এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  সমাজ

  • ডলু চা-বাগান ও সবুজধ্বংসী বিমানবন্দরের বিশ্বাসঘাতকতা (পর্ব - ১)

    পার্থপ্রতিম মৈত্র
    আলোচনা | সমাজ | ২৪ মে ২০২২ | ২৩০৬ বার পঠিত | রেটিং ৪ (২ জন)
  • পর্ব ১ | পর্ব ২
    হাওয়াই আড্ডা



    ২০১৮ সালে, কেন্দ্র পিপিপি মডেলের অধীনে অপারেশন, ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়নের জন্য, গুয়াহাটি, আহমেদাবাদ, জয়পুর, লখনউ, তিরুবনন্তপুরম এবং ম্যাঙ্গালুরু, এই ছয়টি এএআই বিমানবন্দর লিজ দিয়েছে। যথারীতি আদানি গ্রুপ ছয়টি বিমানবন্দরের জন্য সফল বিডার হিসেবে টেন্ডার জিতে নেয়। ২০২০ সালের ১৯শে আগস্ট, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ৫০ বছরের জন্য আদানি এন্টারপ্রাইজেসকে পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়নের জন্য তিনটি এএআই বিমানবন্দর গুয়াহাটি, জয়পুর এবং তিরুবনন্তপুরম-কে লিজ দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। সবটাই ঘটেছে করোনা পরিবেশে, লোকচক্ষুর প্রায় আড়ালে। সমস্যা হল, গুয়াহাটি লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলোই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নাম পরিবর্তন করে আদানি গুয়াহাটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লিমিটেড করে দেওয়ায়। অসমীয়া জাত্যাভিমানে আঘাত লাগে এবং তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হয় আদানি গ্রুপ। যেমন ২রা আগস্ট, শিবসেনা কর্মীদের একটি দল মুম্বাইয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ছত্রপতি শিবাজির মূর্তির কাছে একটি “আদানি বিমানবন্দর” নিয়ন সাইনবোর্ড ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ। যদি তারা (আদানি গ্রুপ) গুয়াহাটিতে একই কাজ করার চেষ্টা করে, তাহলে এখানেও তারা অনুরূপ পদক্ষেপের মুখোমুখি হবে, বলে হুমকি দেয় বিভিন্ন দল। এরপরই বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রী আসরে নামেন এবং ঘোষণা করেন যতদিন তিনি মুখ্যমন্ত্রী এবং নরেন্দ্র মোদি প্রধান মন্ত্রী থাকবেন, ততদিন গুয়াহাটি বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন হবে না। এই বিতর্ক শুরু না হলে সাধারণ জনতার জানার কোনও সুযোগই ছিল না, যে ৯ আগস্ট থেকে আদানি গ্রুপের একটি দল ধীর ধীরে গুয়াহাটি বিমানবন্দরকে গ্রাস করে নিয়েছে। চুক্তির শর্তগুলি এখনও অজানা। শুধু জানা গেছে, এভিয়েশন-সংক্রান্ত ব্যবসা ও সুযোগ-সুবিধা বিকাশের জন্য বিমানবন্দরের কাছাকাছি জমিও ৫০ বছরের জন্য বেসরকারি কোম্পানিটিকে লিজ দেওয়া হয়েছে।




    এতদিনে সবাই এও জেনে গেছেন, যে, আসামের বরাক উপত্যকার কাছাড় জেলায় “ডলু চা বাগান” রাজ্য সরকার আংশিকভাবে অধিগ্রহণ করেছে। ১২ই মে ২০২২-এর কাকভোরে ২৫০০ বিঘা জমি, প্রায় ত্রিশ লক্ষ চা গাছের ঝোপ এবং কয়েক সহস্র ছায়া গাছ উপড়ে ফেলে জমি পরিষ্কার করা হয়েছে। অবশ্য বিজেপি সাংসদ বলেছেন, ডলুতে কোনও উচ্ছেদ হয়নি, যা হয়েছে জমি অধিগ্রহণ। এদিকে দুই হাজার চা শ্রমিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে গেছে। স্থানীয়, রাজ্য এবং জাতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলি এই বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে। কিন্তু তারপর থেকে সেখানে নেমে এসেছে এক শ্মশানের স্তব্ধতা। কোনও সংবাদ বাইরে বেরোচ্ছে না। কাউকে ভিতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। কংগ্রেসের দেবব্রত শইকিয়া, বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থদের অকুস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে, উধারবন্ধেই আটকে দেওয়া হয়েছে – সেখানে ১৪৪ ধারা জারি আছে – এই অজুহাতে। যে শ্রমিক ইউনিয়ন (অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন) শ্রমিকদের বিরোধিতা জিইয়ে রেখেছেন, তাদের মাওবাদী, উন্নয়নবিরোধী বলে দেগে দেবার চেষ্টা হয়েছে। এই তথাকথিত উন্নয়নবিরোধীর তকমা যাদের গায়ে সেঁটে দেবার চেষ্টা হয়েছিল, তাদেরই কয়েকজন – অরূপ বৈশ্য, বিশ্বজিৎ দাস, মৃণালকান্তি সোম-রা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে – কেন ডলু? কেন পাশের বিশাল খালি জমি খরিল নয়? কী রহস্য, যার জন্য পতিত জমির বদলে একটি উর্বর, লাভজনক, ও চালু চাবাগান উচ্ছেদ করে বলির পাঁঠা বানানো হল ডলুর শ্রমিকদের? সরকার কোম্পানির কাছে জমি চেয়েছে বলেই সেটা দিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের চেয়েও বাগান মালিক ও কতিপয় ট্রেড ইউনিয়ন নেতা ও সাংসদ বিধায়কেরা কেন বেশি উদগ্রীব হয়ে উঠলেন? তাছাড়া শ্রমিকরা যখন শান্তিপূর্ণভাবে দৈনন্দিন কাজ করছিল, তখন ডলু চা-বাগানের ডিজিএম হঠাৎ আইনশৃঙ্খলার অবনতির ধুয়ো তুলে বাগান ছেড়ে পালালেন কেন? প্রথমে একজন ট্রেড ইউনিয়ন নেতা শ্রমিকদের হুমকি দিলেন – চুক্তি না মানলে চা-বাগান লকআউট করে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে ডিজিএম আইনশৃঙ্খলা অবনতির কারণে চা-বাগান লকআউট করার হুমকি দিলেন। শ্রমিক ও মালিকের প্রতিনিধিদের এই ভাবনাগত ঐক্য কেন ও কীভাবে? ইউনিয়নের নেতা মৃণালকান্তি সোমকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ হল প্রতিআক্রমণ – হিমন্তবিশ্ব-স্টাইল। গণতান্ত্রিক নৈতিকতার ধার ধেরো না, বুলডোজার চালাও, প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দাও।




    কিন্তু যে প্রশ্নটি এখনো পর্যন্ত অমীমাংসিত, সেটি হল – কেন ডলু চা বাগান? “গ্রিনফিল্ড এয়ারপোর্ট” তৈরি করার জন্য এই চা বাগানটিকেই কেন বেছে নেওয়া হল? যেখানে মাত্র ২৪ কিলোমিটারের মধ্যে আরো একটি এয়ারপোর্ট রয়েছে – যা শিলচর এয়ারপোর্ট নামে পরিচিত? সেখানে সপ্তাহে ৩২টির বেশি বিমান ওঠানামা করে না, অর্থাৎ দিনে গড়ে দু’টি করে বিমান ওঠে এবং নামে। কোনো কোনো দিন অবশ্য তিনটিও হয়ে যায়। এই যেখানে ট্রাফিকের অবস্থা, সেখানে আরো একটি এয়ারপোর্টের প্রয়োজন এত জরুরি হয়ে উঠল কেন? বিশেষত, এখন জানা যাচ্ছে, সিভিল অ্যাভিয়েশন দপ্তরের সুপারিশে যে ২১টি গ্রিনফিল্ড এয়ারপোর্ট রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেয়েছে, তার মধ্যে শিলচরের নাম নেই। শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায় অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন, যে হয়ে যাবে, অনুমোদন হয়ে যাবে। আসামের সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনায় এর উত্তর কিছুটা হলেও নিহিত আছে। ১৯৯৬-৯৭-এর বাজেটে প্রস্তাবিত ২১০ কিলোমিটার শিলচর-লামডিং ব্রডগেজ লাইন পরিবর্তনের কাজ ঢিমেতালে এগোচ্ছিল। কিন্তু মোদি শাসনে কৃতিত্ব জাহির করার জন্য অতি দ্রুত লাইন কনভার্শনের কাজটি সেরে ফেলা হয়। ইকোলজি, সয়েল টেস্ট, এবং অন্যান্য বহু আনুষঙ্গিক প্রসঙ্গ – একটি ধ্বসপ্রবণ পাহাড়ি অঞ্চলের উপর দিয়ে পাততে হলে, তার জন্য প্রয়োজনীয় যে সময়, গবেষণা এবং টেকনোলজি দরকার – সেসব কিছুতে গুরুত্ব না দিয়েই, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রয়োজনে সম্পূর্ণ হয়ে গেল ব্রডগেজ লাইন কনভার্শন। ২০১৫ সালে মোদির রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু সগৌরবে তার উদ্বোধন করলেন আর ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন মোদি হৈহৈ করে জিতে গেলেন। আজ তার কুফল টের পাওয়া যাচ্ছে। ব্রিটিশ আমলে তৈরি মিটারগেজ লাইনের ক্ষেত্রে যে বিপর্যয় ঘটেনি, আজ তা ঘটল এবং অনির্দিষ্ট কালের জন্য রেলপথ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে বরাক উপত্যকা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল বাকি ভারতবর্ষ থেকে। সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে বটে – শিলং-শিলচর সড়ক পথ। কিন্তু সেখানেও, সোনাপুর অঞ্চলে যে এলিভেটেড রাস্তা তৈরি করা দরকার, তা করা হয়নি এবং দীর্ঘকাল যাবত ধ্বস নেমে পথ বন্ধ। ফলে সড়কপথ এবং রেলপথ দু’দিক দিয়েই বরাক উপত্যকা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। দুর্গম এলাকাগুলিতে হেলিকপ্টারে করে খাদ্য, বস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে আকাশপথ ছাড়া বরাক উপত্যকার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য কোনো রাস্তা খোলা নেই।





    এবার শিলচর শহরের ভৌগোলিক অবস্থান নিয়ে দু’একটি কথা বিবেচনার গণ্ডিতে আনা যাক। প্রথমত শিলচর আসামের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এর ভৌগোলিক অবস্থানজনিত কারণে শিলচর থেকে সহজেই মনিপুর, মিজোরাম, মেঘালয় – এদিকে ত্রিপুরা, এমনকি বাংলাদেশ পর্যন্ত রেল ও সড়ক যোগাযোগের কাজ সম্পূর্ণ। উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে এবং ভারতের বাইরের অনেক দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে স্ট্র্যাটেজিকালি বরাক-উপত্যকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান। এমনকি বাণিজ্যিক দিক থেকেও যে ‘লুক ইস্ট’ পলিসি দীর্ঘদিন ধরে আওড়ানো হচ্ছে, তার স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্ট বরাক-উপত্যকা। সে কারণেই ইস্ট-ওয়েস্ট (করিডোর) জাতীয় মহাসড়কের জিরো পয়েন্ট শিলচরে। বিভিন্ন রাজ্য পরিক্রমার ভিতর দিয়ে যাবার পর, সেটি পৌঁছেছে পোরবন্দরে, মোদির নিজের রাজ্যে। এটি প্রমাণিত, যে, জলপথ পরিবহন নির্ভরতা বাংলাদেশকে এড়িয়ে সম্ভব নয়, অথচ রাজনৈতিক কারণে মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশের বিরোধিতা মোদি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যেতেও পারেন না। জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণ সমাপ্তির মুখে। কিন্তু সেই একই অবৈজ্ঞানিক এবং ধ্বসপ্রবণ এলাকা দিয়ে যাবার ফলে সে সড়ক যোগাযোগও পাহাড়ি এলাকায় আংশিক বন্ধ হতে পারে বিশেষত বর্ষাকালে। আর এ অঞ্চল বৃষ্টির জন্য, বন্যার জন্য কুখ্যাত। বৃষ্টি পড়ে এখানে বারো মাস। এমনিতেও দীর্ঘ সড়কপথে পাড়ি দেওয়া, দ্রুত যোগাযোগের ক্ষেত্রে অসুবিধাজনক। সব দিক খতিয়ে দেখলে স্ট্র্যাটেজিকালি জাতীয় মহা সড়কের ধারে বরাক উপত্যকার সর্ববৃহত্তম শহরের সবচেয়ে কাছে যদি একটি বিমানবন্দর পত্তন করা যায়, তাহলে আকাশপথে শিলচর পর্যন্ত এসে তারপর অন্যান্য রাজ্য এবং ভারতের বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সহজসাধ্য। সামরিক নিয়ন্ত্রণ এবং অসামরিক বাণিজ্য দুইই কায়েম করা সহজসাধ্য। বিশেষত বর্তমান শিলচর এয়ারপোর্ট প্রতিরক্ষা দপ্তরের নিয়ন্ত্রণে এবং সিভিল অ্যাভিয়েশন প্রতিরক্ষা দপ্তরের সঙ্গে গা ঘষাঘষিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করে না। অতএব ডলু বাগানের মালিক কর্তৃপক্ষ, তিনটি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলের শ্রমিক সংগঠন আর সরকারি প্রশাসনের মধ্যে একটি গোপন চুক্তি হয়। ডলু চা-বাগানের শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী ইউনিয়ন “অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন”-কে এই চুক্তির বাইরে রাখা হয়। শুধু তাই নয়, তাদের গায়ে মাওবাদী তকমা সেঁটে দেওয়া হয়।


    আগামী পর্বে সমাপ্য

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    পর্ব ১ | পর্ব ২
  • আলোচনা | ২৪ মে ২০২২ | ২৩০৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কাজরী রায়চৌধুরী | 2402:3a80:198a:200a:678:5634:1232:***:*** | ২৬ মে ২০২২ ১৯:৩৮508085
  • পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। বিস্তারিত আলোচনা।
  • santosh banerjee | ২৬ মে ২০২২ ২০:৪১508086
  • শেষের ছবিটা এক। সাধারণ মানুষ খেটে খাওয়া মানুষ দরিদ্র মানুষের জমি, রুজি, কাজ, সেই সঙ্গে পরিবেশ কে উৎপাটিত করা। এই নাটক ঝাড়খন্ডে হচ্ছে, ছত্তিশগড়ে হচ্ছে, উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ে হচ্ছে, মধ্ প্রদেশ হচ্ছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সব সরকারের আমলেই এটা হয়ে চলেছে। বেশি হচ্ছে এই ফ্যাসিসট , বর্বর, নির্লজ্জ , মিথ্যাচারী সরকারের আমলে!! অপেক্ষা করছি পরবর্তী পর্বে র জন্য। ধন্যবাদ।
  • Sima Ghosh | ৩০ মে ২০২২ ১২:৩৫508231
  • একেবারেই ঠিক কথা। মুখে বলা হচ্ছে লুক ইস্ট , কিন্তু, কাজে তার প্রতিফলন নেই। এই সরকারের সব কাজেই স্টান্টবাজি , তাই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া না মেনে দ্রুত ব্রডগেজ করে বাহাদুরি দেখানো, আর ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসানে মানুষের আনন্দের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস দেখে এই দলটি মুচকি মুচকি হেসেছিল । বুঝতে তার বাকি থাকল না, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূর্ণ , এক তার সঙ্গে নাগরিকত্ব ইস্যুতে মানুষের মধ্যে ধর্মীয় উন্মাদনার র দীর্ঘমেয়াদি না হোক একটি মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা।এর সঙ্গে মানুষের মনে মাওবাদী জু জু দেখিয়ে কর্পোরেটের সঙ্গে গোপন চুক্তিটি সেরে ফেলা ।এ সবই চলবে বরাকে , উত্তর পূ্র্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর হলেও রাজনৈতিক স্বার্থের চেয়ে "বড় কিছু নহে নহে কিছু মহীয়ান!" - এই পলিসির দক্ষ প্রণেতা এই দল । 
     
    অথচ বন্যায় ডুবছে এ শহর ভয়ঙ্কর ভাবে। দুর্বল নদীবাধের দিকে কোনো নজর নেই।রাঙির খাড়ি সিঙ্গের খাল সংস্কার থেমে গেছে । এই প্রোজেক্টের ২০০ কোটি টাকা কোথায় হাওয়া খেতে গেছে কেউ জানে না । বিরোধীদের নেতারা খালি জল মাপছে । গোপনে নির্লজ্জ বোঝাপড়া এদের ।অজিত সিং এর বিজেপি যোগদানের খবর মোটৈই হাওয়াবাজি নয় । এরা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করবে এতে আর আশ্চর্য কি ? আগামীতে কোনো দল সম্ভাবনা দেখাতে পারছে না। তাই অনেক নেতা নিজেদের আয়ুষ্কালের দিকে তাকিয়ে বিজেপির মালা গলায় দিচ্ছে,হাতে নিচ্ছে বিজেপির পতাকা । আদর্শহীন বলে এদের আজ ব্যাখ্যা করা যায় না ।
     
  • অরিন্দম দেব | 2401:4900:3dee:1a6:a47a:bf5e:7c91:***:*** | ০৪ জুন ২০২২ ২১:৩৩508489
  • সেনা পুলিশ সহযোগে ডলু বাগানে শুধুই চাগাছ উপড়ানোর কাজ হয়েছে , ছায়া গাছগুলি এখনো কাটা হয়নি । 

    দেবব্রত শৈকিয়াদের যেখানে আটকে দেওয়া হয় সে যায়গাটার নাম ‘ঝাপিরবন্দ’ । ডলু বাগান যে বিধান সভা সমষ্টির অন্তর্গত সেটি হলো কাছাড় জেলার বড়খলা বিধান সভা সমষ্ঠি আর সেখানের বর্তমান বিধায়ক হলেন কংগ্রেস দলের প্রতিনিধি মিসবাউল ইসলাম লস্কর । বিধায়ককেও তাঁর নিজের সমস্টিতে ঢুকতে দেয়নি পুলিস ও আধাসামরিক বাহিনী । 
     
    “শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী ‘ অসম মজুরী শ্রমিক ইউনিয়ন ‘ কে এই চুক্তির বাইরে রাখা হয় “ এই তথ্যটি ঠিক নয় । আসলে কেউ অমসুকে বাইরে রাখেনি । ডলুতে শ্রমিকদের সাথে আমসুর যোগাযোগ ছিল  দীর্ঘদিনের , কিন্তু কোনো বাগান পঞ্চায়েত ছিলনা । আমসু যখন লক্ষ্য করলো যে ডলুর তিনটি রেজিসটার্ড ইউনিয়ন সিটু , বি এম  এস ও ইন্টাক মালিক পক্ষের সাথে চুক্তি সাক্ষর করেছে যে সম্পর্কে শ্রমিকরা অবগতই  নয় , তখন আমসু ডলুতে পঞায়েত গঠন করে ও চুক্তিকে প্রকাশ্যে আনার (যে চুক্তির মধ্যে লিখিত শর্তছিলো যে চুক্তিকে গোপন রাখাহবে )ও ডলু , ময়নাগড় , লালবাগ ও মুরলীধরের সকল শ্রমিকদের নিয়ে গণ শুনানি করতে হবে । সে দাবি মেনে ২৫ এপ্রিল আমসুর হাতে চুক্তির প্রতিলিপি দেয় জেলা প্রশাসন ও আমসুকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে বলাহয় । আমসু পরেরদিন লিখিত ভাবে জানিয়েদেয় যে এই চুক্তি আইন বিরোধী ও এতে শ্রমিকদের স্বার্থে কিছুই লেখানেই । আমসুর চাপে ২৬ তারিখ বিকেলে জেলাপ্রশাসনের ফেসবুকে চুক্তিটি প্রকাশ করা হয় ও ২৯এপ্রিল ও ২রা মে যথাক্রমে ময়নাগড় ও লালবাগ ডিভিসনে দুইটি পৃথক গণশুনানির আয়োজন করে প্রশাসন । দ্বিতীয়টিতে শ্রমিকদেরকে বলাহয় যে তাঁদের দাবি তাঁরা যেনো ৪৮ ঘন্টার মধ্যে লিখিত ভাবে জেলা প্রশাসনকে জানাতে হবে । ২৩২৮জন শ্রমিকের স্বাক্ষর সম্বলিত ৫দফা দাবির চিঠি প্রশাসনের কাছে পৌঁছেদেয় শ্রমিকরা নির্ধারিত সময়ের আগেই । যার জবাব আজও প্রশাসন দেয়নি ।
  • অরিন্দম দেব । | 2401:4900:3dcf:5247:ada1:c175:63ab:***:*** | ০৪ জুন ২০২২ ২৩:২২508490
  • আমার উপরে করা মতামতে কিছু সংযোজন ও শুদ্ধিকরনের প্রয়োজন আছে । 
    এখানে এডিট অপশন নেই । না থাকাটা দুর্ভাগ্যজনক ।
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন