ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিকিয়ে গেছে শাসকের কাছে, এই অভিযোগ যখন ক্রমে আকাশ বিদারণ করছে, তখন মনদীপ পুনিয়া, সিদ্ধার্থ বরদারাজন, পরঞ্জয় গুহঠাকুরতারা বিপদে ফেলে দেন, বিপরীতে ভাবার লোভ দেখিয়ে! মনে হয় সত্যিই এই অসমসাহসীরা ছিলেন বলে গোদী মিডিয়ার পাশাপাশি সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার ধারাটি আজও বহমান। অত্যাচার দমন পীড়ন, সবই চলছে চলবে, তার মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকবেন এই মানুষগুলো, অকুতোভয়, উন্নতশির। ভারতীয় সাংবাদিকতার ওপর যতটা কালি অর্ণব গোস্বামী অ্যান্ড কোং দরাজ হাতে ঢেলেছে, তার থেকেও বেশি কলঙ্ককে ধুয়ে সাফ করতে পারেন কাঙাল হরিনাথের এই সন্তানসন্ততিরা।
অকুতোভয় শাসকও। জনমত বিরুদ্ধে যাবে কিনা তার তোয়াক্কা যে এরা করে না, বাজেট তা বলে দিচ্ছে। কর্পোরেটের জন্য যতটা সম্ভব হাট করে দরজা খুলে দেওয়াই এদের পরম লক্ষ, তার জন্য এলআইসি, চালু ব্যাংক বিলগ্নিকরণ করতেও এরা পিছ পা নয়, তা বাজেটের পর মোদী প্রেমে মাতোয়ারারাও কেউ কেউ বিলক্ষণ বুঝেছেন। কৃষকরা কিন্তু বুঝেছিলেন অনেক আগে। কৃষি ব্যবস্থার কর্পোরেটাইজেশনের বিরুদ্ধে প্রবল শীত, গৃহসুখের অনুপস্থিতি, খেতিবাড়ির সঙ্গে অসংলগ্নতা, সমস্তরকম বিপন্নতাকে তুচ্ছ ক'রে আজ প্রায় আড়াইমাস তাই দিল্লির সীমানায় তাদের বাস। তাই তাঁদের শিবিরের পেছনে কাঁটাতার, কংক্রিটের ব্যারিকেড। ভোর থেকে সন্ধে অবধি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় রাস্তায় একহাত লম্বা অজস্র গজাল পোঁতার আওয়াজ, যাতে যেদিন আসল আক্রমণ নামবে সেদিন যেন কোনো চক্রযান ওখানে তাদের উদ্ধার করতে না আসতে পারে। মজফফরনগর, মথুরা, বিজনৌর, গাজিয়াবাদ, জিন্দে হওয়া মহাপঞ্চায়েতের পর নতুন নতুন কৃষকদের পায়ে হেঁটে আন্দোলনে যোগদান করতে আসাও যেন সম্ভব না হয়। কী ক্রূর, গণবিরোধী এই রাষ্ট্রনীতি! শাসকের পেটোয়া লোক ভিড়ের মধ্যে ঢুকিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর "পত্থরবাজি", এমনকি মেয়েদের তাঁবু লক্ষ করে মলোটেভ ককটেল ছোঁড়া ( দ্রষ্টব্য মনদীপ পুনিয়ার ভিডিও) কোনো চেষ্টাই বাদ যায়নি।
উত্তরসত্যের যুগে কিছু বলা সহজ, ফেক নিউজ ছড়িয়ে দেওয়া মুহূর্তের ব্যাপার। কিন্তু সঠিক প্রমাণ জুগিয়ে যাওয়া চিরকালই খুব কঠিন। কোনো বড় হাউজের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও মনদীপ পুনিয়া সেই কাজটি কতো গভীর সততার সঙ্গে করেছেন! নিজের করা ভিডিওতে তিনি চিহ্নিত করে দেখিয়েছেন কীভাবে বিজেপির কর্মকর্তা এবং সমর্থকেরা কৃষক আন্দোলনকে ভাঙার জন্য সচেষ্ট হয়েছে। তারা কেউ কেউ এমনই ক্ষমতাবান যে ছবিতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশে তাদের সহাস্যমুখ দেখা যায়। তাদেরই প্ররোচনায় স্থানীয় মানুষের ছদ্মবেশে কারা যেন আন্দোলনকারীদের ওপর পাথর ছোঁড়ে, পুলিশ নিষ্কর্মা দাঁড়িয়ে থাকে পেছনে। আবার পেটোয়া সংবাদপত্র ফটোশপ করে সেই নিষ্কর্মাদের ছবির বদলে সাধারণ মানুষের ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি ব্যবহার করে রাষ্ট্রশক্তির নিরপেক্ষতা ও সততা প্রমাণ করার জন্য। সেদিন পুলিশ ওখানে যেন ছিলই না, থাকলে কী আর এমন হয়!
এই পেটোয়া সংবাদমাধ্যম স্থির করেছে সমস্বরে মোদীর সমস্ত পলিসির গুণগান গাইবে, চোখের ওপর যাইই ঘটুক না কেন! যে শিখ তরুণ চতুর্দিকে মারমুখী পুলিশ পরিবেষ্টিত হয়ে মরিয়া কৃপাণ ( ধর্মীয় চিহ্ন, বেআইনি অস্ত্র নয়) বাতাসে ঘুরিয়েছিলেন তাঁর মুখ জুতোর তলায় গুঁড়িয়ে দিয়েও পুলিশ থামেনি, তাঁকে উলঙ্গ করে, মুক্তকেশ কর্ষণ করে, বেদম মারতে মারতে গাড়িতে তুলেছে ( দ্রষ্টব্য মনদীপ পুনিয়ার ভিডিও)। তিনি এখন কোথায়? মনদীপ শুধু এই প্রশ্ন তুলে চুপ করেননি, ভিডিওতে মনে করিয়ে দিয়েছেন আমাদের সামাজিক দায়িত্বের কথা, আন্দোলনে যোগ দিয়ে ৩০ জনের বেশি যে শিখ যুবকদের খোঁজ নেই, দরকার হলে তাদের জন্য সুপ্রিম কোর্টে হেবিয়াস কর্পাসের আবেদন দাখিল করার কথা।
এতো স্পর্ধা সরকার সহ্য করবে কেন। মূলধারার সংবাদমাধ্যম তার সঙ্গে আছে, টাকা দিয়ে নির্বাচিত ঘোড়া কেনাবেচায় সে দড়, ধর্ম এবং সম্প্রদায়ে দেশকে আড়াআড়ি ভাগ করলেও এখনো ভোট বাক্সে ভাটার টান দেখা যায়নি তেমন। ফলে ২০১৬ সালে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালায়ে সবুজ ধ্বংসের প্রতিবাদে যে তরুণ আমরণ অনশনে বসেছিলেন, আজ তিনি সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিক হলেও তাঁকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তুলছে পুলিশ, এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সর্বত্র যে ছিছিক্কার উঠল, এই তো অনেক! মনদীপ পুনিয়ার হেনস্থার এই সবে শুরু, তা সত্ত্বেও তিহার জেলে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে যে পুলিশ দ্রুত ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে এই ঘটনা প্রমাণ করে যে জনমতকে একেবারে নস্যাৎ করে দেওয়া আজও সম্ভব নয়। তেমন সম্ভব হলে এক্ষণে বুলডোজার দিয়ে আন্দোলনকারীদের অস্থায়ী শিবিরগুলিকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হত। শচিন তেণ্ডুলকর, লতা মঙ্গেশকর, অজয় দেবগণ বা কঙ্গনাকে দিয়ে টুইট করিয়ে এতো পাঁয়তারা কষতে হত না।
স্বাভাবিক যে এই প্রবল স্বৈরাচারের পর্দা ফাঁস করলে যে কোনো দুর্দৈব মাথার ওপর নেমে আসতে পারে। কিন্তু তা পরোয়া না করার মতো সাংবাদিক যে এখনও বিরল নয় তা জানা থাকার দরুনই সিংঘুতে মূল আন্দোলন স্থলে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে। আহত শার্দূলের মতো ক্ষত চাটছে শাসক, যে ক্ষত ইতিমধ্যেই সৃষ্টি করেছে পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা, সিদ্ধার্থ বরদারাজন, রাজদীপ সরদেশাইদের মত আরও মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের সাহসী সাংবাদিকতা। সবাইকে তো আর গৌরী লঙ্কেশের মতো গুলি করে মারা সম্ভব নয়, তাই মিথ্যে মামলার চক্করে ঘোল খাওয়ানো খুব চালু উপায়।
গুজরাতের কচ্ছে এক আদালত গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে বরিষ্ঠ সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আদানিদের করা মানহানির মামলায়। ইকনমিক এন্ড পলিটিকাল উইকলি এবং দা ওয়্যারে তাঁর লেখা দুটি নিবন্ধের কারণে এই মানহানির মামলা। প্রথমটি হল "আদানি গোষ্ঠী কি ১০০০ কোটি টাকা ট্যাক্সে ফাঁকি দিয়েছে?" ( Did the Adani Group Evade Rs 1000 Crore in Taxes?), আর দ্বিতীয়টি "আদানি গোষ্ঠীকে দেওয়া মোদী সরকারের ৫০০ কোটি টাকার ইনাম"(Modi Government's Rs 500- Crore Bonanza to the Adani Group)।
দুটো নিবন্ধের প্রকাশকালের মাঝে সময়ের তফাত ছ' মাস। প্রধান লেখক একই, পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা, সঙ্গে জুনিয়র সাংবাদিকরা। বিষয়ও এক। মোদী সরকার অন্যায্য ভাবে আদানি গোষ্ঠীকে তার সাম্রাজ্য বাড়াতে এবং কর ফাঁকি দিতে সাহায্য করেছে। এমনকি বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকার নিয়মকানুনও শিথিল করা হয়েছে এই পাইয়ে দেবার খেলায়।
আদানি গোষ্ঠী পাবলিকেশনগুলিকে আইনি নোটিস পাঠায় এই বলে যে তাদের পক্ষে মানহানিকর বিষয়বস্তু থাকার ফলে নিবন্ধগুলিকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে। EPW তাইই করে এবং অপমানিত পরঞ্জয় সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেন। দা ওয়্যার নোটিস মোতাবেক কাজ করতে অস্বীকার করে, আদানিরা স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে যায়। তার আগে অবশ্য তারা আর একটি কাজও করে, তা হল দা ওয়্যারের সম্পাদক এবং উল্লিখিত প্রবন্ধের লেখকদের বিরুদ্ধে গুজরাতের ভুজে এবং মুন্দ্রায় মানহানির মোকদ্দমা রুজু করে।
এ ঘটনায় আদানির গাত্রদাহ এত বেশি হয় যে, ২০১৯-এর সাধারণ নির্বাচনের পর এ ব্যাপারে সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে নিলেও পরঞ্জয় গুহঠাকুরতার বিরুদ্ধে মামলা বলবৎ রাখা হয়। এ যেন ডাইনি খুঁজে বেড়াবার গল্প! এবং সে গল্প এখানেই শেষ নয়। আদালতে পরঞ্জয়ের হাজিরা ঠিকমত হচ্ছে না এই অভিযোগে মুন্দ্রা কোর্ট এই সিনিয়র এবং প্রখ্যাত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য নয় এমন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। কিন্তু গুহঠাকুরতার আইনজীবীর মতে অতিমারির পর কোর্ট খুলেইছে অল্পদিন এবং কেবলমাত্র দ্বিতীয় বার সমন পাঠানো হয়েছে। ফলে গরহাজিরার তত্ত্বটি ধোপে টেঁকে না।
জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারির এই পরোয়ানা পরিষ্কার দেখিয়ে দেয় শাসকের খোলাখুলি মদতে কর্পোরেট হাউসগুলি কতটা বেপরোয়া এবং অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভকে ধ্বংস করে দিতে, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণে তারা কি বিচারব্যবস্থাকেও পাশে পেয়ে যাচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলেছে খোদ এডিটরস গিল্ড।
তবে সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, মাত্র কয়েকদিন হল পরঞ্জয় গুহঠাকুরতার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আদালতের নির্দেশে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এই কৃষক বিদ্রোহ একেবারে বেআব্রু করে দিয়েছে শাসক ও কর্পোরেটের আঁতাত আর সেই বেআব্রুকরণে নিরপেক্ষ সাংবাদিকদের ভূমিকা হিমালয়ের সমান। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার পাশাপাশি স্বাধীন নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যমের প্রভাব যতো সীমাবদ্ধই হোক না কেন, সত্য উদঘাটনে তার প্রভাব গভীর ও ব্যাপ্ত। যেটুকু বিরোধিতা এখনো এদেশে টিকে আছে তার উৎসভূমি হিসেবে কাজ করেছে এই সংবাদ মাধ্যম এবং সাংবাদিকেরা। এই সাংবাদিক- সমাজকর্মীদের সামনে বাধাবিপত্তি কখনোই কম ছিল না, এখন তো কম নয়ই। ট্রাক্টর র্যালিতে প্রাণ হারান যে তরুণ কৃষক, তাঁর মৃত্যুর কারণ ঠিক কী, এই নিয়ে টুইট করে বিপাকে সাংবাদিক রাজদীপ সরদেশাই এবং কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। তাঁদের অপরাধ, মৃতের পরিবারের দাবি যে মাথায় গুলি লাগায় তবেই ট্রাক্টর উলটেছে এবং মৃত্যু হয়েছে, সরকারি বয়ানের সঙ্গে সঙ্গে সে দিকটাও তাঁরা তুলে ধরেছিলেন। একে ভুয়ো খবর আখ্যা দিয়ে দেশদ্রোহ সহ আরো অনেক অভিযোগে মামলা শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে এবং সেজন্য গত ৩ ফেব্রুয়ারি তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। একই কাণ্ড ঘটেছে মৃণাল পাণ্ডে, জাফর আগা, পরেশ নাথ এবং অনন্ত নাথের সঙ্গে। এঁরা সকলেই সুপ্রিম কোর্টে গেছেন। একই কারণে হয়রানি হচ্ছে সিদ্ধার্থ বরদারাজনের। চতুর্দিকে আজ দেশদ্রোহের ভুত, বয়সের কারণে রেহাই পাননি বিনোদ দুয়াও।
ফ্রি স্পিচ কালেক্টিভ নামের সংগঠন হিসেব কষে দেখিয়েছে গত এক বছরে ভারতে ৬৭ জন সাংবাদিক কর্তব্য করতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের আরও হিসেব, ২০১০ সাল থেকে ১৫৪ জন সাংবাদিক অনুরূপ হেনস্থার শিকার হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১০৩ জনই এনডিএ সরকারের হাতে নিগৃহীত। কতজন কাপ্পান সিদ্দিকের মতো বিনা বিচারে কারারুদ্ধ, কে জানে!
কেন শাসক এতো বেপরোয়া তা নিয়ে নানা জন নানা মত দিচ্ছেন। কারো মতে খুব শিগগিরই হয়ত এদেশে জারি হবে আর এক জরুরি অবস্থা, যাতে দগদগে ঘায়ের মতো প্রকট হয়ে উঠবে ফ্যাসিবাদের সমস্ত লক্ষণ। কেউ বলছেন হয়ত নির্বাচনী প্রক্রিয়াই বন্ধ হয়ে যাবে, অন্যান্য অনেক দেশের মতো। কিম্বা এক ব্যাপক কারচুপি দেখবে মানুষ, যে ফাঁদ পেরিয়ে যাওয়া অসম্ভব। কিছু তো একটা ঘোঁট পাকাচ্ছে, ভবিষ্যতের গর্ভে গড়ে উঠছে কিছু প্রবল নৈরাজ্য, সে নিয়ে সন্দেহ নেই। তাই একমাসে শতাধিক টাকা বাড়তে পারে গ্যাস ও তেলের দাম, বিলগ্নিকরণের তালিকায় উঠতে পারে বহু লাভজনক প্রতিষ্ঠান, সুদের হার কমে ভিখিরি হয়ে যেতে পারে সহায়হীনেরা, দলে দলে পরিযায়ী মরতে পারে রাস্তায়, তিন আইনে সমগ্র কৃষি ব্যবস্থাকে ভেঙে দেবার চেষ্টা হতে পারে, প্রবল আন্দোলনকে অগ্রাহ্য করে হিমশীতল থাকতে পারে নির্বাচিত সরকার!
বেপরোয়া হিংস্র শাসকের সৃষ্ট অন্ধকারের মধ্যেও যাঁরা কর্তব্যে অবিচল, তাঁদের জন্যই সত্য যেটুকু হোক সামনে আসছে। তাই টিভি চ্যানেলে সঞ্চালিকার ধমক, 'আপনি আম্বানির চ্যানেলে বসে আম্বানির বিরুদ্ধে এতো কথা বলতে পারেন না', শেষ কথা হতে পারে না। খোদ কলকাতাতেই বহু অনলাইন পোর্টাল সংঘবদ্ধ ভাবে এই হিংস্রতার প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং সমস্ত জেলরুদ্ধ সাংবাদিকের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে।
কোথাও বরফের মধ্য থেকে মাথা তুলছে ছোট্ট চারাগাছ, আমাদের নজর পড়েনি এখনও। তাতে সার তাপ যুগিয়ে যাচ্ছেন যে সাহসীরা, তারাই হবেন পরিবর্তনের অগ্রদূত।
তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে!
ডকটর গোয়বলসের আত্মা প্রসন্ন হবেন
এ-ই লেখাটা পড়ে প্রসন্ন হবেন ? তাহলে ওর আত্মা পরকালে খুব উন্নতি করেছে।
Salute didi tomakeo
স্বৈরাচারী যেমন হয়ে থাকে এরা তার থেকেও অনেক বেশি। যেমন জিম্বাবোয়ের রবার্ট মুগাবে, বা তালিবানী রা। এই সব সাহসী সাংবাদিকরা অবশ্যই আমাদের ভাগ্য নিয়ন্তা। যেমন দিল্লীতে কৃষকরা বুক চিতিয়ে লড়াই করছেন।
আপনার লেখাটি অবশ্যই সবার পাঠ করা উচিৎ। অনেক নতুন তথ্যও উঠে এল। যেমন পুরঞ্জয় বাবুর ঘটনা জানাই ছিলনা। তবে সুপ্রীম কোর্টের উপর আমার অন্তত কোন বিশ্বাস নেই। আজই জনৈক শাহ নরেন্দ্র মোদীর ভূয়ষী প্রশংসার বন্যা বইয়েছেন। যদিও অন্য বিচারপতিরা তার সমালোচনাও করেছেন। আপনি দেখে থাকবেন হয়ত। খুব অযৌক্তিক সৃষ্টছাড়া একটা দেশে আমাদ্রর জীবন দু:সহ হয়ে উঠছে।
শ্রী ধর্ম পুত্র যুধিষঠিরের প্রতি - আজ্ঞে। যথার্থ বলেছেন। পোলানড হাংগেরী তুরস্ক রাশিয়া ব্রাজিল ফিলিপাইনস তাঁর নাম উজ্জল করছে প্রত্যহ । ভারত বন্দনায় ব্যস্ত । উন্নতি ঠেকায় কে প্রভু ?
একটা অসভ্য ,বর্বর ,এবং সন্দেহ যুক্ত খুনি আমাদের প্রধান মন্ত্রী হয়ে বসে !!তাঁর নেই কোনো জামা ।..নেই কোনো অন্তর্বাস ।..নেই কোনো গায়ের ছাল ।..আছে শুধু মুসলিম বিরোধিতার গুণ ।..দলিত দের লিঞ্চ করা।.. গরু সেবক দের তোষণ করা ।..আর যেকোনো প্রতিবাদী কণ্ঠ কে রোধ করা !!যেখানেই যাচ্ছেন ।..মিথ্যে কথার ফুলঝুরি ।..অবৈজ্ঞানিক তথ্য দিয়ে মানুষ কে বিপথে চালনা করা।.. মুষ্টিমেয় বেনিয়া ব্যবসায়ী কে তোষণ করা ।...এই হলো ওনার "রাজধর্ম "পালন !!আরো অবাক ভূমিকা নিয়েছেন আমাদের আলোকিত ।...উচ্চ শিক্ষিত শহুরে বেশীর ভাগ মানুষ ।..সঙ্গে কিছু " কামিনী কাঞ্চনে " ভরপুর মেকআপ লাগানো সেলিব্রিটি ।..আর হঠাৎ দেশপ্রেমী কিছু মহা নাগরিক গণ ।...দুঃখের বিষয় , এতে লতা মঙ্গেশকর ।..সচিন তেন্ডুলকার জাতীয় মহা---মহা নাগরিক রাও ।..এনারা প্রতিবাদ বা আন্দোলন এইসব পছন্দ করেন না ।..এদের কাছে দেশ হলো ""আয়ে মেরে বতন কে লোগো " জাতীয় গান পর্য্যন্ত !!এরই মাঝে কেন যে পরাঞ্জয় বাবু রা কাবাব মে হাড্ডি হয়েযান ।।..মেরুদণ্ড ভেঙে বসে আছে সব ।..পরাঞ্জয় বাবু ।..এই নপুংসক দেশে আপনারা আলোর পথ যাত্রী শুধু !!
অসন্তোষ বাড়ুজ্জের পুউরো পোতিবাদি ভাবমুত্তি
বাবাগোর উদ্দেশে : ও বাবা ! এখেনেও ভকতো !!
কম্মো কাবার !
যে জরুরি অবস্থাটি আমরা পেরিয়ে এসেছি পঁয়তাল্লিশ বছর আগে , তার থেকে অনেক মারাত্মক জরুরি অবস্থা এগিয়ে আসছে ক্রমে। যুদ্ধটার মাত্রা এই মুহূর্তে যতো'ই সীমাবদ্ধ মনে হোক না কেন, লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে। এই সব লেখাগুলি তার স্মারক। তৈরি থাকার জন্য প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়ে গেছে ,
খুবই প্রয়োজনীয় আলোচনা, এই ধরণের আলোচনার প্রসার যতো বাড়বেই ততই মঙ্গল।
একটু অপ্রাসঙ্গিক ভাবে বলতে চাইছি, যে উইচ-হান্ট-এর অনুবাদ ডাইনি-খোজা ঠিক মানাচ্ছে না। প্রথমটা ইউরোপের লৌকিক প্রথা থেকে উদ্ভুত বাগ্ধারা, দ্বিতীয়টা তার আক্ষরিক অনুবাদ। ইউরোপের মতো গণ হারে ডাইনি সনাক্ত করার পাগলামি বাংলাদেশে ছিল না। ডাইনির খোজ আর শিকার লোকেরা মহামারি বা অন্যান্য বিপর্যয় থেকে বাচার পথের সন্ধানে হিসেবে করতো। আমাদের এখানে হতো একক ভাবে, সাধারণত নিঃসঙ্গ বিধবা মহিলাদের।
যেহেতু ভাষা হচ্ছে গণচেতনার বহিরপ্রকাশ, পরিপ্রেক্ষিত বাদ দিয়ে শুধু আক্ষরিক অনুবাফ নাও জুতসই হতে পারে।
শাসকের বিরুদ্ধেও যে ফেক নিউজ ছড়ানো যায়, ও তা দিয়েও ভোটে বিপুল সাফল্য পাওয়া যায় সেটা পবতে দেখা গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে একটু আলোকপাত করবেন?
পিটিচোদআ নেমে পড়েছে।
খিস্তি দ্যান ক্যানো? গুপুকে খাটাতে ভালো লাগে? পোস্ট ডিলিট করার খাটনি নেই একটা? ভোটের মুখে লগিন চালু করে দিলে ভালো হবে?
গুরুতে আজকাল এলেই বোঝা যায় যে অন্ততঃ এই দেশে বিরুদ্ধ মত দমিয়ে রাখা কেন এত সহজ!!