পায়ের কাছে পড়ে থাকা কাগজটা একপাশে সরিয়ে রাখল সুমন্ত। ঘরটা খাঁ খাঁ করছে। রেডিওটা অনেকক্ষণ ধরে বকবক করে যাচ্ছিল। কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে আবার বন্ধ করে দিল সুমন্ত। ওদিকে টিকটিক করে বেজে চলেছে ঘড়ি।জানালায়ে পর্দাটা অস্থির হয়ে উঠেছ।এখন বসন্তকাল। বাতাসে মিহি মন খারাপের গন্ধ। জানালা দিয়ে সে একবার বাইরের দিকে তাকাল। বিষণ্ণ ল্যাম্পপোস্টের আলোটা ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। নিজের মধ্যে অন্য কোনও মানুষ এ সময়ে জেগে ওঠে। তাকে সারাদিন চেনা যায় না। সে পারে সারারাত অজস্র শব্দ গুলির সঙ্গে শুয়ে থাকতে। অফিস থেকে বেরিয়ে আজ একবার কবরখানার দিকে গিয়েছিল সুমন্ত। সঙ্গে ছিল অনন্যা। অনন্যার পরিচয় ঠিক ভাবে বলা বোধহয় সুমন্তর পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ এখনও অনন্যাকে চিনতে পারেনি সুমন্ত। কিন্তু নিজেকে উজাড় করে দিতে সুমন্ত একবিন্দু কার্পণ্য করেনি। মিশেমিশে গন্ধের ভিতর শুয়ে থাকা এক একটি কবরের মানুষগুলো হয়তো চেয়ে থাকে কেবলই অন্ধকারের দিকে। হয়তো আরেকবার সূর্যের দিকে তাকাতে তার ইচ্ছে হয়। এমন এক অবস্থা যেখানে সমস্ত জানালাই বন্ধ থাকে। অনেক সময়েই জীবনটাকেও এমনই মনে হয়ে সুমন্তর। এক বিশাল কবরখানা যেখানে সামান্য জেগে থাকা আকাশের নামই বোধহয় বেঁচে থাকার উৎস। মুখটা বালিশের মধ্যে গুঁজে কিছুক্ষণ ঘুমনোর চেষ্টা করল সুমন্ত। ঘুমও কি একধরণের মৃত্যু? আস্তে আস্তে সব রাতই শেষ হয়ে আসে।আর তখনই কি আসল ঘুম শুরু হয় সুমন্তর?
অ্যালার্মটা বেজে বেজে থেমে গেল।বহুবছরের পুরানো কাজের লোক মিতালি মাসি বেশ কয়েক বার বেল বাজাতে সুমন্ত উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিল। বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছিল মিতালি মাসিকে। এই এক মহিলা। তথাকথিত কোনও সম্পর্ক নেই। খুব বেশি কথাও যে বলে এমনটাও নয়। শুধু তার মুখের দিকে তাকালেই বোঝা যায় সেদিনে তার মনের অবস্থা । বাপি, অর্থাৎ সুমন্তকে কি কথা বলতে গিয়েও সে বলতে পারছে না। এ বার সুমন্ত পাল্টে ফেলবে তার পোশাক। মুখোশ সেঁটে নেবে। সুমন্তর সম্পর্কে একটা কথা তো বলাই হয়নি... সুমন্তর অনেক নাম। একটা নাম তার বাড়ির। যেখানে সে বাপি। একটা নাম তার সুলগ্নার সঙ্গে সম্পর্কের। সেখানে সে কেবলিই সুমন্ত। আর তার একটা অফিসিয়াল নামও আছে। সেখানে সে অনিরুদ্ধ সেন। সিইও। ব্যস্ত কর্পোরেট। বিবাহিত। নিঃসন্তান। যুবক। স্মার্ট এবং চুরান্ত আধুনিক। আরও একটা পরিচয় তার আছে,যা এখনও পর্যন্ত অফিসিয়ালি রেকর্ড করা যায়নি। সে মানসিক ভাবে অসুস্থ। সাইকোলজিক্যাল ভাষায় তখন তার নাম স্কিৎজোফ্রেনিক। আমরা এ বার একটু স্কিৎজোফ্রেনিক সেনের সঙ্গে কথা বলব!
স্কিৎজোফ্রেনিক সেন
- আপনি কি কখনও নিজের সঙ্গে কথা বলেন?
- মাঝেমাঝে
- তখন কি মনে হয়ে আপনার সঙ্গে অন্য কেউ আছে?
- কি বলুন তো! আমি তো কখনও নিজেকে একা ভাবি না।
- না! একা থাকা আমার অভ্যেস হয়ে গেছে।
- আপনার স্ত্রী আপনার সঙ্গে থাকেন না?
- না।
- কেন বলুন তো?
- মানে?
- মানে, আমি জানতে চাইছি আপনার সঙ্গে আপনার স্ত্রীর সম্পর্ক কেমন?
- বুঝতে পারছেন না?
- আহা! ঠিক কী কারণে আপনার সঙ্গে আপনার স্ত্রী থাকেন না? আপনাদের সেক্স লাইফ......
- না না ! ও সব কিছু নয়। অনেকের সঙ্গে তো থাকতে গিয়ে বোঝা যায় যে থাকতে পারা যায় না। সেরকমই আর কী!
- কিন্তু আপনার প্রবলেমটা কী হচ্ছে?
- প্রবলেমটা হচ্ছে মাঝেমাঝেই আমি আমার থেকে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছি। যা করা উচিত নয় তাই করছি। অফিসে সমস্যা হচ্ছে।আর যে সমস্যাটা হচ্ছে তা হল আমি সবসময়ই কোনও না কোনও স্বপ্নের মধ্যে থাকছি। এটা হয়তো কেউ বুঝতে পারছে না,কিন্তু আমি তো বুঝতে পারছি। আর কিছুতেই আমি এই ড্রিম থেকে বেরতে পারছি না। যখন একলা বাড়িতে থাকছি, তখন বুঝতে পারছি যে আমি তার সঙ্গেই থাকছি যাকে নিয়ে আমার সারা দিন কাটছে। আর সত্যি কথা বলতে কী স্ত্রীর সঙ্গে না থাকাটা আমার কাছে কোনও ব্যাপারই নয়। আমি যেমন তাকে ভালোবাসি তেমনই আমি ভালোবাসি আরেকজনকেও। কিন্তু তাকে ছাড়াও দিব্যি রাতগুলো কেটে যাচ্ছে আমার।
- আপনি যে এই আরেকজনের কথা বললেন। তার সঙ্গে আপনার ঠিক কীরকম সম্পর্ক?
- বন্ধুত্বের। আমার একমাত্র বন্ধু বলতে পারেন এবং বন্ধুর চেয়েও আরও অনেক কিছু।
- মানে আপনার তার প্রতি একটু সফট কর্নারই আছে।
- দেখুন এই সফট কর্নার ব্যাপারটা আমি ঠিক বুঝি না। শুধু এটুকু বলতে পারি,আমি অনেক সময়ই তার সঙ্গে কথা বলি। যখন সে থাকে না তখনও । আমি তার উপস্থিতি টের পাই। তার শরীরের গন্ধ, চাহনি, গলার স্বর শুনতে পাই। এমন অনেক কথা হয় তার সঙ্গে তার অনুপস্থিতিতে যা তার উপস্থিতিতে হয় না। অনেকটা ঈশ্বর চেতনার মতো।
- হুম।
কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন ডাক্তার। আর আমাদের স্কিৎজোফ্রেনিক সেন বাড়িতে ফিরল একটা ভারি প্রেসক্রিপশন নিয়ে। অভিমানে তখন তার চোখ দিয়ে জলও বেরোচ্ছিল না। কই, সুলগ্নার সঙ্গে তো এমনটা হতো না!
অনন্যা
সেদিন ফেরার পথে ডিনার করতে করতে অনন্যা আবিস্কার করল তার নির্জন, অর্থাৎ সুমন্ত যে নামে অনন্যার কাছে পরিচিত, সে এক আপাদমস্তক শিশু। অনন্যা এমন ভাবে কখনই জীবনকে দেখেনি। যেভাবে নির্জনের জীবনে অনন্যা , অনন্যার জীবনে নির্জন সেভাবে নেই। আবার নেই বললেও ভুল হবে।কিন্তু অনন্যার জীবন কখনই কাউকে ঘিরে আবর্তিত হয় না। মাঝে মাঝে নির্জনের শ্বাসরুদ্ধকর অধিকারবোধে অনন্যা অস্থির হয়ে ওঠে। রূপমের সঙ্গে সিনেমা দেখতে যাওয়ার ব্যাপারটা নির্জন মেনে নিতে পারে নি। আর অনন্যাও মেনে নিতে পারে নি সে কার সঙ্গে সিনেমা যাবে, কার সঙ্গে মার্কেটিং –এ যাবে, তার সঙ্গে নির্জন ও তার সম্পর্কের বিরোধিতাটা কোথায়ে? নির্জনকে সেও ভালবাসে, কিন্তু চায় না নির্জনের সঙ্গে সম্পর্কটা কোনও তথাকথিত পরিণতির দিকে এগোক। কারণ সেই ধরনের সম্পর্কে তার বিশ্বাস নেই। বাতানুকূল রেস্টুরেন্টে খাবারের অর্ডার দিয়েই তাই অনন্যা বলে উঠেছিল – দেখো আমি যদি কারুর সঙ্গে কোথাও যাই তাহলে কী তুমি কষ্ট পাবে ?
আমাদের নির্জন সেন সঙ্গে সঙ্গে স্কিৎজোফ্রেনিক সেন হয়ে উঠলো ।
- না তো!
- না,তুমি পাবে, আর তাই আমি কোথায় কার সঙ্গে যাচ্ছি সে বিষয়ে তোমাকে কিছু বলব না।
- দ্যাখো, সম্পর্কের মূল জায়গাটিই হলো স্বচ্ছতা।
- হ্যাঁ বলছি তো, আমি বলব না এ বিষয়ে, আমি যথেষ্ট স্বচ্ছ।
- কেন বলছ?
- কারণ আমি তো যাবই। আর কার সঙ্গে যাচ্ছি এটা বললে তুমি চাপ খেয়ে যাবে। তার চেয়ে এটুকু বলা ভাল যে আমি যাচ্ছি কিন্তু কার সঙ্গে যাচ্ছি টা বলব না। কারণ আমার যাওয়া নিয়ে তোমার প্রবলেম নেই। প্রবলেম কার সঙ্গে যাওয়া তা নিয়ে।
ট্যাক্সিতে উঠে নির্জনের যেমন একই সঙ্গে ভাল লাগছিল তেমনই খারাপও। অনন্যাকে কি নির্জন ভালবাসে, না কি সুমন্ত তার জীবনে পেতে চায়? অনন্যাকে অধিকার করতে চায় কে,- সুমন্ত, নির্জন না স্কিৎজোফ্রেনিক সেন? আর বাপি, - সে তো কথা বলেই যায় অনন্যার সঙ্গে। তাহলে কি অনন্যা তার জীবনে থাকা সত্ত্বেও নেই? না কি নির্জনের জীবন, বাপির জীবন একই হয়ে গেলেও সুমন্ত আর স্কিৎজোফ্রেনিক সেনের জীবনে অনন্যা এক প্রহেলিকা মাত্র? নির্জন উত্তর খোঁজে। উত্তর খুঁজেই চলে। আর শান্ত হয়ে যায়।
সুলগ্না
আমার সঙ্গে ওর কেন থাকা সম্ভব হলো না? এর উত্তর আমি দিতে পারব না। এখনও আমার কাছে ও রয়েছে। কারণ ও এখন আমার সঙ্গে নেই। সুমন্ত আমার সঙ্গে কোনও দিন এমন কোনও ব্যবহার করেনি, যার জন্য ওকে আমি ছেড়ে এসেছি। ওকে ছেড়ে আসার কারণ ও এমন এক জগতে বসবাস করে, যেখানে ও নিজেও হয়তো থাকে না। আমি জানি না ও কবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে? হয়তো কোনও দিনই হবে না। হয়তো এ ভাবেই একটা জীবন শেষ হয়ে যাবে। হয়তো এ ভাবে সমস্ত জীবন শেষ হয়ে যায়। আর যন্ত্রণা শোনা বা বোঝার মতো মানসিকতা ওর ছিল না। সুমন্ত একজন নয়। আর আমার পক্ষে অনেকগুলো লোকের সঙ্গে বাস করা অসম্ভব।
সুমন্ত সেন
আর কেউ না জানুক সুমন্ত জানে সারারাত ধরে কীভাবে বেড়ালের আর্তনাদ শুনতে শুনতে তার ঘুম আসে না কখনও। কীভাবে একটি বিড়ালের নির্ঘুম কান্নার সঙ্গে চলতে থাকে তার নিঃসঙ্গতার প্রতি মুহূর্ত। গভীর রাতে বিছানার উপর যখন উঠে আসে স্কিৎজোফ্রেনিক সেন আর সুমন্ত তখন এক অদ্ভুত আলাপচারিতা হয় তাদের মধ্যে। মাঝে মাঝে অনন্যাও চলে আসে সেখানে, আসে সুলগ্নাও।
- তুমি কি বুঝতে পারছ না আসলে তুমি একজনকে পিষে ফেলতে চাইছ?
- কোথায়ে পিষে ফেলছি?
- শোনো , তুমি বলছ কিছুই লুকোওনা তুমি, কিন্তু আসলে তো তুমি আমাকে ভালোবাসো। আর জানো এ কথা বললে তোমার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্কই থাকবে না। অনন্যা বলে উঠে।
- না, কাউকেই আসলে ভালবাসে না। ও চায় ওর কথা কথাগুলোই বলুক সবই, ওর মতো করে। সুলগ্নার এই কথায় হো হো করে হেসে ওঠে সুমন্ত।
- দ্যাখো, আমি সত্যিই তোমাদের ভালোবাসি। কিন্তু আমার ভাবনাতেও একা হয়ে জেতে পারি না। আমি আর কি নিয়ে বাঁচব বলো? আমি...আমি...
- ও স্কিৎজোফ্রেনিক সেন, ইউ আর মাই ফো, প্লিজ স্টপ ফর মাই সেক।
- ছোটবেলা থেকে কে তোমার সঙ্গে পৃথিবীটা চিনতে শিখেছে? বলত তুমি কার সঙ্গে কথা বল? কার কাছে নিজের না লেখা চিঠিগুলো পড়ে শোনাও...
- হ্যাঁ তুমি, তুমি আমার সুমন্তকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছ...
- আর আমার নির্জনকেও ...
- আহ! আমি না থাকলে তোমার সুমন্তও থাকত না আর তোমার নির্জনও থাকত না। আমি যা জানি তোমরা কেউ তার কিচ্ছুই জানো না। আমি জানি ওর মুহূর্তগুলিকে। তোমরা জানো না। আমি জানি ওর নীরবতাগুলিকে। তোমরা জানো না। তোমরা তোমাদের মতো করে তোমাদের চেনার কথা বলছ, কিন্তু ওর মতো করে ওকে চেনার চেষ্টা কোনও দিনই করো নি... আমার জন্যই রাতের পর রাতও বেঁচে থাকে...। আমার জন্যই তোমরা আসো... এখনও আমার জন্যই তোমরা এসেছ... আর আমি না থাকলে ...। যদি এই মুহূর্তেই আমি চলে যাই, তো সুমন্ত সেন এর কাছে না থাকবে নির্জন, না থাকবে অনন্যা, না থাকবে সুলগ্না...
- আমি বুঝতে পারছি না আমি কোথায়...
- তুমি কি বুঝতে পারছ তুমি কে?
- নির্জন, নির্জন তুমি জানো না তুমি কে? আমার দিকে তাকাও। স্বাধীন এক সম্পর্কের দিকে আমরা এগিয়ে চলেছি। দ্যাখো, তাকাও... কোনও বাধা নেই, কোনও দায়িত্ব নেই...
- সুমন্ত, সুমন্ত তাকাও...
- সুমন্ত আমি চলে গেলে তোমার একাকী রাতগুলো কোথায় কার সঙ্গে কাটবে?
কার সঙ্গে কথা বলবে তুমি? আমিই নির্জন, আমি অনন্যা, আমি সুলগ্না... আমিই সেই রাতজাগা কান্নাগুলো... দ্যাখো, এই বসন্তের হাওয়ায় সব পাতাগুলো উড়ছে...... অনুভব করো ওরা আর ফিরে আসবে না কখনও ......
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১১
কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। আর খুঁজে পাওয়া যায়নি সুমন্তকে। না কি নির্জনকে? না কি অনিরুদ্ধ সেনকে? যার সম্পর্কে কিছুই বলা হলো না। কারণ সে তো আপাদমস্তক মুখোশ। একটা ভান। সে আসে না কোথাও। সে আসে না কোথাও। সে মৃত। শুধু কেউ কেউ বলে অনন্যার কথায় মাঝেমাঝে সুমন্ত চলে আসে। সুলগ্নার কথায় চলে আসে নির্জন। আর মিস্টার স্কিৎজোফ্রেনিক সেন? প্রতিদিন তার টেলিফোন আসে শহরের বিভিন্ন বাড়িতে। এক হিম শীতল স্রোত বইতে থাকে সারা কলকাতা শহরে। শোঁ শোঁ করে হাওয়া বইতে থাকে গাছের ভিতর দিয়ে। কেউ কেউ একলা হয়ে যায়। শোনা যায় অনেকটা সুমন্তর মতো দেখতে, অনেকটা নির্জনের মতো দেখতে কেউ কেউ রাতের কলকাতা শহরে ঘুরে বেড়ায়ে। অচেনা ফকিরের মতো।
ছবিঃ মৃগাঙ্কশেখর গাঙ্গুলি
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।