এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে  খাই দাই ঘুরি ফিরি

  • অজন্তার পথ ধরে - ১

    প্রণব কুমার চট্টোপাধ্যায়
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ২০ এপ্রিল ২০২৩ | ২০৯১ বার পঠিত | রেটিং ৩ (৩ জন)
  • পর্ব ১ | পর্ব ২
    দু-সংখ্যায় সমাপ্য 'অজন্তার পথ ধরে'-র প্রথম ভাগ আজ


    বাঙালি মন চিরকালই উড়ু উড়ু। “মন চল যাই নিজ নিকেতনে”—এ তত্ত্ব মনে থাকলেও, “দেখব এবার জগৎটকে” তত্ত্বেই বিশ্বাসী বাঙালি। ব্যতিক্রম আমিও নই। জীবনের অনেকটা পথ হাঁটা হয়ে গেল পাথেয় হিসেবে ভ্রমণস্মৃতি সততই সুখের। ছোটপুত্রের নতুন চাকরির সুবাদে ঔরঙ্গাবাদ যাত্রা হল।

    রওয়ানা থেকেই মনে হচ্ছিল অজন্তা-ইলোরার কথা। করোনা আবহে সে ইচ্ছা মনেই দমন করে রেখেছিলাম, কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখলাম করোনার প্রকোপ খুবই কম। অত্যুৎসাহী ইচ্ছেরই জয় হল। বাহন কী হবে — বাস, ট্রেন না ট্যাক্সি? ভিতু মন সায় দিল ট্যাক্সিতে। ঔরঙ্গাবাদ-অজন্তা দূরত্ব ১০৯ কিমি। ট্যাক্সি পাওয়া গেল, সকালে বেড়িয়ে রাতে ফেরা। এসি ডিজায়ার গাড়ি, বেশ আরামপ্রদ। সকাল ৮টায় রওনা হলাম। শিল্লোড পর্যন্ত রাস্তা বেশ ভালো, তারপর বেশ কিছুটা ভাঙাচোরা। বালাপুর থেকে রাস্তা আবার ভালো। বালাপুরেই একটি হোটেলে প্রথম থামা হল। একটু বিশ্রাম, চা ইত্যাদি পর্ব সেরে পুনর্যাত্রা। শুনে এসেছিলাম—এই সময়টা খুব গরম থাকে, কিন্তু হাল্কা মেঘলা এবং ঠান্ডা-ঠান্ডা ব্যাপার থাকায় এসি চালাতে হয়নি। অজন্তা গুহার প্রায় ৮/১০ কিমি আগের পথ—নামেই জাতীয় পথ—ভেঙেচুরে একেবারে ফুটিফাটা পাহাড়ি রাস্তা। ঝাঁকুনি ও ধুলোর চোটে একেবারে জেরবার, ভাগ্যিস এসি ছিল, ফলে কাচ সব তুলে দিয়ে স্বস্তি। বিশাল বিশাল ১৬ চাকার ট্রাক এন্তার যাচ্ছে বিপজ্জনকভাবে নাচতে নাচতে—গন্তব্য নাসিক হয়ে মুম্বাই। বেশ খানিকটা পাহাড়ি পথ পার হয়ে একটা বেশ উঁচু জায়গায় এসে পৌঁছলাম। আমাদের চালক রমেশ দেখাল—বেশ খানিকটা নিচে আরো একটা টিলার পাশে অজন্তা গুহার প্রবেশপথ।

    এবার নামার পালা। সেই চাঁদের পিঠের মত রাস্তা ধরে হোঁচট খেতে খেতে অবশেষে এসে পৌঁছলাম সেই প্রবেশদ্বারে, মহারাষ্ট্র পর্যটন বিভাগের টোল সেন্টারে। মাথাপিছু সামান্যই টোল দিতে হল ওই সংরক্ষিত অঞ্চলে প্রবেশের মূল্য হিসেবে। সামনেই একটি খোলা জায়গা—বেশ গোছানো, অনেক দোকান পাট, হালকা খাবারের দোকান এবং কার পার্কিং। ড্রাইভার রমেশ জানাল—গাড়ি এই পর্যন্তই, এরপর পর্যটন দপ্তরেরে বাসে দু/আড়াই কিমি পথ গুহামুখ পর্যন্ত। করোনার কারণে খুব বেশি পর্যটকের ভিড় হবে না অনুমান করেছিলাম, কিন্তু বাসের অপেক্ষায় পর্যটকেদের লাইন দীর্ঘ হতে শুরু করল। একটু পরেই বাসে উঠলাম, প্রায় ৫০-৬০ জন। মাস্ক নেই—এমন সংখ্যা প্রায় ৩০, ফলে গা ঘেঁষে বসলেও কেউ কিছু বললো না। আমার কাছে বসা একজনকে মাস্কের কথা বলতেই সহাস্যে হিন্দিতে বললেন, “করোনা তো চল বৈঠা..”। এত সচেতন মানুষেরাই করোনাকে শুধু চলতে দিয়েছে নয়, বৈঠতেও দিয়েছে।




    কণ্ডাক্টর জানাল—ওই পাহাড়ি পথের পেছনেই অজন্তা গুহা। জঙ্গল ঘেরা পাহাড়ি পথে খুব বেশি চড়াই উতরাই নেই, পাকদণ্ডি-ও কম। বাঁদিকে ওয়াঘুর নদীর পাশে পাশে চলা, অপূর্ব নিসর্গ! এই নদীর উৎপত্তিস্থলও অজন্তা। বাসে চাপার আগেই রমেশভাই-এর পরিচিত এক গাইডের খোঁজ হল, মাঝবয়সী অনিল। সেও বাসে আমাদের সহযাত্রী। জানালা দিয়ে একটা পাহাড়ি জঙ্গলের সোঁদা গন্ধ, আমার খুব চেনা। এসে নামলাম পর্যটন দপ্তরের সুশোভিত পর্যর্টনকেন্দ্রে। অনেকটা জুড়ে খুব সাজানো-গোছানো ব্যাপার – souvenior counter, পানীয় জল এবং ক্যান্টিনের সু-বন্দোবস্ত। একেবারে বিজন এই প্রদেশে এসবের ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি। করোনার কারণেই কর্মচারীর স্বল্পতা চোখে পড়ল।

    অনিল ভাইয়ের নির্দেশনায় হাঁটা শুরু হল। ওয়ঘুর নদীর ওপর বেইলি ব্রিজ পার হয়ে এবার ওঠার পালা। এই পর্বতাংশটি পশ্চিমঘাট পর্বতের ইন্ধাগিরি রেঞ্জের অংশ। গ্রানাইট পাথরের অশ্বখুরাকৃতি এই অংশটি কেটে তৈরি হয়েছিল সুপ্রাচীন এই গুহামালা। নদীতল থেকে প্রায় ৫০ মিটার উচ্চতায় গুহাগুলির অবস্থান।

    এবার চড়াই ভাঙার পালা। সবিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম—আমাদের গাইড অনিলভাই-এর শ্বাসটানের কষ্ট আছে। জিজ্ঞেস করায় বলল, “ও কিছু নয়, আমার অনেকদিনের সঙ্গী”। অনুরোধ করলাম ধীরে চড়াই উঠতে, খুব খারাপ লাগছিল দেখে—এত কষ্ট সহ্য স্রেফ পেটের তাগিদে। ওকে রাজি করালাম, যে, সবটা ওর হাঁটার প্রয়োজন নেই। সবিনয়ে উত্তর দিল, “আপনার মত বোধ তো সবার নেই। কষ্ট করছি যতদিন পারি, দুটো মেয়ের বিয়ে বাকি আছে স্যার। আমার জন্য বিঠঠলজীর কাছে প্রার্থণা করুন, যেন এটুকু করে যেতে পারি”। ইতোমধ্যে উঠে এসেছি ৯ নং গুহামুখে। কিছু অসম্পূর্ণ গুহা সমেত এখানে মোট ৩৩টি গুহা ছিল। এই গুহামালার সৃষ্টি হয়েছিল প্রায় ২৪৬ ফুট দেওয়াল কেটে এবং ভেতরে চিত্রিত হয়েছিল অমূল্য চিত্রাবলী—যার বিষয়বস্তু ছিল মূলত জাতকের গল্পের মধ্য দিয়ে সিদ্ধার্থের গৌতম বুদ্ধ হয়ে ওঠার ক্রমপর্যায় এবং আনুষঙ্গিক গল্পগাথার চিত্রায়ন।

    এই গুহামালার নির্মাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষদের সাধনা এবং জ্ঞানান্বেষণের উপযুক্ত স্থানই শুধু ছিল না—উৎকীর্ণ শিলালিপি থেকে অনুমান করা যায় বৌদ্ধসাধকদের বর্ষাকালীন আশ্রয়স্থল, তীর্থযাত্রী ও বনিকদের বিশ্রামস্থল হিসেবেও ব্যবহৃত হত এই গুহার কিছু অংশ।

    চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েনসাং-এর বর্ণনায় এই গুহামালার উল্লেখ আছে। সপ্তম শতাব্দীর পর থেকেই বৌদ্ধধর্মের প্রাসঙ্গিকতা ক্ষীণ হয়ে আসে, ফলে অজন্তার গুরুত্ব হ্রাস পেতে থাকে। ইসলামিক অভ্যুত্থানের পর এই শিল্পসম্পদ সম্পূর্ণ ঢেকে যায় গভীর জঙ্গলে এবং অনাদৃত পড়ে থাকে প্রায় ১১০০ বছর, ফলে গুহার ভেতরকার অমূল্য চিত্রমালার ক্ষতিসাধন শুরু হয় তখন থেকেই। গুপ্তধনের মত এই সম্পদের পুনরাবিষ্কার ঘটেছিল হঠাৎই, ১৮১৯ সালে এক ইংরেজ সামরিক ক্যাপ্টেন জন স্মিথ বাঘ শিকারের নেশায় পৌঁছে গেছিলেন গভীর জঙ্গলে ঢাকা অজন্তা গুহামালার উত্তরদিকের এক পাহাড়ের মাথায়। ওয়াঘুর নদীর অন্য পারে স্মিথ লক্ষ্য করলেন—জঙ্গলের ফাঁক দিয়ে অস্পষ্ট এক গুহার আভাস। উৎসাহী স্মিথ স্থানীয় এক কিশোরকে সঙ্গী করে চললেন গুহামুখের অন্বেষণে। নদীর অপর পারের দুর্গম জঙ্গলের অনেকটা পার হয়ে আবিষ্কার করলেন সেই অনাদৃত সম্পদ। ধীরে ধীরে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ল এর খবর এবং ১৯৮৩-তে অজন্তা গুহামালা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা পেল।

    পশ্চিমের ভকতকা রাজবংশের পরাক্রমশালী রাজা হরিসেনের (৪৮০ – ৫১০ খৃঃ) পৃষ্ঠপোষকতায় বেশ অনেকগুলি গুহা রূপ পেয়েছিল। মূলত জ্ঞানান্বেষণ ও সাধনার জন্যই নির্জন প্রকৃতির মাঝে গুহামালার নির্মাণ শুরু হয় এবং এই দুরূহ শিল্পকর্ম শেষ হয় দুটি পর্যায়ে—প্রথমটি সাতবাহন বংশের রাজত্বকালে, অর্থাৎ খৃষ্টপূর্ব ২য় শতক থেকে তিনশো খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত। ২য় পর্ব আনুমানিক ৪র্থ শতক থেকে ৭ম শতক পর্যন্ত। অজন্তায় প্রাপ্ত এক শিলালিপিতে হরিসেনের মন্ত্রী বরাহদেব উল্লেখ করেছেন ১৬, ১৭ এবং ১৯ নম্বর গুহার খনন, নির্মাণ এবং চিত্রায়ন হয়েছিল হরিসেনের পৃষ্ঠপোষকতায়। গুহাগুলির ২য় পর্বের নির্মাণক্রমের সামান্য বিস্তারে যাওয়া অপ্রাসঙ্গিক হবে না, কারণ এই সুদীর্ঘ নির্মাণকাল আবর্তিত হয়েছিল বহু উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে। মূলত বৌদ্ধধর্মাদর্শে নির্মিত চিত্রমালা ও ভাস্কর্যের সঙ্গে হিন্দু ভাবধারার কিছুটা মেলবন্ধন ঘটেছিল ফলে জিজ্ঞাসু মনে এর উৎস সন্ধান হতেই পারে। অজন্তা-বিষয়ক গবেষক ও ইতিহাসবিদ ওয়াল্টার স্মিথের মতে—শুরুতে অর্থাৎ খৃষ্টপূর্ব ১ম শতক থেকে ১ম খৃষ্টাব্দের মধ্যে নির্মিত বেশ কিছু গুহা অসমাপ্ত অবস্থায় থেকে যায় এবং প্রায় ৩০০ বছর পর ভকতকা রাজবংশজ হরিসেনের উদ্যোগে নির্মাণ ও পুনর্নিমাণ কাজ শুরু হয়। মন্ত্রী বরাহদেব ও উপেন্দ্রগুপ্তের ওপর সেই দায়িত্ব বর্তায়। ১ নং গুহা হরিসেনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং ১৭ থেকে ২০ নং গুহা উপগুপ্তের উদ্যোগে নির্মিত হয়।

    রাজনৈতিক উত্থান-পতন সত্ত্বেও নির্মাণকার্য চলে হরিসেনের মৃত্যু পর্যন্ত (৪৭৭ খৃঃ)। ৪৭৮ থেকে ৪৮০ খৃঃ—এইসময় পূর্বতন পৃষ্ঠপোষকদের অভাবে বিক্ষিপ্তভাবে অনেকেই গুহানির্মাণে যোগ দেন, যাঁদের মধ্যে বেশ কিছু বৌদ্ধ সন্ন্যাসীও ছিলেন।

    পরবর্তীতে রাষ্ট্রকুট রাজবংশের হাত ধরে (৭ম থেকে ৮ম শতাব্দী) গুহা নির্মাণ ও সংস্কারের কাজের প্রমাণ পাওয়া যায় ২৬ নং গুহামুখের উৎকীর্ণ লিপিতে ফলে অজন্তা গুহামালার ৮ম শতাব্দী পর্যন্ত সংস্কার ইত্যাদি হয়েছিল—তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

    অজন্তা গুহামালা নির্মাণের সময়কালে বৌদ্ধ ধর্মের প্রাধান্য সত্ত্বেও হিন্দু দেবদেবীর অনেকেই স্থান পেয়েছেন বৌদ্ধধর্মাদর্শে শুধু নয়, তাঁরা পূজিতও হন। ভারতীয় সনাতন ভাবধারায় এই মেলবন্ধন এক বিশেষ স্থান পেয়ে এসেছে সেই সময় থেকেই। ভকতকা বংশজ শাসকেরা হিন্দুধর্মাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও গুহাগুলির নির্মাণ ও সংস্কার কাজে উদ্যোগী হয়েছিলেন। বরাহদেবের উৎসাহে গুহামালায় বেশ কিছু হিন্দু দেবদেবী ও প্রতীক দেয়ালচিত্রে স্থান পেয়েছে। রাষ্ট্রকুট শাসকেরা প্রথম পর্যায়ে হিন্দুমতাবলম্বী হলেও, পরবর্তীতে জৈন মতাবলম্বী হয়ে পড়েন, ফলে হিন্দু ও জৈন ধর্মের এক মিশ্র শিল্পকর্মের তাঁরা কাণ্ডারি হয়ে উঠলেন, যা রূপ পেয়েছে ইলোরা গুহামালায়।




    এবারে গুহামালার কিছুটা বর্ণনে না গেলে পাঠকমনের অনেক জিজ্ঞাসাই অনুক্ত রয়ে যাবে, তাই বিশেষ কটি গুহার সংক্ষিপ্ত বৃত্তান্তে যাওয়ার আগে বলে রাখি—অজন্তা গুহামালার মধ্যে ১৬টিতে গুহাচিত্র আছে, তার মধ্যে গুহা ১, ২, ১৬, ১৭ এবং ১৯ নং-এ অনবদ্য গুহাচিত্র রয়েছে। পাথর কেটে ভাস্কর্যকলা উল্লেখনীয় ভাবে আছে ১, ৪, ১৭, ১৯, ২৪ ও ২৬ নং গুহাতে।

    প্রার্থনা বা ধর্মীয় আলোচনা-কক্ষগুলিকে বলা হয় চৈত্য। বাস-কক্ষগুলিকে বলা হয় বিহার। ৮, ৯, ১০, ১২, ১৩ ও ৩০ নং গুহাগুলি সবচেয়ে প্রাচীন এবং নির্মাণকাল ১ম পর্যায়ে অর্থাৎ খৃষ্টপূর্ব ২য় শতক থেকে ২০০খৃঃ। এই পর্যায়ের গুহানির্মাণে হীনযান দর্শনের প্রতিফলন ও ৫ম থেকে ৬ষ্ঠ শতকে নির্মিত গুহাগুলিতে মহাযান ভাবধারার প্রভাব লক্ষণীয়।

    গুহা ১: ৩৬মি X ২৮মি দৈর্ঘ্য-প্রস্থের এই গুহাটির প্রবেশমুখ থেকে ভেতর পর্যন্ত অনেকগুলি সারিবদ্ধ স্তম্ভ এবং দু-পাশে দুটি লম্বা ফাঁকা প্রকোষ্ঠের দেয়ালে এবং স্তম্ভের গায়ে চিত্রিত সেই অমূল্য চিত্রন, মূলত গৌতম বুদ্ধের পূর্বজন্ম বা জাতকের গল্পমালা অঙ্কিত। গুহার শেষ প্রান্তে রয়েছে বুদ্ধের “ধর্মচক্র প্রবর্ত্তনা” মুদ্রায় একটি বিশাল মূর্তি, তাকে ঘিরে রয়েছে পাঁচ প্রধান শিষ্য। বাঁদিকের দেওয়ালে চিত্রিত শিবী রাজা ও পায়রার গল্প। মাঝামাঝি একটি স্তম্ভে খোদিত চারটি হরিণ মূর্তি। বিভিন্ন অবস্থানে থাকলেও তার মাথা একটাই। নিরীক্ষণ করলে মনে হবে মাথাটি প্রতিটি হরিণেরই স্বতন্ত্র অস্তিত্বে। এমন শিল্পকর্ম চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। আর একটু বাঁ-দিকেই রয়েছে সিদ্ধার্থ থেকে বুদ্ধ হয়ে ওঠার মুহুর্তের চিত্র, পাশেই চিত্রিত “মারা” বা শয়তানের প্রতিরূপ, যে গৌতমের বোধিপ্রাপ্তির পথে বিভিন্নরূপে বাধার সৃষ্টি করেছিল। ডানদিকের দেয়ালে চিত্রিত “শ্রাবস্তির বিস্ময়” সেই রূপ যেখানে বুদ্ধ শতরূপে নানান ভঙ্গিমায়।

    গুহার পেছনের দেওয়ালের মাঝামাঝি কুঠুরির বাঁদিকে চিত্রিত অজন্তা-খ্যাত সেই ছবি “বোধিসত্ত্ব পদ্মপাণি”। এর দৃষ্টি অধ্যাত্মভাবে আনত এবং তার ডানহাতে একটি পদ্ম। এর ঠিক পাশেই তার শ্যামাঙ্গী স্ত্রী এবং বিভিন্ন আধ্যাত্মিক ভাবসম্পন্ন মুখ। এর ডানদিকে বানর ও পেখম শোভিত ময়ূরের অপূর্ব চিত্র। বোধিসত্ত্বের অন্য পাশে আরো একটি বিখ্যাত চিত্র “বোধিসত্ত্ব বজ্রপাণি”-র দিকে কোনো এক রাজা ফুল ছুঁড়ে দিচ্ছেন। দীর্ঘ অযত্নে ছবিগুলি অনেকটা ফিকে হয়ে এসেছে।

    গুহা ২: এই গুহার বিশেষত্ব স্তম্ভ, দেওয়াল ও ছাদে অঙ্কিত চিত্রমালা। এই গুহাচিত্রগুলো অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থায়, যদিও কালপ্রবাহের ছাপ স্পষ্ট। নারীমুখ-চিত্রণ এই গুহাচিত্রের বিশেষত্ব। আনুমানিক ৪৬০ খৃষ্টাব্দে এর নির্মাণ ও চিত্রণের কাজ শুরু হয়, শেষ হয় ৪৭৫ থেকে ৪৭৭ খৃষ্টাব্দের মধ্যে। সম্ভবত রাজা হরিসেনের কোনো আত্মীয়া বা আশ্রিতার উদ্যোগে এই গুহাটি রূপ পায়। ভেতরের বিশাল স্তম্ভের গায়ে খোদিত ও চিত্রিত অপূর্ব সব রূপ। দেওয়াল এবং ছাদে চিত্রিত রূপগুলিই বেশি চোখে পড়বে।

    নারীমূর্তির বিভিন্ন চিত্র ও খোদিত রূপের পাশেই একঝাঁক উড়ন্ত হাঁসের অপূর্ব ভঙ্গিমা। গুহার বাঁদিকের দেওয়ালে চিত্রিত বুদ্ধের জাতকপর্বে শেষ আবির্ভাবের ফ্রেস্কো। ডানদিকের দেওয়ালে চিত্রিত এক নারীর প্রতি এক রাজার উদ্যত তরবারি ও অসহায় নারীর ভয়ার্ত ক্ষমাপ্রার্থনা।

    গুহা ৩: এটি একটি অসম্পূর্ণ গুহা। অনুমান করা হয় রাজা হরিসেনের মৃত্যুর পর এর নির্মাণকার্য থেমে যায়।

    গুহা ৪: ২৪টি স্তম্ভ শোভিত এই বিহারটি সবচেয়ে বড়। এটির নির্মাণ কোনো রাজা বা অমাত্যের উদ্যোগে নয়, বরং কোনো এক ধনাঢ্য বৌদ্ধ ভক্তের উদ্যোগে এটি রূপ পায়—এমনটাই অনুমান করা হয়। গুহার পেছনের অংশে রয়েছে প্রচারক বুদ্ধের এক বিশাল মূর্তি ও মানানসই ভাবে দু-দিকে দুটি বোধিসত্ত্বের ভাস্কর্য। নির্মাণকালে ছাদের কিছুটা অংশ ভেঙে পড়ায় হলঘরটির রূপ কিছুটা অসম্পূর্ণ। তবে প্রবেশদ্বারের ঠিক ডানদিকে ভক্ত-পরিবৃত বোধিসত্ত্ব এবং ঠিক পাশেই খোদিত এক নারী ও পুরুষের ভয়ার্ত পলায়নরূপ, সামনে এক মত্ত হস্তী। আর একটি ছবি না বললেই নয়—বৃক্ষকান্ডে হেলান দেওয়া এক অপরূপ নারী, পাশে কাঠবেড়ালি।

    গুহা ৫: একটু উঠে এসে অসমাপ্ত এই গুহাটির দ্বারমুখে কিছু নারীমূর্তির ভাস্কর্য।




    গুহা ৬: এটি একটি দ্বিতল বিহার। দুটি তলাতেই বড় দুটি হল। নিচের তলার দেওয়ালে অনেক ছবি, তার মধ্যে শ্রাবস্তীর অলৌকিক ঘটনাবলি এবং সেই শয়তান মারার প্রলোভনের ছবি। দ্বিতলটি অসম্পূর্ণ তবে গুহামুখের ভাস্কর্য অনবদ্য।

    গুহা ৭: অষ্টভূজ স্তম্ভ সম্বলিত গুহাটি বৌদ্ধ মঠ। ভেতরে ৮টি কুঠুরি রয়েছে—যা ছিল সন্ন্যাসীদের বাসস্থল। ভেতরের একটি প্রকোষ্ঠে রয়েছে ২৫টি বিভিন্ন মুদ্রায় ধ্যানস্থ বুদ্ধের ভাস্কর্য। দ্বারদেশে রয়েছে মকর-পরিবৃতা এক নারী।

    গুহা ৮: ৮টি প্রকোষ্ঠ সম্বলিত আর একটি অসম্পূর্ণ গুহা—প্রথম পর্যায়ে নির্মিত। দেওয়ালে কিছু চিত্রের আভাসমাত্র, বাকি কালের গর্ভে বিলীন।

    গুহা ৯: এটি চৈত্য বা প্রার্থনাগার। এর প্রবেশমুখটি, আমাদের মনে অজন্তা-গুহামুখ সম্পর্কে যে ধারণা আছে, ঠিক তার অনুরূপ। পাথর গেঁথে আর্চ এবং মাঝে কাঠের ফ্রেম, সেটি পরিমার্জনা করে কাঠের ফ্রেমে কাচ বসানো হয়েছে। ভেতরের প্রার্থনা-হলে ২৩টি পিলার রয়েছে, শেষ প্রান্তে একটি স্তূপ ও চারপাশে প্রদক্ষিণ-পথ করা রয়েছে। স্তম্ভগুলির ওপরদিকে এবং পিছনের দেওয়ালে অনেকগুলি গুহাচিত্র—যার মধ্যে রয়েছে বুদ্ধ ও তাঁর পাশে পদ্মপাণি ও বজ্রপাণি। তার পাশেই রয়েছে উপঢৌকন হাতে ভক্তের দল। অন্যান্য দেওয়ালে রয়েছে জাতকমালার চিত্রণ।

    গুহা ১০: এটিতেও একটি স্তম্ভ, স্তূপ ও প্রার্থনাকক্ষ। প্রবেশ মুখের উৎকীর্ণ শিলালিপি থেকে জানা যায়—এটির নির্মাণকাল খৃঃপূঃ ২য় শতক। স্তূপ বরাবর ৩৯টি অষ্টভূজ স্তম্ভ রয়েছে। ৩নং স্তম্ভের উল্টোদিকে রয়েছে সমকালীন জীবনের চালচিত্র, যা থেকে সেই সময়কার বস্ত্র ব্যবহার, অলঙ্কার, কেশবিন্যাস, ইত্যাদির পরিচয় পাওয়া যায়। এই গুহাটিই ইংরেজ সেনাবাহিনীর জন স্মিথের প্রথম চোখে পড়ে।

    গুহা ১১: এটি একটি চৈত্য এবং ১০ নং গুহার মতোই। দেওয়াল, স্তম্ভ এবং ছাদে বেশ কিছু অমূল্য চিত্রমালার আভাস, যা অধিকাংশই নষ্ট প্রায় এবং খুব একটা মর্মোদ্ধারের মত অবস্থায় নেই। যেটুকু উদ্ধার করা গেল, তার মধ্যে পদ্মপাণি, প্রার্থনারত দম্পতি, একজোড়া বড় পাখি ও কিছু নারীমূর্তি। গুহায় উপবিষ্ট বুদ্ধের চারপাশে প্রদক্ষিণপথ এই গুহাটি পর্যন্তই দেখলাম, তারপর আর নেই।

    গুহা ১২: হীনযান আদর্শে নির্মিত এটি একটি বিহার—যার মধ্যে রয়েছে ১২টি প্রকোষ্ঠ—যা হয়তো শিক্ষার্থী বা সন্ন্যাসীদের থাকার জায়গা। এখানেই দেখলাম প্রকোষ্ঠের ভেতর পাথর কেটে দুটি করে শোওয়ার জায়গা—যদিও গুহাটির প্রবেশদ্বার সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গেছে।

    গুহা ১৩: ঠিক গুহা ১২র মতো, তবে এটি এখন আর্কিওলজিকাল সার্ভের কাজে লাগছে।

    গুহা ১৪: একটি অসম্পূর্ণ গুহা। একটু এগিয়ে পেলাম ৮টি কক্ষ যুক্ত ১৫ নং গুহা। এটিতে ধ্যানস্থ বুদ্ধমূর্তি রয়েছে—তার দু-পাশে ৮টি কক্ষ। প্রবেশদ্বারে খোদিত রয়েছে—পায়রা শস্যদানা খুঁটে খাচ্ছে। এর পাশেই তিনটি মাত্র কক্ষ যুক্ত সবচেয়ে ছোট গুহা ১৫A। কিছুটা এগিয়ে পেলাম গুহা ১৬: এর সামনে থেকে একটি দীর্ঘ সিঁড়ি নদী পর্যন্ত নেমে গেছে যেটি সম্ভবত এই গুহামালার প্রবেশমুখ ছিল। প্রবেশদ্বারে দুটি বিশাল হাতির ভাস্কর্য। এটির নির্মাণ করিয়েছিলেন রাজা হরিসেনের অমাত্য বরাহদেব। ধর্মে হিন্দু হয়েও গৌতম বুদ্ধের প্রতি প্রগাঢ় শ্রদ্ধায় তিনি এটিকে রূপ দেন। গুহার ভিতর বারান্দার বাইরের দিকটায় বাঁদিকে একটি লিপি উৎকীর্ণ করিয়েছিলেন ববরাহদেব, সময়টা ৬ষ্ঠ শতক। মর্মোদ্ধার করলে যা দাঁড়াবে—তা মোটামুটি হল, “সমগ্র বিশ্ব অবস্থান করুক দুঃখমুক্ত, নিঃশঙ্ক ও নীরোগ অবস্থায় এবং বুদ্ধের প্রদর্শিত পথই হোক মানুষের মার্গদর্শক”। এই গুহাটি বাকি সব গুহা থেকে বেশ আলাদা এবং মহাযান মতাদর্শে নির্মিত। এর নির্মাণশৈলী অনেক পরিণত। আয়তাকার মূল হলঘরটিতে অনেকগুলি অষ্টভুজাকৃতি স্তম্ভ—যার গা জুড়ে শুধু নয়, দেওয়াল এবং ছাদ জুড়ে চিত্রিত অনেক ছবি। গুহার প্রান্তে উপবিষ্ট বুদ্ধের এক অপূর্ব মূর্তি।





    (পরের সংখ্যায় সমাপ্য)
    ছবি - লেখক



    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    পর্ব ১ | পর্ব ২
  • ভ্রমণ | ২০ এপ্রিল ২০২৩ | ২০৯১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • মোহাম্মদ কাজী মামুন | ২১ এপ্রিল ২০২৩ ০১:৪২518872
  • গুহা ৯ এর চিত্রটা সন্নিবেশিত করা সম্ভব? 
    অজন্তাকে এত কাছে থেকে জানলাম এই লেখাটা পড়েই। 
    লেখককে অশেষ ধন্যবাদ। 
  • Sara Man | ২১ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:০০518877
  • নারায়ণ সান‍্যালের অপরূপা অজন্তা পড়ে নিন মামুন সাহেব। আশা করি আপনার তৃষ্ণা মিটবে। আন্তর্জালে পি ডি এফ পেয়ে যাবেন। 
  • Ranjan Roy | ২১ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:০০518880
  • আগ্রহের সঙ্গে পড়ছি, সুন্দর লেখা।
  • Abak Chittri | ২১ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:২৮518884
  • বেশ ভালো লাগল  পডতে ।পরবর্তী লেখার অপেক্ষায় রইলাম ।
  • ধুর | 2405:8100:8000:5ca1::35:***:*** | ২১ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৪৭518892
  • কেমন যেন ঘ্যাসঘ্যাসে লেখা। পোষালো না একেবারেই। অবশ্য নারায়ণ সান্যালের পর আর কারো লেখা পোষানো মুশকিল।
  • মোহিত ঘোষ | 2401:4900:1c01:7105:d4c4:77c:416c:***:*** | ২১ এপ্রিল ২০২৩ ২১:৪২518893
  • অবশ্যই তথ্যমূলক ভাল লেখা
  • মোহাম্মদ কাজী মামুন | ২১ এপ্রিল ২০২৩ ২১:৪৬518894
  • @SaraMan,
    অশেষ ধন্যবাদ। নারায়ণ স্যানাল প্রিয় লেখক। বইটি সংগ্রহ করে পড়ছি অবশ্যই।  
     
  • জীবেশ মুখোপাধ্যায় | 45.25.***.*** | ২১ এপ্রিল ২০২৩ ২২:৪২518896
  • মনোজ্ঞ লেখা, পরবর্তী কিস্তির অপেক্ষায়।
  • Gopa Bandyopadhyay. | 114.29.***.*** | ২১ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:৪৫518897
  • Khub bhalo laaglo,anekdin agae dekha ajanta o ellora ke aar aakbaar aapnaar lekha diye dekhlaam.Parer parjai er jonya apekkhai roilaam.
  • Debarati Adhya | 42.***.*** | ২২ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:৫০518901
  • Akhno obdhi ajanta caves e jawa hoye otheni but apnar onobodyo lekhoni te chepe darun ghure elam...
  • Sudip Chattopadhyay | 49.37.***.*** | ২২ এপ্রিল ২০২৩ ২১:৫২518915
  • একটি অসাধারণ তথ্য সমৃদ্ধ লেখা। পড়ে ভালো লাগলো 
  • অম্লান লাহিড়ী | 2401:4900:1c01:5da5:48d5:3ca6:d14d:***:*** | ২৩ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:১৩518945
  • তথ্য সমৃদ্ধ লেখা, অজন্তা গুহা সম্পর্কিত পুঙ্খানুক্ষন বিবরণ বর্তমানে কোনো ভ্ৰমণ কাহিনী তে তেমন বিশেষ দেখা যায়না। এত ডিটেল observation কোনো রকম অতিরঞ্জন ছাড়া প্রতিবেদনের বিশেষ প্রাপ্তি। ছোট ছোট খুটি নাটি, রাস্তার ধুলো থেকে শ্বাস টানের সমস্যা সব কিছুই স্থান পেয়েছে মনোজ্ঞ আলোচনাতে। সামাজিক নৃ গবেষকের উপস্থিতি লেখকের অজান্তে ধরা পড়েছে তাঁর লেখনীতে। পরবর্তী অংশের জন্য অপেক্ষায় রইল পাঠক 
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:c388:d947:268:***:*** | ২৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১১518951
  • খুব খুব ভাল লাগল পড়ে। অসাধারণ তথ্যসমৃদ্ধ লেখা। আপনার সোনার কীবোর্ড হোক, হীরের মাউস।
     
    26 নম্বর গুহাটি অশ্মকদের তৈরী। আর পুরোনো পর্য্যায়ের গুহাগুলি সাতবাহন রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বানানো হয়েছিল। 
     
    এক নম্বর গুহাটি বন্ধ করে দিয়ে দর্শকদের জন্য তার একটি প্রতিলিপি বানানোর কথা ছিল। আপনি কি মূল গুহাটিতে ঢুকেছিলেন? নাকি সেটি এর মধ্যেই বন্ধ করে দিয়ে প্রতিলিপিটি খোলা হয়েছে?
     
    পরের পর্ব শীঘ্র আসুক।
  • Dr. Arshia Mazumder | 2409:4061:2c85:6802:842b:cb59:77e4:***:*** | ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ০০:১৫518962
  • Ajanta Ellora amar jaoa hoi ni kokhono. Tobe ei lekhata pore sekhane jaoar icche ta aro prokhor hoi uthlo.  Poroborti lekhar apekhay roilam. 
     
  • শিখর রায় | 115.187.***.*** | ১০ মে ২০২৩ ১৮:১৬519644
  • অজন্তা তো যাওয়া হয় নি, কিন্তু সেই না যেতে পারার আক্ষেপ মিটে গেল এই অজন্তা ভ্রমণ কাহিনীটি পড়ে। প্রণব চট্টোপাধ্যায় যাত্রা পথের শুরু থেকে, যে ভাবে সমস্ত গুহা,সেখানের শিল্প কর্ম চিত্রাবলি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বর্ণনা, বিশ্লেষণ করে আমাদের সামনে তুলে ধরছেন, মনে হচ্ছে আমরা নিজেই যেন ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছি। পরের অংশের জন্যে রইলো কৌতূহলী প্রতীক্ষা।
  • ড. দিব্যেন্দু গাঙ্গুলি। | 103.***.*** | ১১ মে ২০২৩ ১৯:২৯519668
  • অজন্তা সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানলাম। খুবই প্রাণবন্ত লেখা। যদিও আজন্তা আমি গেছি বেশ কয়েক বছর আগে। কিন্তু এত তথ্য আমার কাছে তখন ছিলো না। এটা জানো আমার স্মৃতি রোমন্থনের মধ্য দিয়ে আরেকবার অজন্তাকে আরো কাছ থেকে জানতে পারা।
  • বেণু | 183.83.***.*** | ১১ মে ২০২৩ ২০:৫৬519679
  • লেখকের কনিষ্ঠ পুত্রকে অশেষ ধন্যবাদ। অনবদ্য তথ্যভিত্তিক ভ্রমন কাহিনী। আবার ঘুরুন।
  • Biswadeb Mukhopadhyay | 103.25.***.*** | ১১ মে ২০২৩ ২১:১৮519683
  • খূব ভালো লেখা!  এবং সেইসঙ্গে সেই তথ্য সমৃদ্ধ! পড়ে আনন্দ  পেলাম! 
  • মুক্তি চন্দ। | 2405:201:9007:609d:94d7:cf82:513f:***:*** | ১৮ মে ২০২৩ ১০:৫৬519868
  • শুধু ভ্রমণ পিপাসু রূপে নয়, একজন ইতিহাস এর ছাত্রী হিসেবে ও এই রচনায় আপ্লুত। চোখের সামনে ভেসে ওঠে, জীবন্ত অজন্তা তার সবটুকু সৌন্দর্য ভাস্কর্য  নিয়ে। লেখককে বিলক্ষন চিনি। তাই করোনা বৈঠার মত সরসতা র আরো বেশি দাবি রাখছি। 
  • Dr. Anamita Bhattacharjee. | 103.9.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০২৩ ২২:৩৮522280
  • অসাধারন তথ্য সম্বৃধ্য লেখা। কতো কি না  জানা তথ্য জানতে পারলাম।তার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।
  • সুজয় দাস | 103.27.***.*** | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:০৫523415
  • অজন্তা ইলোরা দেখে এসেছি বছর চারেক আগে। নারায়ণ স‍্যান‍্যালের অপরূপা অজন্তা‌ও পড়া হয়ে গেছিল। কিন্তু আপনার চোখ দিয়ে এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সময়কাল স্মরণ করিয়ে এভাবে আগে কেউ দেখায়নি। খুব ভালো লাগলো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন