রৌহিনের দুটো কথাঃ
১ "আমি নিজে অধার্মিক - কিন্তু ধর্মানুভূতি মানেই তাকে সন্দেহের চোখে দেখব, এটাও এক ধরণের চাড্ডিত্ব বলে মনে হওয়া শুরু হচ্ছে আস্তে আস্তে"।
২"শুধু নবীকে কুকথা বলার জন্য এত বড় হুজ্জুতি, নাকি দীর্ঘদিন ধরে ভারত জুড়ে যা চলে আসছে, আখলাক - আফরাজুল, পেহলু, কামালদের সাথে যা হয়ে আসছে, এন আর সি, সি এ এ নিয়ে যা হচ্ছে, দিল্লী, হায়দরাবাদে যা হচ্ছে, এ তার বিরুদ্ধে মরিয়ার ডিফেন্স মেকানিজম"?---আমি মোটামুটি একমত। এই বলয়ে আছি বলে দেখতে পাচ্ছি কীভাবে দিনের পর দিন কোণঠাসা করা হচ্ছে একটা সম্প্রদায়কে। বাচ্চারা ঘরের পাশের মাঠে ক্রিকেট খেলছে, মোবাইকে চড়ে কয়েকজন এসে ওদের চড় থাপ্পড় দিয়ে বল্ল--পাকিস্তানে গিয়ে খেল গে যা! সরকারি জমিতে খেলা চলবে না। ঝামেলা বাড়ল, শেষে ফয়সালা এই হল যে কুড়ি বছরের দোকান এবং বাড়ি বিক্রি করে গাঁয়ে ফিরে যেতে হল।
শুক্রবার দিন দুপুরে ১৫ মিনিটের নামাজ পড়া। দুই সম্প্রদায়ের এবং সরকারের প্রতিনিধি মিলে ১৮টি মাঠ নির্দিষ্ট করা হল নামাজ পড়তে, সেটা ২০১৮ সাল। গত একবছর ধরে কিছু এলিমেন্ট এসে বলতে লাগল --অ্যাই, সরকারি জমিতে এসব চলবে না। ওরা সেই সময় কাঁসর ঘন্টা বাজিয়ে ভজন গাইল, ভলিবল ম্যাচ খেলল। কিছু মহিলা বললেন বাইরের লোকজন (দোকানে কাজ করতে দিল্লি থেকে আসা লোকজন) এখানে এসে নামাজ পড়লে চুরি ডাকাতি বাড়তে পারে।
প্রতি সপ্তাহে এক একটা জায়গায় হুজ্জত হতে লাগল। সরকারও আইন শৃংখলার অজুহাতে পিছিয়ে আসতে লাগল। বলা হল নিজেদের মসজিদে বা ঘরে গিয়ে পড়।
কিন্তু গুরুগ্রামের ইন্ডাস্ট্রি এবং বিজনেস এলাকা দ্রুত বাড়ছে। যে তিরিশ কিমি দূর থেকে চাকরি করতে এসেছে সে দূপুরের আধঘন্টা খাওয়ার ছুটির মধ্যে কী করে ঘরে বা দূরের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়বে? দু'একজন হিন্দু দোকানদার এবং একটি গুরুদ্বারা নিজেদের প্রাঙ্গণ খুলে দিয়ে বলল-আচ্ছা, এখানে এসে নামাজ পড়। তারপর তারা ধমক খেয়ে চুপ করে গেল।
মাইনরিটি সম্প্রদায় শান্ত ছিল। কোথাও কোন মিছিল বের করেনি, হাতাহাতিতে জড়ায় নি। কিন্তু ভেতরে ভেতরে এই নির্বাসনের গ্লানি , অপমান কি কাজ করছে না? এই ঘটনা ট্রিগারের কাজ করেছে। নইলে নূপুর যা বলেছেন তার চেয়ে বেশি অনেক কথিত ধর্মগুরু ইদানীং বলেছেন।
ওই ভিডিওটা আমরা সবাই নিউজ চ্যানেলে দেখেছি যেখানে একজন কথিত গেরুয়াধারী নমাজের সময় মসজিদের সামনে গিয়ে দামি গাড়িতে বসে মাইক লাগিয়ে অকথ্য গালিগালাজ এবং মুসলিম মেয়েদের ধর্ষণের ডাক দিয়েছেন। এফ আই আর হলে সরি বলেছেন, ব্যস্।নামাজের সময় মসজিদের সামনে গিয়ে মাইক বাজানো এবং মসজিদ মাত্রই মন্দির ভেঙে বানানো হয়েছে তাই সবগুলো খুঁড়ে ফেলা হোক বলে দাবি।
এখনকার বিক্ষোভকে শুধু নূপুরের বক্তব্যের সঙ্গে জুড়ে দেখলে ভুল হবে। ওটা ট্রিগার মাত্র।
আজকাল শুরু হয়েছে