নানা জটিলতায় লেখায় বেশ একটু ফাঁকা তৈরি হইছে। আর আমার প্রিয় স্বদেশ রকেটের গতিতে এর মধ্যে কৃষ্ণগহ্বরে ঝাপ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করে ফেলেছে নিজেকে! বিদ্যুৎ গতিতে এখানে দৃশ্যপট পরিবর্তন হচ্ছে, একটু নজর সরালেই কী থেকে কী হয়ে যাচ্ছে ধরা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। শৃঙ্খলা এখন পর্যন্ত অধরা স্বপ্নের মতোই মনে হচ্ছে দেশে। আমার খালাত ভাই, নিগার সুলতানা জ্যোতির বড় ভাই ভাই সকাল সাতটায় রউনা দিয়েছিল শেরপুর ঢাকার উদ্দেশে, বিকালেও পৌঁছাতে পারে নাই, যেখানে সময় লাগে ৪/৫ ঘণ্টা। কেন এই দীর্ঘ সময় লাগা? তিনি জানালেন অন্তত তিন জায়গায় রাস্তা আটকে দিয়ে দাবি দাওয়া চাচ্ছে কে বা কারা! ফলাফল মহাসড়রে জ্যাম! এমনই অবস্থা দেশের। সব জায়গায় নানান জটিলতা কিন্তু সমাধানের কেউ নাই। ইউনুস সাহেব নীরবতাই হিরণ্ময় মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছেন। এবং তার উপদেষ্টারা অনেকেই এই নীতিতেই আছেন। এই নীতি খারাপ না যদি কথা না বলে কাজ করা হয়। কিন্তু কথাও নাই কাজও নাই তাহলে হচ্ছেটা কী? এক সাংবাদিককে দেখলাম বলছেন উপদেষ্টারা সব হচ্ছে অবসর নেওয়া মানুষ, এরা আগে বাড়িতে ঝিমাত এখন সচিবালয়ে ঝিমায়!
কোথা থেকে শুরু করি? আচ্ছা, ব্যক্তিগত আলাপেই যাই আগে। গতকাল কলেজ স্ট্রিট গিয়েছিলাম। আমার সাথে যে আসছে, যে আসলে ওই এলাকার ছেলে, সম্পদ নাম ওর, ওকে নিয়ে গিয়েছিলাম সেই ভদ্রলোকের সাথে কথা বলায় দেওয়ার জন্য। নানা কথাবার্তা হল। কিন্তু শেরপুরে সম্পদ ওর বাবার সাথে এই ভদ্রলোকের কথা বলায় দিতে পারল না কারণ শেরপুরে বিদ্যুৎ নাই। আর ওদের বাসায় বিদ্যুৎ ছাড়া ইন্টারনেটও নাই। আমি এই ঘটনাটাই ফেসবুকে লিখেছিলাম যে বিদ্যুতের কারণে কথা বলা গেল না। এই একটা লাইন! একজনের দেশানুভুতিতে আঘাত লেগে গেল! আমাকে মেসেঞ্জারের আদার ইনবক্সে সাবধান করে দিলেন আমি যেন এমন কিছু না লেখি, দেশের বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট সব ভালো আছে, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কিছু যেন আমি না লিখি! এই হচ্ছে পরিস্থিতি।
এর মধ্যে খুব করুন কিছু ঘটনা ঘটে গেছে দেশে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় একজন অপ্রকৃতস্থ লোককে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে কিছু ছাত্র! চোর সন্দেহে তারা এই কাজ করেছে। ছেলেটার নাম তোফাজ্জল। ওর সমস্যার শেষ নাই। প্রেম করত, প্রেমিক চলে গেছে ওকে রেখে। ওর মা মারা গেছে, বাবা মারা গেছে, ভাই মারা গেছে। এই দুনিয়ায় ওর কেউই নাই! ওর বড় সমস্যা ওর খুব ক্ষুধা পায়। এখানে সেখানে খাবার চায়া বেড়ায়। হয়ত ক্ষুধার তাড়নায়ই গিয়েছিল হলে। মহান ছাত্ররা চোর ভেবে ইচ্ছামত মেরেছে। এবং তাঁকে আবার ভাত খাইয়েছে। ভাত খাইয়ে আবার পেটানো শুরু করেছে, এবার মেরেই ফেলছে! কতখানি অমানবিক হলে এইটা করা সম্ভব? কিন্তু ওই যে ভাবমূর্তি! ভাবমূর্তির জন্য ঠিকমতো প্রতিবাদও করা হল না! পরে যখন তোফাজ্জলের ভাত খাওয়ার ভিডিও পাওয়া গেল তখন আর কেউ নিজেকে ধরে রাখতে পারে নাই। ছেলেটা আরাম করে ভাত খেয়েছে, খেয়ে বলছে আপনাদের হলের খাবার ভালো আছে। তারপরে তাঁকে পিটে মেরে ফেলল! বেশ কয়েকজনকে ধরা হয়েছে। এরপরে শুরু হয়েছে আরেক খেলা। তাদের পরিচয় এদের বেশির ভাগ গুলাই আগে ছাত্রলীগ করত! ব্যাস, আর কী লাগে? অনেকেই গভীর ষড়যন্ত্র খুঁজে পেয়ে গেল। এদিকে একই দিনে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে তথাকথিত ছাত্ররা। সেই মৃত্যু নিয়ে কোন আলাপ নাই। দেশে এখন আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ মারলে কোন সমস্যা নাই।
কিন্তু এইটা যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে কোনদিকে নিয়ে যাচ্ছে তার কোন চিন্তা কেউ করছে না। তাই হল এরপরে। চট্টগ্রামে, ঠিক চট্টগ্রামে না, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি আদিবাসীদের উপরে নেমে আসছে গজব। কোন এক বাঙালি সেখানে মারা গেছে, কেউ বলছে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায়, কেউ বলছে আদিবাসীরাই মেরে ফেলছে। আদিবাসীরা কেন একজনকে মেরে ফেলবে? জানি না। কিন্তু এরপরে আইন শৃঙ্খলা না থাকলে যা হয় আর কী, তাই হয়েছে খাগড়াছড়ি দিঘীনালা এলাকায়। মানুষকে নির্বিচারে মারা হল, জ্বালিয়ে দেওয়া হল গ্রাম, মৃত্যুর বিভীষিকা নেমে আসছে পাহাড়ে। কে বাঁচাবে কাকে? সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে হল সব। মানুষের তীব্র আতঙ্কের নানা ভিডিও আসা শুরু হল ইন্টারনেটে, এবং এই সরকারও সেই এলাকার নেট বন্ধ করে দিল! কী দারুণ না? সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হচ্ছে আমাদের সংবাদ মাধ্যম এটাকে ঢেকে ঢুকে প্রকাশ্য করল, যেন তেমন কিছুই হয়নি! অথচ পাহাড়িদের অনেকের হিসাব মতে ৩০/৪০ মারা গেছে এক রাতে! কী থেকে কী হচ্ছে দেশে?
এই সব কখন হল? যখন আইন শৃঙ্খলাকে লাইনে আনতে না পেরে সরকার যখন সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার বা বিচারিক ক্ষমতা দিয়েছে তারপরে। তারপরেও এমন কেন হবে? এদিকে বিচারিক ক্ষমতা নিয়েই নানা প্রশ্ন আছে। তার মধ্যে এমন ক্ষমতা থাকার পরেও এই পরিস্থিতি তৈরি হল। আমাদের দেশে এর আগে ২০০২ সালে সেনা বাহিনীকে এমন বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে নামানো হয়েছিল। এক হিসাবে ৪০ জনের মৃত্যু হয় সেই সময়। আর কোন উপায় না থাকলে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয় সেনা বাহিনীকে। একটু চিন্তা করলে দেখা যাবে যে শেখ হাসিনা সরকাররের পতন হয়ে গেছে তবুও সেনাবাহিনীকে এমন ক্ষমতা তারা দেয় নাই। ভালো মন্দ জানি না। দেয় নাই তাই বললাম শুধু। তো এই সেনাবাহিনীর সামনেই পাহাড়ে দোকানপাটে আগুন দেওয়া হল, বাড়িঘর পুড়ে ছাই করে দেওয়া হল। যারা প্রতিবাদ করার চেষ্টা করল তাদেরকে কুকি চিন সহ যত জঙ্গি সংগঠন আছে তাদের সদস্য বলে ট্যাগ করে দেওয়া হয়েছে, ধরে পেটানো হচ্ছে। দেশে আগে থেকেই আদিবাসী বিদ্বেষ ছিল। এইটাকে এখন এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হল যে পার্বত্য চট্টগ্রাম থাকবে না স্বাধীন হয়ে যাবে এমন প্রশ্ন এসে যাচ্ছে সামনে। একটা ছেলে মারা গেছে সে বিপ্লবের সৈন্য ছিল। দেশ পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিল, অথচ সে জানেই না যাদেরকে সাহায্য করছে তারা সুযোগ পাওয়া মাত্র সবার আগে দেশ থেকে আদিবাসীদের নিশ্চিহ্ন করে দিবে। আদিবাসী আবার কী? এই ভূখণ্ডে আদিবাসী বাঙালিই, পাহাড়ি চাকমা, মারবা, বোম, ত্রিপুরা আবার কবে আদিবাসী হল? এই হচ্ছে এই মূর্খদের যুক্তি! এই বিতর্ক বহু বছর ধরে হয়ে আসছে। জিয়াউর রহমান যেদিন গাড়ি ভাড়া করে বাঙালিদের পাহাড়ে বসতি করে দিয়েছিল তখন থেকেই এই বিপদের শুরু। পাহাড়িদের মধ্যে বাঙালিদের বসিয়ে কী সমাধান আশা করেছিলেন একাত্তরের র্যাম্বো জানি না। তবে তা যে কাজ করে নাই এইটা দিনের আলোর মতো সত্য।
এই কয়দিনে এইটাকেই বড় ঘটনা বলা যেত। কিন্তু এরপরেই যা ঘটে গেল বাংলাদেশে যে সব হিসাব নিকাস পরিবর্তন হয়ে গেল। এতদিন ধরে, মানে ১৫/১৬ বছর ধরে অনেক সময়ই শিবিরের নানা কর্মকাণ্ডের কথা বলেছে সরকার, শেখ হাসিনা। সবাই হেসে উড়িয়ে দিয়েছে। আমরা যারা একটু ভিতু তারা বলছি আন্দোলন যে করছে এগুলার পিছনে যে শিবির আছে বুঝতেছ না? কেউ বুঝে নাই। কেউ শোনে নাই। এখন দেখা গেল একটা জ্বালাময়ী ফেসবুক পোস্ট, নিচে লেখা সাদিক কায়েম, সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়! সাদিক কায়েম কে? সমন্বয়কদের মধ্যে অন্যতম প্রধান একজন! এবং এইটা প্রকাশ পাওয়া মাত্র যখন সবাই অবাক হয়ে গেল। সবাই এক সাথে সমস্বরে চিৎকার শুরু করল। আমরা প্রতারণার শিকার হয়েছি বলে বলা শুরু করল তখন শিবিরের একটা পেজ থেকে বলা হল ১৫২ জন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের মধ্যে ১০৮ জনই শিবির ছিলো! হইল না কাম? এইটাই তো বলে বলে শেখ হাসিনা গদি ছেড়ে পালিয়ে গেলেন! এই হিসাব সত্য হলে কোটা আন্দোলন আসলে কোটা আন্দোলন কোনদিনই ছিল না। এইটা শুরু থেকেই সরকার পতন আন্দোলন ছিল। যে ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন অনেক তাত্ত্বিক তারা এবার আবার একটু মাথা চুলকে বসতে পারেন চিন্তা করতে যে কী থেকে কী হল। আর এইটা আমি প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম। বলছিলাম এইটা কীভাবে এত বড় আন্দোলনের ইস্যু হয়? এই পলকা ইস্যুকেই এরা টেনে নিয়ে গেছে, কারণ দরকার ছিল তাদের। এই লাইনে চিন্তা করলেই দেখবেন ৭.৬২ বুলেটের হিসাব মিলবে, আবু সাইদের মৃত্যুর হিসাব মিলবে। এদিকে এই সভাপতির সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য মিটিং করেছে! এখন অনেকেই বলছে জাফর ইকবাল মিথ্যা বলে নাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা মিছিল করেছে আমি রাজাকার বলে তারা আসলেই রাজাকার ছিল! যে ছাগলেরা তাঁর বই বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিল তারা মাফ চাইবে এবার? যারা আগুনে পুড়তে দিতে চাচ্ছিল উনার বই তারা কান ধরবে?
আবু সাইদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বের হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে সে পুলিশের রাবার বুলেটের আঘাতে মারা যায়নি, মাথায় আঘাত লাগায় মারা যায় সে। মাথায় আঘাত কখন লাগল? সবাই যে ভিডিও দেখে শিউরে উঠল, দুই হাত তুলে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি আর পুলিশ গুলি করল, তিনি পরে গেলেন। এখন দেখা যাচ্ছে ওইটা তার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার ভিডিও না। তিনি পরে মারা গেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে কে তার মাথায় আঘাত করে মারল? অনেক প্রশ্নের মতো এইটারও হয়ত কোনদিন উত্তর পাওয়া হবে না আমাদের।
বিপদ এখানেই শেষ না। শাহবাগ মোড়, যা কিংবদন্তি হয়ে গেছে গণজাগরণ আন্দোলনের জন্য। যে অবস্থানের বিপরীতে হেফাজত অবস্থান নিয়েছিল মতিঝিলে। সেই হেফাজত এবার শাহবাগে বিশাল জনসভা করেছে। মামুনুল হক অগ্নিঝরা বক্তব্য দিয়েছেন সেখানে দাঁড়িয়ে! আহারে প্রহসন! শাহবাগে দাঁড়িয়ে মামুনুল হক সরকারকে হুমকি দিচ্ছে! এদিকে আর্মিতে হিজাব পরার অনুমতি দিয়েছে সেনাবাহিনী!
ফাইন! বেঁচে থাক শরিফ, বহু কিছু দেখার বাকি তোর!
শিবির, হেফাজত আর কয়দিন আগে হিজবুত তাহরীরের আস্ফালন! সব কট্টর ইসলামিক দল গুলোর উত্থান হচ্ছে। কে দেখবে কে ফেরাবে? সব নিশ্চুপ। বা এইটাই হয়ত বৃহৎ পরিকল্পনা! পাবনায় একটা স্কুলের ভিডিও দেখলাম, ক্লাসে শিবিরের ভর্তি ফরম পূরণ করাচ্ছে! আরও গভীরে যাবে ওরা। শিবির কী জিনিস এবার বুঝবে বাংলাদেশ। এদিকে দুর্গা পূজাও দোরগোড়ায়, জামাত না কি এবার মণ্ডপ পাহারা দিবে! যখন পাহারার প্রশ্ন আসে তখনই তো বুঝা যায় কিছুই আসলে ঠিক নাই! এর মধ্যেই খুলনায় বিভিন্ন মন্দিরে কে বা কারা চিঠি দিয়েছে ঠিকঠাক পূজা করতে চাইলে পাঁচ লাখ করে চাঁদা দিতে হবে! আমি বুঝলাম না এই চিঠি প্রকাশ করল কে? তিনি বেশ ভালো সাহস দেখিয়েছেন বলতে হবে। আমাদের শেরপুর হলে সবার আগে টাকা দিয়ে বসে থাকত সবাই!
অন্য হিসাব আলাদা। কিন্তু শিবিরের এই উত্থানের পিছনে আওয়ামীলীগের ব্যর্থতাকে দায়ী করতেই হবে। তারা শিবিরকে সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দিনের পর দিন নানা অছিলায় শিবির শব্দটাকে ব্যবহার করেছে। যখন প্রকৃত অর্থেই শিবির ষড়যন্ত্র করে সরকার ফেলে দেওয়ার মতো করে ফেলল তখন কেউ বিশ্বাস করল না। শিবিরকে কি প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে দিলে ভালো হত? তাহলে অন্তত এমন হুট করেই পিছন থেকে আঘাতটা করতে পারত না। কিংবা ১৩ সালেই যদি নিষিদ্ধ করত? পাকাপাকি ভাবে, কঠিন করে নিষিদ্ধ? জানি না কোনটা সঠিক। তবে তলে তলে তারা যে এমন করে গুছিয়ে নিয়ে বসে গেল এবং ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগ এর কিছুই বুঝতে পারল না এইটা চরম ব্যর্থতা।
ইলিশ রাজনীতি চরম ভাবে ধরা খেল। ফেসবুকিয় জনতাকে খুশি করতে সরকার ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হবে না এমন একটা সম্পূর্ণ অহেতুক একটা ঘোষণা দিল। মৎস্য উপদেষ্টা বেশ বড় গলায় বললেন দেশের মানুষ ইলিশ খাওয়ার পরে যদি রপ্তানির মতো থাকে তাহলে রপ্তানি হবে না হলে হবে না। এর অনেক আগের একটা ভিডিও দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। যেখানে আরেক সুপার স্টার উপদেষ্টা যখন উপদেষ্টা ছিলেন না তখন আওয়ামীলীগকে ধুইয়ে দিচ্ছিলেন কেন ৫০০ টন ইলিশ ভারতে দেওয়া হচ্ছে! আসিফ নজরুলের কথা যারা শুনেছেন তারা জানেন যে তিনি যখন বলেন তখন এমন ভাবে বলেন যে সব সত্য বলছেন! সে কি তার আহাজারি! দেশের মানুষ ইলিশ খেতে পারে না আর ৫০০ টন ইলিশ ভারতে পাঠাচ্ছে সরকার বলে প্রায় কেঁদে দেন! তিনি এমন করেই ২৬ লক্ষ ভারতীয় বাংলাদেশে চাকরি করেন বলে ছিলেন। এই ভণ্ডকে নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা আছে, আপাতত কথা হচ্ছে এমন সব ভারত বিরোধী কথা বলা লোকজন এখন ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন! কোথা থেকে কী হল? কেউ জানেন না। অনেকেই মনে করছেন মোদীকে ম্যানেজ করতে না পেরে মমতাকে ইলিশ দিয়ে নিজেদের পক্ষে আনার চেষ্টা হয়ত এই ইলিশ বাণিজ্যের মূল কারণ।
ছাত্রদের নানান জায়গায় খবরদারি করতে গিয়ে পালিয়ে আসার ঘটনা ঘটে গেছে বেশ কয়েকটা। আবার উল্টোও আছে। সিলেটে শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য, শিক্ষকদের শপথ পাঠ করাতে দেখা গেছে! মানে যা ইচ্ছা তাই আর কি! অবশ্য এদের বয়সটা চিন্তা করেন। অফুরন্ত ক্ষমতা পেলে এই বয়সে কারও মাথা ঠিক থাকে? বিশাল এই সংখ্যাটা যারা আন্দোলন করেছে তারা এই বয়সই সবাই। এরা ফ্যান্টাসিতে ভুগে বেশির ভাগ সময়। যখন ডিবি অফিসে ছয়জন ছাত্র সমন্বয়ককে ধরে নিয়ে যাওয়া হল। তখন তারা টেলিভিশনে আন্দোলন প্রত্যাহারের যে ঘোষণা পাঠ করে সেখানে এই ফ্যান্টাসিতে ভুগা পুলাপান মোর্স কোড খুঁজে পেল! তারা না কি পা নাচিয়ে, আঙ্গুল দিয়ে কী কী কোড দিয়েছে! এইটা নিয়া তখন সেই হুলুস্থুল! আমি এই বয়সই একজনকেও পাই নাই যে বিশ্বাস করছে আমার কথা। আমি যত বলছি যে এগুলা তোদের অতি কল্পনা, ওরা তত আমাকে নিয়ে মজা নিয়েছে। তুমি এই বেসিক কোড গুলা জানো না? এগুলা আমরা সবাই জানি! চিন্তা করেন একবার! তো এমন ফ্যান্টাসিতে ভুগা প্রজন্ম এখন দেশ চালাইতে চায়। তারা কী করবে? এই যে যা হচ্ছে! ত্রাণের টাকার হিসাব নাই, জিজ্ঞাস করলে বলে একাউন্টে আছ! এদিকে ফেনি কুমিল্লার মানুষ বন্যা শেষে জীবন নিয়া টানাহেঁচড়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে আর তারা ত্রাণের টাকা একাউন্টে রেখে দেশ ব্যাপী সফরে বের হয়েছেন! টিএসসিতে মানুষের দান করা শত শত জিনিস পড়ে রয়েছে, এগুলাকে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে কারও কোন ভাবনা নাই। ওই যে ফ্যান্টাসিতে ভুগছে! আরে আমরাই আইন, আমরা যা বলব তাই হবে। আমাদেরকে প্রশ্ন করে কে?
দেশ জুড়ে নানা জায়গায় অস্থিরতা। কে যে কী চালাচ্ছে তার কোন হিসাব নিকাশ নাই। এমন কি সরকার যে কে চালাচ্ছে তারও কোন সঠিক উত্তর নাই। গার্মেন্টস জুড়ে চলছে নানা আন্দোলন। রাস্তাঘাটে আন্দোলন। লুটপাট, চাঁদাবাজি সব চলছে এক যোগে। একটা বোতলে বেশ কিছু দৈত্য দানো, ভূতকে বন্দি করে রেখেছিলেন শেখ হাসিনা, বন্দি করেই দেশ চালিয়েছেন। একে অনেকেই অনেক নাম দিয়েছিল। এখন তিনি নাই, সব ভূত এখন মুক্ত, আর চারদিকে চলছে ভূতের নৃত্য! আমরা সবাই পিশাচ নৃত্য দেখে চলছি।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।