওদের সঙ্গে সব প্রতিষ্ঠান ফলে কী করে লড়াই হবে, এই আবাস্তব যুক্তিকে নাকচ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির এই হার। মহাশক্তিধর বিজেপিকে যে একটা আঞ্চলিক দলও হারিয়ে দিতে পারে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে কাজটা হাতে কলমে করে দেখালেন তখনই যখন ধরে নেওয়া হচ্ছিল মোদী-অমিত শাহ-যোগী জুটি অপ্রতিরোধ্য। সমস্ত সরকারি এজেন্সিকে মাঠে নামিয়ে, মোদী-শাহের গোটা জাতীয়-মেশিনারি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার বাজেট নিয়ে যে ভাবে বাংলা দখলের ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করা হয়েছিল, তা মমতা একাই ভেস্তে দিতে পারেন, সেটা বিজেপি স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। শোনা যাচ্ছে ভোটে জিতে শপথের সময় দরকারে লাগবে বলে তাঁরা বড় বড় হোটেলে বেশ কিছু ঘরও তারা আগাম ভাড়া নিয়ে নিয়ে নিয়েছিলেন ২ মে থেকে। বঙ্গ দখলে মরিয়া বিজেপি লড়াইটাকে করে তুলেছিল মমতা বনাম নরেন্দ্র মোদীর। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পরাজয় নরেন্দ্র মোদীর হার হিসেবেই সারা ভারত দেখছে। একই সঙ্গে যেভাবে একটা রাজ্য দখলের লোভে, কোভিডকে অস্বীকার করে, নির্বাচন কমিশনের বেনজির প্রশ্রয়ে প্রায় ৪৫ দিন ধরে যে নির্বাচন পর্ব চালানো হল, হিন্দুত্ববাদীদের দায়িত্ব-জ্ঞানশূন্য রাজনীতির অন্যতম নজির হয়ে থাকবে এই ঘটনা।
সঠিক বিশ্লেষণ।
মানতে পারলাম না। যে শক্তি কে আমরা অত্যন্ত মমতার সঙ্গে নিয়ে এলাম, নিজেদের খুব বুদ্ধিমান মনে করে, তা ছুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরোবার আর দেরী নেই। আসলে বাঙ্গালী আলস্য প্রিয় জাতি। ৩৪ বছর তার প্রমাণ। পরিবর্তন ই যে একমাত্র সত্য, তা বুঝতে আরও কয়েক যুগ লাগবে। আসুন আমরা সবাই পেছনের দিকে এগিয়ে যাই।
সৌম্য চক্রবর্তী
আপনি 'বাঙালি' বানানটা ভুল লিখেছেন। আর নিজে বাঙালি হয়ে বাঙালিকে আলস্য প্রিয় বলছেন। মেনে নিতে পারলাম না।
খুব সঠিক ব্যখ্যা করেছেন, লেখকের সঙ্গে একমত।
খুব ভালো আলোচনা । বাঙালি কে আলস্য প্রিয় বলছেন যিনি , তিনি নিজেই হয়তো অলস। অন্যের মধ্যে নিজেকে দেখে শান্তি পেতে চাইছেন।এতটাই অলস যে বাঙালি বানানটা শিখতেও তাঁর আলস্য দেখছি।
সমস্ত সরকারি এজেন্সিকে মাঠে নামিয়ে, মোদী-শাহের গোটা জাতীয়-মেশিনারি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার বাজেট নিয়ে যে ভাবে বাংলা দখলের ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করা হয়েছিল, তা মমতা একাই ভেস্তে দিতে পারেন, সেটা বিজেপি স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি।
শুধু বিজেপি কেন? আমিও ভাবতে পারি নি। সরকারী বাহিনী আর নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও মাথায় রাখতে হবে। তবু বাংলার মানুষ ভোট দিয়ে স্পষ্ট করেছেন তাঁদের প্রেফারেন্স কি।
খুব ভালো বিশ্লেষণ করেছিস। অবশ্য ওই অন্ধ ভক্তদের এই লেখা মনগ্রাহী হবে না সেটা বলাই বাহুল্য। আর যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে কোনও কাজের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদেরও ভালো লাগবে না এই লেখাটা।
লেখাটি পড়ে মনে হল যে হাড়- বজ্জাত বিজেপিকে বাংলা ছাড়া করা হয়েছে।
উল্লেখ করা ভাল যে এই প্রথম বাংলার কোন মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্য জনসভায় নিজের জাত, ধর্ম ইত্যাদি ঘোষণা করে, গীতা, চন্ডী থেকে মন্ত্র আওড়ে এবং কলমা পড়ে ভোটে লড়তে হয়েছে। ইতিপূর্বে, বিজেপিকে ঠেকানোর জন্য রামনবমী, হনুমান দশমী, ছট্পূজো, পুরোহিত ভাতা ইত্যাদি প্রভৃতিকেও আঁকড়ে ধরতে হয়েছে। বড় বড় রাস্তার মোড়ে মোড়ে শ্রীচৈতন্যের মূর্তি স্থাপনও করতে হয়েছে।
সাধারণ দৃষ্টিতে এ সবই হয়্ত খুব ভাল কাজ। কিন্তু বিজেপির (বা RSS) এর এজেন্ডা কোন সরকার যদি আদ্দেকও implement করে তাহলে বিজেপির তো সব চাইতে খুশী হওয়া উচিত। তার ওপরে ৩৮% বাঙালীর সমর্থন সহ গোটা বিরোধী স্পেসটাই তাদের দখলে। অর্থাত কিনা বিজেপিকে প্রধান বিরোধী দলের সম্মান দেওয়ার পেছনেও বাঙালীর "ঐতিহাসিক ভূমিকা" স্বর্ণাক্ষরে লেখা রইল।
উল্লাস করার আগে বিজেপির ক্ষমতা দখলের লড়াইতে টিকে থাকার হাড় হিম করা হিসেব ও দমটাও মনে রাখা ভালঃ
১৯৮৪ঃ ২ টো সিট
১৯৯১ঃ১২০ টা সিট
২০১৪ঃ ২৮২ টা সিট
২০১৯ঃ ৩০৩ টা সিট
এই দলটা এক্ষুণি উবে যাচ্ছে না। আগামী ৫ বছরে কংগ্রেসের উত্থানের সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তিনোদের দখলে ধরলাম ৪২ টা সিট। অন্য রাজ্যের নেতাদের কার টিকি ইডি ও সিবিআই এর মুঠোয় আছে কে জানে।
বাঙালী অস্মিতার উল্লাস থিতলে এই হিসেবের দিকে নজর দেবেন। আরো কত ভয়্ঙ্কর খেলা বাকি রয়েছে কে জানে!!
(এবারে নর্দমার নোংরা জলের ঢেউ আসবে।)
ম্যাস্টর বেটারটা এখানেও নোংরা করে গেছে। যা তোর মাইনে বাড়িয়ে দিলাম এবার থেকে দশ টাকা রোজ পাবি। আইটিসেলের পোস্টার বয় হবি
কি করিতে হইবে পিটি? (সি পি এম কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া ছাড়া)
পিটিার
আপনার সতর্কবাণী হালকাভাবে নিচ্ছি না। গোবলয়ে থাকি বলে জানি আর এস এস কী জিনিস!
এ লড়াই সবে শুরু। কিন্তু এই জয়ে অনেকখানি অক্সিজেন পাওয়া গেল। উল্টোটা ভাবুন। যদি বিজেপি জিতত? তাহলে ? পুরো উত্তর ভারতে বিরোধীরা আরও ম্যাদা মেরে যেত। গোটা দেশ জুড়ে বিজেপি অপরাজেয় মিথ আরও পোক্ত হত। এখন বিজেপির মনোবলে চোট পড়েছে। নিজেদের মধ্যে দোষারোপ হবে। বঙ্গে ওদের সংগঠনে সদ্য যোগ দেয়ারা অনেকে বেরিয়ে এসে অপটিক্স খারাপ করবে। এগুলো স্ট্র্যাটেজিক গেইন। এটা আসামে কংগ্রেস করতে পারেনি। কেরালায় বিজয়নের সিপিএম পেরেছেন। কিন্ত ওখানে মূল লড়াই আদোউ বিজেপির সঙ্গে ছিলই না।
এখানে বিশাল লোকবল বিপুল অর্থবল নিয়ে সর্বভারতীয় নেতাদের পড়ে থাকা ও মমতার প্রায় সমস্ত পুরনো নেতাদের ভাঙিয়ে নেওয়া --তারপরেও ২০১৯শের তুলনায় ভোট শেয়ার ও সীট দুটোতেই পিছিয়ে যাওয়া ( ২০১৯শের হিসেবে ১২১ বিধানসভা সীট খেয়াল করুন) , একটা অসম্ভব ব্যাপার।
আসল হল আগামী বছর এই সময়ে উত্তর প্রদেশের নির্বাচন। সেটা জেতাই ২০২৪ জয়ের চাবিকাঠি। এখন দেখুন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সমাজবাদী দলের জয়। বঙ্গের জয়ে উত্তর ভারতের কৃষক আন্দোলন নতুন অক্সিজেন পেয়েছে।
"যদি বিজেপি জিতত? তাহলে ?"
প্রকাশ্য রাস্তায় মারামারি হত। রক্তারক্তি হত। কিন্তু সরাসরি কেন্দ্রের সঙ্গে রাজনৈতিক পাঙ্গা নেওয়া যেত। যেমনটি আগে হয়েছিল। রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের ব্যর্থতার দায়ও সেই সময়ে ইন্দিরা গান্ধীকে বহন করতে হয়েছিল। কংগ্রেসের অবলুপ্তির শুরুও সেই সময়টা।
এখন কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলেও তিনোর রাজ্য পুলিশের হাতে মার খেতে হয়েছে ও হবে। তাতে বিজেপি বিধানসভায় বসে হাততালি দেবে। নাহলে আর কোন লড়াই নেই।
যতই কেন্দ্র-বিরোধী চিল- চিৎকার হোক না কেন কেন্দ্রের বিজেপি নিশ্চিন্ত যে আরো ৫ বছরের জন্য তিনোরা বিজেপির ঢাল হয়ে কাজ করবে। বিজেপির হাতে অনেক সময়। ২ থেকে ৩০০+ এ যেতে প্রায় ৩৪ বছর লেগেছে।
কোন কারণে কংগ্রেসের উত্থান হলে অন্য ঘটনা। কিন্তু সেটা হবে বলে মনে হয়্না কেননা কংগ্রেসের স্পেসটা আঞ্চলিক দলগুলো দখল করে টুকরো টুকরো হয়ে বসে আছে।
ইতিমধ্যে অবিশ্যি সেটিং করে ত্রিপুরাতে তিনোদের বাড়তে দেয় যদি তাহলে তো ভবিষ্যত আরো রোমহর্ষক।
(গালিও মিত্রোঁ)
বাঃ, পিটিদা দেখছি সারাদিন ধরে লাখ খেয়ে খেয়ে এখন বেশ সুন্দর পোস্ট করছে! কিপ ইট আপ পিটিদা! :-)
ধুর! আপনার খালি বঙ্গে কী হত? কার পুলিশ পেটাত?
খেয়াল করছেন না এবারএর বঙ্গবিজয়ের এজেন্ডা বিজেপির জন্যে স্ট্র্যাটেজিক ইম্পরটান্স ছিল? কোন রাজ্যের জন্যে ৮ দিনের ভোট? কোন রাজ্যের জন্যে এই সংকটকালে প্রধানমন্ত্রী ২০ সভা এবং গৃহমন্ত্রী ৬০ সভা করেন? কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ের মত সিনিয়র নেতা গোটা একটা বছর এ রাজ্যে পড়ে থাকেন?
আপনি না বুঝুন, হিন্দি বলয় ঠিকই বুঝেছে। তাই উত্তর ভারত থেকে কৃষক আন্দোলনের নেতারা মফঃস্বলে গিয়ে চাষিদের মধ্যে নো ভোট ট্য বিজেপি প্রচার করেছেন। সিপিএমের সুনীত চোপরা অভিনন্দন জানিয়েছেন। ভারতের প্রেক্ষিতে দেখুন। ওদের অশ্বমেধের ঘোড়া থামিয়ে দেওয়া গেছে। খালি গাছ না দেখে বন দেখুন।
পিটিদার অত উদ্বেগের কিছু নেই। এখানেও বামফ্রন্টের সিট ২৩৫ এ পৌঁচেছিল। সেখান থেকে শূন্যেও নেমে এল। কে ভেবেছিল এমন পতনের কথা? বিজেপিও পড়বে। গদি কারো বাপের না।
জালিবৃত্তির শেষ নেই। ক্ষমতাসীন পার্টি একমাত্র ও প্রধান বিরোধীপার্টির ঢাল হিসেবে কাজ করবে! ঢপের থিওরাইজেশন যা নিয়ে গত দশ বছর ধরে জাবর কাটা চলছে একদিনে কি করে ফেলেদেওয়া যাবে! নাগপুরের ইচ্ছেফুল কে RSS এর ইচ্ছেফুল করতে হয়েছে। তিনোর লক্ষীপ্যাঁচা বিজেপি থিয়োরি এখন বিজেপির ঢাল তিনো তে এসেছে। বলাই যাচ্ছে না ভবিষ্যতে গদি দখলের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দীকে তিনোরা হার্ডহ্যান্ডেল করতে পারে। তাহলে তো সিপিএম কংগ্রেস এর হয়ে আর কিছু বলারই থাকেনা। আবার চুপ করে থাকলেও তো চলে না। মুখ বুজে কাজ করে চলা ও যায় না। তিনো বাজে তিনো পাজি তিনো শয়তানি করবে - এসব কন্টিনুয়াস বলে না চললে হোয়াটাবাউটারি করে হঠাৎ হঠাৎ সিপিএম কংগ্রেস বিষয়ে বিরক্তি উৎপাদক পোস্ট করার স্কোপটাই যে থাকে না।
বিজেপির core base গুলোতে covid মোকাবিলা খুব খারাপ ভাবে হয়েছে। মানুষ যথেষ্ট রেগে আছে। কর্ণাটক ইউপি পর পর হারছে দেখছেন তো। বিজেপি 24 সে আসছে না নিশ্চিত থাকুন। আম্বানি আদানি টাকাও তখন বন্ধ হয়ে যাবে। ফ্যাসিস্টদের এবার সেরা সুযোগ ছিল বাংলা দখল করার।
RR
মনে আছে তো যে বিজেপি এক সময় ক্ষমতা দখল করেও মাত্র ১৩ দিন দিল্লীতে রাজত্ব করেছিল? কাজেই কতবার কে এল দিল্লী থেকে আর বাংলা একবার ফস্কে যাওয়া বিজেপির কাছে বড় ব্যাপার নয়। এরা ঘাঘু মাল- আপনি wishful thinking করছেন।
অশ্বমেধের ঘোড়া বলে আপাততঃ কিছুকে glorify না করাই ভাল। লালু আদবানির রথ আটকেছিল না? শেষে বিজেপিকে আটকাতে পারেনি কিন্তু। বামেরা রথ আটকায়নি কিন্তু ২০১১ পর্যন্ত বিজেপিকে ৪% এ আটকে রেখেছিল।
যে ক্যান্সারটাকে সরাসরি আক্রমণ করা যেত এবার, সেটা no vote to BJP, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, বাঙালী অস্মিতা, সর্বোপরি তিনোর নরম সাম্প্রদায়িকতার ককটেল দিয়ে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু বর্তমান স্থিথাবস্থায় আপনি বা আমি কোন ভাবেই, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরী, পরিবেশ, সংখ্যালঘু বিরোধী নীতি ইত্যাদি প্রভৃতি ইস্যুতে বিজেপির ওপরে চাপ সৃষ্টি করতে পারব না। কেননা আমার- আপনার আর বিজেপির মাঝে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন তিনিই ঠিক করে দেবেন যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কে, কখন, কেমন করে লড়বে। তদুপরি বামেরা নিশ্চিহ্ণ। আর দীপঙ্করের মত বামেরা "বিজেপি প্রধান শত্রু" -র তত্বগত কারণেই তিনোর বিরোধীতা করবে না।
বিজেপি যদি কোনদিন বাঙলায় রাজত্ব করতে নাও পারে তাতেও শেষ পর্যন্ত বিজেপির বিশেষ কিছু আসবে যাবে না। সারা ভারতেই তারা RSS-এর বিষ ঢালতে থাকবে। আর সেই বিষ গঙ্গার জলের নিম্নগামী ধারার সঙ্গে নেমে এসে বাংলার নদী পুকুরেও মিশে যাবে।
বিজেপির বাংলা বিজয়ের ব্যর্থতার চাইতেও তিনোদের মসনদ খোয়ানোর ভয় হাজার গুণে বেশী। বিজেপির কাছে গোটা দেশ আছে কিন্তু তিনোদের বাঁচার জায়গা মাত্র একটা।
যারা সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখেন তাঁরা আপাততঃ বুড়ো আঙুল মুখে পুরে বসে থাকুন।
অ্যাই শোন একটা গোপন কথা বলছি। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলছি বঙ্গে ব্যাপক সন্ত্রাস চলছে প্রেসিডেন্টের রুল চাই। তুই এখানে সেই প্রচারটা চালিয়ে যা। কুত্তার মতো ঘেউ ঘেউ করতে থাকবি থামবি না। দশ টাকা রোজ পাবি।
বিজেপিকে ত্রিপুরায় আটকানো যায়নি, কিন্তু বাংলায় গেছে। ২০১৪ থেকে বিষ ঢেলে ঢেলে নদীতে মেশানো সত্ত্বেও। তুমুল মানি পাওয়ার মাসল পাওয়ার দিল্লি থেকে ডেলি প্যাসেঞ্জারি সিবিআই ইডি ইনকাম ট্যাক্স নির্বাচন কমিশন সত্ত্বেও। এখন "বাংলা না পেলেও যায় আসে না" সান্ত্বনাটা আসলে আঙুরফল টক।
https://www.anandabazar.com/elections/west-bengal-assembly-election/wb-election-2021-after-tanmoy-bhattacharya-the-explosive-kanti-gangopadhyay-the-cpm-will-speak-wiyh-the-leaders-dgtl/cid/1279637
এবার কান্তি গাংগুলী, যে দল ভুল করেছে।
আর প্রধাণ শত্রুকে হারাতে অপ্রধান শত্রুর সাথে আপস করতে হয়।
লেসার ইভিল তাই তো ?
ইনি তো কাদা মাখা কর্মী। অনলাইনের ভণ্ড তাত্ত্বিকরা এনাকে গিয়ে বোঝান যে ইনি দেশের অবস্থা বোঝেন না।
ও হরি, নো ভোট টু ক্যাম্পেনে বিজেপিটিদা ব্যাপক দুঃখ পেয়েছে দেখছি! সাধের বিজেপি এতো করেও ক্ষমতায় আসতে পারলো না, ওদিকে আবার ইউপিতেও থাপ্পড় খেয়েছে। বিজেপিটিদার মুখোশ সরে যাচ্ছে যে!
নো ভোট টু বিজেপি ক্যাম্পেনে
দলটা তো কিছু নেতার জন্যে ভোগে গেল, আমাদের জন্য রেখে গেল কিছু ঢপের পণ্ডিত।
পিটি
তাহলে তো সবচেয়ে বড় ক্রেডিট দিতে হয় নবীনবাবুকে, ওড়িশার গদিতে আজ অব্দি বিজেপিকে বসতে দেয়নি। এবং আদানি ইত্যাদি কর্পোরেটের লাভের গুড়ও খাচ্ছে, কিন্ত মার্ক্স আওতায না। ওর চাষিদের ক্যাশ ট্রান্সফার মডেল সবচে পুরনো। তামিলনাড়ুর লোকেরাই বা কম কিসে! তাহলে বিিজেপি আটকাতে এবং ইন্ডাস্ট্রি আনতে সিপিএম না হলেেও চলে?
প্রত্যেকবার সিপিএমের হারের জন্য খালি অন্যদের দায়ী করেন। এবারও তাই। কিন্ত 236 থেকে ক্রমাগত কমে শূন্য হয়ে যাওয়া? একটু নিজেদের দোষ দেখবেন না?
RR
"তাহলে তো সবচেয়ে বড় ক্রেডিট দিতে হয় নবীনবাবুকে, ......কিন্ত মার্ক্স আওতায না। তাহলে বিিজেপি আটকাতে এবং ইন্ডাস্ট্রি আনতে সিপিএম না হলেেও চলে?"
তা তো চলে। নবীন আমার কাছে এক রহস্যপুরুষ!! তিনি কি করে ও কেন ক্ষমতায় আছেন, তা বিস্ময়ের। ২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে Inequality-adjusted Human Development Index এ উড়িষ্যা সবার নীচে। আর ২০১৮-র HDI অনুযায়ী উড়িষ্যা ৩২ নম্বরে (পব ২৮)!!
"একটু নিজেদের দোষ দেখবেন না?"
আমাকে সিপিএম বলে দেগে দিলে আক্রমণ করতে সুবিধে হয় জানি কিন্তু আমি সিপিএমের শুন্যতায় বিশেষ বিচলিত নই। (কেউ কেউ মনস্থির না করতে পেরে আমাকে বিজেপিও বলছেন)। আমি চিন্তিত সাধারণভাবে "বাম" চিন্তার সংকুচিত স্পেস নিয়ে। আপনি কি বলতে পারেন যে SUCI, PDS ইত্যাদিরা যারা নিজেদের সাচ্চা বলে দাবী করে নিরন্তর সিপিএমের সমালোচনা করে আসছে অনন্তকাল ধরে তারা কেন একটাও সিট পায়না? I mean একটাও? অথবা মাণিক ঠিক কি কি অপরাধ করেছিলেন যে ত্রিপুরা তাঁকে পরিত্যাগ করেছে? অথবা কান্তি.....গত দু দশক ধরে মাটি কামড়ে লড়ে যাচ্ছেন মানুষের জন্য। তিনি কেন জিততে পারেন না? সে কি শুধুই আলিমুদ্দিনের দোষ? এগুলো কোন হোয়াটএবাউটরি নয়। সরাসরি উত্তর খুঁজে না পেলে আমরা রিসার্চে প্রচুর blank experiment করি মূল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য।
এমন তো হতেই পারে যে আমি আপনি যাকে সাম্প্রদায়িক বিপদ বলছি বিশাল সংখ্যক ভারতীয়র কাছে সেটা আদৌ কোন জরুরী ইস্যু নয়। গুজরাটের মানুষ তো বহুদিন বিজেপিকে নিয়ে ঘর করছে। তারা বাম তো দূরস্থান, কংগ্রেসের দিকেও ফিরে তাকাচ্ছে না।
First past the post-এর চক্করে বহুদিন বাস করে আমাদের একটা বদ অব্বেশ হয়ে গিয়েছে। সিট সংখ্যার ইলিউশন আমাদের অন্ধ করে রেখে বিরোধীদের সমর্থকের সংখ্যার থেকে চোখ ঘুরিয়ে দেয়। সেজন্যেই জরুরী অবস্থা, ২৩৫-৩৫ আর এই ভোটে বাঙালীর "ঐতিহাসিক ভূমিকা"!!
মোদ্দা কথা হচ্ছে যে প্রচুর সংখ্যায় মানুষ বিজেপিকে ক্ষমতায় রাখতে চাইছে। সিপিআই ও সিপিএম যখন নির্মল ছিল ও বিমান বাবুর চুল যখন কালো ছিল তখনও বামকে ভারত জুড়ে বেশীর ভাগ মানুষ পরিত্যাগ করেছে। ঘটনা যেটা নতুন সেটা হচ্ছে যে সাম্প্রতিক কালে ত্রিপুরা ও পবতেও মানুষ বামেদের পরিত্যাগ করেছে।
তাই নবীন বা মমতা যিনিই ক্ষমতায় এসে বিজেপিকে আটকানোর খোয়াব দেখুন ও দেখান না কেন তাঁরা বিজেপির আর্থ-সামাজিক নীতির বিরুদ্ধে কোন দাগ কাটতে ব্যর্থ হয়েছেন। কথা হচ্ছে যে তাঁরা বিজেপির হাতের পুতুল (আরেকটু নরম কোন শব্দ হলে ভাল হয়) হয়ে থেকে ক্ষমতার আনন্দ উপভোগ করবেন নাকি বিজেপি নামক হাঙরের পেটে যাওয়া শুধুই সময়ের অপেক্ষা তা তো ভবিষ্যত বলবে!!
পিটি যে প্রশ্ন করে অন্যকে, সেই প্রশ্নের উত্তর সে নিজে দেয় না কেন? এমন তো নয় যে এ প্রশ্নের কোনো নিজস্ব এক্সপ্ল্যানেশন তার কাছে নেই। আছে। আছে বলেই লোকে উত্তর দিলে তাকে আবার অন্য অন্য প্রশ্ন করে পিটি ঠোকরাতে থাকে, এবং নানা প্রশ্ন নানা দিক থেকে করতে করতে তার উত্তরটা নিজের এক্সপ্ল্যানেশনের কাছে নিয়ে আসতে চেষ্টা করে। আসার সম্ভাবনা না থাকলে দাগাতে থাকে - অতিবাম অতিবদ এইসব বলে। এই সেই বিখ্যাত ইরিটেশন যা সে পরিকল্পিতভাবে করে চলেছে বস্তুত অন্তত ১০ বছর ধরে। এইভাবে কল্লোলদাকে তিতিবিরক্ত করে সে গুরুছাড়া করেছে। যেই ই সরাসরি পিটির সাথে ইনভলভড হবে তারই কপালে এই ইরিটেশন নাচছে।
জাস্ট সাম্প্রতিক উদাহরণ
ডিসট্রিক্ট টাউনগুলোতে কতগুলো ৫ টাকার ডিম্ভাতের কাউন্টার দেখা যাচ্ছে তার খবরও দেওয়া হোক।
অনেকেই কলকাতার বাইরের খবর রাখেন। সেখানে ডিম্ভাতের কাউনটার খোলা হয়েছে (আদৌ ছিল কিনা কখনো) কিনা জানাতে পারবেন।
- হ্যাঁ মানিক, কলকাতার বাইরেও জেলায় জেলায় ক্যান্টিন খোলা হয়েছে। খুশি তো বাবু?
আমার জেলাটা কি ইচ্ছে করেই বাদ রাখল তিনোরা?
অর্থাৎ পিটির বক্তব্য সে নিজের জেলায় ডিমভাতের কাউন্টার এর খবর পায়নি। পিটির প্রাথমিক সন্দেহ ছিল এ কাউন্টার শুধু কলকাতাতেই খোলা হয়েছে। পিটির দাবি এই কাউন্টার খুব জরুরি ও মানুষের পক্ষে কল্যাণকর। করোনাকালিন খাওয়ার জোগান : গ্রামে-গঞ্জে ৫ টাকার ডিমভাত, যারা লোকাল ট্রেনে করে শহরে কাজ করতে আসতে পারবে না তাদের বাঁচিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু সম্ভবত এটি ভোটের ঢপ। সত্যিই তেমন পরিমাণ কাউন্টার খোলা হয় নি। - এই ধারণা বা বক্তব্যটুকু পিটি সরাসরি একবারে লিখে উঠতে পারেনা। সম্ভবত সরাসরি বিপরীত তথ্য দিয়ে তার বক্তব্যকে কেউ একেবারে নস্যাৎ করে দিতে পারে এই আশঙ্কায়। ফলে, নানা প্রশ্ন করে দীর্ঘসময় ধরে ত্যানা পেঁচিয়ে লোকের মুখ থেকেই এই কনক্লুশনটা সে বের করতে চায়। যাতে যেকোনো অড পরিস্থিতে তার বলার অবকাশ থাকে, কই আমি তো এমনটা বলিনি বা বলতে চাইনি। এটাই সেই ইন্টেলেকচুয়াল ডিজঅনেস্টি বা ওপরচালাকি যা যেকোনো আড্ডার পরিবেশ, সুস্থ আলোচনার পরিবেশকে নষ্ট করে। ডিসি এই বিহেভিয়ারটাকে যে স্ল্যাং ইমেজারিতে ধরেছিলেন, সেটা আর রিপীট করলাম না।
আমার লেখায় হোয়াটএবাউটারির প্রসঙ্গে blank experiment এর কথা লিখেছি। সেটা ঠান্ডা মাথায় পড়লেই আমার যুক্তিঅটা বোঝা যাবে।
আমি টোটোচালক, খবরের কাগজ ওয়ালা, মালী, কাজের দিদি ইত্যাদিদের কাছ থেকে খবর নিয়ে জেনেছি যে অন্ততঃ এরা কেউ সাম্প্রতিক কালে কোন ৫ টাকার ডিমভাতের কাউন্টার দেখেনি। এই মানুষ গুলো-ই সারদিন রাস্তায় থাকে ও বিভিন্ন জায়্গায় ঘুরে বেড়ায়। এর মধ্যে রাজনীতি কিছু নেই।
যারা বড় শহরে থাকেন তাঁদের কোন ধারনাই নেই এক এক জন কাজের দিদি ঘন্টাখানেক ধরে হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে বড় রাস্তা দিয়ে কাজ করতে আসে। তারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশী খবর লাগে।
এর মধ্যে কোন রাজনীতি নাই, অনেকাংশেই ঢপ আছে।
নর্দমার জলের বদলে বিপরীত তথ্য যা কিনা আমার বক্তব্য নস্যাত করে দিতে পারে তার অপেক্ষায় রইলাম।
এই পিটিরা কিরকম জানিস, এদের কাছে পলিটিক্যাল কোনো বক্তব্য টক্তব্য কিস্যু নেই - তুই যে কোনো পোস্ট দ্যাখ, টই দ্যাখ, ভাট দ্যাখ - সব সেই এক ছাঁচে ফেলে দেবে - সেই এক মমতাফোবিয়া, সেই এক সেন্টেন্স, এক ম্যানারিজম - আর কিছু পাবলিকও আছে সেইরকম - আহা, প্রফেসর মানুষ, কি যুক্তি - আরে ধুর ধুর ধুর, এর কোনো পলিটিক্যাল বক্তব্যই নেই, গুরুতে এসব ঢপবাজি চলে না, বিজেপিকে সামান্য একটু ঘুরিয়ে সাপোর্ট করেছ কি দশটা লোক ধরে ফেলবে -- তবে ও বুঝতে পেরে গেছিল যে ওর ওপরচালাকি লোকে ধরে ফেলেছে, আর বুঝতে পেরেছিল বলেই একটানা ব্যক্তি আক্রমণ, ভিক্টিম প্লেয়িং, নাকে কান্না, ছাগলামোর লেবেলিং চালিয়ে গেছে, লোকজনকে অপমান করে, খুঁচিয়ে টন্ট করে -
নানা আমার তো কাল থেকে পিটিদার পোস্ট পড়তে ভালোই লাগছে। কাউকে খোঁচানো নেই, বাপ টাপ তুলে গাল নেই। অবশ্যই বিজেপি ঘেঁষা মন্তব্য, কিন্তু তাতে কি, পিটিদা তো বললোই যে "এমন তো হতেই পারে যে আমি আপনি যাকে সাম্প্রদায়িক বিপদ বলছি বিশাল সংখ্যক ভারতীয়র কাছে সেটা আদৌ কোন জরুরী ইস্যু নয়। গুজরাটের মানুষ তো বহুদিন বিজেপিকে নিয়ে ঘর করছে"। কে কোনটা জরুরি ইস্যু মনে করবে সেটা তার ব্যপার। আমার মতে নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবারই আছে। পিটিদা, কাউকে অহেতুক খোঁচাবেন না, নিজেও খোঁচা খাবেন না। কিপ আপ দ্য চেঞ্জ! :-)