সৌম্যরা ঘরে ঢুকতেই রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তুষারবাবু। দিব্যেন্দুবাবুকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “কী করছেনটা কী আপনারা? প্রথমে আমার ছেলেটা খুন হল, আর তারপর নাতনি আর ছেলের বৌ উধাও। আমি একজন মিনিস্টার। তার নিজের বাড়িরই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে বিরোধীরা তো রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেই। আর আপনি যদি না পারেন, তো ছেড়ে দিন। আমি অন্য কাউকে দায়িত্ব দিই।”
দিব্যেন্দুবাবু শান্ত গলায় বললেন, “আমরা জাল গুটিয়ে এনেছি স্যার। পৃথা ম্যাডামকেও পেয়ে গেছি। উনি আর এক-দু’মিনিটের মধ্যেই এসে পৌঁছবেন। তাই তো আপনাদের সবাইকে এখানে ডেকেছি। জাস্ট আর আধাঘণ্টা মত আমাদের সময় দিন। তারপর যা বকাঝকা করার করবেন। এখানে উপস্থিত আমরা সবাই তো সবাইকে চিনিই। শুধু ডঃ সান্যালের পরিচয়টা দিয়ে দি’। উনি পৃথার ক্তার। সম্প্রতি তুহিনের চিকিৎসাও শুরু করেছিলেন। চলুন সবাই বসা যাক। শৌভিকবাবু, আপনিও বসুন।”
সবাই সেন্টার টেবিলটার চারপাশে বসলেন। শৌভিক ওর এমপ্লয়ার তুষারবাবুর সঙ্গে বসবে না বলে একটু পেছনে একটা টুল নিয়ে বসল। তুষারবাবুর মুখের অপ্রসন্নতা এখনও কাটেনি বোঝাই যাচ্ছে। তবে আগের থেকে এখন নিজেকে সামলেছেন। দিব্যেন্দুবাবুকে ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করলেন, “পৃথাদের কোথায় পেলেন? কোথায় ওরা?”
তুষারবাবুর কথা সাহস হওয়ার আগেই ঘরে ঢুকল পৃথা ও মহেশ। রজত আর সৌম্য একটু সরে গিয়ে মহেশ কুমারকে বসার জায়গা করে দিল। পৃথা গিয়ে বসল একটা সিঙ্গল সোফায়।
সৌম্য গলা খাঁকরে বলা শুরু করল।
“এই পুরো ঘটনাটা আসলে দাঁড়িয়ে আছে কে কী জানে আর জানে না তার ওপর। যেমন তুষারবাবু জানতেন না যে তুহিন মুম্বাই না গিয়ে কলকাতাতেই আছে, মহেশবাবু জানতেন না যে তুহিন কোম্পানি থেকে টাকা তোলে কেন, পৃথা জানে না হঠাৎ তুহিন ওকে এরকম একটা মেসেজ পাঠাল কেন। আর ঋকের খুনি জানত না যে তুহিন ঋককে কিছুমাত্র না জানিয়ে পৃথাকে মেসেজ করে বসে আছে। অবশ্য তুহিন যে ঋককে কিছু জানায়নি এটা আমার অনুমান মাত্র।”
এই পর্যন্ত বলে সৌম্য একবার নজর ঘুরিয়ে সবার মুখের দিকে দেখে নিল। সবাই চুপ, গম্ভীর। সৌম্য আবার বলা শুরু করল।
“এখানে একসাথে দুটো অপরাধ ঘটেছে। এই দুটো ক্রাইমই যে একেবারে পারফেক্ট ক্রাইম হতে হতেও হতে পারল না, তার কারণ আর কেউ নয়, তুহিন। তুহিন আসলে মানুষটাই এমন ছিল যে ওকে ভাল না বেসে থাকা মুশকিল। সেই ভালবাসার জোরেই তুহিন এই দুটো অপরাধের একেবারে আপাত পারফেক্ট পরিকল্পনাকে গোলমাল করে দিয়েছিল।”
সৌম্য থামল। রজত দেখল সৌম্যর মুখ্য থমথম করছে। ও সৌম্যর পিঠে হাত রাখল। আর কেউ না জানুক, ও তো জানে যে সৌম্য মুখে প্রকাশ না করলেও একটা সময়ে তুহিনকে ভালবাসত।
কয়েক মুহূর্তের জন্য ঘরটায় একটা নীরবতা নেমে এল।
মহেশকুমার সেই স্তব্ধতা ভেঙে বললেন, “দুটো অপরাধ মানে ইউ মিন তুহিন আর ঋকের মার্ডার, তাই তো?”
সৌম্য বললো, “না, ঋক কোলাটেরাল ড্যামেজ। আমি বলছি তুহিনের খুন আর ব্ল্যাকমেইলের কথা।”
এইবার মুখ খুললেন তুষারবাবু, “ব্ল্যাকমেল মানে? তুহিনকে কেউ ব্ল্যাকমেল করছিল?”
“হ্যাঁ। কিন্তু সেই ব্ল্যাকমেইলের কথা বলার আগে আমাদের আবারো একটু তুহিনকে বুঝতে হবে। তুহিনকে আমি চিনি আমাদের কলেজের সময় থেকে। আমরা বন্ধুর থেকেও একটু বেশি কিছুই ছিলাম। আমাদের মধ্যে আরও কোনো সম্পর্ক হয়তো হতেও পারত, কিন্তু সেটা হয়নি মূলত একটি কারণে। তা হল একটা দীর্ঘস্থায়ী সমকামী সম্পর্কে ঢুকতে হলে যে সাহসের প্রয়োজন, তা তুহিনের ছিল না। আমি তার জন্য ওকে দোষ দিই না। একজন পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছেলে হওয়ার সুবাদে ওর ওপর প্রায়ই লাইমলাইট থাকত। ফলে নিজের পছন্দমত লাইফ লিড করার সুযোগ ওর কাছে ছিল না। প্লাস ও তুষারবাবুকে ভয় করত খুব। ফলে কাকুর মতের ওপর কথা বলার সাহস ওর ছিল না। কাকু, ঠিক বলছি তো?”
তুষারবাবু বললেন, “ও আমার কথা শুনে চলত সে কথা ঠিক। কিন্তু ও সমকামী ছিল এ’কথা ঠিক নয়। স্কুল-কলেজে একটু এদিক ওদিক সবাই করে। তাই বলে সারাজীবন কেউ একটা আনন্যাচারাল জীবন কাটায় না। আর ও যে গে ছিল না, তার সব থেকে বড় প্রমাণ হল পৃথা আর আমার নাতনি। গে হলে ওর সন্তান হল কী করে?”
সৌম্য একটু হাসল। তারপর বলল, “সন্তান হওয়ার সঙ্গে যে গে-স্ট্রেট-বাই হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই তা এখন সবাই জানে। দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। সে যাই হোক, এখানে আমরা জেন্ডার বা সেক্সুয়ালিটির ক্লাস নিতে বসিনি। যা বলছিলাম তাতে ফেরত যাই। যেহেতু আমি তুহিনের স্বভাব জানতাম, তাই পরিবারের চাপে ও বিয়েতে রাজী হয়ে যাওয়ায় আমি অবাক হইনি। এটা তো হওয়ার ছিলই। তাই আমি ওর বিয়ের পর থেকে ওর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। কিন্তু আমি ওর সাথে যোগাযোগ না রাখলেও ও যে আমার সব খবরই রাখত, তার প্রমাণ পাই ওর বউ পৃথার কথায়। পৃথাকে ও শুধু আমাদের কলেজের কথাই বলেনি, আমার সাথে যোগাযোগ করতেও বলেছিল। তার মানে ও জানত যে আমি এখন ডিটেক্টিভ এজেন্সি শুরু করেছি। সঙ্গে এটাও জানত, যে ওর হেঁয়ালির মানে আমিই বুঝতে পারব। কলেজ জীবনে প্রায়ই আমরা ঐভাবে কথা বলতাম। তবে আমাকে যেটা আশ্চর্য করেছিল, সেটা হল ওর মেটামরফোসিস। কলেজের সেই লাজুক, ভীতু, মুখচোরা তুহিনের বয়ফ্রেন্ড হয়েছে, ও তার সাথে দেখা করতে মুম্বাই যায় – এসব শুনে বেশ অবাকই হয়েছিলাম। এই পরিবর্তনই প্রমাণ করে যে আমরা সবাই পাল্টাতে পারি, যদি ইন্সপিরেশন পাই। সে যাই হোক, সে সব কথায় পরে আসছি। ওর খুনের পর ক’দিন আমি আর রজত একেবারেই অন্ধকারে ছিলাম। ঋকের খুন পুরো ব্যপারটাকে আরও ঘেঁটে দিয়েছিল। এই সময় আমার হাতে আসে পৃথাকে পাঠানো তুহিনের একটা মেসেজ। বলতে পারেন, ওটাই আমাদের সামনে এগোনোর রাস্তা খুলে দেয়।”
দিব্যেন্দুবাবু এবার পৃথাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কিন্তু তুমি ওটা প্রথমেই আমাদের দেখাওনি কেন?”
পৃথা একটু থেমে থেমে বলল, “আসলে ওর ওই মেসেজে লেখা ছিল যদি ওর ফিরতে দেরি হয়, তাহলে আমি যেন মেসেজটা সৌম্যবাবুকে পাঠিয়ে দেই। তার সাথে এটাও লেখা ছিল, যে ওঁকে জানাতে পরের বার ও আর দেরি করবে না। আমি ভেবেছিলাম কোথাও কোনো দেখা করার ব্যাপার আছে। এর সাথে যে ওর মৃত্যুর কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে সেটা ওই অবস্থায় মাথায় আসেনি। প্লাস ওই দিনরাত্রি দশটা নাগাদ ও আমাকে ফোন করে বলেছিল, যে ওই মেসেজটা আর সৌম্যবাবুকে পাঠানোর দরকার নেই। কী, কেন সেইসব বাড়ি এসে বলবে বলেছিল। তুহিনের মৃত্যুর খবরটা পাওয়ার পর আর মাথা সেভাবে কাজ করেনি যে দুটো ঘটনাকে কানেক্ট করব। যখন জানলাম, যে ওর মৃত্যু রাইসিন থেকে হয়েছে যেটা কয়েক ঘণ্টা পরে কাজ করে তখন মনে হল, যে এই মেসেজটার কথা সৌম্যবাবুকে জানানো দরকার। তুহিনের মেসেজে সৌম্যবাবুদের ডিটেক্টিভ এজেন্সির কথা ছিল। সেটা না থাকলে হয়তো আমার এর পরেও ওঁদের কিছু জানানোর কথা মনে আসত না।”
পৃথা এক মুহূর্ত থামল। তারপর সৌম্যকে জিজ্ঞাসা করল, “ও নিজের বিপদ হতে পারে বুঝেই আমাকে মেসেজ করেছিল সেটা এখন বুঝতে পারছি। কিন্তু পরেরবার দেরি না করার মানেটা বুঝলাম না।”
সৌম্য একটু করুণ হেসে বলল, “ওটা পরের জন্মের কথা বলেছে। এই জন্মে নিজের জীবনটা নিজের মতো করে বাঁচতে বড় দেরি করে ফেলল।”
একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে সৌম্য আবার শুরু করল।
“বলতে দ্বিধা নেই, তুহিনের মেসেজের ধাঁধা সলভ করতে আমার একটু বেশিই সময় লেগেছে। তবে এই সময় লাগার কারণটাতেও আসছি একটু বাদে। তবে তার আগে ধাঁধাটা সবাইকে মনে করিয়ে দিই। “চাঁদের আলোর পান্থ শালায়, রামধনুর রং কালো। জীবনে যদি কিছু খুঁজতেই হয়, তবে শান্তির সন্ধান কোরো, অন্য কিছুর নয়” প্রথম স্ট্রাইক করে কালো রামধনু কথাটা। রামধনুর সঙ্গে যে ওর সমকামী পরিচয় জড়িত সেটা প্রথমেই ধরে নিই। তারপর আসি “কালো” শব্দটায়। অপরাধের জগতে কালো বা ব্ল্যাক বললে মনে আসে ব্ল্যাক মানি আর ব্ল্যাকমেল। তাই আমার প্রথমেই সন্দেহ হয় যে তুহিনকে কেউ ওর সমকামী পরিচয় নিয়ে ব্ল্যাকমেল করছিল। সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ে গেল যে ওর বিজনেস পার্টনার মহেশকুমার টিভিতে তুহিনের টাকাপয়সা তোলা নিয়ে কিছু বলছিলেন। আমি আর একটুও দেরি না করে তৎক্ষণাৎ মহেশের অফিসে যাই। ওনার সাথে কথা বলে জানতে পারি যে তুহিন অফিস থেকে গত কয়েকমাসে নিয়মিত ক্যাশে বড় বড় অংকের টাকা তুলছিল। এরপর অফিসের অ্যাকাউন্টেন্টের থেকে টাকা তোলার ডেটগুলো জানলাম। দেখা গেল টাকা তোলার পরপরই তুহিন ক’দিনের জন্য ছুটিতে চলে যেত। আমরা সবাই ধরেই নিয়েছিলাম যে ও এই ব্রেকে মুম্বাইতে ঋকের কাছে যেত। পৃথাও তাই জানত। কিন্তু তুহিনের ফোন থেকে আমরা জানতে পারলাম যে ও এই টাকা তোলার পর পর মুম্বাই নয় বরং দিল্লি যেত। এর মধ্যে আমরা তুহিনের ফোন থেকে জানতে পারি যে দিল্লির কোনো এক আনন্দ মিশ্র তুহিনকে ওর খুনের আগের বিকেলে ফোন করেছিল। রজত খুঁজে বার করে যে সে দিল্লির গে সার্কেলে বেশ পরিচিত মুখ। এটা শুনেই আমার মাথায় স্ট্রাইক করল যে ওই দিনের পার্টিতে যে আমন শর্মা এসে তুহিনের গলায় কিস করেছিল, সেও দিল্লিরই ছেলে। আমি একটা চান্স নিয়ে আনন্দ মিশ্রর ছবি ওই দিনের পার্টিতে ছিল এরকম এক জনকে পাঠিয়ে দিলাম। সে কন্ফার্ম করল যে এই আনন্দ মিশ্রই ওই দিনের পার্টির আমন শর্মা। আমরা ছবিতে দেখেছিলাম তুহিনের মৃতদেহের গলায় একটা হিকি বা চুমুর দাগ ছিল। আমাদের বন্ধু মানসের কথামত সেইদিন পার্টিতে আমন এসে তুহিনের গলায় আলতো করে চুমু খায়। ওই আলতো চুমুতে দাগ পড়ার কথা নয়। অর্থাৎ, দাগটা আমন আগেই দিয়েছিল, পার্টিতে নিজের দেওয়া দাগের ওপরেই চুমু খেয়েছিল। অন্যের দেয়া হিকির ওপর কেউ চুমু খাবে বলে মনে হয় না।”
“তার মানে তুহিন ঋককে বিট্রে করছিল? চিট করছিল? অসম্ভব, তুহিন সেরকম ছেলেই ছিল না।” পৃথা একটু অসহিষ্ণু হয়েই প্রশ্ন করল।
সৌম্য বলল, “ওয়েট ওয়েট। একটু ধৈর্য ধরুন। বলছি। তবে তার আগে বলি, আমন মানে হল শান্তি। তুহিন ওর ধাঁধায় আমাদের বলেছে যে যদি কখনো তদন্তের প্রয়োজন পড়ে তাহলে আমরা যেন আমনকে খুঁজি। খুঁজব কোথায়? সেটারও ক্লু ও দিয়ে রেখেছিল। বলেছিল জীবনে শান্তি খুঁজতে। আনন্দ শর্মা ওরফে আমন উঠেছিল জীবন লজেই। তুহিনের কোনও কারণে মনে হয়েছিল যে আমাদের হয়তো যখন তদন্তের প্রয়োজন হবে তখন আমাদের ক্লু দিতে ও আর এই পৃথিবীতে থাকবে না। কিন্তু ও সেই ব্যাপারে সিওর ছিল না। তাই পৃথাকে সব কিছু খুলে বলে নি ওকে মিছিমিছি চিন্তায় ফেলবে না বলে। কিন্তু ও যদি নিজের বিপদ বুঝেই ছিল তাহলে জীবন লজে গেল কেন?”
সৌম্য আবার থামল। তারপর বলল, “আমাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তুহিন নেই বটে, কিন্তু উত্তর পাওয়ার সব রাস্তা ও আমাদের বলে গেছে। তাই না শৌভিক?”
সৌম্যর প্রশ্নে সবার নজর ঘুরে গেল শৌভিকের দিকে। শৌভিক মাথা নেড়ে একটু রাগত স্বরেই বলল, “তার মানে? আমি কী করে এসব জানব?”
সৌম্য বলল, “না, সত্যিই তুমি জানতে না, যে তুহিন পৃথাকে ক্লুটা দিয়ে গেছে। তুমি ভেবেছিলে যে ও ক্লুটা দিয়ে গেছে ঋককে। আসলে সবার মতই তুমিও জানতে যে পৃথা আর তুহিনের সম্পর্ক ভাল নয়। তুমি ভাবতেও পারনি যে পৃথা আর তুহিন কীভাবে একে অপরের খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছিল। নিজেদের সমস্ত দূরত্ব সরিয়ে রেখে পৃথা হয়ে উঠেছিল তুহিনের সাহস, তুহিনের নিজেকে মেনে নেওয়ার রাস্তায় ওর ইন্সপিরেশন। ওদের সম্পর্কটা একটা মিথ্যে দিয়ে শুরু হলেও ওরা আসলে একে অন্যের আক্ষরিক অর্থের জীবনসঙ্গী হয়ে উঠেছিল। তাই শেষ ক্লুটা তুহিন পৃথাকে দিয়ে গিয়েছিল, ঋককে নয়। ওই যে বললাম পুরো কেসটাই দাঁড়িয়ে আছে কে কতটা জানে তার ওপর। তুমি যদি জানতে পৃথা তুহিনের কত বড় ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছিল তাহলে তুমি ঋককে নয়, পৃথাকে খুন করতে। তুমি ঋককে মিছিমিছিই খুন করলে শৌভিক।”
শৌভিক প্রায় ফুঁসে উঠে বলল, “কী যা তা বলে চলেছেন আপনি। নিজের মনগড়া কিছু একটা বলে দিলেই হল না কি?”
সৌম্য শান্তভাবে বলল, “দিব্যেন্দুকাকু, আপনি একটু আপনার লোকদের বলুন তো ওরা যেন আমন ওরফে আনন্দ মিশ্রাকে এই ঘরে নিয়ে আসে। দেখি সে আমাদের এই “চাঁদের আলোর পান্থশালা” ওরফে ঝুনঝুনুর বিধায়ক চন্দ্রকিরণ পন্থের শ্যালক মহাশয় শৌভিকবাবুকে চিনতে পারে কি না! তবে এই ব্যাপারেও তুহিনকে সেলাম না করে উপায় নেই। পান্থ আর শালার মাঝের স্পেসটা যে টাইপো নয়, ইচ্ছাকৃত, সেটা বুঝতে এতদিন লেগে গেল। হয়তো শেষ অবধিও ধরতে পারতাম না, যদি না চন্দ্র কিরণ পন্থের স্ত্রী বাঙালি এইটা জানার কিছুক্ষণের মধ্যেই মানস “শালা” শব্দটা বলত।”