সাহিত্যসৃষ্টি পঠিত হয় বারংবার। সময়ের ব্যবধানে। কখনো বা একই পাঠক তাঁর প্রিয় বইটিতে ফিরে ফিরে যান, জীবনের নানা মুহূর্তে। প্রায়শই একই লেখা পাঠ থেকে পাঠান্তরে আনে ভিন্ন অনুভব, ভিন্ন অর্থ। এ কথা মাথায় রেখেই নির্মিত হয়েছে এই বিশেষ সংখ্যা। শঙ্খ ঘোষের যে কোনও একটি বই ফিরে পড়ুন, লিখুন এ মুহূর্তের ভাবনা—এই ছিল এই সংখ্যার লেখকদের কাছে অনুরোধ। কোন বই নিয়ে কে লিখবেন, ছিল না তার কোনো নির্দেশ। ফলত, একই বইয়ের পৃথক পাঠপ্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে একাধিক লেখকের কলমে, ঘটেছে এমনটাও। সংখ্যাটিকে তা আরও সমৃদ্ধ, কৌতূহলোদ্দীপক করেছে বলে আমাদের বিশ্বাস।
এই সংখ্যায় যাঁরা লিখেছেন তাঁদের প্রত্যেকের কাছে তো বটেই, আলোকচিত্রী সন্দীপ কুমারের কাছেও আমরা বিশেষ কৃতজ্ঞ তাঁর তোলা শঙ্খ ঘোষের ছবিগুলি দিয়ে সংখ্যাটি সাজানোর অনুমতি দেওয়ার জন্য।
নিচের লিংকে ক্লিক করে সংখ্যাটি ডাউনলোড করা যাবে।
"সূচি" লেখাটা সব পাতার ফুটার-এ চলে এসেছে, ওদিকে আসল সূচি র পাতাগুলো থেকে হাওয়া হয়ে গেছে। - ছোট্ট টেকনিকাল পয়েন্ট।
এই বইটাই কি আগে লগ-ইন স্পেসিফিক অ্যাক্সেসে ছিল?
ওটা ইচ্ছে করেই রাখা হয়েছে। প্রতি পাতার ফুটারের সূচি লেখাটা হাইপারলিংকড। ওখান থেকে সূচিপত্রে যাওয়ার জন্য। আবার সূচিপত্রে প্রতিটা লেখা হাইপারলিংকড, যাতে সূচিতে পৌঁছোলে সেখান থেকে যেকোনো লেখায় পৌঁছোনো যায়।
না, এটা কোনো লগইন স্পেসিফিক অ্যাক্সেসে ছিল না। এটা নতুন বই।
সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের লেখাটি বেশ চমৎকার লেগেছে জানাবো বলে সময় করে উঠতে পারছিলাম না। শঙ্খ ঘোষের কবিতা যে কোনোদিনই ভালো লাগল না, তার কারণটি উনি যথাযথভাবে প্রকাশ করেছেন: "আমি বলব শঙ্খ ঘোষ বাংলা কবিতায় এমন এক ক্লাসিকিয়ানার পুনঃপ্রবর্তন করলেন যাতে কাব্য বিষয়ে আমাদের সন্দেহের অপনোদন হল। আমরা আবার স্রোতস্বিনীর শান্ত জলে অবগাহনের সুযোগ পেলাম, যা নিশ্চিত ভাবে উত্তর-রবীন্দ্র যুগে জীবনানন্দ দাশ, বিষ্ণু দে, অনেকটাই সুধীন দত্ত ও সমর সেন এবং সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের সৌজন্যে ঢাকা পড়ে গিয়েছিল। আর-একটু পরীক্ষা করলে দেখা যাবে ঈষৎ অনুজপ্রায় সহযাত্রী শক্তি, সুনীল, উৎপল ও বিনয়ের সঙ্গেও তাঁর মনোধর্মের কত প্রভেদ।"
বস্তুতপক্ষে, শঙ্খ ঘোষের কবিতা পড়লে, বিশেষত তাঁর সমসাময়িক শক্তিশালী কবিদের স্মরণে রেখে পড়লে, একথাই মনে হয়: "......শঙ্খবাবু অনেক যত্ন করে নিজের ঘর পরিপাটি করে রেখেছেন। তাঁর বোধ হয় আশঙ্কা ছিল বাঙালি মধ্যবিত্ত কতটা গ্রহণ করতে পারে বা পারে না সেবিষয়ে। তাঁর জীবনে ও কাব্যে এইজন্যই কোনো ভগ্নমনোরথ কর্ণ অথবা জাহাজডুবির পর শ্রান্ত নাবিকের দেখা মেলেনা।" বা, "তিনি হয়তো জানতেন, বাঙালি পাঠক কবির স্বর্গারোহণের জন্য একটি নির্দিষ্ট আসন সাজিয়ে রাখে, তিনি সেই আসনে এসে সযত্নে বসেছেন।"
শ্রদ্ধা, তা সে যত বড়মানুষের প্রতিই হোক, আনক্রিটিক্যাল হলে চলে না; এজন্যেই লেখাটা সৎ ও যথার্থ মনে হয়েছে।
হ্যাঁ, ঐ লেখাটা আমারও ভালো লেগেছে।
সংখ্যাটি প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ।
বলা হয়েছিল, "সাহিত্যসৃষ্টি পঠিত হয় বারংবার। সময়ের ব্যবধানে। কখনো বা একই পাঠক তাঁর প্রিয় বইটিতে ফিরে ফিরে যান, জীবনের নানা মুহূর্তে। প্রায়শই একই লেখা পাঠ থেকে পাঠান্তরে আনে ভিন্ন অনুভব, ভিন্ন অর্থ। এ কথা মাথায় রেখেই নির্মিত হয়েছে এই বিশেষ সংখ্যা।"
ফলে, অন্য রকম প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। ভেবেছিলাম, এই মুহূর্তের পাঠ পূর্ব পাঠপ্রতিক্রিয়ার কখনও বিপ্রতীপ, কখনও বা একই , কখনও পরিপূরক, হয়তো বা বিস্ফোরক কোনো উপলব্ধি যা আগে হয় নি- কোনো লেখাতেই সেই ব্যাপারটা পাই নি। কয়েকটি লেখায় সামান্য চেষ্টা দেখেছি মাত্র। জানি না আমার পড়ায়, বোঝায় কোথাও বিরাট খামতি হচ্ছে কী না।