এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  উৎসব  শরৎ ২০২০

  • বাংলার হারিয়ে যাওয়া মিষ্টি মুকুন্দ, নমস

    দীপক দাস
    ইস্পেশাল | উৎসব | ১৮ নভেম্বর ২০২০ | ৬০৪৪ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • প্রেমের সঙ্গে গুড়ের তুলনা! কেমন একটা নাক সিটকানো ব্যাপার বলে মনে হয় না? চাঁদ, চকোর, পারিজাতের সৌরভ— তুলনার কত কিছু রয়েছে। কিন্তু গুড়! তাই তো করেছেন গীতিকার আনন্দ বক্সী। ‘তাল’ সিনেমায় ঐশ্বর্য রাই গেয়েছিলেন, ‘গুড় সে মিঠা ঈশক ঈশক’।

    গুড়ের এখন কোনও আভিজাত্য নেই। সেই কারণেই তুলনাটা কানে লাগছে। গুড় চুঁইয়ে আসব তৈরি করতে শেখার পরে তো মিষ্টিটার ভারী বদনাম। গুড়জল জিনিসটা মোটেও ভাল নয়। নিজস্ব এবং পারিবারিক, যে কোনও স্বাস্থ্যের পক্ষেই সর্বনেশে। মাঝে এক রাজনীতিক গুড়-জল দিয়ে ভোট করানোর নিদান দিয়েছিলেন। তাতে গুড়ের কিছুটা গুরুত্ব বেড়েছিল কিছুদিন। কিন্তু শব্দের উৎকর্ষ বাড়েনি। অপকর্ষই হয়েছিল। তবুও কেন গুড়ের সঙ্গে প্রেমের তুলনা? ‘তাল’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯৯ সালে। সেই সময় থেকে এই বিশ-বিশ সালে মিষ্টির জগতে এমন কিছু বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেনি। তাই ১৯৯৯ সালে গুড়ের বাজার ছিল, এখন নেই, এ কথা বলা যাবে না। তাহলে কেন ঈশক-গুড়?

    খোঁজ চলছিল বাংলার হারিয়ে যাওয়া মিষ্টির। সেই খোঁজেই মিলল গুড়ের গৌরব। প্রাচীন ভারতে মিষ্টির মধ্যে গুড় ছিল সর্বাগ্রগণ্য। একটি প্রদেশ নাম পেল গুড়ের গৌরবে। শশাঙ্কের গৌড় নামকরণ তো গুড়ের অনুপ্রেরণায়। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গৌড়মল্লার’এ আখ মাড়াই আর গুড় তৈরির সময়ের খুশির খুব সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। সে কী মাতামাতি! আবার একসময়ে গুড়ের রফতানি কমে গেল। গৌড়ের গরিমাও অনুজ্জ্বল হল। পুরনো বা হারিয়ে যাওয়া মিষ্টির খোঁজ শুরু হয়েছিল জাতক কথা দিয়ে। না, জাতকের ঘটনা বাংলার নয়। তবে বঙ্গ-বিহার-ওড়িশা তো একসময়ে একই সঙ্গে উচ্চারিত হত। আর বঙ্গে বৌদ্ধধর্মের বেশ প্রভাব ছিল। এখনও বহু বাঙালি পদবিতে বৌদ্ধ ধর্মের চিহ্ন লুকিয়ে। সেই ভরসাতেই খোঁজা। আর ধর্মাচরণের সঙ্গে প্রসাদ বা খাবার, যা-ই বলুন না কেন তার একটা যোগ রয়েছে। আর সে যোগ বেড়েই চলে। প্রসাদ সাংস্কৃতিক সমন্বয় ঘটায়। যেমন সত্যনারায়ণের শিরনি। আর দেব-দেবীকে উৎসর্গ করা খাবারে কিন্তু মিষ্টান্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

    জাতক কথায় বেশ কিছু মিষ্টি এবং মিষ্টান্নের উল্লেখ মিলল। ‘খদিরাঙ্গার-জাতক’এর কথা ধরা যাক। অনাথপিণ্ডদ জেতবনের বৌদ্ধবিহারে কখনও খালি হাতে যেতেন না। প্রাতরাশের পরে গেলে নিয়ে যেতেন ঘি, ননি, মধু ও গুড়। ‘লোশক-জাতক’এ সারীপুত্র বৌদ্ধভিক্ষু লোশকের আহারের ব্যবস্থা করেছিলেন। সেদিন বেলা দুপুর গড়িয়েছিল। তাই অন্ন আহার অনুচিত হবে ভেবে সারীপুত্র লোশকের ভিক্ষাপাত্রে মধু, ঘি, ননি আর শর্করা ভরে দিয়েছিলেন। সংস্কৃতে চতুর্মধুর বলতে এই চারটি খাদ্যদ্রব্যকেই বোঝায়। আরও কিছু মিষ্টি বা মিষ্টান্নের উল্লেখ মেলে জাতকে। মিষ্টির মধ্যে গুড়, শর্করা বা চিনি আর মধুর উল্লেখই বেশি। মিষ্টান্ন বলতে মধু মিশ্রিত লাজ বা খই, ‘ঘৃত মিশ্রিত পরমান্ন’এর উল্লেখ রয়েছে জাতকে। জাতক কথায় বহুবার গুড়ের উল্লেখ রয়েছে। এমনকি গুড় পেয়ে ছেলেরা খুশি এমন উল্লেখও আছে। তারা কাজ করে দিচ্ছে গুড়ের খুশিতে।

    মিষ্টিমহলের আনাচাকানাচে ঘোরাঘুরিতে একটা জিনিস মনে হয়েছে। প্রাচীন বাংলায় মিষ্টি বা মিষ্টান্নের প্রধান উপকরণ ছিল তিনটি। গুড়, দুধ আর ধান। গুড়ের সঙ্গেই ছিল শর্করা। মানে চিনি। এই চিনি কিন্তু এখনকার চিনির মতো নয়। তৈরি করাও বেশ শ্রমসাধ্য ছিল। দানা যুক্ত সার গুড় পাত্রে রেখে তার উপরে পাটা শ্যাওলা চাপা দেওয়া হত। সাত-আট দিনের মধ্যে চাপা দেওয়া গুড়ের উপরিভাগের কিছুটা অংশ চিনি হত। সেই চিনি তুলে নিয়ে বাকি গুড় আবার শ্যাওলা চাপা দিয়ে রাখতে হত। কয়েকদিন পরে বাকিটাও চিনি হত। এই চিনি শুধু খাওয়া হত। সেটাই ছিল মিষ্টি। নয়তো অন্য উপকরণ যোগে মিষ্টান্ন তৈরি হত।

    অন্য উপকরণ যোগে মিষ্টি বলতে পুরনো কালে (কত পুরনো বলতে অসমর্থ) খইয়ের গুরুত্বই বেশি। কারণ ধান সব জায়গাতেই হত। এখনও হয়। ফলে লোকের ঘরে খই থাকত। খই একটা সময়ে ঘরে ঘরে নিয়মিত ব্যবহার হত। সেই খই গুড় বা চিনি দিয়ে পাক করে মোয়া বানিয়ে রাখা যায়। অতিথি সৎকার, কুল দেব-দেবীকে উৎসর্গ চলতেই পারে। সেই কারণেই হয়তো বাংলার বিভিন্ন জায়গায় মোয়ার চল ছিল প্রচুর। এখন মোয়ার একচেটিয়া জয়নগরের অধিকারে। কিন্তু একসময়ে বিভিন্ন জেলায় নানা নামের মোয়া মিলত। যেমন খইচুর। মোয়ারই তুতোভাই। এতদিন জানতাম, খইচুর তৈরি হত শুধু হাওড়া জেলার মাজুতে। কিন্তু বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায়ের বইটি হাতে আসার পরে জানা গেল, হুগলি জেলার ধনেখালিতে একসময়ে খইচুর তৈরি হত। এখন তৈরি হয় কিনা কে জানে। করোনা-কালে পরিবহণ ব্যবস্থার অপ্রতুলতায় যাওয়া হয়নি ধনেখালি। কিন্তু সম্প্রতি ইন্দ্র আর রাজাকে সঙ্গে নিয়ে মোটর বাইকে করে গিয়েছিলাম হুগলির খানাকুলে। তরুণ মান্নার দোকান খানাকুল বাজারে। তিন পুরুষের মোদক ব্যবসায়ী। তরুণবাবু জানালেন, তাঁরাও একসময়ে খইচুর করতেন। তিনি আরেকটি মিষ্টির সন্ধান দিলেন। সেটির নাম মুকুন্দ। এটিও মোয়া জাতীয়। মূল উপকরণ গুড় আর খই। সঙ্গে গোলমরিচ, মৌরি, আদা পিষে মেশাতে হয়। শীতকালের মিষ্টি। তাই নলেন গুড়ই লাগে। গুড় গরম করে খই দিয়ে মাখিয়ে নিতে হয়। তার পর মশলা মাখিয়ে চাপা দিয়ে ঘণ্টা পাঁচেক মজতে দিতে হবে। তার পরে গোল্লা পাকানো। মুকুন্দ হারিয়ে যাওয়া মিষ্টি। এখন আর করেন না তরুণবাবু।

    হারিয়ে যাওয়া মোয়ার ক্ষয়িষ্ণু ধারা বছর তিরিশেক আগে পর্যন্ত গ্রামীণ বাংলার ভাঁড়ার ঘরের বয়ামে বইত। কিছু বাড়িতে চিড়ে, মুড়ি দিয়েও মোয়া তৈরি হত। কিন্তু খইচুর, মুকুন্দের মতো সেই ধারাও এখন লুপ্তই ধরা যায়। খই আর গুড়ের মিশ্রণে আরেকটি মিষ্টি হল মুড়কি। নানা ধরনের মুড়কি পাওয়া যেত এলাকা ভেদে। যেমন খাগড়াই মুড়কি। বহরমপুরের খাগড়া নামের একটা জায়গায় মুড়কি তৈরি হয়েছিল। তাই এই নাম। বেশ মশলাদার মুড়কি। উপকরণ খই, চিনির রস, গাওয়া ঘি, জায়ফল গুঁড়ো, পেষাই এলাচ, জৈত্রী পেষাই, আর জাফরানের গুঁড়ো। করোনা সারলে একবার দেখে আসতে হবে খাগড়াই মুড়কি তৈরি হয় কিনা। আমরা এখনও অনেক ধরনের মুড়কি দেখতে পাই। যদিও গৃহস্থ বাড়িতে মুড়কি খাওয়ার চল প্রায় উঠেই গিয়েছে। দেবতার ভোগে লাগে এখন। মুড়কিও সেই মিষ্টান্নের আদিযুগের গুড়-চিড়ের সহাবস্থানের ঐতিহ্য বইছে।

    গুড়ের সঙ্গে আরও কিছু উপকরণ যোগে মিষ্টি তৈরি একসময়। নানা ধরনের। সেটা সম্ভবত যেখানে যা বেশি পাওয়া যায় তার সঙ্গে গুড় যোগে। মিষ্টি তো আসলে ময়রার খেয়াল বা উদ্ভাবনী শক্তি। যা বেশি পাওয়া যায় তার সঙ্গে গুড়, চিনি মিশিয়ে তৈরি করেছেন নতুন মিষ্টি। যেমন তিলেখাজা। তিলের তেল একসময়ে যথেষ্ট ব্যবহার হত। তিলবাটার বড়া করে তরকারি হয়। সেই সঙ্গে মিষ্টিও তৈরি হত। নারকেল আর গুড় বা চিনির পাকে কত সুস্বাদু এবং সুন্দর নামের মিষ্টি তৈরি হয়। যেমন নারিকুলি। চিনি বা গুড়, উভয়ের মিশ্রণেই হয় নারিকুলি। বিপ্রদাস জানাচ্ছেন, চিনির তৈরি নারিকুলি বেশি উপাদেয়। গুড়ের নারিকুলি করতে হলে তরল অংশটিকে বের করে দিতে হয়। সেজন্য গুড় মোটা পরিষ্কার কাপড়ে বেঁধে তার উপরে ভারী কিছু চাপানো দরকার। এতে তরল অংশ বেরিয়ে যায়। তার পর তা দিয়ে নারিকেল কুরোনো পাক করে মিষ্টি তৈরি হয়। নারিকুলি একধরনের নারকেল সন্দেশ। আর মেলে এ মিষ্টি?

    মিষ্টির বাকি এবং প্রধান উপকরণ হল দুধ। বিশেষ করে ক্ষীর। ক্ষীরের পুলি, ক্ষীরের মালপোয়া, ক্ষীরসা, ক্ষীরের ছাঁচ, ক্ষীরের বরফি কত নাম। এমনকী ক্ষীরের লুচি পর্যন্ত ছিল। কিন্তু এর পাক প্রণালীটা মিলল না। ঘরোয়া ভাবেও ক্ষীরের নানা মিষ্টি তৈরি হত। যেমন ক্ষীরের যোসি। সময় লাগে তৈরি করতে। কিন্তু সহজ। ক্ষীরের সঙ্গে মিহি ময়দা মিশিয়ে মাখতে হবে। মাখা হলে লম্বাটে করে পাকিয়ে নিয়ে হবে। লম্বাটে কিন্তু খুব সরু। সরুটা মোবাইল চার্জারের তারের মতো করতে পারলে ভাল হয়। সেই লম্বাটে মাখা টুকরো টুকরো করে কাটতে হবে। টুকরোগুলো তর্জনীর অর্ধেক হওয়াই ভাল। এবার সেগুলো ঘিয়ে ভেজে নিতে হবে। তার আগে দুধ ফুটিয়ে রাখতে হবে। যে পরিমাণে দুধ নেওয়া হবে তা যেন ফুটিয়ে অর্ধেক করে নেওয়া হয়। এর পর ওই ভাজা টুকরোগুলো দুধে ফেলে দিতে হবে। দুধে চিনি বা বাতাসা দেওয়া যেতে পারে। পেস্তা, বাদাম, ছোট এলাচের দানাও দেওয়া যায়। ফোটাতে ফোটাতে দুধ এবং টুকরো বেশ ঘন হয়ে এলে ক্ষীরের যোসি তৈরি।

    বাড়িতে তৈরি দুগ্ধজাত আরেক মিষ্টি নমস। দুধ আর চিনি বা মিছরি দিয়ে তৈরি। তবে প্রস্তুত করা বেশ সময় সাপেক্ষ। যতজনের জন্য নমস তৈরি হবে সেই পরিমাণ দুধ নিতে হবে। তাতে যতটা প্রয়োজন সেই পরিমাণে চিনি বা মিছরি দিতে হবে। এবার সেই মিশ্রণ রাতে শিশিরে রাখতে হবে। পরদিন ঘোল করার মতো ঘাঁটতে হবে সেই দুধ। ঘাঁটলে দুধে ফেনা তৈরি হবে। সেই ফেনা সরিয়ে নিলে যে দুধ পড়ে থাকবে সেটাই নমস। স্বাস্থ্য সচেতনতার এই যুগে রাতে শিশির খাওয়া দুধ! বাতাসে যে পরিমাণে ধূলিকণা ও রাসায়নিক বস্তু আছে তাতে শিশিরে রাখা দুধ ঘুঁটে নমস তৈরি করলে নমো নমো ব্যাপার না হয়ে যায়।

    এইসব মিষ্টি ছাড়াও স্থানীয় ভাবেও কিছু ভাবনাচিন্তা করেছিলেন ময়রারা। যেমন মতিচুর। মিহিদানার মতো দেখতে মিষ্টিটি। বিষ্ণুপুরের মতিচুরের খ্যাতি আছে। আগে পিয়াল গাছের বীজের বেসন থেকে তৈরি হত। এখন সাধারণ বেসন থেকেই হয়। সম্ভবত পিয়াল গাছের বীজ সংগ্রহ করা কষ্টকর বলেই হয়তো এই পরিবর্তন। কটকটে নামে একটি মিষ্টি আছে। তৈরি খুব সহজ। মটর বা ছোলার ডালের বেসনে জল দিয়ে গুলে নিতে হবে। এবার গরম ঘি বা তেলের উপরে ঝাঁঝরি ধরে হাতা করে ওই গোলা বেসন ফেলতে হবে। ঝাঁঝরি অল্প অল্প করে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে। ঝুরিগুলো ভাল করে ভাজা হলে সেগুলো চিনি বা গুড়ের রসে পাক করে, মুড়কি মাখার মতো করে মাখিয়ে নিতে হবে। তার পর গোল্লা গোল্লা করে পাকিয়ে নিলেই কটকটে তৈরি। এইরকম মিষ্টান্ন ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়ার মিষ্টির দোকানে বহুবার দেখেছি। এক দু’বার চেখেও দেখেছি আমরা। কিন্তু এটাই যে কটকটে তা কী করে জানব। স্থানীয় কী একটা নাম আছে যেন। কিন্তু তেমন আহামরি নয় বলে জানতে চাইনি। বিপ্রদাস জানাচ্ছেন, কটকটের অন্য নাম নাকি পক্বান্ন। কিন্তু পক্বান্ন সম্পর্কে অন্য ধারণা ছিল। সুবলচন্দ্র মিত্র লুচি, মিষ্টিকে পক্বান্ন বলছেন। আবার চলন্তিকা বলছে, ঘিয়ে বা তেলে ভাজা, জিলিপি, খাজা, গজা হল পক্বান্ন। বোঝা যাচ্ছে পক্বান্ন একটা গোত্র। সেই পরিবারেই মিষ্টি হয়তো কটকটে। পুরনো মিষ্টি। এখনকার বৈচিত্রের কাছে অনভিজাত হয়ে গিয়েছে। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে মগদলাড়ু নামে একটি মিষ্টি মেলে। সুজি আর চিনি দিয়ে তৈরি। দোকানে মেলে না সম্ভবত। বৈষ্ণবদের উৎসবে তৈরি হয়।



    মিষ্টির দুনিয়ায় ছানা যুক্ত হওয়ার পরে বেশ পরিবর্তন আসে। বৈচিত্রমণ্ডিত হয় বাংলার মিষ্টিমহল। কিন্তু সে তো অনেক পড়ে। পর্তুগিজদের বাংলায় আগমনের পরে। পর্তুগিজরা জলদস্যুতাও করেছে আবার খাবারও শিখিয়েছে। কিন্তু তার আগে মিষ্টির বৈচিত্র? ‘গৌড়মল্লার’ পড়ুন। বজ্র তার বাবা মানবদেবের খোঁজে কর্ণসুবর্ণে ঢুকল বেতসগ্রাম থেকে এসে। শহরে এক মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। থরে থরে মিষ্টান্ন সাজানো। কী আছে মিষ্টির দোকানে? দই, ঘনাবর্ত দুগ্ধ, মোয়া, খাঁড়, পিঠাপুলি। খালি গায়ে মোদক বসে রসবড়া ভাজছিল। পড়ে মনে হয়, এটা কোনও মিষ্টির দোকান হল? মনে রাখতে হবে কর্ণসুবর্ণ রাজধানী। উপন্যাসের এক জায়গায় কুহু বজ্রকে অনেক মিষ্টি খেতে দিয়েছিল বলে লিখেছেন শরদিন্দু। কিন্তু একটা মিষ্টির উল্লেখ করেছেন। সেটা ক্ষীরের পুলি।

    কিন্তু ছানা কাটাতে শেখার পরেও গ্রাম জীবনে মিষ্টির বৈচিত্র কি বেড়েছিল? না বোধহয় রবীন্দ্রনাথের ‘যজ্ঞেশ্বরের যজ্ঞ’ গল্পে বরযাত্রীদের দেওয়া হয়েছিল ছানা। আবার বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ইছামতী’তে এক অন্নপ্রাশনের উল্লেখ করেছেন। ব্রাহ্মণভোজনের সময়ে খাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছিল। কে কত কলাইয়ের ডাল খেতে পারে। কে কত মাছ খেতে পারে। কে কত মিষ্টি খেতে পারে। মিষ্টি বলতে শুধু নারকেল নাড়ু। আর অন্নপ্রাশনের জন্য ভাজা আনন্দনাড়ু। এক একজন সাত-আট গণ্ডা নারকেল নাড়ু খেয়েছিল। বিভূতিভূষণ লিখছেন, ‘অন্য কোনও মিষ্টির রেওয়াজ ছিল না দেশে’।

    হ্যাঁ, বাংলার হারানো মিষ্টিগুলোর অন্যতম আনন্দনাড়ু। আতপ চাল, তিল আর গুড় দিয়ে তৈরি। অল্প নারকেল কুরো মেশানো যেতে পারে। চাল কুটে, তিলের খোসা ছাড়িয়ে গুড় দিয়ে মেখে ঘিয়ে বা তেলে ভেজে নিতে হয়। বিয়ে, মুখেভাত বা পৈতের মতো আনন্দ অনুষ্ঠানে এই নাড়ু তৈরি হত বলেই এর নাম আনন্দনাড়ু। বাঙালির আরেকটি ঘরে তৈরি মিষ্টান্ন ছিল মোহনভোগ। বিভূতিভূষণের অপুকে মোহনভোগ খেতে দিয়েছিল লক্ষ্ণণ মহাজনের ছোটভাইয়ের স্ত্রী। ঘি চপচপে মোহনভোগ। তাতে আবার কিসমিস দেওয়া। অপু বাড়িতেও মোহনভোগ খেত। সর্বজয়ার কাছে বায়না করলে তিনি জলে সুজি গুলে তাতে গুড় মিশিয়ে খেতে দিতেন। গরিবের মোহনভোগ। মোহনভোগ নামটা আর শোনা যায়? এখন তো হালুয়ার যুগ। আরবি ‘হলবা’ থেকে আসা হালুয়া আর মোহনভোগ তো একই। কিন্তু বাঙালি দেশীয় নাম তেমন পছন্দ করে না বোধহয়। ফলে গাজরের হালুয়া এখন অভিজাত। অথচ মোহনভোগের বৈচিত্র কম ছিল না। বাঙালি তালআঁটির, নারকেল ফোঁপরা, পেঁপে ছাড়াও মানকচুর মোহনভোগও তৈরি করতে জানত।
    মাঝে মাঝে একটা আশঙ্কা হয়। গোলামজামুনের ধাক্কায় পান্তুয়া না কোণঠাসা হয়ে যায়!


    ঋণ স্বীকার: ‘মিষ্টান্ন-পাক’— বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায়, ‘বাংলার খাবার’— প্রণব রায় এবং আমাদের ঘোরাঘুরি।
    ছবি : লেখক

    পড়তে থাকুন, শারদ গুরুচণ্ডা৯ র অন্য লেখাগুলি >>
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ১৮ নভেম্বর ২০২০ | ৬০৪৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • b | 14.139.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০২০ ১২:৪৫100481
  • মুকুন্দ মোয়ার রেফারেন্স পেয়েছি বিভূতি মুখোর একটা গল্পে। এক দাদা মেসবাড়ির ভাইয়ের জন্যে নিয়ে আসতেন। বাড়িও তাঁর মার্টিন রেলে চড়ে যেতে হত, তাহলে হুগলী জেলার ঐ অঞ্চলেই হবে। 

  • দীপক দাস | 103.22.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০২০ ১৪:৩৮100483
  • b মহাশয় বা মহাশয়া,


    মুকুন্দ, খইচুরের মতো মিষ্টান্নগুলো বাংলার প্রাচীন কালের অভিজাত বর্গ। ছানা পূর্ববর্তী যুগে এরাই মিষ্টিসুখ বজায় রেখেছিল। সম্ভবত বিভিন্ন এলাকাতেই হত এই মোয়া জাতীয় মিষ্টিগুলো। খোঁজ পাইনি সব এলাকার। তবে হত এই বিশ্বাস দৃঢ় হচ্ছে।


    আপনি ঠিকই বলেছেন। মার্টিন রেলের দু'টি শাখা হুগলির দিকে গিয়েছিল। একটা দাশনগর থেকে শিয়াখালা। আরেকটা বড়গাছিয়া থেকে চাঁপাডাঙা। তবে এই দুটো স্টেশনই খানাকুল থেকে বেশ দূরে। যদিও জেলা একই। 

  • ম়ি ঘাসপুস | 103.22.***.*** | ২৩ নভেম্বর ২০২০ ২২:৫৬100581
  • মিষ্টি নিয়ে বেশ 'গুড়' গম্ভীর আলোচনা। 


    পুরনো মিষ্টিদের খোঁজ দেওয়া এমন লেখাগুলো চলতে থাকুক। 

  • দীপক দাস | 103.3.***.*** | ২৪ নভেম্বর ২০২০ ১২:৩৯100594
  • একটি সংযোজন


    ‘এতদিন জানতাম, খইচুর তৈরি হত শুধু হাওড়া জেলার মাজুতে। কিন্তু বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায়ের বইটি হাতে আসার পরে জানা গেল, হুগলি জেলার ধনেখালিতে একসময়ে খইচুর তৈরি হত। এখন তৈরি হয় কিনা কে জানে। করোনা-কালে পরিবহণ ব্যবস্থার অপ্রতুলতায় যাওয়া হয়নি ধনেখালি’।


    এই লেখা জমা দেওয়ার পরে একদিন গিয়েছিলাম ধনেখালি। আমাদের দল নিয়ে। এবং দুখের কথা ধনেখালিতেও খইচুর তৈরি করা বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক কাল আগে। কারিগরের অভাবেই।

  • kk | 97.9.***.*** | ২৫ নভেম্বর ২০২০ ১০:০৪100628
  • ভালো লাগলো এই লেখাটি। 'কটকটের একটা স্থানীয় নাম হলো 'টানার নাড়ু', আরেকটা বোধহয় 'সিড়ির নাড়ু'। কেউ কেউ স্রেফ 'মিঠাই' ও বলেন।

  • দীপক দাস | 103.3.***.*** | ২৫ নভেম্বর ২০২০ ২২:৪০100657
  • মিস্টার ঘাসপুস,


    এত গুড়ুত্বপূর্ণ ছিল গুড় সেটা জানাই ছিল না। এ যেন মিষ্টিমহলের জলসাঘর। আর গুড় হল ছবি বিশ্বাস। 

  • দীপক দাস | 103.22.***.*** | ২৭ নভেম্বর ২০২০ ১২:০৩100703
  • Kk মহাশয়,


    ভাল লাগল আপনার ভাল লেগেছে জেনে। আপনার সংযোজনে লেখা সমৃদ্ধ হল। একই মিষ্টির একেক রকম নাম বিভিন্ন জায়গায়। এই নামকরণ ভারী আশ্চর্য করে।


    কটকটে খেয়েছি। 

  • Swarnendu Sil | ২৭ নভেম্বর ২০২০ ১৭:৪১100709
  • ছানা কি পর্তুগীজদের হাত ধরে বাংলায় এসেছিল? আমি সম্ভবত কোথাও একটা পড়েছিলাম  ওলন্দাজদের হাত ধরে এসেছিল। আর পরে নেদারল্যান্ডসের কটেজ চীজ দেখে সেইটা বিশ্বাসযোগ্যও মনে হয়েছিল। তবে ভুল জানতুম এ সম্ভাবনা ষোল আনার ওপর আঠেরো আনা রয়েছে। 

  • দীপক দাস | 103.22.***.*** | ২৭ নভেম্বর ২০২০ ২২:৩৯100714
  • স্বর্ণেন্দু শীল মহাশয়,


    পর্তুগিজরা বাংলার অনেকটা ভিতরে ঢুকে এসেছিল। মেদিনীপুরের মিরপুরে তাদের বসতিও আছে। এখনও। ওলন্দাজদের বাংলায় খুব বেশি প্রভাব ছিল কি? সেই দিক থেকেও পর্তুগিজ হওয়াই সম্ভব। আর তথ্য তো সব পর্তুগিজদের কথাই বলছে। 

  • বিধান বিশ্বাস | 202.8.***.*** | ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৯:৩৩100851
  • আপনি যদি সঙ্গ দেন তবে আপনাকে অদ্ভূত  এক জায়গায় নিয়ে যাবো নদিয়ায়....যেখানে ছানার পূর্ব বর্তি মিষ্টিকুল দেখতে ( ) পাবেন....

  • দীপক দাস | 103.22.***.*** | ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৪:৪২100856
  • বিধান বিশ্বাস মহাশয়,


    আপনি যে ‘আঁতের কথা’ টেনে বের করতে পারেন। নিশ্চয় যাব। আমাদের পুরো দল যেতে যায়। নদিয়া জেলা আর হুগলির মোদকদের মিষ্টির হাত বেশ মিষ্টি। ঐতিহাসিক ভাবেই মিষ্টি। যেতেই হবে আপনার ওই মিষ্টিমহলে।

  • মিষ্টিখোর | 2409:4061:212:f0c5:b42a:811d:68d4:***:*** | ১০ ডিসেম্বর ২০২০ ১৩:৪৯101038
  • কেবল মিষ্টি খোরদের কাছে এ অতি উপাদেয় জিভে জল আনা লেখা নয় এক‌ই সঙ্গে বঙ্গসংস্কৃতির শিকড় সন্ধান।এ ধরনের আরও লেখা পড়ার জন্য মুখিয়ে থুড়ি জিভে জল নিয়ে অপেক্ষায়

  • দীপক দাস | 103.22.***.*** | ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১১:৫৬101097
  • মিষ্টিখোর মহাশয়,


    আপনার প্রশংসা আমাদের মিষ্টিমহলের আনাচেকানাচে ঘোরায় আরও উৎসাহ দেবে। মিষ্টির আশ্চর্যজনক ইতিহাস রয়েছে।  সে সবের যে কত পরত। ধন্যবাদ আপনাকে।

  • manimoy sengupta | ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:২৪101106
  •  একটা বিষয় জানতে চাইছি লেখকের কাছে। 


    পাটা শ্যাওলা কিরকম ? শ্যাওলা তো 


    জানিই। পাটা শ্যাওলাটা কি ?  

  • দীপক দাস | 103.3.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:১১101132
  • manimoy sengupta মহাশয় 


    মনে হয়,  সাধারণ শ্যাওলাই। বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায় লিখছেন, নদীতে বা পুকুরে জন্মায়। কিন্তু তিনি লিখেছেন ‘নদী বা পুষ্করিণী প্রভৃতিতে যে এক প্রকার পাটা শেওলা (শৈবাল) জন্মিয়া থাকে’। ‘যে এক প্রকার’ বাক্যাংশে আটকেছিলাম। তিনি হয়তো বিশেষ কোনও শ্যাওলার কথা বলতে চেয়েছেন। তাই ‘পাটা’ শব্দটি রেখে দিয়েছিলাম। বিপ্রদাসের বইটি ১৩১১ বঙ্গাব্দের। সেই সময়ে শব্দের আঞ্চলিক ভেদে তফাৎ থাকতে পারে। এখনও যেমন রয়েছে। তাই ‘পাটা’ শব্দটিও টুকেছি। 


    এত খুঁটিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

  • | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:২১497871
  • শান্তনুর জন্য 
  • Mousumi Banerjee | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২৩:৫৬497884
  • ভালো লাগল বেশ। আরোও কিছু পেলে খেতে ভালোই লাগবে।
    শ্যাওলা আর পাটা শ্যাওলা কি এক? 
  • দীপক দাস | 103.3.***.*** | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১২:১০498059
  • প্রতি,Mousumi Banerjee
     
    ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগল। সর্বনাশা অতিমারি তো পায়ে-জিভে শিকল পড়িয়েছে। না হলে আরও কিছু পরিবেশন করা যেত।
     
    এবার পাটা শ্যাওলার প্রসঙ্গে আসি। এই শ্যাওলা ঠিক কী রকম তা বলতে অপারগ আমি। এর আগে মৃন্ময় সেনগুপ্ত মহাশয় একই প্রশ্ন করেছিলেন। সঠিক ভাবে উত্তর দিতে পারিনি। শ্যাওলার অনেক প্রকার। পাটা শ্যাওলাও সেগুলোরই একটা। কিন্তু কী রকম তার একটা আন্দাজ করা যায় গুড় তৈরির কৌশল থেকে। এই শ্যাওলা দিয়ে গুড় চাপা দেওয়া হত। অর্থাৎ সাধারণ ভাবে শ্যাওলা বলতে যে থকথকে, পিচ্ছিল উদ্ভিদের কথা মনে আসে পাটা শ্যাওলার সেরকম না হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাহলে গুড় গলে জল হয়ে যাবে।
    পাটা শ্যাওলার খোঁজ নানা ভাবে করেছি। আমাদের ‘যথা ইচ্ছা তথা যা’ গ্রুপের ‘মিস্টার ঘাসপুস’ অর্থাৎ বটানির গবেষক দীপশেখরকে জিজ্ঞাসা করেছি। ও আবার শ্যাওলা নিয়ে পড়াশোনা করা ওর বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিল। জিজ্ঞাসা করেছিল ওদের অধ্যাপিকাকে। কিন্তু সঠিক তথ্য মেলেনি। আমি বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায়ের লেখায় পাটা শ্যাওলার কথা পেয়েছি। খোঁজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের খেজুরের গুড় থেকে চিনি তৈরির পদ্ধতি জানলাম। সেই পদ্ধতির সঙ্গে বিপ্রদাসের বর্ণনা মেলে। ‘খেজুরচিনি’ শীর্ষক সেই লেখায় ঋণ স্বীকার করা হয়েছে সতীশচন্দ্র মিত্রের ‘যশোহর-খুলনার ইতিহাস’এর। এই লেখাতেও পাটা শ্যাওলারই উল্লেখ রয়েছে। পাটা শ্যাওলা কপোতাক্ষ নদী থেকে সংগ্রহ করা হত। বিপ্রদাসও জানিয়েছেন,পাটা শ্যাওলা নদী বা পুকুরে জন্মায়।
    গুড় থেকে চিনি তৈরির পদ্ধতি বর্তমানে অবলুপ্ত। বিপ্রদাসের বইটি ১০০ বছর আগের। সেই সময়ে যা পাটা শ্যাওলা বলে পরিচিত ছিল তার নাম কি পরিবর্তিত হয়েছে? গুড় থেকে চিনি তৈরি হত এমন একটি জায়গার সন্ধান পেয়েছি। অতিমারির বেড়া উঠলে একবার সন্ধানে যাব। ততদিনে অপারগতার জন্য মাফ চেয়ে নিচ্ছি। 
  • দীপক দাস | 103.3.***.*** | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১২:২০498060
  • বাংলাদেশের ‘খেজুরচিনি’ শীর্ষক লেখায় পাটা শ্যাওলাকে ‘চিনিয়া’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
  • মি. ঘাসপুস | 103.3.***.*** | ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:৫৫514290
  • পাটা শ্যাওলা খুব সম্ভবত পাতা শ্যাওলার উচ্চারণ ভেদ। নামে শ্যাওলা হলেও পাতা শ্যাওলা আসলে একটি একবীজপত্রী জলজ উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদের ফাইটোরিমিডিয়েশন ক্ষমতা আছে। অর্থাৎ এরা পরিবেশ থেকে খুব সহজেই দূষিত পদার্থ ছেঁকে বের করে নিতে পারে। খুব সম্ভব এদের এই ফাইটোরিমিডিয়েশন ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই গুড়ের দূষিত পদার্থ ছেঁকে নিয়ে চিনি তৈরি করা হত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন