আজও বরাক উপত্যকার দুর্গে সরকারী ভাষা অসমীয়া নয়, বাংলা। বরাক উপত্যকার ওপর অতএব নামিয়ে আনা হচ্ছে বহুমুখী আক্রমণ। তার মধ্যে প্রথম এবং প্রধান হচ্ছে বরাক উপত্যকায় বাঙলা ভাষার প্রধান্যকে সর্বতোভাবে অস্বীকার করা। বরাক উপত্যকার বাঙলা ভাষাকে অসমীয়া উপভাষা, নিদেনপক্ষে স্বতন্ত্র ভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠা দেওয়া, অন্যান্য ভাষা গোষ্ঠিগুলিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে আইন শৃংখলা বিঘ্নকে প্রোৎসাহিত করা, হিন্দু-মুসলিম, গ্রাম-শহর, শিক্ষিত অশিক্ষিত, আদিবাসিন্দা-অভিবাসী ইত্যাদির মাধ্যমে বিভাজন আনা, আসামে শাসক দলের বর্তমান লক্ষ্য। বরাক উপত্যকার বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর প্রধান ও একমাত্র অপরাধ তারা মূলত বাংলাভাষাভাষী। তাদের রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে বিধ্বস্ত করাই উদ্দেশ্য, যাতে তারা আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। ভাষা শহিদ স্টেশন নামাকরণের সঙ্গে বরাকে বাংলাভাষার অধিকার রক্ষার প্রশ্ন জড়িত বলেই এই বিরোধিতা।
স্টেশনের নাম পরিবর্তনের কথায় ফিরে আসি। আসাম সরকারের স্বরাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দপ্তরের পক্ষে অতিরিক্ত সেক্রেটারি স্বরাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দলের পক্ষে শ্রী টি.কে.রায় ১০.০২.২০১৬ তারিখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের ডিরেক্টার (সি.এস-২) কে একটি চিঠি (নং পি.এল.এ/৪৬৩/২০০৮/৪৩২) লিখে জানান যে
“১. ১৯৬১ সালে ১১ জন বাংলা ভাষাভাষী মানুষ বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তাদের জীবন বলিদান দিয়েছিল। ২০০৫ সালে এই বিষয়ে ভাষা শহিদ স্মরণ কমিটি নামে একটি কমিটি তৈরি হয়েছিল। কাছাড়ের প্রথম সারির নাগরিকদের নিয়ে গঠিত এই কমিটি শিলচর রেলওয়ে স্টেশনের নাম ভাষাশহিদ স্টেশন শিলচর করার দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবি সেই ১১জন মানুষের স্মৃতিতে, যারা ১৯.০৫.১৯৬১ তারিখে এই ভাষার ইস্যুতপ্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন এবং পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন। উপরোল্লিখিত এই ঘটনাক্রম এবং বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর সেন্টিমেন্ট বিবেচনা করে শিলচর রেলওয়ে স্টেশনের নাম নতুনভাবে ভাষা শহিদ স্টেশন শিলচর করা যেতে পারে, যেখানে স্থানিক নাম শিলচর শব্দটিও ডিস্টাডর্ব হচ্ছে না।
৩. হ্যাঁ এই প্রস্তাবিত পরিবর্তন স্থানীয় মানুষের কাছে এবং সমস্ত ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর কাছে গ্রহণযোগ্য এবং কোনো ধরনের উত্তেজনা অথবা খারাপ-অনুভূতি স্থানীয় মানুষের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
৪. বর্তমান নাম শিলচর রেলওয়ে স্টেশন এর আর কোনও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নেই, একমাত্র সত্যাগ্রহী বাংলা ভাষা আন্দোলনের কর্মীদের উপর পুলিশের গুলি চালনা ছাড়া যা ১১ (এগারো) জন মানুষের প্রাণ নিয়েছিল ১৯৬১ সালে। শিলচর হচ্ছে আসামের বরাক ভ্যালি ডিভিশন এর কাছাড় জেলার হেডকোয়ার্টার।
এই প্রেক্ষাপটে আমি আপনাকে আরো জানাতে চাই যে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আসাম, এর আগেই মাননীয় রেলমন্ত্রী সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছেন। ২৯/১/২০১৬ তারিখে লেখা চিঠিটি (ডি.ও নং সি.এম.ও ১/ ২০১৫/ ৩২৭), এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হলো।”
লক্ষ্য করে দেখুন আসাম সরকারের স্বরাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দপ্তরের পক্ষে পক্ষে অতিরিক্ত সেক্রেটারি অবলীলায় শিলচর স্টেশনের ঘটনাক্রম যে বাংলাভাষার জন্য আন্দোলন এবং ১১টি প্রাণ যে পুলিশের গুলিতেই মৃত্যুবরণ করলো এ কথা বলতে পারছেন। ধরে নিতে হবে যে সরকারীভাবে এটাই সত্য বয়ান।
সেদিন বিধানসভায় চন্দ্রমোহন পাটোয়ারী যত জোর দিয়েই বলুন না কেন বরাকের গ্রাউন্ড রিয়েলিটি এবং সরকারী নথিপত্র কোনওভাবেই বিষয়টিকে সমর্থন করছে না। ২০১৬ সালে নো-অবজেকশান সার্টিফিকেট দেবার পর বারবার বরাকের পুলিশ সুপার এবং ডিস্ট্রিক্ট কমিশনারদের মাধ্যমে পর্যালোচনা করা হয়েছে, আইন শৃংখলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হবার সম্ভাবনাগুলি খতিয়ে দেখা হয়েছে। প্রত্যেকে জানিয়েছেন শিলচর স্টেশনের নাম পরিবর্তন নিয়ে কোনও ধরণের কোনও অশান্তির সম্ভাবনা নেই।
কাছাড় জেলার এসপি শিলচর স্টেশনের নতুন নাম রাখলে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হবে কিনা সেবিষয়ে রিপোর্ট পেশ করতে গিয়ে ২৭.০৩.২০১৭ তারিখে ডেপুটি কমিশনার কে চিঠি (মেমো নং- ডিএসবি/এসএলসি/ ৪/১০৪/২০১৭/১২১৮) লেখেন যে শিলচর থানার অফিসার-ইন-চার্জ এর মাধ্যমে তদন্ত করা হয়েছে। তদন্তে নিম্নলিখিত তথ্য উঠে আসে।
“১. শিলচর রেলওয়ে স্টেশনের নাম ভাষাশহিদ স্টেশন করার বিষয়টি এই জেলার সাধারণ মানুষের একটি দীর্ঘকালীন সময় ধরে ফেলে রাখা দাবি। বিভিন্ন সংগঠন, বিভিন্ন উপলক্ষ্যে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই দাবির সপক্ষে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, সেই ১১ জন মানুষের স্মৃতিতে যাঁরা ১৯৬১ সালে বাংলা ভাষার জন্য পুলিশের গুলিবর্ষণে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এই বিক্ষোভে জেলার সমস্ত ধরনের মানুষের নৈতিক সমর্থন ছিল।
২. অনুসন্ধানে আরো প্রকাশ যে কোনও দিক থেকে, কোনও ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এবং কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হবার সম্ভাবনাও কম। যদি শিলচর রেলওয়ে স্টেশনের নাম “ভাষাশহিদ স্টেশন, শিলচর” করা হয় এবং বিষয়টি সত্যিই বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বরং এই সিদ্ধান্তকে সমস্ত শ্রেণির জনগণের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হবে। এটি আপনার সহৃদয় পঠনের জন্য পেশ করা হলো।”
এখানেও লক্ষ্য করুন যে পুলিশ সুপার ২০১৭ সালেও ১৯৬১ সালে বাংলা ভাষার জন্য পুলিশের গুলিবর্ষণে মৃত্যু, কথাটি লিখতে পারছেন এবং আজকের চন্দ্রমোহন পাটোয়ারী মিথ্যার জাল বুনে যে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হবার ভয় দেখাচ্ছেন পুলিশ সুপারের তদন্ত রিপোর্টে তাকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন।
কাছাড়ের ডেপুটি কমিশনার জিএম হাজারিকা আসামের আসাম সরকারের স্বরাষ্ট্রও রাজনৈতিক দপ্তরের ডেপুটি সেক্রেটারি কে জানান যে (মেমো নং- সিএমজে.৬/২০০০/পিটি-২/১৩০) যে প্রায় সব ভাষাগোষ্ঠির লোকই এই দাবীকে সমর্থন জানায়।
“৩. হ্যাঁ, এই প্রস্তাবিত পরিবর্তন স্থানীয় মানুষ এবং সমস্ত ভাষিক গোষ্ঠীর কাছে গ্রহণযোগ্য এবং কোনও ধরনের কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা স্থানীয় মানুষের মধ্যে কোনও ধরনের দুঃখ-অনুভূতির সৃষ্টি করবে না।
৪. বর্তমান নাম শিলচর রেলওয়ে স্টেশন এর সঙ্গে বাংলা ভাষা আন্দোলনের সত্যাগ্রহীদের উপর পুলিশের গুলি বর্ষণ, যার ফলশ্রুতি হচ্ছে ১১ জন মানুষের মৃত্যু ছাড়া, আর কোন ঐতিহাসিক ঘটনা সংযুক্ত নয়।”
তবে ২০১৭ সালের ৩১ শে মার্চ শিলচরের ডেপুটি কমিশনার এস বিশ্বনাথন একটি চিঠিতে (মেমো নং- সিএমজে.৬/২০০০/পিটি-২/৪২০এ) পুলিশ সুপারের তদন্ত রিপোর্ট সম্পর্কে দিসপুরকে অবহিত করে জানান যে এই দাবী জনগন কতৃক নৈতিকভাবে সমর্থিত। কিন্তু একইসঙ্গে তিনি এও নির্দিষ্ট করেছেন অন্য একটি সংগঠন যার নাম “ডিমাসা হিস্টোরিক্যাল হেরিটেজ ফাউন্ডেশন”, তারাও একই ধরনের দাবি পেশ করেছে শিলচর রেলওয়ে স্টেশনের নাম “বীর শম্ভুধন ফংলোর” নামে পরিবর্তন করার দাবীতে, যাতে এই অঞ্চলের একজন প্রথিতযশা স্বাধীনতা সংগ্রামীর মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপিত করা যায়। যাই হোক ডি.সি. লিখছেন যে এসপি-র বয়ান অনুযায়ী, “সাম্প্রতিক তদন্ত রিপোর্ট অনুসারে যদি শিলচর রেলওয়ে স্টেশনের নাম ভাষাশহিদ স্টেশন করা হয়, তাহলে কোনও দিক থেকে গণবিক্ষোভের কোনও সম্ভাবনা নেই, বা থাকলেও ক্ষীণ। অতএব শিলচর রেলওয়ে স্টেশনের নাম ভাষাশহিদ স্টেশন শিলচর করার বিষয়টি কাঙ্ক্ষিত এবং অনুগ্রাহী হবে বলেই মনে হয়।”
এই সমস্ত সরকারি নথি এটাই প্রমাণ করে যে আসাম বিধানসভায় শিলচর স্টেশনের নামাকরণের প্রস্তাব স্থগিত রাখার ঘোষণা আসলে মিথ্যাশ্রিত এবং হিমশৈলের চূড়া মাত্র। মূল আক্রমণ আসবে এর পরে। বিভিন্ন ভাষিক গোষ্ঠীকে বাঙালিদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা, উপত্যকার সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর ভাষাকে অসমীয়ার উপভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা, সর্বোপরি আইন শৃংখলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার অজুহাত, এসবই এক গভীর ষড়যন্ত্রের পূর্বপ্রস্তুতি। আসামের বিজেপি সরকারের আমলে সারা ভারতবর্ষে বাঙালীদের উপর আক্রমণ সার্বিক হয়ে উঠলেও, বরাক উপত্যকার ক্ষেত্রে সেই উলঙ্গ আক্রমণ অনেক বেশী ক্ষমতালোলুপ, এবং সফলও কিছুটা। বিজেপি সরকার আসার আগে আসামে, বিশেষ করে বরাক উপত্যকায়, বাঙালীদের উপর আক্রমণ আসতো হয় ভাষা, নয় ধর্মের অনুষঙ্গে। বিজেপি আমলে সে আক্রমণ আসছে ধর্ম এবং ভাষা দুই এর সম্মেলনে। আমাদের ছাত্রজীবনে বরাক উপত্যকায় প্রকাশ্যে আসু বা অসমীয়া উগ্র জাতীয়তাবাদী শক্তির সমর্থক হওয়ার অর্থ ছিল সামাজিকভাবে কালিমালিপ্ত হওয়া, ধিকৃত হওয়া। মানসিক দূরত্ব এতটাই বেশী ছিল যে, বরাক উপত্যকা থেকে আসামের অন্যত্র গেলেও মানুষ বলে ফেলতো “আসাম যাচ্ছি”। আজ অবস্থা ঠিক উল্টো। রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় নেতারা দিসপুরের সামনে নতজানু। মুসলমানের কাছে নির্দেশ যাচ্ছে সেন্সাসে নিজেদের অসমীয়াভাষী হিসেবে পরিচয় দিতে। হিন্দুদের সামনে টোপ ফেলা হচ্ছে হিন্দু অসমীয়াদের সঙ্গে ঐক্য গড়ে না তুললে মুসলমানেরা গোটা আসামের দখল নেবে। এমনকি উপত্যকায় নিজেদের বাঙালি বলে পরিচয় দেবার অধিকারও বাঙালিদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আর এই ষড়যন্ত্রের এপিসেন্টার হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বরাক-উপত্যকায় পশ্চাৎপদ হাইলাকান্দি জেলাকে। ভাষা শহীদ স্টেশন নামাকরণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হওয়া তারই মহড়া মাত্র।
বরাক-উপত্যকার বৌদ্ধিক চর্চার বনষ্পতিতুল্য চরিত্র সুজিৎ চৌধুরীর একটি উদ্ধৃতি দিয়ে এই প্রতিবেদনটি শেষ করতে চাই। তিনি লিখেছিলেন
"বরাক-উপত্যকার অভ্যন্তরে বিভিন্ন ধরণের জনগোষ্ঠির মধ্যে পারষ্পরিক অবিশ্বাস, সংশয় এবং বিভেদসৃষ্টির একটা সযত্নরচিত পরিকল্পনা প্রথম থেকেই এই উদ্যোগের মধ্যে নিহিত ছিল। প্রথমেই লক্ষ্য করা যায় যে, হাইলাকান্দি মহকুমাকে বরাক উপত্যকার অন্যান্য অঞ্চল থেকে স্বতন্ত্রভাবে চিহ্নিত করার একটা প্রয়াস উৎকট ভাবে করা হয়েছে। হাইলাকান্দি মহকুমা নাকি বরাবরই অসমীয়া ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের ব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে এসেছে এবং এই মনগড়া প্রতিপাদ্যের পরিপ্রেক্ষিতে হাইলাকান্দি প্রসঙ্গে বক্তা ও লেখকেরা একেবারে উচ্ছ্বাসের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় অসম সাহিত্য সভার যারা নিয়ামক, তাঁদের এই হাইলাকান্দি প্রীতি কিন্তু একান্তই হাল আমলের ব্যাপার; পুরোনো ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে হাইলাকান্দি সম্পর্কে এঁরা আগে কিন্তু প্রবল বীতরাগই পোষণ করতেন। দেশবিভাগের সময়ে কাছাড় জেলা, বিশেষ করে হাইলাকান্দি মহকুমাকে আসাম তথা ভারত থেকে বের করে দেওয়ার জন্য এঁরা বেশ জোরালো উদ্যোগ নিয়েছিলেন ... তাঁরাই যে আজ হাইলাকান্দি প্রেমে গদগদ হয়ে উঠেছেন, তাতে বোঝা যায় ব্যাপারটা খুব স্বাভাবিক গতিপথ ধরে অগ্রসর হচ্ছে না।
অঞ্চল ভিত্তিক বিভাজন ছাড়াও জাতি, ধর্ম, ভাষা ও বর্ণভিত্তিক বিভেদ সৃষ্টির প্রবণতাও বহুস্থলেই প্রকাশ্যরূপ নিয়েছে । সর্বশেষ সেন্সাস (১৯৭১ সালের; আসামে ১৯৮১ সালের সেন্সাস হয়নি) অনুসারে বরাক-উপত্যকার জনসংখ্যার প্রায় আশীভাগ বঙ্গভাষী। এঁরা ঐক্যবদ্ধ থাকায় অসমীয়াকরণ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। তাই এঁদের মধ্যে তিনধরনের বিভাজন করার চেষ্টা হয়েছে। প্রথমত স্থানীয় এবং অস্থানীয়; দ্বিতীয় হিন্দু এবং মুসলমান; তৃতীয়ত বর্ণহিন্দু এবং অনুসূচিত জাতি। এছাড়া বরাক উপত্যকায় বিভিন্ন ভাষিক সংখ্যালঘু যে সমস্ত গোষ্ঠীর মানুষ রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে বঙ্গভাষাভাষীদের সম্পর্ক চিড় ধরানোর উদ্যোগ বেশ ব্যাপকভাবেই নেওয়া হয়েছে। কোনও কোনও সময়ে এই ব্যাপারে ভাষা এবং প্রকাশভঙ্গির শালীনতা পর্যন্ত বজায় থাকেনি।"