এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • জীবনঝিনুক 

    শ্রীমল্লার বলছি লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৫ নভেম্বর ২০২৫ | ১৬ বার পঠিত
  • “তারাজ্বরে যাদের মর্মখেয়াল আসে, তাদের হঠাৎদোলায় বসন্ত আবির্ভাব। জিভলাজুক ঢেলে শেখাতে শেখাতে তবুও মাঝজীবন; আর তারই সঙ্গে দ্যোতনাশিশুর বিচ্ছেদ? ভাল লাগে এইদৌড়? নিশ্চই নয়। সহসাহিড়িক শুনলে আবার ঝামেলাতোল্লাই নিভতে জানে। সেইদিক থেকে নিয়তিফড়িং অবিচ্ছেদ্য কারণক্ষীর। ভেবে দ্যাখো, একটিমন ভেবে দ্যাখো— নষ্টকোকিল জলদিতোড়ে কোথায় কোথায় ঘাড়উপমা লিখেছে সেসব তো প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জানেই না। বিশালজননী শাড়ির আঁচল দিয়ে দোকানবস্তি লাগাতে সমর্থ হয়নি। সেও নালিশখামের অজুহাতঘোর। চারযৌন আত্মাসংলাপ এখানেও অহেতুক বিরক্তিচড়; ঘটনা বানালে রোদচশমা হোঁচটে বাড়িআশঙ্কায় আগমনগণিত। তাইজন্য নইলেদূষণ, বিরহঝাল, কেতকীশালিখ, শিক্ষণীয়পুঁজি, হাওয়াচন্দ্র, নাড়ুমিইয়ে এদের চারপাশে আশপাশে চলাচল। মাথাসোহাগের সত্যিবন্ধু আহ্বান কখনও কখনও একশোনা, কখনও দুইশোনা, কখনও দোষভৌত! অথচ ধনাত্মকলিখন বড্ড চাতুর্যের ঋণাত্মকে হাস্যউড়িং চেতনাবালিশ...”
    মুহূর্তের এইধরন এইবলা অপেক্ষার বুঝতে সময় কখনও লাগেনি, লাগেও না। কিন্তু হয় কী, একটানা অন্যব্যাখ্যা শোনার পরে নিজে থেকে কিছুই বলতে পারে না অপেক্ষা। মুহূর্ত বলতে শুরু করে আবার, “উপন্যাসটা এইভাবে শুরু করছি। যা তোমাকে প’ড়ে শোনালাম। ভাষা মানছে না, ব্যাকরণ মানছে না আবারকী, চলার গতিও! আর এই উপন্যাস আমি ‘লেখার চেষ্টা’ করছি না। লিখছি। স্রোতের মতোই আসছে। আমাকে বাড়তি কোনও চেষ্টা করার প্রয়োজন পড়ছেই না। এই স্রোত যদিও মারাত্মক। মারাত্মক এই কারণেই, রাতে ঘুমে স্বপ্নের মধ্যেও এই উপন্যাস লিখে চলেছি আমি। সকালে উঠে আর স্বপ্ন মনে থাকছে না। তাই হারিয়ে ফেলছি যা লিখেছিলাম।”
    অপেক্ষা বলতে শুরু করল, “তবে এই উপন্যাসের শেষ নেই? যা বলছ, তাতে বোঝা যাচ্ছে, এই শুরুটা আসলে থেকে যাওয়ার লক্ষণ। কিন্তু তোমাকে এই উপন্যাস দৌড় করাবে যেখানে সেখানে যখন তখন তোমাকে। যা তুমি নিজেই বললে।”
    “উপন্যাসের স্বভাব আর উপন্যাসের অভাব— দুটোই ভাবায় আমাকে...” বলল মুহূর্ত
    “বাহ্! নাহ্ ‘বাহ্’ নয় ‘বেশ’! বেশ বললে কিন্তু ” অপেক্ষা না হেসে না বাড়িয়ে এমন বলল মুহূর্তকে।
    “যেমনখুশি ভাবো, আমি ভাবছি অন্যকিছু...” মুহূর্তের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
    “কী সেই ‘অন্যকিছু’? 
    “এই উপন্যাসের পিঠে... না পিঠে নয়, গলার কাছে একটা কামড়ের দাগ আছে। দূর থেকে দেখে রঙিন লাগলেও কাছে এলেই শোকের আবহ তৈরি হ’য়ে ওঠে।” মুহূর্ত আদর দিয়ে বলল এই কথাগুলো।
    “তুমি কখনও এই উপন্যাসের খুব কাছে গিয়েছ? আর তাছাড়া, শোকের আবহ কেন তৈরি হয়?” অপেক্ষা কৌতূহলের সঙ্গেই এই প্রশ্নটা রাখল মুহূর্তের কাছে। এবং একটা মনের মতো উত্তর আশা করল। 
    মুহূর্ত অপেক্ষার মনের কথা বুঝতে পেরেই বলল, “তোমার মনের মতো কোনও জবাব আমার কাছে নেই। এর মধ্যে অন্য একটা কথা অন্য একটা দিক বলি তোমায়, উপন্যাস আমাকে দেখলে যেমন লাফিয়ে পালায়, পালাতে শুরু করে তেমনই আমিও উপন্যাসকে দেখলে শৈশবের টুকরো ছবিদের, গুঁড়ো হ’য়ে যাওয়া সময়কে এক জায়গায় জড়ো করি।”
    “তুমি আর নিজের মধ্যে নেই। এই সময় ছাড়িয়ে এমন কোথাও তুমি নিজেকে নিয়ে উঠেছ, যেখানে সাধনা ছাড়া পৌঁছনো যায় না। যায় না।”
    অপেক্ষার এই কথার উত্তরে মুহূর্ত বলল, “সাধনা। সাধনাকে তো আমি উঠতে বসতে খেতে শুতে বহন ক’রে নিয়ে বেরিয়েছি, বেরোচ্ছিও! আমরা অভিন্ন, আমরা ব্যাখ্যাতীত... ব্যাখ্যাতীত!” এই ব’লে মুহূর্ত ফোন ছেড়ে দিল। কথা আপাতত শেষ। 
     
     
     
    (ক্রমশ) 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন