এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • অকিঞ্চিৎকর

    রৌহিন লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৯ মে ২০২১ | ৪৬৩৪ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৪ জন)
  • নির্বাচন শেষ। ফলাফল সবাই শুধু জেনে যাননি, বিশ্লেষণের একেবারে হদ্দমুদ্দ করে ফেলেছেন। কেন তৃণমূল আদৌ জিতল, কেন এত্ত ভোট পেল, কেন বিজেপি এত খরচ করেও পারল না, কেন মোর্চা মাত্র এক পেল, কেন সিপিএম-কংগ্রেস শুন্য হয়ে গেল - এসব প্রধান বিশ্লেষণ তো বটেই, সূক্ষ্মতর স্তরে ঠিক কবে থেকে সিপিএম এর পতন শুরু, কী করলে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারে, তারা না পারলে বিকল্প বাম শক্তি কিভাবে উঠে আসতে পারে, তৃণমূলের কী করা উচিৎ, কী উচিৎ নয়, বিজেপির কী সমস্যা, কী ইন্টেনশন, তারা ইচ্ছে করে হেরেছে কি না - ইত্যাদি সব কিছুরই ব্যাখ্যা চলে এসেছে। খুঁটে খেলে সবই পাবেন। চয়েসও।


    তাহলে আমি এখন ঠিক কী লিখতে বসলাম? আরও একটা বিশ্লেষণ অথবা সুচিন্তিত মতামত নিশ্চই নয়। এই লেখা আসলে একজন পরাজিত অকিঞ্চিৎকর সিপিএম সমর্থকের নিজের মত করে ফিরে দেখা - মনোলগ। যে পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সামান্য হলেও জড়িত আছি, ব্যক্তিগতভাবে সেখানে কোন কোন বিচ্যুতি দেখেছি, তার চর্বিতচর্বন। কোন কোন সিদ্ধান্ত এই দুঃসময়েও সমর্থন করছি, সেই আলোচনা পরবর্তীতে উঠে আসতে পারে, আপাততঃ আত্মসমালোচনাই উদ্দেশ্য। পাঠক এই মনোলগ স্বচ্ছন্দে এড়িয়ে যেতে পারেন। তবুও এটা সামাজিক মাধ্যমে একটি পাবলিক পোস্ট হিসাবেই থাকল - কেউ যদি আড্ডায় যোগ দিতে চান, দিতেই পারেন।


    এর আগে একাধিক জায়গায় বলেছি, পার্টির সিঙ্গুর লাইনকে আমি ভুল মনে করি। শুধু ভুল নয়, তা কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে বিচ্যুতি বলেই মনে করি। "কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ" - উর্বর, কৃষিনির্ভর বাংলার প্রেক্ষিতে এই স্লোগানকে ভুল মনে করি। কারণ বৃহৎ শিল্প আদৌ কর্মসংস্থান বাড়ায় না। উলটে তা ধ্বংস করে বহুভাবে। জমি যতক্ষণ জমি থাকে, তা শুধু কৃষকের নয়, আরও অনেকের জীবিকার সংস্থান করে। ওই চাষের জমিতেই কারো মুরগি চরে, জমির একপাশে কেউ তোলে ছোট তাঁতঘর, গোয়ালঘর, ছুতোর কারখানা - আরও কত কী। জমির মধ্যের ছোট্ট পুকুরটির মাছ, চুনোমাছই কারো রোজকার বাজারে নিয়ে গিয়ে বসবার কাঁচামাল। একটা কারখানা হলে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের সঙ্গে এই সমস্ত মানুষও রুজি হারান। এঁরা হিসাবেও থাকেন না, তাই কমপেনসেশনও পান না। এবং তারপরে সেখানে যে কারখানা গজিয়ে ওঠে, সেখানে এঁদের কেউ কেউ হয়তো মজুরের কাজ পান, অধিকাংশই পান না। যাঁরা পেলেন, তাঁরাও সবাই খুব সুখে থাকেন কি? আর্থিকভাবে দৈনিক মজুরির হিসাবে যদি না ও যাই, চিরদিনের অভ্যস্ত পেশা ছেড়ে একমাত্র চয়েস হিসাবে মজদুরির পেশায় কজন মানিয়ে নিতে পারেন?


    কারখানার ফলে প্রকৃতির ধ্বংস নিয়ে নতুন কিছু বলারই নেই। প্রকৃতির ধ্বংসকে চিরদিন আমরা উন্নয়নের কোল্যাটারাল ড্যামেজ হিসাবে জাস্টিফাই করে এসেছি। অথচ অধিকাংশ মানুষের জীবিকা ধ্বংস করে অল্প কিছু মানুষের বাড়তি মুনাফার ব্যবস্থার মাধ্যমে যে উন্নয়ন, তাকে জাস্টিফাই করে আদতে কার লাভ হচ্ছে, সে প্রশ্ন আমরা তুলি না। "শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ" হলে ধ্বংসও মানবজাতির অনিবার্য ভবিষ্যৎ।


    কিন্তু প্রশ্ন হল, তাহলে কর্মসংস্থান কিভাবে হবে? বেকার সমস্যার সমাধান কিভাবে হবে? এর সমাধানের আলোচনায় যাবার আগে প্রশ্নটার আয়রনিটা একটু দেখে নেব। এক প্যারা আগেই লিখেছি, আমি না লিখলেও এই হিসেব সবারই জানা, যে বৃহৎ শিল্প, বিশেষ করে আজকের দিনের ক্রমশঃ আরো অটোমেটেড হতে থাকা শিল্প আদৌ বাড়তি কর্মসংস্থান করে না, কারণ ম্যানপাওয়ারের বদলে মেশিন পাওয়ার ব্যবহার করলে মালিকের  মুনাফা বেশী। স্বভাবতই, শিল্পস্থাপনে যত মানুষ কাজ হারান, তত মানুষ কাজ পাননা, এবং পেশার চরিত্র পালটে যাওয়ায় কর্মদক্ষতাও কমে যায়। তা সত্ত্বেও কর্মসংস্থানের প্রশ্নে "শিল্প না হলে কী করে হবে" এটাই মুখ্য প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। এই আয়রনির মধ্যেই আসলে লুকিয়ে রয়েছে আমাদের বিচ্যুতির বীজ।


    একটা ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠলে যারা কাজ হারান, আর যারা কাজ পান, তাদের মধ্যে শ্রেণীগত বৈষম্য রয়েছে। কাজ হারান কৃষি এবং জমিনির্ভর অন্যান্য পেশার মানুষ, যার একটা ক্ষুদ্র অংশ মজদুর হিসাবে পুনর্বহাল হন। অন্যদিকে কর্মসংস্থান হয় তথাকথিত "শিক্ষিত" মধ্যবিত্ত ছেলেমেয়েদের (যদিও অটোমেশনের দৌলতে সেই সংস্থানও ক্রমশঃ কমের দিকে)। এদের অল্প কয়েকজন হয়তো ওই ভূমিনির্ভর পরিবারের, কিন্তু অধিকাংশই শহর বা শহরতলির মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়ে। ফলতঃ কোন কমিউনিস্ট পার্টি যখন "কর্মসংস্থান" এর উদ্দেশে "শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ" স্লোগান তোলে, তখন স্বভাবতই বোঝা যায়, তাদের অভিমুখ এই মধ্যবিত্ত "শিক্ষিত" সমাজ, যারা মনে করেন দু টাকার চাল বা কন্যাশ্রী আদতে ভিক্ষা, যারা মনে করেন, "পিএইচডি প্রার্থী" বলেই তার জেতা উচিৎ ছিল। ভূমিনির্ভর মানুষ, যারা সংখ্যাগরিষ্ঠও বটেন, তাদের প্রতি আমাদের কোন দায় নেই। তাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ নেই। তাদের প্রতি আমাদের অভিমান, আমাদের নেতা তাদের সর্বাগ্রে আমফানের ত্রাণ পৌঁছে দিলেন, তবুও তাঁকে ভোটে হারতে হল।


    এখন মূল প্রশ্নে ফিরে আসা যাক। তাহলে আমরা, ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি, কর্মসংস্থান বিষয়ে কী ভাবব। ঘুরতে ঘুরতে যদি কখনো সত্যিই দাঁড়াতে পারি, সেই দিন খুব দূরে নয় বলেও আমার ধারণা, তাহলে আমাদের কর্মসংস্থান নীতি কী হতে পারে, যা শিল্পায়ণ নামক ভ্রান্ত উন্নয়ণের ধারণার কমিউনিস্ট বিকল্প হতে পারে? 


    প্রশ্নটা খুব সহজ নয় - তবে উত্তরটা বেশ সহজই মনে হয়। প্রথমতঃ, কমিউনিস্ট কর্মসংস্থানের অভিমুখ অবশ্যই হওয়া প্রয়োজন, যেখানে বেশী মানুষ, ভূমিনির্ভর গরীব মানুষ বেশী কাজের সুযোগ এবং চয়েস পাবেন। চয়েস থাকাটা জরুরী, কারণ কাজের মাধ্যমে উপার্জনের প্রশ্নে দক্ষতার একটা বড় ভূমিকা থাকে, এবং দক্ষতার প্রশ্নে স্বাধীন চয়েসের। 


    ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই হয়েছিল ভূমিসংস্কার এবং অপারেশন বর্গা। যে দুটি কাজের ডিভিডেন্ড বামফ্রন্ট এবং বিশেষ করে সিপিএম পরবর্তী ৩৪ বছর ধরে পেয়েছে। কিন্তু অদ্ভুত হল, অপারেশন বর্গার পরের ধাপগুলি আমরা আর করে উঠিনি। যা তৈরী করতে পারত সত্যিকারের ভূমিভিত্তিক কর্মসংস্থান। বৃহৎ জমির একজন মালিক জোতদার প্রথার জন্ম দেয়, অপারেশান বর্গা যে প্রথার মূলে কুঠারাঘাত করতে পেরেছিল। কিন্তু চাষের প্রশ্নে এক লপ্তে বড় জমির বেশ কিছু সুবিধাও আছে, অপারেশান বর্গার ফলে যা আমরা অনেকাংশেই হারিয়েছিলাম। এই সমস্যার সমাধান হতে পারত বর্গার পরবর্তী ধাপ হিসাবে বর্গাদার এবং ভূমিহীন কৃষকদের নিয়ে সমবায় তৈরী করে যৌথ কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলা - কিন্তু সে পথে আমরা হাঁটিনি। ফলতঃ পশ্চিমবঙ্গের কৃষি ব্যবস্থা ক্রমশঃ পালটে গেছে এবং বহু ক্ষেত্রেই উৎপাদন কমেছে। কৃষক, বিশেষ করে হিন্দু কৃষক পরিবারগুলি ক্রমশঃ শহরমুখী হয়েছে, মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবি শ্রেণীতে প্রবেশ করেছে। এদের লিগ্যাসি হিসাবে আছে একটি করে গ্রামের বাড়ি, যেখানে শহর থেকে পুজো বা অন্য উৎসবে ছেলেমেয়েরা যায়, দুদিন হইহই করে, পরিবেশের চরম ক্ষতি করে, গ্রামের মানুষকে শহুরে প্রযুক্তি ও বৈভবের আখের খেত দেখায় এবং চলে আসে। ফলশ্রুতিতে এদের দ্বারা প্রভাবিত আরো কিছু গ্রামবাসী শহরে এসে ভীড় জমায়।


    এই ভিশিয়াস সাইকেল ভাঙতে হলে কমিউনিস্ট পার্টিকে, ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টিকে, আমাদেরকে, কয়েকটি ব্যপারে আন্তরিক হতেই হবে। কৃষকদের মধ্যে ফিরে গিয়ে তাদের একজন হয়ে, তাদের সমবায় ব্যবস্থার, যৌথ চাষের সুফল বোঝানোর কাজ তার মধ্যে প্রথম। এজন্য কৃষক পরিবারের, জমি এবং কৃষি সম্বন্ধে যাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আছে,সেরকম পার্টি কমরেডদেরই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। পাশাপাশি আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার সর্বত্র মাতৃভাষার মাধ্যমে সরকারী শিক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলার দাবীতে, যাতে "শিক্ষিত" তকমাটা শহুরে মধ্যবিত্তের একচেটিয়া না হয়ে যায়। কৃষি ছাড়াও অন্যান্য গ্রামীন ক্ষুদ্রশিল্প, কামার, কুমোর, ছুতার, ঘরামী, তাঁতি, হস্তশিল্পী, মৎস্যজীবি, আচার/ খাদ্য সংরক্ষণ শিল্পী, সুতাশিল্পী, সূচিশিল্পী, মুরগি / ছাগল / গো পালক, কলের মিস্ত্রী - এদের পাশে যত বেশী সম্ভব দাঁড়ানোটাও একইরকম গুরুত্বপূর্ণ, এটা উপলব্ধি করতে হবে। একশো দিনের কাজ নিশ্চিত করার জন্য লড়তে হবে। কন্যাশ্রী বা মিষ্টি হাব অথবা দু টাকার চালের মত জনমুখী প্রকল্পের বিরোধিতা না করে সেগুলি প্রয়োগের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পরম্পরার শিল্পকে বাঁচিয়ে তোলার আন্দোলনে আন্তরিকভাবে সামিল হতে হবে। "কৃষি আমাদের ভিত্তি, গ্রাম আমাদের ভবিষ্যৎ" স্লোগানে বিশ্বাস রাখতে হবে।


    শিক্ষিত মধ্যবিত্তের তাহলে কী হবে? অ্যাবানডানড? যারা এই দুঃসময়েও পার্টিকে ভোট দিল, পাশে দাঁড়াল, তারা অপাংক্তেয়? তা অবশ্যই নয়। কমিউনিস্ট পার্টির প্রাথমিক অভিমুখ অবশ্যই গরীব, মেহনতি মানুষ - কৃষক, শ্রমশিল্পী - কিন্তু মধ্যবিত্ত মানুষ তার বাইরে পড়ে না। বহু মধ্যবিত্ত পরিবার আসলে নামেই মধ্যবিত্ত, শ্রেণীগতভাবে তাদের অবস্থান নিম্নবিত্তের থেকে খুব একটা ভাল নয় - এটা ভুললে চলবে না। কিন্তু "শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ" না হলে এই মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ কোথায়? এই প্রশ্নটাও, আবারও, প্রশ্নটা যত কঠিন, উত্তরটা তত নয়। বৃহৎ শিল্প মধ্যবিত্তের কর্মসংস্থান বাড়ায় বলে যে মিথ প্রচলিত আছে, সেই মিথ বার্স্টিং করার সদিচ্ছের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এই প্রশ্নের সহজ উত্তর।


    যতদিন কোন চাকরিতে না ঢুকছি, ততদিন আমাদের শহুরে মধ্যবিত্তদের মনে হতে থাকে, একটা চাকরি পাওয়াই জীবনের মোক্ষ। সেজন্যই এত পড়াশুনা করা, ছোটাছুটি করে ফর্ম ফিল আপ, পরীক্ষা দেওয়া, ধরা করা। ভুলটা ভাঙে কোন একটা চাকরিতে ঢুকে পড়ার পর, যদি কোনভাবে ঢুকে পড়তে পারে আর কি। কিন্তু তখন অনেক দেরী হয়ে যায়। তারপর ক্রমশঃ অভ্যেসে জড়িয়ে পড়া। অথচ স্বাধীন পেশার অভাব শহরেও নেই, অনেকেই করে খান এবং এখনো স্কোপ রয়ে গেছে যথেষ্টই। প্লাম্বিং, ইলেক্ট্রিকাল, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিটিপি, ডকুমেন্টেশন, ড্রাইভিং, ছোট কারখানা, মোবাইল / ল্যাপটপ / ডেস্কটপ সারাই ও রক্ষণাবেক্ষণ, খাদ্য সংরক্ষণ, লজিস্টিক্স, গ্রাম থেকে শহরে উৎপাদন আনা, বিক্রী করা, ফুটপাথ হকারি, এমনকি চপশিল্প, রোলশিল্প, হস্তশিল্প - সবই স্বাধীন পেশা এবং যথেষ্ট চাহিদা আছে। এগুলির প্রায় কোনটার জন্যই ব্যাঙ্ক থেকে বড় অঙ্কের লোন নিতে হয় না। শুধু এগুলি যে "ছোট কাজ", " ছোটোলোকের কাজ" এই ভাবনাপরম্পরা থেকে বেরোতে পারাটাই শর্ত। এই বের করে আনার কাজটা কমিউনিস্টদেরই কাজ - তাদের থেকে ভাল করে আর কে করতে পারে? এবং তারপরেও যারা শুধু চাকরিই করতে চান, চয়েস হিসাবেই চান, তাদের জন্যও গ্রাম এবং শহরের একটা বড় অংশ স্বনির্ভর হওয়ার অর্থ, প্রতিযোগিতা কমা, চয়েস বাড়া, দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়া।


    এসব করে ভোট পাওয়া যাবে কি না, সে প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি আমি যে কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থক, তাদের এই পথেই এগনো উচিৎ।  আমাদের এভাবেই এগনো উচিৎ। আগেই লিখেছি, এটা মূলতঃ মনোলগ। আমার এই ভাবনার সঙ্গে আমার পার্টি কমরেডরা একমত হতে পারেন, না-ও পারেন। তাতে পার্টির কাজে আমি যেটুকু নিজেকে জড়াতে পারি বা জড়িয়ে থাকি, তার কোন পরিবর্তন হবে না, আমার ভোটও অন্য কোথাও যাবে না। কোন "নতুন বামদল" এর অলীক জল্পনাও এটা নয়, একজন সাধারণ সিপিএম সমর্থকের মনোলগের বেশী গুরুত্ব এই লেখার নেই। তৃণমূলের এবং কংগ্রেসের কিছু নীতি, যা জনদরদী বলে আমার মনে হয়েছে, তার সমর্থন এই লেখায় আছে। বিজেপির যদি একটাও সেরকম কোন নীতি থাকত, তাহকে সেটাও উল্লেখিত হত - কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় আসা ইস্তক এমন একটা পলিসিও আমি মনে করতে পারছি না যেটা ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট নয়, সাধারণ মানুষের পক্ষে, তাই উল্লেখ করা গেল না। কিন্তু তাই বলে এইসব উল্লেখ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আমার মনোভাব পালটে দেবে এমন কোন সম্ভাবনা নেই। তাদের এখনো আমি বিজেপির কাছাকাছিই মনে করি, যারা যথেষ্ট ক্ষমতা এবং টাকার জোর পেলে বিজেপিতেই পরিণত হবে। কিন্তু এখনো যে হতে পারেনি, সেটুকুও আমার খেয়াল আছে, এইটুকুই বলার।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৯ মে ২০২১ | ৪৬৩৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • রৌহিন | ১৪ মে ২০২১ ১৪:২৭105957
  • তফাত বলতে একটাই, মমতা ব্যানার্জি র ইকোনমিটা ঠিক কী, কেউ ঠিকমত জানেন না - উনি নিজেও সম্ভবত জানেন না। ওনার সরকার অ্যাড হক বেসিসে চলে - যখন যেটা ভাল মনে হয়, করে ফেলেন। তার কিছু সত্যিই ভাল হয়, কিছু ব্যাকফায়ার করে, কিছু দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করে। কিন্তু ওনাকে যদি জিজ্ঞেশ করা হয়, আগামী পাঁচ বছরের জন্য আপনার আর্থিক নীতি কি, উনি বলতে পারবেন না - বললেও, পরবর্তী পাঁচ বছর সেটাই হবে এই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না।

  • Aa | 2409:4060:2e0b:68be:133b:3578:8117:***:*** | ১৮ মে ২০২১ ১১:৪৫106168
  • শিল্পায়নের ফলে জীবিকা যায় চাষী, ক্ষেত মজুরের। চাকরি হয় বাবুর বাড়ির ছেলেমেয়ের যারা engineering বা MBA পাস করেছে, এখন গুজরাটে হয়তো চাকরি করে, যা বেতন পায় সেটা ততটা বেশি না। মধ্যবিত্ত বাড়ির জীবন যাপনের পর যা সঞ্চয় হওয়া উচিত সেটা হয় না। ফলে বাংলার মধ্যে যদি দুটো বড়ো শিল্প হয়, সেখানে যদি এই ছেলেপিলেরা চাকরি পায়, সেটা মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে অনেকটুকু সুবিধা। ক্ষতি গরীব চাষার। তার ছেলেটা কিন্তু security গার্ড এর contractual চাকরি পাবে, চাকরির নিরাপত্তা থাকবে না, মাস গেলে বেতন 5000 টাকা, বেতন বাড়ানোর জন্য বলার সাহস তার থাকবে না। বা সেই ছেলেটি বা মেয়েটি সবজি বেচবে, চায়ের দোকান দেবে। উদ্বৃত্ত শ্রমশক্তি বেড়ে যাওয়ায় রোজগার কম হবে চাষার / আগে থেকেই গরীব বাড়ির ছেলেমেয়ের। আর বেতন বাড়বে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের। এবার বৃহদ শিল্পে যারা কাজ করে, যারা নিজেদের ছেলেমেয়েকে engineering,  MBA law  ইত্যাদি পড়াতে পারে, তারা সাধারণ মধ্যবিত্ত নয়, বেশ পড়াশুনা করা family হয়। চাকরির grade অনুযায়ী হয়তো গ্রেড A বা B, বা সমতুল্য মানের বেসরকারি কর্মচারী পরিবার। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত , প্রায়ই সরকারি চাকরি করে এই রকম family গুলোর দাবি ছিল এই শিল্পায়ন। Main project এর বাইরের জমি দখল হওয়া ছিলো সময়ের অপেক্ষা, কারণ কারখানার ঠিক বাইরেই কৃষি জমিতে চাষ হচ্ছে এরকম বাস্তবে ঘটে না। পুরো অঞ্চলটা জুড়ে শহর তৈরি হতো, আরো হাজার হাজার কৃষকের জমি যেত, তারা সস্তা শ্রমিক বা বেকারে পরিণত হতো। গরীব আরো গরীব হতো, মধ্যবিত্ত আরো স্বাচ্ছন্দে বাঁচতো।


    যে পুঁজি থাকলে দোকান খুলে বসা যায় সেই টাকা কজন জমি হারার থাকবে? মূল প্রকল্পের বাইরের জমি তো জলের দরে লিখিয়ে নেওয়া হতেই পারে, কে ensure করবে সব কিছু আইন মোতাবেক হবে?


    দিনের শেষে এই প্রকল্পগুলো হলো শিক্ষিত মধ্যবিত্তকে আরো সুবিধা করে দেবার জন্য গরীবের পেটের ভাত কেড়ে নেওয়া। চিন একটা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সেখানকার মডেল এখানে কাজ করবে কিভাবে?


     আমরা শহুরে মানুষ যখন শিল্পায়ন কে ধন্য ধন্য করছি, তখন গ্রামের মানুষ অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছিলেন এবং বামফ্রন্ট কে হারিয়ে তাদের নীতি সংশোধনেরও সুযোগ করে দিয়েছিলেন। 


    জমি ক্রমশ ছোট হচ্ছে, রোজগার কমছে, অনিশ্চয়তা বাড়ছে এগুলো সব ঠিক। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা বেকার বসে আছে, পেটে ভাতে contractual কাজ করছে, গুজরাটে গিয়ে অল্প বেতনের চাকরি করছে এগুলো ও সব ঠিক। কিন্তু এক শ্রেণীর সমস্যা আর এক শ্রেণীর উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। সমস্যা মেটার নয়, পুঁজিবাদ চূড়ান্ত সংকটে পড়েছে। (NRC টাও চূড়ান্ত সস্তা শ্রমিক জোগাড় করে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার একটা প্রয়াস। ফ্যাসিবাদের উত্থান হয় মুমূর্ষু পুঁজিবাদকে রক্ষা করার জন্য।) এখন বেঁচে থাকার মতো রোজগার করতে পারাটাই যথেষ্ট। সমাজ পরিবর্তনের আগে অবধি পরিস্থিতি ভালো হবে না বলেই মনে হয়।

  • π | ১৮ মে ২০২১ ১৩:৪৩106172
  • Aa র সঙ্গে বহুলাংশে একমত! 

  • রৌহিন | ২১ মে ২০২১ ২০:৩৬106247
  • আমি একমত হলাম। Aa যেটা লিখেছেন, আমার বক্তব্যও মোটামুটি তাইই।

  • dc | 122.174.***.*** | ২১ মে ২০২১ ২২:০০106253
  • আমি একমত নই :-)


    প্রথমত, শিল্পায়ন এমন একটা জিনিষই না যে গ্রামের মানুষ বামফ্রন্টকে হারিয়ে তাকে থামিয়ে দিতে পারবে। শিল্পায়ন সারা দেশ জুড়ে হচ্ছে, শুধু গুজরাট না, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিল নাড়ু ওড়িষাতেও হচ্ছে। আর শুধু দেশে না, সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। প্রযুক্তির ক্রমাগত বিবর্তন, সেই বিবর্তন কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন উৎপাদন প্রসেস, আর নতুন কারখানা বানানো, এটা মনে হয়না বামফ্রন্টের নীতির ওপর ডিপেন্ড করে। বড়ো কারখানা হলে তার চারপাশে সার্ভিস সেক্টর তৈরি হয়, সেই কারখানার অনুসারী শিল্প তৈরি হয়, সরকার বন্দর বা রাস্তাঘাটে ইনভেস্ট করে, এসবও অনেক রাজ্যে আর অনেক দেশেই হয়। শুধু পবতে যদি বড়ো ইন্ডাস্ট্রি গড়ে ওঠা বন্ধ হয় তো দেশের অন্যান্য রাজ্যে বন্ধ থাকবে বলে মনে হয়না (বন্ধ হয়ে থাকেওনি)।   


    আর এর মধ্যে গ্রাম আর শহরের বাইনারিটাও মনে হয় ঠিক না। শিল্পায়ন হলে গ্রাম আর শহর সব জায়গাতেই মানুষের ইনকাম বাড়ে, হয় প্রত্যক্ষভাবে নাতো অপ্রত্যক্ষভাবে। গুগল করে দেখুন, বেশ কিছু ইকোনমিক সির্জ পাবেন যেখানে দেখা যাচ্ছে যে ইন্ডিয়াতে ফার্ম সেক্টর ইনকাম পার ক্যাপিটার থেকে নন-ফার্ম সেক্টরের ইনকাম পার ক্যাপিটা বেশী দ্রুত বাড়ছে। আর ফার্ম সেক্টরের ওভারল এমপ্লয়মেন্টের থেকে সার্ভিস সেক্টরের ওভারল এমপ্লয়মেন্ট বেশী দ্রুত বাড়ছে। কাজেই কৃষির সাথে লার্জ স্কেল ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশান আর সার্ভিস সেক্টর তৈরি করাও সমান জরুরি মনে হয়। 


    আর পুঁজিবাদের সংকট, সে তো ছোটবেলার থেকেই শুনে আসছি। তাও পুঁজিবাদ শেষ হবার লক্ষন তো দেখিনা :-)

  • মমতা ব্যানার্জি র ইকোনমিটা ঠিক কী উনি নিজেও সম্ভবত জানেন না | 151.197.***.*** | ২২ মে ২০২১ ০৮:৪৮106267
  • এক মহিলা যার আপাতদৃষ্টিতে কোন সংগঠ্ন নেই এবং আপাতদৃষ্টিতে যে না থাকলে দলটার অস্তিত্ত্ব থাকবে বলে মনে হয় না, সে একার হাতে দু দুটো স্ট্রাকচার্ড পার্টিকে ঘোল খাইয়ে দিল তার রাজনৈতিক জীবনে, একটা পার্টি তার মধ্যে উঠে যেতেই বসেছে, আর উনার কোন ইকনমিক প্ল্যান নেই? নিজের বক্তব্যের ঔদ্ধত্য নিজেই ভেবে দেখুন। কিংবা সেল্ফ ডিনায়ালে আছেন  কিনা চিন্তা করুন। 

  • dc | 27.57.***.*** | ২২ মে ২০২১ ০৯:২৭106271
  • দিদির রাজনৈতিক মেধা যে অসাধারন তাতে কোন সন্দেহই নেই। কিন্তু তার সাথে ভালো ইকোনমিক প্ল্যান থাকার কিন্তু সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। বরং ভারতে আর অন্যান্য দেশেও দেখা গেছে যে রাজনৈতিক বোধ আর ইকোনমিক বোধ একইসাথে থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে। উল্টো দিকের একটা উদাহরন দেখুন, মনমোহন সিং - ভারতের এযাবত সেরা ফিন্যান্স মিনিস্টার, দুর্দান্ত ইকোনমিস্ট, সত্যিকারের ইকোনমিক ভিশনারি। অথচ ওনার রাজনৈতিক বোধ প্রায় শূণ্য। ইকোনমিস্ট হিসেবে যতোটা সফল, পলিটিশিয়ান হিসেবে ততোটাই ব্যর্থ। 

  • ভালো ইকোনমিক প্ল্যান | 151.197.***.*** | ২২ মে ২০২১ ১৫:৪৮106283
  • ”ভাল ” তো আপেক্ষিক শব্দ, তাই না? মমতার ইকনমিক প্ল্যান জাজ করা উদ্দেশ্য নয়, কেবল বলতে চাইছি তার একটা কন্সিস্টেন্ট প্ল্যান তো আছেই এবং সে প্ল্যানের এসেন্সটা রৌহিনের বক্তব্যের থেকে খুব আলাদা ঠেকে না! 


    এবং এই দুটো প্ল্যানেই আজকের নগরজীবনের জন্য কিছু নেই । 

  • রৌহিন | ২২ মে ২০২১ ২২:৫২106310
  • এই "কন্সিস্টেন্সি" যা আপনি খুঁজে পেয়েছেন এবং আমি পাইনি, সে সম্বন্ধে একটু আলোকপাত করুন। আমার "ঔদ্ধত্য " নিয়ে আমি সত্যিই মাঝে মাঝে চিন্তায় পড়ে যাই। এরে রাখি কই, আবার ফেলেও দেওয়া যায় না - ঠিক কোথা থেকে এসে জাপটে ধরে বেতালের মত

  • dc | 27.57.***.*** | ২২ মে ২০২১ ২৩:৩১106315
  • "তার একটা কন্সিস্টেন্ট প্ল্যান তো আছেই"


    এরকম কিছু ​​​​​​​আছে ​​​​​​​কিনা ​​​​​​​তা ​​​​​​​নিয়ে ​​​​​​​আমার ​​​​​​​খুব সন্দেহ ​​​​​​​আছে। ​​​​​​​আবারও ​​​​​​​বলি, ​​​​​​​ভালো পলিটিশিয়ান ​​​​​​​হলেই ​​​​​​​ভালো ​​​​​​​ইকোনমিক  প্ল্যান ​​​​​​​থাকবে, এরকম ​​​​​​​নাও ​​​​​​​হতে ​​​​​​​পারে। ​​​​​​​দিদি ​​​​​​​খুব ​​​​​​​ভালো পলিটিশিয়ান, ​​​​​​​কিভাবে ​​​​​​​ভোট ​​​​​​​পেতে ​​​​​​​হয় ​​​​​​​সেটা ​​​​​​​উনি ​​​​​​​খুব ​​​​​​​ভালো ​​​​​​​জানেন। ​​​​​​​কিন্তু ​​​​​​​তার ​​​​​​​সাথে ​​​​​​​কনসিসটেন্ট ​​​​​​​ইকোনমিক ​​​​​​​প্ল্যান ​​​​​​​(বা ​​​​​​​কোনরকম ​​​​​​​ইকোনমিক প্ল্যান) এর সম্পর্ক ​​​​​​​নেই, ​​​​​​​কারন ​​​​​​​ইকোনমিক ​​​​​​​প্ল্যান ​​​​​​​না ​​​​​​​থাকলেও ​​​​​​​ভোট ​​​​​​​পাওয়া ​​​​​​​যায়। 

  • প্রতিভা | 2401:4900:110b:d00c:0:5e:f9cb:***:*** | ০৫ জুন ২০২১ ১৫:১৭494588
  • আরে এটা আগে পড়িনি কেন!! 

  • গৌতম রায় | 103.242.***.*** | ২৩ জুন ২০২১ ০০:৫৭495219
  • ভাল-মন্দলাগলো—কেন? 


    -আত্ম-সমালোচনা একটা ডগমা নয়, পরাজিত যোদ্ধাদের আবার জেতার হাতিয়ার, তাই ভাল লাগল। তবে সিঙ্গুরের স্লোগান—কৃষি আমাদের ভিত্তি শিল্প আমাদের...., ভুল কিছু ছিল না। সাধারণ কথা, ফুড গ্যাদারার মানুষ থেকে কৃষি সভ্য হয়ে শিল্প সমাজ গড়ে ওঠা 'ডেস্টাইন' তা মার্কস উপলব্ধি করেছেন। কিন্তু চাষের জমিতে শিল্প হয় না এ কথা আপনি ঠিকই বলেছেন। দুর্গাপুর, চিত্তরঞ্জন, একদা বিপ্লবি তেলেঙ্গানা সবই জঙ্গল মহল। চাষ হতো না। আজ শিল্পভূমি। তবে শুধু চাষজমি বলে নয় ওজন্য সিঙ্গুর ন্যানো প্রজেক্ট পণ্ড হয়েছে নৈতিকতা বর্জিত পলিটিক্সের জন্য। বুদ্ধবাবুর সঙ্গে টাটাদের যাওয়ার কথা ছিল খড়গপুরে। জ্যোতি বাবু এ অশনি সংকেত বুঝতে পারেন, বলেন, টাটাদের ওখানে সিঙ্গুরে নিয়ে যাওয়া হল কেন ? চালাক কেউ বুদ্ধি দেন—ওটা তৃণমূলের সিট, ওখানকার লোকে রেগে যায় তো যাক। অতি উৎসাহে তিনি এমন মিথ্যাচার করেন কোন এক কালের এক ফসলি জলকর দেখিয়ে বলেন, ওখানে নাকি তিন চারটে চাষ হয় না। সুপ্রিম কোর্ট যে বেআইনি বলছে তার একটা কারণ—ওটিই। আর ভুল আপোষহীণতা, বুদ্ধ বাবু শিল্পায়নের দলপতি হিসাবে ঘৃণায় মমতার নাম মুখে না আনতেন না, তিনি যদি বাস্তববাদী ও আপোষকামী হয়ে বিরোধী দলের নেত্রীর ঘরের দরজায় কড়া নাড়তেন, এক আপোষকামীর গান্ধীজির (যে জন্য সি পি জি বি'র নেতা রজনী পাম তাঁকে বিশ্বাস ঘাতক বলে বই লেখেন) নাতি রাজ্যপাল গোপাল গান্ধী যে আলোচনার ব্যবস্থা করেছিলেন তাতে মিটে যেতো। শুধু বিপ্লব নয় সব বড় কাজই 'এক পা আগে আর দু পা পিছিয়ে' হয়—লেনিন তা পুরনো লোককথা থেকে কোট করেন। আর এক কথা—বাংলা তথা ভারতে 'শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উত্থান' আবারও পড়ে দেখতে হবে। রাধানাথ শিকদারের মত অতি অতি দরিদ্র, হিন্দু কলেজের সাহেব প্রিন্সিপ্যাল যাঁকে যুক্ত রাজ্যের মাত্র কয়েকজন অঙ্ক জানা মানুষের মধ্যে স্থান দিয়ে এভারেস্ট সাহেবকে চাকরি সুপারিসের চিঠি লিখছেন এবং যিনি মস্ত বড় টাকার মাইনেতে ভারতের প্রথম মান মন্দিরের প্রথম ডাইরেক্টর হবেন, তাঁকেই সবার দৃষ্টান্ত ভাবাতে হবে।  ক্ষেত মজুর এবং শিল্প শ্রমিক হওয়া কোনও জীবনেরই পরিণতি হতে পারে না। সবাইকেই মধ্যবিত্ত(মানসিকতার) করে তুলতে হবে। শিক্ষিত মধ্যবিত্তের উজ্জ্বল জীবন না হলে বাকি গরিবেরা তা হতে উৎসাহিত হবেন কেন ! সহমত ও দ্বিমত হওয়া বড় কথা নয়—পোষ্যরাই বশ্য হয়, যার জন্য পুরনো ক্ষমতার আমলের সি পি এম কোনও কাজে আসছে না। এ আজও আছে। কিন্তু গরিবের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের ঘুগুবাবুদের বিরুদ্ধে লড়াই করে না, আত্মসমালোচনায় এ আজও রাজি নয়, কিন্তু যিনি হবেন তাঁকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।      , , ।।।।, , '' , , , , ? , , , , , ( ' ) ' ' ' ' , , () ! , , ,

  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন