এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ছবিমুড়া যাবেন?

    শক্তি দত্তরায় করভৌমিক লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২১ এপ্রিল ২০১৮ | ১৪৪৫ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • অপরাজিতা রায়ের ছড়া -ত্রিপুরায় চড়িলাম/ ক্রিয়া নয় শুধু নাম। ত্রিপুরায় স্থাননামে মুড়া থাকলে বুঝে নেবেন ওটি পাহাড়। বড়মুড়া, আঠারোমুড়া; সোনামুড়ার সংস্কৃত অনুবাদ আমি তো করেছি হিরণ্যপর্বত। আঠারোমুড়া রেঞ্জের একটি অংশ দেবতামুড়া, সেখানেই ছবিমুড়া মানে চিত্রলপাহাড়। এখন ট্যুরিস্টস্পট, সরকারী থাকার ব্যবস্থা, যন্ত্র চালিত বোট। কিন্তু এসব আমার শোনা কথা। আমরা যখন গেছি ত্রিপুরার সিংহভাগ মানুষই নামও শোনেননি। আমাদের অভিযান কাহিনী শুনলে অবাক হবেন।

    ত্রিপুরা অনতিউচ্চ পাহাড়, ঘনপিনদ্ধ জঙ্গল আর খরস্রোতা ছড়া মানে ছোট নদী আর ঝর্ণা, অপ্রতুল যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে এই সেদিনও দুর্গম ছিলো। আমার মাতামহ শুনেছি বিশশতকের প্রথমার্ধে ভারতের বহু তীর্থে ভ্রমণ করলেও উদয়পুর ত্রিপুরাসুন্দরীর মন্দিরে যেতে পারেননি; গোমতী নদী পেরিয়ে মাত্রই কমবেশি পঞ্চাশ কিলোমিটার। আমরা ছবিমুড়ায় রোমাঞ্চকর অভিযান করেছিলাম ষাটের শেষ দশকের শেষে। এগারো ক্লাসের এইচএস পেরিয়ে আমরা তখন মহারাজা বীরবিক্রম কলেজে ফার্স্ট ইয়ার অনার্স। দলে পাঁচটি ছেলে, নবীন প্রবীণ তিন অধ্যপক ছিলেন আর ছিলাম তিনটি প্রাণবন্ত সাহসী মেয়ে। এখন যা এতো বছর পর আশ্চর্য মনে হয়; আমাদের অভিভাবকরা আপত্তির কারণ দেখেননি, প্রচণ্ড শৃঙ্খলা পরায়ণ অধ্যক্ষ বাধা দেননি। ছোট শহরে বদনাম রটেনি। ছৈলাখলা নামে পাহাড়ি গ্রামের উপজাতি সর্দার একটি কুঁড়েঘরে সানন্দে থাকতে দিতে দ্বিধা করেননি।
    ক্লাসে পড়ানোর ফাঁকে একদিন ডক্টর সুখময় ঘোষ বললেন এই ছবিমুড়ার কথা - তাঁর দাদা মহকুমা প্রধান হিসেবে অমরপুরের দুর্গম এলাকায় যাতায়াত করেন। আমি সবিতা অতি উত্সাহী। সবিতা খুবই অল্প বয়েসে দিল্লীতে পথদুর্ঘটনায় মারা যায়। সে আমাদের তরুণ বয়সকে মৃত্যুর অভিঘাতে জর্জর করে দিয়ে যায়। সে অন্য কাহিনী। বিভাগীয় প্রধান স্বর্গীয় বিজয় লাল মজুমদার অতি সজ্জন, ধর্মপ্রান এবং উদার চিত্ত - পিতৃপ্রতিম ব্যাক্তিত্ব, তিনি যাবেন, তরুণ অধ্যাপক তরুণ চক্রবর্তী। আর পাঁচটি ছাত্র।
    যাওয়া ঠিক হোল, জীপ গাড়ী ভাড়া হোল, কিছু শুকনো খাবারও কেনা হোল কিন্তু আগের দিন রাতে শুরু হোল উপরঝরণ বৃষ্টি। কী মন খারাপ, মায়েরা যথারীতি বেঁকে বসেছেন। যাত্রাভঙ্গ হয় হয়।
    কিন্তু আমাদের থামায় কে রে, প্রফেসর মজুমদার রাজী থাকলে ডক্টর ঘোষ রাজী থাকলে আমি আর সবিতা যাবোই। ভীতু ছেলেরা নাই গেলো। ছেলেরাই বা ভীতু নাম কিনবে কেন? ওরাও যাবে।

    জুলাই মাসের ষোল সতের হবে। আষাঢ় যায় যায় শ্রাবণ আসে। তারিখ হুবহু ঠিক কিনা জানিনা। বর্ষণের ঋতু ঠিক। আগের রাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। তখনকার হরি গঙ্গারোডের ৪৬নং বাড়ীর বেড়ার ঘরের টিনের চালে বড় বড় জলের ফোঁটা ঝমঝমাচ্ছে। সকাল তো হোল। আমাকে কি যেতে দেবে? অন্যদের আসা সম্ভব হবে? স্যারেরা পিছিয়ে পড়বেন নাতো? জীপ গাড়ী যদি না যেতে চায়? হাজার আশংকা। মন বুঝতে মিঠু মাসিকে বলি, রেনকোট আছে তো। রেনকোট যে এই যাত্রাপথের পাসপোর্ট নয় বুঝতে সময় লাগলো না। শহরের কেন্দ্রস্থল পোস্টঅফিস চৌমুহনী বলে এই বাড়ী থেকেই রওয়ানা হবো আমরা। প্রথমে হাজির লজঝর জীপ গাড়ী, একটু পরে সৌম্যদর্শন প্রশান্তহাসি প্রফেসর মজুমদার। বুঝলাম যাওয়া আটকাবে না। সবিতা যদি না আসে? সবিতা নিবেদিতাদি দুজনই বেলা দশটা নাগাদ হাজির। বৃষ্টি কমেছে একটু। ছোটখাটো পোটলাপাটলি নিয়ে ছেলেরাও। আমাদের যাত্রা শুরু হোল। তারস্বরে গান ও ---পথের সাথী তোমায় নমি বারংবার। তখনকার কর্দমাক্ত এবড়োখেবরো পাহাড়ি রাস্তা। বিস্তর ঝাঁকুনি। বৃষ্টি ও হচ্ছে। হুল্লোড়ময় কষ্টের পথ পেরিয়ে অমরপুর। মহকুমা শহর। ডঃ ঘোষ আগেই বলেছিলেন ঝুপড়ির চায়ের হাটুরে দোকানে চা খাওয়া খুব চার্মিং। তা আর নয়! ছেলেদের অভ্যাস আছেই - আমরা কোনদিন খাইনি। হাটে বসে বিস্তর কৌতুহলী চোখের সামনে চা খাওয়ার অস্বস্তিকর আনন্দ সুখময় ঘোষের মতো স্যারকে না পেলে অজানা থাকতো। আমাদের পায়ে হেঁটে যেতে হবে ছৈলাখলা গ্রামে। ঘন শণের জঙ্গল পেরিয়ে। ওপরে মেঘ ভাঙ্গা রোদের তাপ, পায়ের তলায় কর্দমাক্ত জলের ঠান্ডা। ঠিক জ্বরের অনূভূতি। আর বিঘত মাপের জোঁক। সাপ আছে তবে ব্যথা না দিলে কামড়ায় না। আমরা কি আর ব্যথা দেবো? তখন এতো পাহাড়ি জনপদের ভেতর ঢুকতে হলে এসডিও-র পারমিশন লাগতো। মেয়েরা সঙ্গে আছি পুলিশ স্টেশনে জানাতে হবে। উদ্দেশ্য? - ট্রাইবাল সাইকলজি এবং সোসাইটি সম্পর্কে অনুসন্ধান। স্যার বললেন যে কোন জায়গায় মেয়েরা সঙ্গে গেলে গুরুত্ব বাড়ে - চলো এসডিও অফিসে। পারমিশন পাওয়া গেলো। এসডিও জোঁকের কথা তুলেছিলোন, স্যার বললেন আমাদের মেয়েরা হয়তো এখনই জোঁকের স্যাম্পল দেখতে চাইবে। ওদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
    গভীর শণের বনের মধ্য দিয়ে ক্লান্তিকর পথ পেরিয়ে সন্ধ্যায় পৌঁছলাম পাহাড়ের ওপরে একটি একলা কুঁড়ে ঘরে। টিলার ওপর। হাতমুখ ধোয়ার জলও অমিল - অনেক নিচে খরস্রোতা বর্ষায় ফেঁপে ওঠা নদীই স্নান ও পানের উত্স। সেখানে কে যেতে পারবে। খাবার? সেকালে শুকনো খাবার আর কি? কটা পাঁউরুটি রুটি ছিলো, কমল, কৃষ্ণধন, সুবোধ, নীরেন দ্বিজেন নামের মেধাবী ছাত্ররা জীপে চলতে চলতেই খেয়ে নিয়েছে।

    প্রশাসন আগেই আমাদের আগমন বার্তা গ্রামের উপজাতি মোড়লের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমরা এখন গ্রামের অতিথি। আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাঁর - বৈরিতা জানেন না তাঁরা। ঘরটি গ্রামের অতিথিশালা। ডিনারের জন্য জোগাড় হয়েছে ঘটি ভরা খাঁটি দুধ আর গাছ পাকা মিষ্টি নধর কালো জাম। এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো শুনেছি প্রত্যন্ত পাহাড়ে ভূমিপুত্ররা বাছুরকে বঞ্চিত করে দুধ খেতেন না, বেচতেন না। প্রচুর আনারস ফলতো, তাঁরা খেতেন না। দেশ ভাগের পর উদ্বাস্তু মানুষ দের সংশ্রবে এ সবে অভ্যস্ত হন। আমরা আবশ্যই অনেক পরে গেছি। ওই বাদল রাতে দুর্গম বনের কুটিরে সাধ্যমত আপ্যায়নে ত্রুটি করেননি আদিবাসী মোড়ল। আমাদের সদ্যোকৈশোরোত্তীর্ণ বয়স। ক্লান্তি, পথশ্রম হাসিতে গানে কেটে গেছিলো অল্পেই। হাসি মুখে কষ্ট মেনে নিয়েছিলেন প্রবীণ বিজয়বাবু। তরুণবাবু সুখময়বাবু ক্লান্তিহীন।
    মনে রাখতে হবে আমরা শুধু বেড়াতে যাইনি। উপজাতি সমাজ নিয়ে অনুসন্ধান তখনও বেশি হয়নি। পার্বত্য ত্রিপুরা যেহেতু সরাসরি ব্রিটিশ অধীন ছিলো না, ভারতের অন্য অংশের আদিবাসীদের মতো সাহেবরা এঁদের নিয়ে গবেষণা করেননি। স্বাধীনতার পরেও কেন্দ্র শাসিত ত্রিপুরার প্রশাসন বিপুল উদ্বাস্তু সমস্যার ভারে জর্জরিত। আমরা তো নয়ই, বড়রাও অনেকেই জানেন না ত্রিপুরার অনেক জনগোষ্ঠীর আলাদা সংস্কৃতি, আলাদা ভাষা। প্রধান ভাষাটির নাম ককবরক, অর্থটি সুন্দর মানুষের ভাষা। তিপ্রা বা তুইপ্রা অর্থ জলের ধারে যারা বাস করে। সম্ভবত জল অর্থবাহী তোয়া শব্দ থেকে উদ্ভূত। যদিও এদের ভাষা মঙ্গোলীয় অরিজিন। জমাতিয়ারা সাধারণত জমা অর্থাৎ একত্রিত থাকতে ভালবাসেন। জামাতিয়াহুদার নিজস্ব আইন রীতিনীতি মেনে গোষ্টীজীবন নিয়ন্ত্রিত হয়। নোয়াতিয়ারা সম্ভবত ত্রিপুরার অপেক্ষাকৃত নূতন অধিবাসী। পাহাড়ের উত্সব, সমাজ, সমস্যা, নিজ গোষ্ঠীর আইন এসব নিয়ে অধ্যাপকরা গ্রামের কজন প্রবীণের সঙ্গে কথা বললেন। আমরা নোট করতে ব্যস্ত রইলাম। অন্য জগত, অন্য জীবন, অন্য সভ্যতা। হয়তো বেশি কাজ আমরা করতে পারিনি, চেষ্টা আন্তরিক ছিলো, সেকালে প্রথম হয়তো বা। নিশুতি রাত আবার বৃষ্টি। ঠিক হোল সবাই জেগেই থাকবো শুধু বিজয়বাবু ঘুমাবেন। তাঁর মতো পরিচ্ছন্ন মানুষের ভূমিশয্যায় ঘুম হয়? তিনি এক ঘুমকাতর ছাত্রের নিদ্রিত মুখ চেয়ে স্নেহার্দ্র কন্ঠে বলছেন, দেখ সুখময় নিদ্রিত মানুষের মুখ কি সুন্দর। গানে গল্পে ভোর হলো। পাহাড়ে পাখিরা জেগে উঠলো। স্যার বললেন, ডাকে পাখি না ছাড়ে বাসা খনা বলেন সেই সে ঊষা।
    কতো পাখির ডাকে, কতো ফুলেরর সহজ হাসিতে সকাল হলো, পাহাড় জুড়ে কুড়চি বন "পাতার উপরে পাতার ভিতরে শাদা ফুল কি সুন্দর।" আকাশে মেঘের ঘটা, নিচে গোমতী কলস্বনা। বন্যা হবেই। চা মুড়ি টুরি কি খেয়েছিলাম মনে নেই, হয়তো আম, কলা কি আনারস দিয়ে ফলাহার। গ্রামের মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে অবস্থা দেখতে আমরা মেয়েরা বেরোলাম। ত্রিপুরার প্রত্যন্ত এলাকায় স্কুল তখনও ছিলো। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামেও সম্ভব কিন্তু দুর্যোগের কারণে শিশুরা খেলা কি আম জাম কুড়োনয় মনযোগী। উপজাতি মেয়ে পুরুষ কঠোর পরিশ্রমী। জুম চাষ, লাকড়ি সংগ্রহে ঘরে ছোট তাঁতে তাদের রিয়া পাছড়া বুনতে দিন কাটে। তাঁতের রিয়া (মেয়েদের বক্ষ বন্ধনী)তে এমন রঙ ফোটে মনে হয় মাছির পাখনায় রোদের সাতরঙ ঝলকায়। সমাজ সহজাত ভাবে মোটামুটি সাম্যবাদী। শম্বর শিকার হলে সবাই ভাগ করে নেয়। পানে ভোজনে মেয়ে পুরুষ সমান। তবে মেয়েদের কষ্ট তো মেয়েদের ভোগ করতে হয়। সদরে উপজাতি ছেলে মেয়ে উভয়ের হস্টেল আছে। সবাই পড়া শেষ করে না। ট্রাইবাল বিউটি তুলনাহীন। মেয়েরা অসাধারণ লাবণ্যময়ী। অভিভাবকরা শহরে বেশি দিন রেখে পড়াতে ভয় পান, গ্রামে ফিরিয়ে এনে বিয়ে দিয়ে দেন। নাচে গানে এরা পারদর্শী। দেখা হোল আমাদের বয়সী একটি মেয়ের সঙ্গে। ফুলনতী।
    সদ্যোজাত শিশু কোলে কুঁড়ে ঘরে একা। মা বাবা মাছ ধরতে গেছেন। এর আগে তিনটি সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। ভাঙ্গা বাংলায় বলে, তোমাদের কি মজা, এখনো বিয়ে হয়নি? বাঙালি হলে আমিও তোমাদের মতো হতে পারতাম। হায়রে, জানো না বাঙালি কতো মেয়ে আছে তোমার মতো।
    গোমতির ঘোলা জলে স্নান সেরে ডিম সেদ্ধ ভাত খাওয়া হোল - রেঁধেছিলো ছেলেরাই। ইঁট কোথায়পাবে? মাটির গর্তে শুকনো বাঁশের বৃষ্টিভেজা কঞ্চি গুঁজে। ওরা রান্নায় আটকে রইলো আমরা একটা ডিঙ্গি নৌকোয় বসে মগ দিয়ে জল ঢেলে কাকস্নান সারলাম। শাড়ি গুলো কাদা গোলা জলে পাক্কা গেরুয়া হয়ে গেলো।
    সামান্য বিশ্রাম। আমরা সবুজের ঘেরে বসলাম পাহাড়ের কোলে। দূরে কালাঝাড়ি পাহাড় থেকে খ্যাপা মেঘেরা ছুটে আসছে। ডক্টর ঘোষ গান ধরলেন ঝিল্লি ঝনক ঝন নন - থামাও হে শ্রাবণ, রবীন্দ্রনাথ এর হাসির গান --ওরে ভাই কানাই, কাঁটা বনবিহারিনী দুষ্ট সরস্বতী। তখন আগরতলায় সবাই, প্রায় সবাই একটু আধটু গাইতে পারতো! খবর এলো নৌকো জোগাড় হয়েছে, মাঝি এই বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেই আমাদের ছবিমুড়া দেখিয়ে আনতে রাজি হয়েছে। সন্ধ্যায় গ্রামের পুরুষ মহিলারা আমাদের সঙ্গে নাচগান করবেন, এটা আতিথিয়েতার অঙ্গ। আজকে না ঘুমিয়ে পারা যাবে না। কাল ভোরে নদীপথে যাত্রা। দামাল গোমতী ও অবিশ্রাম বর্ষণ নিয়ে গ্রামের সবাই একটু চিন্তিত যদিও, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানার বিশেষ উপায় নেই, বাড়িতে যোগাযোগ করারও না। মোবাইল প্রশ্নই নেই। ফোন অসম্ভব। রেডিও নেই।

    ছবিমুড়া মানে চিত্রিত পাহাড়। পুরো রেঞ্জের নাম দেবতা মুড়া--দেবতার পাহাড়। মূর্তি দেবতার প্রতীক, লোকমানসে মূর্তিই দেবতা।
    অতিথিবত্সল ছোট্ট গ্রামের ঘাটে খেয়ানৌকো বাঁধা। পূর্ববঙ্গের দক্ষ বাঙ্গালি মাঝি, উদ্বাস্তু, প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা যুবক। ভরা শ্রাবণে গোমতী ভয়ংকর প্লাবনের প্রস্তুতি নিয়ে ফুঁসছে। তাকে মানিয়ে গুছিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানো সোজা নয়। গীতগোবিন্দের সেই মেঘমেদুর আকাশ। ঠান্ডা হাওয়া। চারদিক নিঝুম। পাখি ডাকছে না। বৃষ্টি আবার এলো বলে। দুধারে লাল মাটির সবুজ বনে ঢাকা পাহাড়। ধ্বস নামতে পারে যে কোন সময়। এক বৃদ্ধা ভেলায় তিনকোণা জাল নিয়ে উত্তাল নদীতে একা। পরনে খাটো পাছড়া আর গেঞ্জি। এখন আধুনিকার প্রিয় ফ্যাশন তখন আদিবাসী রমণীর কাজের পোষাক। অবাক করা সাহস। আমাদের সাহসই বা কম কি, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের অভিযান। প্রশাসন খবর রাখছেন আমরা নিরাপদ আছি। কিন্তু নৌকো ডুবে গেলে? সংকটের কল্পনাতে ম্রিয়মান হলে এই দুর্লভ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়? একটু পরে পাহাড়ের বাঁকে নদীধারা হারিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে পৃথিবীর এখানেই শেষ। পাহাড়ের শিখর থেকে নদীর দেহবল্লরীঅবধি কুড়চির ফুলন্ত ডাল, নানা সবুজ পল্লবিত শাখা।মনে হয় আকাশ থেকে মেঘের দেবতা শাখা বাহু দিয়ে গোমতীকে জড়িয়ে ধরতে চাইছেন - নদী ও ফুলেফেঁপে তাঁকেই ছুঁতে চায়। আমরা নৌকো শুদ্ধ অবাঞ্ছিত আপদ। ওপর থেকে নিচে ধাপে ধাপে কচুপাতার জল গড়িয়ে পড়ছে। মধুরধ্বনি বাজে। এতদিনে বুঝলাম জলতরঙ্গ বাজনার নাম কেন জলতরঙ্গ।
    ওই যে --ওই দেখ্ নদী থেকে খাড়া উঠে গেছে পাথুরে পাহাড়। লালমাটির নরম পাহাড়ে ওই একটু পাথরে কে বা কারা খোদাই করলেন এসব মূর্তি? ইতিহাসে নেই। রাজমালা রাজসভার ইতিহাস, ওখানে খবর নেই। আত্মগোপনকারী কোন গোষ্ঠী? ত্রিপুরার আর্দ্র জলবায়ু মূর্তি সমূহ ক্ষয়িত করেছে তবু বোঝা যায় দর্পণধারিণী মৃদঙ্গ বাদিনী অপ্সরা কি যক্ষনীর আদল। কিন্তু ভয়াল স্রোত থেমে দেখতে দিলো না। চলতে চলতে যেটুকু দেখা গেলো দেখালাম। ভ্রমনস্পৃহা নিয়ে কে আসবে এই বিপদ সঙ্কুল জঙ্গলে? বনজ সম্পদ সন্ধানে যাঁরা আসেন তাঁরা বলেন দেবতামুড়ার পাহাড়ে ঘন্টা বাজে, কেউ উলু দেয়, শাঁখ বাজে। আমি শুনেছি ঘন্টা পোকা বলে একরকম পোকা আছে, এখন জানা গেছে দেবতামুড়ার পাহাড়ের খোঁদলে বিচিত্র সব পাখির বাস হয়তো তাদেরই ডাকে নানা আওয়াজ হয়, কে জানে। কেউ বিশ্বাস করে ওই পাহাড়ে তিনশো, পাঁচশো বছর বয়সী সাধুরা থাকেন। দীপান্বিতার রাতে উদয়পুর ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরে আসেন। কেউ চিনতে পারে না। কেউ বিশ্বাস করে কেউ ভাবে অবিশ্বাসীরাই কি সবজান্তা? সবজান্তাদের কি ভালো লাগে? তাঁদের পক্ষে আবিষ্কারের আনন্দ পাওয়া অসম্ভব! আমার এক মেসোমশাই গাড়ীর ব্যবসা করতেন। ব্যবসা সূত্রে নানা দুর্গম জায়গায় যেতে হোত। বলেছিলেন তেলিয়ামুড়ার দিক থেকে দেবতামুড়ার উল্টো দিকে নাকি একটি গুহায় রঙ্গিন সাপের মুখে ব্যাঙ এরকম খোদিত কিছু আছে। কি? কেউ জানেন? -- অজন্তার মতো ম্যুরাল? বৌদ্ধ লিজেন্ড?--সাপের মুখেতে ভেকেরে নাচানোর প্রতীকী সাধনা? জানিনা।

    নৌকো এগিয়ে গেলো অমর পুরের দিকে। মহকুমা শহরের পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হোল নিরাপদ প্রত্যাবর্তন। আবার সেই জীপ গাড়ী। অঝোর বৃষ্টি, ব্রীজ তখনও হয়নি। বড় বড় ট্রাক পর্য্যন্ত বহন করে এমন নৌকো। বলিষ্ট পেশল বাহু মাঝিরা উদয়পুরে গোমতী পার করিয়ে দিলো। পরদিন গোমতীর প্রবল বন্যায় ভাসবে জনপদ, শস্যখেত, শহর।

    সন্ধ্যার আগেই আগরতলা। বাড়ী ফেরা। ছাড়াছাড়ি। আমরা দুর্গম অভিযান সফল করে বীরত্বে আনন্দে ডগমগো। কিন্তু কৃষ্ণধন কেন যেন কিছুদিন পর সন্ন্যাসী হয়ে গেলো। আর নীরেনটা ফেরার সময় ভেউ ভেউ করে কেঁদেছিলো। তখন ফিরে আসার আনন্দ, দেখে আসার উচ্ছ্বাস। বছর তিরিশ পর একদিন কেন মনে হোল, -- নীরেন এতো কেঁদেছিলো কেন? এখনো মাঝে মাঝে মনে পড়ে। ভাবি --আচ্ছা, নীরেনটা এতো কেঁদেছিলো কেন?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২১ এপ্রিল ২০১৮ | ১৪৪৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • খাতাঞ্চী | ***:*** | ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৭:২৮62291
  • .
  • শক্তি দত্তরায় করভৌমিক | ***:*** | ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:১৭62292
  • i | ***:*** | ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:৪২62293
  • খুবই ভালো লাগল। খুবই।
  • aranya | ***:*** | ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৪৬62294
  • সুন্দর
  • ফরিদা | ***:*** | ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩০62295
  • দারুণ লাগল।
  • শিবাংশু | ***:*** | ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩২62298
  • অদৃশ্যে সঙ্গে ছিলুম। এমনই লাগল...
  • Du | ***:*** | ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪০62299
  • দারুন ভালো লাগলো। পুরো অনুভব করলাম সেই জলধারার স্পর্শ নিজের ছোটবেলার বশিষ্ঠ আশ্রমের স্মৃতির সাথে খানেক মিলিয়ে নিয়ে। এই জায়গাটা যেন নষ্ট না হয়ে যায়। টুরিজম হোক কিন্তু মাচু পিচুর মতো রেস্ট্রিকশন মেনে।
  • pi | ***:*** | ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৫৭62300
  • কী ভাল।

    ত্রিপুরার কত জায়গা নিয়ে লিখতে কী মন চায়, ছবিমুড়ার মত সেসবও কোনোদিন হবে বলে মনে হয়না।

    তবে ছবিমুড়া সত্যি ছবির মত। রাত্তিরদিরাও ঘুরে এল। লিখছে, এখানেও লিল্হলে পারে তো। ইন্দোদা দারুণ কিছু ছবি তুলেছে।

    তবে সেদিন কাগজে পড়লাম, ছবিমুড়াকে পর্যটন মানচিত্রে আনা আমলার কথা। তাঁর অন্য নানা কাজ দেখেছি, এটাও জেনে খুব ভাল লাগল। তিনি আবার গুরুর একনিষ্ঠ পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী!
  • I | ***:*** | ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:০৩62301
  • প্রসূন বাবু। আমাদের অসম্ভব সাহায্য করেছেন।
    ছবিমুড়া আর ত্রিপুরা ভ্রমণ নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু সে তো নেহাতই ওপর ওপর দেখা।মাসিমার মত এরকম প্রাণের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা লেখা হবে না।
    রাত্তির অবশ্য লিখছে ফেসবুকে।
  • কল্লোল | ***:*** | ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:১৪62296
  • খুব খুব ভালো লাগলো।
    ত্রিপুরা, বিশেষ করে আগরতলা আমার সারা শৈশব জুড়ে।
    নাহ। আমি কখনো আগরতলায় ছিলাম না। সে অনেক পরে মাত্র মাস দুয়েকের জন্য ২০০৩ সালে পূজোর সময় প্রজেক্টের কাজে।
    কিন্তু আমার সারা ছোটবেলা কেটেছে আগরতলার গল্প শুনে। আমার ঠাকুর্দার বাবা আগরতলায় আসেন। ঠাকুর্দা অবসর পর্যন্ত ত্রিপুরা রাজকর্মচারী ছিলেন। বাবার স্কুলজীবনও আগরতলাতেই।
    ঠাকুদা আর বাবার মুখে শোনা, হাওড়া নদীর গল্প, বুনো হাতি ধরে আনার গল্প, কলেজটিলায় পাহাড়ী ময়ালের গল্প, কুলের বিচি ছড়িয়ে রেখে হাতি তাড়ানোর গল্প। ঊণকোটি পাহাড়ের গল্প।
    কলকাতার বাসায় রাজমালায় নানান মহারাজাদের ছবি, রাজসিংহাসনের ছবি (বলা হতো এটা নকি যুধিষ্ঠিরের রাজসূয় যজ্ঞের সিংহাসন - এঅমনকি ত্রিপুরার রাজবংশ নাকি চান্দ্রবংশীয়)।
    আপনার লেখা পড়ে আবারও মনে পড়ে গেল সব।
  • Ekak | ***:*** | ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৭:১২62302
  • বড় ভাল হয়েচে। আজকাল পর্য্টন মানচিত্রে নতুন নাম দেকলে ভয় হয়, এই বুঝি একপাল আমি ও আমরা গিয়ে সেথা বারো বাজিয়ে দিলে।
    কবে গিয়ে ওঠা হবে জানিনে, ছবিমুড়া তার রহস্য নিয়ে টিকে থাকুক এই আশা রইলো।
  • প্রতিভা | ***:*** | ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:২১62297
  • সুন্দরের কাছ থেকে দূরে চলে যাবার ব্যথাজনিত কান্না। আমরা সবাই কখনো না কখনো কেঁদেছি। চমৎকৃত করল লেখাটা, শেষ হলে ব্যথার মত সুখ অনুভব করলাম।
  • খাতাঞ্চী | ***:*** | ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:১৩62303
  • লেখিকা সবাইকে অনেক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
  • শঙ্খ | ***:*** | ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:৩৪62306
  • অপূর্ব লেখা। খুব ভালো লাগলো।
  • b | ***:*** | ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৭:৩৯62304
  • "Be Yarrow stream unseen, unknown!
    It must, or we shall rue it:
    We have a vision of our own;
    Ah! why should we undo it?
    The treasured dreams of times long past,
    We'll keep them, winsome Marrow!
    For when we'er there, although 'tis fair,
    'Twill be another Yarrow!
  • | ***:*** | ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ১১:৫২62305
  • এতদিনে পড়লাম। পড়েই যেতে ইচ্ছে হোল।
  • raatri | ***:*** | ২৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:৫৮62307
  • কী ভালো যে লাগল, মাসিমা!! যেন সব ছবির মত দেখতে পেলাম।
  • Atoz | ***:*** | ২৫ এপ্রিল ২০১৮ ১০:৫২62308
  • ছবিমুড়া যেতে চাই। সেই চিত্রগিরি দেখে, নদীর জলতরঙ্গ শুনে ধন্য হতে চাই।
    লেখাটা খুব ভালো লাগল।
  • প্রতিভা | ***:*** | ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:২৮62309
  • যাব দিদি। খুবই যেতে ইচ্ছে করছে এটা পড়ে।
  • শঙ্খ | ***:*** | ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০৮:২২62310
  • মন বলেছে যাবো যাবো

    কি সুন্দর লেখা, ছবির মত বিবরণ, বড় আন্তরিক।
  • বিপ্লব রহমান | ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:১৭530957
  • বার বার মুগ্ধ হয়ে পড়ি। ফেসবুক আবার ফিরিয়ে দিলো এই লেখা। 
     
    পেশাগত কারণে একসময় ত্রিপুরার পাহাড়ে অনেক ঘুরেছি। যেন সিনেমার মতো চোখের সামনে ঘটতে দেখি এই সব পুরনো কথন। 
     
    ব্রাভো শক্তি দি। প্রণাম নিও heart
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন