এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • নীল রেখায় ধূসর ছবি

    শ্রাবণী
    আলোচনা | বিবিধ | ৩০ মার্চ ২০০৮ | ৬৭৩ বার পঠিত
  • ২০০৬ এ দুশ জন, ২০০৭ এ একশ কুড়ি জন, ২০০৮ এ এখনো পর্যন্ত আট জন। গড়ে প্রতিবছরে প্রায় শদেড়েক মানুষের প্রাণ যায় রাজধানীর পথেঘাটে ঘুরে বেড়ানো এই মৃত্যুদূতের হাতে। আরো কতজন যে পঙ্গুত্বের শিকার হয়, কত পরিবার চিরদিনের মত রোজগারী সদস্যকে হারিয়ে পথে নামে তার কোনো লেখাজোখা নেই। "ঘাতক", হ্যাঁ, এই নামেই অভিহিত করেছে দিল্লী হাইকোর্ট দিল্লী পরিবহন ব্যবস্থার অন্যতম অংশীদার ব্লু লাইন বাসকে, আর সাধারণ লোকে এর নাম দিয়েছে "ব্লাডলাইন বাস"। রক্তাক্ত পদচারণায় কখনও এদিক ওদিক ধাক্কা মেরে নিজের অভ্যন্তরের যাত্রীদের ক্ষতিসাধন করছে আবার কখনও পথচলতি অন্য যানবাহন বা পথচারীদের ওপর আঘাত হানছে। যারা এই বাসে নিয়মিত যাতায়াত করে বা করতে বাধ্য হয় তাদের কাছে এই যাত্রা সর্বদাই দু:স্বপ্নের সমান!

    বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাবে যে রাজধানীর অধিকাংশ পথ দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর সঙ্গেই জড়িত এই ব্লুলাইন বাস। ১৯৯৯ সালে একুশ বছর বয়সী সন্তান কে হারিয়ে ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করে এক হতভাগ্য দম্পতি। সেই মামলার রায় বেরিয়েছে এ বছর। খুব তীক্ষ্ম ভাষায় এই কিলার বাস ও বাসচালকদের সমালোচনা করেছেন জাস্টিস কৈলাশ গাম্ভীর। কিন্তু যে সম্বন্ধে কোর্ট মন্তব্য করেনি বা করতে পারেনি তা হল এই সব দুর্ঘটনার জন্যে ব্লুলাইন বাসের চালকেরা, মালিকরা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা যতটা দায়ী ঠিক ততটাই দায়ী সরকার।

    ভারতবর্ষের রাজধানী তে যেখানে শুধুমাত্র দিল্লীবাসী নয় আশেপাশের রাজ্যের লোকেরাও প্রতিনিয়ত আসছে রুজিরোজগারের জন্য বা অন্যান্য কারনে, সেখানে মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য কোনো সুষ্ঠু সুলভ সরকারী পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি আজ অবধি। দিল্লী পরিবহন নিগম বা DTC র বাসের সংখ্যা ৩০০০ এর কাছাকাছি। পরিবহন দপ্তর নিজেই স্বীকার করেছে যে এই সংখ্যক বাস রাজধানী ও তার আশপাশের এলাকা থেকে আসা হাজার হাজার যাত্রীদের চাহিদা মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত নয়, অন্তত:পক্ষে আরও ২০০০ DTC বাস দরকার। প্রতিটি রুটে দুটি সরকারী বাস চলার মধ্যবর্তী সময় দীর্ঘ আর এই দীর্ঘ সময়ে ব্লুলাইন বাস চলে একাধিক। মরণফাঁদ জেনেও তাই সস্তায় ও সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য সেই ব্লুলাইন বাসের সিঁড়িতেই পা রাখতে হয় নিরুপায় যাত্রীদের।

    কি এই ব্লুলাইন বাস, যাকে নিয়ে এত হইচই, এত সংবাদপত্রের হেডলাইন? এই বাসগুলি বেসরকারী মালিকানায় আম জনতার সুবিধার্থে প্রধানত দিল্লীর রাস্তায় চলে। বর্তমানে প্রায় চারহাজার ব্লুলাইন বাস আছে এই শহরে। সাধারণত বাসের মালিক বাস কিনে একটি পারমিট যোগাড় করে তারপরে সেটি ঠিকাদারের হাতে তুলে দেয়। বাস পরিচালনা করে ঠিকাদার, মালিককে সে রোজের হিসেবে বাস পিছু একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে থাকে। বাসের রক্ষনাবেক্ষণ, কর্মচারীদের মাইনে ইত্যাদি সবকিছুর দায় ঠিকাদারের। এইসব মিটিয়ে যা থাকে তা তার লাভ। বাসটি দিনে যত বেশী বার চলবে অর্থাৎ ট্রিপ মারবে, তত বেশী লাভ হবে। বেশী বার চলতে হলে প্রতিটি ট্রিপে স্পীডও বেশী রাখতে হবে। কিন্তু এর ফলে যদি দুর্ঘটনা ঘটে তার দায়িত্ব আইন অনুযায়ী মালিকের, ঠিকাদারের নয়। পরিবহন বিভাগের অফিসারদের মতে গন্ডগোলের শুরু এইখান থেকেই হয়। বাস পরিচালনার দায়িত্বে যদি মালিক নিজে থাকত তাহলে সে দুর্ঘটনা এড়াতেও তৎপর হত কারণ দুর্ঘটনায় ক্ষতি তার কিছু কম নয়।

    অবশ্য সাধারণ মানুষ অন্য কথা বলে। তাদের অভিযোগ হল বেশীরভাগ ব্লুলাইন বাসেরই মালিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। কেউ নেতাদের আত্মীয়, কেউবা বেনামী সরকারী অফিসার। খুব স্বাভাবিক কারণেই এই সব মালিকরা সাধারন আইনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকে। সরকারী বাসকে অনেক ক্ষেত্রে ইচ্ছে করে দেরীতে চালানো হয় যাতে সেই রুটের ব্লুলাইন বাস বেশী যাত্রী পায়। ড্রাইভাররা অনেকেই স্বীকার করেছে যে তারা যাতায়াতের নিয়ম ভাঙলেও তাদের ধরা হয়না কারন পুলিশরা ঠিকাদারদের/মালিকদের কেনা। ফলে তারা আরও বেপরোয়া আর হঠকারী হয়ে গাড়ী চালায়। স্বপক্ষে এদের যুক্তি হল, যে এরা ক্রমাগত চাপের মধ্যে থাকে। দ্রুত গতিতে বাস চালাতে হয় বেশী যাত্রী সংগ্রহ করার জন্য, যাতে দিনের শেষে সংগৃহীত হয় বেশী পরিমাণ অর্থ। এই গতিতে নিয়ন্ত্রন রাখা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না, আর তার ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য যে বেশী সংখ্যক ট্রিপের জন্য চালকেরাও তাদের মাইনের অতিরিক্ত ভাতা পেয়ে থাকে। অর্থাৎ ঠিকাদারের চাপই চালকদের গতিসীমা না মেনে গাড়ী চালানোর একমাত্র কারন নয়।

    কিন্তু প্রতিটি বাসে থাকে স্পীড গভর্নর। যা দিয়ে বাসের সর্বাধিক গতি নিয়ন্ত্রন করা যায়, এই সব বাসের জন্য নির্দিষ্ট গতি শহরের মধ্যে চল্লিশ কিমি। যখন পারমিট দেওয়া হয় তখন পরিবহন অফিসাররা ভালো করে এটি পরীক্ষা করে তবেই ছাড়পত্র দিয়ে থাকেন। তাহলে? অফিসারদের মতে,বেশীরভাগ ঠিকাদাররা এটি পরে খুলে ফেলে দেয় যাতে চালকরা ইচ্ছামত স্পীড তুলতে পারে। কারন একবার পারমিট দেওয়ার পরে আর সেরকম ভাবে কড়া চেকিংএর ব্যবস্থা এতদিন ছিলনা।

    ২০০৭ এ অক্টোবরে মথুরা রোডের ওপর অ্যাপোলো হসপিটালের সামনে একটি বাসস্ট্যান্ডে কিছু যাত্রী রোজকার মত সেদিনও DTC বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। এইসময় ৪৬০ নং রুটের এই ব্লুলাইন বাসটি একটি অন্য বাসকে ওভারটেক করতে বাঁ দিক দিয়ে দ্রুতগতিতে বেরোতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অপেক্ষারত ঐ যাত্রীদের ধাক্কা মারে, আটজনের মৃত্যু ঘটে, আহত হয় আরো বেশ কিছু লোক। এই ঘটনার পরে পরিবহন দপ্তর ও পুলিশ কঠিন ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে,নিয়মিত স্পীড গভর্নর চেক করছে। এতে অবশ্য চালকরা ও মালিকরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। তাদের মতে পুলিশ তাদের প্রতি অকারণে বা তুচ্ছ কারণে কঠোর হচ্ছে। পুলিশী নজরদারী কঠিন হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় পাঁচশ বাস বাজেয়াপ্ত করা হয় আর একশ চালককে ধরা হয় যাতায়াত আইন লঙ্ঘন করার জন্য। প্রতিবাদী চালকরা একজোট হয়ে শুরু করেছে "ব্লুলাইন ড্রাইভার একতা ম্‌ঞ্চ"। এই সংগঠন একদিন স্ন্যাপ স্ট্রাইকও ডাকে, যা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তুলে নিতে হয় মুখ্যমন্ত্রীর ও পরিবহন মন্ত্রীর কড়া ধমকিতে।

    ব্লুলাইন বাসের চালকদের বিরুদ্ধে গুরুতর নিয়ম লঙ্ঘনের যে অভিযোগ গুলি প্রধানত করা হয়ে থাকে তা হল,
    তারা নির্দিষ্ট বাস স্টপে দাঁড়ায় না, ট্র্যাফিক সিগন্যাল মানেনা, লেন রুল মানেনা বিশেষত অন্য বাসকে ওভারটেক করার সময়, বাস চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলে ও নিজ মনোরঞ্জনের জন্য বাস চলাকালীন জোরে গান চালিয়ে রাখে, ইত্যাদি। এককথায় কোনো গুণেই এদের ঘাটতি নেই!

    এত বছর ধরে, সরকার বেসরকারী ব্লুলাইন বাসের স্বেচ্ছাচারিতায় নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল। মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত এই বলে দায়িত্ব এড়িয়ে যেতেন যে এটি পরিবহন ও পুলিশ বিভাগের ব্যাপার। গত কয়েক বছরে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ এর বিরুদ্ধে আরো বেশী সোচ্চার হয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষ ও নিহতদের পরিবারবর্গের দাবীদাওয়া নিয়ে লড়াইএ সাহায্যের জন্যেও অনেকে এগিয়ে এসেছে। এমত অবস্থায় বিরোধীরাও এই ইস্যুতে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার ফাঁকফোকর খুঁজতে লেগেছে। আর তাই সরকার আর নিরপেক্ষ থাকতে পারছেনা। গত বছর হাইকোর্টের একটি নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী অবশেষে ব্লুলাইন বাসকে একটু একটু করে আগামী দুবছরের মধ্যে একেবারে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। আর সে জন্য দিল্লী সরকার কিছু পদক্ষেপ ও নিতে শুরু করেছে। স্বল্পমেয়াদী উদ্যোগ হিসেবে ব্লুলাইন বাসেদের চালকদের কাজের সময় বেঁধে দেওয়া, কঠোর নজরদারী ও নিয়মভঙ্গের অনুরূপ শাস্তি। দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থায় একবছরে সরকারী বাসের সংখ্যা বাড়িয়ে পাঁচহাজারের ওপর করা। ব্লুলাইন বাসের পরিবর্তে শহরে চলবে "লো ফ্লোর, হাই ক্যাপাসিটী" বাস। কিন্তু বেসরকারী বাস অপারেটররা থাকবে কিনা এ ব্যাপারে এখনও কিছু পরিস্কার বলা হয়নি। হয়ত এত সহজে পুলিশ,রাজনীতিক ও ঠিকাদারদের এই মধুচক্র ভাঙা স্বাস্থ্যকর হবেনা সরকারের পক্ষে!

    পিপল'স অ্যাকশন নামে একটি এন জি ও এইসব ব্লুলাইন বাসের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন ও তাদের পরিবার কে একত্র করে চেষ্টা করছে, যাতে সরকারের কাছে এদের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় করা যায়। মথুরা রোডের ঘটনায় জনতাকে শান্ত করার জন্য সরকার তড়িঘড়ি করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করে, কিন্তু বাকীদের জন্য সরকার কোনো দায়বদ্ধতার মধ্যে যেতে রাজী নয়। সরকারের এই বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে National human rights commission এর কাছে গেছেন এরা। নিহতদের পরিবারের সদস্য ও তাদের সমর্থনে আরো অনেকে যাদের মধ্যে কিছু বিরোধী নেতাও ছিল,গত ডিসেম্বরে যন্তর মন্তরের সামনে ধরনায় বসে। তাদের দাবী ছিল নিহতদের পরিবারকে পাঁচলক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ আর পরিবার পিছু একজনকে চাকরী। সরকারের যুক্তি হল Motor Vehicles Act অনুযায়ী এদের ক্ষতিপূরণ দেবার দায় বাসের মালিকের ও বীমা কোম্পানির, সরকারের নয়। এর ফলে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে আইনী গোলোকধাঁধায় ঘুরে ঘুরে ক্ষতিপূরণের মামলা শেষ হয়ে যায়, হতভাগ্য পরিবারের লোকজনরা মামলা চালাতে পারেনা, তাদের প্রাপ্যও পায়না। সুপ্রীম কোর্টের একটি আদেশ অনুসারে বাস মালিকের সাথে সাথে চালককেও বাদী হিসেবে ধরা হচ্ছে আজকাল তবে তাতে সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন আইনজ্ঞরা। চালকরা প্রায়শই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়, এবং পলাতকই থাকে শেষপর্যন্ত, অন্তত:পুলিশের খাতায়। এতে কেস আরও জটিল হয়ে দাঁড়ায়।

    কিছুকাল আগে বিহার থেকে আগত এক পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য আখিদ আলি যখন ব্লুলাইনে চাপা পড়ে মারা যায়, তার স্ত্রী সংসার চালানোর ভাবনায় দিশাহারা হয়ে আত্মহত্যা করে। ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থার সরলীকরণ করে, এধরনের পরিণতি কিছুটা হলেও এড়ানো যাবে। আশার কথা হল ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে দিল্লী হাইকোর্ট যথেষ্ট কড়া মনোভাব দেখিয়েছে। Motor vehicles act এ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষতিপূরণের মূল্য নিরূপণ করা হয় মৃতের আয় ও তার সম্ভাব্য আয়ুষ্কাল ধরে। এই পরিমাণ এতই কম যে বাস্তবে তা কারোর কোনো সাহায্যেই আসেনা। হাইকোর্ট তাই ক্ষতিপূরণের অর্থমূল্যের পরিমাণ সম্বন্ধীয় আইন পরিমার্জনের নির্দেশ দিয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব লোকসভায় অনুমোদন পেয়ে এখন রাজ্যসভার কাছে গেছে। নুতন আইন অনুযায়ী, পথ দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তির পরিবার পাবে এক লক্ষ টাকা, গুরুতর আহত যারা তারা পাবে প্‌ঞ্চাশ হাজার টাকা এবং অন্যান্য আহতরা পাবে পঁচিশ হাজার টাকা। এছাড়া, গাড়ীর যদি বীমা করা থাকে তাহলে থার্ড পার্টি insurance ও দাবী করা যাবে। এছাড়া কোর্ট এ মর্মেও আদেশ দিয়েছে যে দুর্ঘটনায় বাজেয়াপ্ত বাসটি যদি তার মালিক ছাড়াতে চায় তাহলে তাকে আগে কোর্টে ক্ষতিপূরণের টাকা জমা দিতে হবে।

    জনসাধারনের মধ্যে ব্লুলাইন বাসকে নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে। কেউই আর এই কিলার বাসেদের রাস্তায় দেখতে চাইছেনা। কিন্তু এদের থাকা না থাকা সবই নির্ভর করবে কত তাড়াতাড়ি আর কত সুচারুভাবে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হয় দিল্লী সরকার। দুটি একটি করে লো ফ্লোর DTC বাস দেখা যাচ্ছে রাজধানীর রাস্তায়, কিন্তু ব্লুলাইন এখনও স্বমহিমায় বিদ্যমান। বছরের সবে শুরু, এরই মধ্যে চলে গেছে বেশ কিছু প্রাণ। কুরুক্ষেত্র থেকে দিল্লীতে মেয়ের পরিবারের সঙ্গে হোলি খেলতে আসছিল এক প্রৌঢ় দম্পতি। ISBT থেকে বাস ধরেছিল, গন্তব্য ধৌলাকুঁয়া। অস্বাভাবিক গতি তে চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা মারে বাসটি। পনের জন আহত, মৃত একজন।

    হয়ত ভবিষ্যতে ব্লুলাইন আর থাকবেনা অথবা থাকলেও তার গতি নিয়ন্ত্রণে আসবে, চালকেরা মার্জিত বিনীত হয়ে উঠবে,দিল্লী পরিবহন ব্যবস্থা মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায় "Safe, Convenient and Modern city transport system'' হয়ে উঠবে।কিন্তু কুরুক্ষেত্রের শীলা দেবীর পরিবারের সদস্যদের আগামী সমস্ত হোলিই বর্ণহীন হয়ে রইবে, তার অসুস্থ স্বামীর শেষ বয়স কাটবে সাথীহীন অবস্থায় ।

    মার্চ ৩০, ২০০৮
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ৩০ মার্চ ২০০৮ | ৬৭৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন