এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • পুরানো কথা পর্ব ৩০

    Jaydip Jana লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ০৮ জুলাই ২০২১ | ২৪০১ বার পঠিত
  • পুরানো কথা মনে করার একটা নেশা আছে। কেমন যেন দমকা হওয়ায় বইয়ের পাতার নিজের থেকে উল্টে যাওয়ার মতো। আমার মা বরাবরই সাজতে ভালবাসত, বিয়ের পর তার শাশুড়িসমা অল্পবয়সে বিধবা বড় ননদ ফতোয়া দিয়েছিলেন নখপালিশ পরা হাতে ভাশুর দেওরদের পাতে ভাত দেওয়া মানায় না।পারলারে গিয়ে আই ব্রো শেপ করা, ঠৌঁটে ডার্ক লিপস্টিক ওসব নাকি ভদ্রঘরের বৌয়েদের মানায় না। তার অবিবাহিত ননদরা কোথা থেকে যেন শুনেছিলেন, ছাদে কাপড় মেলতে গিয়ে কোথাও কোনও বাড়ীর বউ অন্যকারও সাথে প্রেম করত, আর তাই ছাদে উঠে আকাশ দেখা তো অনেক দূর কাপড় মেলাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল একসময় মানুষটার। দ্বিগুন বয়সী পতিদেবটিও দিদি দাদা বৌদিদের সাথে তালে তাল দিতে ভুলতেন না। গ্রাম থেকে শহরে বিয়ের পর কলেজপড়ুয়া মেয়েটিও মুখবুজে মেনে নিয়েছিল সবকিছু শান্তি বজায় রাখতে।একান্নবর্তী পরিবারে বছরে দুটো শাড়ী হত আমার মায়ের। একটা দুর্গাপুজোর ষষ্ঠীর দিন পরার ছাপা শাড়ি, যা সারাবছরের পরতে হত। আর একটা একটু ভাল যা কোথাও গেলে পরার জন্য। আমার বাবাকে কোনওদিন মাকে আলাদা করে কিছু কিনে দিতে দেখিনি। এমন না যে আমার বাবার কেনার ক্ষমতা ছিল না। বেশি বয়সে বিয়ে করায় দিদি বৌদিদের না দিয়ে শুধু নিজের বৌএর জন্য কিনলে লোকে কি বলবে ভেবে তার আর কেনা হত না। বড় হওয়ার পর মা আর আমি বেশ বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম। আমার পাল্লায় পড়ে তাঁর সাজগোজ আবার ফিরে এসেছিল। বড় টিপ, ডার্ক লিপস্টিকে সাজলে মাকে আমার বেশ ভাল লাগত। কতবার হয়েছে আমার জন্য লিপস্টিক কিনে তারপর মাকে দিয়ে দিতাম, বলতাম আমার ওই শেডটা ভাল লাগছেনা, কিংবা আমার নো মেকআপ লুকে ওটা যাচ্ছে না। আমি রোজগার করার পর থেকে মায়ের আলমারি ভর্তি দামি শাড়ী। মাকে দেওয়া মানে তো লুকিয়ে চুরিয়ে এক আধবার নিজের গায়েও ফেলা। শাড়ী আসলে আমার নিজেরও খুব পছন্দের পোশাক। তাই বন্ধু বান্ধব কেউ শাড়ী কিনতে য়াওয়ার সময় সঙ্গে যেতে বললে আমার কোনও ক্লান্তি থাকত না কখনও । আর দোকানে গেলেই শাড়ী দেখতে দেখতে মায়ের জন্য ঠিক একটা কিনে ফেলতাম। দামী শাড়ী কিনলে মা মাঝে মাঝে রাগও করত,আর আমি তখন যুক্তি দিতাম "যখন আমার অনেক টাকা হবে তখন যদি তুমি না থাকো, তার চেয়ে এখনই কিনি" ।সেবার আমার জাঠতুতো দাদার বিয়ের সময় কেনাকাটা করে ফেরার পর বিতান মজা করে জানতে চেয়েছিল, আমার জন্য কি কিনলাম, বেনারসি না কাঞ্জিভরম? আমিও মজা করে জানিয়েছিলাম, গরমে একটা সাদা কালো ঢাকাই পড়তে পারি তবে সেটা যদি ও কিনে দেয় তবেই।

    দাদার সাথে বিয়ে হয়ে আসার পর থেকে বৌদি আর আমার মধ্যে একটা মধুর সম্পর্ক তৈরী হয়েছিল। আমার সাজগোজ বা তথাকথিত অল্প স্বল্প মেয়েলিপনায় কোনও মাথাব্যাথা ছিল না তার। বরং মাঝে সাঝেই বৌদির সাজগোজের জিনিসে ভাগ বসাতাম আমি। আবার কোনও কিছু আনতে হলেও বা কোথাও যেতে হলেও দুজনেই যেতাম। আমাদের একান্নবর্তী পরিবার অনেক আগেই ভেঙে হাঁড়ি আলাদা ছিলই। কিন্তু মনিমা পুষুমা বা জ্যেঠিমার মত বৌদিও কখনও তার ছাপ ফেলতে দেয়নি আমার ওপর। আমার সব বন্ধুরাই ওর কাছেও আদরের ছিল। বিপ্রদাসের এক বোনের মুখের আদল ওর মত হওয়ায় বৌদি বিপ্রদাসেরও বোন হয়ে গেছিল। অর্চনের সাথে আমার বন্ধুত্বটা সময়ের সাথে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। হঠাৎই একদিন আমাদের বাড়িতে রাতে থাকবে বলে ও এসেছিল। সকালবেলা ঘুম ভেঙে উলুধ্বনি আর শাঁখের আওয়াজে ও হতভম্ব। ওকে যখন বললাম আজ বৌদির সাধ, দুপুরে একসাথে খেয়ে তারপর বেরোব ও আরও অবাক। একবাড়ি লোকজনের মুখোমুখি হতে গিয়ে যখন দেখল কারও কোনও মাথাব্যাথা নেই ওকে নিয়ে বা ওর সাজগোজ নিয়ে একটু হলেও অবাক হয়েছিল ও। ওর স্টিলেটো পড়ে হাঁটা বা এককানে ঝোলা দুল কিংবা গাঢ় লিপস্টিক কোনও কিছুতেই বাড়ীর লোক তো অনেক দূর আশেপাশের কারও মাথাব্যাথাই ছিল না। প্যান্টশার্ট পড়ে আসা অর্চন যখন আস্তে আস্তে শাড়ি পড়া শুরু করল তখন একবার দুর্গাপুজো প্রাঙ্গনে হঠাৎ দাদা বৌদির সাথে আমাকে দেখে এড়াতে চাইলেও বৌদি অর্চনকে হাত ধরে টেনে এনে শাড়িটার প্রশংসাই করেছিল।

    মধ্যবিত্ত বাঙালি বাড়িতে ছেলে রোজগার শুরু করলেই বাড়ীর লোক বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করে, আত্মীয় স্বজনের মাথাব্যাথাও বাড়তে থাকে, এ যেন "যার বিয়ে তার চার নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই।" আমার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

    একদিন আমাদের বাড়ীতে এসে খাওয়ার সময় দিদা আর বড়মামা আমার বিয়ে নিয়ে আলোচনা শুরু করতেই আমি জানালাম," আমি বিয়ে করব না আমার বিয়ে করার কোনও ইচ্ছেনেই। "আমার মায়ের স্বতঃস্ফূর্ত রিঅ্যাকশন, "কেন ডাক্তার দেখানোর দরকার"! আমি জানালাম না, "আমি তো সুস্থ" । মা এর এবার প্রশ্ন, তাহলে কি কাউন্সেলিং প্রয়োজন! আমার ছোট্ট উত্তর, "না" বড়মামার প্রশ্ন," তবে"! আমি সরাসরি জানালাম, "আমার আসলে ছেলেদের ভাল লাগে মেয়েদের ভাল লাগে না। " মায়ের মন্তব্য " তাতে কি? বিয়ে করতে গেলে এত কিছু ভাবতে হবে নাকি? "আমি জানালাম, "আমি বিয়ে করে একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করতে চাইনা।" সবাই চুপচাপ। আমার গ্রাম্য তথাকথিত পাঠশালা পাশ করা দিদা উত্তর দিয়েছিল, "একটা কোথায়,বল দুটো জীবন। তোর জীবনটাও জীবন ভাই।" বড়মামা মাকে বুঝিয়েছিল, "ও যখন বুঝেছে, তখন ওর জীবনটা ওকেই ভাবতে দে। এ নিয়ে ওকে কখনও জোর করিস না।" রাতের বেলাশুনে গম্ভীর হয়ে বাবা বলেছিল, "সমাজ বলে তো একটা ব্যাপার আছে।" মা বাবাকে বুঝিয়েছিল, "সমাজ আবার কি! সমাজ তো তুমি আর আমি, চুরি ডাকাতি তো করছে না। "আমাকে মুখে কিছু না বললেও কদিন গুম মেরে গিয়েছিল বাবা। আজ এত বছর বাদে বুঝি সেটা বাবার জন্য স্বাভাবিকই ছিল।

    এখানে আর একজনের কথা না বললেই নয় সে হলো কেটি। কেটি মানে কেতকীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল যে বছর প্রথম এইচ এই ভি সচেতনতা শিবিরে যোগ দিয়েছিলাম সেই বছর চন্দননগরের জগদ্ধাত্রীপুজোয় । কেটি আর কেটির বর শ্যামলদা। এদের দুজনের বয়সের বিস্তর ফারাক। অনেকটা ঠিক আমার বাবা মার মত। বাবা মা'দের কালে ওটাই স্বাভাবিক ছিল অনেকটা। কেটি প্রেমে পড়ে বিয়ে করেছিল। সবথেকে মজার কথা কেটির মুখের আদলে একটা অদ্ভুত মঙ্গোলিয়ান ছাপ আছে। অসম্ভব ফর্সা, ছোট করে কাটা চুল, আর অনাবিল হাসি ছোটখাটো চেহারার কেটি। ওদিকে দশাশই শ্যামলদা, জড়িয়ে ধরে আদর করতে ইচ্ছে হবে এমন বিশাল ভুঁড়ি কিন্তু বেড়ে পাওয়া যাবেনা, কেমন যেন রাশভারি অথচ ভীষণ সরল আড্ডাবাজ মানুষ। বিতান আলাপ করিয়েছিল ওদের সাথে। বয়সে বড় হওয়া সত্যেও কেটিকে কখনও দিদি বলিনি, অথচ আমি নাকি একদিনের বড় হলেও পারলে তাদের দাদা বা দিদি সম্বোধনে বয়স কমাই বলে বন্ধুরা আওয়াজ দেয়। বিতানের সঙ্গে কোনও একটা পেশাগত পড়াশোনা সূত্রে কেটির পরিচয়। বিভন্ন সংগঠনের সাথে সাথে আমাদের মত মানুষদের নিয়েও কাজ করার অল্পবিস্তর অভিজ্ঞতা কেটির ঝুলিতে।

    কেটিরা তখন থাকত পার্ক স্ট্রীটের কাছে। শ্যামলদারা ছিলেন খ্রিষ্টান। তথাকথিত বামুন বাড়ীর মেয়ে হয়ে শ্যামলদার তত্ত্বাবধানে সমস্ত আদবকায়দা রীতিনীতি শিখে নিতে কেটির কখনও অসুবিধা হয়নি। কেটির ছেলে দার্জিলিং এ বোর্ডিং স্কুলে থেকে তখন পড়াশোনা করত।

    মনে মনে কখনও সখনও নিজের নারীসত্ত্বা শরৎচন্দ্রের আমলে পড়ে থাকলেও, কেন জানিনা আধুনিক স্বয়ং সম্পূর্ণা নারীর আদর্শ আমাকে অনেক বেশি টানে। এই দ্বৈতসত্তা আজও আমার মধ্যে বিদ্যমান। বাড়িতে এত বেশি সাবেকিয়ানা ও গোঁড়ামি দেখতে দেখতে বড় হয়েছি, পাশাপাশি আমার মামাবাড়ি গ্রামে হলেও আভিজাত্য ও আধুনিকতার মিশেল ও শিক্ষার আলোয় সেখানে কোনও গোঁড়ামি কখনও দেখিনি। হয়তো এই দুয়ের মিশেল, সঙ্গে আমার স্কুল ও নাচ শিখতে গিয়ে তথাকথিত এলিটিজমের বোধ সব মিলিয়ে মিশিয়ে আজকের আমি। সুতরাং আধুনিক উদারমনা কেটি ও শ্যামলদা আমার অনেক বেশি কাছের হতে সময় লাগেনি।

    শ্যামলদা ভীষন মানুষ ভালবাসতেন। আর আমরা কেটির বন্ধুরা শ্যামলদারও বন্ধু । কিন্তু প্রয়োজনে শ্যামলদা আমাদের অভিভাবক ও। শুধু খ্রীষ্টমাস বা ইস্টার না, প্রায় পনেরো দিনে একবার সন্ধ্যাবেলা আমরা আড্ডা বসাতাম শ্যামলদা কেটির সংসারে। কেটি দেশ বিদেশের বিভিন্নরকম রান্না করতে ভালবাসত। শ্যামলদাও রান্না করতেন খুব ভাল। কোনও আড্ডাই খালিপেটে হত না, আর পেটুক আমি খেতে ভালবাসতাম দুজনেই জানত। সবথেকে মজার ব্যাপার কোনও লাজলজ্জার বালাই ছিল না ওদের কাছে আমার। আমার আর বিতানের সম্পর্কটা নিয়ে ওরাও খুব স্বচ্ছ্যন্দ ছিলেন। যদিও আমাদের গে লাইফে এদিক ওদিক মুখমেরে বেড়ানোর গল্পও ওরা জানতেন। কেটি শুধু আমার আর বিতানেরই বন্ধু না বিপ্রদাসও ওর ভাল বন্ধু। আমাদের সংগঠনেরও কেটি সে সময় সক্রিয় সদস্য। অনেক জরুরি আলোচনাও অনেক সময়ে আড্ডার ফাঁকে কেটির বাড়িতে বসে হত। বিপ্রদাস চেষ্টা করতেন বিভিন্ন জায়গা থেকে আর্থিক সহায়তা যোগাড় করে সংগঠনের উন্নতির পাশাপাশি সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের মত মানুষজনের সার্বিক উন্নতির।

    ভারতবর্ষে বিভিন্ন রাজ্যে এল জি বি টি আন্দোলনের গোড়ার দিকেই অশোক রাও কবির নেতৃত্বে মুম্বাইতে হামসফর ট্রাস্ট তৈরী হয় মুলত লেসবিয়ান গে বাইসেক্সুয়াল ট্রান্সজেন্ডার মানুষের অধিকারের দাবিতে। এই সমস্ত মানুষদের নিয়মিত কাউন্সেলিং, সামাজিক বঞ্চনা ও হিংসার বিরুদ্ধে জনমত তৈরী করা, তাদের স্বাস্থ্যের অধিকার নিয়ে কাজ করে আসছে হামসফর ট্রাস্ট শুরুর দিনগুলো থেকে। হামসফর ট্রাস্টের উদ্যোগে Intigrated Network for Sexual Minorities (INFOSEM) তৈরী হয়েছিল বিভিন্ন রাজ্যের কুইয়ার সংগঠনের মধ্যে দিয়ে কমিউনিটির উন্নতির জন্য। শুধু কমিউনিটি মবিলাইজেশনই না, কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ও সংসঠনগুলির সাংগঠনিক ক্যাপাসিটি বিল্ডআপের মধ্যদিয়ে বৃহত্তর সমাজের কাছে কমিউনিটির ইস্যুগুলোকে পৌঁছে দিতে এই নেটওয়ার্ক কাজ শুরু করেছিল। আমাদের সংগঠনও INFOSEM এর পার্টনার ছিল। হামসফর ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে কমিউনিটির মানুষজনের জীবনযাপনের ওপর গবেষনামুলক একটা প্রজেক্ট এবং পাশাপাশি, সংগঠনের সদস্যদের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এর জন্য অপর একটা প্রজেক্টের আর্থিক সহায়তা নিয়ে প্রারম্ভিক কথাবার্তা শুরুর খবর এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে একটা আলোচনা কেটির বাড়ির সান্ধ্য আড্ডায় উঠে এসেছিল যেদিন, সেদিন বিতান, বিপ্রদাস, কেটি, আমি ও আর একজন সদস্য সেখানে উপস্থিত ছিলাম। বিপ্রদাস আলোচনা শুরুর থেকে শেষ পর্যন্ত অনুরোধ করেছিলেন অফিসিয়াল কাগজপত্র না আসা পর্যন্ত এ আলোচনা যেন বাইরে না যায়। আসলে বিভিন্ন সময়ে শুরু থেকেই পশ্চিমবঙ্গে এল জি বি টি সংগঠনগুলোর মধ্যে আর্থিক অনুদান পাওয়া নিয়ে রেষারেষি ছিলই। তখনও ভারতবর্ষে ৩৭৭ বিদ্যমান।এল জি বি টি ইস্যুতে আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাও তো তখন অনেক কম ছিল। এমনকি যে সংগঠন তথা নেটওয়ার্কটায় আমার কর্মজীবনের শুরু, আর্থিক সহায়তা পাওয়ার উদ্দেশ্যে রাতারাতি তা তৈরির ইতিহাসেও একে অন্যকে বঞ্চিত করার মতো অনেক “কালিমাযুক্ত ঢাকঢাক গুড়গুড়” ছিল যে পরবর্তী কালে পশ্চিমবঙ্গে এল জি বি টি সংগঠনগুলোর মধ্যে আর কখনো সদ্ভাব তৈরী হলোনা। এমনকি আজ যে কমিউনিটির মানুষ একে অন্যকে বিশ্বাস করেননা তার কারণও এর পিছনেই নিহিত আছে বলে আমি মনে করি। আর তাই " না আঁচালে বিশ্বাস নেই" এই আপ্তবাক্যে বিশ্বাসী ছিলাম সকলেই কমবেশি "। অথচ এইচ আই ভি এডসের বাইরে গিয়ে, সংগঠনের জন্য সরাসরি আর্থিক সহায়তা আসুক এটা আমরা সকলেই চাইতাম।

    কয়েকদিনের মধ্যেই অন্য এক সংগঠনের সদস্য রাতের বেলা টোন করে ফোন করেছিল, কিরে তোদের তো আলাদা প্রজেক্ট আসছে, তোদের সংগঠনের এখন আলাদা ব্যপার! অবাক হয়েছিলাম ভীষন, কথায় কথায় জানতে পেরেছিলাম বিতানের হাত ধরেই খানিক আগেই খবরটা পেয়েছে সে। এটাও বলতে ভোলেনি, শারীরিক সম্পর্কের মুহুর্তে এ খুশির খবর বিতান তাকে দিয়ে বসেছিল। মজার বিষয় সেদিন যে বিতান ওই মানুষটার বাড়ী গেছে জানতামই না। আমাকে বলেছিল অন্য জায়গায় যাবে কাজের প্রয়োজনে। ভীষনই খারাপ লেগেছিল। সেদিন থেকেই বিতানের ওপর শ্রদ্ধাটা চিড় খেয়েছিল। নৈতিক দূরত্ব শুরু হয় তখন থেকেই।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৮ জুলাই ২০২১ | ২৪০১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ভাবনা | 165.225.***.*** | ০৮ জুলাই ২০২১ ২১:৫৭495677
  • এটা পড়ছি। আমি নিশ্চিত, আরো অনেকেই পড়ছেন। বই হয়ে বেরোলে জনপ্রিয় হবার সম্ভাবনা। 


    তাই ভাবছিলাম, নামগুলো কি আসলই রেখে দিচ্ছেন না পাল্টাচ্ছেন? মানে, যা করছেন, অভিঘাত ভেবেই করছেন নিশ্চয়ই।  

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন