এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  সমাজ

  • ঔপনিবেশিক হিন্দু আইন 

    এলেবেলে লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | সমাজ | ২০ জুলাই ২০২৪ | ৭৬৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • It is significant that the early colonial rulers of Bengal introduced the code of Hindu law in Bengal during the last three decades of the eighteenth-century, when legal codes were not well known in Europe. The Code Napoleon was produced only in 1804. The German code was introduced even later. Indeed the colonial rulers of Bengal evoked the model of Justinian in preparing the legal codes of Bengal.
    — Nandini Bhattacharyya-Panda, The East India Company and Hindu Law in Early Colonial Bengal

    হিন্দু ধর্মশাস্ত্রে বিবৃত শ্লোকসমূহের চুলচেরা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণকে কেন্দ্র করে প্রথমে রামমোহন ও পরে বিদ্যাসাগর তাঁদের সতীদাহ নিবারণ, বিধবাবিবাহ প্রচলন ও বহুবিবাহ নিবারণ বিষয়ক যুক্তিজালকে শানিত করেন। তাঁদের সংস্কার প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করার জন্য, তৎকালীন প্রভাবশালী সমাজকর্তারাও অন্যান্য সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতদের সহায়তায় এ বিষয়ে বিবাদ-বিতর্কে অবতীর্ণ হন। সতীদাহ, বিধবাবিবাহ ও বহুবিবাহের সমর্থক ও বিরোধী—  উভয় পক্ষই যেহেতু ধর্মশাস্ত্রের আশ্রয় নেন, সেহেতু রামমোহন ও বিদ্যাসাগরের সংস্কার প্রচেষ্টার প্রকৃত তাৎপর্য উপলব্ধি করতে হলে ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় ‘হিন্দু’ আইনের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশের বিষয়টি বিশদে আলোচনা করা অত্যন্ত জরুরি।

    ১৭৬৫ সালে কোম্পানির দেওয়ানি লাভ করার আগে পর্যন্ত, ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে ভারতবর্ষের হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে প্রত্যেকের জন্য একই আইন প্রযোজ্য ছিল। বিশেষত তদানীন্তন বাংলার প্রচলিত রীতি অনুসারে প্রতিটি নিজামত (ফৌজদারি) আদালতে অপরাধের মাত্রা অনুসারে শাস্তির বিষয়টি দেখভাল করতেন একজন কাজি, একজন মুফতি ও দুজন মৌলবি। তবে দেওয়ানি আইনের ক্ষেত্রে মুসলমানদের জন্য ঔরঙ্গজেবের সময় থেকেই সুন্নি হানাফি স্কুলের ওপর ভিত্তি করে মুসলিম আইনের একটি সারসংক্ষেপ— তোয়া--আলমগিরি— বলবৎ থাকলেও হিন্দুদের জন্য আলাদাভাবে নির্দিষ্ট কোনও গ্রন্থ কিংবা বিধিবদ্ধ আইন প্রচলিত ছিল না। সেই সময়ে ভারতবর্ষের হিন্দুরা সচরাচর স্থানীয় স্তরেই তাঁদের যাবতীয় বিবাদ-বিসংবাদের নিষ্পত্তি করতেন। যদি কোনও ব্যক্তি সেই মীমাংসায় সন্তুষ্ট না হয়ে দেওয়ানি আদালতের শরণাপন্ন হতেন, সেক্ষেত্রে উত্তরাধিকার, বিবাহ, জাতপাত এবং ধর্মসংক্রান্ত যাবতীয় বিবাদের নিষ্পত্তির জন্য, আদালতে শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতদের সাহায্য বা পরামর্শ নেওয়ার প্রথা প্রচলিত ছিল। যদিও কাজিরাই চূড়ান্ত রায়দানের অধিকারী ছিলেন।

    এই প্রসঙ্গে দেওয়ানি আমলে (১৭৬৫-৭২) বাংলার রাজস্ব আদায়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মচারী মহম্মদ রেজা খাঁ-র উল্লেখ করা যেতে পারে। প্রাক্‌-ঔপনিবেশিক ন্যায়বিচারের ধারা সম্পর্কিত ব্রিটিশ আধিকারিকদের প্রশ্নের জবাবে রেজা খাঁ বলেন: “যদি হিন্দুরা তাঁদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার ও বিভাজন ইত্যাদি যাবতীয় বিবাদের নিষ্পত্তির বিষয়ে তাঁদের ব্রাহ্মণদের কথা অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তাঁরা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে অভিযোগ করবেন কেন। কিন্তু যখন তাঁদের ব্রাহ্মণরা এ বিষয়ে তাঁদের বিরোধের নিষ্পত্তি করতে পারেন না, তখন তাঁরা আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযোগ করেন এবং তাঁর মতামতকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসাবে মান্য করতে বাধ্য হন।” [] রেজা খাঁ-র বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, হিন্দু প্রজাদের উত্তরাধিকার, বিবাহ, জাতপাত ইত্যাদি সম্পর্কিত বিবাদের নিষ্পত্তির জন্য শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতদের পরামর্শ নেওয়ার প্রথা প্রচলিত ছিল। কিন্তু পণ্ডিতদের মতামতকে আইন হিসাবে বিবেচনা করা হত না। কেবল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট অর্থাৎ কাজিদেরই ন্যায়বিচারের অধিকার ছিল।

    যদিও হিন্দুদের জন্য দেওয়ানি আদালতে শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতদের পরামর্শ দেওয়ার প্রথা থাকলেও কোনও সময়েই তাঁরা তাঁদের মর্জিমাফিক এই বিবাদ-বিরোধের মীমাংসা করতেন না। ষোড়শ শতাব্দীর বিখ্যাত ভাষ্যকার রঘুনন্দন ব্যবহারতত্ত্ব গ্রন্থে জানিয়েছেন, শাস্ত্রীয় রীতিনীতিগুলির চেয়ে প্রচলিত সামাজিক রীতিনীতি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে স্থানীয় স্তরে কোনও বিরোধের সমাধান না করা গেলে, তার নিষ্পত্তির জন্য বিবদমান গোষ্ঠী রাজার শরণাপন্ন হবে। সেক্ষেত্রে রাজা একজন ‘প্রাড়্‌বিবাক’ (শাস্ত্র ও সামাজিক রীতিনীতি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ব্রাহ্মণ, ক্ষেত্রবিশেষে বিশেষ গুণসম্পন্ন ক্ষত্রিয়ও হতে পারেন) নিয়োগ করবেন। এই বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষকে প্রশ্ন করার পরে তাঁর মতামত উপস্থাপন করলে রাজা চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবেন। [] ফলে প্রাক্‌-ঔপনিবেশিক বিচারব্যবস্থায় যাবতীয় আইনি বিবাদের মীমাংসার বিষয়ে ব্রাহ্মণ অথবা ক্ষত্রিয় শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতরা নন, রাজা কিংবা কাজিই ছিলেন চূড়ান্ত রায়দানের অধিকারী।

    কিন্তু ভারতবর্ষে ব্রিটিশ প্রশাসন প্রথম থেকেই স্থির করে, ভারতীয়দের ফৌজদারি বিচারের ক্ষেত্রে হিন্দু ও মুসলমান উভয়েই মুসলিম ফৌজদারি আইন দ্বারা আগের মতোই শাসিত থাকলেও হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক দেওয়ানি আইন চালু হবে। তাই ভারতবর্ষের বিচারব্যবস্থার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই তারা প্রচলিত আইনব্যবস্থাটিকে সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দেয় এবং কেবল নিজেদের স্বার্থপূরণের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনামাফিক এই বিভাজনমূলক কাজটি সম্পাদন করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়ে। এই বিষয়ে সলতে পাকানোর কাজটি মূলত শুরু করেন স্ক্র্যাফটন (Luke Scrafton), হলওয়েল (John Holwell), বোল্টস (William Bolts), ভেরেলস্ট (Harry Verelst) প্রমুখ কোম্পানির কিছু হর্তাকর্তা।
     
    সংস্কৃত ভাষা এবং ধর্মশাস্ত্র সম্পর্কে বিশুদ্ধ গণ্ডমূর্খ স্ক্র্যাফটন ১৭৭০ সালে বলেন: “ব্রাহ্মণরা বলে, তাদের আইন প্রণেতা ব্রুমা [ব্রহ্মা] তাদের জন্য বিদম [বেদ] বলে একটি বই রেখে গেছেন, যেখানে সমস্ত মতবাদ ও প্রতিষ্ঠানের উল্লেখ আছে। কেউ কেউ বলে, যে মূল ভাষাতে এটি লেখা হয়েছিল সেটি হারিয়ে গেছে এবং বর্তমানে তাদের কাছে কেবল একটি ব্যাখ্যা আছে, যাকে শাস্তহ (SHASTAH) [শাস্ত্র] বলা হয়। এটি সংস্কৃত ভাষায় রচিত, যা বর্তমানে একটি মৃত ভাষায় পরিণত এবং যারা এই ভাষার অধ্যয়ন করে, কেবল সেই ব্রাহ্মণদের কাছে পরিচিত। ...যদিও লাহোর থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত মহাদেশের সমস্ত জেন্টু [হিন্দু] বিদমকে স্বীকার করে, তবুও তারা এর [শাস্ত্র] ভেতরে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে ...।” [] বলা বাহুল্য, তাঁর ‘SHASTAH’ শব্দটি ধর্মশাস্ত্রের ইঙ্গিত করলেও সেই ধারণা যে কতদূর ভ্রান্ত ছিল, সে বিষয়ে আমরা অচিরেই মনোযোগী হব। একই সুরে স্ক্র্যাফটনের বক্তব্যের প্রায় অনুবৃত্তি করে The History of Hindostan গ্রন্থের লেখক আলেকজান্ডার ডাও বলেন: “প্রত্যেক মুসলমান, যারা কোরান বিড়বিড় করতে পারে, কোনও অনুমতি বা নিয়োগপত্র ছাড়াই নিজেকে একজন বিচারকের পদে উত্থাপন করে এবং প্রতিটি ব্রাহ্মণ কোনও নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই তার নিজস্ব মর্জিমাফিক ন্যায়বিচার বিতরণ করে।” [] স্ক্র্যাফটন কিংবা ডাও-এর এই অপরিসীম অবজ্ঞাসূচক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যসমূহ থেকে এ কথা স্পষ্ট, তাঁরা প্রাক্‌-ঔপনিবেশিক বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ছিলেন।

    একই ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে এবং অতীতের বিচারবিভাগীয় ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করে দেওয়ানি লাভের মাত্র ৭ বছরের মধ্যেই গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস, পৃথক ‘হিন্দু’ ও ‘মুসলমান’ দেওয়ানি আইনের সংকলন গ্রন্থ তৈরি করার বিষয়ে উদ্যমী হন। ১৭৭২-এর ১৫ অগস্ট সরকারিভাবে ঘোষিত হয়: “উত্তরাধিকার, বিবাহ, জাতপাত ও অন্যান্য ধর্মীয় আচরণ বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সমস্ত মামলায়, মুসলমানদের কোরানের আইনসমূহ এবং হিন্দুদের ক্ষেত্রে শাস্ত্রব্যবস্থা চিরকাল সম্মানের সঙ্গে মেনে চলতে হবে। এই সমস্ত [মামলা] উপলক্ষে যথাক্রমে মৌলবিরা বা ব্রাহ্মণরা আইনটির ব্যাখ্যা করার জন্য [আদালতে] উপস্থিত থাকবেন এবং তারা রিপোর্টে স্বাক্ষর করে ডিক্রি পাস করতে সহায়তা করবেন।” [] হেস্টিংসের দৌলতে এই প্রথম ভারতবর্ষের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে হিন্দু ধর্মশাস্ত্র আইনত প্রয়োগযোগ্য হয়ে ওঠে। তাঁর প্রত্যক্ষ সহায়তা ও আর্থিক অনুদানের ভিত্তিতে পণ্ডিত ও মৌলবিদের সাহায্য নিয়ে হিন্দু ও মুসলমানদের জন্য এই বিষয়ে দুটি পৃথক সংকলন গ্রন্থ ইংরেজিতে অনুবাদের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এই সংকলন গ্রন্থ তৈরি করার উদ্দেশ্য ছিল— ক) আরবি ও সংস্কৃত ভাষা সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ইংরেজ বিচারকদের রায়দানের বিষয়ে সহায়তা করা এবং খ) তাঁদের রায়দানের ক্ষেত্রে আদালতের পণ্ডিত ও মৌলবিদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার বিষয়টি যথাসম্ভব কমিয়ে ফেলে এই শ্রেণিটিকে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক করে দেওয়া।

    অথচ যে ধর্মশাস্ত্রের ওপর ব্রিটিশরা এত গুরুত্ব আরোপ করে তাকে ‘আইন’-এ পর্যবসিত করে, সেই ধর্মশাস্ত্রগুলি কোনও কালেই হিন্দুদের কাছে ‘আইন’ হিসাবে বিবেচিত হত না। এই গ্রন্থগুলি ছিল মূলত তাদের ‘code of conduct’ বা আদর্শ আচরণবিধির দ্যোতক। এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত সংস্কৃতজ্ঞ পাণ্ডুরং বামন কাণে বলেন: “ধর্মশাস্ত্রকাররা ‘ধর্ম’ বলতে কোনও ধর্ম নয়, বরং এমন জীবনযাপন বা আচরণবিধির কথা বলেছেন, যা সমাজের সদস্য হিসাবে একজন ব্যক্তির কর্ম ও ক্রিয়াকলাপকে নিয়ন্ত্রিত করে এবং যাকে মানব অস্তিত্বের লক্ষ বলে মনে করা হয়েছিল, ক্রমান্বয়ে সেখানে পৌঁছতে সক্ষম করে তোলে।” [] ফলত স্বাভাবিকভাবেই প্রাক্‌-ঔপনিবেশিক আদালতে ধর্মশাস্ত্রগুলি কোনও দিন আইনের মর্যাদা পায়নি। যদিও ১৭৭৩ সালের অক্টোবরে ভারতবর্ষের প্রথম গভর্নর জেনারেল হওয়ার অব্যবহিত পরে, হেস্টিংস এই উদ্দেশ্যে চালু করেন ‘Regulating Act’ বা নিয়ামক আইন। তারই অনুষঙ্গে সরকারি ব্যয়ে ও হেস্টিংসের সক্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় হিন্দু শাস্ত্রীয় গ্রন্থগুলি থেকে নির্বাচিত অংশের অনুবাদ প্রক্রিয়া জোরকদমে শুরু হয়ে যায়। ইংরেজিতে এই অনুবাদের দায়িত্ব পান ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড।
     
    তাঁর সংস্কৃত জ্ঞান অত্যন্ত সীমিত ছিল। এই কারণে দায়িত্ব পাওয়ার পরে, তিনি বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোট ১১ জন পণ্ডিতকে— রামগোপাল ন্যায়ালঙ্কার, বীরেশ্বর পঞ্চানন, কৃষ্ণজীবন ন্যায়ালঙ্কার, বাণেশ্বর বিদ্যালঙ্কার, কৃপারাম তর্কসিদ্ধান্ত, কৃষ্ণচন্দ্র সার্বভৌম, গৌরীকান্ত তর্কসিদ্ধান্ত, কৃষ্ণকেশব তর্কালঙ্কার, সীতারাম ভট্ট, কালীশঙ্কর বিদ্যাবাগীশ ও শ্যামসুন্দর ন্যায়সিদ্ধান্ত []— এই অনুবাদের কাজে নিয়োগ করেন। পাশাপাশি ঔপনিবেশিক হিন্দু আইনের জন্য সংকলন গ্রন্থটিতে সম্পত্তির উত্তরাধিকার, অপরিচিত ব্যক্তির সম্পত্তি বিক্রয়, অংশীদারিত্ব, মহিলাদের সম্পত্তির অধিকার, দত্তকগ্রহণ, জমি চাষে ভাগের পরিমাণ ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির জন্য জরিমানা, ঋণ, দাসত্ব, মানহানি, ব্যভিচার, জালিয়াতি, বিক্রয়কর ইত্যাদি নানাবিধ বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়।
     
    এই গ্রন্থটিতে আলোচিত বিষয়গুলির বিস্তৃত পরিসর ইঙ্গিত দেয় যে, সংকলকদের নির্দিষ্ট কোন কোন বিষয়ের উপর মন্তব্য করতে হবে, সে ব্যাপারে হ্যালহেডের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়। অবশেষে গুপ্তিপাড়ার প্রখ্যাত সংস্কৃতজ্ঞ বাণেশ্বর বিদ্যালঙ্কারের প্রত্যক্ষ সহায়তা ও তত্ত্বাবধানে ১৭৭৩-এর মে থেকে এই অনুবাদকর্ম শুরু হয়ে শেষ হয় ১৭৭৫-এর ফেব্রুয়ারি মাসে। সংকলন গ্রন্থটির নাম দেওয়া হয় বিবাদার্ণবসেতু। প্রথমে এই সংকলনটি ফারসিতে অনূদিত হয় ও পরে তাকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন স্বয়ং হ্যালহেড। ১৭৭৬ সালে এটি A Code of Gentoo Laws, or, Ordinations of the Pundits নামে প্রকাশিত হয়।

    এই অনুবাদ প্রসঙ্গে গ্রন্থটির ভূমিকায় হ্যালহেড বলেন: “বর্তমান গ্রন্থটি সংকলনের উদ্দেশ্যে বাংলার প্রতিটি অংশ থেকে এই সমস্ত অভিজ্ঞ আইনজীবীকে নির্বাচন করা হয়। তাঁরা সংস্কৃত ভাষার বিভিন্ন মূল [অংশ] থেকে বাক্য ধরে ধরে বেছে নিয়েছিলেন এবং প্রাচীন পাঠ্যগুলির কোনও অংশ সংযোজন বা বিয়োজন করেননি। পরবর্তীকালে এইভাবে সংগৃহীত [শাস্ত্রীয়] নিবন্ধগুলি তাঁদের নিজস্ব একজন [ফারসি ভাষায় সুপণ্ডিত] পরিদর্শকের অধীনে ফারসি ভাষায় আক্ষরিকভাবে অনুবাদ করা হয়। তারপর সেই ফারসি অনুবাদটির প্রতি যথাযথ বিশ্বস্ততা বজায় রেখে সেটি ইংরেজিতে অনূদিত হয়।” [] লক্ষণীয়, এই উদ্ধৃতিটিতে হ্যালহেড সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতদের ‘অভিজ্ঞ আইনজীবী’ হিসাবে চিহ্নিত করেন। তবে মূল সংস্কৃত সংকলন থেকে অনুবাদের সময়ে কোনও বিচ্যুতি ঘটেনি বলে হ্যালহেড যতই দাবি করুন না কেন, এই বিষয়ে পরবর্তী আলোচনায় তাঁর তথা শাসকদের দৃষ্টিকোণ ক্রমে প্রকাশিত হবে।

    আইনটির আওতায় নানাবিধ প্রসঙ্গের অবতারণা করা হলেও এই আইন প্রবর্তনের মূল উদ্দেশ্য ছিল— ক) বৃহৎ জমিদারদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা ও খ) তদানীন্তন বাংলার একাধিক মহিলা জমিদারদের সম্পত্তি সুকৌশলে হাতিয়ে নেওয়া। পলাশি যুদ্ধে জয়লাভের পর থেকেই কোম্পানি অস্বাভাবিক হারে রাজস্ব আদায় করতে শুরু করে। এই কারণে ১৭৬০ সালে বীরভূমের রাজা আসাদ জামান খান বর্ধমানের রাজার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ করেন। পরবর্তী কয়েক দশক জুড়ে মেদিনীপুরের রামরাম সিং, ধলভূমের রাজা (১৭৬৯-৭৪), রংপুরের জমিদার (১৭৮৩), বিষ্ণুপুরের জমিদার (১৭৮৯) প্রমুখ ব্রিটিশ শাসকদের তীব্র বিরোধিতা করতে শুরু করেন। [] বিদ্রোহী রাজা ও জমিদারদের আয়ত্তে আনতে যে আইনি ছলচাতুরি করা হয়, এই আইনটির সঙ্গে ধর্মশাস্ত্রে বিবৃত বিধির তুলনামূলক আলোচনা করলেই তা স্পষ্ট হবে।

    সম্পত্তি বিভাজনের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠপুত্রের অগ্রাধিকারের কারণ হিসাবে মনুসংহিতা-র নবম অধ্যায়ে লিখিত আছে:
    জ্যেষ্ঠেন জাতমাত্রেণ পুত্রীভবতি মানবঃ।
    পিতৃণামনৃণশ্চৈব স তস্মাৎ সর্ব্বমর্হতি।।
    যস্মীন্নৃণং সন্নয়তি যেন চানন্তমশ্নুতে।
    স এব ধর্ম্মজঃ পুত্রঃ কামজানিতরান্‌ বিদুঃ।।
    পিতেব পালয়েৎ পুত্রান্‌ জ্যেষ্ঠো ভ্রাতন্‌ যবীয়সঃ।
    পুত্রবচ্চাপি বর্ত্তেরন্‌ জ্যেষ্ঠে ভ্রাতরি ধর্ম্মতঃ।। ৯. ১০৬-০৮
    (জন্ম হওয়া মাত্রই জ্যেষ্ঠপুত্র দ্বারা মানব পুত্রবিশিষ্ট হয় এবং [পুন্নাম নরক থেকে নিস্তার পেয়ে] পিতৃঋণমুক্ত হয়। [তাই] জ্যেষ্ঠই পুত্রপদবাচ্য, মধ্যমাদিরা তা নয়, এ কারণে জ্যেষ্ঠ সকল ধনসম্পদ পাওয়ার যোগ্য। যে জ্যেষ্ঠের উৎপত্তিমাত্র পিতা পিতৃঋণ শোধ করেন এবং যার দ্বারা পিতা মোক্ষলাভ করেন, সেই জ্যেষ্ঠকে ধর্মজ সন্তান বলা যায়। যেহেতু কনিষ্ঠ পুত্ররা কামহেতু উৎপন্ন হয়, সেহেতু এদের কামজ সন্তান বলা যায়। অতএব জ্যেষ্ঠ সকল পৈতৃক ধনসম্পদ পাওয়ার যোগ্য। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা কনিষ্ঠ ভ্রাতাদের সঙ্গে একত্রে অবস্থান করে পিতা যেমন পুত্রদের প্রতিপালন করেন, তেমনভাবে কনিষ্ঠ ভ্রাতাদের প্রতিপালন করবেন এবং কনিষ্ঠেরা পিতার মতো জ্যেষ্ঠের অনুগত থাকবেন)। [১০]

    তবে এই শ্লোকত্রয়ের পরবর্তী দুটি শ্লোকে এই ব্যবস্থার সামান্য পরিবর্তন করে মনু জানান:
    জ্যেষ্ঠস্য বিংশ উদ্ধারঃ সর্ব্বদ্রব্যাচ্য যদ্বরম্‌।
    ততো[হ]র্দ্ধং মধ্যমস্য স্যাত্ত রীয়ন্তু যবীয়সঃ।।
    জ্যেষ্ঠশ্চৈব কনিষ্ঠশ্চ সংহরেতাং যথোদিতম্‌।
    যে[হ]ন্যে জ্যেষ্ঠকনিষ্ঠাভ্যাং তেষাং স্যান্মধ্যমং ধনম্‌।। ৯. ১১২-১৩
    (যখন সমস্ত ভাই মিলে পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ করবেন, তখন সমস্ত সম্পত্তি বিশ ভাগ করে তার এক ভাগ জ্যেষ্ঠকে দেবেন। মধ্যমকে চল্লিশ ভাগের এক ভাগ এবং সর্বকনিষ্ঠকে আশি ভাগের এক ভাগ দিয়ে অবশিষ্ট সম্পত্তি সকলে সমানভাবে ভাগ করে নেবেন। অন্য ভাইয়েরা মধ্যম ভ্রাতার মতোই চল্লিশ ভাগের এক ভাগ পাবেন)। [১১]
    এই বিষয়ে স্মৃতিশাস্ত্রের দুই প্রধান ভাষ্যকার— দায়ভাগ-এর জীমূতবাহন এবং মন্বর্থমুক্তাবলী-র কুল্লুকভট্ট— একই কথা বলেন।

    কিন্তু লোকাচার ও শাস্ত্রব্যাখ্যাকে অমান্য করে আইনে স্পষ্ট বলা হয়: “যদি কোনও ব্যক্তি মারা যায় বা কোনও অপরাধের জন্য তার গোত্র, তার আত্মীয়স্বজন এবং স্বজাতি থেকে বহিষ্কৃত হয় বা তার সমস্ত সম্পত্তি— জমি বা অর্থ বা গবাদি পশু বা পাখি— ত্যাগ করতে ইচ্ছুক হয়, তাহলে তা [সম্পত্তি] তার পুত্র পাবে; যদি একাধিক পুত্র থাকে তবে তারা সবাই সমান ভাগ পাবে।” [১২] এভাবে প্রথমে পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠপুত্রের যে অতিরিক্ত অংশ প্রাপ্য, আইনের সাহায্য নিয়ে তা থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয় এবং সেই সম্পত্তি সমস্ত পুত্রের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আইনে আরও বলা হয়, একইভাবে পুত্রের অনুপস্থিতিতে পৌত্রদের মধ্যে এবং পৌত্র না থাকলে প্রপৌত্রদের মধ্যে সম্পত্তিটি বিভক্ত করা উচিত। [১৩] এই যুগপৎ আইনি পরিবর্তনের ফলে জমিদারির আয়তন ক্রমশ ছোট হতে শুরু করে। ফলে এক দিকে যেমন কোম্পানির পক্ষে একটি বৃহৎ জমিদারির পরিবর্তে অসংখ্য ক্ষুদ্র জমিদারিগুলিকে শাসন করা সহজ হয়ে যায়, অন্য দিকে তেমনই এই জমিদারিগুলি থেকে রাজস্ব আদায় করার পথটিও সুগম হতে শুরু করে। একই উপায়ে ধূর্ত ইংরেজরা আইনি আবডালের সাহায্যে সম্পত্তির উত্তরাধিকারের প্রসঙ্গটিকে ক্রমশ পিতৃতান্ত্রিক করে তোলে এবং সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে নারীদের বঞ্চিত করতে শুরু করে।
     
    প্রাক্‌-ব্রিটিশ ভারতবর্ষে হিন্দুদের সম্পত্তি বিভাজন ও উত্তরাধিকারের বিষয়ে দুটি টীকাভাষ্য— দায়ভাগ ও মিতাক্ষরা— মান্য করার চল ছিল। বাংলা ও অসম ছাড়া গোটা দেশে বিজ্ঞানেশ্বর (আনুমানিক ১১০০ সাল)-এর মিতাক্ষরা আইন প্রচলিত থাকলেও বাংলা ও অসমে মূলত বঙ্গীয় নিবন্ধক জীমূতবাহন (আনুমানিক ১১০০-১১৫০ সাল)-এর দায়ভাগ প্রথা চালু ছিল। দায়ভাগের প্রধান তিনটি ভাষ্য হল— জীমূতবাহন-এর দায়ভাগ, রঘুনন্দন-এর দায়তত্ত্ব ও শ্রীকৃষ্ণ তর্কালঙ্কার-এর দায়ক্রমসংগ্রহ। অন্য দিকে, ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে মিতাক্ষরা চালু থাকলেও সর্বত্র বিজ্ঞানেশ্বর-এর মূল ভাষ্যকে মান্য করা ছাড়াও সর্বমোট চারটি ভিন্ন ধারা ছিল— ১. বীরমিত্রোদয়-এর বেনারস ধারা, ২. বিবাদরত্নাকর, বিবাদচন্দ্রবিবাচিন্তামণি আশ্রিত মিথিলা ধারা, ৩. ব্যবহামুখ্য, বীরমিত্রোদয়নির্ণয়সিন্ধু-র ওপর গুরুত্ব আরোপ করা মহারাষ্ট্র ধারা এবং ৪. স্মৃতিচন্দ্রিকা, ব্যবহারনির্ণয়সরস্বতীবিলাস আশ্রিত দ্রাবিড় ধারা। [১৪] অর্থাৎ সারা ভারতবর্ষে সম্পত্তি বিভাজন ও উত্তরাধিকারের বিষয়ে কেবল একটি বিধি বা প্রথা মান্য করার চল ছিল না, বরং অঞ্চলভেদে যথেষ্ট তারতম্য ছিল।

    সংক্ষেপে দায়ভাগ ও মিতাক্ষরার মধ্যে প্রধান তিনটি পার্থক্য হল— ক) দায়ভাগ অনুযায়ী কোনও সম্পত্তির অধিকারীর মৃত্যুর পরে কিংবা তিনি যদি সামাজিকভাবে ‘পতিত’ হন বা সন্ন্যাসী হন, কেবল তখনই সেই সম্পত্তির পরবর্তী উত্তরাধিকারীর প্রসঙ্গ উঠতে পারে। কিন্তু মিতাক্ষরা মতে, পুত্র, পৌত্র বা প্রপ্রৌত্র জন্মগতভাবে পিতা বা অন্য পূর্বপুরুষের পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকার অর্জন করতে পারে। খ) দায়ভাগ অনুসারে পৈতৃক ও স্বোপার্জিত সম্পত্তিতে বাঙালি হিন্দুর সম্পূর্ণ অধিকার আছে এবং তাঁরা তাঁদের ইচ্ছানুসারে সেই সম্পত্তি  দান বা বিক্রি করতে পারেন। কিন্তু মিতাক্ষরা অনুযায়ী যেহেতু জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই পৈতৃক সম্পত্তিতে পিতার সঙ্গে পুত্রের সমান স্বত্ব জন্মায়, সেহেতু পিতা তাঁর পুত্র ও পৌত্রদের সম্মতি ছাড়া তাঁর সম্পত্তি অবাধে দান বা বিক্রি করতে পারেন না। গ) দায়ভাগ মতে, কেবল পৃথগন্ন পরিবারে নয়, এমনকি অবিভক্ত অর্থাৎ যৌথ পরিবারেও অপুত্রক ব্যক্তির মৃত্যুর পরে, তাঁর বিধবা পত্নী তাঁর স্বামীর বিভক্ত বা অবিভক্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির সমগ্র অংশের মালিকানা লাভ করতে পারেন। তবে তিনি সেই সম্পত্তি অন্য কাউকে দান বা বিক্রি করতে পারেন না। কিন্তু মিতাক্ষরা অনুযায়ী, কোনও অপুত্রক বিধবা তাঁর স্বামীর কেবল বিভক্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারেন। তবে তাঁর মৃত্যুর পরে সেই সম্পত্তি তাঁর উত্তরাধিকারীদের কাছে নয়, তাঁর স্বামীর পরবর্তী উত্তরাধিকারী অর্থাৎ তাঁর ভাইদের কাছে চলে যাবে। আর যৌথ হিন্দু পরিবারের সদস্য হিসাবে তিনি তাঁর জীবদ্দশায় শুধুমাত্র ভরণপোষণ পেতে পারেন, পরিবারের সম্পত্তিতে তাঁর অন্য কোনও অধিকার নেই। [১৫]

    তদানীন্তন ভারতবর্ষে, বিশেষত বাংলায়, প্রচলিত ঐতিহ্য ও শাস্ত্র— দু’দিক থেকেই সম্পত্তিতে নারীদের, এমনকি বিধবাদেরও অধিকারের বিষয়টিকে মেনে নেওয়া হয়। এই সময়ে বাংলার যে তিনটি অন্যতম বৃহৎ জমিদারির প্রত্যেকে কোম্পানিকে বছরে ১ লক্ষ পাউন্ডেরও বেশি রাজস্ব দিত, সেই তিনজন জমিদারই ছিলেন মহিলা ও বিধবা। বছরে ৩৫০,০০০ পাউন্ডেরও বেশি রাজস্ব দেওয়া বর্ধমান ছিল তিলকচাঁদের বিধবা পত্নী ও তেজচাঁদের জননী রানি বিষ্ণুকুমারীর শাসনাধীন। ২৬০,০০০ পাউন্ডেরও বেশি বার্ষিক আদায়যুক্ত রাজশাহী শাসন করতেন শ্রদ্ধেয়া রানি ভবানী, যিনি ১৭৪৮ সালে রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পরে রাজশাহীর রাজকার্য পরিচালনার ভার নিজের হাতে নেন। আর কোম্পানিকে বছরে ১৪০,০০০ পাউন্ডেরও বেশি খাজনা দিতেন দিনাজপুরের রাজা বৈদ্যনাথের বিধবা পত্নী রানি সরস্বতী। [১৬]

    কিন্তু সমসাময়িক ইংল্যান্ডে মহিলাদের সম্পত্তির মালিকানা পাওয়া কিংবা তার পরিচালনা করার অনুমতি ছিল না। ফলত তৎকালীন রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে যুক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বর্ধমানের রানি বিষ্ণুকুমারী, নাটোরের রানি ভবানী, দিনাজপুরের রানি সরস্বতী, মহিষাদলের রানি জানকী, তমলুকের রানি কৃষ্ণপ্রিয়া ও সন্তোষপ্রিয়া, কর্ণগড়ের রানি শিরোমণি কিংবা মেদিনীপুর বা রাজশাহীর একাধিক মহিলা জমিদারদের প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে দাপট ও দক্ষতার বিষয়টিকে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নিতে পারেনি। দেওয়ানি ব্যবস্থা চালু ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন— এই মধ্যবর্তী টালমাটাল সময়কালে, ব্রিটিশরা তাদের শাসনব্যবস্থাকে সুসংহত ও শক্তিশালী করে তোলার জন্য বাংলার বিদ্রোহী রাজা ও জমিদারদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করতে দ্বিধা করেনি। কিন্তু রাজস্ব প্রদানকারী বাংলার মহিলা জমিদারদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে তাঁদের আয়ত্তে আনা শাসকদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই সম্পত্তির অধিকার থেকে মহিলাদের সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত করার জন্য, তারা অস্ত্রের পরিবর্তে আইনের সাহায্য নিয়ে নারীদের সম্পত্তিগুলিকে পুরুষদের হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু করে।

    এই বক্তব্যের সমর্থনে কেবল তিনটি বিষয়ের উল্লেখ করাই যথেষ্ট হবে। প্রথমত, মহিলাদের সম্পত্তির অধিকার থেকে সুপরিকল্পিতভাবে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে, এই আইন তৈরি করার সময়ে ব্রিটিশরা ভারতীয় ধর্মশাস্ত্রের মূল দুটি শাখা—মিতাক্ষরা ও দায়ভাগ— সম্পর্কে চূড়ান্ত ঔদাসীন্য প্রকাশ করে। আমরা আগেই উল্লেখ করেছি, বাংলাতে প্রচলিত দায়ভাগ অনুযায়ী কেবল পৃথগন্ন পরিবারেই নয়, যৌথ পরিবারেও অপুত্রক ব্যক্তির মৃত্যুর পরে তাঁর বিধবা পত্নী তাঁর স্বামীর সম্পত্তির সমগ্র অংশের মালিকানা লাভ করতেন। শুধু তাই নয়, দায়ভাগ অনুসারে পিতার মৃত্যুর পরে পিতৃসম্পত্তির বিষয়ে অবিবাহিতা কন্যারাও পুত্রদের সঙ্গে সমান অংশের অধিকারী ছিল। কিন্তু এই প্রচলিত ঐতিহ্যকে মান্য করার বিষয়ে শাসকদের তীব্র অনিচ্ছার কারণেই বিবাদার্ণবসেতু সংকলনের সঙ্গে জড়িত ১১ জন বাঙালি পণ্ডিত বাংলায় প্রচলিত দায়ভাগ ব্যবস্থা সম্পর্কে নীরব থাকতে বাধ্য হন। ফলে বাংলার বিধবারা সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হতে শুরু করেন।

    দ্বিতীয়ত, এই আইনটিতে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বিভাজনের বিষয়ে একটি সূক্ষ্ম অথচ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করা হয়। দায়ভাগ অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির কোনও পুত্র, পৌত্র বা প্রপৌত্রের অবর্তমানে উক্ত ব্যক্তির বিধবা স্ত্রী সেই সম্পত্তির পরবর্তী উত্তরাধিকারী হতেন। কিন্তু হ্যালহেডের আইনটিতে এই বিষয়ে মৃত ব্যক্তির দত্তক পুত্রের উল্লেখ করে বলা হয়: “যদি কোনও ব্যক্তির পুত্র, পৌত্র বা প্রপৌত্র না থাকে, তাহলে তার সমস্ত সম্পত্তি তার দত্তক পুত্র পাবে। যদি কোনও দত্তক পুত্র না থাকে, তবে তা দত্তক পুত্রের পুত্র পাবে। যদি কোনও দত্তক পুত্রের পুত্র না থাকে, তবে তা দত্তক পুত্রের পৌত্র পাবে।” [১৭] এ কথা সত্যি যে, বাংলায় একজন পুরুষ উত্তরাধিকারীর অনুপস্থিতিতে সম্পত্তি সংরক্ষণের জন্য দত্তক পুত্র নেওয়ার প্রথা চালু ছিল। বিশেষত বিধবারা পরিবারের অন্যান্য পুরুষ সদস্যদের থেকে তাঁদের অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য পুত্রদের দত্তক নিতেন। উদাহরণস্বরূপ, অপুত্রক রানি ভবানী শেষ জীবনে দত্তক পুত্রের হাতে জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব সঁপে দেন কিংবা অপুত্রক রানি সরস্বতী রাধানাথকে দত্তক পুত্র হিসাবে গ্রহণ করেন। কিন্তু এই প্রথার মাধ্যমে সম্পত্তি তাঁদের হাতেই থাকত, পরিবারের অন্যদের কাছে যেত না। আরও আশ্চর্যের কথা এই, মূল সংকলন গ্রন্থ বিবাদার্ণবসেতু-তে দত্তক গ্রহণের বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনাও করা হয়নি। এটি শুধুমাত্র বিবিধ বিভাগে শেষের দিকে দায়সারাভাবে উল্লিখিত হয়। [১৮] কাজেই অনুবাদের সময় হ্যালহেড যে এই গুরুত্বপূর্ণ সংযোজনটি করেন, তা স্পষ্ট বোঝা যায়।

    শুধু তাই নয়, মনুসংহিতা-র নবম অধ্যায়ের একটি শ্লোকে বলা হয়েছে:
    ঊর্দ্ধং পিতুশ্চ মাতুশ্চ সমেত্য ভ্রাতরঃ সমম্‌।
    ভজেরন্‌ পৈতৃকং রিকথ্‌মনীশাস্তে হি জীবতোঃ।। ৯. ১০৪
    (পিতা ও মাতার মৃত্যুর পরে ভ্রাতৃগণ মিলিত হয়ে পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ করবে; কারণ তাঁরা জীবিত থাকতে পুত্রগণ [সম্পত্তির] অধিকারী নয়)। [১৯] অথচ আইনে লেখা হয়: “If a Man, having a Wife, and Sons born from that Wife, dies, … so long as that Wife lives, it is not a right and decent Custom, that those Sons should share, and receive among themselves the Property left by that Person; if the Wife aforesaid gives them Instructions accordingly, then the Sons have Authority to divide it: At the Time of Division, if the Wife is desirous to receive a Share, she shall take One Share, at the Rate of the Share of One Son….” [২০] অর্থাৎ পিতার মৃত্যুর পরে, মাতার জীবদ্দশায় সম্পত্তি ভাগ করা ‘যথাযথ ও শালীন’ প্রথা নয়। তবে ‘তিনি যদি সেই বিষয়ে নির্দেশ দেন তবে পুত্রদের সম্পত্তি ভাগ করার অধিকার আছে’ এবং ‘স্ত্রী যদি অংশীদার হতে আগ্রহী হন, তবেই তিনি তার ছেলের সঙ্গে সমান অংশ পাবেন’। ঔপনিবেশিক শাসকদের বদান্যতায়, প্রথমে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির উত্তরাধিকারীরূপে দত্তক পুত্রের উল্লেখ করে এবং পরে বিধবা স্ত্রীর জীবদ্দশাতেই সেই সম্পত্তি ভাগ করার আইনি অনুমতি প্রদান করে, বিধবাদের আর্থিক দিক থেকে পঙ্গু করে দেওয়ার পিতৃতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটি সমাজে ক্রমশ জাঁকিয়ে বসে।

    তৃতীয়ত, এই বিষয়ে স্ত্রীধনের নতুন ব্যাখ্যা হাজির করে আইনটিতে সম্ভবত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনটি ঘটানো হয়। ‘স্ত্রীধন’ হল মহিলাদের একচেটিয়া সম্পত্তি যা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যথা বিবাহের আগে ও পরে পিতামাতা, স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, নিকটাত্মীয়, বন্ধুবান্ধব প্রমুখ মহিলাদের দান করেন। মনুসংহিতা-র নবম অধ্যায়ের ১৯৪ সংখ্যক শ্লোকে ‘স্ত্রীধন’ সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিয়ে মনু বলেছেন:
    অধ্যগ্ন্যধ্যাবাহনিকং দত্তঞ্চ প্রীতিকর্ম্মণি।
    ভ্রাতৃমাতৃপিতৃপ্রাপ্তং ষড়্‌বিধং স্ত্রীধনং স্মৃতম্‌।।
    (স্ত্রীধন [অন্ততপক্ষে] ছ’টি সূত্রে অর্জিত হতে পারে— অধ্যগ্নি (বিবাহের সময়ে পিত্রাদিদত্ত ধন), অধ্যাবাহনিক (পিতৃগৃহ থেকে স্বামীগৃহ গমনের সময় স্ত্রীর লব্ধ ধন), প্রীতিদত্ত (বিবাহের সময়ে ও পরে স্বামী ও অন্যদের দেওয়া নানা উপহার) এবং যে কোনও সময়ে ভ্রাতৃদত্ত, মাতৃদত্ত ও পিতৃদত্ত উপহার)। [২১] এই স্ত্রীধন নারীরা আমৃত্যু তাঁদের নিজস্ব সম্পদরূপে রেখে দিতে পারতেন। কেবল মাতার মৃত্যুর পরেই তাঁর পুত্রকন্যারা সেই স্ত্রীধনের উত্তরাধিকারী হতে পারত। এই কারণে স্ত্রীধনই ছিল বিধবাদের রক্ষাকবচ।

    স্বামীর মৃতুর পরে বিধবাদের আর্থিক দুর্দশা লাঘবের জন্য মনু যে বিধান দিয়েছিলেন, তা হল:
    পত্যৌ জীবতি যঃ স্ত্রীভিরলঙ্কারো ধৃতো ভবেৎ।
    ন তং ভজেরন্‌ দায়াদা ভজমানাঃ পতন্তি তে।। ৯. ২০০
    (পতির জীবদ্দশায় স্ত্রী তাঁর অনুমতিতে যে অলংকার ধারণ করবেন, স্বামীর মৃত্যুর পরে তা উত্তরাধিকারীরা ভাগ করতে পারবে না। করলে তারা পতিত হবে)। [২২] কিন্তু হ্যালহেডের আইনে বলা হয়: “WHATEVER Woman be of a Disposition altogether malevolent, or wanting in female Modesty, or careless of her Property, or unchaste, such Woman is incapable of possessing what has been specified to be a Woman’s Property.” [২৩] এভাবেই আইনে বিধবাদের ‘শালীনতা’ ও ‘সতীত্ব’ রক্ষা করার নিখাদ পিতৃতান্ত্রিক অছিলায় সম্পত্তির ক্ষেত্রে মহিলাদের বঞ্চিত করার প্রথা শুরু হয়। [লেখাটির তৃতীয় পর্বে এই বিষয়ে উদাহরণ সহযোগে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।]

    একই কারণে এই ঔপনিবেশিক আইনে সতীপ্রথার ওপর অভূতপূর্ব গুরুত্ব আরোপ করে লেখা হয়: “স্বামীর মৃত্যুর পরে তার মৃতদেহের সঙ্গে তার স্ত্রীর আগুনে আত্মাহুতি দেওয়াই যথাযথ। প্রত্যেক স্ত্রী, যে এভাবে [আগুনে] আত্মাহুতি দেবে, সে তার সৌভাগ্যের জন্য স্বামীর সঙ্গে সাড়ে তিন কোটি বছর স্বর্গে থাকবে। যদি সে আত্মাহুতি না দিতে পারে, সেক্ষেত্রে তাকে অবশ্যই অলঙ্ঘনীয় সতীত্ব রক্ষা করতে হবে। যদি সে সর্বদা সতীত্ব বজায় রাখতে পারে, তবে সে [মৃত্যুর পরে] স্বর্গবাসী হবে; আর যদি সতীত্ব রক্ষা না করে, তবে সে নরকে যাবে।” [২৪] হ্যালহেডের আইনটির মাধ্যমে বিধবাদের সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এবং ‘সতীত্ব’ বজায় রেখে জীবনযাপন করার যে প্রথা চালু হয়, তার রেশ ঔপনিবেশিক শাসনপর্বের শেষ দিন পর্যন্ত বজায় থাকে।

    হ্যালহেডের আগে পর্যন্ত ভারতবর্ষে বিবাদার্ণবসেতু নামে ধর্মশাস্ত্রের কোনও ভাষ্য বা নিবন্ধের অস্তিত্বই ছিল না। ব্রিটিশ শাসকদের বদৌলত এই অর্বাচীন ও অকিঞ্চিৎকর সংকলন গ্রন্থটিই শেষ পর্যন্ত আইনি কেতাবে পরিণত হয়। শুধু হিন্দুরাই নয়, ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলের উপজাতি সম্প্রদায় সমেত শিখ, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের মানুষরাও তার আওতাভুক্ত হতে বাধ্য হন। হেস্টিংস-হ্যালহেড জুটি সচেতনভাবে ভারতবর্ষের মাটিতে যে বিষবৃক্ষ রোপণ করেন, পরবর্তীকালে কর্নওয়ালিস-জোন্স জুটি তাকে সযত্নে লালন করে আরও পুষ্ট করে তুলবেন। নারীদের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে ভুলক্রমে যতটুকু ফাঁক রেখে যাবেন হ্যালহেড, পরবর্তী আইনটিতে তাঁর অনুগত শিষ্য জোন্স সেটুকুও ভরাট করে দিয়ে শাসকের পরম প্রার্থিত পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতাকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরবেন। তাঁর দৌলতে মনুসংহিতা  হয়ে উঠবে হিন্দুদের সবচেয়ে ‘প্রাচীন’ ও ‘প্রামাণ্য’ আইনগ্রন্থ।
    *****************************************************************
    উল্লেখপঞ্জি:
    ১. N. K. Sinha, The Economic History of Bengal: From Plassey to the Permanent Settlement, Vol. II, Calcutta, 1960, p. 191
    ২. Raghunandana Bhattacharyya, Vyavaharatattva, L.N. Sharma (ed.), Calcutta, 1829, p. 225; উদ্ধৃত Nandini Bhattacharyya-Panda, Appropriation and Invention of Tradition: The East India Company and Hindu Law in Early Colonial Bengal, New Delhi, 2008, p. 21
    ৩. Luke Scrafton, Reflection on the Government of Indostan, with a Short Sketch of the History of Bengal from 1739-1756 and an Account of the English Affairs to 1758, London, 1770, pp. 4-5
    ৪. Alexander Dow, The History of Hindostan, Vol. III, London, 1770, p. lxxiii
    ৫. Proceedings of the Committee of Circuit, 15 August 1772, p. 26; উদ্ধৃত Nandini Bhattacharyya-Panda, Appropriation and Invention of Tradition: The East India Company and Hindu Law in Early Colonial Bengal, p. 76
    ৬. Pandurang Vaman Kane, History of Dharmasastra: Ancient and Mediaeval Religious and Civil Law, Vol. II, Pt. 1, Poona, 1941, p. 2
    ৭. ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (সম্পাদিত), সংবাদপত্রে সেকালের কথা, দ্বিতীয় খণ্ড ১৮৩০-১৮৪০, পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত তৃতীয় সংস্করণ, ষষ্ঠ মুদ্রণ, কলিকাতা, ১৪২৫, পৃ. ৭১৮
    ৮. N. B. Halhed, A Code of Gentoo Laws, or, Ordinations of the Pundits, London, 1776, pp. x-xi; এরপর কেবল A Code of Gentoo Laws লেখা হবে।
    ৯. Sashi Bhusan Chaudhuri, Civil Disturbance during the British Rule in India (1765-1857), Calcutta, 1955, pp. 54-67
    ১০. ভরতচন্দ্র শিরোমণি, মনুসংহিতা, মেধাতিথি ও কুল্লুকভট্টের ভাষ্য সংবলিত চতুর্থ সংস্করণ, কলকাতা, ১৩৩৬, পৃ. ৭৮৯
    ১১. তদেব, পৃ. ৭৯১-৯২
    ১২. N. B. Halhed, A Code of Gentoo Laws, Chapter II, Sect. I, p. 29
    ১৩. তদেব
    ১৪. Pandurang Vaman Kane, History of Dharmasastra: Ancient and Mediaeval Religious and Civil Law, Vol. III, Second Edition, 1973, pp. 544-45
    ১৫. তদেব, পৃ. ৫৫৮-৫৯
    ১৬. Romesh Dutt, The Economic History of India under Early British Rule, London, Second Edition, 1906, p. 61
    ১৭. N. B. Halhed, A Code of Gentoo Laws, Chapter II, Sect. I, p. 30
    ১৮. Nandini Bhattacharyya-Panda, Appropriation and Invention of Tradition: The East India Company and Hindu Law in Early Colonial Bengal, p. 112
    ১৯. ভরতচন্দ্র শিরোমণি, মনুসংহিতা, পৃ. ৭৮৮
    ২০. N. B. Halhed, A Code of Gentoo Laws, Chapter II, Sect. XII, p. 86
    ২১. ভরতচন্দ্র শিরোমণি, মনুসংহিতা, পৃ. ৭৮৮
    ২২. তদেব, পৃ. ৮২২
    ২৩. N. B. Halhed, A Code of Gentoo Laws, Chapter II, Sect. III, p. 44
    ২৪. তদেব, অধ্যায় ২০, পৃ. ২৮৬
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২০ জুলাই ২০২৪ | ৭৬৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • r2h | 96.23.***.*** | ২১ জুলাই ২০২৪ ০১:২৮535076
  • দীপদীপ এখানে সুভাষিতাবলী খুলে বসেছেন।
    গুপুর দৃষ্টি আকর্ষন করলাম - বিনা প্ররোচনায় গালাগাল দেওয়া পোস্ট ডিলিট হোক।
  • দীপ | 2401:4900:3fbb:92fa:cf3d:92c3:e917:***:*** | ২১ জুলাই ২০২৪ ০১:৩৯535077
  • বিশেষণটি এলেবেলে মহোদয়ের লেখা থেকেই নেওয়া হয়েছে! 
    অবশ্য আমাকে নামে বেনামে কুৎসিততম  আক্রমণের সময় এসব মনে পড়েনা!
  • কৌতূহলী | 115.187.***.*** | ২১ জুলাই ২০২৪ ১০:৫৫535089
  • @দীপবাবু
    আপনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই কিছু কথা বলছি। এর আগে বিভিন্ন পোস্টে বা কমেন্টেই দেখেছি ,পোস্ট বা কমেন্ট পছন্দ না হলে আপনি পোস্টদাতাকে গালি দেন , এমনকি গুরুচণ্ডালীর প্রশাসকদেরও গালি দেন। কে ঠিক ,কে ভুল ,এই বিতর্কে যাওয়ার আগে আপনাকে এই অধমের একটা বিনীত প্রশ্ন , আজ অবধি মাত্র একটা উদাহরণও দেখাতে পারবেন , যেখানে শুধু গালি দিয়ে কারও মত বদলাতে পেরেছেন?মাত্র একটা উদাহরণ? পারবেন না। উল্টে যাকে গালি দিচ্ছেন , সে আরও রিজিড হয়ে যায়। আর গুরুচণ্ডালীর প্রশাসকদের ওপর যদি আপনার রাগ থাকে , সেই রাগ গুরুর সাইটে এসেই উগড়ে দেওয়া হাস্যকর নয় কি? 
     
    কাজেই এভাবে গালি দিয়ে কোন সমাধান পাবেন না , আমার কথা মিলিয়ে নিতে পারেন। সত্যিই যদি মনে হয় , পোস্টদাতা ভুল লিখছেন ,পোস্টদাতার সাথে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে সামনাসামনি আলোচনা তর্ক করুন সঙ্গে আমাদের মত তিন চারজনকে রাখুন। সেই সামনাসামনি আলোচনায় সবাই মিলে ঠিক করব কে ঠিক আর কে ভুল। সাথে চা জলখাবারেরও আয়োজন করুন। আমার বেশি বায়নাক্কা নেই , মোগলাই হলেই চলে।
     
    নাহলে একের পর এক পোস্টে এরকম গালি কিন্তু দেওয়ালকে গুঁতো মারার মতই নিস্ফলা হবে। 
     
    আশাকরি অধমের পরামর্শ মাথায় রাখবেন। 
    ধন্যবাদ।
  • এলেবেলে | ২১ জুলাই ২০২৪ ১৩:০৭535096
  • আমি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারি না গুরুর প্রায় প্রতিটা বিভাগে - হপা, বুবুভা, খেরো কিংবা ভাট - প্রকাশিত লেখা বা পোস্টে দিনের পর দিন বিনা প্ররোচনায় লোকজনকে গাধা, পাঁঠা, ছাগল, শুয়োরের বাচ্চা বলার পরেও এই ট্রোলটিকে এত প্যাম্পার করা হয় কেন? স্বাধীনতা আর স্বেচ্ছাচারিতা তো এক জিনিস নয়। তাহলে বাকস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে এই স্বেচ্ছাচারিতাকে আর কত দিন মেনে নিতে হবে?
     
    মনুসংহিতাকে মানা আর তাকে সম্পূর্ণ মোচড় দিয়ে প্রামাণ্য আইনগ্রন্থে রূপান্তরিত করার মধ্যে যে একটা বিশাল ফারাক আছে, তা এদের নিরেট মগজে ঢোকে না। ইংল্যান্ডে ঠিক কবে থেকে মহিলাদের স্বামীর সম্পত্তির বৈধ উত্তরাধিকারী হিসাবে মেনে নেওয়া হয়, সে সম্পর্কে সম্যক না জেনে এলিজাবেথ কিংবা ভিক্টোরিয়ার উল্লেখ করা হয়!
     
    এদের ধম্মোবাপ হিন্দু কোড বিল পাস করার সময় কী কাণ্ড ঘটিয়েছিল, সে সম্পর্কে মণিকুন্তলা সেন বিস্তারিত লিখে গেছেন। কাজেই নারীর ক্ষমতায়ন হ্রাস হলে এদের আনন্দিতই হওয়ার কথা, বিশেষত তা যদি ব্রিটিশ বাপঠাকুরেরা করে গিয়ে থাকেন।
     
    ভবিষ্যতে এই টইয়ে এনগেজ হওয়ার আগে বারদশেক ভাবব।
  • নীল | 2001:4490:881:568f:e0b1:725c:58c4:***:*** | ২১ জুলাই ২০২৪ ১৩:৩৪535098
  • (“ভবিষ্যতে এই টইয়ে এনগেজ হওয়ার আগে বারদশেক ভাবব।”)
     
    চোরের ওপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাবেন না।
  • r2h | 96.23.***.*** | ২১ জুলাই ২০২৪ ২১:২৯535120
  • এলেবেলে, ঠিক কী দেখে আপনার ধরনা হলো যে দীপকে 'প্যাম্পার করা হয়'?

    আমি মনে করি অভিযোগটা একেবারেই আজাইরা, তবে আপনার মত জানতে উৎসুক।
  • এলেবেলে | ২১ জুলাই ২০২৪ ২৩:৩৪535136
  • হুতো, অভিযোগটা যে 'আজাইর‍্যা' সে ব্যাপারে তো আপনি আপনার চূড়ান্ত রায় দিয়েই ফেলেছেন! তারপরে আর আমার মত জেনে কী হবে?
     
    গুরুর অসম্পাদিত বিভাগে স্প্যাম করলে মুছে দেওয়া হবে বুঝলাম, কিন্তু এই ট্রোল তো সম্পাদিত-অসম্পাদিত কোনও বিভাগকেই ছাড় দেয় না। গোটা সাইটটাকে ফেসবুকের লিঙ্ক দিয়ে ভর্তি করা ছাড়া এত দিন পর্যন্ত দ্বিতীয় কিছু করতেও দেখিনি। অথচ তার পরেও বাকস্বাধীনতা বজায় রাখার পক্ষে দেখি অনেকে যুক্তি-ফুক্তি দিয়ে থাকেন।
     
    স্পষ্ট ভাষায় বলা হোক, ভবিষ্যতে এই ধরনের ভাষা ব্যবহার করলে সাইট থেকে বহিষ্কার করা হবে। এনাফ ইস এনাফ। 
     
    আপনি অনেক আগেই গুপুর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বলে ধন্যবাদ। কিন্তু ওই বেচারাই বা আর কত খাটাখাটনি করবে?
  • r2h | 96.23.***.*** | ২১ জুলাই ২০২৪ ২৩:৪০535137
  • এলেবেলে, না না, রায় দিইনি, আমার মত আরকিঃ)

    ডিলিট করার ব্যাপারটা যেহেতু ম্যানুয়াল আর এই নিয়ে পলিসি বিষয়ে কর্তৃপক্ষ দোলাচলে - এমন অনুমান করা সঙ্গত; আজকাল যেমন কিছু ডেল হচ্ছে না, আর দীপকে ডেল করে দাবায়ে রাখা যায় না - নানান লেখায় এর শতাধিক কমেন্ট ডেল হয়েছে, তাও অক্লান্ত।

    আবার আরেকটা সমস্যাও আছে - ভলিউমে কম হলেও মানে একই রকম অসংখ্য নানাবিধ মৌলবাদী, আপত্তিকর, উস্কানীমূলক পোস্ট, ক্রমবর্ধমান কিনা জানি না, চোখে পড়ে। তো এই আনমডারেটেড ফোরামে ব্যবহারকারীদের কান্ডজ্ঞান ও বুদ্ধিশুদ্ধি ছাড়া কিসের ভরসায় এসব নিয়ন্ত্রন করা যায় - এ এক বিষম ধাঁধা।
  • এলেবেলে | 202.142.***.*** | ২২ জুলাই ২০২৪ ০০:০৭535140
  • এত কিছুর পরেও কর্তৃপক্ষ দোলাচলে থাকলে কিছু বলার নেই। কারণ কোনও কোনও ব্যবহারকারীর কাণ্ডজ্ঞান ও বুদ্ধিশুদ্ধি - দুটোর একটাও যে ভরসাযোগ্য নয়, এ সরল সত্য তো সবাই বুঝেছেন।
     
    আগে গুরুর মন্তব্য বিভাগ অত্যন্ত আকর্ষণীয় ছিল। এখন তার এমনই হাল যে, এখনও পর্যন্ত মূল লেখাটির প্রসঙ্গে একটি মন্তব্যও আসেনি। সে না আসতেই পারে, হয়তো লেখাটা মন্তব্য করার মতো উপযুক্ত নয় বা বিষয়টা ততটা আকর্ষণীয় নয়। কিন্তু অরিনবাবুর মতো নিপাট ভদ্রলোকও যখন মন্তব্য বিভাগ বন্ধ করা যায় কি না, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বিবেচনা করতে বলেন তখন বিষয়টা উদ্বেগজনক। 
     
    সামগ্রিকভাবে সাইটটার মানের অবনমন যাতে না ঘটে, সেটা কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত। এটুকুই বলার।
  • | 2001:67c:6ec:203:192:42:116:***:*** | ২২ জুলাই ২০২৪ ০০:২৪535141
  • এলেবেলের পড়াশুনা ও কম্প্রিহেনশন ক্ষমতা কোনটাই ভরসাযোগ্য নয় বলে কি তাঁর প্রবন্ধ লেখা বন্ধ করা উচিত? নাকি লিখলেই কর্তৃপক্ষের ডিলিট করা উচিত?
  • ar | 71.174.***.*** | ২২ জুলাই ২০২৪ ০০:৩১535142
  • @এলেবেলে,

    আপনি লিখে যান। আমরা পড়ে যাচ্ছি। দুএকটা প্রশ্ন আছে, পরে করছি।
  • কৌতূহলী | 115.187.***.*** | ২২ জুলাই ২০২৪ ০২:১১535145
  • @এলেবেলেদা
    দীপবাবুকে ওপরে একটা পরামর্শ দিয়েছি। আপনাকেও অনুরোধ করছি একটা বিষয়।
    যারা যুক্তি তর্কে না এসে ট্রোল বা ব্যক্তি আক্রমণ করে ,তাঁরা যে কোনভাবে এটেনশন চায়। আপনি বিরক্ত হয়ে বিষোদগার করলে ট্রোলাররা উল্টে মজা পাবে আরও। আমি আপনাকে অনুরোধ করব ,যে কোন ট্রোলকে সিম্পলি ইগনোর করে চলুন। বরং আমার মত যারা আপনার লেখা পড়ে অনেক কিছু জানতে পারি , তাঁদের সাথে আলোচনা এগিয়ে চলুন। আমি নিশ্চিত , গুরুর অনেকেই আপনার লেখা পড়ে অনেক কিছু জানেন। আপনি লেখা বন্ধ করলে তাঁরাই ক্ষতিগ্রস্থ হবেন ,ট্রোলারদের উৎসাহ তাতে কিছু কমবে না। বরং ট্রোলারদের সম্পূর্ণ ইগনোর করে যারা জানতে চায় বাঃ গঠনমূলক সমালোচনা করে , তাঁদের সাথে আলোচনা এগোন। এটা আমার অনুরোধ।  
  • স্বাতী রায় | ২৭ জুলাই ২০২৪ ১২:০৪535416
  • @এলেবেলে এই লেখা শুরু করার জন্য ধন্যবাদ। পড়ছি। 
     
    একটা বিষয় আমি জানতে চাই, দায় ভাগ/ দায় তত্ত্ব / দায় ক্রম সংগ্রহ থেকে একটু সূত্র রেফার করে করে বোঝাবেন যে বিবাদার্ণবসেতুতে এসে  বা তারও পরে hindoo  code এ গিয়ে সেটা কতটা পাল্টালো? আমার যেহেতু মূল টেক্সট এ একসেস নেই, আর পেলেও সংস্কৃত পড়তে বিশেষ সরগর নই, তাই এই প্রশ্ন। 
    তবে বর্ধমানের কালেক্টরেটের চিঠি পত্র পড়ে মনে হয়নি বিষ্ণুকুমারী কে প্রশাসন অসম্মানের চোখে দেখছে বা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমার পড়া অবশ্য যতসামান্য। এবিষয়ে আলোকপাত করলেও খুশি হব যে কিভাবে তাঁদের রাজ্য কেড়ে নেওয়ার জন্য  ইংরেজ রা এই ভাবে আইন বদলে দিয়েছিল সে  বিষয়ে ( বিশেষত বিলেতে মেয়েদের সম্পত্তিতে অধিকার ছিল না বলেই এদেশের সম্পত্তি হীন মেয়েদের ইংরেজরা সহ্য করতে পারত না জাতীয় অভিযোগের স্বপক্ষে)  কিছু তথ্য প্রমাণ দিলে খুব ভাল লাগবে। বা বিবাদার্ণব সেতু তে পৃষ্ঠপোষক এর অনিচ্ছাতেই দায়ভাগ এর সূত্রের ভাষ্য বদলে দেওয়া হয়, তাতে অনুবাদকারী দেশীয় পন্ডিতদের কোন দৃষ্টি ভঙ্গি গত দায় বা ভুলের কালোহাত ছিল না, এই প্রসঙ্গেও তথ্য পেলে ভাল লাগত। 
  • এলেবেলে | ২৭ জুলাই ২০২৪ ২১:২০535437
  • স্বাতীদি, লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনি একটি বিষয় জানতে চান বললেও যা বুঝলাম, আপনি আসলে তিনটি জিনিস জানতে চেয়েছেন।
     
    লেখাটা তিন পর্বের। গতকাল এর দ্বিতীয় পর্বটি প্রকাশিত হয়েছে। হয়তো আগামী দিনদশেকের মধ্যে লেখাটার তৃতীয় ও শেষ পর্ব প্রকাশিত হবে। আপনাকে অনুরোধ করব, আপনি আগে পুরোটা পড়ে নিন। তাতে যদি আপনার জিজ্ঞাসা বা সংশয়ের নিরসন হয় তো ভালো। নাহলে তৃতীয় পর্বের শেষে আপনার এই তিনটি প্রশ্নের সঙ্গে আরও প্রশ্ন জুড়ে দিতে পারেন। আমি আমার সাধ্যমতো উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।  
  • কৌতূহলী | 115.187.***.*** | ০৩ আগস্ট ২০২৪ ০০:০১535619
  • @এলেবেলেদা 
    আজকে আপনার পুরো আর্টিকেলটা পড়ছি , কারণ অনেকটা বড় আর তথ্যবহুল হয় আপনার আর্টিকেলগুলো।
    নারীর অধিকার বঞ্চনার ব্যাপারটা বুঝলাম।
    কিন্তু জ্যেষ্ঠ পুত্রদের অতিরিক্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে সমস্ত পুত্রদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করার ফলে ক্ষুদ্র জমিদারি হয় ,এটাও বুঝলাম। কিন্তু ক্ষুদ্র জমিদারের থেকে রাজস্ব আদায় সুবিধা কেন? আর জ্যেষ্ঠভ্রাতাকে বেশি সম্পত্তি পাইয়ে দেওয়াও তো পিতৃতান্ত্রিকই। তাহলে আগেও যে আইনটা ভাল ছিল , তা তো নয়। 
     
    আর একটা প্রশ্ন , একটু অপ্রাসঙ্গিক যদিও। 
    মনু কি কোন ব্যক্তি বিশেষ? নাকি গোষ্ঠী?
  • এলেবেলে | 202.142.***.*** | ০৩ আগস্ট ২০২৪ ০০:১৮535620
  • কৌতূহলী, আপনাকে ও অন্যান্য সমস্ত উৎসাহী পাঠককে লেখাটার তৃতীয় ও শেষ পর্বে আপনাদের যাবতীয় প্রশ্ন রাখার বা করার অনুরোধ করব। এতে দুটো সুবিধা - ১. আপনারা তিনটে পর্ব পড়ে নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন এবং ২. আমার পক্ষেও যাবতীয় প্রশ্নের যথাসাধ্য উত্তর দেওয়া সুবিধাজনক হবে। আশা করব, সবাই এই অনুরোধটা রক্ষা করবেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন