আমারব্লগ ডট কম (www.amarblog.com) ২১ মার্চ ২০১৩ সকালে বাংলাদেশ বিটিআরসি(www.btrc.gov.bd) থেকে একটি ইমেইল নির্দেশ পেয়েছে।সহকারী পরিচালক স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনায় আমার ব্লগকে বেশ কয়েকজনের ব্লগ অ্যাকাউন্ট বাতিল এবং উল্লেখিত ব্লগারদের ব্যাক্তিগত তথ্যাদি- আই পি এড্রেস, লোকেশন, ইমেইল, মোবাইল নম্বর এবং ব্যাক্তিগত নাম পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিটিআরসি কার্যালয়ে ইমেইলে জমা দিতে বলা হয়েছে! নির্দেশনামায় বিটিআরসির সহকারী পরিচালক কোন আইন কিংবা আদালতের আদেশের ভিত্তিতে এ নির্দেশ দিচ্ছেন তা উল্লেখ করেননি!
প্রিয় ব্লগার, আন্তর্জালে বাংলায় বাক স্বাধীনতা রক্ষায় শুরু থেকেই দায়বদ্ধ আমারব্লগ। আর তা যে কোনো মূল্যে অক্ষুন্ন রাখতে আমারব্লগ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলো, আছে এবং থাকবে! সেই দায়বদ্ধতা থেকে আমারব্লগ বিটিআরসি উপরের নির্দেশ প্রত্যাখান করছে। আমার ব্লগ কোন ব্লগারের ব্লগ বাতিল করবে না- আন্তর্জাতিক প্রাইভেসি আইন অনুযায়ী কোন ব্লগারের আই পি এড্রেস, লোকেশন, ইমেইল, মোবাইল নম্বর এবং ব্যাক্তিগত নাম প্রকাশ করবে না।
প্রিয় ব্লগার, এ ব্যাপারে আমরা দেশের একাধিক প্রথিতযশা আইনজীবির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং কোন আইনবলে বিটিআরসি কোনো ব্লগারের ব্যক্তিগত তথ্য এবং তাঁর লেখার আর্কাইভের কপি দাবি করেছেন সে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখছি। জনপ্রশাসনের এখতিয়ার বহির্ভূত যেকোন হস্তক্ষেপকে আমরা আইনগতভাবে চ্যালেঞ্জ করব। আমারব্লগ.কম-এ লেখালেখির জন্য যদি কোনো ব্লগার সরকারি রোষাণলে পড়েন তাহলে আমারব্লগ কর্তৃপক্ষ তাঁর সাধ্যমত সকল প্রকার সহায়তা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে। কোনো ব্লগারের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে হয়রানি করা হলে সেই সংক্ষুব্ধ ব্লগার যদি সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ সহ যেকোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে ইচ্ছুক হন, আমারব্লগ.কম এর পক্ষে তাঁকে লিগ্যাল সাপোর্ট দেয়ার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমি ‘আমার ব্লগ’-এর এই সাহসী পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই। এটা দরকার ছিল। দেশের চরম দুর্দিনে দরকার এই ঋজু মনোভাবের। কেন তারা ব্লগারদের নাম ধাম, লগইন বৃত্তান্ত, ঠিকানা খোঁজার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন? ভয়টা কোথায়? যেখানে লাগা দরকার সেটা তারা করতে পারছেন না।
ফেসবুকে এখনো বাঁশের কেল্লা আর নিউ বাঁশের কেল্লার মতো সাইট উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের এই সাম্প্রদায়িক উস্কানির বলি হয়ে নির্যাতিত হয়েছেন শত শত সংখ্যালঘু পরিবার। ধর্ষিতা হয়েছেন, গুম খুন হয়েছেন। রেল লাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে, হয়েছে হাজার হাজার বৃক্ষ কর্তন। চাঁদে সাইদীর মিথ্যা ছবি প্রচার করে গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষকে সম্মোহিত করার প্রচেষ্টা করেছে। তাদের সাইট বন্ধ হয়নি, বন্ধ করা যায়নি তাদের কর্মকাণ্ড।
আর বাঁশের কেল্লাই বা বলি কেন? বাঁশের কেল্লার চেয়েও উগ্র সাইট বহাল তবিয়তে রাজত্ব করে যাচ্ছে। বন্ধ করতে পারেনি হিযবুত তাহরীরের মত উগ্রবাদী দলগুলোর প্রচারণাও।
সচলায়তনে লেখকদের নাম, ইমেইল অ্যাড্রেস এবং প্রকাশিত পোস্টের আইপ অ্যাড্রেস ছাড়া আর কোনো তথ্য সংরক্ষণ করা হয় না। কিন্তু আমরা লেখক এবং পাঠকসহ সংশ্লিষ্টদের এটুকু আশ্বাস দিতে চাই যে সচলায়তন সংশ্লিষ্ট সকলের ব্যক্তিগত তথ্য খুব গুরুত্বের সাথে সংরক্ষণ করে এবং বেআইনী কোনো অনুরোধ বা হুমকিতে সচলায়তন এই তথ্য উন্মুক্ত করবে না।
সাম্প্রতিককালে গভীর উদ্বেগের সাথে পরিলক্ষিত হচ্ছে যে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যেমন ফেসবুক, টুইটার এবং ব্লগ সাইটে ইসলাম ধর্ম ও হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে কটাক্ষ করে এক শ্রেণীর কুচক্রী মহল উস্কানিমুলক ও কুরুচিপূর্ণ পোস্ট, কমেন্ট,ছবি, কার্টুন ইত্যাদির মাধ্যমে বাংলাদেশের সহজ, সরল ও ধর্মভীরু মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক হিসেবে বিটিআরসি এসব ঘটনায় তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা প্রকাশ করছে। সরকার এসব বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচারও ধর্মীয় সংহতিতে আঘাতকারী প্রচারণা বন্ধে বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে, যার সদস্য হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি বিটিআরসির কর্মকর্তাও নিয়োজিত রয়েছেন। তাছাড়াও ইন্টারনেটের অপব্যবহার রোধকল্পে বিটিআরসি কর্তৃক নিয়মিত এস এম এস এর মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করা হচ্ছে।
মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার বন্ধে এবং মুক্ত চিন্তা ও স্বাধীন মত প্রকাশের স্বার্থে বিটিআরসি জনগণকে সাথে নিয়ে কাজ করার ব্যাপারে সর্বদা সচেষ্ট এবং এ সম্পর্কিত কোন অপপ্রপচারে বিভ্রান্ত না হয়ে ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যেমন ফেসবুক,টুইটার, এবং বিভিন্ন ব্লগ থেকে প্রাপ্ত ধর্মবিদ্বেষী ও কুরুচিপূর্ণ পোস্ট, কমেন্ট ,ছবি, কার্টুন ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য বিটিআরসিকে অবহিত করে সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে এসব অপপ্রচার বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ২৯৫/২৯৫(ক)/২৯৮ ধারা ও আইসিটি অ্যাক্ট ২০০৬ এর ৫৭ ধারা এর পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং ২০১২ সালের রিট পিটিশন নং- ৮৮৬ এর নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাছাড়াও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ এর ৩০(১)(ছ)/৩১(২)(ণ)/৭৩(২)/৮৪(২)-ধারা অনুসারে তথ্য প্রযুক্তির যথাযথ ব্যাবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষে বিটিআরসি, টেলিযোগাযোগ লাইসেন্সধারী,ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার এখতিয়ার রাখে এবং উক্ত তথ্য চাহিদানুযায়ী প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইন অমান্যকারীর আর্থিক জরিমানা ও শাস্তির বিধান রয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ‘আন্তর্জাতিক মান’ বজায় রেখে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে।
“আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। তা হবে আন্তর্জাতিক মানের। ক্ষমতায় গেলে সে বিচার করব।”“এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই রাজাকার, আওয়ামী লীগেও বহু রাজাকার আছে, তাদের ধরতে হবে, আওয়ামী লীগের ‘এক’ থেকে সবাইকে।”
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলনরত গণজাগরণ মঞ্চের দিকে ইঙ্গিত করে খালেদা বলেন, “সরকার একদিকে শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি করছে, অন্যদিকে ‘বিধর্মী-নাস্তিকদের’ পাহারা দিয়ে লালন-পালন করছে।
“এইসব মঞ্চ-ফঞ্চ বন্ধ না হলে জনগণের মঞ্চ তৈরি হবে।
২০১১ সালের ২১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন-বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এক আলোচনা সভায় প্রথম বলেন, কোনো ওয়েবসাইটে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে অশ্লীল বা কুরুচিপূর্ণ কোনো ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করা হলে সেই সাইটটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, দায়িত্বশীল আচরণ করতে ব্যর্থ হলে মাশুল গুণতে হবে সবাইকে। আইন বা বিধিবিধানের বিষয়টি তখনই সামনে আসে যখন স্বাধীনতার অপব্যবহার হয়। স্বাধীনতার নামে স্বেচ্ছাচারিতা হয়। আমাদের সতর্ক থাকবার প্রয়োজন আছে। ইন্টারনেটে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অসতর্কতার পরিণতিতে সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক মূল্য দিতে হতে পারে। বেশি দূর যেতে হবে না, বাংলাদেশের গত ৪০ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলেই দেখা যাবে বিভিন্ন সময়ে কিভাবে গণবিরোধী কাজে কিংবা আইনের শাসনবিরোধী কাজে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে, আমরা ইতিহাস থেকে শিখি না, শিখতে চাই না।