এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হেদুয়ার ধারে - ৬৪ 

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৫৪৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • | | | | | ৬  | ৭  | ৮  | ৯  | ১০  | ১১  | ১২  | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬  | ১৭  | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২  | ২৩  | ২৪  | ২৫  | ২৬ | ২৭ | ২৮  | ২৯  | ৩০ | ৩১  | ৩২  | ৩৩  | ৩৪ | ৩৫ | ৩৬  | ৩৭  | ৩৮  | ৩৯  | ৪০  | ৪২  | ৪৩  | ৪৪  | ৪৫  | ৪৬ | ৪৭  | ৪৮  | ৪৯  | ৫০  | ৫১  | ৫২ | ৫৩ | ৫৪ | ৫৫ | ৫৬ | ৫৭ | ৫৮ | ৫৯ | ৬০ | ৬১ | ৬২ | ৬৩ | ৬৪ | ৬৫ | ৬৬ | ৬৭ | ৬৮ | ৬৯ | ৭০ | ৭১ | ৭২ | ৭৩ | ৭৪ | ৭৫ | ৭৬ | ৭৭ | ৭৮ | ৭৯ | ৮০ | ৮১ | ৮২ | ৮৩ | ৮৪ | ৮৫ | ৮৬ | ৮৭ | ৮৮ | ৮৯ | ৯০ | ৯১ | ৯২ | ৯৩ | ৯৪ | ৯৫ | ৯৬ | ৯৭ | ৯৮ | ৯৯ | ১০০ | ১০১ | ১০২ | ১০৩ | ১০৫ | ১০৬ | ১০৭ | ১০৮ | ১০৯ | ১১০ | ১১২ | ১১৩ | ১১৪ | ১১৫ | ১১৬ | ১১৭ | ১১৮ | ১১৯ | ১২০ | ১২১ | ১২২ | ১২৩ | ১২৪ | ১২৫ | ১২৬ | ১২৭ | ১২৮ | ১২৯ | ১৩০ | ১৩১ | ১৩২ | ১৩৩ | ১৩৪ | ১৩৫ | ১৩৬ | ১৩৭ | ১৩৮ | ১৩৯ | ১৪০ | ১৪১ | ১৪২ | ১৪৩ | ১৪৪ | ১৪৫ | ১৪৬ | ১৪৭ | ১৪৮ | ১৫০ | ১৫১ | ১৫২ | ১৫৩ | ১৫৪ | ১৫৫ | ১৫৬ | ১৫৭ | ১৫৮ | ১৫৯ | ১৬০ | ১৬২ | ১৬৩ | ১৬৪ | ১৬৫ | ১৬৬ | ১৬৭
    বিভূতিবাবু কিন্তু শ্যামবাজারের মেসে দীনবন্ধুর জায়গা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন। ওখানে তার যাতায়াত অনেকদিনের। ধীরেন চন্দ্র নামে তার এক পুরনো বন্ধু এখানে থাকত স্বাধীনতার বছর চারেক আগে থেকে। সেই ডিসেম্বর মাসে যখন জাপানীরা বোমা ফেলল কলকাতায় ধীরেন তখন প্রাণের ভয়ে তার গ্রামের বাড়িতে পালিয়ে গেল। সারা পৃথিবী তখন যুদ্ধে ভেসে যাচ্ছে। ফিরে এসেছিল সাত আট মাস বাদে অবস্থা একটু ঠান্ডা হলে। ততদিন হাড়মাস এক করে সাতক্ষীরে থেকে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করত। ফিরে আসার পর সিট পেতে অসুবিধে হয়নি, কারণ মেস তখনও খালি যাচ্ছিল। জাপানী বোমার ভয়ে যারা কলকাতা থেকে পালিয়ে গিয়েছিল তারা বেশির ভাগই তখনও ফিরে আসেনি।

    সে যাই হোক, ওই ধীরেনবাবুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে অমিয়বাবুর বাজারের ওপরের মেসে বিভূতিবাবুর যাতায়াত অনেক বছর ধরে, যুদ্ধের আগেও, পরেও। ওখানে অনেকের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল তার। বেশির ভাগই আর নেই। রাধামাধব, গগন, সুধীর এরা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। ধীরেন তারই বয়সী। বেঁচে আছে। ভাল আছে। কবেই রিটায়ার করে গেছে, কিন্তু মেসবাড়ির মায়া এখনও কাটাতে পারেনি। নৈহাটি থেকে মাঝেমাঝেই মেসে আসে রবিবার করে প্রভাত, দীনেশ, নিখিলদের সঙ্গে তাস খেলতে, পলিটিক্স নিয়ে আলোচনা করতে। এই ধীরেন মুখার্জীই বলতে গেলে দীনবন্ধুর সিট পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন।

    দীনবন্ধুর শ্যামবাজারের মেসে বসবাস শুরু হল এবং এখান থেকেই অফিস করতে লাগল।
    বর্তমানে মেসের প্রবীনতম ব্যক্তি রমাকান্ত মাইতির সঙ্গে তার এক ঘরে জায়গা হল। তিনি 'সুস্বাগতম' বলে দীনুকে শুরুতেই আপন করে নিলেন। দিন তিনেক পরে বুঝতে পারল, ভদ্রলোকের সবকিছুই ভাল, শুধু কৌতূহলটা একটু বেশি। অল্প আলাপেই কারও ব্যক্তিগত জীবনের হাড়ির খবর বার করে আনার একটা প্রবণতা লক্ষ করল দীনবন্ধু। গোয়েন্দাদের কায়দায় এটা ওটার খোঁজ নিতে নিতে দীনবন্ধুর জীবনের অ আ ক খ সবই জেনে নিলেন মাইতিবাবু। তিনি এমনভাবে প্রশ্নগুলো করেন যে একেবারে দুর্বিনীত লোক ছাড়া কেউ যথাযথ উত্তর না দিয়ে থাকতে পারবে না। দীনবন্ধুর কাছ থেকেও টুক টুক করে সবই জেনে নিলেন। এমনকি তার চাকরির বেতন কাঠামো সম্বন্ধেও একটা আন্দাজ নিয়ে নিলেন।
    এই নাক গলানোর স্বভাবটুকু বাদ দিলে মাইতিবাবুকে বেশ পছন্দ হল দীনবন্ধুর। তিনি বললেন, ' এখানে কোনরকম অসুবিধে হলে বোল ... কোন দ্বিধা কোর না ... প্রথম এক মাস তুমি আমাদের গেস্ট ... ওই হংস মধ্যে বক যথা ... তারপর সে যা হবে দেখা যাবে'খন ... হ্যাঃ ... একটু মানিয়ে নিতে হবে আর কি ... '
    রাস্তার ধারে সরু লম্বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে লোকজন দেখতে বেশ লাগে। কি প্রাণচঞ্চল জায়গা এই শ্যামবাজারের মোড়।
    ওই বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাল রাত্তিরে মাইতিবাবু বললেন, ' হ্যাঁ শোন প্রভাত ... এই দিলীপ ... বলছি যে আমাদের এখানে তো নতুন অতিথি এসেছে। তা'লে আমাদের যেটা হয় সেটা এই রবিবারে .... '
    প্রভাত মৈত্র এক পায়ে খাড়া। তিনি বললেন, ' হোক হোক ... মাংসভাত হোক ... বলেন তো আমি বউবাজার থেকে রেওয়াজি খাসি নিয়ে আসতে পারি। সবাই পাঁচ টাকা করে দিলেই হয়ে যাবে ... '
    ----- ' না না বউবাজারে যাওয়ার দরকার নেই। এখানেই রেওয়াজি পাওয়া যাবে ... বলেন তো আমি নিয়ে আসতে পারি ... ' দিলীপ সাঁতরা বললেন।
    আজ বৃহস্পতিবার থেকেই রবিবারে মাংসভাত খাওয়ার জন্য সাজো সাজো রব পড়ে গেল।
    টুকটাক লাগানি ভাঙানি, অস্থায়ী বিবাদ এবং মনোমালিন্য থাকলেও সদস্যদের মধ্যে ভালবাসার টান আছে। সকলেই সকলের সুখ দুঃখের খবর রাখে। শুধু পরামর্শ দিয়েই ক্ষান্ত থাকে না। পাশে গিয়ে দাঁড়ায় যথাসাধ্য। শুধু মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গলের খেলার দিন ছাড়া। তেরো জনের সদস্যকূল সেদিন দুভাগে বিভক্ত। অতিরিক্ত উত্তেজনায় সেদিন সাময়িকভাবে মাথার ঠিক থাকে না কারও। এই ক্ষণস্থায়ী উন্মাদনার বশবর্তী হয়ে অনেকেরই মতিভ্রম হয়। পরস্পরকে খিস্তি খেউড়ও করে। এর ব্যতিক্রম শুধু একজন, রমাকান্ত মাইতি। এইসব অদ্ভুত হিস্টিরিয়ার প্রভাব থেকে তিনি মুক্ত। খেলা টেলার ব্যাপারে তার আদৌ কোন মানসিক সংযোগ নেই। এ ব্যাপারে সম্প্রতি তার একজন দোসর জুটল। সে হল, দীনবন্ধু। মেসের কাহিনী অতি বিচিত্র। আবার নয় পরে বলা যাবে।

    বাসন্তীদেবীর অস্থিরতা প্রশমিত করার জন্য কানাই সিকদার আবার বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে এসেছে। দুপুর বারোটা বাজে। বাসন্তী রেডিও খুলে রেডিও সিলোনে বোম্বাই ফিল্মের গান শুনছিলেন। আশা ভোঁসলের যব চলি ঠান্ডি হাওয়ার পর সুরাইয়ার ধড়কতে দিল কি তামান্না হচ্ছিল। তিনি চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে বেশ আয়েশ করে শুনছিলেন। এই সময়ে কানাই এসে হাজির হল।
    ------ ' এস কানাই... কি খবর? '
    ----- ' এই এলাম ... ভাল সম্বন্ধ এনেছি মেজদি .... যেমন ছেলে তেমন ফ্যামিলি ... '
    ------ ' কিরকম? '
    বাসন্তী রেডিওর আওয়াজ কমিয়ে দিলেন।
    ----- ' ছেলে ডাক্তার। বাবাও ডাক্তার। মল্লিকবাজারে তিনতলা বাড়ি। বিশাল অবস্থা। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বিদেশে থাকে। কি বলব ... চন্দনার জন্যে একেবারে উপযুক্ত পাত্র ... যদি চার হাত এক করে দেওয়া যায় তার চেয়ে ভাল আর কিছু হয় না ... বুঝলেন কিনা ... '
    ------ ' হুমম্ ... চার হাত কি আর অত সহজে এক হয় কানাই ... কথায় বলে হাজার কথা না হলে বিয়ে হয় না। তাছাড়া আমার মেয়ের যা গোঁ ... অতিরিক্ত স্বাধীনতা দিলে যা হয় ... তোমার জামাইবাবুর আস্কারা... আর কি? '
    ----- ' কেন ... সামনের মাসে তো চন্দনার বি এস সি পরীক্ষা শেষ হয়ে যাচ্ছে। সে তো বলেনি যে বিয়েই করবে না। দেখাদেখি না হয় এক মাস পরেই হবে। তবে কথাবার্তা বলে রাখতে হবে, নইলে এমন সোনার সম্বন্ধ ফস্কে যেতে পারে ... '
    ----- ' কথাবার্তা কাকে বলতে হবে? '
    ----- ' আমি জানিয়ে রাখতে পারি, তবে কথা তো তোমাদেরই বলতে হবে ... ' কানাই জানায়।
    ----- ' হ্যাঁ, সে তো বটেই... দেখি ওনার সঙ্গে কথা বলে। তুমি কাল পরশুর মধ্যে একবার খবর নিও ... '
    ------ ' চন্দনাকেও একটু বাজিয়ে দেখে নিও ... '
    ------ ' হুঁ হুঁ ... আরও বেশি চিন্তা তো ফুচাকে নিয়ে ... ওঃ, ভেবে ভেবে আর পারি না .... '
    ----- ' সুমনার কথা এখন ভেবে কি হবে ... এর পরে তো বন্দনা আছে .... '
    বাসন্তীদেবী উঠে গিয়ে রেডিওর ভলিউম বাড়িয়ে দিলেন। দীনবন্ধুর বাকি কথাগুলো মহম্মদ রফির গলার আড়ালে চাপা পড়ে গেল।

    সাগর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছে পতিতপাবন, বংশীলাল আর কান্তি সিং -এর মধ্যে কোন যোগাযোগ নেই। খানিকটা নিশ্চিন্ত হল।
    সে সন্ধেবেলায় সিদ্ধেশ্বর হার্ডওয়্যারে বসেছিল। কানু এসে গেল একটু পরে। তার সঙ্গে একজন পঞ্চাশ বাহান্ন বছরের নীরিহদর্শন ভদ্রলোক।
    কানু বলল, ' সাগরদা ... এই ভদ্রলোক আমার কাছে এসেছিল ... '
    ----- ' কেন? '
    কানু বলল, ' বলুন না ... বলুন না ... '
    ভদ্রলোক দুহাত জড়ো করে বিনীতভাবে বললেন, ' নমস্কার ... '
    সাগরও কপালে হাত ঠেকাল।
    ----- ' আজ্ঞে আমার নাম বিমল চক্রবর্তী। হেদুয়ার পেছনে ডাফ স্ট্রিটে সেন্ট মার্গারেট স্কুলের পাশে আমার বাড়ি। সেন্ট মার্গারেট হল উনিশ নম্বর আর আমার বাড়ি ... '
    ----- ' ওসব পরে শুনব। কি সমস্যা হয়েছে বলুন ...'
    ----- ' আমার বাড়ির একদিকের পাঁচিল নিয়ে গন্ডগোল। সেটা অচেনা কিছু লোক এসে ভাঙতে লেগেছে। আমি গিয়ে প্রতিবাদ করায় বলে ওটা নাকি তাদের পাঁচিল। তারা নাকি পাঁচিল ভেঙে ওখানে কি সব করবে। আমি দলিল বার করে ওদের বোঝানোর চেষ্টা করি যে এটা আমারই ওয়াল এবং পঞ্চাশ বছরের পুরনো। তারা বলল, আমরা ওসব বুঝি না .... আপনি তা'লে থানায় গিয়ে কথা বলুন ... দেখি আপনার এলেম। আমাদের যা করতে বলা হয়েছে আমরা তাই করছি ... মালিকের হুকুম তামিল করাই আমাদের কাজ। মাথায় ঢুকেছে? আমি বললাম, কে আপনাদের মালিক? ওদের মধ্যে একজন বলল ...'
    ------ ' কি ... কি বলল? '
    ------ ' বলল, বংশীলাল রায়। আমি ওই নামে কাউকে চিনি না .... সে কেমন লোক তাই বা কে জানে ... '
    সাগর চমকে উঠল নামটা শুনে।
    বলল, ' আপনি থানায় গিয়েছিলেন? '
    ------ ' না ... আমি ছাপোষা লোক দাদাভাই ... ওসব থানা পুলিশ ... ভীষণ ভয় করে ...'
    ----- ' তারপর শেষ পর্যন্ত কি হল? '
    ----- 'ওদের আমি বললাম, আমাকে দয়া করে একটা দিন সময় দিন ... আমি আপনাদের মালিকের সঙ্গে কথা বলি ... '
    শুনে ওই লোকটার বোধহয় একটু দয়া হল। সে বলল, ঠিক আছে। আপনি আজকের মধ্যে কথা বলে ফয়সালা করে নিন। কিন্তু এই একদিনের মধ্যেই করতে হবে। তার বেশি সময় দিতে পারব না। নাহলে কালকে আবার ... হয়ত আপনার পেছন দিকের ঘরটাও ভাঙা পড়তে পারে। মালিকের কাছে সব কাগজপত্র আছে।
    আমি বললাম, তেনাকে কোথায় পাব দাদা? লোকটা বলল, অত বলতে পারব না ... চালতাবাগান লোহাপট্টিতে গিয়ে খুঁজে বার করুন। তাড়াতাড়ি করুন কিন্তু .... টাইম শর্ট ... চললাম ... আবার দেখা হবে ... '
    সাগর বলল, 'আপনি বংশীলালের দেখা পেলেন?'
    ----- ' না না ... আমি লোহাপট্টিতে গিয়ে তার দুটো দোকান খুঁজে পেয়েছিলাম, কি যেন নাম ... '
    ------ ' সুমঙ্গল আর দীপ্তি। '
    ----- ' হ্যাঁ হ্যাঁ ... ঠিক ঠিক, আপনি সবই জানেন দেখছি। ওখানেই গিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে যারা ছিল তারা আমাকে এড়িয়ে গেল। তাদের মালিকের কোন হদিশ দিতে পারল না, বা ইচ্ছে করেই দিল না বারবার রিকোয়েস্ট করা সত্ত্বেও। হয়ত মালিকের হুকুম নেই ... আমি বাড়ি ফিরে এলাম। ভয়ে আমার বুক কাঁপছে। খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। কাল সকালে ওরা যদি আবার আসে আমি কি করব সেই চিন্তায় আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমার ছেলেমেয়ে এখনও উপযুক্ত হয়নি। তারাও ভীষণ টেনশনে আছে ... মুখ দেখেই বুঝতে পারছি। এমন সময়ে যখন বিবেকানন্দ রোড দিয়ে নানা চিন্তা করতে করতে আসছি তখন ওয়াই এম সি ডব্লু -র সামনে কানুবাবুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। উনি আমাকে চেনেন না, কিন্তু আমি ওনাকে চিনি অনেকদিন ধরেই। আমি মরীয়া হয়ে ওনার সঙ্গে আলাপ করে হাঁফাতে হাঁফাতে কোনরকমে আমার সমস্যাটা বললাম ... আমি আশা করিনি উনি আপনার সঙ্গে দেখা করিয়ে দিতে রাজি হয়ে যাবেন ... বড় উপকার করলেন ... মানে, আজ রাতটাই শুধু সময় আছে ... বুঝতেই পারছেন ... ছাপোষা লোক আমি ...' এইরকম অসংলগ্নভাবে বিমলবাবু সম্পূর্ণ ঘটনাক্রম বিবৃত করলেন।
    ----- ' আপনার বাড়ি এবং জমির দলিল ঠিকঠাক আছে তো? '
    ----- ' একদম একদম ... এই যে আমি সব নিয়ে এসেছি ... দেখে নিতে পারেন ... '
    ------ ' না না .... আমাকে দেখাতে হবে না। আমি ওসব বুঝি না। গুছিয়ে আপনার কাছে রেখে দিন। হয়ত কাজে লাগতে পারে। যাক, অত চিন্তা করবেন না ... এখন বাড়ি চলে যান ... '
    ------ ' চলে যাব ! কিন্তু কাল সকালেই তো আবার আসবে ওরা ... '
    ------ ' আহা ... ভয় পাচ্ছেন কেন? আসতে দিন না। আমিও তো সকাল সকালই ডাফ স্ট্রিটে থাকব। সামনা সামনি কথাবার্তা হবে। ভালই তো ... '
    কৃতজ্ঞতার প্রবল আবেগে বিমলবাবুর গলা বুজে গেল। তিনি কোন কথা বলতে পারলেন না। শুধু তাকিয়ে রইলেন।

    ( চলবে )

    ********************************************
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | | | ৬  | ৭  | ৮  | ৯  | ১০  | ১১  | ১২  | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬  | ১৭  | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২  | ২৩  | ২৪  | ২৫  | ২৬ | ২৭ | ২৮  | ২৯  | ৩০ | ৩১  | ৩২  | ৩৩  | ৩৪ | ৩৫ | ৩৬  | ৩৭  | ৩৮  | ৩৯  | ৪০  | ৪২  | ৪৩  | ৪৪  | ৪৫  | ৪৬ | ৪৭  | ৪৮  | ৪৯  | ৫০  | ৫১  | ৫২ | ৫৩ | ৫৪ | ৫৫ | ৫৬ | ৫৭ | ৫৮ | ৫৯ | ৬০ | ৬১ | ৬২ | ৬৩ | ৬৪ | ৬৫ | ৬৬ | ৬৭ | ৬৮ | ৬৯ | ৭০ | ৭১ | ৭২ | ৭৩ | ৭৪ | ৭৫ | ৭৬ | ৭৭ | ৭৮ | ৭৯ | ৮০ | ৮১ | ৮২ | ৮৩ | ৮৪ | ৮৫ | ৮৬ | ৮৭ | ৮৮ | ৮৯ | ৯০ | ৯১ | ৯২ | ৯৩ | ৯৪ | ৯৫ | ৯৬ | ৯৭ | ৯৮ | ৯৯ | ১০০ | ১০১ | ১০২ | ১০৩ | ১০৫ | ১০৬ | ১০৭ | ১০৮ | ১০৯ | ১১০ | ১১২ | ১১৩ | ১১৪ | ১১৫ | ১১৬ | ১১৭ | ১১৮ | ১১৯ | ১২০ | ১২১ | ১২২ | ১২৩ | ১২৪ | ১২৫ | ১২৬ | ১২৭ | ১২৮ | ১২৯ | ১৩০ | ১৩১ | ১৩২ | ১৩৩ | ১৩৪ | ১৩৫ | ১৩৬ | ১৩৭ | ১৩৮ | ১৩৯ | ১৪০ | ১৪১ | ১৪২ | ১৪৩ | ১৪৪ | ১৪৫ | ১৪৬ | ১৪৭ | ১৪৮ | ১৫০ | ১৫১ | ১৫২ | ১৫৩ | ১৫৪ | ১৫৫ | ১৫৬ | ১৫৭ | ১৫৮ | ১৫৯ | ১৬০ | ১৬২ | ১৬৩ | ১৬৪ | ১৬৫ | ১৬৬ | ১৬৭
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন