সিজন-১
স্থান – কিশোরগঞ্জ ময়মনসিংহ কাল – ১৯৫০ সালের মার্চ মাস
যুঁই, নীলি, বীথি, আসমা, কাজল কদিন ধরে ইস্কুলে যাচ্ছে না, হেডমাস্টারমশাই বাড়ী বাড়ী ঘুরে বলে গেছেন ইস্কুল কয়েকদিন বন্ধ থাকবে, দূরে কোথায় আবার ঝামেলা লেগেছে, তাই এখন কদিন কেউ যেন বাড়ী থেকে বেশী দূরে না যায়। যুঁইয়ের তিন দাদা ভারতের কলকাতায় সিটি কলেজে পড়ে, দেড় বছর বাড়ী আসে নি, নাকি আলাদা দেশ হয়ে গেছে অত সহজে আর যাওয়া আসা করা যায় না। তিন বছর আগে যখন দেশ স্বাধীন হল, দাদারা তখন কিশোরগঞ্জেই ছিল, বাবা মা’কে অনেক করে বলেছিল ভারতে চলে যেতে, বাবা কিছুতেই রাজী হয় নি – ‘এইখানঅ জন্মাইসি, এইখান বাপ ঠাকুরদায় মরসে, এইখান আমরার ঘর বাড়ী, বাপ-মা’য়ের চিতা জ্বলসে এই মাটিত – এইডাই আমার দ্যাশ’। মেজদা বারেবারে বলেছে ‘পাহিস্তানঅ থাকবা? শ্যাখেগো দ্যাশে?’ বাবা জ্বলে উঠে বলত ‘হ্যারায় কইলেই এইডা পাহিস্তান হইয়া যায় না সুহাস, আমি আমার দ্যাশেই থাকতাম’। দাদাদের কলেজের পড়া শেষ করতে এমনিতেও কলকাতা যেতে হত, ওরা চলে যায়। তারপর আর বার দুয়েক এসেছে সেজদা আর মেজদা, দাদা একবার। দ্বিতীয়বার আসার সময় খুব ঝামেলায় পড়ে মেজদা, সেজদা, ফেরার সময় প্রায় লুকিয়ে অনেক ঝামেলা করে সীমান্ত পেরোতে হয় --- যুঁই এইসবই শুনে ফ্যালে বাবা আর উকীলজ্যাঠার আলোচনার সময় – সবটা খুব ভাল করে বোঝে না। নীলি বলে ওদের পূর্ব পাকিস্তানে অনেক বিহারী মুসলমান চলে এসেছে ভারত থেকে, ওরা খুব বদমাইশ। এইসব গল্পের সময় আসমা, কাজলরা চুপ করে শুকনো মুখে শোনে আর নয়ত বাড়ী চলে যায়। স্বাধীনতার পর পরই অন্য অনেক জায়গা থেকে দাংগা লুটপাটের খবর এলেও কিশোরগঞ্জ মোটামুটি শান্তই ছিল – খুচরো কিছু হুমকী টুমকীর খবর কানে এলেও চারিদিকে যা সব শোনা গেছে তার তুলনায় কিছুই না সেসব। দেশের নামটা অবশ্য বদলে গেছে --- তাই বাড়ী ইস্কুল দোকান সব ঠিকানা বদলাচ্ছে আস্তে আস্তে। বাবার ব্যাঙ্কের ঠিকানা যেদিন বদলে দেশের নাম ‘পাকিস্তান’ হল সেদিন বাড়ী ফিরে বাবা ভারী চুপ হয়ে গেছিল। সন্ধ্যেবেলায় বৈঠকখানা ঘরে গিয়েও উকীলজ্যেঠু, আসগরচাচা, নীরদজ্যেঠুদের সাথে প্রায় কোনও কথাই বলে নি – সেদিন আর আড্ডাও চলে নি বেশীক্ষণ – একটা হারিকেনের তেল ফুরানোর আগেই বাবা ভেতরে চলে এসেছিল, অন্য হারিকেনটা আর সেদিন জ্বালাতে হয় নি। এর মধ্যে গত শীতে যুঁইয়ের একটা ভাই হয়েছে, ফলে রান্নাঘরের অনেক কাজই এখন যুঁইকে করতে হয়, মা ভাইকে সামলিয়ে আর সবসময় পেরে ওঠে না।
গত দুই সপ্তাহ ধরে কিশোরগঞ্জে হঠাৎ অনেক নতুন লোক এসেছে, তাদের ধরণ ধারণ একেবারে আলাদারকমের। এরা নাকি সব ভারত থেকে আসা মুসলমান – এদের মধ্যে একদল কথা বলে এক অদ্ভুত ভাষায় – নীলি জানায় ওটা হিন্দি কিম্বা উর্দু – আসলে কোনটা সে নীলিও বলতে পারে না, ওর কাকার কাছে শুনেছে মুসলমানরা ওইরকম ভাষায় কথা বলে ভারতে। বীথি, সরমারা তাতে ভারী আপত্তি করে, তা কেন হবে? এই তো কাজলরা তো মোটেই ওইরকম ভাষা বলে না, বোঝেই না – কাজল আর আসমাও সায় দেয়। এদের কেউ কেউ অনবরত পান চিবোয় আর যেখানে সেখানে থু থু করে পিক ফ্যালে – আসমা বলে ওর দাদাজান বলেছেন এরা অসভ্য বিহারী, এখানে এসেছে লোভে লোভে। যুঁই এদের মধ্যে একটু সাদাসিধে, প্রায় বোকাই বলা চলে – সে অবাক হয়ে জানতে চায় কীসের লোভ? আসমা বলে ফেলে যাওয়া সম্পত্তি দখলের লোভ – বলে ফেলেই ভারী অপ্রতিভ হয়ে যায় আসমা – আস্তে আস্তে ওর গাল, কানের লতি লাল টুকটুকে হয়ে উঠতে থাকে। যুঁই খানিক বিস্ময় খানিক মন খারাপ নিয়ে হরিচরনকাকা, রামচরনকাকাদের ভিটের দিকে তাকায় – আজ পাঁচমাস হল খালি পড়ে আছে – ওরা সেই যে ঢাকা থেকে ঘুরে আসছি বলে গেল আর কেউ ফেরে নি, যাবার সময় ঘরদোর ভাল করে বন্ধ করেও যায় নি। এই নতুন আসা লোকগুলোর মধ্যে একটা দল ওদের ভিটের সামনের একটা ঘরের হুড়কো খুলে ঢুকে দিব্বি তক্তপোষে বিছানা বিছিয়ে নিয়েছে। রাতে ওই ঘরে কুপি জ্বলে। নীলি ভারী খরধর মেয়ে, এরই মধ্যে কি যেন বলেছে যুঁই দেখে আসমা আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে। যুঁই বলে ‘ওরে কী কইলি তুই’ – নীলি পাত্তা না দিয়ে বলে ‘চুপ কর ছে, ম্যালা প্যাসাল পারিস না, মোসলাগো বিশ্বাস করনের কুন কাম নাই, অরা সব কয়টা শয়তানের ছাওয়াল, তাকে তাকে আসে আমরার জমিবাড়ীগুলা খাইবার লাইগ্যা’। নীলির মোটা বিনুনি রাগে দোলে, চোখের মণি আরো বড় দেখায় – বীথি বলে ‘ল ঘরঅ যাই গা’ – আর কেউ কোনও কথা বলে না, মেয়েগুলো শাড়ীর আঁচল ভাল করে টেনে গায়ে ঢাকা দিয়ে যে যার বাড়ী ঢুকে যায়। কতদিন হয়ে গেল ওরা নরশুন্দার ধারে যায় না, বাইরের বড় পুকুর, ওরা বলে পুস্কর্ণী, সেখানেও যায় না স্নান করতে। বাড়ীর ভেতরে হয় তোলা জলে স্নান করে নয়ত মুনিশরা না থাকলে ভেতরের ছোট পুকুরটায় ঝুপ ঝুপ করে কটা ডুব দিয়ে নেয়। যুঁই রান্নাঘরের দাওয়ায় উঁকি দিতেই মা বলে তাড়াতাড়ি স্নান সেরে ভাইকে একটু ধরতে, মা ততক্ষণে বাকী রান্নাটুকু সেরে নেবে। খোঁপা খুলে চুলের মধ্যে আঙুল চালাতে চালাতে যুঁই দেখে চুনি বিড়ালটা আমিষ উনুনের পাশে ছাইয়ের মধ্যে মৌজ করে শুয়ে আছে, মা রান্না সেরে উনুন এনে বাইরে রেখে গেছে। যুঁই তাড়াতাড়ি উনুনটা নিয়ে পরিস্কার করে লেপে কাঠ ঘুঁটে আর কয়লা দিয়ে সাজিয়ে ভাঁড়ারঘরের দাওয়ায় তুলে রাখে, রান্নাঘর এখন এঁঠো হয়ে আছে, ধোয়া হলে ওখানে রেখে আসতে হবে। আজকে মুনিশ নিশি কাজ করছে বাইরের উঠোনে, তাই হলদে তাঁতের কাচা শাড়ীটা নিয়ে যুঁই ব্যাজারমুখে কলঘরের দিকে রওনা দেয় --- আর তখনই চোখে পড়ে বাবা আর আসগরচাচা হনহন করে হেঁটে বাড়ীর দিকে আসছে।
এইসময় তো বাবার ব্যাঙ্কে অনেক কাজ থাকে, চেয়ার থেকে ওঠার সময়ই থাকে না , এইসময় হঠাৎ বাবা বাড়ী এল কেন --- এইসব ভাবতে ভাবতেই যুঁইয়ের স্নান সারা হয়, গোয়ালঘরের পাশ দিয়ে ঘুরে অন্দরের ঘরে এসে ঢুকে চুল আঁচড়ায়, কাজল দিয়ে কপালে একটা টিপ পরে ছোট্ট – আধা অন্ধকার ঘরের দেরাজ আয়নায় নিজেকে দেখে একবার এপাশ ফিরে, একবার ওপাশ ফিরে। মা ঘরে ঢোকে বাচ্চুকে কোলে নিয়ে, ওকে দেখেই চাপা গলায় একবার বাইরের বৈঠকখানার ভেতরদিকের দাওয়ায় আসতে বলে। যুঁই ভারী অবাক হয়, বাইরের লোক থাকলে বৈঠকখানার দিকে ওর যাওয়া মানা তো, মা’কে প্রশ্ন করার সাহস ওর নেই, যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই মা’র চোখ পড়ে ওর কপালের টিপের দিকে, চাপা গলায় প্রায় ধমকে মা ওকে টিপটা মুছে বাইরে যেতে বলে। যুঁইয়ের চোখে জল আসে – কোথাও তো একটু বাইরে যায় না কতদিন হল, ইস্কুলে যাওয়াও বন্ধ, বাড়ীর মধ্যে একটা ছোট্ট মুসুর দানার মত টিপ – তাও মুছতে হবে! মা ততক্ষণে অধৈর্য্য হয়ে এগিয়ে এসে নিজের আঁচল দিয়ে ঘষে ঘষে মুছে দেয় টিপটা – একটু পিছিয়ে গিয়ে দেখে নেয় কপালে টিপের কোনও চিহ্ন থেকে গেল কিনা – বাচ্চু হাত বাড়ায় যুঁইয়ের কোলে আসবে – মা হাত টেনে নিয়ে শক্ত করে বাচ্চুকে কোলে চেপে ধরে হাঁটা দেয়। যুঁই কেমন আবছামত বুঝতে পারে কোথাও একটা কিছু গোলমাল হয়েছে, বড় গোলমাল। নাহলে বাচ্চুর এখন ওর কোলেই থাকার কথা আর মা’র হয় স্নান করতে যাওয়া নয়ত অন্য কাজে যাবার কথা – নিঃশব্দে মায়ের পিছনে পিছনে এসে বৈঠকখানার দাওয়ায় দাঁড়ায়। আসগরচাচা মাথা নীচু করে বসে আছেন, বাবাও গালে হাত দিয়ে মাথা অর্ধেক নামিয়ে কী যেন ভাবছে। মা এসে গলা খাঁকারি দিতে দুজনেই মুখ তুলে ওদের দিকে তাকায় – বাবা যুঁইকে ডাকে পাশে এসে বসতে। যুঁইয়ের আর অবাক হওয়ার ক্ষমতাও নেই বোধহয় --- পায়ে পায়ে গিয়ে বাবার পাশে বসে। বাবা ডানহাত তুলে ওর মাথায় রাখে আস্তে আস্তে ভিজে চুলগুলোর মধ্যে দিয়ে আঙুল চালায় আর কি যেন বলে। কী যে বলে যুঁই শুনেও কিছুতেই বুঝে উঠতে পারে না ঠিক করে। রান্নাঘরে কি অনেক বাসন পড়ে গেল একসাথে? এই ঝমঝমাঝম আওয়াজটা কোত্থেকে আসছে! বাবা বলেই যাচ্ছে -- দুপুরের ভাত খেয়ে একটু পরে পাড়ার সব বাড়ী চুপচাপ শান্ত হয়ে গেলেই নাকি ওকে বেরিয়ে যেতে হবে। কোথায়? ভারতে। ভারতে? ভারতে?! ও একলা যাবে কী করে? না একলা নয়, বীথি আর সরমাও যাবে আর যাবেন সরমার মামা, যিনি চৈত্যাকালীর পুজো উপলক্ষে বেড়াতে এসেছেন সরমাদের বাড়ীতে। সরমার মামা ওদের তিনজনকে নিয়ে বর্ডার পেরিয়ে ত্রিপুরায় চলে যাবেন – সেখান থেকে কলকাতা – সরমার এক মাসীর শ্বশুরবাড়ীতে গিয়ে উঠবেন ওদের নিয়ে – এর মধ্যে সবাই যে যার আত্মীয়দের কাছে খবর পাঠাবে ওদের নিয়ে যেতে – যুঁইয়ের ছোটমাসীমার শ্বশুরবাড়ী চুঁচুড়ায় – যতদিন না বাবা মা বাচ্চুকে নিয়ে পৌঁছাচ্ছে ততদিন যুঁই ওখানেই থাকবে। যুঁই দেখে মাখন স্যকরা ঢুকছে বাড়ীতে --- মা তাড়াতাড়ি এগিয়ে যায়, যুঁইকেও ডাকে হাতের মাপ দিয়ে যাওয়ার জন্য। মাখন স্যাকরা যুঁইয়ের হাতের মাপ নেন তাড়াহুড়োয় – মা বের করে দেয় নিজের দুই গাছা করে চুড় আর মানতাসা – বাবা এগিয়ে আসে এইবারে, বলে ‘মাখন দুই ঘন্টার মইধ্যে লাগব’। মাখন ঘাড় হেলিয়ে বলে ‘বুঝছি ঠাহুরকর্তা, আইসতাসি আমি’। যুঁই চোখ তুলে দেখে মুনি বিড়ালটা এসে চুনির সাথে খেলছে ছোট্ট ছোট্ট থাবা মেরে মেরে – বাদামী আর কালো ল্যাজদুটো উঠছে --পড়ছে।
এরপরে যুঁইয়ের আর ঠিক করে কিছুই মনে পড়ে না। ও কী দিয়ে ভাত খেয়েছিল সেদিন? আদৌ কি খেয়েছিল ভাত? বাবা অনেকগুলো কাগজে দাদাদের ঠিকানা, ছোটমাসীমার ঠিকানা লিখে দিয়েছিল – কয়েকটা ওর হাতে, দুটো করে সরমার মামার হাতে --- মাখন স্যাকরা দুটো ভীষণ মোটা মোটা সোনার বালা, পালিশ নেই কিচ্ছু না, কেমন ম্যাটম্যাটে দেখতে, এনে ওর হাতে পরিয়ে দিয়ে গিয়েছিল আর একটা মোটা গলার চেন, ওইরকমই ম্যাটম্যাটে দেখতে --- একটা ইস্ত্রি করা সাধারণ শাড়ী, সাদা তাঁতের কালো আর কালচে লালে মেশানো পাড় – সেই পরেই রওনা, পেছনের দিক দিয়ে বেরিয়ে আসগরচাচার সাথে ধান আর খেসারির খেতের মধ্যে দিয়ে যুঁই আর বীথি কতদূর যেন গিয়েছিল হেঁটে – একঘন্টা হবে? নাকি দুই ঘন্টা – কিচ্ছু মনে পড়ে না – সেই একটা স্টেশান, সেখানেই ছিলেন সরমার মামা সরমাকে নিয়ে --- আসগরচাচা ওদের পৌঁছে দিয়ে তিনজনের মাথায় হাত রেখে কী যেন বলেন বিড়বিড় করে – তারপর অন্য দিক দিয়ে নেমে যান স্টেশান থেকে। সরমা দেখেছিল আসগরচাচা একেবারে অন্য দিক দিয়ে চলে গেলেন কোথায় যেন। ট্রেনে উঠে শোনে ওই যারা এসেছিল নতুন, যারা কয়েকজন হরিকাকাদের ভিটেয় ঢুকে থাকতে শুরু করেছিল, তারাই নাকি ঠিক করে নিয়েছিল সেইদিন রাত্রেই যুঁই, বীথি আর সরমাকে তুলে নিয়ে যাবে – কে কে কাকে কাকে নেবে তাও নিজেরা ঠিক করে নিয়েছিল – নীলিকে ওরা আপাতত বাদ রাখে এই পরিকল্পনা থেকে – আসগরচাচার এক মুনিশ, ‘টাইল্যা’ কাজ করতে করতে শুনে ফ্যালে। টাইল্যাই এসে আসগরচাচাকে বলে – উনিই তিন বাড়ী ঘুরে ঘুরে পুরো পরিকল্পনা করেন কীভাবে সরানো যায় মেয়ে তিনটেকে। ট্রেন এগিয়ে চলে ওদের নিয়ে – পেছনে রইল পড়ে বাবা, মা, মা’র কোল থেকে হাত বাড়িয়ে বাচ্চুর ‘দিদ্দিদ্দিদ্দি’ – রইল পড়ে যুঁইয়ের সাজিয়ে রাখা আমিষ উনুন, উঠোনে ছাইগাদায় চুনি মুনি দুই বিড়াল – রইল পড়ে ইস্কুলবাড়ি – ক্লাস নাইনের ঘর- বেঞ্চিগুলো – চৈত্যাকালীর মন্দিরের সামনে ছোট মেলা, নাগরদোলা – নরশুন্দা নদী – যুঁইরা এগিয়ে চলে কোন নিরুদ্দেশের পথে --- রাতে যারা আসবে তারা কি বাবা মা বাচ্চুকে ছেড়ে দেবে? আর কোনদিন যুঁইয়ের দেখা হবে ওদের সাথে?