এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  বাকিসব

  • শীত 

    শক্তি দত্ত রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    বাকিসব | ১১ জানুয়ারি ২০২৩ | ৮৬৮ বার পঠিত
  • আজকে তো পয়লা পৌষ। পৌষ বল ডিসেম্বর বল ভারি সুখের মাস কিন্তু। তবে হ্যাঁ নিজের মনে যখন সুখ তখন। আমলকীর পাতায় নাচন লাগে আর ডাল থেকে ঘুঙুরের মতো ঝরে পড়ে দুটি চারটি ফল। এম বি বি কলেজের বিশাল পরিসরে আমাদের সময়ে অনেক গাছের মধ্যে আমলকী গাছ, জলপাই গাছ ছিল আর ছিল তমাল গাছ। ক্যান্টিন ছিল টিলার ঢালুতে ছোট্ট একটি ঘর। ওই ঘর ছেলেরাই দখল করে বসে থাকতো। মেয়েদের জন্য জলপাইতলা, আমলকীতলা। ওখানে চানাচুর কিনে খাওয়া আর ফাউ দুটি আমলকী কী জলপাই। আমরা ওতেই খুশি। ছোট ছোট খুশি দিয়ে ভরা জীবন। আমরা তখন লিপস্টিক জানি না, আইলাইনার জানি না, সোয়েডের টিপ অব্দি বেরোয়নি। ঝুরো মাদ্রাজি কুমকুম টিপ, ঘরে তৈরি প্রদীপের কাজল বেশি যারা সাজতে ভালোবাসতো তারা ওই টুকুই ব্যবহার করতো। আমরা এসবের ধার ধারতাম না। ছাপা খাটাউ  ভয়েল কি টাঙ্গাইল আর্দ্ধেক খোলা একবেণী। ব্যস। শীতের দিনে ঘাম নেই, ধূলো আছে, চোরকাঁটা আছে, তাতে কি? কলেজের পেছনে নদী আছে ওখানে এখন কাদা নেই। অফ পিরিয়ডে দিব্যি দল বেঁধে ঘুরে আসা যায়। পিকনিক করতে যাওয়া শীতের দিন ছাড়া বলতে গেলে অসম্ভব। নীরমহল,সোনামড়া, উদয়পুর, ঊনকোটি, ডম্বুর চলো না কোথায় যাবে।

    সৃজনশীল কোন কাজের উদ্যোগ শীতের দিনেই বেশ হয়। নাটক কি জলশা দেখা বলো করা বলো শীতেই ভালো। ছবি আঁকার একটা প্রদর্শনী কি ছোটদের জন্যে বসে আঁকোর আয়োজন শীতকালে বছরের শেষ ঋতুতে জমজমাট। এই যে দুপুর বেলা রোদে পিঠ দিয়ে লিখতে বসেছি শীতের রচনা, বলতে একটুখানি লজ্জা করছে তবু মনে তো আসছেই জয়নগরের মোয়া, জম্পুইএর কমলা, লোগতাক লেকের কই মাছ, নলেনগুড়, পিঠে পায়েস খেজুর রসের কথা। থাক্ ওসব কথা, কে আবার বলবে লোভ আর কমলো না। ছেলেরা খাওয়া দাওয়া ভালো বাসলে ভোজনরসিক আর মেয়েদের বেলায় পেটুক হলে দোষ। কি আর করা। পরিপাটি করে রান্নাবান্না কর খেতে বসে তেজপাতা আর ঝোল। 

    আর চারদিকে হরিনাম সংকীর্তন। নানা হিন্দি সিনেমার গানের সুরে। হোক না। ভগবানের নাম যার যেভাবে গাইতে ভালো লাগে। অঢেল খিচুড়ি লাবড়া, পায়েসও থাকে অনেকখানে। পরীক্ষা তো থাকবেই ছাত্র জীবনে। খেলা ধূলা খেলা স্পোর্টসও তো থাকে। "শীতের রথের ঘূর্ণিধূলিতে গোধূলিরে করে ম্লান তাহার আড়ালে কে আসিছে সে কি জান"। ওই শীতের হাওয়ার নাচন কার হৃদস্পন্দনে ঢেউ তোলে কে জানে। কোথায় জাগে নূতন গানের আমন্ত্রণ। হিমের রাতে জ্বলে ওঠে প্রদীপে গোপন স্বর্গের সোনালি আলো ।
    "ডেকেছ আজি, এসেছি সাজি, হে মোর লীলাগুরু ---
    প্রকৃতি বাসক সজ্জার ত্রুটি রাখে না ।
    শীতের রাতে তোমার সাথে কী খেলা হবে শুরু! "
    "কালের প্রয়াণপথে আসে নির্দয় নবযৌবন ভাঙনের মহারথে "।

    সান্তাক্লজ শিশুদের জন্য উপহার নিয়ে আসেন, ক্রিসমাসের উপহার আসে সবার জন্যে। তরুণী প্রেমিকাকে উপহার দেবে বলে কার্ডে রঙীন ফুলের রেখা টানে শিল্পী। আনাড়ী নূতন বৌ স্বামীর জন্য সোয়েটার বোনে। বারবার মাপ নেয়। শীত তবে আসুক না আমলকী ডালের কাঁপনে। পাকা কমলালেবুর সরস ঔজ্জ্বল্যে।
    একবার শীতের ঋতুতে ফিরছিলাম জসিডি থেকে। মাইলের পর মাইল পলাশ জ্বলছে আরতিপাত্রে প্রদীপ সাজিয়ে। কী সেই রক্তিম সৌন্দর্য।
    শীতের জন্য কান্না আছে। অতীত স্পর্শ কাঁপিয়ে তোলে তার পরে ও আবৃত্তি করে কে, কোন বাতায়নে --" দেখিতে দেখিতে কী হতে কী হল, শূন্য কে দিল ভরি।
    প্রাণবন্যায় উঠিল ফেনায়ে মাধুরীর মঞ্জরি ।"

    ***

    আজকের এই সকালে কতো নূতন তরুপল্লবে প্রকৃতির আশীর্বাদ ঝরে পড়ছে। কতো মানুষ নূতন আশা নিয়ে খেতে খামারে বীজ বপন করছে,সকলের আশা সফল হোক। গৃহস্থবধূটি আঙ্গিনায় সীমলতা লাউলতা পুঁতেছিল বর্ষায়, ঝুলনদিনে এখন ভরে উঠবে ফুলে কড়ায়। শীতের বাতাসে ছড়াবে পাঁচফোড়নগন্ধ পাঁচমেশালি সহজ তরকারির সুগন্ধ। শিশুরা নূতনচালের ফেনাভাতের সঙ্গে খেয়ে খেলত খেলতে স্কুলে যাবে। আখড়ার বেড়ায় মসজিদের বাগানের ঝাপরির ভেতর ফুটবে গাঁদাফুল নানারকম। শীতের হাওয়া ঝাঁপিয়ে পড়বে ভুটিয়াদোকানীর পশরায়। এই তো শুরু। শীত তো এলো এবার। পাতাগুলো শিরশিরিয়ে উঠে নাচ জুড়ছে আমলকীর ওই ডালে ডালে।

    ***

    এতদিন শুনলাম  মাইনষে কইন মাঘের শীত  না কিতা বাঘের গাও লাগে 
    এইবার দেখি পৌষের ঠান্ডায় রাইত কাইলের ঘুম কাইপ্যা উইঠ্যা ভাগে।
    খেজুরের লালি দেখলাম না চোখে পিঠা হইল না ঘরে নাইরকল রইল কই 
    পায়েস রান্ধনের মেজাজ নাই মা'র মিছিল করতে যাইন, সারা দিন চইচই।
    জন্মইস্তক শুইন্যা আইলাম দেশের লাইগ্যা জীবন দিছইন দিদা ঠাকুর দাদা 
    আমার দেশ আমি নি বিদেশী সন্দেহ বলে হয়, ছি ছি এমন ও আছে গাধা।
    ভাইয়েরারে কই তাড়াইব তার মতলবে ফন্দি ফিকির খুঁজে ইতারে কয় নেতা?  
    ঠাম্মা ও কইন এনআরসি  ক্যাব আইতাছে আইন,  এখন আবার পিঠা?  যার কপালে যেতা।
     এইবার পিঠা উঠা করত না কেউ, পৌষ পার্বণ মিছা, কাঁথা কম্বল গাও দিবা দেও 
    সংক্রান্তি দিন মেড়ামেড়ির ঘরে খাইবা? তা ও  আশা নাই ,পিঁয়াইজ আনবা কেও?
    এইবারের শীত ঠান্ডা ছাড়া আর দিত না কিছু, মূলার ঘন্ট সীমপাতুরি এই দিয়া ভাত খাও 
    দুপুর হইলে পাড়ার সবে মিল্যা মিশ্যা মিছিল করতে যাও, লেখাপড়া বাদ দিয়াই যাও।
    কোন রাজা আইল দেশ  মাথাত পাগড়ি বান্ধা, গলাত্ ঝুলে বাক্কা উড়নি কপালে টিপ্  আঁকা।
    বড় বড় বক্তৃতা দেয় মন্দির বানায় উঁচা, রামের নামে যুদ্ধ লাগায় , আওয়াজ করে ফাঁকা ।
    এই বার শীতে মজা নাই 
    কী আর করুম ভাই ।

    ***

    লেখা তো ছেড়েই দিয়েছি। শরীর যদি এতো বিদ্রোহী হয় তবে কি আর লিখতে ইচ্ছে করে। মনে হয় সব ছেড়েছুড়ে যদি নির্বান লাভের চেষ্টা করা যেতো ভালো হতো। আমার মতো মানুষের কি আর নির্বাণ হয়? সামান্য স্ফুলিঙ্গ পেলেই বকবকানি জুড়ে দিই। রূপরস গন্ধ স্পর্শ সবেতেই অনির্বাণ আকর্ষণ। শর্মিষ্ঠার খেজুর রসের গেলাসে রসের টলটলানি দেখে আমাদের সেই ৪৬ হরিগঙ্গা বসাক রোডের রান্না ঘরের পাশে তিনটি খেজুর গাছ, তাদের মিষ্টি রস, গাছকাটুনি লম্বা গাছি, রসলোভী মৌমাছি কাঠবিড়ালী কাক শালিক কাঠঠোকরা সবাইকে মনে পড়ে গেল। শীতের কাঁপুনি ভালো করে শুরু হতে না হতেই দীর্ঘকায় গৌরবর্ণ গাছি এসে খেজুর গাছের মাথার ঝাঁকালো কাঁটা কাঁটা সবুজ পাতার নিচের অংশে কাটাকুটি করে বাঁশের একটা পাইপ মতো দিয়ে একটা মাটির কলসি বেঁধে দিয়ে যেতো। সারারাত টুপটুপ রসের ফোঁটা পড়ে কলসি উপছে পড়তো মিষ্টি রসে। সেই রসের স্বাদ নিতে একটু পরেই চলে আসতো দুএকটা মৌমাছি বোলতা তার পর তো সন্ধ্যা আমরা জানতাম কে বা কারা রস চাখতে আসে। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে গাছিমামা এসে হাঁড়ি নামিয়ে নিত। একদিন সব রস সে নিয়ে যেত, একদিন আমাদের দিত। খেজুর রস বেলা হলে খাওয়া যায় না। গেঁজে ওঠে মাদকের মতো। খেলে মাথা ঘোরে। মা আমাদের একগ্লাস করে দেন একদিকে সুস্বাদু আর উপকারী অন্য দিকে মা ভয় পান আমাদের যদি ঠান্ডা লেগে যায়। কোন কোন দিন বাসনামাসি রসটা জ্বাল দিয়ে ঝোলা গুড়, আগরতলায় বলে লালি বানায়। ওখানকার খাসার চাল দিয়ে দুধ আর লালি দিয়ে খুব ভালো পায়েস হয়। রসের হাঁড়ি নামিয়ে নিলে বাঁশের সেই সরু পাইপ ঘিরে হুলস্থুল শুরু হয়ে যায়, কাক কোকিল শালিখ চড়াই কাঠবিড়ালী সবাই ওখানে হাঁ করে থাকে যদি দুএক ফোঁটা রস মুখে পড়ে। ঝগড়া হয়, ধাক্কাধাক্কি হয়। সে এক মহোৎসব।
    খেজুরের রসের ভক্ত ছিলেন আমাদের পল্টুদা। ভোরবেলা উঠে ভট্টপুকুর থেকে পোস্ট অফিস চৌমুনী আসতে আর কতক্ষণ। টকটকে ফর্সা রঙ, শীতে ফাটা গাল লাল হয়ে আছে। কোন্ কালে ধনমাসির বুনে দেয়া উলের সোয়েটারের ওপর এঁড়ির চাদর জড়িয়ে রোদ্দুরে মোড়া পেতে বসে গ্লাসের পর গ্লাস রস খেয়ে চলেছেন। বড় মানুষ কে আর বাধা দেবে। আমাদের একটু হিংসে হয় এই যা।
    ঐ কলস ভরা মধুরসের উত্স সেই বেঁকে চুরে যাওয়া খেজুর গাছেরা নেই, গাছকাটুনি মামা নেই, মা ও চলে গেছেন, চলে গেছেন সেই চালচুলোহীন পল্টুদা। আত্মীয় স্বজন নিয়ে এসোজন বসোজন মুখর সংসার গুলো গেছে ফ্ল্যাট বাড়ির  পেটে। রসের কলসে ফুটো হয়ে গেছে কবে। রোদ ওঠার আগেই গেঁজে নষ্ট সব।

    ***

    জীবনের পুরোনো  শীতকাল গুলো ডানা মেলে উড়ে গেল। তার সঙ্গে উড়ে গেল টিলার ঢালুতে ঝর্ণার ধারের কমলাকোমল স্বাদু পিকনিকের দিনগুলো। কবিতার আসর, নাটকের রিহার্সাল, খাটে লেপমুড়ি দিয়ে মৃদুস্বরে ঝগড়া। চায়ের কাপে তুমুল তুফান, টেবিল চাপড়ে তর্ক। তর্ক ছাড়া বন্ধুত্ব হয়? 
    আরো আছে, শীতের রাতে ছোট্ট বাচ্চা হাত পা ছুঁড়ে হলুদ ভয়েলের ওয়াড় জড়ানো লেপ সরিয়ে দিয়ে কেঁদে ওঠে, অল্প অভিজ্ঞ মা বাবার মিলিত চেষ্টায় সেই আদুরে সমস্যার সমাধান। সেই ওম তোলা শীত চাপা পড়ে গেছে আজকের শীতল শীতে।
    এই শীত ঠেলে বারবার হাত পা ছুঁড়ে উঁকি মারে হারানো শীতের মিঠেল মুখ। ছোঁয়াও যায় না।

    ***

    বৃন্দাবনের কুঞ্জপথে শুষ্ক যতো বকুল পাতা ঝরেছে দিনভর 
    হালকা রেশম ওড়না যেন কুয়াশার আবছা ঘনায়মান আস্তরণ 
    রাই কিশোরী তোমার পায়ের লঘু অথচ দ্রুত চলনে মর্মরিত বিতান।
    ভয় করে কি? গুরু দুরজন ভয় মানো কি? কুটিলা এখনো সজাগ।
    শীতের অভিসার, বৃষভানু নন্দিনী ,অঙ্গে তোমার আলপাকা চাদর 
    উরহি বিলুণ্ঠিত লোল চিকুর বাঁধা আছে রেশমী ডোরে 
    কালো কেশপাশে শিশিরের মুক্তাজাল , চঞ্চল খঞ্জন নয়ান 
    শঙ্কাহীনা কোথায় তোমার শ্যামল সুন্দর সখা মরণ সমান? 
    চন্দ্রাবলী ডেকে নিলো না তো তারে? 
    নিশীথ অন্ধকারে কুঞ্জপথে ভীরু অভিসারিকা কৈসে যাওব 
    অবলা কামিনী রে।

    শঙ্কাহীনা চিরন্তনী অন্তবিহীন অভিসার সরণি ধরে চলা তোমার 
    কাল থেকে কালান্তরের পথে, ভুবন থেকে ভুবনান্তরে।
    শীত মর্ম ছুঁয়ে থাকে, চোখের কাজলে শিশিরের হিরে চমকায় 
    চলয়িতে শঙ্কিল বন্ধুর বাট 
    শ্রীরাধিকা তোমার অভিসার সজ্জার নূপুরে বিশ্বজীবনের স্পন্দন 
    আয়ান বধূ তোমার বঁধু পরাণসখা কুঞ্জকুটিরে অধরা চাতুরী মগন ।
    শীত সমীরে ছোঁয়া দেয় কি বসন্ত সমীরণ।
    রাই কিশোরী তোমার পায়ের তলায় মর্মরিত, মঞ্জরিত অমর্ত্য বিতান।

    ***

    প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। হাত পা হিম। লোকে বলে গরমে হাঁসফাঁস করা, এরকম ঠাণ্ডাতেও হাঁসফাঁস করতে হয়। খেজুর রসের গেলাস নেই, দুব্বোঘাসের ওপর শিশির পড়ে নেই, শিশিরের বুকে সূর্যের আলোর কণাটুকুর স্পর্শ নেই, কমলালেবুর ফুলে মৌমাছির লোভাতুর আনাগোনা নেই শুধু কনকনে হাওয়া আছে, লোকে বলে গঙ্গাসাগররে হাওয়া। সেই হাওয়াতে পবনস্নান এই নাকি কোলকাতার শীত। আছে বটে কিছু মজা। জয়নগরের মোয়া, ফুলকপির সিঙাড়া, ভোরের আলো ফোটার আগে মোড়ের মাথায় ভাড়ের চা, চিড়িয়াখানার রঙীন হুল্লোড়, পার্কস্ট্রীটের বড়দিন, ভিক্টোরিয়ামেমোরিয়াল, অধুনা ইকো, নিকো, মিলেনিয়াম পার্ক, বাঘ সিংহহীন সার্কাস। তবে একটু বেরোতে পারলেই সাঁতরাগাছির ঝিলে কতো পাখি, শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা, কেঁদুলিতে জয়দেবের মেলা। গ্রামের মেলায় যাত্রা ঝুমুর তেলেভাজা, মুড়ি বেগুনি, আলুর চপ, তিলপাটালি, নূতন গুড়ের নাড়ু, পৌষের পুলি পিঠে। নদীর পাড়ে ধানকাটা খেতে পিকনিক।

    তা বাপু, তোমরা তো আমাদের ছোটবেলার দরং জেলার সেই পুরোনো শীতকালকে জানোই না। মাইলের পর মাইল সরষেখেতের হলুদ, পাশেই নিবিড় সবুজে চাবাগানের যৌবন। নাহার বনের পায়ের কাছে নিজেকে বিছিয়ে শান্ত শুয়ে থাকা  বর্ষার দুর্দান্ত  গাব্রুনদী। ভোগালী বিহুর গান। মেখলার ওপর এন্ডি কি সোনালী মুগার চাদর। লেপমুড়ি দিয়ে ঘুমুই সকালে সাধ্যি নেই। বাবার হাঁকডাক --ওঠো ওঠো গোল্ডেন পিক দেখা যাচ্ছে অর্থাত্ বমডিলার ওদিকে ভুটানের কোনো শিখরে সূর্যের আলো পড়েছে। ওটা নাহয় স্বপ্নে দেখবো একটু ভোরবেলার চিনিঘুমটা ঘুমোতে দেয়না বাবা। আহা! আজ যদি বাবা আবার ডাকতো আমায়। বিকেলে বাবা আবার হৈহৈ করে ডাকবে, যখন কেউ শিকার করে আনবে হরিয়াল কি বনমুরগী। গরম জহা চাউলের খিচুড়ি, মাংস দেওয়া আর পুদিনা পাতার চাটনি। মাকে সাহায্য করতে হবে। কালু ভুলি লাইকা  সিল্কি  কুকুর বেড়াল সবাই উৎসাহী। শীতের ভোজ তো নাইবা হোলো বনভোজন। গীতাপ্রিয়া পাঠিয়েছে ওর বই চাবাগানে সবুজ শৈশব। পড়তে পড়তে আমার ও কতো কথা মনে এলো। 
    অনেক দিন আগে আমরা  ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে আলাপ করতাম, আগের রাতে  কে কী স্বপ্ন দেখেছি। আমার শ্বশুর মশাইয়ের শখ ছিল ফুল বাগানের। তিনি ফুলের স্বপ্ন দেখতেন, আশিস বলতেন তোমরা আবোলতাবোল স্বপ্ন দেখ, আমি সুন্দর জায়গায় বেড়াতে যাই স্বপ্নে। আমি একরকম না নানা রকম স্বপ্ন দেখতাম। বলার মতো হতো আবার হতোনা।
    কেন যে পৃথিবীতে এমন নিয়ম, বয়স হলে শরীরে মনে কষ্টের দুর্বহ বোঝা সুখস্মৃতি ঝাপসা করে দেয়। এইতো কালরাতে মাকে স্বপ্ন দেখলাম, কোথায় এক ভাড়াবাড়িতে একা বসে আছে। বললাম এতো একা কি করে থাকবে? চিরাচরিত শান্ত উত্তর,থাকতে তো হবেই, কি করা। মনটা  ভারাক্রান্ত হয়ে গেল। 

    ***

    শীত করে শীত করে কইয়া কান্দ কেনে ভাই
    শীতের মত এমন মজা বসন্তেও নাই।
    ভাই বন্ধু পাড়াপড়শী ডাকিয়া আন চাই সবে
    একলা একলা গান গপ্পো খেলা জমে কবে।
    বইয়া পড়োসে লাইন ধরিয়া একের পরে এক
    নাইরকল পাতা সুপারির খোল কই মিলব দেখ্।
    বাক্কা ভালা করিয়া এইবার আগুন জ্বালিয়া দেও
    খেতর থাকি মিষ্টিআলু তুলিয়া রে বা চুলাত্ পুড়ি নেও।
    আলু পুড়া খাইতে খাইতে গপ্পো উপ্প কর
    শীতের দিন গীত গাইতে ভালা লাগলে ধর।
    হাছন রাজা ময়নামতী রবিবাবুর গান
    যে তা চাও গাও না কেনে ভরিয়া মন প্রাণ।
    বৌ ঝিয়ারি লগে লইয়া ঠাম্মা যদি আইন
    হগ্গলরে খুশি করিয়া ধামাইল চৌতাল গাইন।
    শীতর রাইত চান্দর গাওত কুয়াশার চাদ্দর
    শিয়াল ডাকরা আনন্দে ওই বাঁশবাগান আদ্দর।
    কই গেলা বা রাঙ্গা কাকা কান ছিদ্দিক আলি
    আলু পুড়া ফুরাই গেল লই লাও ভুট্টার হালি।
    মুড়ি বাদাম ভাজার লগে গরম চা আর কফি
    সাহেব মেমের বারবিকিউ আমরা খাইমু লুচি।
    বেগুন পুড়ি মাখিয়া দিবা সোনা মামীর মা
    দুই তেপান্তর লাফ মারিয়া শীত ভাগিয়া যা।

    ***

    ত্রিপুরা তো শীতের শুরুতে ত্রিং উৎসব সেরেই তৈরী হয় বড়দিনের প্রস্তুতিতে। পৌষ পার্বন. খেজুরের লালিগুড়ের পায়েস সুবাস ছড়ায় গ্রামের পাড়ায়,শহরের গলিতে। মহকুমা গুলিতে বইমেলা, জম্পুই পাহাড়ের কমলা উৎসব, ডম্বুড়ের মকরসংক্রান্তি মেলা সবই কড়া শীতের আমেজে স্বাদু আইসক্রিমের মতো আকর্ষনীয়। ঠাণ্ডা হোলোই বা। রবীন্দ্র ভবন টাউনহল এখানে ওখানে জলসা নাচগান নাটক এক্সিবিশন। আশ্রমে, মঠে, মন্দিরের চাতালে আর বাজারে বাজারে হরিনাম সংকীর্তন। খিচুড়ি প্রসাদের মোলায়েম সুগন্ধ --বিনয়ী স্বাদ, কোনো অহংকার নেই। বেশ বছর কুড়ি আগে পল্টুদা সকাল বেলা শীতের বিছানা ছেড়ে বেরিয়ে পড়তেন, কারো বাড়ী ঢুকে গেলাস ভরা খেজুরের সদ্যোনামানো রস আর গরম গরম চা দুয়েরই ফরমাস করবেন, জানতাম আমরা। সরস্বতী পুজোর দিন কোকিল ডেকে জানাবে, শীত গেল গো বসন্ত জেগেছে দুয়ারে। কুয়াশা কেটে ভোরের আলো না ফুটতেই কীর্তন ভাসবে বাতাসে --ভোর হইল জগত জাগিল জাগিল নারী নর। সিধা সাজিয়ে রাখতে হবে, বেলা হলে কীর্তনীয়া সিধা নিতে আসবেন, কেউ শুনতে চাইলে শোনাবেন আরো দুটি গান তারপর খিলিপান গালে বিদায় নেবেন ।

    কোলকাতা তো শীতের জায়গা নয়। যে কদিন শীত একটু জাঁকিয়ে পড়ে সবাই নিজেদের সুন্দর রঙিন গরম সোয়েটার  শাল অন‍্য পোশাক গুলো পরে,পিকনিক করে, বাচ্চাদের চিড়িয়াখানা নিয়ে যায়, শীতের ফুল ফোটে ছাদের বাগানে। বস্তির উঠোনেও মাঝে মাঝে ফোটে গাঁদা, মোরগঝুঁটি। ফুটপাথবাসী মানুষেরা আগুন জ্বেলে গোল হয়ে ঘিরে বসে। রুটি সেঁকে আর গান গায়। ছোট্ট মানবশিশু কোলের  ওমে ঘুম যায়, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দুধ খায়। রাস্তার কুকুরদের কেউ যত্ন করে বস্তার  জামা পরিয়ে দেয় আদর করে। মানুষের মধ্যে কি কেবলই  হিংস্রতা বিদ্বেষ? না,মানুষের মধ‍্যে প্রেম ভালোবাসা মায়া দয়া সব আছে। স্ফুলিঙ্গ হয়ে ধরা দেয় ছোট্ট দৃষ্টান্তে। কোন জীর্ণবসন, দৃশ‍্যত দরিদ্র মানুষ বিস্কুট পাঁউরুটি বিলোয় কুকুরকে। মাছওয়ালা বেড়াল কোলে বসিয়ে মাছ  কোটে। 

    ***

    আমার অবশ্য সব ঋতুর মধ্যে শীতকালটাই নিষ্ঠুর মনে হয়। শীতের দিনে ঠাণ্ডায় আমার পাগল পাগল লাগে। সারা রাত হাত পা হিম হয়ে থাকে। হাত মোজা পরে লেখা অসুবিধা বলে কবিতা লেখা বন্ধ। শীতের দিনে লেখা আমার কমই আছে। ছাত্র ছিলাম যখন তখন পরীক্ষার জ্বালা। টীচার হলাম। তখন রাত জেগে খাতা দেখরে, রেজাল্ট শীট কর রে। শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে প্রথম বছর একটা ছোট কর্তব্য এলো। দেওর একটুখানি রাত করে ফিরতো। ডিসিপ্লিনের বাড়ি সবাই রাত দশটায় ডিনার শেষ করে শোয়, আমিও। কিন্তু রাতে দেরি করে ফেরা দেওরকে পরিবেশনের ভার স্বভাবতই নূতন বৌটির ওপর। একটা খুব ভারী আর গরম ওভার কোট ছিল। দেওরের বুদ্ধিমান দাদা বললেন ওইটা পরে তুমি পরিবেশন কর, একটুও ঠাণ্ডা লাগবে না। মোজা পরে ওভার কোট পরে ভাত দিতাম দেওর হেসে কুটিপাটি। বৌদি কোট পরে ভাত দেয়। সে বছর শীত যে কী বিড়ম্বনা নিয়ে এসেছিল বলে লাভ নেই। তবে বাগান ভরা মরসুমি ফুল, পিকনিক আর রকমারি পিঠে, কেক কুকিজে তখন আমাদের একান্নবর্তী পরিবারে আনন্দ কম ছিলো বলবো না।
    তারপর তো মা হয়ে নূতন দায়িত্ব ঠাণ্ডা থেকে বাচ্চাদের রক্ষা করা। মধু খাওয়াই। তেল মাখাই, রসুন, পেঁয়াজ, কালোজিরে, মাষকলাই যে যা বলে মেশাই তবু সর্দিকাশি হয়ে যায়। স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা ডিউটিতে যাওয়ার আগে স্নান করাতে হয়। আবহাওয়ার খবরে সেলসিয়াসের হিসেব বলে তিন কী চার ডিগ্রি, ডিগ্রি, আকাশ অংশত মেঘলা। তবুও  উলের জামা পরে ফুলো ফুলো তুলোর পুতুলের মতো বাচ্চাদের নিয়ে ধনীসাগরের পাড়ের সবুজে মিঠে রোদে ছুটোছুটি করে খেলতে কী ভালো যে লাগতো। মাঝে মাঝে ছোট খাটো পিকনিক। পৌষ সংক্রান্তির মেলা, পিঠে পায়েস আচার দেওয়া তখন অনেকটা শিখে গেছি। ডালের বড়ি দিই, কমলা ক্ষীর বানাই। আত্মীয়বন্ধুদের প্রশংসা পেলে ধন্য মানি।ভুলেই গেছি কবে যে কবিতা লিখতাম। জমিয়ে সংসার করা যাকে বলে।

    ছেলেরা বড় হলো। শীতের দিনেই আমাদের পক্ষে যতোটুকু সম্ভব মনের মতো অনুষ্ঠান হলো বিয়েতে। শীতের দিনেই বেড়ানো, খাওয়াদাওয়ার শৌখিনতা। খেজুর গুড়ের পায়েস, সবুজ কচুরি, শোলমূলা, লাউঘন্ট, সোনামুগ, বেগুন ভাজা। দিনের গায়ে গড়িয়ে গেল দিন। নাতনীরা এলো। রোদে শুইয়ে হলুদ তেল মাখাই। ছোট্ট ছোট্ট নাক সরু আঙুলে তুলে তুলে উঁচু করি। কী ভালো যে লাগে। সব কিছু কি আর অনায়াসে ভালো হয়? এক সরস্বতী পুজোর দিনে নিমহলুদের তেলে দিঠির শ্রী তুলছি, ছোট্ট মুখখানি, টানা চোখ, ছোট কপাল --হলুদ তেলে দুর্গা ঠাকুরের মাটির মুখের মতো দেখাচ্ছে। আদরে ভেসে যাচ্ছে আমার মন। আর একটু মাখছি। ওমা, মুখ ফুলে উঠেছে, শরীর ফুলে উঠেছে, এলার্জি? আমি তো কেঁদে অস্থির। ডাক্তারবাবু রক্ষা করলেন।

    অতিমারি ক্লিষ্ট শীত ঋতুতে আমার অবাঞ্ছিত, অবারিত অবকাশ। এখন আমাদের বৌমারা নানা যন্ত্র নানা উপকরণ সহজেই সংগ্রহ করে, নানা উত্স থেকে রান্না শেখে, সবচেয়ে বড়কথা উৎসাহ আছে। উৎকৃষ্ট বিরিয়ানি, কেক, পিঠে অবলীলায় করে। ওদের আমলে খেয়ে মেখে ভালোই আছি। বাইরে শীতের হাওয়া, কাঁঠাল গাছ খরখর করে। নারকেল ডালে শনশন। শীতের রোদ লুটিয়ে কাঁদে জানালায়। সঙ্গে থাকে শুধু কবিতাই। কবিতার বই, কবিতার খাতা।  ভাগ্যিস বালিকা বেলায় পরিচয়টা হয়েছিল।

    জীবনের পুরোনো শীতকাল গুলো ডানা মেলে উড়ে গেল। তার সঙ্গে উড়ে গেল টিলার ঢালুতে ঝর্ণার ধারের কমলাকোমল স্বাদু পিকনিকের দিনগুলো। কবিতার আসর। নাটকের রিহার্সাল। খাটে লেপমুড়ি দিয়ে মৃদুস্বরে ঝগড়া।
    এই শীত ঠেলে বারবার হাত পা ছুঁড়ে উঁকি মারে হারানো শীতের মিঠেল মুখ। ছোঁয়াও যায় না।

    ***

    আকাশের প্রণয়বেদনা পৌষের হাওয়ার মতো
    জ্যোত্স্না রাতে ছুঁয়ে আছে বসুমতী তনু।
    অনেক রঙীন ফুলে থরোথরো সমৃদ্ধ বাগান
    জারবেরা পিটুনিয়া ক্রিসেনথিমাম।
    ওপাশে গোলাপ ঢলে, হলুদ গাঁদার ফুলে 
    চটুল বাহার। আকাশের প্রণয়বেদনা ছুঁয়ে আছে
     পৃথিবীকে আজকে চাঁদের রাতে। নিশ্চুপ, নিবিড়।

    কোনো পাখি ডাকেনা এমন রাতে।
    ঘুম উড়ে যায় পরিযায়ী পাখির ডানায় 
    পাঁচিল ঘিরে অনেক কাঁচের খণ্ড গাঁথা আছে 
    দুর্দৈবের মতো তীক্ষ্ণ নখ, দারুণ নিষ্ঠুর।
    সে পাঁচিল না মানি যদি কী পাবো জানিনা।

    ওধারে ফুটপাথ ধরে চলে এসো উল্টোপথে 
    দেখ গায়ে শীত মেখে ভাত খায় বর বৌ 
    আগুনের পাশে ঘুমিয়ে ছেলেটা।
    এখানেও জ্যোত্স্নায় ভেসে আসে অঢেল আদর 
    পৌষের শীতল রাতে পাঁচিল পেরিয়ে নেমে আসে 
    অপ্রার্থিত ওম।

    যদিও গোলাপ নেই, নেই কোন ক্রিসেনথিমাম।
    প্রণয় বেদনা আছে। আরো আছে ধোঁয়া ওঠা ভাত 
    এক থালা ভাতে গরাসে গরাসে অন্নপূর্ণা --দেবতা ।
    ক্ষুধা বিনাশিনী দয়াময়ী দেবতা, সেই শুধু তোমার আমার।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • বাকিসব | ১১ জানুয়ারি ২০২৩ | ৮৬৮ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    উংলি - Malay Roychoudhury
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন