এখন আমি যাই লেখি তা মনে হবে এই যে আবার সাফাই গাইতে আসছে। কিন্তু আজকের দিনে এই কথা গুলো না বললে পরে আর বলার অর্থ থাকবে না। এই কথা গুলো আজকে এখনই বলতে হবে। দীর্ঘদিন পরে আবার এমন এক রাত আসছে বাংলাদেশের বুকে যে অনেকেই এই একটা রাত স্বস্তিতে ঘুমাতে পারবে না। অথচ যদি গন বিস্ফোরণ হয়েই থাকে, গন অভ্যুত্থান হয়েই থাকে, যদি এখন জনগণ মুক্তিই পেয়ে থাকে তাহলে কেন আজকের রাতেই শান্তির ঘুম দিতে পারবে না এই স্বাধীন দেশে? কেন রাত জেগে পাহারার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে? কেন প্রথম রাতেই আর্ত চিৎকার শুনতে হচ্ছে?
শেখ হাসিনার এই দেশ ত্যাগ আমার কাছে পছন্দ হয়নি। অন্যরা যাই বলুক, তিনি যদি মনে করেন যে তিনি জনগণের পক্ষেই ছিলেন তাহলে যদি কারাগারে যেতে হত তবুও দেশে থাকতে হত। এতে আওয়ামীলীগ ভবিষ্যতে লড়াইয়ের মাটি পেত। এখন কঠিন হয়ে গেল। এবং এবার আরেক চরিত্র নিয়ে আবার জোরেশোরে বিকল্প নাই তরিকার দিকে দেশ এগিয়ে গেল। যদিও জানি না, ব্যাপারটা যদি হয় মৃত্যু না হয় দেশ ত্যাগ সে ক্ষেত্রে তিনি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন হয়ত। এতগুলা লাশের দায় তো তাকেই নিতে হবে, সেক্ষত্রে এই সিদ্ধান্তই সঠিক। আগস্টেই আরেকটা রক্তপাত হোক তা নিশ্চয়ই আমাদের চাওয়া হতে পারে না।
কিন্তু আমার চাওয়া পাওয়ায় আসলে কিছুই আসে যায় না। আজকে যেভাবে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরকে ধুলায় মিশিয়ে ফেলা হয়েছে, আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে তাতে এইসব নিয়ে কিছু বলারই অর্থ থাকে না আর। ভাস্কর্য ভাঙ্গা হয়েছে, ফুলার রোডে, ঢাবির ভিসির বাসার সামনে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষকদের কিছু ভাস্কর্য আছে, ওইটাতে ঝাঁপিয়ে পড়ল মূর্খ গুলা! আমি মূর্খ ডাকলে এখন আবার আরেক কেলেঙ্কারি! সময় আসছে এখন নতুন করে শিক্ষিত হওয়ার।
সেনা প্রধান রাষ্ট্রপতির সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যাপারে আলাপ করার জন্য বঙ্গভবনে গেছেন। যাদের নাম শুনলাম তাতে ইতিহাস যে নতুন করে শিখতে হবে তাতে কোন সন্দেহ নাই। যেমন এখানে আছেন সলিমুল্লাহ খান! তিনি এবার হয়ত প্রমাণ করেই ছাড়বেন যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চান নাই, মুসলিম বিদ্বেষী ছিলেন, পূর্ব বাংলার মানুষকে ঠিক পছন্দ করেন না! আসিফ নজরুল, যিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রথম যে গন বিস্ফোরণ সেই সময় জাহানারা ইমামের সাথে ছিলেন। এবং সাফল্যের সাথে বেইমানি করে লন্ডন চলে গেছিলেন স্কলারশিপ নিয়ে! তিনিও আছেন। শোনা যাচ্ছে হেফাজতের মামানুল হকের নাম! যিনি গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে হোটেলে ধরা খেয়েছিলেন! যদিও এইটা অপরাধ না। কিন্তু সারাদিন আল্লা রসুলের নাম নিয়ে এই কাম ঠিক সহি লাগে না এই আর কি! এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ইত্যাদি নিয়ে তো শিক্ষা সফর করতেই হবে! সবার নাম জানি না এখনও। যতখানি বুঝছি প্রচুর পীর মাশায়েখ, অলি আউলিয়ার দেখা পাওয়া যাবে এই সরকারের বিভিন্ন জায়গায়।
এদিকে ছাত্ররা ভাবছে লাগাম এখনও তাদের হাতেই আছে, ভাবছে ঘুড়ি বুঝি তারাই উরাচ্ছে! তাদের হাতে নকল একটা লাটাই ধরিয়ে দিয়ে যে ঘুড়ি গগন ছুঁতে যাচ্ছে তা তার খবর এখনও তারা পায়নি। তারা আজকে খুব আত্মবিশ্বাসের সাথে ঘোষণা দিয়েছে সেনা বাহিনী কোন সরকার বানিয়ে দিলে বা রাষ্ট্রপতির তত্ত্বাবধায়নে কোন সরকার তৈরি হলে তারা মানবে না। আন্দোলন চালু থাকবে! আমি যে আগেই বলছি যে জিনিস সম্পর্কে কোন ধারণা নাই তাই নিয়েই নাড়াচাড়া করছে এরা এইটা হচ্ছে তার আরেকটা বড় প্রমাণ। আলোচনার জন্য সেনা প্রধান যে তাদেরকে ডাকেই নাই, কেন ডাকে নাই এই হুশ টুকুও নাই। কাদের খেলায় খেলোয়াড় হয়ে খেলে গেল তাও জানল না! তাদের প্রস্তাবিত সরকারকে দায়িত্ব দিতে হবে, তাদেরকেও সরকারের ভূমিকায় রাখতে হবে! এগুলা স্বপ্নও দেখছে।
যারা এই তথাকথিত বিপ্লব সংগঠিত করল তারা স্বপ্নবাজ তাতে সন্দেহ নাই। তারা এবং একই সাথে সম্ভবত সেনা প্রধান নিজেও স্বপ্ন দেখেছেন যে এমন একটা কাণ্ড হয়ে যাওয়ার পরে সবাই পরিশুদ্ধ মানুষে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। সবাই নিয়ম নীতি মেনে চলবে। আর তাই সবাই শান্ত থাকুন বললেই যে দেশে আক্ষরিক অর্থেই কোন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নাই সেই দেশে সব ঠিকঠাক চলবে বলে আশা করছেন! ফলাফল? সারা দেশ বাদ, আমি আমার শেরপুরের হিসাব দেই। শেরপুর শহর আক্ষরিক অর্থেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সমস্ত দোকানে আঘাত করা হয়েছে। লুট হয়েছে, আগুন দেওয়া হয়েছে। আমার বোনের বাসা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে। তিনি দেখেন বাটার জুতার মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছে! লুট করার পরে আবার আগুনও দিয়েছে! আওয়ামীলীগ নেতাদের বাড়ি, প্রতিষ্ঠানে আগুন দিছে এইটার একটা যুক্তি আছে। কিন্তু সবার দোকানে? আর এই বাংলার কপাল পোড়া এক সম্প্রদায় তো আছেই! হিন্দুরা এখন কই যাবে জানে না। আমি কয়েকজনকে সাবধান করলাম, বললাম এমন এক সময় যখন আমরা সাহায্যের জন্য যাইতেও পারব না। বিএনপির ছেলেপেলেরা একটা লিস্ট বানিয়েছে, কাকে মারবে, কার কাছ থেকে টাকা নিবে এমন। যে পর্যন্ত নিশ্চিত না হওয়া যাচ্ছে আমাদের কারও নাম নাই ওই লিস্টে সেই পর্যন্ত সাবধানে থাকা ছাড়া কোন উপায়ও নাই। যদিও আমার নাম বিএনপির লিস্টে থাকার কথা না, থাকলে থাকবে জামাতের কোন লিস্টে।
ওরা সাবধানে থাকবে। কিন্তু যে মাত্রার বিপদ, কেউ আক্রন্ত হলে কিচ্ছু করার থাকবে না। বিশ্বাস হবে কি না জানি না, এখানে একটা মানুষও নাই যে এদেরকে থামতে বলবে। পুলিশ নাই, আর্মি নাই, কেউ নাই। যার যা ইচ্ছা তাই করে চলছে কালকে দুপুর থেকে। এরা আজকে রাতে কোথাও গিয়ে হাজির হলে কী হবে? চট্টগ্রামে তো শুনছি অলরেডি হামলা হয়ে গেছে হিন্দুদের উপরে। আমি আশ্চর্য হই নাই। কারণ এইটাই হওয়ার ছিল। জামাতকে বাংলাদেশে যে না চিনছে তার আসলে রাজনীতি, সমাজ, ধর্ম কিছু নিয়েই কথা বলার অধিকার নাই। সেনা প্রধান আমাদের শেরপুরের লোক। নিজ জেলাটাকে যদি একটু দেখত তাহলেও নিশ্চিতে ঘুমান যেত আজকে। শুনলাম পাহারা দিচ্ছে পাড়ার পুলাপান। ওরা কারা? আরে এরাই তো দিনের বেলা লুট করছে! এখন এরা পাহারা দিবে? রাতে কোন কু মতলব মনে জাগবে না তো? কালকে সকালেই জানা যাবে এই সব প্রশ্নের উত্তর। এখন তো বেশ ভালো রাতই হয়েছে, এখন পর্যন্ত কোন খারাপ সংবাদ পাই নাই। শহরে না কি সব ব্যবসায়ীরা এক সাথে নেমে সবার দোকান পাহারা দিচ্ছে।
সারাদিনে যতগুলো জঘন্য কাণ্ড দেখেছি তার মধ্যে গন ভবন লুটেরটা আমি দেখতে পারি নাই। এগুলা নেওয়া যায় না। এই জায়গা গুলোকেই আগলে রাখতে পারে নাই আর্মি, আর কী রক্ষা করবে তাহলে? বেশ ভদ্র চেহারার মানুষ, ডিওর লাগেজ নিয়ে যাচ্ছে! এরা যে সুযোগের অভাবে সাধু তা কিন্তু পরিষ্কার হয়ে গেছে। এরপরে দেখলাম মাশরাফির বাড়িতে আগুন! লোকটা যখন রাজনীতিতে আসে তখন সবাই নানা সমালোচনা করে ছিল। আমি বলেছিলাম ও ভালো মানুষ, ওর দরকার আছে রাজনীতিতে। আসলেই তাই হল। এমনেই ও ওর এলাকায় তুমুল জনপ্রিয়। সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে মিশে যায়। ওর সময়ে ওই এলাকার উন্নয়নের চিত্র সারা দেশ থেকে ভিন্ন। এই লোকটার বাড়িতে আগুন দিয়ে দিল! আর মাশরাফি, রাহুল আনন্দের বাড়িতে আগুন দিয়েছে এই পিশাচেরা। আহ! রাহুল আনন্দ, জলের গানের রাহুল আনন্দ। কী অমায়িক একজন মানুষ। উনার বাড়িতে বেশ কিছু বাদ্যযন্ত্রের সংগ্রহশালা ছিল। উনার নিজেরই বানান, সব শেষ। আগুনে সব শেষ।
এদিকে দেখলাম রাজশাহী কলেজে শিবিরের ব্যানার ঝুলানোও শেষ! আর এই রাজশাহীকে শিবির মুক্ত করতে কত জীবন গেছে, কত রক্ত ঝরেছে, কত সময় লাগছে। আমার এখন হাসি আসছে এইটা ভেবে যে ছাত্ররা এই আন্দোলনের নানা সময় বিএনপিকে নিয়ে, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে নিয়ে মজা করেছে। কত মিম বানিয়েছে। প্রথম রাতেই ঘোষণা এসে গেছে, রাষ্ট্রপতি ভাষণেই বলেছেন সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এইটা দিনের আলোর মতো সত্য যে আওয়ামীলীগ নামলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। আর বিএনপি আসা মানে হচ্ছে জামাত আসা। একই বৃন্তের দুইটি ফুল হচ্ছে জামাত বিএনপি। এইটা এক সময় তারেক রহমান নিজেই বলছে!
যদি ধরেও নেই এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে দলীয় কেউ থাকবে না। যদিও যাদের নাম শুনছি তারা শুধু পদ নাই না হলে একেকজন জামাত বিএনপির মুখপাত্র! তো এই সরকার তো দেশ চালাবে না। এই সরকার একটা নির্বাচন দিবে। তো নির্বাচনের প্রত্যাশিত ফলাফল কী হবে? প্রধানমন্ত্রী কে হবে? হা হা হা! জেন জি দাবা খেলতে নামছে গ্র্যান্ড মাস্টারের সাথে, অথচ এক দানের পরের দানই ধরতে পারে না। এইটা থেকে রক্ষা পেতে পারে তারা। একটা দল গঠন করুক। নির্বাচনে যাক। আমি ভোট দেই জেন জিকে!
আমরা এই জীবনে নতুন সূর্যের গল্প কয়েকবার শুনে ফেলছি। ঠিক মনে নাই, কিন্তু বড়দের মুখে শুনছি এরশাদ পতনের পরে খুব করে বলা হয়েছে এই কথা। নতুন সূর্য! এবার বাংলাদেশ সব নতুন করে শুরু করবে। এক ধাপ যেতেই মুখ থুবড়ে পড়ল সব। যিনি উঠেছেন তিনি নামবেন না বলে জিদ করে বসে আছেন! যাক, আবার শুরু হল। এবং ইতিহাসে প্রথমবার কেউ সহজেই ক্ষমতা ছেড়ে দিল, আবার আসল বিএনপি। বিএনপি এসে চালাল দেশ মনের মতো করে। এবং আবার এমন এক পরিকল্পনা করল যে তাদের আর নামতে হবে না! ফলাফল সেনা সমর্থিত সরকার আসল। দুই বছর থাকল। আমরা আবার বললাম এবার নতুন সূর্য উঠেছে, সব নতুন করে শুরু হবে। সব ভুল শুধরে নতুন বাংলাদেশ। এরপরে? ১৬ বছর পরে আবার আমাদেরকে নতুন সূর্যের কথা বলতে হচ্ছে। আমরা আশা করছি এবার সব ঠিক হবে। জামাত দুর্গা পূজায় মণ্ডপ পাহারা দিবে, খালেদা জিয়া ১৫ আগস্টে কেক কাটবে না, বিএনপির ছেলেরা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিবে, তারেক রহমান ১০% করে খাবে না না। হাওয়া ভবন আতংকের নাম হবে না। এমন নানা অবিশ্বাস্য অলিক আশা নিয়ে বসে আছি, এবার সব ঠিক হবে। আমরা যেই লাউ সেই কদুও বলতে পারব না, দেখব হালার এইটা তো মাক্কাল ফল, এমনও হবে না নিশ্চয়ই!
আওয়ামীলীগ যখন হারে তখন পুরো দেশ হারে, আর যখন জিতে তখন শেখ হাসিনা সহ কিছু নেতা জিতে! এইটা আহমেদ ছফা ১৯৯৫ সালে বলে গেছিলেন! হতাশ লাগে এই কথাটা বড় বেশি রকমের সত্য। এই কথাটার অর্থ আওয়ামীলীগ তথা শেখ হাসিনা ধরতে পারছে বলে মনে হয় না। দুর্দান্ত সম্ভবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা আবার ধাক্কা খেলাম। উঠেই গেছিলাম, এই জীবনে আবার বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড়াতে দেখব এমন আশাও নাই আমার। ধুঁকতে হবে শুধু। স্বাধীনতার এত বছর পরে আমরা থাকার কথা এগুলার অনেক ঊর্ধ্বে। আমাদের এখনও কানাগলিতে ঘুরপাক খাচ্ছি!
যদি আমাকে ভুল প্রমাণ করে দারুণ কিছু হয় তাহলে তো ভালোই। নাগরিক হিসেবে ভালোর ভাগ তো আমার কপালেও জুটবে। আমি ভাবছি এর আগ পর্যন্ত ডার্ক কমেডির ভক্ত হয়ে যাব। আমি শিবিরের তাণ্ডব দেখব, পোস্ট করে হা হা লিখব। তোমাদের জন্য এরচেয়ে ভালো কিছু নাই! হিন্দি একটা গান ছোটবেলায় খুব বাজত আমাদের এখানে, দিল মেরা বলে হ্যালো হাউ আর ইউ? জামাতের কাণ্ড দেখব আর ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজবে এই গানটা, দিল মেরা বলে হ্যালো হাওয়ার ইউ, ও হাউ আর ইউ! কিন্তু পারব কী? আমি ছাতার দেশটাকে বড় বেশিই ভালোবাসি! ভালো হোক, ভালো হোক ভালো। নম নম বাংলাদেশ মম, জননী জন্মভূমি! কই যাব? এখানেই মাটি আঁকড়ে পরে থাকতে হবে।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।