বেশী বেড়ালেও বিপদ, আবার কম বেড়ালেও। অন্তত ভ্রমণ সংক্রান্ত কিছু মিথ বা অতিকথন বা ভ্রান্ত ধারণা গড়ে তুলতে। বেশী বেড়ানো মানেই বেশী জানা নয়, আর পুরোপুরি ঠিক জানা তো নয়ই। কিন্তু হয় কি বেশী বেড়ালে আমাদের মধ্যে অনেকসময় একটা ভ্রান্ত ধারনা চেপে বসে যে আমি যেটা জানি বা যার মুখোমুখি হয়েছি, সেটাই চরম সত্যি! এর বাইরে আর কিছুই হতে পারে না। আমার অভিজ্ঞতার বাইরেও যে অন্য কেউ অন্য ভাবে সমগ্র জিনিসটা দেখতে বা অনুভব করতে পারে, সেটা মানতেই চাই না আমরা – এতটাই সঙ্কীর্ণমনা এবং অধৈর্য্য হয়ে উঠি অনেক সময়। আর এই ব্যাপারগুলোই বেশীর ভাগ সময় জন্ম দেয় ‘মিথ’ এবং ভ্রান্ত ধরণার। এর কিছু কিছু ব্যাপার হয়ত ক্ষেত্র বিশেষে সত্যি, কিন্তু সেগুলোই একমাত্র সত্যি নয় বা চিরন্তন সত্য নয়। তেমন কিছু বিষয় নিয়েই ভাবলাম আজকে কিছু লিখিঃ
১) ডিউটি ফ্রী শপিং সবসময় সস্তার
এয়ারপোর্টে ডিউটি ফ্রী শপিং দেখে প্রলোভিত হবেন না এমন মানুষ খুব কম আছেন। কিনবেন কিনা সেটা পরের ব্যাপার, কিন্তু প্রলোভন জয় করা মাঝে মাঝে চাপের হয়ে যায়। সেই চকোলেট থেকে শুরু করে সিগারেট, পারফিউম, কসমেটিক্স, ওয়াইন – কিসের নাম করব। কিন্তু বলাই বাহুল্য সব সময় ডিউটি ফ্রী জিনিস সস্তা হবে বাইরের খোলা মার্কেটের থেকে, এমন কিছু বাধকতা নেই। এয়ারপোর্টে ডিউটি/ট্যাক্স নিচ্ছে না ঠিক আছে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে জিনিসটার ‘দাম’ও সেখানে সব থেকে কম!
এটা আবার দেশের উপরেও নির্ভর করে। কিছু কিছু দেশের এয়ারপোর্টের কিছু জিনিসের দাম সত্যি কম আমাদের দেশের থেকে। কিন্তু আবার অনেক জিনিস আছে যেগুলি আপনি সস্তায় আপনার দেশের কাছের দোকান থেকে পেয়ে যাবেন। যেমন ধরুণ ইউরোপের এয়ারপোর্টে ওয়াইনের দাম কম বেশীর ভাগ সময়। এর মধ্যে একটা ব্যাপার আছে, ভারতের থেকে কম দামে পাওয়া গেলেও, ইউরোপেরই এয়ারপোর্টের বাইরের কোন দোকানে হয়ত ডিউটি ফ্রীর থেকে কম দামে ডীল রয়েছে। তো সেক্ষেত্রে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। অনুরূপ ভাবে সিগারেট বা পারফিউম ট্রাই করতে পারেন। অ্যালকোহল বাইরের দোকানে কিনে নিয়ে আসার চাপ হচ্ছে আপনাকে চেক-ইন লাগেজে করে নিয়ে আসতে হবে। কারণ বাইরে থেকে বোতল তো নিয়ে আর ঢুকতে দেবে না!
চকোলেট সময় পেলে বাইরের দোকানে ট্রাই করতে পারেন। অনেক ভালো ভালো দোকানে ডীল পেয়ে যাবেন, এবং ব্যাগেতেও নিয়ে আসতে পারেন। মোট কথা আগে থেকে একটু খোঁজ খবর রাখলে ডিউটি ফ্রী-কে ঠিক ঠাক ব্যবহার করতে পারবেন নিজের পকেটের স্বার্থে।
২) এয়ারপোর্টে কারেন্সী এক্সচেঞ্জ করা সবথেকে লাভের
সমস্ত এয়ারপোর্টেই আপনি পাবেন কারেন্সী এক্সচেঞ্জ করার দোকান। এবং অনেকেই দাবী করবে ‘নো-ফি’ এক্সচেঞ্জ। আর বলাই বাহুল্য ফ্রী বলে দুনিয়াতে আসলেই কিছু হয় না। ওদের রেট অব এক্সচেঞ্জের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ফী এবং বেশ কমিশন। আজকাল আর টাকা এক্সচেঞ্জ না করে নিজের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড বিদেশে ব্যবহার করার কথা ভাবুন। সব ব্যাঙ্কই আজকাল এই অপশন দেয় – কার্ড অ্যাক্টিভেটেড না থাকলে ব্যাঙ্কে কল করে কার্ড অ্যাক্টিভেট করে নিন। অবশ্যই ব্যাঙ্ক কিছু চার্জ করবে, কিন্তু তা সত্ত্বেও এয়ারপোর্টে কারেন্সী এক্সচেঞ্জর থেকে আপনি মিনিমাম ১০% সেভ করতে পারবেন নিজের কার্ড ব্যবহার করলে। কিছু টাকা অবশ্যই রাখুন নিজের কাছে এমারজেন্সী পারপাসে, কিন্তু আজকালকার যুগে আর ট্যাঁকে টাকা গুঁজে ঘোরার দরকার নেই। কার্ড ব্যাবহার করে পয়েন্ট লাভ করার ব্যাপারটা এখানে ধরছি না। সেটা আবার এক্সট্রা লাভ।
আপনি নিজের কার্ড ব্যবহার করে বিদেশের এটিম থেকেও টাকা তুলতে পারেন। এটাও লাভজনক এয়ারপোর্টে এক্সচেঞ্জ করার থেকে। তবে সেক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন বারবার ৫০ ডলার, ১০০ ডলার না তুলতে। কারণ ব্যাঙ্ক চার্জ করবে ট্রানজাকশন প্রতি – তাই যত বেশী বার খুচড়ো তুলবেন তত বেশী লস আপনার।
আর যদি আপনি এক্সচেঞ্জ করাতেই সবথেকে বেশী স্বচ্ছন্দ হন, তাহলে বলব একটু প্ল্যান করে নিন আগে থেকে। নিজের যে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট আছে তাদেরকে আগে থেকে বলে এক্সচেঞ্জ করিয়ে নিন। এরা প্রেসেসিং ফী না নিয়েই করে দেয় বেশীর ভাগ সময়। প্রিভিলেজ কাষ্টমার হলে তো কথাই নেই – ফী লাগবে না।
৩) দিনের বিশেষ কোন সময়ে গেলে সাইট-সিয়িং এর জায়গা ফাঁকা থাকবে
তো এই ভেবে আপনি ঠেলে ঠুলে বউ-বাচ্ছা এবং নিজেকে তুলে খুব সকালে গিয়ে হাজির হলেন ধরুণ আইফেল টাওয়ারের সামনে, বা টাইগার হিলে। বা কোন মিউজিয়ামের সামনে ভর দুপুরে ভীড় এড়ানোর জন্য – বা পড়ন্ত বিকেলে। এবার ভাবার বিষয়, আপনি যেমনটা ফাঁকায় ফাঁকায় ঘুরবেন ভেবেছেন তেমনটা কি আর কেউ ভাবেন নি! অবশ্যই হয়ত দিনের কোন এক বিশেষ সময় ভীড় একটু কম থাকে – কিন্তু সেই নিয়ে টেনশন করে করে করে নিজের ঘোরা মাটি করবেন না। যদি জনপ্রিয় জিনিস দেখতে চান তো ভীড় এড়াতে পারবেন না এটা ভেবে নিয়েই নিজেকে প্রস্তুত রাখুন। এতে হতাশা কমে, ধৈর্য্য হারাবার চান্স কম থাকে।
যদি সত্যি করেই ভীড় এড়াতে চান তাহলে একটা উপায় হচ্ছে কিছু কিছু পার্টিকুলার সময়কে এড়ানো – দুর্গা পুজোর সময়ে ফাঁকায় ফাঁকায় ঘুরবেন, বা বড়দিনের ছুটিতে বা স্কুলের গ্রীষ্মের ছুটিতে – এমন হবার চান্স নেই। বাইরের দেশে ‘স্কুল হলিডে’ খুব একটা জনপ্রিয় টাইম বেড়াবার জন্য। যেখান থেকে আপনি যাচ্ছেন সেটা বড় ব্যাপার নয়, যেখানে যাচ্ছেন সেখানে আর কারা বেড়াতে আসছে তার উপর নির্ভর করছে কেমন ভীর হবে। ধরুণ আপনি যাচ্ছেন থাইল্যান্ড বেড়াতে ভারত থেকে – আপনার অজান্তেই বুক করে ফেললেন এমন একটা সময়ে যখন মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের স্কুল হলিডে – তাহলে থাইল্যান্ডে গিয়ে বেজায় ভীড় দেখবেন। এই সব আর কি – একটু চোখ কান খোলা রাখুন।
৪) যাই করুন না কেন, টাইম জোন পেরিয়ে ট্রাভেল করলে জেট-ল্যাগ হবেই
এই ব্যাপারে বেশ একটু কনফিউশন আছে জনতার মধ্যে – বেশীর ভাগই মনে করেন যে জেট ল্যাগ আছে ঘুম কম হলে। আসল ব্যাপারটা ঠিক তা নয় কম - ঘুমের থেকেও জেট ল্যাগ মূলত আসে বেঠিক সময়ে ঘুমালে। এছাড়া ফ্লাইটের ভিতর শুষ্কতা, কেবিনের প্রেশার, ফ্রেস বাতাসের অভাব – এই সবই জেট ল্যাগের পিছনে ইন্ধন যোগায়।
রুল অব থাম্ব হচ্ছে যেখানে যাচ্ছেন সেখান কার টাইম অন্যযায়ী ঘুমাবার চেষ্টা করুন। ধরুন আপনি বিশাল ঘুম ঘুম চোখে আমেরিকা পৌঁছলেন সেখানকার সময়ে দুপুর নাগাদ। গিয়েই ঘুমিয়ে পড়বেন না – ওয়েট করুন, রাত হতে দিন – আমেরিকার ঘুমাবার টাইমে ঘুমাবার চেষ্টা করুন। একই কথা প্রযোজ্য ফ্লাইটে দেওয়া খাবারের ক্ষেত্রে – ‘ফ্রী’ খাবার মনে করে তার প্রলোভন সামলানো খুব মুশকিল। আপনি এটা ফ্রী মনে করলেও, আদপে টিকিটের সাথে তো খাবারের দামটাও দিয়ে দিয়েছেন আগেই। এবার হল কি, দাম যখন আগেই দেওয়া হয়ে গেছে, তাহলে আর ছাড়া কেন! বাকি অনেক কিছুর প্রলোভন জয় করতে পারলেও ফ্লাইটের খাবার প্রলোভনে এখনো পা দিয়ে ফেলি বেশীর ভাগ সময়েই – ভোর তিনটের সময় রাতের ‘ডিনার’, খানিক পরে আবার ব্রেকফাষ্ট – কিছুই ফেলি না। বিজনেস ক্লাসে তো আরো জবরদস্ত খাওয়া দাওয়া, সে জিনিসও ছাড়া যায় না। তবে চেষ্টা করবেন যে খাবার আর ঘুমানোর সময়টা যেখানে যাচ্ছেন সেখানকার সাথে মেনটেন করতে। তাহলে জেট ল্যাগের প্রকোপ কিছুটা কমতে পারে।
৫) হোটেল-এ সরাসরি বুকিং করলে রেট বেশী পরে
এই ক্ষেত্রেও একমাত্র এবং সর্বপ্রযোজ্য নিয়ম বলে কিছু নেই। অনেক সময় হয় কি বেশ কিছু ট্রাভেল এজেন্সী কম দামে হোটেলের রুম দিতে পারে তাদের সাথে এক টার্গেট চুক্তি থাকে বলে। মানে ধরুণ আমার কোম্পানী ঘোষ ট্রাভেলস – এবার আমি চুক্তি করলাম বড় বড় হোটেল চেনের সাথে যে ভাই আমি তোমাকে বছরে এত টাকার গ্যারেন্টেড বিজনেস দেব (না দিয়ে পারলে পেনাল্টি বা অন্য ক্লজ আছে) – কিন্তু তার বিনিময়ে তুমি আমাকে মার্কেট রেটের থেকে কত কমে দেবে রুম রেন্ট? শুনলে হয়ত অবাক হবেন যে এই ধরণের কর্পোরেট চুক্তিতে ৩০-৪০% পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায় মার্কেট রেটের থেকে।
এটা তো গেল ট্রাভেলে এজেন্টদের কথা – আবার আছে শুধুমাত্র হোটেল বুকিং সাইট। এদের কমিশন ফী প্রায় ২০-৩৫%। এবং এই কারণেই হোটেল চায় তাদের নিজেদের সাইট থেকে লোকে বুক করুক, বুকিং সাইট থেকে করার থেকে। কে কার হৃদয় খুঁড়ে কমিশন দিয়ে চায় থার্ড পার্টিকে- ঠিক এই একই কারণে আপনাকে হয়ত অনেক সময় ওলা/উবের ক্যাবের চালক বলেছে বুকিং ক্যানসেল করে দিতে। হয় কি চুক্তির নিয়ম অনুসারে হোটেল নিজের ওয়েব সাইটে রুমের ভাড়া অন্য বুকিং সাইটের থেকে কম বলে দিতে পারে না। আপনি হয়ত দাবী করবেন অনেক দেখেছেন এমন – কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন অনেক কিছু অনুল্লিখিত থাকে যেখানে কম দাম পোষ্ট করা হয় – যেমন ট্যাক্স অন্তর্ভুক্ত কিনা, ব্রেকাফাষ্ট আছে কিনা ইত্যাদি। তাই সব কিছু যোগ করলে বিশেষ কিছু তফাত পাবেন না।
তবে হোটেলের সাইট থেকে সরাসরি বুক করলে কিছু ভালো অফার পাবার চান্স থেকে আর চান্স থাকে একই ক্যাটাগরীতে ভালো লোকেশেনের রুম পাবার। বুকিগ্ন সাইট থেকে বুক করলেও, ঠিক কোন তলায় বা কোন ওরিয়েন্টেশনের রুম দেবে সেটা তো আগে থেকে জানতে পারেন না। হোটেল একটা ব্যালেন্স টেনে চলে – ঝোলটা নিজের কোলের দিকেট টানা বাশীর ভাগ সময়। অর্থাৎ হোটেলের নিজেদের জন্য ভালো লোকেশনের রুম রেখে দেয়। হোটেলের ডাইরেক্ট অফার গুলো অনেক সময় খুব আকর্ষণীয় হয় – যেমন তিন রাত থাকলে একরাত ফ্রী, বা একদিন রাতের ডিনার ফ্রী। হোটেলের রেষ্টুরান্টে বা ম্যাসাজ পার্লারে ডিসকাউন্ট ইত্যাদি।
তো আজকে এই পর্যন্ত। সময় পেলে পরের পর্বে আরো কিছু এমন ভ্রান্ত (!) ধারণা নিয়ে আলোচনা।
কাজের কথা ,
আগে আ্যমেরিকান এক্সপ্রেসের ট্র্যাভেলার্স চেক নিয়ে যেতাম। আমেক্স, এমনকি টমাস কুকও বোধহয়, ডলার প্রতি কিছু বেশি দিত। এখন কেউ ট্র্যভেলার্স চেক ব্যবহার করেন কিনা জানিনা। আমি তো বহুদিন আর করিনা।
ক্যালিফোর্নিয়ায় এলে বা এখান থেকে গেলে - এমনকি ইউএসএ-র অন্য জায়গাতেও, মদ বাইরে থেকে কিনে নিয়ে যান। নিউ ইয়র্ক / নিউ জার্সি / বস্টনের তুলনায় ইম্পোর্টেড স্পিরিটের দাম প্রায় আদ্ধেক। ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়াইনের কথা তো ছেড়েই দিন।
কস্টকোয় কেনা চকোলেট ডিউটি-ফ্রিকে বলে বলে গোল দেয়। কী ইউরোপ, কী এশিয়া। তবে চকোলেটের ভ্যারাইটি ইউরোপে অনেক বেশি।
হোটেল সাধারণতঃ কনসলিডেটর সাইটে সস্তা পড়ে। আমার অভিজ্ঞতা তাই। খালি প্লেনের টিকিটে বিশেষ তারতম্য পাইনা, বরং মাঝ-সাঝে এয়ারলাইনের সাইট থেকে ডিরেক্টলি কিনলে সস্তা পড়ে। কপাল ভাল থাকলে কোন প্রোমোশনও পেয়ে যেতে পারেন।
ভাল লেখাটা, কাজেরও | দু-একটা ব্যাপার:
"যেমন ধরুণ ইউরোপের এয়ারপোর্টে ওয়াইনের দাম কম বেশীর ভাগ সময়। "
ওয়াইন শুধু দাম (সস্তা/দামী) বিচার করে লোকে কেনে না। বরং ভিন্টেজ আর কি ধরণের ওয়াইন (লাল/সাদা, তাদের মধ্যে আবার নানান রকমের ভ্যারিয়েশন), এগুলো দেখে কেনাটাই দস্তুর | আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি এয়ারপোর্টের ডিউটি-ফ্রি শপে ওয়াইনের সিলেকশন সব সময় যা চাইবেন পাবেন, মনে হয় না। তার থেকে যদি নিতান্তই হাতে যদি সময় কম থাকে ফ্লাইটে প্লেনের মধ্যে কিনতে পারেন, :-), না হলে যেখানে গেছেন সেখানে দোকানে দেখুন না হলে কাউকে জিজ্ঞাসা করুন। হোটেলে থাকলে অনেক সময় হোটেলের ডেস্ক ক্লার্করা এ ব্যাপারে আপনাকে সুপরামর্শ দিতে পারেন |
"টাইম জোন পেরিয়ে ট্রাভেল করলে জেট-ল্যাগ হবেই"
এ ব্যাপারটাও যে সব সময় হবে নিশ্চিত করে বলা যায় না | কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছেন, কতক্ষণের ফ্লাইট, স্টপওভার, জল খাওয়া, খাওয়া দাওয়া করা, প্লেনে ওঠার আগে পরে নানান রকমের ব্যাপার থাকে।
শিবাংশুদা, ন্যাড়াদা, অরিন-দা ধন্যবাদ
অরিনদা, লেখাটা পড়ে কিছু ভুল ধারণা হয়েছে মনে হচ্ছে আপনার। যেমন "টাইম জোন পেরিয়ে ট্রাভেল করলে জেট-ল্যাগ হবেই" এটা স্টেটমেন্ট নয়, বরং ভ্রান্ত ধারণা সেটাই লিখেছি এবং তার কারণ গুলিও সেটা আপনি লিখেছেন সেটাও উল্লেখ করেছি
সবকটা পয়েন্ট একদম ঠিক। ডিউটি ফ্রি তে মোটেও কম দাম হয়না আর এয়ারপোর্টের এক্সচেঞ্জ মোটেও সবথেকে বেশী রেটে দেয় না। আর টুরিস্ট স্পট ফাঁকা পাওয়া একদম লাকের ব্যপার। আর একটা টিপ হলো, যাঁরা রেগুলার ঘুরে বেড়ান তাঁরা কোন একটা ক্লাবের মেম্বার হয়ে যেতে পারেন, সেই ক্লাবের এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে ফ্রি এন্ট্রি পাবেন (এর মধ্যেও অবশ্য নানা শর্ত থাকে)।
আর যারা প্রকৃত ওয়াইন প্রেমী তাদের খুব কম জনকেই আমি ডিউটি ফ্রীর উপর নির্ভর করতে দেখেছি। ইউরোপের বেশীর ভাগ ডিউটি ফ্রী তেই সিলেকশন খুব ভালো থাকে। তাই যদি খুব স্পেসিফিক কিছু এবং ভিন্টেজ না খোজা হয়,সে হোয়াইট হোক বা রেড মোটামুটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড পাওয়া যায়
"অরিনদা, লেখাটা পড়ে কিছু ভুল ধারণা হয়েছে মনে হচ্ছে আপনার। যেমন "টাইম জোন পেরিয়ে ট্রাভেল করলে জেট-ল্যাগ হবেই" এটা স্টেটমেন্ট নয়, বরং ভ্রান্ত ধারণা সেটাই লিখেছি "
তাইতো! শুধরে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
ডিউটি ফ্রী থেকে কেনাকাটা করার সমস্যা এবং সুবিধাও আছে। অযথা ডেস্টিনেশনে এসে ইম্পোর্ট ডিউটি দিতে হবেনা, যেটা কিছু কিছু প্রোডাক্টের জন্য কিছু কিছু দেশে বেশ ভালই হয়। ডিউটি দেওয়ার থেকেও বড় ব্যাপার হল কাস্টমস সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা থেকে রেহাই। ডিউটি ফ্রীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হল যদি একাধিক স্টপওভার থাকে, তাহলে আপনাকে মাঝের কোনও স্টপওভারে তার আগের এয়ারপোর্ট থেকে কেনা জিনিসপত্তর হয়তো চেকড-ইন লাগেজ করে দিতে বলবে, বিশেষ করে যদি আবার সিকিউরিটি চেক-ইন হয়। তাই সবসময় লাস্ট স্টপওভারে শপিং করবেন। সিঙ্গাপুর আর দুবাই এয়ারপোর্ট সেইদিক থেকে বেশ ভালো জায়্গা।
জেট ল্যাগ অ্যাভয়েড করার সবথেকে ভালো উপায় হল বড় ট্রাভেল করার কয়েকদিন আগে থেকে একটু অসময়ে ঘুমাতে শুরু করুন, যাতে আপনার ঘুমানোর সময়টা ডেস্টিনেশানের রাতের সঙ্গে মিলে যায়।
ফরেন কারেন্সির থেকে বেটার হল ক্রেডিট কার্ড নিয়ে ঘুরে বেড়ানো। এখন অনেক কার্ডেই খুব ভালো এক্সচেন্জ রেট দেয়, কোনও ফীও নেই। তবে সব দেশে এসব ব্যবহার করা সেফ কিনা সেই নিয়ে সমস্যা আছে।
হোটেল বুক করার নিয়ম হলঃ বিভিন্ন বুকিং সাইটে দামটা দেখে নিন। তারপরে সেই হোটেলের বা হোটেলগুলোর সাইটে গিয়ে চেক করে নিন। যেখানে কম পাচ্ছেন সেখানে বুক করে ফেলুন সময় নষ্ট না করে। বুকিং সাইটের সুবিধা হল কিছু অফার থাকে যেমন টেন নাইটস বুক করলে এক নাইট ফ্রী ইত্যাদি।