এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মাসকাবারি বইপত্তর - ১

    লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২১ আগস্ট ২০১৪ | ৮১৪ বার পঠিত
  • এই কিছু বছর ধরে আমার স্বভাব এমন পল্লবগ্রাহী হয়েছে, একসাথে দুই তিনখানা বই, কখনও বা চার পাঁচখানাও একসাথে শুরু করি, তারপর তারা বিভিন্ন সময়ে পড়া শেষ হয়৷ হঠাৎই মনে হল প্রতি মাসের শেষে কোনগুলো শেষ হল আর কেমন লাগল তার একটা হিসাব রাখলে মন্দ হয় না৷ নিতান্তই আটপৌরে এই পড়ার ইতিহাস একেবারেই নিজের জন্য লিখে রাখা৷

    ১) ‘বড়ো বাড়ির ছোটো স্মৃতি' - স্মৃতি মিত্র
    ২) ‘আমার সংসার' - শরৎকুমারী দেব
    ৩) স্মৃতির সৌরভ' - কল্যাণী সুর
    ৪) 'আশকথা পাশকথা' - মন্দার মুখোপাধ্যায়
    ৫) 'ছড়াসমগ্র' - শঙ্খ ঘোষ
    ৬) 'আত্মকথা' - সারদাসুন্দরী দেবী
    ৭) পরিবেশের জাতপাত - মোহিত রায়
    ৮) ‘পূর্ববঙ্গীয় কথ্য ভাষা'-কোরক সাহিত্য পত্রিকা –প্রাক-শারদ সংখ্যা

    ‘বড়ো বাড়ির ছোটো স্মৃতি' - স্মৃতি মিত্র

    কলকাতার যে প্রাচীন পরিবারগুলো খুব বিখ্যাত, তাদেরই একটি পাথুরিয়াঘাটার ঘোষ পরিবার৷ সেই পরিবারের মেয়ে স্মৃতির বিয়ে হয়েছিল আরেক অতি বিখ্যাত পরিবার, রাজা দিগম্বর মিত্রের বংশধরের সাথে৷ এই দুই পরিবারের সাবেকি জীবনযাত্রার অন্তরঙ্গ বিবরণ 'বড়ো বাড়ির ছোটো স্মৃতি'৷ স্মৃতি মিত্রের কন্যা সীতা ও নাতনি সুকন্যার সৌজন্যে স্মৃতিদেবীর এই ব্যক্তিগত আখ্যানটি প্রকাশ পেয়েছে৷ সঙ্গে আছে কিছু দূর্লভ আলোকচিত্র৷ সেকালের জীবনযাত্রা, একাধিক কন্যা থাকা সত্ত্বেও অপুত্রক হলে দত্তক নেওয়ার প্রথা এবং সেজন্য উদ্ভুত বিচিত্র বৈষয়িক সমস্যা, মামলা মকদ্দমা, বিভিন্ন উপলক্ষ্যে জাঁকজমক, ঠাটবাট ইত্যাদির জমজমাট বর্ণনা আছে এই বই জুড়ে৷ পড়তে ভালই লাগে৷ আত্মীয়দের মধ্যে মামলা মকদ্দমা বা নিজের দিদিমা, মামাদের লোভ ইত্যাদির মত অপ্রিয় বিষয়গুলি স্মৃতিদেবী এড়িয়ে যান নি৷ এইজন্য বইখানা আমার কাছে আকর্ষণীয় লেগেছে৷

    ‘আমার সংসার' - শরৎকুমারী দেব

    ব্রাহ্মসমাজের নেতা শিবচন্দ্র দেবের পুত্রবধু শরৎকুমারী দেবী৷ শরৎকুমারীর জন্ম হয়েছিল ১৮৬১, মৃত্যু ১৯৪১৷ রবীন্দ্রনাথের সাথে জন্ম ও মৃত্যুর বছর একেবারে মিলে যাওয়াটা বেশ ইন্টারেস্টিং৷ শরৎকুমারীর শ্বশুর শিবচন্দ্র দেব ও দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু৷ শিবচন্দ্রের পুত্র সত্যপ্রিয় দেবের মৃত্যুর পর শরৎকুমারী এই স্মৃতিকথাটি লেখেন৷ নিতান্ত পাতলা ৪৩ পৃষ্ঠার বই৷ বইটা কৌতুহলপ্রদ, কারণ যে পটভূমিতে বইটি লেখা সেটি দেশের সামাজিক সাংস্কৃতিক ইতিহাসে, বিশেষত ব্রাহ্ম আন্দোলনের ইতিহাসে স্মরণীয় যুগ৷ বইটি সেই ইতিহাসের উপরে কিছু আলোকপাত করে৷ বইটির লেখার ধরণ একটু আড়ষ্ট, বিশেষ করে একেবারে পতিদেবের ছায়া হয়ে থাকা শরৎকুমারীর লেখায় একটা একপেশে ব্যপার আছে৷ আবার শরৎকুমারীর পিতা গোঁড়া হিন্দুসমাজের গণ্ডীর বাইরে এসে নিজের বিশ্বাসমত ব্রাহ্ম পদ্ধতিতে কন্যার বিয়ে দিয়ে কি পরিমাণ বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন সেই বর্ণনা আকর্ষণীয়৷ এই বইটির একটি আকর্ষণীয় দিক হল এর প্রচ্ছদ৷ হঠাৎ দেখলে মনে হয় ঈষৎ কোঁচকানো খদ্দরের আংশ বুঝি৷ স্বামীর ছায়াসদৃশ শরৎকুমারী যেন স্মৃতিকথাটি তাঁর স্বামীর সদ্য ছেড়ে যাওয়া পাঞ্জাবীর মধ্যে ভরে দিয়েছেন৷

    ‘স্মৃতির সৌরভ' - কল্যাণী সুর

    স্মৃতিকথাগুলির কোন কোনওটাতে শুধু যিনি লিখছেন তাঁর ও তাঁর আত্মীয় পরিজনের কথা থাকে, কোনও কোনওটিতে আবার তাঁর দেখা জীবন ও লোকজনের কথাই বেশী থাকে৷ কল্যাণী সুরের বইটি এই দ্বিতীয় গোত্রের৷ তাঁর শৈশব, কৈশোর কেটেছে গান্ধীবাদি পিতা ও স্বদেশী মন্ত্রে দীক্ষিত মানুষজনের সংস্পর্শে, শান্তিনিকেতনের প্রকৃতি সাহচর্য্যে, রবীন্দ্রনাথকে দেখার অপার সৌভাগ্যে৷ সেইসময়ের মধুর স্মৃতি তাঁকে ভুলিয়ে রেখেছে বিবাহপরবর্তী তিক্ত অভিজ্ঞতার সময়েও৷ কোনও তিক্ততার কথা তিনি লেখেন নি বইটিতে৷ শুধু শুনিয়ে গেছেন আনন্দের কথাগুলো, আদর্শের কথাগুলো৷ প্রসঙ্গত: একবার এসেছে বিবাহ পরবর্তী জীবনে তাঁর একবার কাঁকের মানসিক চিকিৎসালয়ে বাস করার গল্প৷ কিন্তু তার আগে পরে আর কিছুই বলা নেই৷ ফলে একধরণের অতৃপ্তির সৃষ্টি হয়৷ অপ্রিয় বিষয়গুলি এড়িয়ে যাওয়া ছাড়া বইটি চমৎকার৷ মানবীবিদ্যার পাঠেও এ বইটি উল্লেখযোগ্য লেখিকা ও তাঁর মায়ের কারণে৷

    'আশকথা পাশকথা' - মন্দার মুখোপাধ্যায়

    'আশকথা পাশকথা' খানিকটা কলাণী দত্ত'র 'থোড় বড়ি খাড়া' ধরণের বই৷ সেকালের যেসব জিনিষ, আচার আচরণ এখন আর তেমন দেখা যায় না, তাই নিয়ে কলাম গোছের লেখা৷ কিন্তু এই বইটি ভারী সুখপাঠ্য৷ ছোট্ট নোটবইয়ের আকারে, হালকা কমলারঙা কাগজে ছাপা বইটির মুদ্রণসৌকর্য্যও দেখবার মত৷ মন্দার মুখোপাধ্যায়ের লেখার গুণে 'জামাইষষ্ঠী'র মত নিতান্ত জানাশোনা ব্যপারগুলোও পড়তে দিব্বি লাগে৷

    ‘ছড়াসমগ্র’ - শঙ্খ ঘোষ

    এই বইটা বেশ কিছুদিন ধরেই ঘুরে ফিরে পড়ে গেছি৷ আরও পড়ব অনেকবার নিশ্চয়৷ এই শঙ্খ ঘোষ ভদ্রলোক যে শব্দ নিয়ে কি করতে থাকেন ---- অবিশ্বাস্য!! বইটা দে'জ পাবলিশিঙের, দাম ২০০/-৷ হার্ডকভারে বাঁধাই, ডাঁসা পাতিলেবুর সবুজে হলুদে মেশানো মলাটে দেবব্রত ঘোষের প্রচ্ছদ একেবারে যথাযথ৷ ভেতরে অলংকরণও দেবব্রত ঘোষেরই করা৷ ভারী সুন্দর ছিমছাম কাজ৷ শঙ্খ ঘোষের্ ছড়া নিয়ে আমি আর কী-ই-বা বলতে পারি ---- দু'চারটে উদাহরণ দিই বরং৷
    বইয়ের দ্বিতীয় কবিতা এটা:

    উলুকঝুলুক শুলুক পাতায়
    কণ্টিকারি ফুল
    হরেকরকম আলসে কথা
    পোড়োবাড়ীর ঝুল
    শ্যাওড়াগাছের টনক নড়া
    বদ্যিভিটের ভুত
    চাঁদনীরাতে কুলপি গড়ায়
    আস্ত তিরিশ ফুট
    --------------
    --------------
    -------------- (আরো দুই প্যারা আছে, টুকতে আলসেমি লাগছে)
    কিম্বা ধরুন তার পরের কবিতাটা

    চাকুমচুকুম বাকতাল্লা
    অন্ধকারের ছা
    গাবুসগুবুস ইয়া আল্লা
    ডুবল ভরা না'
    পৈঠাতে পা ফিনিকঝিনিক
    ইস্কাপনের বিবি
    জলের থেকে তুলতে পারি
    বল আগে কী নিবি?

    'ছড়া' জিনিষটা যদিও একেবারে বাচ্চাদের জন্যই সাধারণত: লেখা হয়, কিন্তু এই বইয়ের বেশ কিছু ছড়া একেবারে বাচ্চাদের জন্য ঠিক নয়, বরং আমাদের মত বড়দের কাছেই বেশী উপভোগ্য হবে বলে মনে হয়েছে আমার৷ কিন্তু এই বই পাশে রাখুন, পড়তে থাকুন৷

    'আত্মকথা' - সারদাসুন্দরী দেবী

    ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র সেনের মা এই সারদাসুন্দরী দেবী৷ সারদাসুন্দরী এই আত্মকথাটি নিজে হাতে লেখেন নি, মুখে মুখে বলে গেছেন, যোগেন্দ্রলাল খাস্তগীর শুনে শুনে লিখে নিয়েছেন৷ বইটার ইন্টারেস্টিং ব্যপার হল, সারদাসুন্দরী অত্যন্ত ধার্মিক এবং সেজন্য তাঁর ভাশুর যখন তাঁকে ও তাঁর ছেলেদের সম্পত্তি ও এজমালি জিনিষপত্র থেকে বঞ্চিত করছেন, তিনি সেটা অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে মেনে নিচ্ছেন৷ ছেলেদেরও কোর্টকাছারি করা থেকে বিরত করছেন৷ কেশবচন্দ্র সেনের জীবনের খুঁটিনাটি কিছু বর্ণনা আছে বইটয়৷ সব মিলিয়ে খুব যে সুখপাঠ্য তা নয়, তবে আগ্রহোদ্দীপক৷

    ‘পরিবেশের জাতপাত’ - মোহিত রায়

    সবাই চায় সুন্দর পৃথিবী, সবুজ অরণ্য, নীল আকাশ, দূষণহীন পরিবেশ৷ টিভিতে, খবরের কাগজে বা এনজিওদের প্রচারপত্রে পরিবেশ ও উন্নয়নের পবিত্র আহ্বান৷ এ সবের ঢক্কানিনাদে ঢাকা পড়ে যায় গরিব মানুষের পরিবেশ সমস্যার কথা৷ হারিয়ে যায় তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের চেষ্টা৷ পেশায় পরিবেশ উপদেষ্টা মোহিত রায় জোরগলায় জানান পরিবেশেরও জাতপাত আছে৷সারাদিন রোদে পুড়ে জলে ভিজে যে নারী সুন্দরবনে মীন ধরেন, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়লে তাঁর কোন লাভই নেই, বরং ক্ষতি হবার সম্ভাবনা আছে৷ গ্রাম থেকে আসা এক ছাত্রী তাঁকে বলেছিল বিশেষ কোন জীববৈচিত্র্য ছাড়াই যদি তাঁরা কলকাতা শহরে ওদের চেয়ে অনেক বেশী ভাল থাকেন, তাহলে ওদের গ্রামেই বা কেন জীববৈচিত্র্যকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে? খুব একটা সন্তোষজনক উত্তর যোগায় নি তাঁর মুখে৷ অনেক পরিবেশবিদ যখন পরিবেশের উপর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন, তখন এটা ভুলে যান যে আমাদের দেশের সব ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছতে হলে আমাদের এখনও আরও অনেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে৷ব্যপারটা অনেকটা যে চারবেলা পর্যাপ্ত খাবারই যোগাড় করতে পারে না, তাকে ডায়েটিঙের প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর মত৷

    এই বইটি মোহিত রায়ের প্রবন্ধ সংকলন৷ এতে মোট ১৭টি প্রবন্ধ আছে৷ প্রতিটি প্রবন্ধই সুলিখিত ও তথ্যসমৃদ্ধ৷ পরিবেশের দোহাই দিয়ে গরিব উৎখাতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এবং হেরে যাওয়ার কিছু ঘটনারও বিস্তৃত উল্লেখ আছে৷ যেমন রবীন্দ্রসরোবর বা সাউথ সিটির ঘটনা৷সব মিলিয়ে অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি প্রবন্ধ সংকলন৷

    ‘পূর্ববঙ্গীয় কথ্য ভাষা' - কোরক সাহিত্য পত্রিকা –প্রাক-শারদ সংখ্যা :

    কোরক পত্রিকার এই সংখ্যাটি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কথ্য ভাষার স্বরূপ সংগ্রহ করেছে৷ বইটি মোটামুটি তিনটি অংশে বিভক্ত বলা যায়৷ প্রথম অংশে বাংলাদেশের জেলাগুলিতে মানুষের ব্যবহৃত মুখের ভাষার চেহারা ও চরিত্র অনুসন্ধান করা হয়েছে৷ দ্বিতীয় অংশে রয়েছে বিভিন্ন লেখকের উদ্ভাবিত শব্দ, সাহিত্যে ব্যবহৃত ভাষা বিষয়ে তথ্যনিষ্ঠ আলোকপাত৷ রবীন্দ্রনাথ থেকে বিষ্ণু দে, জীবনানন্দ পর্যন্ত বহু কবি, গদ্যকার সচেতনভাবে বহু শব্দ সৃষ্টি করেছেন৷ সেইসব সৃষ্ট শন্দ, ব্যবহৃত ভাষা শুধু বাংলা সাহিত্যে বৈচিত্র এনেছে তাই না, আমাদের আভিধানিক পরিসরেরও বৃদ্ধি ঘটিয়েছে৷ তারই বিস্তৃত বিবরণ উঠে এসেছে এই অধ্যায়টিতে৷ তৃতীয় অংশটি বঙ্গীয় শব্দকোষপ্রণেতা হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর একটি ক্রোড়পত্র৷

    আমার ব্যক্তিগতভাবে দ্বিতীয় অংশটি সবচেয়ে আকর্ষণীয় লেগেছে৷ এই অংশে রবীন্দ্রনাথ, সুকুমার রায়, মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন এটা প্রত্যাশিতই ছিল৷ কিন্তু সৈয়দ মুজতবা আলী, দীপ্তেন্দ্রকুমার, তারাশঙ্কর এবং সুধীন্দ্রনাথ দত্তর শব্দ ও ভাষাশৈলী নিয়ে আলোচনাগুলি নতুন আলোকপাত করেছে৷ এছাড়া মধুসুদন দত্ত, নজরুল, অবধুত, জীবনানন্দ, বনফুল ইত্যাদির ওপর লেখাগুলিও বেশ৷ ,

    বঙ্গীয় শব্দকোষ প্রণেতা হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধার্ঘ্য অংশটিতে সংকলিত হয়েছে অমিতাভ চৌধুরী, হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, দেবাঙ্গন বসু, পরিমল গোস্বaমী ,নির্মল দাশ ও নির্মলকুমার নাগের লেখা ছয়টি প্রবন্ধ৷ সাথে বাড়তি পাওনা রয়েছে বিশ্বভারতী পত্রিকায় ১৩৫৬ সনে প্রকাশিত বঙ্গীয় শব্দকোষের একটি বিজ্ঞাপন৷

    কোরকের এই সংখ্যাটি নি:সন্দেহে সংগ্রহযোগ্য৷
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২১ আগস্ট ২০১৪ | ৮১৪ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ishan | ***:*** | ২১ আগস্ট ২০১৪ ০৩:৪২73520
  • এই তো এসে গেছে।
  • pi | ***:*** | ২১ আগস্ট ২০১৪ ০৫:৩৪73521
  • এই পরিবেশের জাতপাত বইটা পড়তে হবে। কয়েকজনের কাছে এটার কিছু সমালোচনাও শুনেছি। এমনিতে সিরিয়াস পরিবেশ আন্দোলনের সাথে প্রান্তিক মানুষের জীবনধারণের সমস্যার দ্বন্দ্ব খুব বেশি দেখিনি, বরং উল্টোটাই দেখেছি। পরিবেশের ইস্যুর সাথে সাথে মানুষের জীবন জীবিকা রক্ষার প্রসঙ্গও আসতে দেখেছি। ফরেস্ট রাইটস অ্যাক্ট একটা ভালো উদাঃ । ভূমিপুত্রদের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের অধিকারের স্বীকৃতি রয়েছে এই অ্যাক্টে। এতে কিছু শৌখীন পরিবেশপ্রেমী বা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদে মতন বাইরের লোকজন মনে করেন এতে বোধহয় বন জঙ্গল সব গেল, গেল। কিন্তু পরিবেশ ও অধিকার নিয়ে সিরিয়াস চর্চা ও আন্দোলনকারীদের এটাকে সমর্থন করতেই দেখেছি। জানিনা, এই ইস্যুগুলো বইটাতে এসেছে কিনা।
  • pi | ***:*** | ২১ আগস্ট ২০১৪ ০৫:৪৮73522
  • জয়াদির সাথে এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। জয়াদির লেখাটাও পেয়ে গেলাম।
    http://archives.anandabazar.com/archive/1110924/24pustak1.html

    এটার কিছু অংশ রইলো। এই সমালোচনা নিয়ে দমদি বা বাকি যাঁরা পড়েছেন, তাঁদের কী মত ?

    'লেখাগুলি তথ্যে ঠাসা। যদিও কখনও কখনও সে তথ্য কিছুটা একদেশদর্শী, ফলে বিভ্রান্তিজনক। এবং, সমস্ত বইটি জুড়ে লেখক নিজস্ব মতামত প্রায় পিতৃতান্ত্রিক ধরনের জোরের সঙ্গে, পরমতঅসহিষ্ণু ভাবে প্রকাশ করেছেন। আধুনিক পরিবেশ ভাবনার বৈশিষ্টই নম্রতা, মতানৈক্যের প্রতি সহনশীলতা, সেটি আলোচ্য বইয়ে চোখে পড়ে না। যেমন ধরা যাক, আজকের পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে যে অত্যন্ত জরুরি বিষয় নিয়ে, তা হল কৃষি। এই কৃষি বিষয়ে মোহিত বলছেন, ‘জনবিস্ফোরণ সত্ত্বেও সারা পৃথিবীর খাদ্যের যোগান আজও কমেনি।।। উন্নত বীজ, কৃষিবিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সেচ, সার, কীটনাশক, সব কিছুর যোগাযোগে পৃথিবীর প্রধান দুটি শস্য ধান বা গমের উৎপাদন হার কয়েকগুণ বাড়ানো গেছে’ (পৃ ১০১)। প্রথমত, ‘খাদ্যের যোগান আজও কমেনি’ হিসেবটি তিনি পেলেন কোথায়, যখন কিনা রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে ভারত সরকারের প্রতিটি রিপোর্টেই এর বিপরীত কথা বলা হচ্ছে? আর ‘উন্নত বীজ, কৃষিবিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সেচ, সার, কীটনাশক’! ১৯৮০-র দশকে আ-এর তৎকালীন সচিব জে ওবেইদুল্লা বলেছিলেন, ‘এই জলনিবিড়, কীটপতঙ্গ হত্যাকারী কৃষি ব্যবস্থা থেকে পৃথিবীকে মুক্তি পেতেই হবে।’ ২০০২-এর অগস্ট মাসে বিশ্বব্যাঙ্ক ও ‘ফাও’-এর উদ্যোগে গঠিত কমিটির ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অব এগ্রিকালচারাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফর ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট’-এ জোর দিয়ে বলা হচ্ছে, ‘নতুন বীজ, অফুরান জলের ব্যবহার, কৃষি রাসায়নিক দ্রব্য এবং প্রযুক্তির বিপুল প্রয়োগ সবই কৃষির পক্ষে খারাপ হয়েছে।’ উচ্চফলনশীল কৃষির যে প্রকৃত চেহারা অরুন্ধতী রায় তাঁর গ্রেটার কমন গুড বইয়ে স্পষ্ট করে দেখিয়েছিলেন তা-ও যদি ভুলে যাই, কী করে মুখ ফেরাব এই হিসেব থেকে যে, ১৯৯৭-২০০৭-এর মধ্যে কেবল ভারতবর্ষে আত্মহত্যাকারী কৃষকের সংখ্যা ১,৮২,৯৩৬? এই কি নয়া কৃষির উন্নয়নচিত্র?
    পরিবেশ সমস্যার অন্য দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র বিদ্যুৎ ও দূষণ সম্পর্কেও লেখকের মতামত প্রণিধানযোগ্য। ‘সম্প্রতি এক দশকে পশ্চিমবঙ্গে কিছু শিল্পস্থাপন হচ্ছে। সে সঙ্গে দূষণের মাত্রাও বাড়ছে।।।। পশ্চিমবঙ্গে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের আরও প্রসার (যা কেমিক্যাল হাব বলে পরিচিত) হলে নাকি দূষণে জর্জরিত হয়ে উঠবে রাজ্য। (হলদিয়া শিল্পাঞ্চল কিন্তু এখনই একটি কেমিক্যাল হাব যার দূষণ পরিস্থিতি আদৌ সমস্যা ঘটাচ্ছে না)’ (পৃ ১৪৮)। ২০০৭-এ লেখা এই নিবন্ধে প্রকাশিত চিন্তা বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করেও বলা যায় ‘গুজরাট হাইকোর্ট ও কিছু পরিবেশবাদী’র হস্তক্ষেপে গুজরাটে দূষিত জাহাজ ভাঙার কাজ বন্ধ হওয়াকে কিন্তু শিল্পবিরোধিতা বলেই মনে করেন আমাদের লেখক। কারণ ওই কাজ অনেক মানুষের জীবিকা ছিল (পৃ ১৩৬)। সাম্প্রতিক কাগজের খবর থেকে মেদিনীপুরে অস্ত্র তৈরি করা কত যুবকের জীবিকা ছিল তার একটা হিসেব নেওয়ারও আগ্রহ হতে পারে। গত দুই দশকে বাংলার অন্যতম শিল্প স্পঞ্জ আয়রন কারখানা সম্পর্কে কোনও আলোচনা বা উল্লেখ অবশ্য নেই বইয়ে, কিন্তু নদীজল দূষণের ক্ষেত্রেও বিপদ কেবল মানুষের শরীর-বর্জ্য ঘটিত (পৃ ১৭৯)। নদীতীরে কোনও কারখানা রাসায়নিক বর্জ্য জলে ফেলছে কিনা অথবা বাঁধ কিংবা পাম্প সেচের ফলে নদী কোথাও স্রোতহারা দূষিত কিনাতা লক্ষ করার কোনও প্রশ্ন নেই। ‘যার ঘরে এখনও জ্বলে কেরোসিনের কুপি তার কাছে সৌরবিদ্যুৎ বনাম কয়লার বিদ্যুৎ বনাম পারমাণবিক বিদ্যুতের তুলনামূলক দূষণের চর্চা শুধু অসার নয় অপমানেরও। তার চাই বিদ্যুৎকালকেই।’ (পৃ ১৩২)। শঙ্খ ঘোষের লাইনটি মনে পড়ে, ‘ভিখিরির আবার পছন্দ’। কিন্তু উৎপন্ন বিদ্যুতের কত অংশ বাস্তবে ব্যয় হয় শহরে শহরে রাত আলো করা বিজ্ঞাপনের উদ্ভাসনে, অসংখ্য শপিং মল বাতানুকূল রাখতে আর কতটা যায় গ্রামের কুটিরে আলো জ্বালতে তার কোনও পূর্বিতা কি সত্যিই লেখকের মনে থাকে? হয়ত থাকে না। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎহীন সভ্য মনুষ্যজীবন যাপন সম্ভব? ভারতে মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহারের হার ২৭০ কিলোওয়াট ঘণ্টা।।। ব্রিটেনে ৬০০ কিলোওয়াট ঘণ্টা, এমনকী প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের মতো হতে হলেও মাথাপিছু ৪ গুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। ।।। এ তো আমাদের কালকেই দরকার’ (পৃ ১০৩)। কেন ‘কালকেই’? কী বাস্তবতা এই দাবির? এই প্রসঙ্গে অনেকেরই মনে পড়বে সেই ক্ষীণদেহ মানুষটির কথা যিনি বলেছিলেন, ‘আই ওয়ান্ট আ ইন্ডিয়া মোর ইন্ডিয়ান। ব্রিটেন যে জীবনযাপন করে সে জন্য তাকে অর্ধেকটা পৃথিবীকে উপনিবেশ বানাতে হয়েছে।।।।’ আর এই মানুষটির নাম প্রসঙ্গেই রয়েছে এই বইয়ের সবচেয়ে রূঢ়, অসৌজন্যমূলক পংক্তিটি, ‘গান্ধীবাদী বা আধুনিক পরিবেশবাদীদের চাই।।। দেশজ প্রযুক্তি, দেশজ কৃষির নামে।।। এক দলের বিলাস। এই বিলাস অনেক সময়েই বিদেশি অর্থে লালিত।’ (পৃ ১৩০)।
    আসলে মোহিত বিশ্বাস করেন পরিবেশ নিয়ে ভাবনা করার অধিকার সকলের নেই। তিনি নিজেই ভাগ করেছেন কয়েকজন বিজ্ঞানশিক্ষিত পরিবেশ-বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ আর বাকি সব বিজ্ঞান-না-জানা, আবেগসর্বস্ব হাবিজাবি পরিবেশবাদী যারা কেবল বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে বাধা দেয় আর বিশেষজ্ঞদের কথা শোনে না। পুরো বইটিতে, এমনকী প্রসঙ্গবিহীন ভাবেও, সেই ‘পরিবেশবাদী’দের সম্পর্কে বিদ্রূপ ও বিষোদ্গারে তাঁর ক্লান্তি দেখা যায় না, যদি সেই তীব্রতা তাঁর লেখার সাহিত্যগুণকে ব্যাহত করে, তবুও। ঠিক যে রকম তিনি বিদ্বেষ চেপে রাখতে পারেন না পূর্ববাংলা পরে বাংলাদেশ থেকে এসে পড়া ‘জনপ্লাবন’ কিংবা মুসলমান সমাজের উপর। তিনি বিশ্বাস করেন জ্ঞানও এক ধরনের বিশেষ ক্ষমতা। এটা সকলের আয়ত্তের বিষয় নয়। পিতৃতান্ত্রিক চিন্তাধারায় মোহিত ভাবেন পরিবেশ ও জীবনযাপন সম্পর্কে শেষ কথা তিনিই জানেন, ‘রসাতলের কাছাকাছি রয়েছি আমরা ভারতীয় জনসাধারণ’ (পৃ ১০২), ‘আন্দামানের মুক্ত বন্য জারোয়াদের জীবন আদৌ মানুষের কাম্য নয়’ (পৃ ১৩৪), ‘যে কোনও মানুষই চায় উন্নততর জীবন’ (ঐ)। আর সেই উন্নততর জীবন কেমন? ‘আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হয় যে সুন্দরবনের অরণ্য যদি না থাকে তবে ঝড়ে বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে। তাই নাকি? ভূমিকম্পপ্রবণ জাপানে বহুতল বাড়ি বানানো হচ্ছে অনেক বছর ধরে, সেগুলো সব টপাটপ ভেঙে পড়ছে না। সুন্দরবনের বাসিন্দারা যদি ধনী হন তবে নিশ্চিন্তে পাকা শক্তপোক্ত বাড়ি বানিয়ে থাকতে পারেন, কোনও ঝড়েই কিছু আসবে যাবে না। আর ধনী হতে গিয়ে যদি সুন্দরবনের অরণ্যসম্পদ অনেকটাই ব্যবহার করে ফেলতে হয় তাতে কী আসে যায়। কিছু বাঘ কমে যাবে, তা ইউরোপেও তো বাঘ নেই।’ (পৃ ১৪৮)।
    বিশ্বাস করা যায়, এই সব কথা বলতে পারেন কোনও পরিবেশবিজ্ঞানী?'
  • pi | ***:*** | ২১ আগস্ট ২০১৪ ০৫:৫৯73523
  • আরেকটা জিনিস জানতে চাই। বাংলাদেশ থেকে এসে পড়া লোকজন নিয়েও কি উনি ক্ষোভ দেখিয়েছেন ?
  • I | ***:*** | ২১ আগস্ট ২০১৪ ০৭:০৮73524
  • কী ভয়ঙ্কর কথাবার্তা !
  • I | ***:*** | ২১ আগস্ট ২০১৪ ০৭:৩৮73525
  • তবে ডম এই একটা কাজের কাজ কচ্ছে। আমাদের মত গোলা পাঠকদের হয়ে ধন্যবাদ। প্রতি মাসে আপডেট কোরো। পারলে প্রতি সপ্তায়।
  • byaang | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৪:০৬73526
  • আশকথা পাশকথা মোটেও তেমন ভালো লাগে নি। বড়োবাড়ির ছোটো স্মৃতি বরং বেশি টেনেছিল।
  • byaang | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৪:০৯73527
  • দমুকে থ্যাংকিউ শরৎকুমারী দেব ও কল্যাণী সুরের বইদুটোর খবর দেওয়ার জন্য।
  • লবাতমুন্ডি | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৪:২২73528
  • ভালো দরকার। খুব উপকার হবে আমার। কিন্তু মন্দার মিত্র না মুখোপাধ্যায়?
  • লবাতমুন্ডি | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৪:২৯73529
  • *ভালো ব্লগ। দরকারী।

    কি যে হয়েছে। এত টাইপো। চোখ দেখাতে হবে।
  • byaang | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৪:৫৭73530
  • মুখোপাধ্যায়
  • pi | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৪:৫৯73531
  • ‘পূর্ববঙ্গীয় কথ্য ভাষা' কোথায় পাওয়া যাচ্ছে ?
  • | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৬:২৪73532
  • অ্যালল!! ওটা মুখোপাধ্যায়ই হবে।

    পাইকে রাতে লিখছি।
  • hu | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৬:৪৮73533
  • দমদির ডায়েরীটা ভালো লাগছে। আমাকে "রায়বাড়ি" নামের একটা বইয়ের লেখিকার নাম, পাবলিশারের নামের সুলুকসন্ধান দিতে পারবে? লেখিকা সম্পন্ন একান্নবর্তী পরিবারের গৃহবধূ। বাড়ির নানা পালাপার্বন, আচারবিচারের কথা সুন্দর ঝরঝরে ভাষায় লিখেছিলেন। মিশিগানের একটা লাইব্রেরীতে হঠাৎ হাতে এসেছিল। ডিটেলস একদম ভুলে গেছি। এখন পড়তে ইচ্ছে করে।
  • byaang | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৬:৫২73534
  • গিরিবালাদেবীর লেখা। দেজ পাবলিশার্স।
  • hu | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৬:৫৩73535
  • বাহ বাহ! থেঙ্কুস ঃ-)
  • Suhasini | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৯:৩৫73536
  • প্রথম চার আর ছ'নম্বর বইয়ের প্রকাশক কে?
  • byaang | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ০৯:৪২73537
  • ৪ নম্বরের প্রকাশক গাংচিল।

    কিনিস না। আমারটা নিয়ে নিস।
  • AS | ***:*** | ২২ আগস্ট ২০১৪ ১১:১১73538
  • খুব ভালো লাগল এই না পড়া বই গুলোর সন্ধান দেবার জন্য
  • | ***:*** | ২৩ আগস্ট ২০১৪ ০২:২৫73541
  • হ্যাঁ এইবারে পাইয়ের মূল প্রসঙ্গ সম্পর্কঃ

    প্রথমেই জয়া মিত্র'র লেখাটার জন্য একটা মস্ত ধন্যবাদ। আবাপ'য় এইটা আমার চোখ এড়িয়েছিল।

    যাই হোক জয়াদেবীর তোলা পয়েন্টগুলো ঠিকই আছে। এখন আমরা যাদের গুরুতে 'ব্যাগড়াপন্থী' বলছি তাদের উপর ওঁর খুব রাগ। সেটা বইয়ে বারবার এসেছে। তবে .... তবে ওঁর বক্তব্যের কিছুটা সত্যতা তো আছেই। গাছপালা, বাঘ সিংহ আর মানুষের মধ্যে যদি কখনও প্রায়োরিটাইজেশানের প্রশ্ন আসে তো আমি মানুষের দিকেই হেলে থাকবো।

    ধর কলকাতা আর দচপ'র বিস্তীর্ণ অংশ (রাজারহাট, লাউহাটি, শিকড়পুর, হারোয়া ইত্যাদি ধরে) এই শ'তিনেক বছর আগেও ম্যানগ্রোভের গভীর জঙ্গল ছিল। শুধু রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারই নয় এমনকি একজাতীয় গন্ডারও দিব্বি ঘুরেফিরে বেড়াত। তা এখন তো সেসব পাকা ঘরদোর হয়ে গন্ডার বেমালুম বিলুপ্ত আর বাঘেরা কোণঠাসা হয়ে আছে। তো, এটা সত্যিই অন্যরকম হয়ে থাকলে কি খুব ভাল হত? কি জানি! আমার তো মনে হয় না।

    তবে আমি মনে করি মানুষের অতিরিক্ত লোভেও একটা চেক ব্যালেন্স দরকার। সেইজন্যই পরিবেশ দপ্তর, পরিবেশ বিজ্ঞানী ইত্যাদি। মানুষকে বাঁচতে গেলে কিছু প্রকৃতি ধ্বংস করে কিছুটা সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে হবে।

    তো এইদিক থেকে দেখলে আমার মোহিতবাবুর বক্তব্য খুব অযৌক্তিক লাগে নি।

    এই বই পড়তে গিয়েই মনে পড়ল একবার কোন্নগর স্টেশান বাজারে তরকারীতে অতিরিক্ত রং ব্যবহারের জন্য কিছু বিক্রেতাকে স্থানীয় মানুষজন বিজ্ঞানক্লাবের সাহায্যে ধরে বেশ হেনস্থা করে, বাজারে টাটকা রংহীন সবজি বিক্রী করতে হবে এই মর্মে বিক্ষোভও দেখায়। তো, এর মধ্যে এসে গেল পরিবেশ দিবস। ওবাবা দেখি একজন ভীষণ তেড়েফুঁড়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন মানুষের সবুজ খাওয়া দরকার, কাজেই যেসব বিক্রেতারা অতিরিক্ত সবুজ রঙে চুবিয়ে পটল ইত্যাদি বিক্রীএ করছেন তাঁরা আসলে পরিবেশবান্ধব। :-))
    তো এনাকে যখন বক্তৃতা দিতে মঞ্চে ডাকা হয়েছিল, তখন নিশ্চয় পরিবেশবন্ধু ধরে নিয়েই পরিবেশদিবসের অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছিল। তা এরকম লোকের সম্বন্ধে মোহিতবাবুর বক্তব্যটা তো ঠিকই আছে।

    বাংলাদেশ থেকে আগত লোক সম্পর্কে বিদ্বেষটা কোনও কারণে খেয়াল করি নি, পল্লবগ্রাহিতার ফল আর কি। :-( । আরেকবার পড়ে দেখতে হবে।
  • | ***:*** | ২৩ আগস্ট ২০১৪ ০৪:৩৭73539
  • সুহাষিণী,

    ১ - -থীমা
    ৩ - গাঙচিল
    ২, ৬ - অবভাষ।

    পাই,

    পূর্ব্ববঙ্গীয় কথ্য ভাষা আর পশ্চিমবঙ্গীয় কথ্যভাষা দুইই কোরকের দোকানে পাবে। আগে পত্রিকায় বেরিয়েছিল, পরে বই হিসেবে বের করেছে।
  • | ***:*** | ২৩ আগস্ট ২০১৪ ০৫:৪৮73540
  • ইন্ডোকে বেদম ক্যালাব। :ক্ষ

    হুচি।সুহাষিণী, লবাতমুন্ডি, AS, ব্যাঙ
    থিঙ্কুসসস
  • aranya | ***:*** | ২৪ আগস্ট ২০১৪ ০৫:২৭73542
  • জয়া মিত্রের লেখাটা ভাল লাগল
  • π | ***:*** | ২৪ আগস্ট ২০১৪ ০৫:৫০73543
  • দমদি, থ্যাংকু। পরে লিখছি।
  • Suhasini | ***:*** | ২৫ আগস্ট ২০১৪ ০৬:১০73544
  • উপকার হল দমু। ব্যাং, কাকে বললে? ঃ
  • byaang | ***:*** | ২৫ আগস্ট ২০১৪ ০৭:২৩73545
  • তোকেই বললাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন