এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  পর্যালোচনা (রিভিউ)  সিনেমা

  • চৈতন্য তামহানের দুটি ছবি: কোর্ট ও দ্য ডিসাইপল

    সন্দীপন মজুমদার
    পর্যালোচনা (রিভিউ) | সিনেমা | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ২২৪৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)

  • বিজয় তেণ্ডুলকর, মহেশ এলকুঁচওয়ার অথবা সতীশ আলেকারের মত নাট্যকারের নাট্যকৃতি দেখা বা পড়ার সুযোগ থাকায় মারাঠি নাটক সম্পর্কে আমাদের একটা ধারণা আছে। মারাঠি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত গায়ক বা গায়িকাদের বিরাট ঐতিহ্য সম্পর্কেও আমরা সশ্রদ্ধ অনুরাগ পোষণ করি। কিন্তু মারাঠি চলচ্চিত্র বিষয়ে আমাদের বিশেষ কিছু জানা নেই। তার একটা কারণ বোধহয় এই যে আমাদের দেশে আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্রের প্রসার এখন ভীষণ অবহেলিত। তার মধ্যে আবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সর্বোৎকৃষ্ট ছবির শিরোপার ৭১ শতাংশ হিন্দি, বাংলা এবং মালয়ালম ছবির দখলে এসেছে গত ৬৯ বছরের ইতিহাসে। সত্যজিৎ রায় সমেত দশ জন পরিচালক তাঁদের প্রথম ছবিতেই এই সম্মান পেয়েছেন। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন মারাঠি পরিচালক চৈতন্য তামহানের নাম ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কোর্ট’ ছবিটির জন্য।

    মহারাষ্ট্রে দলিত আন্দোলনের এক দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। এই ছবির অন্যতম চরিত্র নারায়ণ কাম্বলে এক প্রায় বৃদ্ধ প্রতিবাদী লোকগানের শিল্পী যিনি বাচ্চা ছেলেমেয়েদের টিউশন পড়ান আর শহরের বিভিন্ন দলিত অধ্যুষিত অঞ্চলে জাত ভিত্তিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী গান করেন। তাঁকে একটা এরকম অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে পুলিস ধরে নিয়ে যায়। কয়েকদিন আগে ম্যানহোল পরিষ্কার করতে গিয়ে বাসুদেব পাওয়ার নামে এক সাফাই কর্মীর মৃত্যু হয়। পুলিসের মতে এটা আত্মহত্যা এবং সেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন নারায়ণ কাম্বলে। বাসুদেবের বাড়ির কাছাকাছি এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে নাকি নারায়ণ কাম্বলে একটি গান গেয়েছিলেন যেখানে সাফাই কর্মীদের এই দূষিত জীবনের বদলে মৃত্যুবরণ করার উপদেশ দেওয়া হয়েছিল। কাম্বলের হয়ে কোর্টে সওয়াল করে বিনোদ ভোরা নামে এক তরুণ আইনজীবী, যে মানবাধিকার নিয়েও চর্চা করে। পুলিস ভাড়াটে সাক্ষী দিয়ে বলানোর চেষ্টা করে যে বাসুদেব নাকি কাম্বলের গান গেয়ে আত্মহত্যা করার জন্যই ম্যানহোলে ঢুকেছিল। পুলিস কাম্বলেকে একটা চিঠির ভিত্তিতে জেলবন্দি অশ্বিন ভাগাত নামে এক রাজনৈতিক কর্মীর সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত প্রমাণ করার চেষ্টা করে। সরকারপক্ষের মহিলা আইনজীবী নূতন কাম্বলের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ বই রাখার অভিযোগ আনে যদিও বিপিন বোঝাতে চায় ঐ বইগুলি নিষিদ্ধ থাকার কোনো যুক্তি নেই । ইতিমধ্যে পাওয়ারের স্ত্রী কোর্টে দাঁড়িয়ে জানায় তার স্বামী কোনো নিরাপত্তা সুরক্ষা ছাড়াই ম্যানহোলে ঢুকত, প্রতিদিনই মদ খেত এবং কাম্বলের নাম বা তার গানের কথা কখনও সে বলে নি। বাসুদেবের পোস্ট-মর্টেম রিপোর্টেও আত্মহত্যার কোনো প্রমাণ মেলে না। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এক লক্ষ টাকার বণ্ডের বিনিময়ে কাম্বলে জামিন পায়। জামিনের টাকা বিপিনই আপাতত দিয়ে দেয়। মুক্তি পাওয়ার অল্পদিন পড়েই আবার কাম্বলেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এবার অভিযোগ, লোকশিল্পীদের নিয়ে কর্মশালা চালানোর আড়ালে কাম্বলে দেশদ্রোহী শিবির চালিয়েছেন। কাম্বলে এবং বিপিন এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু এবার ইউ এ পি এ দেওয়া হয়। কাম্বলের গুরুতর স্বাস্থ্যের অবনতির আশঙ্কা সত্ত্বেও বিচারক কাম্বলেকে পুলিস হেফাজতে পাঠিয়ে বিপিন কে হাইকোর্টে আবেদন করতে বলেন।

    কোর্টরুম ড্রামা বলতে আমরা যা বুঝে এসেছি এই ছবি তার থেকে আলাদা। উচ্চকিত যুক্তি, নাটকীয় উত্থানপতন– সেসব এখানে কিছুই ঘটে না। সবাই যেন নিজস্ব ভূমিকা পালন করে যায় বাড়তি কোনো তাগিদ ছাড়াই। কিছুটা ব্যতিক্রম অবশ্যই বিপিন ভোরা, তার আদর্শবাদের তাগিদেই। কিন্তু সেও এই সিস্টেমের সামনে এক ক্লান্ত যোদ্ধা যেন। উদার, উচ্চ মধ্যবিত্ত বিপিনের শ্রেণী অবস্থানটিকেও চৈতন্য স্পষ্ট করে দেখিয়ে দেন। সে চোস্ত ইংরেজি বলে, সেমিনারে বক্তব্য রাখে, নিজের গাড়ি চালায়, পাবে বন্ধু ও বান্ধবীদের সঙ্গে রিল্যাক্স করতে যায়। এই ছবির এইটাই বৈশিষ্ট্য যে প্রতিটি চরিত্রকে তাদের নিজস্ব প্রেক্ষিতে ধরা হয়। যেমন সরকারি আইনজীবী সরযূ। কাজের সময়টুকুর বাইরে সে আমাদের চেনা মধ্যবিত্ত মহিলাদের একজন। লোকাল ট্রেনে মহিলা কামরায় বাড়ি ফেরার সময় সহ-যাত্রিণীর সঙ্গে শাড়ি এবং রান্নার রেসিপি নিয়ে গল্প করে, প্লে স্কুল থেকে বাচ্চা নিয়ে বাড়ি ফেরে, রান্না করে, পরিবেশন করে, সপরিবারে রেস্তোরাঁয় খেতে যায়, বরের সঙ্গে নাটক দেখতে যায়। আসলে এগুলো এত খুঁটিয়ে দেখানোর কারণ মনে হয় এটাই যে রাষ্ট্রের হয়ে যিনি সওয়াল করেন, প্রকৃত প্রস্তাবে রাষ্ট্রের অমানবিক উদ্যোগের সহায়ক ভূমিকা পালন করেন তিনিও অন্য কেউ নন, আমাদের মধ্যবিত্ত যাপনের থেকে উঠে আসা স্বাভাবিক প্রতিচ্ছবি, সেটাই দেখানো। বিচারককেও সেভাবেই দেখানো হয় এই ছবিতে। স্লিভলেস টপ পরে আসা এক মধ্যবয়সী মহিলার শুনানি তিনি বাতিল করে দেন শুধু পোশাক সংক্রান্ত আপত্তি তুলে। ছবির শেষভাগে ঐ বিচারককে দেখা যায় আবাসনের এক পিকনিকে অংশগ্রহণ করতে। সেখানে মধ্যবিত্ত সুলভ বিষয় নিয়ে (যেমন আই টি সেক্টরের মাইনে) আলোচনার পর বিচারককে দেখা যায় রিসর্টের বাইরে এক বেঞ্চে বসে ঘুমাতে। পিকনিকের দলের কয়েকটি বাচ্চা ছেলে মেয়ে তা দেখতে পেয়ে দুষ্টুমি করে বিচারকের ঘুম ভাঙিয়ে দেয়। বিচারক রাগের চোটে হাতের কাছে যে বাচ্চাটিকে পান তাকেই থাপ্পড় মারেন। সে কাঁদতে থাকে, বাকিরা পালিয়ে যায়। গোটা ফ্রেমে লং শটে বিচারককে দেখা যায়, একা, সম্ভবত আবার ঘুমিয়ে পড়েছেন বেঞ্চে। সাউণ্ডট্র্যাকে বাচ্চাটির কান্নার আওয়াজ জেগে থাকে। যেন আমাদের স্কুলে পড়া সেই “বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে”- তারই দৃশ্যরূপ। শুধু জেগে থাকে কর্তৃত্ব (নাকি আসলে ঘুমিয়ে থাকে, এই ঘুমিয়ে থাকাটাই ব্যবস্থাকে সহায়তা করে)। চৈতন্য তামহানে ছবিটি ঘিরে আমাদের বিদ্রোহী চেতনাকে উজ্জীবিত করার কোনো সস্তা উপকরণ সরবরাহ করেন না। কিন্তু যাতে গোটা ব্যবস্থার যান্ত্রিকতা, অসহনীয়তা আমাদের স্বাভাবিক চিন্তন প্রক্রিয়ার মধ্যে অস্বস্তিকর কাঁটার মত বিঁধে থাকে সেই ব্যবস্থা করেন। কোর্ট ছবিটি আমাদের প্রাত্যহিকতার মধ্যে, উদাসীনতার মধ্যে রাষ্ট্র তার দমন-পীড়নকে কিভাবে এক রুটিন স্বাভাবিকতার অংশ করে তোলে সেটাই দেখায়। ছবিটি আপাতত দেখা যাচ্ছে নেটফ্লিক্সে।

    চৈতন্য তামহানের দ্বিতীয় ছবি ‘দ্য ডিসাইপল’(২০২০) মুক্তি পেয়েছে নেটফ্লিক্সে। ভারতীয় রাগসঙ্গীতের সুমহান পরম্পরা রয়েছে মহারাষ্ট্রে। সেখানে গুরু শিষ্যের সম্পর্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সঙ্গীতের সাধনায় নিজেকে উজাড় করে দিতে হয় গুরুর কাছে। নিষ্ঠা, অনুশীলন আর আত্মনিবেদনে তিলে তিলে গড়ে তুলতে হয় নিজেকে। এ সমস্ত কিছু আমাদের অনেকটা জানা। এরকমই এক শিষ্য শারদ নেরুলকর এখানে মুখ্য চরিত্র। শারদ তার গুরুজী বিনায়ক প্রধানের প্রতি, তার অনুসৃত রাজস্থানের আলোয়ার ঘরানার প্রতি একনিষ্ঠ। এই ধরণের অনেক ছবিতেই আমরা দেখি এই পরিশ্রম ও একনিষ্ঠতার ফল মেলে সাফল্যে। কিন্তু চৈতন্যের ছবির ব্যতিক্রম এখানেই যে অর্জন বা সিদ্ধিলাভের ক্ষেত্রে শারদ যেন সবসময় কিছুটা পিছিয়ে থাকে, তার গুরুর মত শিল্পী হয়ে ওঠা (বাণিজ্যিক সাফল্যের প্রশ্নে নয়, সে অর্থে তার গুরুও সফল ছিলেন না) তার আর হয় না। অথচ এইরকম একটা ব্রতে নিজেকে নিয়োজিত করার অর্থ হল নিজের সর্বস্ব দিয়ে দেওয়া। সত্যিই তাই করে শারদ। সে অন্য কোনো চাকরি করে না,কিছু গান শেখায় (সেখানেও সে আপোষহীন), দিনরাত নিজেকে অনুশীলনে ডুবিয়ে রাখে, বিয়ের প্রস্তাব সরিয়ে রাখে বয়স বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও। এককথায় নিজের গোটা জীবনটাকেই বাজি রাখে শারদ। শারদ এবং তার গুরুর ভূমিকায় চৈতন্য দুই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত গায়ককে দিয়েই অভিনয় করিয়েছেন। এঁরা হলেন যথাক্রমে আদিত্য মোদক এবং অরুণ দ্রাবিড়। এর সঙ্গে আছে একটি কাল্পনিক চরিত্র বিদুষী সিন্ধুবাই যাতভ বা মাঈয়ের কণ্ঠস্বর যার কথাগুলি শারদের সঙ্গীত সাধনার পাথেয়। সেখানে ভোরের নির্জন রাস্তায় বাইকে করে যাওয়ার সময় শারদের মাথায় মাঈয়ের কথাগুলি ঘুরতে থাকে যা সঙ্গীতের সাধনাকে আধ্যাত্মিক সাধনার সাথে মিলিয়ে দেয়। হ্যাঁ, শারদ বিচ্যুত হয় না নিজের পথ থেকে। তবু অভীষ্টলাভ তার হয় না। এই বেদনার চিত্ররূপ দেওয়ার কথা কেউ তো ভাবেন নি। শুধু সফলদের নিয়ে কথা হয়। অসফলদের সাধনার কথাও তো বলা দরকার ছিল। এটা শুধু সঙ্গীত নয়। জীবনের আরো অনেক ক্ষেত্রে, সমস্ত আন্তরিকতা, পরিশ্রম ও আত্মত্যাগের পরও সাফল্য অনেকেরই (বস্তুগত সাফল্যর কথা বলা হচ্ছে না) করায়ত্ত হয় না। তবু এই জার্নিটা থাকে। সেটার জন্যই হয়ত বেঁচে থাকা। দ্য ডিসাইপল এই ভাবেই বহুমাত্রিক দ্যোতনা তৈরি করতে পারে। চৈতন্য তামহানে ভারতীয় চলচ্চিত্রে থাকতে এসেছেন বলেই মনে হচ্ছে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • পর্যালোচনা (রিভিউ) | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ২২৪৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • santosh banerjee | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২:০২498519
  • আমরা মুম্বাই চলচ্চিত্র বলতে বুঝি ঐ অমিতাভ, দিলীপ,দেব আনন্দ,রাজ কাপুর ...খুব বেশি হলে অনুরাগ কাশ্যপ । কিন্তু, মুজাফফর আলি, এম.এস.স্যাথু , জব্বার প্যাটেল , গোবিন্দ নিহালনী এদের ভুলে যাই বা ভুলিয়ে দেয়া হয়। অন্য ধরনের ছবি সম্মন্ধে কোনো আলোচনা বা প্রচার ‌‌‌‌‌করাহয় না। এই দু'টো ছবি যে হয়েছে সেটাও এই প্রতিবেদন এ জানতে পারলাম। ধন্যবাদ। 
  • Ramit Chatterjee | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০০:৪৯498524
  • ডিসাইপল এখনো দেখা হয় নি। তবে কোর্ট দেখা, thats a gem of a movie. অসম্ভব ভালো লেগেছিল। কারো কারো একটু স্ট্রেচি লাগতে পারে। কিন্তু হাতে সময় নিয়ে দেখলে নো প্রবলেম। আর কোর্ট বোধহয় ইউ টিউবেও আছে। তবে নেটফ্লিক্স এ দেখতেই উৎসাহিত করব।  সরযূ র ক্ষেত্রে বলব ও যে শুধু সাধারণ মধ্যবিত্ত ফ্যামিলি থেকে বিলঙ করে এটার জন্য ওর ব্যাকগ্রাউন্ড দেখায় নি। এটা দেখিয়েছে যে ও যে নাটক দেখে তাতেও মিশে আছে রেসিজম, পরতে পরতে বহিরাগত র জন্য ঘৃণা । জাজ যাদের সাথে মেশে তারাও কোনো জিনিস তলিয়ে ভাবে না, হোয়াটসাপ ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট। এসব থেকেই এদের ওয়ার্ল্ড ভিউ টা তৈরি। তাই লোকশিল্পী র প্রতি নির্দয় হতে এরা দুবার ভাবে না। আর ধনী চোস্ত ইংরেজি বলা বিপিন তাই এদের কাছে শত্রু র সমান। এরা বিপিন কে হিংসা করে, ও জিতুক চায় না। কোর্টের প্রহসন চলতে থাকে।
  • অনুরাধা কুন্ডা | 2409:4061:2e01:80f9:35e3:141d:ccbe:***:*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:১৬498588
  • ভালো ছবি।খুব ভালো।দরকারি লেখা
  • প্রত্যয় ভুক্ত | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:২৫498598
  • The disciple দেখেছি,প্রথম সিনেমাটি দেখা হয়নি।সত্যি যেসব নদী মরুপথে হারিয়ে যায় , প্রকৃতির  প্রবল প্রতিকূলতায় হারিয়ে যায় আঁধারে,তাদের কেউ মনে রাখে না ,পূজার ফুল ফোটে না ,সাধনা ব্যর্থ হয় ।কিন্তু তাও সাধনা ছাড়া উচিত নয়,মোহনিশা নাহলে টুটবে কেমন করে? তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের "কাকপন্ডিত" গল্পে প্রশ্ন ছিল 'অদৃষ্ট বড় না পুরুষকার বড়?'আমার তো মনে হয় অদৃষ্ট প্রকৃতিগতভাবেই বেশি শক্তিশালী, কিন্তু জীবের উদ্যম , অধ্যবসায় ,পুরুষকারের আন্তরিক প্রয়াসকে সময়ে সময়ে কুর্নিশ জানিয়ে পথ ছেড়ে দেয় সে,ইন্দ্র বজ্র চালনা করে  আন্তরিকভাবে গরুড়কে অমৃত সংগ্রহে বাধা দিতে গেলে বজ্রের প্রতি শ্রদ্ধায় গরুড়ের পালক খসানোর মতো।এখানে মানুষ ইন্দ্র ,গরুড় অমোঘ অদৃষ্ট,আর পুরুষকার সেই উদ্যত বজ্র।নিরলস ,আত্মমগ্ন,নিরন্তর অধ্যবসায়পূর্ণ সাধনা নিজেই নিজের সাহল্য যা আমাদের মনকে ধীর,শান্ত করে ,জ্ঞান প্রদান করে।তার জন্য আবার আলাদা পুরস্কার বা স্বীকৃতির লোভ রাখাই উচিত নয়।
     
    প্রথম সিনেমাটি আমি যদিও দেখিনি ,কিন্তু মূল্যায়ন পড়ে বাস্তবের সাথে বেশ মিল পেলাম ।সত্যি চারপাশে আমাদের মতোই মানুষেরা কেমন বদলে যাচ্ছে।কষ্ট লাগে খুব।
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন