পঞ্চাশের মন্বন্তরের প্রকোপ তখন তুঙ্গে। কমিউনিস্ট পার্টির পি সি যোশীর আহ্বানে দুই তরুণ চষে বেড়াচ্ছেন সারা বাংলা। সুনীল জানার হাতে রয়েছে ক্যামেরা আর শিল্পী চিত্তপ্রসাদ সঙ্গে নিলেন তাঁর স্কেচবুক। উদ্দেশ্য, কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র "পিপল'স ওয়ার" পত্রিকার জন্য দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতাকে নথিবদ্ধ করা। ঘুরতে ঘুরতে চিত্তপ্রসাদ এসে পৌঁছলেন হুগলি জেলার জিরাটে, ইচ্ছে ছিল শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটে দর্শন করা, আর নিজের চোখে দেখে নেওয়া 'বেঙ্গল রিলিফ কমিটি'র প্রধান নিজের গ্রামে ত্রাণের কী ব্যবস্থা করেছেন।
বলাগড় অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে জিরাটের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় চিত্তপ্রসাদ দেখলেন যে, গত বছরের বিধ্বংসী বন্যার পর পরই এই দুর্ভিক্ষ একেবারে শিরদাঁড়া ভেঙে দিয়েছে এলাকার মানুষের। রাজাপুর গ্রামের ৫২টি পরিবারের মধ্যে ততদিনে কেবলমাত্র আর ৬টি পরিবার রয়ে গেছে। এদিকে আবার অধিকাংশ গ্রামবাসী শ্যামাপ্রসাদের নাম না শুনলেও, প্রত্যেকেই জানালেন যে "আশুতোষের ছেলের" থেকে ছিটেফোঁটা সাহায্যও পাননি গ্রামের মানুষ। বরং সরকারের তরফ থেকে মাস দুয়েক খাবারদাবার পেয়েছেন তাঁরা, আর খাদ্যশস্য এবং সামান্য আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ফেডারেশন, মুসলিম স্টুডেন্টস লিগের ছাত্রদের উদ্যোগে। শ্যামাপ্রসাদের রিলিফ কমিটি দেশের নানাপ্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ডোনেশন পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই টাকা যে এই অঞ্চলের মানুষের কাজে লাগেনি তা একনজর দেখেই বুঝে গেলেন চিত্তপ্রসাদ। কিন্তু জিরাটে পৌঁছে যা দেখলেন, তা সত্যি মেনে নিতে পারেননি তিনি। দেখলেন দুর্ভিক্ষ-পীড়িত বাকি গ্রামের মতনই আশুতোষের আদি বাড়ির ভগ্নপ্রায় অবস্থা আর তার মধ্যেই, ওই দুর্ভিক্ষের বাজারে, শ্যামাপ্রসাদ তৈরি করছেন প্রাসাদোপম বাগান বাড়ি। সেখানে আবার মাঝেমাঝেই ছুটির দিনে কলকাতা থেকে বন্ধু-বান্ধব এসে ফুর্তি করে সময় কাটিয়ে যান।
১৯৪৩ সালের এই দুর্ভিক্ষ কিন্তু খরা বা অনাবৃষ্টি বা খারাপ ফসল হওয়ার কারণে হয়নি, হয়েছিল সম্পূর্ণভাবে ব্রিটিশ সরকারের গাফিলতিতে। একেই জাপানের কাছে বার্মার পতনের ফলে সেখান থেকে চালের আমদানি বন্ধ হয়ে গেল। তার ওপর যুদ্ধের সৈন্যদের জন্য জমা করা হয়েছিল প্রচুর খাদ্যশস্য এবং বাকি যা ফসল ছিল তার সুষম বণ্টন করা হল না বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে। কলকাতা শহরের বাসিন্দাদের জন্য এবং কলকারখানার শ্রমিকদের জন্য চালের বন্দোবস্ত হলেও, খাবার পৌঁছল না রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলগুলিতে। এর সঙ্গে শুরু হল মজুতদারদের চালের কালোবাজারি যা খাদ্যদ্রব্যের দাম নিয়ে গেল গরিব মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। খাবারের অভাবে গ্রামবাংলার মানুষ চলে আসতে লাগলেন শহর কলকাতায়। প্রতিদিন মৃতদেহের সংখ্যা বাড়তে লাগলো শহরের রাস্তাঘাটে। কলকাতা শহরের এই চরম দুরবস্থার ছবি সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ছাপালেন স্টেটসম্যান সংবাদপত্রের সম্পাদক ইয়ান স্টিফেন্স। সেসব ছবি সাড়া জাগাল গোটা বিশ্বে। এই অবস্থায় সরকারি ত্রাণব্যবস্থা যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন বেসরকারি ত্রাণ শুরু হল শ্যামাপ্রসাদের পরিচালনায়। তিনি 'বেঙ্গল রিলিফ কমিটি' বা বিআরসির রিলিফ কমিশনার নিযুক্ত হলেন এবং এই দুর্ভিক্ষের হাহাকারের মধ্যেও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার সুযোগ ছাড়লেন না। ত্রাণকেন্দ্র স্থাপন করলেন কেবলমাত্র সেই সব গ্রাম এবং ওয়ার্ডে যেখানে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। বিআরসির সঙ্গে সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদের তত্ত্বাবধানেই তৈরি হলো হিন্দু মহাসভা রিলিফ কমিটি। বিআরসির উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও আর একটি কমিটির প্রয়োজনীয়তার কারণ হিসেবে বলা হল যে অনেক মানুষ চাইছেন যে তাঁদের দানের অর্থ যেন কেবলমাত্র হিন্দু মহাসভা মারফত খরচ করা হয়। কমিটির বক্তব্য ছিল, যেহেতু সরকারি ত্রাণকেন্দ্রের ক্যান্টিনগুলোতে বেশিরভাগ রাঁধুনি মুসলমান, তাই হিন্দুদের নাকি সেখানে খাবার ব্যাপারে আপত্তি আছে। হিন্দু মহাসভার নিজেদের ক্যান্টিনে কেবলমাত্র হিন্দুদের রান্না করা খাবার পরিবেশন করা হতো । মহাসভার দাবি ছিল যে, রান্না খাবার না দেওয়া হলেও, মুসলমানদের পুরোপুরি বঞ্চিত না করে তাঁদেরকে দেওয়া হয় কাঁচা শস্য। সাংবাদিক টি. জি. নারায়ণ মেদিনীপুরে মহাসভার একটি হাসপাতালে গিয়ে দেখেন যে বাইরে হাজার হাজার মরণাপন্ন মানুষ থাকা সত্বেও, হাসপাতালের চল্লিশটির মধ্যে পনেরোটি শয্যা খালি। তবে গরিব রুগীর চিকিৎসা হোক না হোক, হাসপাতালের প্রত্যেকটি ঘর কিন্তু আলোকিত করে রেখেছে শ্যামাপ্রসাদের ফ্রেমে বাঁধানো পোর্ট্রেট।
যে ভয়ঙ্কর সময়ে প্রায় ৩০ লক্ষ বাঙালি না খেতে পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন, সেই সময় শ্যামাপ্রসাদের দুশ্চিন্তার কারণ উচ্চবর্ণের আধপেটা-খাওয়া হিন্দু কী করে মুসলমান রাঁধুনির হাতের রান্না সরকারি ক্যান্টিনে খেতে পারেন। এর সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভিক্ষের ত্রাণকার্য নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ চলতেই থাকে - হিন্দু মহাসভাও আঙুল তুলতে থাকে মুসলিম লীগ নিয়ন্ত্রিত বাংলার গভর্নমেন্টের দিকে, তাদের বক্তব্য সরকারি ত্রাণকার্য্যে মুসলিম জনগণের প্রতি পক্ষপাতিত্ব স্পষ্ট ।
অথচ মুসলিম লীগের সঙ্গে হিন্দু মহাসভার সম্পর্ক কিন্তু খুব অল্প দিনের ছিল না। ভারতকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে ফেলার প্রতিবাদে ১৯৩৯ সালে যখন কংগ্রেসের নেতারা মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন, তখন হিন্দু মহাসভা মুসলিম লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জোট সরকার বানান সিন্ধ এবং উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে। ১৯৪১ সালে বাংলায় শ্যামাপ্রসাদ ফজলুল হকের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী হিসেবে যোগদান করেন, সেই ফজলুল হক, যিনি বছরখানেক আগেই লাহোরে মুসলিম লীগের সভায় 'পাকিস্তান প্রস্তাব' গ্রহণ করার দাবি জানান। সাভারকার আর শ্যামাপ্রাসাদের নেতৃত্বে হিন্দু মহাসভা জোর কদমে চালাতে থাকে গান্ধীজির 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনের বিরোধিতা। ১৯৪২-এর ২৬ জুলাই বাংলার গভর্নর জন হার্বার্টকে চিঠি লিখে শ্যামাপ্রসাদ জানিয়েও দেন কংগ্রেসের এই আন্দোলন মোকাবিলা করার জন্য ঠিক কিরকম কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তারপর ১৯৪৩এর ৩রা মার্চ সিন্ধের মন্ত্রিসভায় ভারতের মুসলমানদের জন্য যখন পৃথক রাষ্ট্রের দাবি পাস করা হয়, হিন্দু মহাসভা কিন্তু সরকার থেকে বেরিয়ে আসেনি এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে।
আজ থেকে বছর পাঁচেক আগে দিল্লির নেহেরু মেমোরিয়ালে শ্যামাপ্রসাদের ওপর একটি প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। সেখানে অমিত শাহ তাঁর ভাষণে বলেন যে শ্যামাপ্রসাদ নেতৃত্ব দিয়ে থাকলে সমগ্র কাশ্মীর আজ ভারতের দখলে থাকত।
প্রোপাগান্ডা এরকমই হওয়া উচিত - রাজনৈতিক সুবিধা পেতে যদি মিথ্যের আশ্রয় নিতেই হয়, তাহলে সেই মিথ্যাকে সুকৌশলে এমনভাবে পেশ করতে হবে কতকগুলো আংশিক সত্যকে পাশে রেখে, যাতে সত্যি-মিথ্যের ফারাকটুকুও আর করা না যায়। আসলে, কাশ্মীরের যতটুকুও আজ ভারতের দখলে আছে, সেটুকুও রয়েছে কিন্তু নেহেরুর জন্যই। কাশ্মীরকে স্বাধীন ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার কোনও তাগিদ হিন্দুত্ববাদীদের কোনকালেই ছিল না। বলরাজ মাধকের প্রচেষ্টায় আর এস এস-এর জম্মু শাখা স্থাপিত হয় ১৯৩৯ সালে আর কাশ্মীর শাখা ১৯৪৪এ। কাশ্মীরের ডোগরা পরিবার শুরু থেকেই এই প্রচেষ্টায় শরিক। প্রেমনাথ ডোগরা ছিলেন জম্মু আর এস এস-এর সঙ্ঘচালক, যিনি আবার ছিলেন জম্মু কাশ্মীর হিন্দু সভার একজন প্রধান সদস্যও। লোকসভাতে দাঁড়িয়ে সমগ্র কাশ্মীর ভারতের অধীনে না থাকার জন্য অমিত শাহের নেহেরুকে দোষারোপ করা যাঁরা শুনেছেন তাঁরা অবাক হবেন শুনে যে, দেশভাগ যখন একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গেল ১৯৪৭-এর মে মাসে, তখন এই হিন্দু সভা কিন্তু মহারাজের পাশে থেকে ভারতে যোগদান না করে কাশ্মীরকে স্বাধীন রাখার জন্য সোচ্চার হয়েছিল।
স্বাধীন ভারতের প্রথম শিল্পমন্ত্রী হিসেবে শ্যামাপ্রসাদের যে 'বিশাল অবদান' রয়েছে সে কথা নেহেরু মেমোরিয়ালের ওই প্রদর্শনীতে বেশ ফলাও করেই বলা হয়েছিল। এও দাবি করা হয়েছিল যে ভিলাই ইস্পাত কেন্দ্র গড়ে ওঠার পেছনেও নাকি তাঁরই হাতযশ। বস্তুত ভিলাই ইস্পাত কেন্দ্র স্থাপিত হয় ১৯৫৫ সালে আর শ্যামাপ্রসাদ মারা যান তার দু'বছর আগেই। সদ্য স্বাধীন ভারতের শিল্পায়ন শ্যামাপ্রসাদের হাত ধরে হয়েছে, এই ন্যারেটিভ বর্তমান সরকারের 'মেক ইন ইন্ডিয়া'র ছবি কিছুটা হলেও শক্তিশালী করবে ঠিকই, কিন্তু এই প্রদর্শনীর আগে পর্যন্ত নেহেরু-মহলানবীশ প্রকল্পের ধারেকাছে কোথাও যে শ্যামাপ্রসাদের আনাগোণাও ছিল, সে কথা কেউ বোধহয় ঘুণাক্ষরেও টের পাননি ।
এখানেই শেষ নয়। আর এক চমকপ্রদ ন্যারেটিভ তৈরি করা হয়েছে শ্যামাপ্রসাদকে ঘিরে - তিনি নাকি কলকাতা শহরকে বাঁচিয়েছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হওয়ার থেকে। বস্তুত এরকম কোনো প্রস্তাব কখনোই আসেনি। বরং বাংলার প্রধানমন্ত্রী সুহরাবর্দি আর শরৎ বোস, কিরণ শংকর রায়ের মতন কংগ্রেস নেতারা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন বাংলাকে অবিভক্ত এবং স্বাধীন রাখার। অন্যদিকে আশুতোষপুত্র চেয়েছিলেন বাংলাকে দুটুকরো করতে - আর তাই মাউন্টব্যাটেনকে গোপন পত্র মারফত আর্জি জানিয়েছিলেন যে দেশভাগ না হলেও যেন অন্তত বাংলাকে ধর্মের ভিত্তিতে দুভাগ করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কি একবার প্রশ্ন করা যায় না, যে হিন্দু মহাসভার যদি প্রকৃতপক্ষেই আপত্তি ছিল দেশভাগ করা নিয়ে, তাহলে স্বাধীনতার পর শ্যামাপ্রসাদ নেহরুর মন্ত্রিসভায় যোগদান করলেন কেন? তাঁর রাজনৈতিক জীবনের এইসব অপ্রীতিকর সত্যিগুলো ধামাচাপা দিয়ে হিন্দু মহাসভার তখনকার কাণ্ডকারখানা বাঙালির কাছে গ্রহণযোগ্য করে শ্যামাপ্রসাদকে বাংলায় বিজেপির আইকন করে তোলার কাজটা খুব একটা সহজ হবে না। তবে পয়সার জোরে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে ডাহা মিথ্যেকে সত্যির রূপ দেওয়ার কঠিন কাজটা এই জাতীয় ফ্যাসিস্ট দলগুলি আগেও করে দেখিয়েছে। দেখা যাক, এক্ষেত্রে জল কতদূর গড়ায়।
আমার মনে হয় স্যর কড়কে দিয়েছেন, শ্যামাকে ভিতু বলা! তাই এখন না চেনার ভান করতে হচ্ছে।
dc র মাঝে মাঝে ছোটো ছোটো চাটনি, আমচুর, হজমি গুলো বেশ লাগছে।
সিএস ছদ্মনামে লেখার যে সুবিধাগুলো উল্লেখ করছে, সেগুলোর সুবিধা কি সে নিজেও পাচ্ছে না? আর শুরুতে তুমি-তুই আমি করিনি। ওদিক থেকে শুরু হবার পর আমিও করেছি। এছাড়া সমলিঙ্গের মানুষের ভেতর পাশাপাশি বয়স হলে এত আপনি আপনি করার বা কি আছে? আমি মেয়ে হলেও না হয় একটা কথা ছিল। অবশ্য তোমরা ছেলে কিনা তা-ও জানি না। সবটাই কিনা মুখোশ পরা বলনাচের আসর! কাজেই বুঝছি না। এনিওয়ে, অনেক তর্ক-বিতর্ক হলো। আরএইচ না কে যেন আমাকে একটা সেফটিপিন ফুটিয়েও যে প্রতিভা না কি সব বললে...না, মোটেই ওসব কিছু নেই আমার। আমি সাধারণ মানুষ। কাজ করি, খাই, বউয়ের সাথে বসে টিভি দেখি- এই।
ওহ- আমার মুসলিম ওয়াফইয়ের প্রসঙ্গে আরএইচ শ্যামা বলায় আমি ভেবেছিলাম বুঝি পশ্চিম বাংলায় শ্যামা নামে কোন মেয়ে কোন মুসলিম যুবক বিয়ে করায় লিঞ্চিংয়ের শিকার হয়েছে। শ্যামাপ্রসাদের মত একজন পুরুষ মানুষকে এত ছোট করে শ্যামা নামা ডাকা যায় এটা মাথায় ছিল না।
অদ্রিজা রহমান কি দোষ করলো, আমার পাঠভবনের সহপাঠি, নিজে ডাঃ আর মুসলমান বিয়ে করে সুখে আছে। কারুর কোন ক্ষতি তো করেনি?
ঐ মানে শান্তির পায়রাদের যুক্তিই মেনে চলছি। অন্যের মেয়ে আনব আর নিজের মেয়ে নিজের ঘরে রাখব। ঠিক আছে না?
"
মাঝি সাজা নরকের কীটটা ঢাকা থেকে এখনো হেগে বড়ি দিয়ে যাচ্ছে? সেক্স স্টার্ভড গুয়ের পোকাটা এসেছে শ্যামাপোকার সাফাই গাওয়ার ছলে এখানে হাগতে। শুনেছিলাম অমিতশা বাংলাদেশেও কিছু পয়সা ঢেলেছে কটা গুয়ের পোকার পেছনে যাতে পশ্চিমবঙ্গে দাঙ্গা লাগানো যায়। ঠিক শুনেছিলাম।
বাবা কুবির,
মানুষকে ভালোবাসো, ঘৃণা কোরো না।
ভালোবাসা দিয়ে ঘৃণা জয় করো।
ঘৃণা দিয়ে ভালবাসাকে দমিয়ে রেখো না।
ঘৃণার প্রচার কোরো না।
ঘৃণাকে ভালোবেসো না।
ভালোবাসাকে ঘৃণা কোরো না।
ঘৃণাকে ঘৃণা কোরো।
ভালোবাসাকে ভালোবেসো।
- প্রভুদেবা
হি-হি-হি- “কারাগারে বিকেল বেলা এক পাদ্রি এসে তখন কয়েদিদের বাইবেল পড়ে শোনাচ্ছিল: কেহ তোমার গালে একটি চড় মারিলে অপর গালটি পাতিয়া দিবে‘
এক কয়েদি মোটা, খসখসে গলায় উত্তর করলো, আর যদি দুরমুশ দিয়ে আগা-পাস্তলা পেটায়?“
অন্য কয়েদিরা হেসে উঠলো হা হা করে।“
প্রভুদেবা- এখন ক্যুইজের প্রশ্ন হলো: বলুন ত‘ দেখি এটি কোন্ বই থেকে উদ্ধৃতি? এই শোন/শুনুন- তোমাদের মানে পশ্চিম বাংলার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে খুব উঁচু ধারণা ছিল আমার। সবাই এপার থেকে চলে যাওয়া সামন্তপ্রভুদের বংশধর। বোধ হয় কথায় কথায় গ্যেটে আর সার্ত্রে আওড়াতে পারে খাঁটি জার্মান আর ফরাসীতে। গুরুতে দেখলাম কথায় কথায় অকথ্য ব্যক্তি আক্রমণ আর গালি। ভাল যুক্তি দেবার মত শিক্ষাও সবার নেই। কোন সমাজের সর্বস্তরে চূড়ান্ত হতাশা-ক্ষয়-নৈরাজ্য না থাকলে মানুষ মতাদর্শিক শত্রুর প্রতিও এত ভয়ানক হতে পারে না। অথবা হতে পারে তোমরা কথাতেই খুন করো। বাংলাদেশে বা পশ্চিমা সমাজেও- বীর যে দুই সম্প্রদায়- মুসলমান আর খ্রিষ্টানরা চাপাতি বা বন্দুকে কাজটা সেরে ফ্যালে। গালাগালি করে না। এই যা।
তবে কি খাড়াইল?
ইসলাম হিন্দু ক্যালায়, লোপাট করে দেয়, উহারে ক্যালাও।
শ্যামাপ্রসাদ ইসলাম ক্যালাবার অগ্রনী পুরুষ, গুন্ডালিডার, ইহারে নমস্কার।
গুন্ডার সর্কার দুনিয়ার দর্কার।
এহে কুবির মাঝি তো খুবই বিশ্রী রকম পারভার্ট দেখছি। শুধুশুধু সময় নষ্ট।
এটা খুবই খারাপ আলোচনা হছে
বাবা কুবির,
শান্ত হও।
উপরে আমি যে বাণী দিয়েছি সেগুলো নিতান্তই আমার মনে কথা, কোনো বই বা ওয়েব সাইট থেকে টুকে দেওয়া নয়, তবে কথাগুলো নতুন কিছু নয়, অনেক মানুষ নানা ভাবে এই কথাগুলো বিভিন্ন জায়গায় আগেও বলেছেন।
মানুষের ওপর ভরসা রাখো। নইলে নিজের ওপর ভরসা রাখবে কি করে।
এত ক্রোধ, এত ঘৃণার স্টক মনের মধ্যে পুষে রেখো না, এসবের স্টক কমাও।
শান্ত হও। পারলে ভঙ্গনৃত্য অনুশীলন করো, বা অন্য কিছু ,আমি তো শুধু ওইটাই জানি।
- প্রভুদেবা
ভঙ্গনৃত্য=Breakdance? এইটা ভাল হৈছে! পুরো কনভার্সেশন থ্রেড ফলো করলে দেখবেন আমার ভেতর রোষ-ঘৃণা সবচেয়ে কম। ভাল থাকবেন।
বাছা কুবির,
শান্ত হও। ঘুম থেকে উঠেই দেখলাম তুমি অজস্র পোস্ট করেছ। শান্ত হও।
তোমার লেখা ফলো করেই তো দেখ্লাম, যে তুমি মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্রোধ, ঘৃণা, রোষ - এসব ডিস্ট্রিবিউশনের ডিলারশিপ নিয়ে বসে আছ। তোমার পোস্টের ছত্রে ছত্রে ছড়িয়ে রয়েছে জিঘাংসা, প্রতিশোধস্পৃহা।
মানুষকে উত্তেজিত কোরো না। মানুষের মন বিষাক্ত কোরো না। মানুষকে মানুষের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিও না। কোনো নিরীহ মানুষের প্রাণহানির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কারণ হয়ে উঠো না।
শান্ত হও। মনকে সংযত করো।
ভঙ্গনৃত্য প্র্যাকটিশ করো। লেবু জল খাও। একটু চোখ বুজে বিশ্রাম নাও।
- প্রভুদেবা
বৎস কুবির,
আবার অনুরোধ করি, শান্ত হও।
ক্রোধাদভবতি সম্মোহ: সম্মোহৎ স্মৃতিবিভ্রম:
স্মৃতিভ্রংশাদ বুদ্ধিনাশ: বুদ্ধিনাশাৎ প্রণশ্যতি
অর্থাৎ,
ক্রোধ মানুষকে সম্মোহিত করে তোলে, সম্মোহন থেকে আসে স্মৃতিভ্রম, তারপর ধীরে ধীরে হতে থাকে বুদ্ধিনাশ, সেই থেকে ধ্বংস
বুঝতেই পারছ এ বাণী আমার নয়, গীতায় আছে। নিজেকে ধ্বংসের দিকে এভাবে ঠেলে দিও না।
ভঙ্গনৃত্য প্র্যাকটিশ করো, মনে শান্তি আসবে, তার সঙ্গে শরীরে কোলেস্টেরল কমবে।
- প্রভুদেবা
আর সূর্যের দিকে তাকিয়ে একশো আট বার ধুর্জটি ধুর্জটি ধুর্জটি। চোখের পাতা যেন না পড়ে।
আরে এটা তো একেবারে পচা গন্ধওলা জিনিস! আইটিসেল আজকাল এগুলোকে পাঠাচ্ছে প্রোপাগান্ডা করার জন্য? রাম রাম।
বাবা কুবির,
তোমার শরীরে কোলেস্টেরল বাসা বাঁধে নি শুনে ভারী ভাল লাগল। তুমি তো মনে হচ্ছে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। কিন্তু মন এত অসুস্থ কেন। এ তো ভাল কথা নয়। মন সংযত করো।
দিবারাত্র উঠতে বসতে মুসলিমদের, কম্যুনিস্টদের বা যারা মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতিশীল - তাদের বিরুদ্ধে এত রোষ, হিংসা, ক্রোধ - এসব ভাল নয়। মনকে উন্মুক্ত করো, এভাবে ক্রোধের ডিপো করে রেখো না। ভাষা সংযত করো। ভাবপ্রকাশ সংযত করো।
আর, সময় পেলে ভঙ্গনৃত্য প্র্যাকটিশ করো, আদাজল যদি না খাও, অন্তত লেবুজল খেয়ে কোরো।
- প্রভুদেবা
যাক গুপু এসে নোংরা সাফ করে গেছে।
নাকি তর্কযুদ্ধে হারার ভয়ে আমার শেষ দুটো মন্তব্য মুছে ফেলেছে কর্তৃপক্ষ! কি ভীতু রে বাবা!
গানটা সকাল বেলাতেই দেখেছি। প্রচন্ড দু:খে মন্তব্য করতে ইচ্ছা হয়নি। হাজার হোক, বামদের মেধা ও সৃজনশীলতার উপর আর একটু সম্মান মনের ভেতরে ছিল (সে নানা ক্ষোভ থেকে উপরে যতই বিজেপি ঘেঁষা কথা-বার্তা বলি কিনা)! তাহলে বিষয় হচ্ছে: টুম্পা বা মেয়েদের বিয়ে তখনি হবে যখন ছেলেটি বা ছেলেরা চাকরি পাবে এবং লাল দলই সেই চাকরি দিতে পারবে? এমন টিপিক্যাল পুরুষতান্ত্রিক ভাবনা এখন বোধ করি আরএসএস-জামাতও ভাবে না। বাংলাদেশে ইসলামী ব্যঙ্কে বা অনেক কমার্শিয়াল ব্যঙ্কে বা আরো নানা সংস্থায় সাধারণ মেয়েরা অবশ্যই- প্রচুর হিজাবি বা সো-কলড মোর রিলিজিয়াস মেয়েও বড় বেতনের কাজ করছে, চল্লিশ পার করেও বিয়ে করছে না- ভারতেও নিশ্চিত স্ট্রিক্ট ভেজিটেরিয়ান ও রিলিজিয়াস অনেক মেয়েও চাকরি করছে, বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। সারা পৃথিবীতেই এখন প্রচুর অবিবাহিত, কাজ করা মেয়ের দল আছে। আগে যেমন শুধু ভাল রোজগারের ছেলে অনেক সময় মেধা ছাড়া সুন্দরী বিয়ে করতো...আজকাল মেয়েরাও অনেকে বেঁটে বা টেকো কিন্ত টাকাঅলা বরের চেয়ে বেকার তবে টল ও গুডলুকিং বয়ফ্রেন্ড/হাসব্যান্ড আক্ষরিক অর্থে পালছে। আমার এমন চেনা দম্পতি একাধিক আছে। আগে পুরুষ একাই টাকার জোরে রূপবতী মেয়ে বিয়ের নামে কিনতো। আমার চেনা-জানা কিছু মেয়েকেই জানি খুব ভাল চাকরি করে তবে বেকার বরকে টানছে। সে হয়তো অনেক বেশি রোজগারের তবে মন্দ দেখতে ছেলেকে গ্রহণ করছে না। বিয়ের মূল লক্ষ্য যদি হয় দৈহিক আনন্দ লাভ (দু:খিত- চাঁচা-ছোলা সত্য এটাই...নইলে একটি ছেলে কেন অনেক সময় হাজার গুণ মেধাবী, চরিত্রবতী ও ভাল মনের একটি মেয়েকে ছেড়ে শুধু রূপের জন্য একটি কম মেধাবী এবং এমনকি স্বার্থপর বা মন্দ স্বভাবের মেয়েকে বিয়ে করে জেনে-বুঝেও?), তবে মেয়েদের জন্যও তাই সত্য। আগে ছেলেদের একার বিয়ের বাজারে পার্চেজিং পাওয়ার ছিল, মেয়েদের ছিল না। এখন মেয়েদেরও হচ্ছে। তাই কুচ্ছিত দেখতে বরের থেকে টিভি সিরিয়ালের নায়কের মত বয়ফ্রেন্ড বা হাজব্যান্ড পালছে অনেক মেয়ে। প্রিয় বামেরা, আশপাশের বদলে যাওয়া সময়কে দেখুন এবং চিনতে শিখুন।
এই যা- এবারও যান্ত্রিক গোলযোগে একটি মন্তব্য কয়েকশো বার পোস্ট হয়ে গেল। দু:খিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
অসংখ্য পোস্টগুলি স্প্যাম হিসেবে কন্সিডার করে ডিলিট করা উচিত। একাধ্বার হতে পারে, এরকম অদ্ভুত জিনিস বারবার হলে ওরকম কম্পিউটার থেকে পোস্ট না করাই ভালো।
এ বিষয়ে আপনার সাথে আমি পুরোপুরি একমত। এবং আপনাদের এডমিনকে সেই সাথে অনুরোধ করছি যেন একাধিকবার পোস্ট হওয়া একই মন্তব্যগুলোর ক্ষেত্রে শুধু একটি রেখে বাকি হুবহু একই মন্তব্যগুলো তিনি মুছে দেন। নিজেরই খুব খারাপ লাগছে দেখতে। এবং অসংখ্যবার অনুরোধ করেছি এই বিষয়ে আর তর্ক না জুড়তে। কারণ প্রসঙ্গে না থেকে আলোচনা ইতোমধ্যে অন্য নানা দিকে গড়িয়েছে যার কোন মানে নেই।
নিজের ভুল স্বীকার করতে গিয়েও একই ঘটনা ঘটলো। এডমিন যেন বাড়তি মন্তব্যগুলো মুছে দেন- এই আলোচনার শুরু থেকেই।
আর একটা বিষয় হলো নারী বা পুরুষ কারোরই চেহারা নিয়ে বাজে মন্তব্য করা বা খারাপ দেখতে হলে বিয়ের বাজারে দাম কমে এজাতীয় বাজে মন্তব্য করার কোন ইচ্ছা কুবির মাঝির ছিল না। কিন্ত এটাই বাস্তবতা। অতীতে মেয়েদের যখন চাকরি বা হাতে টাকা ছিল না, তখন বুড়ো-ধুরো বা যে কারো সাথে তারা বিয়ে মেনে নিত। অনেকসময় হয়তো লুকিয়ে তরুণ বা সুদর্শন কারো সাথে প্রেম করে সেটার একটা ক্ষতিপূরণ নেয়া হতো। এখন মেয়েদের হাতেও চাকরি বা টাকা আসছে। তাই অনেক মেয়েই আজকাল বড় রোজগারের কাউকে বিয়ে না করে এমনকি বেকার বয়ফ্রেন্ড বা হাজব্যান্ডকেও টানছে। খুব তিক্ত হলেও খুব বাস্তব। যদিও এমন কথা লিখতেও নিজের কাছেই খারাপ লাগে।
নিতান্ত নির্বোধের মত পক্ষপাত অব্যাহত থেকেছে। হুলো-র অতি বাজে মন্তব্য রেখে দেয়া হয়েছে। কিন্ত কুবিরের প্রত্যুত্তর মুছে দেয়া হয়েছে। এভাবে ভোট বা তর্ক কিছুতেই জেতা যায় না। জয় বাংলা। গর্গ জয়যুক্ত হোক।