

ডানদিকে অনেকগুলি প্যানেলে গৌতম বুদ্ধের শৈশব থেকে কৈশোরে উত্তরণের বিভিন্ন মুহূর্তের অসাধারণ ফ্রেস্কো। একেবারে ডানদিকে চিত্রিত নিদ্রিতা বুদ্ধের মা মায়া এবং কিছু দূরে মায়ার সেই বিখ্যাত স্বপ্ন নিয়ে আলোচনারত রাজদম্পতি। আর্ট ক্রিটিক বা শিল্প গবেষক কোনোটিই আমি নই কিন্তু যে ছবিটি আমাকে সবচেয়ে মুগ্ধ করেছে সেটি বাঁদিকের দেয়ালের মুখে চিত্রিত মৃত্যুপথযাত্রী এক রাজকন্যার—কোটরাগত আনত দৃষ্টি, শীর্ণ আঙুলগুলো বিদায়ের সংকেত দিচ্ছে। বেদনামথিত সখীদের মুখভঙ্গিমা – এসব নিয়ে এক অনবদ্য শিল্পকর্ম। এই রাজকুমারী সম্ভবত বুদ্ধের বৈমাত্রেয় ভাই নন্দের স্ত্রী “সুন্দরী”। মুহূর্তটি নন্দের সংসারত্যাগের পরবর্তী কোনো এক সময়ে। শিল্পী ও শিল্প-সমালোচক জন গ্রিফিত ছবিটি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং লিখলেন,
“বেদনা ও সংবেদনশীলতার প্রকাশে এই চিত্রটি চিত্রশিল্পের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে... ফ্লোরেন্স বা ভেনিশিয়ান চিত্রকর্মে হয়তো আরও ভালো রং-এর ব্যবহার হয়েছে, কিন্তু প্রকাশভঙ্গিমায় এই ছবিটি তাদের অতিক্রম করে গেছে”
(1980.. London The Burlinhton Magazine, vol122, no 926 mau 1980)
এছাড়া বারান্দার বাঁ-পাশের দেওয়ালে জাতকের গল্প সম্বলিত বহু ফ্রেস্কো চিত্রিত রয়েছে, যার মূল বিষয় “বোধিসত্ত্ব”। আর একটু বাঁদিকে যে ফ্রেস্কো, তাতে বুদ্ধের ভাই নন্দের শিক্ষা—যেখানে বুদ্ধ তাকে শেখাচ্ছেন ইন্দ্রিয়পরায়ণ জীবনের কুফল। ডানদিকের দেওয়াল জুড়ে বুদ্ধের জীবন-এর নানান বর্ণনার ফ্রেস্কো। একটি ছবিতে সিদ্ধার্থকে তার পিতামাতা সন্ন্যাস জীবন থেকে নিরস্ত করতে চাইছেন। আর একটিতে ভবিষ্যতের বুদ্ধ শিশুরূপে তপস্বী “অসিতার” সঙ্গে। এত কিছু খুব ভালো অবস্থার মধ্যে নেই, তবে এটি প্রায় শেষের দিকে নির্মিত, ফলে হীনযান গুহাচিত্র থেকে কিছুটা ভালো অবস্থায়।
স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন আসছিল – এমন চিত্রকর্মের সলতে পাকানো পর্বটি কেমন ছিল এবং গুহার দেওয়ালে, পিলারে এবং ছাদে এমন মসৃণ চিত্রকর্ম কীভাবে সম্ভব হল? বিভিন্ন চিত্র গবেষণা থেকে যেটুকু জানা গেছে, তা হল মাটি-কাদার সঙ্গে গোবর ও তুষের গুঁড়োর মিশ্রনের প্রলেপ দিয়ে প্লাস্টার হত, তার ওপর চুণের আস্তরণ দিয়ে মসৃণ করে তার ওপর চিত্রিত হয়েছে সেইসব অমূল্য চিত্রাবলী। রং তৈরি হত মূলত বিভিন্ন লতাগুল্ম, গাছের রস, খনিজ পদার্থ, iron oxide, manganese di oxide এবং কাঠকয়লা। এইসব মিশ্রিত রং টেম্পারা পদ্ধতিতে চিত্রায়ণ হয়েছিল। ভাবতে অবাক লাগে, প্রায় ২ হাজার বছর ধরে সময়ের ঝড়ঝাপ্টা সহ্য করে এখনও অনেকটা রয়ে গেছে।
গুহা ১৭: গুহা ১৬ ও ১৭-র নির্মাণশৈলী প্রায় একইরকম, তবে এই গুহার চিত্রাবলীর বৈচিত্র্য সবচেয়ে বেশি এবং আপেক্ষিকভাবে ভালো অবস্থায়। এখানে জাতকের গল্প, নারীচরিত্রের বিভিন্ন দিক এবং মানবিক মূল্যবোধ দর্শানো হয়েছে। অষ্টভূজ স্তম্ভ সম্বলিত হলঘরের বাঁদিকের দেওয়ালে চিত্রিত “জীবন-চক্র” যা তিব্বতী বৌদ্ধ দর্শনের মূর্ত প্রতীক। পাশের দেওয়ালে দৈনন্দিন জীবনের সমসাময়িক কিছু চিত্র। এক রাজকুমারী নিবিষ্ট মনে দর্পণে সাজের বিন্যাস করছেন, তাঁর দেহবিভঙ্গে যৌবনের উচ্ছাস স্পষ্ট। এক রাজপুত্র ও রানী পানপাত্র হাতে সুরামদির দৃষ্টিতে যৌবনাচ্ছন্ন। চারপাশে আকাশপথে অনেক গন্ধর্বের মুখ। অপরূপ এই গুহাটির নির্মাণকার্যে অমাত্য বরাহদেবের দাক্ষিণ্যের সঙ্গে স্থানীয় রাজন উপগুপ্তেরও যোগদান ছিল। সেকথা জানা যায় গুহায় উৎকীর্ণ একটি লিপিতে।
এই গুহার অঙ্কন ও তার মান সম্পর্কে প্রখ্যাত শিল্প ইতিহাসবিদ ক্র্যামরিশ (১৮৯৬-১৯৯৩) বলেছেন, “Lavish elegance accompanied by efficient craftsmen...”। আর একটি অনবদ্য ছবি—শষ্যক্ষেতে। বাতাসে নুয়ে যাচ্ছে শষ্যের মাথাগুলি যা বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে হয়ে উঠছে ছন্দোময়। এমন কিছু চিত্রমালা দেখে মুগ্ধ ক্র্যামরিশ এগুলিকে দৃশ্যমানতা ও অপার্থিবতার এক অপূর্ব মিশ্রণ বলেছেন।
ডানদিকের দেওয়ালে যে ফ্রেস্কোটি, তাতে সিংহল রাজকুমারের লঙ্কাবিজয়ের বর্ণনা। একেবারে পিছনদিকের দেওয়ালে রয়েছে গৌতম বুদ্ধ ভিক্ষাপাত্র হাতে প্রাসাদে ফিরছেন, রাহুল ও যশোধারা বিহ্বলাচ্ছন্ন দৃষ্টিতে চেয়ে আছেন, ছোট্ট রাহুল পিতার কাছে পুত্রের দাবি নিয়ে দাঁড়িয়ে। আমার মনে হয়েছে এটিই অজন্তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিত্র।
১৯ নং গুহাটিও একটি অনবদ্য সৃষ্টি। মহাযান আদর্শে নির্মিত এর অর্ধগোলাকৃতি খিলানের মধ্যে অজন্তা-শৈলীতে নির্মিত গবাক্ষ মুগ্ধ হয়ে দেখার মত। এখানে পাথরের ভাষ্কর্যের রিলিফ এবং চিত্রমালার ফ্রেস্কো অসাধারণ। পঞ্চদশ শতকে নির্মিত এই গুহাগুলির অবস্থা খানিকটা ভালো। প্রবেশমুখেই একটি বড় হলঘর, বাঁদিকে এবং ডানদিকের কিছু প্রকোষ্ঠ পার হয়ে এসেই চৈত্যবিহারের প্রবেশমুখ। হলঘরের চারদিকে বিভিন্ন মুদ্রায় চিত্রিত বুদ্ধমূর্তি। বিশেষভাবে চোখে পড়বে “অর্ধপর্যঙক” মুদ্রায় “নাগরাজ” ও পদ্মহস্তা—তারস্ত্রী। প্রবেশদ্বারে “যক্ষ” দ্বারপাল রূপে অবস্থান করছেন। এর ওপরেই অর্ধচন্দ্রাকার জানালার পাশে চিত্রিত আকাশপথে দম্পতি ও বিভিন্ন মুদ্রায় বুদ্ধ। গুহার ছাদে চিত্রিত ছবিগুলি কালপ্রবাহে খুবই আবছা হয়ে গেছে। গুহামুখেই দুটি গোল এবং নিচে অষ্টভূজাকৃতি স্তম্ভের ওপর বুদ্ধমূর্তির সঙ্গে অন্যান্য মূর্তিও রয়েছে। চৈত্য অংশের মধ্যখানে স্তূপের গায়ে দাঁড়ানো বুদ্ধমূর্তি, যাকে অর্ধবৃত্তাকারে ঘিরে আছে ১৫টি স্তম্ভ—যা ভাষ্কর্য শিল্পের এক উৎকৃষ্ট নিদর্শন। প্রতিটি স্তম্ভ কারুকার্যময় এবং মাথার ওপর উপবিষ্ট বুদ্ধ। সমস্ত দেওয়াল জুড়ে হাতি, ঘোড়া এবং আকাশপথে অপ্সরা মূর্তি খোদিত। অসাধারণ আর্চের সমষ্টি ধরে রেখেছে চৈত্যের ছাদটিকে। গুহাটিকে স্বতন্ত্র করেছে স্তূপের গায়ে খোদিত বুদ্ধমূর্তি, কারণ আদি হীনযান ও মহাযান মতাদর্শে স্তূপের গায়ে বুদ্ধমূর্তি খোদাই বা চিত্রণের চল ছিল না, উত্তর-হীনযান মতাদর্শে ৫ম শতকে নির্মিত এই গুহাটির সেই বুদ্ধমূর্তি এক নতুন ভাবনার সূচনা করেছিল।
১৯ নং গুহা পার হয়ে ২০ নং গুহামুখ, প্রায় ১৯ নং-এর মতই। এটিও রাজা উপগুপ্তের উদ্যোগে নির্মিত। গুহাটির চিত্রকর্ম ও ভাষ্কর্য একই সময়ে ঘটেনি। বিভিন্ন কারণে চিত্রণকর্ম স্থগিত হয়েছে ও পরবর্তীতে অন্য কেউ কাজটি এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এটি ও চৈত্যবিহার এবং একদম ১৯ নং-এর আদলেই তৈরি প্রবেশমুখ, ঠিক ওপরেই অর্ধচন্দ্রাকার জানালা। এই জানালাগুলি মূলত গুহার ভেতর আলো পৌঁছানোর জন্যই নির্মিত হয়েছিল। ছাদে নানান চিত্রের শুধু আভাষ মাত্র রয়েছে। গুহাটির উল্লেখনীয় বৈশিষ্ট্য ব্রাহ্মীলিপিতে উৎকীর্ণ একটি সংষ্কৃত বাণী, রয়েছে গুহার বারান্দার পাশের দেওয়ালে। পেছনদিকে, ঠিক মাঝখানে বুদ্ধের বাণী-প্রচার-মুদ্রায় একটি মূর্তি। ডানদিকের দেওয়ালে আমগাছের পাশে তাকিয়াসহ উপবিষ্ট বুদ্ধ। এখানে ও দ্বারদেশে প্রহরারত নাগরাজের পূর্ণ মূর্তি খোদিত আছে।
এতটা হেঁটে এসে ক্লান্তি গ্রাস করে সবাইকেই। আমাদের গাইড অনিলকে দেখলাম বেশ হাঁপাচ্ছে, বুঝলাম ওর কষ্ট হচ্ছে। আমার শ্রীমতিও জানান দিল ও আর এগোবে না, ফলে ওরা দুজন ২০নং গুহার সামনের চওড়া রেলিং-এর ওপর বসে পড়ল। আমি চললাম বাকি অজন্তা বিজয়ে। কিছুটা উঁচুনিচু পথ পেরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে বেশ কিছুটা নেমে ২১ নং-এ পৌঁছালাম। অর্ধবৃত্তাকার পাহাড়ের এই পাশ থেকে বাকি অংশের দৃশ্য অপূর্ব। নদীতল থেকে গুহামুখে ওঠবার সিঁড়ি হয়তো কোনোকালে ছিল, ভূস্খলন বা ওইরকম কোনও কারণে সেগুলো আর নেই।
২১ নং হলটি বেশ বড়সড় এবং এখানে সন্ন্যাসীদের থাকবার জন্য ১২টি কুঠুরি রয়েছে। প্রার্থনাবেদিটিকে ঘিরে ১২টি কারুকার্য শোভিত স্তম্ভ। স্তম্ভের গায়ে উৎকীর্ণ কিছু রিলিফ, যার মধ্যে রয়েছে অপ্সরা, নাগরাজ, নাগরানী ও আরো অনেক মুখ। প্রার্থনাবেদিতে প্রচারমুদ্রায় বুদ্ধ। ২০ নং গুহার মতই হলটির চারপাশের দেওয়াল ও ছাদে অজস্র চিত্রণের চিহ্ন, সবটা বোঝার আর উপায় নেই।
বেশ কিছু সিঁড়ি ভাঙার পর চলে এলাম ২২ নং গুহার দোড়গোড়ায়। আকারে ছোট হলেও ছিমছাম চৈত্যবিহার। “প্রলম্বপদ্মাসনে” বুদ্ধমূর্তি এবং বেশ কিছু ছবি দেওয়াল ও স্তম্ভের গায়ে। লক্ষ্য করার বিষয়—বুদ্ধকে এখানে মানুষী বুদ্ধ রূপে অঙ্কিত করা হয়েছে, সঙ্গে রয়েছেন “মৈত্রেয়” (বুদ্ধের ভবিষ্যত বোধিসত্ত্ব রূপ)। বাঁদিকে একটি স্তম্ভের গায়ে উৎকীর্ণ একটি সংষ্কৃত লিপি, অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। যেটুকু উদ্ধার করা যায়, তার অর্থ মোটামুটি এইরকম—
“এক মহান উপাসক প্রার্থনা করছেন সমস্ত অনুভূতিসম্পন্ন প্রাণীর জন্য, তাই এই স্থান হোক উৎকৃষ্ট জ্ঞানপীঠ”।
২৩ নং গুহাটি পরিসরে বেশ বড়, তবে অর্ধসমাপ্ত, খাড়া সিঁড়ি দিয়ে উঠে উঠান এবং সমস্তটাই জুড়ে গুহামুখ। পাশেই ২৪ নং গুহা। ৪ নং গুহার পর এটিই ২য় বৃহত্তম। আয়তন প্রায় ৩০মি X ৩০মি। মার্কিন শিল্প ঐতিহাসিক ওয়াল্টার স্পিংস এর মতে এই চৈত্যবিহারটির নির্মাণপ্রযুক্তিতে এক নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছিল। খনন, নির্মাণ এবং চিত্রায়ন সমান্তরালভাবে চলেছিল, কিন্তু পৃষ্ঠপোষক রাজা হরিসেনের মৃত্যুতে এর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর চিত্ররীতিতেও এসেছিল পরিবর্তন। অন্যান্য গুহার মত মানবিক মুখ, ফুল, লতাপাতার স্থানে প্রাধান্য পেয়েছে নৃতাত্ত্বিক রূপ। এখানে বুদ্ধ “প্রলম্বপদ্মাসনে”।
২৫ নং গুহাটি বেশ ছোট এবং খুব একটা দর্শনীয় নয়। ২৬ নং গুহাটি আকারে বড় এক চৈত্যবিহার। উৎকীর্ণ লিপি থেকে জানা যায়—এই সুদৃশ্য গুহাটির নির্মাণ-কান্ডারী ছিলেন বৌদ্ধভিক্ষু “বুদ্ধভদ্র” এবং তাঁর সখা এক রাজঅমাত্য। এতে চিত্রাবলী আপেক্ষিকভাবে কম, ভাষ্কর্য বেশি – কারণ ভাষ্কর্যের স্থায়িত্ব বেশি আর সেই কারণেই এখানকার ভাষ্কর্যশৈলী অনেক পরিণত ও অনন্য। প্রবেশমুখের ওপরের অর্ধবৃত্তাকার গবাক্ষের চারিপাশে অপূর্ব সুন্দর মুরালস। ভেতরের হলঘরটির দু-পাশে পথ, ঠিক প্রদক্ষিণ পথের মত নয়। দেওয়ালময় নানান ভঙ্গিমায় বুদ্ধ। সবচেয়ে দৃষ্টি আকর্ষক দুটি ভাষ্কর্য—মহাপরিনির্বাণে শায়িত বুদ্ধ, অন্যটি ধ্যানস্থ বুদ্ধের ধ্যানভঙ্গের চেষ্টায় কন্যা ও সখী পরিবৃতা মারার নানান প্রলুব্ধ করমুদ্রা। ঠিক মাঝামাঝি জায়গায় রয়েছে ১৮টি প্যানেল সম্বলিত ডিম্বাকৃতি এক স্তূপ। প্রতিটি প্যানেলের কারুকৃতি দৃষ্টিনন্দন। স্তূপের মাথায় ন-টি ধাপ খচিত “হার্মিক”, যা মহাযান মতে ন-টি সংসারের প্রতীক। বেশ কিছু চিত্রাবলী রয়েছে বটে, কিন্তু অধিকাংশই উদ্ধার করা যায় না। এসব ছবির বেশ কিছু প্রতিলিপি করেছেন ব্রিটিশ চিত্রশিল্পী লেডি হ্যারিংগাম, গত শতাব্দীর প্রথমদিকে। তাঁর অমূল্য বই “Ajanta Frescoes” বইটি সংগ্রহ করার মত (Aryans Books International, 1998)
এরপর বাকি চারটি গুহা দেখবার উৎসাহ কমে এল। অর্ধবৃত্তাকার পাহাড়ে পাক দিয়ে প্রায় শেষপ্রান্তে চলে এলাম। পাহাড়ের ঠিক মাঝ বরাবর সুদৃশ্য ঝরনা—যেটি ওয়াঘুর নদীর উৎপত্তিস্থল।
আরো খানিক হেঁটে ২৭ নং গুহাটিতে পৌঁছলাম। বিহারের আদলে নির্মিত গুহাটির দুটি তলাই বেশ ভাঙাচোরা অবস্থায়। ২৮ নং গুহাটি বেশ কিছুটা দূরে এবং বেশ ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায়। ২০ এবং ২১ নং গুহা থেকে বেশ অনেকটা ওপরে উঠে অর্ধসমাপ্ত ২৯ নং গুহাটি এবং প্রায় নদীতটে আবিষ্কৃত ৩০ নং গুহা—এই দুটিই অজন্তা গুহামালার সবচেয়ে প্রাচীন বলে মনে করা হয়। ৩০ নং গুহাটি হঠাৎ করেই আবিষ্কৃত হয়, সময়টা সম্ভবত ১৯৫৬সাল। ১৬ নং গুহার সামনের পথ ভূস্খলনে ধ্বসে যায়। সেই বালিমাটি পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রায় নদীর পারে একটি গুহামুখ নজরে আসে এবং সেটিই ৩০ নং গুহা। ২৯নং গুহাটি খুব ছোট – প্রায় ৪মি X ৪মি। এর তিনটি প্রকোষ্ঠে পাথরের শোওয়ার জায়গা রয়েছে। দুটি উৎকীর্ণ লিপি রয়েছে তবে হরফের ভাষা উদ্ধার না হওয়ায় পাঠোদ্ধার হয়নি। হলে জানা যাবে হয়তো।
এই প্রান্তে পৌঁছে শেষপ্রান্তে এসে সম্পূর্ণ অজন্তা গুহামালার অর্ধবৃত্তাকার পরিসর, জঙ্গল ও ওয়াঘুর নদীর দৃশ্য বাড়তি প্রাপ্তি।
এবার ফেরার পালা। ক্ষনিকের বন্ধু ও সঙ্গী অনিলকে নিয়ে বাসে আমাদের গাড়ি পর্যন্ত এলাম। অনিলকে ওর পারিশ্রমিকের কিছু বেশিই দিলাম, কিছুতেই নেবে না। বলেকয়ে রাজি করানো গেল। গাড়িতে উঠে অনেনক্ষণ ওর হাতনাড়া দেখতে পেলাম। অপরূপা অজন্তার ভরপুর স্মৃতিতে অনিলভাইও রয়ে গেল মনের মনিকোঠায়।
সমাপ্ত
ছবি - লেখক
শিখর রায় | 115.187.***.*** | ১১ মে ২০২৩ ১৮:৩৭519662
ড. দিব্যেন্দু গাঙ্গুলি | 103.***.*** | ১১ মে ২০২৩ ১৯:৩২519671
শুভময় চ্যাটার্জী | 122.177.***.*** | ১১ মে ২০২৩ ২০:৩৫519677
Biswadeb Mukhopadhyay | 103.25.***.*** | ১১ মে ২০২৩ ২১:৩১519685
Debarati | 42.***.*** | ১৪ মে ২০২৩ ২২:৪৮519810
Dr. Amlan Lahiri | 2401:4900:1c01:ae41:94b3:38e5:dc76:***:*** | ১৫ মে ২০২৩ ১৮:৩১519830
kk | 2601:14a:502:e060:9b7b:d553:2c44:***:*** | ১৬ মে ২০২৩ ০৭:৩৯519839
বাসুদেব মুখার্জি,ব্যারাকপুর, কলিকাতা ৭০০১২২. | 2402:3a80:1967:fcc5:4cea:eb5b:3f9f:***:*** | ১৬ মে ২০২৩ ০৯:১৮519840
মুক্তি চন্দ। | 2405:201:9007:61d4:695d:315c:a732:***:*** | ১৬ জুন ২০২৩ ২০:৪১520448
তৃপ্তি কবিরাজ | 2405:201:9005:61cf:6933:eac8:4c07:***:*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:০৭523177
সুজয় দাস | 103.27.***.*** | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৫০523416
গীতাংশু কর | 106.2.***.*** | ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৫০526350