এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • কুর্নিশ

    Salil Biswas লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৪ | ১৪৬১ বার পঠিত
  • আজ ছিল নবমী। এই ৩রা সেপ্টেম্বর সন্ধ্যাবেলা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা সল্ট লেকের লাবনী-র সামনে তাদের দাবী নিয়ে অকুতোভয়ে দাঁড়িয়েছিল উৎসবমুখর মানুষের সামনে, সবাইকে জানাতে যে তাদের শান্তিপূর্ণ সংগীতময় আন্দোলন ‘হোককলরব’ তাদের ন্যায্য সম্মান রক্ষার ন্যায্য দাবী। সেই ভয়হীনতা সহ্য হল না শাসকের। তারা পাঠিয়ে দিল তাদের ভাড়াটে পুলিশ বাহিনী। বন্ধ করতে হবে সাহসিকতা। চেষ্টা চলল ভীতিপ্রদর্শণের। বিশাল বাহিনী ধরে নিয়ে গেল তেরো জন তরুণ-তরুণীকে। আবার দাঁড়ালো লাঠির মুখে গানের সুর। আরও অনেক বার দাঁড়াবে। আরও অনেক বার হয়ত আক্রমণ করবে রাষ্ট্রশক্তি। কারণ তাদের বশম্বদ পোষা চটি-চাটা কুকুরের চামড়া তো বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাই আরও বাড়বে তাদের হিংস্রতা। কিন্তু আন্দোলনের ধারাবাহিকতা থামবে না তাতে।
    আসলে ওরা ভয় পেয়েছে। ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথম তাদের এক গণ আন্দোলনের সম্মুখীন হতে হয়েছে যার মোকাবিলা করতে তারা অক্ষম। রাজনৈতিক চালবাজি এখানে কাজ করছে না। একমাত্র অস্ত্র হয়ত হবে উলঙ্গ সন্ত্রাস, যা এই মুহূর্তে শাসকের হাতের বাইরে, নিজেদের মধ্যে খাওয়া-খাওয়ির ফলে।
    অন্য সবকিছুর মত বিদ্যায়তন-ব্যবস্থাকে দখল করার উদ্দেশ্য ছিল প্রথম থেকেই পরিষ্কার। পুরানো সরকারী প্রভুদের দেখানো পথকে পাথেয় করে এগোল আজকের শাসকবৃন্দ। কিন্তু ওদের মত সরু-চালাকি এরা রপ্ত করে উঠতে পারেনি। তাই কাজে বেশ কিছু ছিদ্র থেকে গেল। সেগুলোকে বন্ধ করতে নেমেই হয়েছে মুশকিল।
    ঘোষণা ছিল, শিক্ষা জগতকে রাজনীতি-মুক্ত করা হবে ক্ষমতায় এসেই, বামফ্রন্টের অপশাসনের সমাপ্তি ঘটিয়ে। করা হল তা। বামপন্থী দলীয় রাজনীতি বিদায় হল, জুড়ে বসল দক্ষিণপন্থী নীতিহীনতা পণ্ডা-পাঁজা-ইসলাম-চাটুজ্জে প্রভৃতির পেশীবহুল ও ওজনদার রূপ ধরে। তাদের দাপটে ডালপালা নেতিয়ে হতবুদ্ধি শিক্ষা-বনস্পতি ধূলায় পড়েছে উপুড় হয়ে। তাদেরই মারকাটারী চেহারা এখন দিকে দিকে দেখা যাচ্ছে। প্রথমে চলল ছাত্র-সংসদ দখল। সে কাজ সহজেই সম্পন্ন হল, কারণ, পুরনো সরকারের প্রসাদপুষ্ট ছাত্র-সংসদ যে ভাবে চলত এবং যে কারণগুলো তাদের চালিকাশক্তি ছিল তাতে আর যাই হোক ছাত্র সমাজের কোনও সক্রিয়তাকে উৎসাহিত করা হত না। এবিষয়ে আরও অনেকের মত বর্তমান লেখকের ব্যক্তিগত এবং তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। ফলে যা হবার তাই হল। বাহুবলীদের কড়ে আঙ্গুলের এক খোঁচাতে বহু-বিদিত বামপন্থী সংগঠন হল পপাত চ মমার চ।
    অন্যদিকে শিক্ষক সংগঠনগুলিও ভেঙে চুরমার হতে বেশি সময় নিলো না। ক্ষেত্র প্রস্তুত ছিলই। ক্ষমতার খেলায় মত্ত হয়ে শুভবুদ্ধির উপদেশে তখনকার নেতারা কান দেননি কোনদিন। তার ফলে আজ তাঁরা টুকরো টুকরো হয়ে গেছেন। এখানেও গা-জোয়ারি চালাচ্ছেন ভারী ভারী নেতা-নেত্রীরা। সরাসরি ভীতি-প্রদর্শনে তাঁদের কোনও অনীহা নেই।
    ক্ষমতায় বহাল হওয়ার পরদিন থেকেই বর্তমান সরকার গোটা শিক্ষা-যন্ত্রকে (তথা সব যন্ত্রকেই) তাঁদের অপদার্থ হাতের মুঠোয় নিয়ে নেবার আপ্রাণ চেষ্টায় লেগেছিলেন। প্রথমে তাঁরা এই জগতের বিভিন্ন মানুষকে ভয় দেখিয়ে লোভ দেখিয়ে পোলাও-কালিয়া ছড়িয়ে হাত করলেন। এদের মধ্যে অনেকেই একদা বিভিন্ন বাম ভাবনার বা/এবং বামফ্রন্টের, বিশেষ করে সি পি এম-এর অন্ধ প্রচারক-প্রসারক ছিলেন। পরে, একই রকম (বা অধিকতর) আনুগত্য নিয়ে তাঁরা টি এম সি এম-এর হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে একজন “কবি”, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে নিও-কমিউনিজমের জন্ম দিয়েছেন, এবিষয়ে প্রায় একটি কোয়াসি-মহাকাব্য লিখে ফেলেছেন।
    ব্যক্তি আনুগত্য সংগ্রহ করে নেবার পরে সরকার লেগে পড়লেন আইন-প্রণয়নে। সম্পূর্ণ বেআইনি পথে মিথ্যাকে হাতিয়ার করে বিশ্ববিদ্যালয় আইনগুলিকে পাল্টে দলীয় শাসনকে একেবারে সুপ্রথিত করে দিলেন, কোনও রকম চোখের চামড়া না রেখে। কেউ এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুললেন না, নবাগত বন্ধু (!) সরকারকে বিব্রত করতে চাইলেন না। ততদিনে ভালো ভালো পদে বসা হয়ে গেছে, নানান কমিটিতে চেয়ার-প্রাপ্তি ঘটে গেছে। আমরা যারা চেয়ার-মোহে আচ্ছন্ন নই, সেই আমরাও কয়েক পাতা জ্বালাময়ী লেখা লিখে ক্ষান্ত দিলাম। কিছুদিনের মধ্যেই লজ্জা-ঘৃণা মুক্ত বশম্বদ অ-রাজনৈতিক উপাচার্যরা বসে গেলেন। তাঁরা সরকারী নীতিতে বলি-প্রদত্ত, নিজেদের আনুগত্য প্রমাণে এখন ব্যাপৃত। একটু বেচাল দেখলেই তাঁদের কড়কানি খেতে হয় মন্ত্রী-সান্ত্রীদের হাতে। এনাদের মধ্যে যাদবপুরের খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব অভিজিত বাবু অগ্রগণ্য। “তিনোমুলি” ছাত্র সংসদগুলো সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দখল নিয়ে নিল। নেতা-নেত্রীরা ‘খুশ’ হলেন এবং ধরেই নিলেন শিক্ষাজগত হাতের মুঠোয়। ভাবলেন এবারে যা খুশি করা যাবে। কিন্তু বাদ সাধল কিছু একরোখা নেশাখোর বেয়াদব নির্লজ্জ ছেলেমেয়ে। জোট বেঁধে ছাত্রী-নির্যাতনের (যা নাকি এরাজ্যে কক্ষনো ঘটে না) প্রতিকার চেয়ে লড়াই শুরু করল তারা। সে সব অকালকুষ্মাণ্ডদের নিয়ে মহা বিপদে পড়ল সরকার।
    ঘটনাপরম্পরা নিয়ে মন্তব্য করা বাহুল্য হবে। তা এখন সবাই জানেন।
    ১৭ই সেপ্টেম্বর রাত্রে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই রাতকে আরও অন্ধকারে ঢেকে দিয়ে যে নারকীয় ঘটনা ঘটানো হয়েছে উপাচার্য নামধারী চটি-চাটা এক দলদাস, পুলিশ এবং সরকারী নীতির সমবেত চক্রান্তে, তা অভূতপূর্ব না হলেও পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান নোংরা অদ্ভুত আঁধারকে গাঢ়তর করেছে সন্দেহ নেই। এর আগেও অনশন-রত প্রতিবাদী ছাত্রদের উপরে পুলিশের আক্রমণ নামিয়েছিল তৎকালীন সরকার। একই রকম নিন্দনীয় হলেও, সেই আক্রমণের ভয়াবহতা ম্লান হয়ে গেছে ১৭ই রাত্রের উর্দীধারী পুলিশ আর রাজনৈতিক পাণ্ডাদলের পুলিশ-বেশী চপ্পল-পরিহিত প্রতিনিধিদের অশালীন ক্ষমতা প্রদর্শন ও আদিম ক্ষুধা-তাড়িত হিংস্রতার কাছে।
    আজকে কেবল ছাত্ররা নয়, সারা শহর আগুন হয়ে ফেটে পড়ছে। মিটিং মিছিল আর সোচ্চার প্রতিবাদে আজ কলকাতা আবার নিজের গণতান্ত্রিক আবহকে যেন প্রকৃতই ফিরে পাচ্ছে। নিজেদের বিভিন্নতাকে ভুলে ছাত্ররা যে ভাবে যৌথ আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন তা সত্যিই অনুকরণীয়। ছাত্র আন্দোলনের একটি ‘বামপন্থী’ ধারা এখনও নিজেদের সরিয়ে রাখছে উচ্চতর রাজনৈতিক নেতৃত্বের আদেশে। আশা করব, তারাও আগামীতে বিভেদ ভুলবেন। নারী-নিগ্রহের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারী প্রশাসনের বিরুদ্ধে, জন-বিরোধী অপশাসনের বিরুদ্ধে, নির্লজ্জ কর্ত্রী-ভজনার বিরুদ্ধে, শিক্ষার সমস্ত অঙ্গনকে দলীয় রাজনীতির কুক্ষিগত করার বিরুদ্ধে, শিক্ষার মাণকে নিম্নগামী করার বিরুদ্ধে, ছাত্রদের এই অসামান্য লড়াইকে যে কোনও প্রশংসাই কম মনে হবে। সমস্ত সৎ লড়াকু ছাত্রদের পাশে দাঁড়াতে আমাদের সকলকেই তৎপর হতে হবে।
    এখানে একটি চেতাবনি উচ্চারিত হওয়া উচিত। আজকে ঘোলা জলে মাছ ধরতে লেগে পড়েছে অনেকগুলি শক্তি, যারা একসময় নিপীড়কের ভূমিকায় দক্ষ ছিল। আজ যখন তারা উল্টো সুর গাইছে, তখন সেই সুর কতটা হার্দ্দিক, তা ভুললে চলবে না। বৃহত্তর বাম ঐক্যের কথা না ভুলেও, এই সতর্কতা মাথায় রাখা দরকার। এছাড়াও নানা রঙের রাজনীতি আজ উঠেপড়ে লেগেছে, ছাত্র-দরদী রূপ দেখাতে। এদের নিজস্ব ‘এজেন্ডা’ প্রসঙ্গে নিরন্তর সাবধান থাকা আবশ্যক। যে আনন্দবাজার গ্রুপ চিরদিন যে কোনও রকম আন্দোলন-বিরোধী, মিছিল দেখলে যাদের গা কামড়ায়, তারা যখন ছাত্রদের আন্দোলনকে প্রশংসা করে, তখন আমাদের মত ক্ষুদ্রমনা লোকের হৃদয়ে সংশয় জাগে। ছাত্রদের ডাকা কনভেনশনে বিজেপি নেতাকে দেখে অসোয়াস্তি লাগেই আমাদের।
    যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকে দমন করার হঠকারী চেষ্টা স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিচ্ছে, বর্তমান শাসক দল কিছুটা হলেও কোণঠাসা হয়ে পড়ে কোনও রকম গণআন্দোলনকেই আর সহ্য করতে পারছে না, যদিও তাদের ফ্যাসিবাদী ভাবধারা কোনোদিনই প্রতিবাদ বা সমালোচনা সহ্য করতে পারেনি। এই দলের নেতৃত্ব অনেক ক্ষেত্রে খানিকটা অশিক্ষিত চতুরতা দেখাতে পারলেও, কোনোদিনই রাজনৈতিক ভাবে কোনও সমস্যার মোকাবিলা করতে পারেনি। আজ বিবিধ সঙ্কটের মুখোমুখি হয়ে তারা আরও বেশি মরীয়া হয়ে উঠছে। কিন্তু সব স্তরে তাদের লোভ এবং পেশি-শক্তির আস্ফালন যে কাজে লাগবে না সে কথা তারা মনে রাখেনি। সিঙ্গুর নন্দীগ্রামে কুমিরের কান্না কাঁদলেও দেশি বিদেশি বড় ব্যবসার হাত ধরার আশা অনেক দিন ধরে রেখে শেষ পর্যন্ত ছাড়তে হয়েছে তাদের, কারণ বড় ব্যবসা আরও বড় এবং বশম্বদ গাছ পেয়ে গেছে আমোদিত হয়ে।
    সেই কালো রাত্রের ঘটনায় ছাত্রীদের উপরে থাবার আঘাতকে কেবল আদিম তাড়না-প্রসূত বললে সবটা বলা হবে না। মনে রাখতে হবে, নারী নির্যাতনকে নিপীড়ন বহাল রাখার এবং প্রতিবাদী কণ্ঠকে চুপ করিয়ে দেবার রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহারের প্রচলিত ধারা এখানেও কাজ করেছে। সারা রাজ্য তথা দেশ জুড়ে এই অস্ত্রের ব্যবহার ক্রমশ ব্যাপক রূপ নিচ্ছে। তার সঙ্গে পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্য প্রদর্শনের দিক তো আছেই। এই রাজ্যে তথা সারা ভারতে যে নারী ধর্ষণের প্রবণতা বেড়েছে তার অন্যতম কারণ হল শাসক শ্রেণীসমূহের এই অস্ত্র ব্যবহারের সচেতন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। কয়েকটি নমুনা তুলে ধরে বাকি সব মানুষের কাছে বার্তা দেওয়া যে বিরোধিতা এই শাস্তি ডেকে আনবে। এই শাস্তি যে এত ভীতিপ্রদ হয়ে উঠতে পারে, তার কারণও কিন্তু সেই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা। তাপস পালের মন্তব্যকে তাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করা ভুল হবে।
    একটি প্রশ্ন অনেকের মুখেই শোনা যাচ্ছে। এই ছাত্র আন্দোলন কি সফল হবে? আমার ধারণা, হবে। এ তো আর রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের লড়াই নয় যে সর্বত্র সামগ্রিক পরিবর্তন এসে যাবে, বা শিক্ষা ক্ষেত্রে আমূল সংস্কার ঘটে যাবে। এই আন্দোলনের লক্ষ্যই সীমিত, সুতরাং, উপাচার্য পরিবর্তনকেই সাফল্য বলে মনে করা যাবে। এমনকি, ক্যাম্পাসে অর্থপূর্ণ কিছু দাবী আদায়কেও সাফল্যই বলা যাবে। আমি অবশ্য বলব, ইতিমধ্যেই ছাত্ররা অনেকটা সফল। এই ছাত্রসমাজের একটা বিরাট অংশ আজ দলমত ভুলে একত্রিত হয়েছে প্রধানত সম্মানের প্রশ্নে, একে আমি একটা বিরাট বিজয় বলে মনে করি। শিক্ষক-ছাত্র সমন্বয়, যা নাকি ক্যাম্পাস-ঐক্যের একটা বড় দিক, তা অর্জন করতে পারাটাকে আমি একটা জয় বলেই অভিহিত করব। সাধারণ (ব্যাপক অর্থে) মানুষের সমর্থন লাভ করাও বড় কম কথা নয়। তাছাড়া, ছাত্রদের মধ্যে যে ধীর-মস্তিস্কতা প্রাপ্তবয়স্কতা আমি লক্ষ করেছি অল্প সময়ে, তা বিশেষ প্রশংসার দাবী রাখে। আর একটি কথা মনে রাখতে হবে যে সব আন্দোলনই নির্ভর করে তার রাজনৈতিক অভিমুখের উপর। আমি দলীয় রাজনীতির কথা স্বভাবতই বলছি না। রাজনীতি যদি জনমুখী তাহলে তার সাফল্য আসবেই। আর, আমরা, অর্থাৎ, পৌরসমাজের (‘সিভিল সোসাইটি’-কে আমি ‘সুশীল সমাজ’ বলতে আমি রাজি নই। ‘সিভিল’ শব্দটার মানে নিয়ে একটু ভাবলেই কেন রাজি নই তা বোঝা যাবে।) মানুষজন কতটা ছাত্রদের পাশে থাকব, কতটা তাদের সঙ্গে পথ চলব সততায় স্থির থেকে, সেটাও একটা সহায়ক শক্তি হিসেবে প্রতীয়মান হবে। আমরা তাদের দিশা দেখাব না, তাদের পাশে পাশে চলব, এটা তাদের আন্দোলন, একথা ভোলার মত ভুল যেন আমরা না করি। আর মনে রাখতে হবে, যে কোনও আন্দোলনের সাফল্য ব্যাপারটাই আপেক্ষিক।
    সেই মহামিছিলে আমি যেতে পারিনি। এই দুঃখ আমার কোনদিন যাবে না। ২৪শে সেপ্টেম্বরের নাগরিক সভা আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মনে হয়েছে, এই নীতিশুন্যতার দুনিয়ায় আশার আলো নিভে যায়নি। ক্ষমতার মূর্ছনায় আবিষ্ট শাসক কুলের মদমত্ততার দর্পিত আগ্রাসনের সামনে বুক ঠুকে যারা দাঁড়িয়েছে তাদের সেলাম জানাই।
    আমি, একজন অতি সাধারণ শিক্ষক, সমস্ত গণতান্ত্রিক মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি, সমস্ত ছাত্রসমাজের পাশে এসে দাঁড়ান, নিজের নিজের মত করে ছাত্রদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন। ছাত্ররা কেবল আমাদের সন্তানতুল্যই নয়, তারা আমাদের সহযোদ্ধাও বটে। আসুন, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ে এগোই একসঙ্গে। যাদবপুর তথা সমগ্র ছাত্রসমাজের আন্দোলন সফল হবে, দীর্ঘজীবী হবে, এই আশা নিয়ে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৪ | ১৪৬১ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    কমলাদি - Salil Biswas
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | ***:*** | ০৫ অক্টোবর ২০১৪ ০৯:৫৩75120
  • আশার কথা এটাই, যে অনেকেই এভাবে ভাবছেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন