এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  উপন্যাস  শনিবারবেলা

  • কালো রামধনু - ২

    অভিজিত মজুমদার
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০৯ জুলাই ২০২২ | ২০৩৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • সেভেন ট্যাঙ্কসের গলির মুখে পাওয়া গেলো মন্ত্রীর ছেলে তুহিন মিত্রের মৃতদেহ। মুম্বাইতে না গিয়ে মাঝরাতে টালা ট্যাঙ্কের কাছে কী করছিল সে? ঘটনাচক্রে নিহত ব্যক্তি আবার সৌম্যর প্রেসি-র বন্ধু। কলকাতার গোয়েন্দা-জুটি সৌম্য-রজতের কীর্তিকলাপের গল্প, যাদের নিজেদের সম্পর্ক - গোয়েন্দা-জুটির থেকে অনেক বেশি কিছু ... রহস্য ও সম্পর্কের আশ্চর্য টানাপোড়েনের পরত খুলবে একে একে …পড়তে থাকুন অভিজিত মজুমদারের নতুন পাক্ষিক ধারাবাহিক, "কালো রামধনু।"
    মূল ছবি - cottonbro

    পর্ব দুই



    তুহিন মিত্রের বাড়িতে ঢুকলেই প্রথমেই যেটা নজরে পড়ে, সেটা হল দেওয়ালে টাঙানো একটা প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা, তিন ফুট চওড়া, সাদাকালো তুহিন-পৃথার যৌথ ছবি। ছবিতে পৃথার মুখ দর্শকের দিকে ফেরানো, চোখ বোজা, মুখে আদুরে হাসি। একটা হাত তুহিনের বুকের ওপর রাখা। তুহিনের মুখ পৃথার কাঁধের ওপর রাখা। মুখে তৃপ্তির আভাস। ছবিটার বেশিরভাগটাই আলো-আঁধারি, শুধু দুজনের মুখ আর তৃষার হাতের বড় হীরের বিয়ের আংটিটার ফোকাস করা আলোয় উদ্ভাসিত।
    দেখেই বোঝা যায় ছবিটা কোনও নামী ফোটোগ্রাফারের শুট করা।

    রজত ঘরের এদিক ওদিক চোখ বোলাল। ঘরের বেশির-ভাগটাই নিরবচ্ছিন্ন সাদা-কালোয় সাজানো। সাদা চিকনের পর্দা, দাবার খোপের মতো খোপ-কাটা সোফার কভার, শ্বেতপাথরের সাদা কর্নার টেবিলের ওপর ব্ল্যাক মার্বলের মূর্তি। শুধু মাঝে মাঝে কিছু সবুজ গাছ এই সাদা কালোর দুনিয়ায় ছেদ এনে চোখের আরাম দেয়। ঘরের টেবিলে, দেরাজে এদিক ওদিক রাখা তুহিন-পৃথার আরও ছবি। বিয়ের, হানিমুনের, প্রেগন্যান্সির। সবই নিখুঁত ফোটাগ্রাফি। মাপা আলো, হিসেব করা অ্যাঙ্গেল।

    ঘরের মাঝের বড় সোফায় বসা নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তুষার মিত্র, তুহিনের বাবা। এমনিতে সদাহাস্যময় মানুষটিকে এখন দেখলে মনে হচ্ছে তাঁর ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। এলোমেলো চুল, চশমার কাচে আড়াল করা চোখের তলায় ক্লান্তি। হয়তো আড়ালে কান্নাকাটি করেছেন। এখন একটু সামলেছেন।

    দিব্যেন্দুবাবুকে দেখে একটা আলগোছে নমস্কার করলেন। তারপর রজতদের দেখে একটু ভুরু কুঁচকে বললেন, “এনাদের তো চিনলাম না। রিপোর্টার-টিপোর্টার..”
    উনি কথা শেষ করার আগেই দিব্যেন্দুবাবু হাঁ হাঁ করে উঠে বললেন, “না না, ও আমার ছেলে আর ওর বন্ধু। আসলে এদিকেই দেখা হয়ে গেল। তাই..”

    তুষারবাবুর তবুও কুঁচকোনো ভুরু দেখে সৌম্য বলল, “আসলে কাকু, আমি আর তুহিন একসাথে প্রেসিতে পড়তাম। আপনাদের বাড়িতেও এসেছি আগে। তুহিনের বিয়েতে যদিও আসতে পারিনি। তাই আজকে টিভিতে খবরটা দেখে থাকতে না পেরে চলে এলাম। গেটে ঢুকতে দিচ্ছিল না। তাই দিব্যেন্দুকাকুকে দেখে ওনার সঙ্গে ভেতরে এলাম আপনাদের সঙ্গে একটু দেখা করে যাব বলে। বেশিক্ষণ থাকব না। আসলে ব্যপারটা এমন শকিং। কাকিমা ঠিক আছেন? আর পৃথা?”

    সৌম্যর কথায় তুষারবাবুর কুঁচকোনো ভুরু সোজা হল। চশমাটা খুলে চোখ একটু মুছে বললেন, “হুম, সেই জন্যই মুখটা চেনা চেনা মনে হচ্ছিলো।" তারপর একটু থেমে আবার শুরু করলেন, “কী করে আর ঠিক থাকবে বলো? এই কি চলে যাওয়ার বয়স তোমার বন্ধুর? সুস্থ সবল ছেলে, শরীরে সামান্য কোনো রোগ-ব্যাধিও নেই, হঠাৎ দুম করে চলে যাবে এটা মানা যায়? তোমার কাকিমা আর পৃথা আছে দু’জনেই ভেতরে, একে অন্যকে সামলাচ্ছে। কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল!”

    সৌম্য এ বাড়িতে আগেও এসেছে। এই বাইরের ঘরের থেকে ভেতরে ঢুকলে দেখতে পাওয়া যাবে একটা সিঁড়ি। দোতলায় থাকেন সস্ত্রীক তুষারবাবু, একতলাটা তুহিনের জন্য। তবে বাড়িটার ডিজাইন এমন, যে দুটো তলা নিজেদের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করে থাকতে পারে। ফলে বাড়িতে সৌম্য বা অন্যান্য বন্ধুবান্ধব এলে তুহিন প্রায়শই নিজের দিকের দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে ওদের নিয়ে সময় কাটাত। তবে তুষারবাবু বাড়িতে থাকলে দরজা বন্ধ করার অনুমতি ছিল না। তুহিন মাঝে মাঝে মজা করে ফোনে বলত, আজকে বরফ পড়ছে, আজ আর বাড়ি থেকে বের হোস না।
    সৌম্য চুপ করে দাঁড়িয়ে পুরোনো দিনগুলোর কথা ভাবছিল। মাঝে বেশ কিছু বছর কেটে গেলেও মনে হচ্ছে যেন সেদিনের ঘটনা। যেন এক্ষুনি তুহিন দরজা খুলে বেরিয়ে এসে প্রেসির দিনগুলোর মত হেঁয়ালি করে কিছু একটা বলবে যার মানে উদ্ধার করতে সবাইকে মাথা চুলকোতে হবে।

    দিব্যেন্দুবাবু একটু গলাটা নীচু করে বললেন, “আমি দেখছি স্যার, যত তাড়াতাড়ি বডি পাওয়া যায়। তবে রাত্রের আগে বোধহয় কিছু হবে না।”
    তুষারবাবু একটা নিশ্বাস ফেললেন। তারপর বললেন, “আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। ও মুম্বই যাবে বলে পরশুদিন বাড়ি থেকে বের হল। আগামীকাল ওর ফেরত আসার কথা। কবেই বা কলকাতা এল, কেনই বা বাড়ি এল না, কিছুই তো মেলাতে পারছি না।”
    “আমরা দেখছি স্যার। তবে আপনাকে একটা খবর দেওয়ার ছিল”, দিব্যেন্দুবাবু বললেন।
    - কী খবর?
    - আমরা গত পরশুর কলকাতা-বোম্বের সমস্ত ফ্লাইট চেক করেছি। তুহিন মুম্বই আদৌ যায়নি। ও সম্ভবত পুরো সময়টা কলকাতাতেই ছিল। যেখানে ওনার বডিটা পাওয়া গেছে, তার কাছের একটা সিগারেটের দোকান থেকে কাল সন্ধের দিকে সিগারেটও কিনেছে। দোকানদার ছবি দেখে চিনতে পেরেছে। তবুও নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিজ্ঞেস করছিলাম, তুহিনবাবু কোন ব্র্যান্ডের সিগারেট খেতেন?
    - তুহিন সিগারেট আমার সামনে খেত না। পৃথা হয়তো বলতে পারবে।
    তারপর রজত আর সৌম্যকে বসতে বলে দিব্যেন্দুবাবুর দিকে সোজা তাকিয়ে বললেন, “আপনি একটু কাইন্ডলি আমার সঙ্গে ভেতরে আসবেন?”
    ঘরে এদিক ওদিক ছড়ানো অনেক লোকজন। সম্ভবত আত্মীয় এবং পার্টির লোকজন। একটি অল্পবয়স্ক সুদর্শন ছেলে ঘুরে ঘুরে সবার সাথে কথাবার্তা বলছে। হাঁটাচলায় বোঝা যায়, এই বাড়িতে সে স্বচ্ছন্দ, সম্ভবত একটা অধিকারবোধ আছে।

    সৌম্য উঠে গিয়ে ছেলেটিকে চাপা গলায় বলল, “আপনাকে বাড়ির লোক মনে হচ্ছে। একটু জল পাওয়া যাবে?”
    ছেলেটি ভেতর থেকে জল এনে দেওয়ার পর সৌম্য তার সাথে টুকটাক এটা-সেটা কথা বলে আলাপ জমিয়ে নিল। জানা গেল ওর নাম সৌভিক, গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে তুষার বাবুর পার্সোনাল অ্যাসিসট্যান্ট। তুষারবাবুর যাবতীয় কাজকর্ম ও-ই সামলায়।

    সৌম্য আর সৌভিকের কথা বলার মাঝখানেই দিব্যেন্দুবাবু ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বললেন, “চলো, এবার এগোনো যাক।”
    সৌম্য সৌভিকের দিকে একটু হেসে বলল, “আসি তাহলে। আবার হয়তো পরে দেখা হবে।”
    সৌভিকও প্রত্যুত্তরে একটু হেসে বলল, “সাবধানে বের হবেন। বাইরে জার্নালিস্টরা দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে। একটু আগে পৃথা ম্যামের জন্য ইনহেলার আনতে যাওয়ার সময় ধাক্কাধাক্কিতে আমি আরেকটু হলেই পড়ে যাচ্ছিলাম। সব একেবারে টাটকা খবরের জন্য ওঁৎ পেতে বসে আছে। মানুষকে এরকম সময়েও একটু শান্তি দেয় না।”
    সৌম্য ঘাড় ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানাল। তারপর তুষারবাবুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওরা পা বাড়াল।

    বাইরে বেরিয়ে ওরা বুঝল, সৌভিক কিছু বাড়িয়ে বলেনি। বিশেষত দিব্যেন্দুবাবুকে তো সাংবাদিকরা একেবারে পিঁপড়ের মত ছেঁকে ধরল। ওদের কোনওরকমে কাটিয়ে জিপে বসার পর সৌম্য দিব্যেন্দুবাবুকে জিজ্ঞেস করল, “কাকু, বডির পজিশন তো আর এখন দেখা যাবে না। তোমার কাছে কিছু ছবি আছে?”
    দিব্যেন্দুবাবু ফোনটা বার করে একটা ছবি খুলে ওর দিকে এগিয়ে দিলেন। ছবিটা দেখেই সৌম্যর বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল। রাস্তার মাঝখানে চিৎ হয়ে পড়ে আছে তুহিনের দেহটা। পরনে একটা ডিস্ট্রেসড জিন্স, গায়ে হাল্কা হলুদ টি-শার্ট, সুন্দর মুখটা যন্ত্রণায় নীল। সৌম্যর মনে পড়ে গেল, কলেজে কত মেয়ে এবং ছেলের বুকে কাঁপন ধরিয়েছিল তুহিন। সৌম্যও তাদের মধ্যে একজন। সেই তুহিনের নিথর দেহটার ছবি দেখে কেমন একটা অস্বস্তি হচ্ছিল সৌম্যর।

    রজত সৌম্যর থেকে ফোনটা নিয়ে জুম করে ছবিটা দেখছিল। গলার কাছে এসে নজর আটকে গেল ওর। তুহিনের গলার পাশে একটা রক্ত জমাট নীলচে দাগ। জুম করেও ভাল বোঝা যাচ্ছে না। অথচ বাবা যে বলল, শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না?
    দিব্যেন্দুবাবুকে জিজ্ঞেস করতে উনি একটু হেসে পরের ছবিটা দেখতে বললেন। রজত পরের ছবিতে গেল। এটা অনেক কাছ থেকে নেওয়া। যেটাকে ও রক্তজমাট দাগ বলে মনে করেছিল সেটা আসলে একটা প্যাশনেট চুমুর দাগ।

    ***

    কিছু খুচখাচ কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি আসতে আসতে সন্ধে হয়ে গেল সৌম্য-রজতের। তবে যত দেরিই হোক না কেন, বাইরে থেকে এসে স্নান করা রজতের একটা পুরোনো অভ্যেস। জামা-জুতো ছেড়ে তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢুকল রজত। সৌম্যও হাতমুখ ধুয়ে কিচেনে গিয়ে দু’কাপ কফি করে এনে রজতের কাপটা প্লেট দিয়ে ঢেকে নিজের কাপটা নিয়ে ব্যলকনির চেয়ারে বসল। হাতে গোল্ড ফ্লেক। ধোঁয়া-ওঠা কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে তুহিনের কথা ভাবছিল ও।
    লম্বা-চওড়া, জিম করা সুদর্শন তুহিনকে একবার দেখে চোখ ফেরানো শক্ত ছিল। সবথেকে আকর্ষণীয় ছিল ওর চোখ দুটো। ভাসা ভাসা স্বপ্নালু। আর হাসলে গালে টোল পড়ত। সব মিলিয়ে মনে হত, যেন বলিউডের কোনও রোম্যান্টিক হিরো। ওরকম চেহারা আর ওই রকম ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে যে কেউ অন্তত গোটা কতক প্রেম তো করতই। কিন্তু তুহিন ছিল লাজুক, একটু অন্তর্মুখী। সম্ভবত নিজের সেক্সুয়ালিটিকে অন্যদের, বিশেষত আগ্রহী মেয়েদের থেকে দূরে রাখতেই, নিজের চারপাশে একটা গণ্ডি টেনে রাখত তুহিন। তার জন্য কেউ কেউ ওকে অহংকারী ভাবলেও, সৌম্য অন্তত জানে, যে ও আদপেই ওরকম ছিল না। সৌম্যর সঙ্গে একটা সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্ক শুরুতেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল তুহিনের। তবে একে অন্যের ওরিয়েন্টেশনের ব্যপারে জানতে সময় লেগেছিল আরো অনেকদিন।

    সৌম্য নিজে আউট না হলেও, যৌনতা বিষয়ক আলোচনায় কোনও অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করত না কখনো। উল্টোদিকে সেক্সুয়ালিটি নিয়ে কোনও কথা উঠলেই তুহিনের ফর্সা গাল আর কানদুটো লাল হয়ে যেত। তাই আজ দুপুরে মানসের মুখে তুহিনের পার্টিতে যাওয়ার খবরে একটু আশ্চর্যই হয়েছিল সৌম্য। বাবার পরিচিতির কারণেই হোক বা নিজের স্বভাব, তুহিনকে কখনো কোনও ক্যুইয়র জমায়েতে দেখেনি ও। বিশেষত, বিয়ের পর থেকে তো একেবারেই নয়। অন্যদিকে সময়ের সাথে সাথে ক্রমে আউট হয়েছে সৌম্য। এখন ওর আর রজতের ব্যপারটা অনেকেই জানে। হয়তো সেই জন্যই তুহিনের সাথে গত কয়েক বছরে যোগাযোগ ছিল না বললেই চলে। আজ এতদিন বাদে এইভাবে তুহিনের ব্যপারে জড়িয়ে পড়বে, একথা কখনো কল্পনাও করতে পারেনি ও।

    তুহিনের কথা ভাবতে ভাবতেই ওর মনে পড়ল ঋকের কথা। ঋকের কোনও খবর পাওয়া গেল কিনা, সেটা তো জানা হল না। ইতিমধ্যে স্নান সেরে, একটা তোয়ালে জড়িয়ে, পাশের চেয়ারে এসে বসেছে রজত। সৌম্য নিজের ভাবনায় ডুবে ছিল দেখে আর কোনও কথা বলেনি রজত। এখন ওকে দেখে সৌম্য বলল, “একবার দ্যাখ তো মানসকে কল করে, ঋককে পেল কি না। ও কেমন আছে কে জানে। প্লাস, লাস্ট আমাদের জানা-মত তুহিন ওর সাথে ছিল। সেখান থেকে ও রাস্তায় কী করে পৌঁছল সেটা জানা দরকার।”
    রজত বলল, “ও হো, বাবাকে তো ওই ইনফো-টা দেওয়া হল না। আর তাছাড়া তুষারবাবু বাবাকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে কী বললেন, সেটাও জানা বাকি রয়ে গেল।”
    সৌম্য বলল, “যতক্ষণ না পোস্টমর্টেমে কোনও ফাউল প্লে পাওয়া যাচ্ছে ততক্ষণ কাকুকে হোটেল রাঁদেভু বা ঋকের ব্যাপারে কিছু বলার দরকার নেই। বুঝতেই পারছিস, পুরো কলকাতা ক্যুইয়ার কমিউনিটিকে নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে। আর তুষারকাকু, তোর বাবা – মানে দিব্যেন্দুকাকুকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে সম্ভবত এটাই বলেছেন, যে পারিবারিক কেচ্ছা যেন বাইরে না বের হয়।”
    - মানে তুষারকাকু তুহিনের ব্যপারে জানেন বলছিস?
    - দ্যাখ, না জানলেও এটুকু তো জেনেই গেলেন, যে তুহিন বাড়িতে বলে যাওয়া কথামত মুম্বাই যায়নি। শুধু এটুকু ইনফো বাইরে বের হলেই মিডিয়ার কাছে কীরকম মুচমুচে খবর হবে ভাবতে পারছিস? বাদ দে, বরং এবার একটু মানসকে ফোন লাগা।”

    মানসকে ফোন করে যেটা জানা গেল, তা হল ঋকের ফোন সারাদিনই স্যুইচড অফ ছিল। ওর বাড়িতে গিয়েও কমিউনিটির বন্ধুরা ওকে পায়নি। দরজা বাইরে থেকে তালা লাগানো দেখে ফিরে এসেছে।
    সৌম্য শুনে খানিক ভুরু কুঁচকে বলল, “তবে কি ঋক ফেরার? নাকি ওরও কোনও বিপদ হল? না রে রজত, মনে হচ্ছে কাকুকে বলতেই হবে। আর অপেক্ষা করা যাবে না।”
    সৌম্যর কথা শেষ হওয়ার আগেই ওর হোয়াটস্যাপে টুং করে একটা মেসেজ ঢুকল। সেন্ডার দিব্যেন্দুকাকু। সৌম্য মেসেজটা খুলল। জাস্ট একটা বাক্য “রাইসিন, ওয়ান অফ দ্যা মোস্ট টক্সিক পয়জন।”


    (চলবে)

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ০৯ জুলাই ২০২২ | ২০৩৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • যোষিতা | ১০ জুলাই ২০২২ ০৩:০৪509751
  • চলুক। সাসপেন্স জমে উঠছে।
  • Ranjan Roy | ১০ জুলাই ২০২২ ১০:৫১509764
  • অজানা দুনিয়া, দারুণ সাস্পেন্স! অপেক্ষায় আছি।
  • রৌহিন | ১৫ জুলাই ২০২২ ২১:২০509896
  • এটা বড্ড ছোট হল - আরেকটা চ্যাপ্টার ধরে যেত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন