আমার এখনকার অফিসে বেশ একটা মজার বিষয় আছে, অপরিচিত লোকজন হঠাৎ এসে এইচ আইভি নিয়ে কিছু জানতে চাইলেই লোকজন আমাদের কাছে ঠেলে দেয়। কেননা আমাদের ডিভিশন যেহেতু এইচ আইভি সম্পর্কে জনসাধারনের সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে,তাই বাকি সকলে মনে করে আমরা কয়েকজনই সে ব্যাপারে সব তথ্যই জানি আর লোকজনকে আমরাই জানাব, সব জায়গায় যেমন সবাই পিঠ বাঁচায় তেমনই। একদিন অফিসের ডেসকে বসে কাজ করছি হঠাৎ করেই আমার এক সহকর্মী এসে বললেন, দেখো তো ওরা কি বলছেন। ফিরে দেখি দুজন বয়স্ক সুদর্শন সুপোশাক পরিহিত মানুষ এসেছেন এইচ আইভি নিয়ে কথা বলতে, এরকম বয়সের লোকজন সাধারণত আসেন কোনও না কোনও এন জি ও র তরফে এইচআইভি সচেতনতার কাজ কর্ম করতে সাহায্য পাওয়া যাবে কিনা জানতে। কথা বলতে গিয়ে দেখলাম না এনারা দুই বন্ধু এসেছেন এইচ আইভির পরীক্ষা, চিকিৎসা কোথায় হয় সেসব জানতে। মনে মনে ভাবলাম আজকাল তো অনেকেই ছেলে মেয়েদের বিয়ের আগে থ্যালসেমিয়া এইচ আইভি পরীক্ষা করায়, ওনাদের হয়তো তেমন কোনও ব্যাপার। তাও বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে গেলে নিজেকে যতটা সম্ভব নিরপেক্ষ রাখা উচিত সে ভাবেই আলোচনা শুরু করলাম। জানতেও চাইলাম ওনারা কেন হঠাৎ এইচ আইভি পরীক্ষা করাতে চাইছেন। কথায় কথায় জানলাম ওনাদের কোনও এক আত্মীয় বিদেশ থেকে ফিরেছেন, অনেক দিন যোগাযোগ না থাকায় তার যাপণ সম্পর্কে ওনারা জানেননা, সে হয়তো সেখানে ড্রাগ নিত, তার গায়েও উল্কি আছে অনেক তাই ওনারা তাকে এইচ আইভি পরীক্ষা করাতে চান। আর তাই সরাসরি স্বাস্থ্য দপ্তরে খোঁজ নিতে এসেছেন, বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে রাজ্য সরকারের এডস্ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থায় পৌঁছেছেন। তার সঙ্গে সঙ্গে আরও জানতে চাইলেন এডস হয়েছে কিনা সেটাও কি করে জানা যায়। দেখলাম এনারা এডস আর এইচ আইভি র তফাতটা জানেন। কথা বলতে উৎসাহ পেলাম। ওনারা এইচ আইভি নিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন নিয়েও জানতে চাইলেন। জানালাম বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় এইচ আইভি নিয়েও লোকজন দীর্ঘদিন ভাল থাকেন, এবং আমিও ভাল আছি। ওনারা ধাতস্থ হলেন। কিন্তু মানুষের কৌতূহল অসীম, ওনাদের মধ্যে একজন জিজ্ঞেস করে বসলেন কিভাবে আমার এইচ আইভি হল। আজকাল এটাতে অবাক হই না হাসিমুখে বললাম, "সেটা জানাটা বোধহয় জরুরি না"। উত্তর এল, "তবুও.." জানালাম "আলাদা করে বলার কিছু নেই। আমি গে, আনপ্রটেকটেড সেকস"। ভদ্রলোকের কৌতুহল বেড়েই চলল, আমার পড়াশোনা, কতদিন এখানে কাজ করছি আগে কি করেছি এসব জানতে চাইলেন। মনে মনে বিরক্ত হলেও ভাবলাম বয়স হলে মানুষ হয়তো বকবক করতে ভালবাসে আর তাই হয়তো এত কথা বলছেন।সংক্ষেপে জানালাম, "আগে অন্য একটি প্রকল্প যেখানে পশ্চিমবঙ্গের পুরুষ সমকামীদের এইচ আইভি প্রতিরোধ মুলক কাজকম্ম হত সেখানে কাউন্সেলর হিসাবে কাজ করতাম"। ভদ্রলোক বেজায় উৎসাহী হয়ে আমার ফোন নং চেয়ে বসলেন। মনে মনে হাসলাম, আমার তো আবার বয়স্ক হ্যন্ডসাম লোক দেখলেই বুকের ভিতর কেমন একটা কুড়কুড়ি বেড়ে যায়। নম্বর টা দিয়েই দিলাম। ভদ্রলোক বললেন, "আমাকে পরে ফোন করবেন, তাঁর আমাকে পরে দরকার হতে পারে।"
সাধারণত সকালবেলা অফিস বেড়োনোর আগে আমি কারও ফোন ধরিনা, এত তাড়াহুড়ো থাকে। একা হাতে ব্রেকফাস্ট তৈরী, লাঞ্চবক্স রেডি, নিজেকে রেডি তখন যেন ফোন ধরা তো দূর মরার সময়ও থাকেনা। বেশ কয়েক বছর হল বাড়ীতে একটা পরিবর্তন হয়েছে আমাদের অনু পরিবার আরও ভেঙে পরমানু পরিবার হয়েছে। আমি যদি ইলেকট্রন হই তো বাবা মা মিলে প্রোটন আর ভাই ভাইবৌ ওদের মেয়ে মিলে নিউট্রন। যাই হোক যে কথা বলছিলাম, সকাল থেকে অনেক বার ফোন বেজে গেছিল। অপরিচিত নম্বর। বেড়িয়ে ক্যাব এ উঠে রিংব্যাক করলাম। ভারী গলায় একজন ফোন ধরে জানালেন, "কাল আমার অফিসে গিয়ে উনি আমার থেকেই আমার নম্বরটা পেয়েছেন"। কাল উনি আসলে বলতে পারেন নি, আসলে ওটা ওনার ছেলের কথা। আরও জানালেন, ওনার স্ত্রীর সঙ্গে ওনার ছাড়াছাড়ি হয়েছিল দীর্ঘ বাইশ তেইশ বছর আগে,বিদেশে থাকা মায়ের কাছেই ছেলেটি বড় হয়েছে। এখন প্রায় আঠারো উনিশ বছর বাদে ওনার কাছে থাকতে এসেছে, কয়েকদিন আগে। কিন্তু বড্ড উশৃঙখল। মাঝে মাঝেই বড্ড চিতকার চেঁচামেচি করছে উনি একা সামলাতে পারছেন না। ওনার মনে হয়, ছেলেটির কাউন্সেলিং দরকার। আমি যদি একবার যাই। এমন আব্দারে অবাক হলাম, আগের দিনই শুনেছিলাম ছেলেটি হয়তো ড্রাগ অ্যাডিক্ট, ভাবলাম হয়তো উইথড্রল সিম্পটম। এমন কোনও মানুষকে সামলানোর বা তাদের সাথে কথা বলার কোনও অভিজ্ঞতাই আমার নেই। আর তাছাড়া কাউন্সেলিং এর ও কিছু এথিক্যাল দিক আছে, আর আমি অনেক সময় এইচ আইভি বা জেন্ডার নিয়ে ফ্যামিলি কাউন্সেলিং কাজের খাতিরে করলেও তা হয়তো যতনা কাউন্সেলিং তার চেয়ে অনেক বেশি অ্যাডভোকেসি। ভদ্রলোককে জানালাম, "আমি এতটা অভিজ্ঞ নই ওনাকে শহরের কোনও বিশেষজ্ঞের যোগাযোগ নম্বর দিতে পারি"। উনি জানালেন ওনার ছেলে এমনিতে ভীষণই ভাল, ভাল ছবি আঁকে, ভাল গান গায়, নিজের সঙ্গে একা বেশ ভাল থাকে। কিন্তু ওনাকে দেখলেই অসম্ভব রিঅ্যাক্ট করছে। ওনার আশংকা ছেলেটির আসলে কোলকাতা শহরে যেহেতু কোনও বন্ধু বান্ধব নেই তাই এমন অস্বাভাবিক আচরণ।, আরও জানালেন, ছেলেটিও গে, আর আমারই বয়সী হবে, আমি হয়তো তাকে বুঝতে পারব। তাই উনি আমার সঙ্গেই কথা বলতে চান। আগের দিন শুনেছিলাম ড্রাগ নেয় আজ শুনছি গে। যাইহোক ওনাকে জানালাম, আমি রাস্তায় আছি অফিস যাচ্ছি। তিনি সরাসরি বললেন, "অফিস না গেলে কি হয়"? আরও অবাক করে বলে উঠলেন, "তোমার কাউন্সেলিং বাবদ যা ফি তার বেশি দিতে আমি রাজী, চাইলে অফিস না গেলে তোমার একদিনের বেতনের বেশি টাকা দিতেও আমি রাজী"। আমি একবার যেন তার বাড়ীতে সেদিন অবশ্যই আসি। বেশ বিরক্ত হলাম। টাকার ভাবনা বা চাহিদা আমার কখনোই সে অর্থে নেই। স্পষ্ট ভাষায় বললাম, "সেটা সম্ভব না। আর আমি কাউন্সেলিং টা পেশা হিসাবে নিইনি, আমার নিজের কিছু দায়বদ্ধতা থেকে সেটা আমার ভাল লাগা"। "পরে কথা হবে অফিসে ঢুকছি" বলে ফোনটা রাখলাম। খানিক বাদে আবার ফোন। ভদ্রলোক নাছোড়বান্দা ,সেদিনই আমাকে তার প্রয়োজন। অফিস শেষে বিকালে আমার সেদিন যাদবপুরে ক্লাস আছে ওনাকে সেটা জানালাম। উনিও জানালেন ক্লাসে যাওয়ার আগে যেন একবার যাই। মনেমনে বিরক্ত লাগলেও কোথাও একজন অসহায় মানুষের পিতৃস্নেহের কাছে হার মানলাম। উনি জানালেন গাড়ী পাঠাবেন,বললাম দরকার নেই আমি নিজেই আসব।
এখানে বলে নেওয়া ভাল আমার তো ল্যাংটার নেই বাটপারের ভয়। আমার সেক্সুয়ালিটি সারা অফিস জানে, তা নিয়ে আমার নিজের তেমন মাথাব্যাথা নেই। বছর দুয়েকের বেশি হবে আমার একটা অনলাইন প্রেম হয়েছিল। ডেটিং সাইটের প্রেম। ওখানে কথা বলতে গিয়ে জেনেছি ভদ্রলোক নাকি টেকসাসে থাকেন, পেশায় হৃদয়ের কাঁটাছেড়া করা চিকিৎসক। যদিও জানি, তিনি যদি টালি নালার ধারে থাকা অটোচালক হন তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। কিন্তু ভদ্রলোকের টেকনিকাল নলেজ এবং কথা বলার ধরনে মনে হয় সত্যি কথাই বলেন। যখন উনি কলকাতায় এসেছিলেন তখন কথা শুরু হয়েছিল, তিনি কফি খেতে যেতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় আপিসের কাজের চাপে আমার দেখা করা হয়ে ওঠেনি। কয়েকদিন বাদে জেনেছিলাম উনি কর্মস্হলে ফিরে গিয়েছিলেন।তারপর নিয়মিত ওই ডেটিং সাইটেই কথা বলতাম, তার বাইরে কোনও কিছু তিনিও দেননি, আমিও চাইনি। মনে করতাম সময় হলে তিনিই দেবেন। শুধু মাত্র প্রফাইলে থাকা ছবি ছাড়াও বর্তমান বয়সের দু একটা ছবি আমাকে পাঠিয়েছিলেন।তাও সেটা সত্যি মিথ্যে যাচাই করি নি। অথচ বিভিন্ন সময়ে দেশ বিদেশের বিভিন্ন আর্টিকেল কখনও বা রবীন্দ্রনাথ থেকে গীতা উপনিষদের আলোচনার মাধ্যমে মনের কাছাকাছি চলে এসেছিলাম প্রায় দুবছর ধরে কথা বলে চলেছি। আপিসের অনেকেই জানতেন এনার কথা। বিশেষতঃ কাছাকাছি লোকজন তো বটেই। আমার এক সহকর্মী সুমনের খুব আগ্রহ ছিল এব্যাপারে। এমন নি আমরা দার্জিলিং এ অফিস ট্যুরে গেছি জেনে ভদ্রলোক যখন জানিয়েছিলেন নর্থ পয়েন্ট স্কুলে ওনার ছোটবেলা কেটেছে। সহকর্মী বন্ধুটি সেই স্কুলের সামনে আমার ছবি তুলেও দিয়েছে ওনাকে পাঠানোর জন্য। কালের নিয়মে অনলাইন প্রেম অনলাইনেই হারিয়ে গেছে বেশ কিছুকাল। তবে সুমিতাদি আর সৌরভ আর সুমন ছিল সে সময় আমার অভিন্নহৃদয় বন্ধু। তাই যা কিছু করি যেখানে যাই ওরা সব জানেন। সুমন একটু বেশিই জানতো । এ নিয়ে পরে অনেক কথা বলব। যাই হোক অফিসে কাজের ফাঁকে সুমনকে সকালের ফোনালাপ নিয়ে জানালাম। ও লেগপুল করতে শুরু করল," যাই হোক তোমার এবার নতুন শ্বশুরবাড়ী হবে। ভদ্রলোক আসলে ছেলের জন্য পাত্র খুঁজছেন। হয়তো তোমার সেই টেক্সান ফেরত এসেছে"। ওর কথার ধরনে হেসে ফেললাম।
যাইহোক আপিস শেষ হওয়ার পর বেরিয়ে ঠিকানা মাফিক দক্ষিণ কোলকাতার একটা অভিজাত অঞ্চলে পৌঁছে ভদ্রলোক কে ফোন করলাম, নিজে এসে তিনি অভ্যর্থনা করে তার প্রাসাদোপম বাড়িতে নিয়ে গেলেন।
চারতলায় পৌঁছে দেখলাম আগের দিন আলাপ হওয়া ভদ্রলোকের বন্ধুও সেখানে রয়েছেন। অদ্ভুত ভাবে মনে হল ওনারা আমার যেন কত পরিচিত। ওনারা দুজনেই প্রায় প্রথম দিনেই লকগেট খুলে যাওয়ার মত করে কলকলিয়ে উঠলেন আমার সাথে। অল্প সময়েই বুঝলাম সংস্কৃতিচর্চার অলিতে গলিতে ওনাদের বিচরণ। যা বোধহয় আমাকেও উৎসাহিত করল। সেই উৎসাহের ফলে ভদ্রলোকের যে কুন্ঠা সকালেও ফোনালাপে পেয়েছি তা পেরিয়ে অকুন্ঠ হয়ে উঠলেন তিনি। অকপটে নিজের অতীত জীবন নিয়েও কথা বলতে শুরু করলেন, যাতে ওর ছেলের মানসিক অবস্থা বুঝতে পারি। আর সেই সঙ্গে এও জানালেন আট থেকে আশি সকলেই ওনার বন্ধু, আমিও যেন সেটা মাথায় রাখি। কলকাতা শহরের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে ওনার সাথে আমাকেও নিয়ে যাওয়ার খোলা আমন্ত্রণ জানাতেও ভুললেন না। বাড়িটা ঘুরে দেখতে গিয়ে কিন্তু যেটা তে সবচেয়ে বেশি আকর্ষিত হলাম সেটা অসম্ভব ভাল রুচিবোধ। আরও অবাক হওয়ার বাকি ছিল তখনও। ওনার মুখে জানলাম একজন কিংবদন্তি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী শেষবয়সের কিছুটা সময় এবাড়ীতেই কাটিয়েছেন। ওনার ছেলে আর এই ভদ্রলোক দুজনেই অভিন্নহৃদয় বাল্যবন্ধু। এমনকি শিল্পীর ইচ্ছানুসারেও মুখাগ্নিও করেছেন তিনি । বাড়ির মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ওনার স্মৃতিবিজড়িত জিনিসপত্তর। আমার বেড়ে ওঠায় যে মানুষটার গান অনেকটা জগতজুড়ে তার সবকিছু ছু্ঁতে পেরে অদ্ভুত একটা ভাললাগা নিয়ে বাড়ী ফিরে ছিলাম সেদিন।
সেদিন ওদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে হঠাৎই ঘরে ঢুকতে যাকে দেখলাম তাকে দেখে বেশ অবাক হলাম, প্রায় ছয়ফুট লম্বা, চুলদাড়ি যেন নুন আর গোলমরিচের গুঁড়াতে মেশানো একটা ছেলে নয়, একটা লোক । এই ট্যাঁশ ফিরিঙ্গি কে দেখে, এ আবার ছবি আঁকে আর লেখালেখি করে ভেবে খুব খারাপ লাগল না। কিন্তু খুব যে ভালও লাগল এমন না। ছেলেটির সঙ্গে কথা বলে এটা বুঝলাম আসলে এতবছর বিদেশে থেকে এখানের সবকিছুতেই একটা কালচারাল শকের অভিব্যক্তিই ওর আচরণে। আর তেমন কিছু না। ওর বাবাকে সেটাই জানিয়ে নিশ্চিন্ত করার চেষ্টা করেছিলাম সেদিন। এটাও লক্ষ্য করলাম ওর মধ্যে যতটা রুক্ষ্মতা তা আসলে ভাঙা পরিবারের যন্ত্রণার ফল, আসলে মানুষটা বড্ড নরম। ভয় পাওয়া বেড়ালের মত নিজেকে গুটিয়ে রাখতে ও ভালবাসে। ওর জীবনের ওঠাপড়ায় বিশ্বাসের ভিতটা ভীষণ নড়বড়ে। লেখালিখি আর ছবি দেখতে দেখতে বুঝলাম ওর ছবির স্টাইল অন্যরকম হলেও ব্যকরণগত বা প্রথাগত শেখার ধারনা সেখানে অনেকটাই কম। কিন্তু ও সেটা মানতে নারাজ। যাই হোক একটা বন্ধুতা গড়ে উঠল ক্রমশঃ