এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বছর পরে ফিরে দেখা

    Salil Biswas লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৪ জুন ২০১৪ | ১৪৯৭ বার পঠিত
  • [এই লেখাটি আরও পরে এখানে দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু, এক, আমি তথা আমরা সকলের মতামত চাই, নিজেদের বুঝে নিতে; দুই, এই লেখাটি অন্য নামে, কিছুটা অন্য রূপে ‘শ্রমজীবী স্বাস্থ্য’ পত্রিকায় ছাপা হয়েছে, কাজেই এখানে তা দিয়ে দেওয়া যায়। তাছাড়া, শুধু বিবরণ পড়তে আপনাদের সারাক্ষণ ভালো লাগবে না, সেটা স্বাভাবিক। আপনাদের অনুরোধ, এই লেখাটি এবং অন্য যা লিখব পড়ে, খোলাখুলি মতামত জানাবেন। সোজা আমাকে লিখুন এই ঠিকানায় – bissal@rediffmail.com . আপনাদের অকৃপণ উপদেশ আমাদের সঠিকতর হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।]

    শ্রমজীবী বিদ্যালয় শুরুর পরে এক বছরের বেশি কেটে গেছে। একটা পরীক্ষার জন্য এটা বেশি সময় নয়, ভুলগুলো বুঝে নেবার জন্য অবশ্য প্রায় যথেষ্ট সময়। কিন্তু সে সব ভুল আবার শুধরে নেবার জন্য অনেক কম সময়। এটা আমার নিজস্ব সালতামামীর প্রথম অংশ। প্রথমে বলতে হবে, আমার মতে শ্রমজীবী বিদ্যালয় কেন।
    শ্রমজীবী হাসপাতালের অস্তিত্বের মৌল যুক্তি (যাকে বাংলায় বলে ‘র‍্যাশন্যেল’) কী? কম খরচে মানুষকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়াই একমাত্র উদ্দেশ্য বোধহয় নয় শ্রমজীবী হাসপাতালের। কেন এই কাজ করেন বেশ কিছু মানুষ, বিনা স্বার্থে, বিনা পারিশ্রমিকে? কিছু একটা মতাদর্শ কি কাজ করে তাঁদের মনে? কী তা নিয়ে বিতর্ক চলে এবং চলুক।
    শ্রমজীবী বিদ্যালয়। শুধু কি একটি অন্য রকম নাম? নাকি একটা অন্য রকম ধারণা, অন্য রকম ভাবনা, অন্য রকম জীবনদর্শন?
    শ্রমজীবী বিদ্যালয়, সেখানে বিদ্যাভ্যাসের পদ্ধতিটাই স্বতন্ত্র। কেমন স্বতন্ত্র, আর কেন স্বতন্ত্র, সে আলোচনা করার চেষ্টাই হবে এখানে। এই বিদ্যালয় চালু করার পেছনে কী আলাদা ভাবনা কাজ করেছে।
    কী সেই ভাবনা? এই ভাবনার সূত্রটা খোঁজা হচ্ছে এখানে।
    দেখা যাচ্ছে, যে আদর্শ এই এত মানুষকে শ্রমজীবী হাসপাতালের মত এরকম একটা “ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো” গোছের কাজে টেনে এনেছে এবং আনে, সেই প্রেরণায় যেন ভাটা পড়ছে, লোকের অভাব দেখা দিচ্ছে কাজ করার, “আমরা” ধারণার জায়গায় “আমি”-র ভাবনা প্রাধাণ্য পাচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে? মনে হচ্ছে, পড়াশোনার জায়গাটাতে গোলমাল পাকাচ্ছে। আগে পাকাতো না? অবশ্যই পাকাতো। কিন্তু কোথাও আবার অন্য রকম ভাবনাও কিছু শিক্ষাব্রতীকে নাড়া দিত, তাঁদের অনেকে সেই সমাজবদ্ধ ভাবনা চারিয়ে দিতেন ছাত্রদের মধ্যে, যাদের কেউ কেউ অন্য কথা ভাবতে শিখত, লেখাপড়া আর গাড়িঘোড়া চড়ার চিন্তা-ছকটা থেকে সরে আসার চেষ্টা করত। বিভিন্ন সময়ে চিন্তাবিদরা এনিয়ে ভেবেছেন, দেখেছেন “আমি”-আবদ্ধতা শেষ পর্যন্ত হয়ে পড়ে অর্থনৈতিক-সামাজিক-মানবিক অনুর্বরতার আঁতুড়ঘর, সাফল্যের সঙ্গে পুষ্ট করে প্রচলিত উৎপাদন-সম্পর্কের ধারায় উপজাত মানুষে মানুষে আন্তঃসম্পর্কের বিষাক্ত নৈর্ব্যক্তিকতাকে, যার কথা ভেবেই হয়ত রবীন্দ্রনাথ ‘শিশুতীর্থ’-তে লিখেছিলেন সেই সমাজ-সৃষ্ট অপ-নারীদের কথা, যারা খল খল করে হেসে বলে, “কিছুতে কিছু আসে যায় না”, যে ধারণা বলে সমস্ত “সাধুতা তলে তলে আত্মপ্রবঞ্চক”, যে ধারণা সৎ সহৃদয় মানুষকেও বিশ্বাস করায়, “মানুষ চিরদিন কেবল সংগ্রাম করবে, / মরীচিকার অধিকার নিয়ে / হিংসাকণ্টকিত অন্তহীন মরুভূমির মধ্যে।”
    এই “আমি”-ত্বের অম্লরসে ছোট থেকে জারিত করে মানুষকে মুনাফা দেবতার ক্রীড়নকে পরিণত করাই বিদ্যায়তন ব্যবস্থার দায়িত্ব, এবং যে প্রতিষ্ঠান যত দক্ষতার সঙ্গে একাজ পারে সে তত খ্যাতি অর্জন করে এবং প্রশংসিত হয়। এরই মধ্যে পাল্টা লড়াই থাকে, কিছু মানুষ ক্ষুদ্র সামর্থ আর বিপুল আশা নিয়ে এই আপাত-অজেয় শিক্ষা-দানবকে ধ্বংস করার, অন্তত আহত করার চেষ্টা করেন। এই মানুষদের পাশে দাঁড়ান সেই সব বিপরীতপন্থী চিন্তাবিদরা, তাত্ত্বিক-প্রায়োগিক অস্ত্র তুলে দেন এঁদের হাতে। তাঁদের পদ্ধতিগুলো পরীক্ষা করে হয়ত কিছু উপায় বার করা যায়, তথাকথিত শিক্ষার নয়, অন্যতর জ্ঞানার্জনের। শাসিতকে দমিয়ে রাখতে, তার মস্তিস্কশোধন করে নিজেদের বিশ্ববীক্ষাকে গ্রহণীয় করে তুলতে, ভবিতব্য বলে মানতে শেখাতে, শোষনের গ্রহণযোগ্যতার সপক্ষে সম্মতিসৃষ্টি করতে বহাল, শাসকের অ-নিগ্রহী এই যে “পবিত্র” আর “মনোহরণ” আপাত-নিরামিষ প্রহরণ-ব্যবস্থা, তাকে চ্যালেঞ্জ জানানো যায় বলে আমাদের ধারণা। ধারণা ভিত্তিহীন যে নয়, তার প্রমাণ অনেক দেশে, বিশেষ করে দক্ষিন আমেরিকাতে আছে। কিছুদিন পরে শ্রমজীবী বিদ্যালয়ের আমরাও হয়ত প্রমাণ হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে পারব। গত এক বছরে সামান্য হলেও কিছু প্রমাণ পেয়েছি আমরা।
    মনে রাখবেন, একথা অবশ্যই বলা হচ্ছে না যে বিদ্যালয় ব্যবস্থায় কেউ কিছু শেখে না। কিন্তু যা শেখে তা ব্যবস্থার ফাঁকে ফোকরে, শিক্ষার্থীর মনকে বেঁধে ফেলার সকল ফাঁদকে উপেক্ষা করেই। আর একটা ব্যাপার হল, খুব চেষ্টা করেও মানুষের জ্ঞানার্জনের স্বভাবজ স্পৃহাকে, মানুষের কৌতূহলকে বাগ মানানো যায় না। সঠিক অনুপ্রাণনা (stimulus) তাকে জাগ্রত করবেই। এছাড়া, শাসককুল নিজেদের উৎপাদন-সম্পর্কের বিভিন্ন স্তরের বিভিন্ন স্বার্থেই বিভিন্ন জিনিস বাছাই করা মানুষকে শেখাতে চায়। দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের অপেক্ষাকৃত অগ্রসর এবং আপন স্তরকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম ব্যক্তিদের তাদের নিজস্ব কৌম থেকে সরিয়ে এনে “বাবু” করে তোলার চেষ্টাও চালায় এই ব্যবস্থা, “মূলধারা”তে তাদের উঠিয়ে আনার নামে। নীরবতার সংস্কৃতি বজায় রাখার, বঞ্চনাকে গ্রহণযোগ্যতা দেবার এ হল আরও একটি কৌশল।
    কিন্তু সততই সমাজবিরোধী পুঁজির অন্তর্নিহিত স্ববিরোধিতাই এইসব “শেখানোর” একটা অংশ মানুষকে সমাজ-সচেতন করে তুলে নাশকতায় প্রবৃত্ত করে। যে শিক্ষাব্রতী এই সচেতনতাকে উসকে দিতে সক্ষম হবেন, তিনিই প্রকৃত শিক্ষাবিদ, যিনি পারিপার্শিককে জানতে বুঝতে বিশ্লেষণ করতে শেখায় সহায়তা করবেন। জানতে বুঝতে বিশ্লেষণ করতে যেই পারবে, সমাজের সঙ্কেতভেদ (Decode) যেই করতে পারবে সেই জগতের রূপান্তর আনতে সক্রিয় হবে।
    এখানেই স্বতন্ত্র কেন তার উত্তর পেতে পারি আমরা। তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে শ্রমজীবী স্কুল কী করতে চায় সেই কথাও।
    শ্রমজীবী বিদ্যালয় আগে চায় পড়াশুনা শেখাতে, নিরক্ষরকে সাক্ষর করতে। এটা এক নম্বর কাজ। সেটা ছাড়া কিছুই হবে না। তারই সঙ্গে সঙ্গে শ্রমজীবী বিদ্যালয় অন্য সব স্কুলের মতই “মানুষ” তৈরি করতে চায়। কিন্তু অন্য স্কুল সত্যিই কি চায় মানুষ তৈরি করতে? আমরা বলব, না, চায় না। মুখে আপ্তবাক্যের মত বলে চলে, মানুষ হও, কিন্তু আদতে বলে ‘সফল’ হও, একা একা বড় হও। কিন্তু “বলে” তো মানুষ হতেই! তাহলে আমরা যা বলছি তার তফাৎটা কোথায়? তফাৎটা “মানুষ” শব্দটার সংজ্ঞায়। মানুষ কে? আমরা বলি, মানুষ সেই যে “আমি”-ত্বের বেড়াজাল ভেঙে বেরিয়ে এসে “আমরা” হয়ে উঠতে চাইছে, অন্তত চাইতে চেষ্টা করছে। মানুষ সেই, যে ব্যক্তিগত মানবিক সম্পর্ককে, আধিপত্য নয়, সামাজিক সমান্তরাল সমানাধিকার ভালবাসা স্নেহ দিয়ে গড়ে তোলে। মানুষ সেই, যে পারিপার্শ্বিককে, সমাজকে, জানতে বুঝতে বিশ্লেষন করতে শিখেছে, অন্তত শিখতে চাইছে। সমাজ নামক অবয়বটির সঙ্কেতভেদ (এবিষয়ে আমাদের ব্যাখ্যা আমরা কিছু সময় পরেই রাখব।) করতে চাইছে এবং আগামী দিনে যে তার পারিপার্শ্বিককে বদলানোর প্রয়োজনীয়তাকে উপলব্ধি করে তাকে বদল করার পথে পা বাড়াতে চাইছে। সঙ্কেতভেদ করতে পারলে যা অবশ্যম্ভাবী।
    উরিব্বাস! বলে কী! লোকে একথা পড়েই বলবে, গোটাকতক দোষে ঠাসা, অসম্পূর্ণ, নিজেদের মধ্যে ঝগরুটে মানুষ দিনকতক অ আ ক খ আর এক দুই তিন চার আর এ বি সি ডি পড়িয়ে বলে কী! কিন্তু ঘটনা হল, এই অসম্পূর্ণ মানুষগুলো আর কিছু না পারুক, এই আকালেও স্বপ্ন দেখতে পারে, কতকগুলো অপরিণত কিন্তু উজ্জ্বল নিষ্পাপ মুখে সুদূর সুন্দরের ছায়া দেখতে পায়। সাময়িক ভ্রান্তি থাকতে পারে, কিন্তু তাকে কাটিয়ে তোলাও অসম্ভব বলে মনে করে না।
    শুনে কেউ কেউ বলে উঠবেন, আপনারা সমাজতান্ত্রিক মানুষ গড়তে চাইছেন, বলেই ফেলুন না। পারলে বলতাম। কিন্তু জানিই না তো সমাজতান্ত্রিক মানুষ কাকে বলে। নিজেরা যা নই তা কী করে সৃষ্টির চেষ্টা করব আমরা!
    নিজের কথা বলতে পারি। আমি তো একজন অনেক অপকর্ম করা ভাঙাচোরা অক্ষম (কেউ বলবে ব্যর্থ) মানুষ। সারা জীবন এই বিদ্যালয় ব্যবস্থায় ঘানি টেনেছি, বিদ্যাভ্যাস করানোর বদলে পরীক্ষা পাশ করার ফন্দিফিকির শিখিয়েছি। বিদ্যালয় ব্যবস্থার তাঁবে গ্রাসাচ্ছাদন চালিয়েছি। যদিও স্বেচ্ছায় নয়, নীরবেও নয়। এটা ওটা পরীক্ষা করে, ওরই মধ্যে সীমিত সাফল্য পাইনি এমনও নয়। কিন্তু ব্যবস্থাটা এতই অনড় যে সেখানে একক ভাবে স্থায়ী কোনো দাগ কাটা অসম্ভব। দীর্ঘদিন কিছু প্রথা-বহির্ভূত শিক্ষাকেন্দ্রে আমাদের ভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করে কিছুটা সফল হয়েও এই ধারণা হয়েছে যে মানুষ কিন্তু প্রথাগত “শিক্ষা” চায়, “পাশ” করতে চায়। এই ব্যবস্থায় যথার্থ জ্ঞানার্জন অসম্ভব একথা জেনেও মানুষকে মানতেই হয়, এই শিক্ষা ছাড়া জীবন-জীবিকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। কিন্তু অনেকে আবার ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে, না বুঝেই এই ব্যবস্থায় আস্থা রাখেন। যে জন্যই হোক, মানুষের মধ্যে শিক্ষার চাহিদা আছে। সে কথা না ভেবে এগোলে কাজ যে হয় না, তা আমি দেখেছি। মানুষের উপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া তো যায় না। তাছাড়া, যতক্ষণ এই ব্যবস্থা বহাল থাকছে, মানুষ কোনো বিকল্প না পাচ্ছে, ততক্ষণ উন্নততর ব্যবস্থার কথা বলা অর্থহীনও বটে। তবে আবার এও দেখেছি, পড়ানোর ভিন্ন পদ্ধতি পেলে মানুষ তা গ্রহণ করতে দ্বিধা করেন না।
    আমাদের উদ্দেশ্য সাধিত হবে কোনো একদিন। কিন্তু আপাতত আমাদের চাওয়া বেশ সীমিত। আমরা চাইছি, লেখাপড়া করা ছাড়াও, আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা ভদ্র (আমাদের ধারনা অনুযায়ী “সহবত” অর্থে), দায়িত্বশীল, মনোযোগী, শারীরিক মানসিক ভাবে সুস্থ সবল, নিজেদের চারদিকের পরিচ্ছন্নতায় আগ্রহী, কুসংস্কারমুক্ত, যৌথতায় বিশ্বাসী, সৎ, স্পর্শময় বাস্তব থেকে বিমূর্ত ধারনায় পৌঁছতে সক্ষম ব্যক্তি হয়ে ওঠার দিকে এগোতে শিখুক। এগুলো খুব কম চাওয়া হল না কিন্তু। তবু, আমরা এই চাই। আমরা বিশ্বাসও করি এই চাওয়া পূর্ণ হওয়া অসম্ভব নয়। আমরা এই স্বল্প সময়েই তার সম্ভাবনা মূর্ত হতে দেখেছি।
    আগে উল্লিখিত কারনে, আমাদের মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক প্রভৃতি চক্করে থাকতেই হচ্ছে। তার ফলে আমাদের নিজস্ব পন্থার শিক্ষাধারা ব্যাহত হবে। কিন্তু, আমরা তো আমাদের প্রয়োগ করা জ্ঞানার্জনের পদ্ধতিটাই আলাদা এবং সঠিক বলে মনে করি, যে পদ্ধতি বিষয়কে হৃদয়ঙ্গম করায়, মুখস্ত করায় না। যে শিক্ষা পড়ুয়ার পেটে জ্ঞান “গুঁজে” দেয় না, হজম করাবার চেষ্টা করে না। শিক্ষা যেখানে হয় পারস্পরিক কথপোকথনের, আদানপ্রদানের মাধ্যমে, শিক্ষাব্রতী আর শিক্ষার্থীর পারস্পরিক জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে। সেই জন্যে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের পদ্ধতিকে জ্ঞানার্জনের হাতিয়ার করে নিয়ে পড়তে গিয়ে কার্যক্ষেত্রে আমাদের ছেলেমেয়েরা অন্য সবার চাইতে বেশি দক্ষ হয়ে উঠবে। গত এক বছরে শ্রমজীবী বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েদের প্রগতি যাঁরা লক্ষ্য করেছেন, তাঁরা একথা মানবেন। এমন দাবী করা হচ্ছে না, যে অগ্রগতির গতি আর ধরণ বিস্ময়কর। তা মোটেই নয়। অনেক হেঁচকি আছে, অনেক হোঁচট, অনেক বিফলতা। আমাদের প্রাথমিক ভুলগুলোই তো এখনও শুধরে উঠতে পারিনি। আমাদের, শিক্ষাব্রতী বলি যারা নিজেদের, এখনও তো অনেক কিছু শেখা বাকি।
    এই উদ্দেশ্য সাধিত হবে কী করে? কোনো হঠাৎ আলোর ঝলকানি করে দেবে না এই কাজ। এর জন্য দরকার লাগাতার কাজ, অক্লান্ত, ধৈর্যশীল, যাকে বলা যায় "বোরিং" দৈনন্দিন কাজ। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষাব্রতীদের প্রাত্যহিক দেওয়ানেওয়া চালিয়ে যাওয়া, পারস্পরিক ভালবাসা আর আস্থা গড়ে তোলা, যে ভালবাসা আর আস্থা বিদ্যায়তন ব্যবস্থায় প্রায় অলভ্য। কাজটা শুধু যে কঠিন তাই নয়, একেবারে, যাকে বলে "গ্ল্যামার"-হীন। শিক্ষক হিসেবে নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। সেটা কতটা কঠিন তা তো প্রতি মুহূর্তে দেখতে পাচ্ছি আমরা।
    উদ্দেশ্য যেখানে এমন, সেখানে বিদ্যালয় চালানো এবং শিক্ষণ পদ্ধতি স্বভাবতই স্বতন্ত্র। শিক্ষণ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা এখানে করছি না। তার পরিসর অন্য। পরবর্তীতে তা করা হবে। বিদ্যালয় চালানোর কিছু পদ্ধতির কথা বলে এই নিবন্ধ থামবে। চেষ্টা চলছে সেগুলো কার্যকর করার। সবটা সফল হয়নি। আগেই বলেছি, তার অন্যতম প্রধান কারণ আমরা শিক্ষকরা। যতই বলি না কেন, আমরা এখনো সারা জীবনের অভ্যেস ছাড়তে পারিনি।
    যেসব নিয়ম বা পদ্ধতি এখানে চালু করার চেষ্টা চলেছে গত এক বছর ধরে সেগুলো আপাতত বলে নেওয়া যাক।
    শ্রমজীবী বিদ্যালয়ে ছাত্ররা চুপ করে বসে থাকে না। তাদের উৎসাহ দেওয়া হয় কথা বলতে, শিক্ষকের সঙ্গে কথপোকথন চালাতে। ফলে শৃঙ্খলার ধারণাটা এখানে অন্য। চুপ করে বসে থেকে কতগুলো নিয়ম যান্ত্রিক ভাবে মেনে চলা শাস্তির ভয়ে – একে এখানে শৃঙ্খলা বলা হয় না। আমাদের শ্রেণিকক্ষ দেখে প্রথমে দেখে মনে হতেই পারে কী হচ্ছে এসব বাঁদরামি। কিন্তু একটু খেয়াল করলে অন্য রকম কিছু চোখে পড়বে।
    এখানে কোনো শাস্তি দেওয়া হয় না। ধমক যদি দেওয়াও হয়, সেটা এতটাই সস্নেহ হয় যে ছাত্ররা তাকে খুব পাত্তা দেয় না বোধ হয়। গায়ে হাত তোলার বা অপমানজনক কথা বলার তো প্রশ্নই ওঠে না। যাঁরা এই নিয়ম লঙ্ঘন করবেন, তাঁদের শ্রমজীবী বিদ্যালয়ে স্থান পাওয়া উচিত নয়।
    এখানে কোনো পাঠ্যপুস্তক নেই। প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে কিছু কিছু লেখা গড়ে উঠছে (ভাষার ক্ষেত্রে) যা পরে বই হয়ে উঠতে পারে, হাতে-কলমে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রূপ নিচ্ছে বিভিন্ন সূত্র (বিজ্ঞানের আর অঙ্কের ক্ষেত্রে), ইতিহাস বা ভূগোলের ক্ষেত্রে নিজস্ব পারিপার্শ্বিক থেকে, চলিষ্ণু জীবন থেকে যাত্রা শুরু হচ্ছে। পরিবেশ নিয়ে ছাত্ররা নিজেরাই ভাবছে, কখনো কখনো শিক্ষককেই শিক্ষিত করছে ছাত্ররা। সব বিষয়েই।
    সকালে এখানে ভাষার চর্চা বসে। বাংলা, সাঁওতালী, ইংরেজি, হিন্দি – সব ভাষা নিয়ে কথপোকথন চলে। সাঁওতালী শেখায় একজন সাঁওতালী ছাত্র।
    এখানে কোনো পরীক্ষা নেই। প্রত্যেক ছাত্রের জন্য আলাদা রকম মূল্যায়ণ। প্রশ্ন ধরে সময় ধরে কে কে কী কী পারছে না, সেটা দেখা হয়। মূল্যায়ণ কেবল মাত্র কাকে কোন বিষয় আরো ভালো করে শেখাতে হবে, সেটা দেখে নেবার জন্য।
    এখানে পাশ ফেল নেই। প্রথম দ্বিতীয় হওয়া নেই। কেউ বেশি পারে কেউ কম। তাতে কিছু আসে যায় না। যে কম পারে, তাকে সাহায্য করে বাকিরা। এই সাহায্য করাতেও কেউ এগিয়ে কেউ পিছিয়ে। সেটাও তো শেখার বিষয়। প্রতিযোগিতার ধারণাটাকেই প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। আমি একবার ভুল করে বলেছিলাম প্রতিযোগিতার কথা, ক্লাসের সব চাইতে বিচ্ছু ছেলেটাই আমাকে শুধরে দিয়েছিল।
    বিদ্যালয়ের যা কিছু সম্পত্তি তার সবই থাকে ছেলেমেয়েদের জিম্মায়। বই, অভিধান, খাতাপত্র, কম্পিউটার, প্রোজেক্টর, সবই দেখাশুনা করে তারা। আজ অবধি সামান্যই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিদ্যালয়ের। শিক্ষার্থীরা হাসিমুখে দায়িত্ব নিয়েছে, দায়িত্ব পালন করেছে।
    বিদ্যালয় ভবনের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব ওদেরই। নিজেদের ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাও ওরাই খেয়াল রাখে।
    ঝগড়াঝাটি মারামারি খুনসুটি করে না ওরা? করে বৈকি? নিজেরাই "যুক্তি" করে সে সব মিটিয়ে নেয় ওরা। হস্তক্ষেপ করতে যে হয় না তা নয়। কখনোসখনো হয়। আমরা খেয়াল রাখি, ওদের শৈশব যেন বৃথা না যায়।
    এগুলো সবই প্রাথমিক পদক্ষেপ। দেখা যাক আমরা কতটা এগোতে পারি।
    সব ভালো? সব সুন্দর? তা নয়। অনেক সময় হতাশ লাগে। আমরা কি ব্যর্থ হচ্ছি? পরক্ষণেই একটা আলো কোথাও জ্বলে ওঠে দপ করে, নতুন করে জোর পাই আবার।
    বিখ্যাত শিক্ষাবিদ পাউলো ফ্রেইরে লিখছিলেন, "পেডাগজি অব হোপ", আশার শিক্ষাতত্ত্ব। তাঁর বন্ধুরা প্রশ্ন করেছিলেন, "আশা? ব্রাজিলের এই পূতিগন্ধময় নর্দমায় আশা?" পাউলো বলেছিলেন, এটাই তো আশার কথা বলার উপযুক্ত জায়গা।
    ব্রাজিলের চাইতে পশ্চিমবঙ্গ কি পিছিয়ে নাকি?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৪ জুন ২০১৪ | ১৪৯৭ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    কমলাদি - Salil Biswas
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Salil Biswas | ***:*** | ০৫ জুন ২০১৪ ০৩:২৯73378
  • কল্লোল। আকারে বাড়াবার ইচ্ছে নেই আমার। কিন্তু এইট নাইন হতেই নতুন এইট এসে ঢুকে পড়েছে। দেখা যাক কী হয়। সমস্যা এখনও আকারের নয়, আমাদের নিজেদের। আমি চেষ্টা করছি, সেইখানে সচেতনতা বাড়াতে। সে চড়াই বেয়ে ওঠা দুরূহ কাজ। হাল ছাড়ছি না।
  • কল্লোল | ***:*** | ০৫ জুন ২০১৪ ১০:১৫73377
  • সলিলদা। বাসুর কাছে আগেই শুনেছি আপনাদের উদ্যোগের কথা। আপনারা আরও একটা বারবিয়ানা স্কুল গড়ে তুলছেন।
    আমার শুধু একটাই বলার আছে। স্কুলটি যেন আকারে না বাড়ে। নইলে বাড়তে বাড়তে একদিন আজকের বিশ্বভারতী হয়ে যাবে।
    আকারে বাড়লে কি হয় সেটা হয়তো রোজই ওখানে পড়াতে গিয়ে উপলব্ধি করছেন।
  • bhaswati | ***:*** | ১৪ জুন ২০১৪ ০৪:১৪73379
  • ek din jabar khub ichchhe. apnara ki roj jan?
  • সলিল | ***:*** | ১৮ জুন ২০১৪ ০৪:২৬73381
  • ভাস্বতী - আমি বুধ শুক্র যাই। অন্যদিন আরও অনেকে যান।
    অ্যাম -- শ্রদ্ধা এখুনি জানাবেন না ভাই। বড্ড শৈশব এখনও। প্রশ্ন মতামত বিনিময়ের জন্য খুব আগ্রহী আমরা। প্রশাসন আর পদ্ধতিতে সমন্বয় নিয়ে এখনও সমস্যা নেই। দুর্বলতাগুলো বিষয়ে আমরা সচেতন, কিন্তু আপনাদের সাহায্য চাই।
  • am | ***:*** | ১৮ জুন ২০১৪ ০৫:৫১73380
  • apnar lekhati pore bhalo laglo. anek proshno o motamat binimoy er abokash roilo. Paolo Frier er adorshe satyi kichhu korar prochesta ke sroddha janachchhi.
    proshashonik o shikshon poddhotir samonwoy na hole poddhoti ki byartho habe na?
  • কল্লোল | ***:*** | ১৯ জুন ২০১৪ ০৩:১৩73382
  • একটা ঘটনা (অন্য এক শিক্ষক বাসুদেব ঘটকের কাছে শোনা) মনে হয় ভাগ করে নেওয়াটা মজার হবে।
    এই স্কুলে একটা লাইব্রেরী আছে। তাতে সিক্ষকেরা বই বিলি করে থাকেন। বইএর নাম, কে নিচ্ছে এই সব লিখে রাখা হয়। এক শিক্ষক একদিন বই বিলির দায়িত্বে ছিলেন। উনি লিখে রাখছিলেন বইএর নাম, কে নিলো ইত্যাদি। এক ছাত্র ওনার হাতের লেখা দেখে সেই শিক্ষককে রীতিমত ধমক,
    - আপনি আমাদের রোজ বলেন হাতের লেখা ভালো করতে! আর আপনার হাতের লেখা এতো বাজে!
    এখন বিষয় হলো সেই শিক্ষকের বয়স হয়েছে, তার উপর সম্ভবতঃ নার্ভের কোন সমস্যা হয়েছে। ফলে লিখতে গেলে হাত কাঁপে।
    শিক্ষক সেদিন খুব গর্ব করে বলেছিলেন যে, আমাদের শিক্ষা কাজে দিচ্ছে। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের অধস্তন-ঊর্ধতন ধারণাটিকে ধাক্কা দেওয়া গেছে। ছাত্র শিক্ষককে ধমক দিতে কসুর করছে না।

    বিধিবদ্ধ সতর্কিকরণ -
    এর সাথে ছাত্র সংগঠনগুলির, শিক্ষকের সাথে দুর্ব্যবহার গুলাইবেন্না
  • Atoz | ***:*** | ১৯ জুন ২০১৪ ০৫:১৮73383
  • এই শ্রমজীবী বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী কারা? তারা কি আংশিক সময়ের ছাত্র নাকি পুরো সময়ের? আসলে বুঝতে পারছি না লেখাটা থেকে যে এই ছাত্রছাত্রীরা এমনিতে কোনো অন্য কাজ করে কিনা আর বাকী সময় পড়তে আসে কিনা?
  • সলিল | ***:*** | ২১ জুন ২০১৪ ০৬:৩০73384
  • Atoz - ছাত্ররা স্কুলেই থাকে। আবাসিক স্কুল। তাই একে ২৪ ঘন্টার স্কুল বলা চলে। ছাত্র নির্বাচনের একটি মানদন্ড হল তাদের অর্থনৈতিক প্রান্তিকতা।
  • Atoz | ***:*** | ২১ জুন ২০১৪ ০৯:২৩73385
  • ধন্যবাদ। পড়তে পড়তে একেক বার আবাসিক বলে মনে হচ্ছিল, কিন্তু নিশ্চিত হতে পারছিলাম না।
  • Sumita Sarkar | ***:*** | ০৪ জুন ২০১৫ ১২:৩১73386
  • কোনো কারণে নতুন লেখা জগ করার লিঙ্ক আসছহে না ... মুশকিল ... কি করি কেউ একটু বলবেন?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন