এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  পরিবেশ

  • তাপবিদ্যুৎ বাড়ছে না, পরমাণু বিদ্যুৎও তাই (প্রথম কিস্তি)

    প্রদীপ দত্ত
    আলোচনা | পরিবেশ | ০৫ আগস্ট ২০২১ | ৫৭৭৯ বার পঠিত | রেটিং ৪.৩ (৩ জন)

  • তাপবিদ্যুৎ থেকে মুক্তির পথ কতদূরে

    কার্বন নিঃসরণের ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী কয়লা পোড়ানো। সিংহভাগ কয়লা পোড়ানো হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এবং বাকিটা শিল্পের জন্য। বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হয় প্রায় ৭২ শতাংশ, গ্যাস থেকে ২২ আর তেল থেকে ৫ শতাংশ। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) জানিয়েছে, উষ্ণায়ন ২ ডিগ্রির মধ্যে বেঁধে রাখতে হলে ২০৪০ সালের মধ্যে পৃথিবীর সব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে। তার মানে এখন থেকে পৃথিবীকে গড়ে বছরে প্রায় ১০০ গিগাওয়াট (১ গিগাওয়াট = ১০০০ মেগাওয়াট) ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করতে হবে। কিন্তু নানা দেশে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের যে পরিকল্পনা এখনও রয়েছে তা থেকে বোঝা যায় তা হওয়া খুবই কঠিন।

    নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে রাষ্ট্র সংঘ কার্বন নিঃসরণের ফলে উষ্ণায়ন ও জলবায়ু বদল নিয়ে বিশ্বকে সচেতন করেছে। অথচ, ২০০০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ বেড়ে ১,০৬৬ গিগাওয়াট থেকে হয়েছে ২,১২৫ গিগাওয়াট। ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর সাসটেনেবেল ডেভেলপমেন্ট (আইআইএসডি) ২০২০ সালে জানিয়েছে যে, তিন জীবাশ্ম জ্বালানি – কয়লা, তেল ও গ্যাসে বছরে ৩৭,০০০ কোটি ডলার ভর্তুকি দেওয়া হয়, আর নবায়নযোগ্য শক্তিতে (সৌর, বায়ু-বিদ্যুৎ জৈবভর, ভূতাপ ইত্যাদি) ১০,০০০ কোটি ডলার। তার মানে মুখে বললেও কয়লা, তেল ও গ্যাসের ব্যবহার সত্যিই বন্ধ হোক তা পৃথিবীর নানা দেশ চায় না। জলবায়ু বদল নিয়ে রাষ্ট্র সংঘ এবং পৃথিবীর বিজ্ঞানীকুল প্রবলভাবে শঙ্কিত হওয়ার প্রায় তিরিশ বছর পরেও এই ছবি অত্যন্ত হতাশ করে।

    কয়লা পুড়িয়ে এখনও পৃথিবীর প্রায় ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। ২০০০ সালে তাপবিদ্যুৎ (কয়লা চালিত) উৎপাদন করত ৬৬টি দেশ। সেই সংখ্যা বেড়ে এখন হয়েছে ৭৮। মোট ২৩৬ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কয়েকশো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে। নির্মীয়মাণ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্ধেকের বেশি রয়েছে চিনে (উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে ১২৯ গিগাওয়াট)। নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বিনিয়োগ কমলেও বিপুল সংখ্যক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। কার্বন নিঃসরণ কমেনি, বরং বাড়ছে।
    ইউরোপ ও আমেরিকায় চাহিদা কমেছে বলে ২০১৯ সালে কয়লার চাহিদা কমেছে। সে বছর শতকরা ৩ ভাগ কম তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। তারপরও মোট নিঃসরণ হয়েছে ৪,০৫৭ কোটি টন, ২০১৮-র চেয়ে ২৫.৫ কোটি টন বা ০.৬ শতাংশ বেশি। আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে নিঃসরণ কমেছে ১.৭ শতাংশ, চিনে বেড়েছে ২.৬ শতাংশ, ভারতে ১.৮ শতাংশ। কয়লার মোট চাহিদার ৬৫ শতাংশই হল চিন ও ভারতের চাহিদা। একা চিনের চাহিদাই মোট চাহিদার অর্ধেক। চিনের সঙ্গে ভারত সহ জাপান, কোরিয়া, তাইওয়ান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চাহিদা যোগ করলে হয় মোট চাহিদার ৭৫ শতাংশ।

    ২০২০ সালে কোভিড-১৯ অতিমারীর প্রভাবে অর্থনীতির নিম্নগতির জন্য ২০২০ সালে বিশ্বে বিদ্যুতের চাহিদা কমেছে ০.৬ শতাংশ (২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছিল গড়ে ৩ শতাংশ)। কোভিড-১৯-এ বিপর্যস্ত ইউরোপে অর্থনৈতিক সংকটের ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে ৪.৬ শতাংশ, ভারতে কমেছে ২.৫ শতাংশ। চিনে কিন্তু চাহিদা বেড়েছে ৩.৭ শতাংশ, আমেরিকায় ৩.১ শতাংশ। বিদ্যুৎ সেক্টরের বিচারে - তাপবিদ্যুতের উৎপাদন কমেছে ৪.৫ শতাংশ, পরমাণু-বিদ্যুৎ কমেছে ৩.৫ শতাংশ। ওদিকে বায়ু-বিদ্যুৎ বেড়েছে ১২ শতাংশ, সৌর-বিদ্যুৎ ২০ এবং জলবিদ্যুৎ ২ শতাংশ।

    একই বছর তাপবিদ্যুতের চাহিদা কমেছে ৫ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে ২০২১ সালে অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে বিদ্যুৎ ও শিল্পক্ষেত্রে কয়লার চাহিদা ৪.৫ শতাংশ বাড়বে। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে চাহিদা বৃদ্ধি সম্ভবত থেমে যাবে। তখন গ্যাসই হবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল জীবাশ্ম জ্বালানি, তারপরই নবায়নযোগ্য শক্তি।

    বিশ্বের সব বড় অর্থনীতি ২০৫০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনবে বলে অঙ্গিকার করলেও সেই লক্ষ্য অনুযায়ী নীতি নির্ধারণ করেনি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, উষ্ণায়ন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা থামাতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ অর্ধেক করে ফেলতেই হবে। ইউরোপের ২৭টি দেশ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের ৮ শতাংশের জন্য দায়ী হলেও তারা জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে নিঃসরণ ৫৫ শতাংশ কমিয়ে ফেলবে। এখন দেখা যাক সেই লক্ষ্যে বাকি দেশগুলো কতটা এগিয়েছে।
    আমেরিকার তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৬১ গিগাওয়াট, উৎপাদন বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। ২০১১ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে সে দেশে ৪৯ গিগাওয়াট ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ২০২০ সালে বন্ধ হয়েছে ১০ গিগাওয়াট। ওদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঘোষণা করেছেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষেত্রে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা হবে। ২০২১ সালের হিসেব অনুযায়ী আমেরিকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১২০০ গিগাওয়াট। এর শতকরা ৪৪ ভাগ জ্বালানি প্রাকৃতিক গ্যাস, ১৯ ভাগ কয়লা চালিত তাপবিদ্যুৎ। সৌর-বিদ্যুৎ ৪ শতাংশ, বাকি ৩৩ শতাংশ পরমাণু-বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ এবং বাকি নবায়নযোগ্য শক্তি। সে দেশের ২৬১ গিগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ এবং ৫০০ গিগাওয়াটের বেশি গ্যাসবিদ্যুৎ ১৫ বছরের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব কি না তা নিয়ে গভীর সন্দেহ থেকে যায়। তবে প্রায় দেড়শো বছর ধরে ইউরোপ ও আমেরিকা সবচেয়ে বেশি কয়লা পুড়িয়েছে। ঐতিহাসিক ভাবে উষ্ণায়ন থামানোর বড় দায়িত্ব পশ্চিমী শিল্পোন্নত দেশের হলেও সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব আমেরিকার (এখন নিঃসরণ ১১ শতাংশ)।

    আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নই সবচেয়ে বেশি হারে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করেছে। ২০০০ সালে ইউরোপের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা যা ছিল এখন কমে হয়েছে তার এক তৃতীয়াংশ। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ৩৭ শতাংশ বিদ্যুৎ জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে এলেও নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কোনও পরিকল্পনা নেই (২০২০ সালে জার্মানিতে একটি শেষ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হয়েছে)। বেলজিয়াম আগেই সমস্ত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছিল, ২০২০-তে অস্ট্রিয়া ও সুইডেনও তাই করেছে। সে বছর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (২৭) ও ব্রিটেনে ২০টির বেশি কেন্দ্র বন্ধ হয়েছে। ফ্রান্স ২০২২, ইতালি ২০২৫ এবং পর্তুগাল ২০২৩ সালের মধ্যে সব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেবে। পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক ও জার্মানি ছাড়া ইউরোপের সব দেশ ২০৩০-এর মধ্যে সমস্ত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেবে। উষ্ণায়ন রোধে ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার কথা। তবে জার্মানির সব কেন্দ্র বন্ধ করতে দেরি হবে, বন্ধ হবে ২০৩৮-এর মধ্যে। পোল্যান্ডের ৩০ গিগাওয়াট ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হবে তারও পরে।

    জি-২০ দেশের মধ্যে পাঁচটি দেশের ৭৫ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে -- সৌদি আরবের ১০০, দক্ষিণ আফ্রিকার ৮৬, ইন্দোনেশিয়ার ৮৩, মেক্সিকো ও অস্ট্রেলিয়ার ৭৫ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে কয়লা পুড়িয়ে। ২০০০ সাল থেকে এশিয়ায় তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে ৬৩ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চিনে। ২০১৯ সালে যোগ হয়েছে ৩০ গিগাওয়াট। একই বছর জাপানে চালু হয়েছে ২ গিগাওয়াট, আরও ৭.৪ গিগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। ভারতে যোগ হয়েছে ২ গিগাওয়াট, আরও ৩৫ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা তৈরির কাজ চলছে। এশিয়ার অন্য কয়েকটি দেশে ৫ গিগাওয়াট নির্মাণের কাজ চলছে। তবে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশে নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির হার আগের থেকে কমেছে। কোরিয়া, জাপান, ফিলিপাইন্স, ভিয়েতনাম, মিশর এবং বাংলাদেশের মত অনেক দেশ ভবিষ্যতে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের পথ বদল করতে উদ্যোগী হয়েছে।

    বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতায় চিন কয়েক বছর আগেই আমেরিকাকে ছাপিয়ে গেছে। ২০১৯ সালের শেষে তা হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ মেগাওয়াট। ভারতের (৩.৭৫ লক্ষ মেগাওয়াট) পাঁচ গুণ বেশি। চিনের তাপবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, সৌর-বিদ্যুৎ ও বায়ু-বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি। ২০০০ সাল থেকে ২০১৮-র মধ্যে চিনের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে পাঁচগুণ। হয়েছে ৯৭২.৫, পৃথিবীর ৪৮ শতাংশ। তাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৭০ শতাংশ আসে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে (ভারতের ক্ষেত্রে তা ৬৫ শতাংশ)। সে দেশের চতুর্দশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, বিদ্যুতের বর্ধিত চাহিদার জন্য ২০২৫ সালের মধ্যে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা হয়তো আরও ১০০ থেকে ২০০ গিগাওয়াট বাড়াতে হবে। সেদেশে যত পুরনো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়েছে নতুন কেন্দ্র চালু করছে তার চেয়ে বেশি। ২০২০ সালে পৃথিবীতে বন্ধ করে দেওয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা যা ছিল চিন একাই তার চেয়ে বেশি কেন্দ্র চালু করেছে। এক ২০২০ সালেই ক্ষমতা বাড়িয়েছে ৩৮ গিগাওয়াট, পৃথিবীতে মোট যা বেড়েছে তার ৭৬ শতাংশ।

    অনেকগুলি বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থার যৌথ ভাবে প্রকাশিত রিপোর্ট ‘বুম অ্যান্ড বাস্ট’ অনুযায়ী ২০২০ সালে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নতুন চুল্লি চালু করার ক্ষেত্রে প্রথম চিনের পরই রয়েছে ভারত। তবে দুই দেশের মধ্যে তফাৎ বিপুল। চিনে তাপবিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ও প্রস্তাবিত কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, ভারতে অতটা নয়। অবশ্য তার কারণ ভারতে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক কম। বেশিরভাগ কয়লা পোড়ায়, সবচেয়ে বেশি নিঃসরণ করে চিন (২৭ শতাংশ), ভারত করে তার তিন ভাগের এক ভাগ (৯.৭শতাংশ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের চেয়ে প্রায় ২ শতাংশ বেশি)। ভারতের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৯৯.৮ গিগাওয়াট (উৎপাদন ক্ষমতার তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, তাই তাপবিদ্যুৎ অলাভজনক হয়ে পড়েছে)। কিন্তু চিন, ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশ আজও কমন বাট ডিফারেনশিয়েটেড রেসপন্সিবিলিটির কথা বলছে।

    চিন, আমেরিকা ও ভারত ছাড়া বেশি তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা যোগ করেছে জাপান, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনাম। ভিয়েতনাম ৪২ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, এর মধ্যে ১০ গিগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে। সে দেশ গ্যাস থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে চায়, নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনেও গুরুত্ব দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে বেশ কয়েকটা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা বাতিল হবে। ইন্দোনেশিয়া সরকার এখনও তাপবিদ্যুৎ প্রসারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আগে যা পরিকল্পনা ছিল তা ছেঁটে ১০ গিগাওয়াট কম করেছে। ওদিকে আমদানি করা কয়লার দাম বেড়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করেছে বলে বাংলাদেশ ন’টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের (৭,৪৬১ মেগাওয়াট) পরিকল্পনা বাতিল করেছে।

    ২০০০ সাল থেকে ২০১৮-র মধ্যে এশিয়ার নানা দেশ তাপবিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়েছে ১৯১ গিগাওয়াট, আরও প্রায় ১০৪ গিগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে ২০১৬ সালে যতগুলো নতুন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল তার এক-তৃতীয়াংশ বাতিল অথবা মুলতুবি রাখা হয়েছে। তারা জানিয়েছে যে, তারা নতুন তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প হয় বাতিল করেছে, নয়তো পুনর্বিবেচনা করছে। তাদের বহু প্রকল্পে টাকা ঢালছে চিন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার আর্থিক সংস্থা।

    ২০২০ সালে ভারতের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে মোট ২ গিগাওয়াট, বন্ধ হয়ে গেছে মোট ১.৩ গিগাওয়াট, তাই উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে ০.৭ গিগাওয়াট। এখন নির্মীয়মাণ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যা আছে সবই তৈরি করছে এনটিপিসি অথবা অন্য কোনও সরকারি কোম্পানি। বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিক থেকে দেখলে তার কোনও প্রয়োজন নেই, কারণ বিদ্যুতের চাহিদা তেমন বাড়ছে না এবং নবায়নযোগ্য শক্তির চেয়ে তা বেশি খরচ সাপেক্ষ। আরও বিপদ হল নানা রাজ্যের ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি সস্তার বিদ্যুৎ (নবায়নযোগ্য-শক্তি) বাদ দিয়ে বেশি দামে ওই বিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য হবে। এদেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু যে ভয়ানক দূষণ ছড়ায় তাই নয়, তা রুগ্ন এবং অনেকক্ষেত্রে অন্যতম বৃহৎ স্ট্র্যান্ডেড অ্যাসেট। আমাদের যা চাহিদা সেই সাপেক্ষে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশি।

    এইসব কারণেই জাতীয় বিদ্যুৎ পরিকল্পনায় ২০২৭ সালের মধ্যে ৪৮ গিগাওয়াট ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ করে দেবার কথা বলা হয়েছে। নতুন নির্মাণের পরিকল্পনা কম, চালু বিদ্যুৎকেন্দ্রের পিএলএফ কম (প্ল্যান্ট লোড ফ্যাক্টর – বিদ্যুৎকেন্দ্রের গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং নির্ধারিত সময়ে যতটা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেত তার অনুপাত, পিএলএফ বেশি হলে আয় বেশি হয় বলে বিদ্যুতের দাম কমে)। পর পর দু’বছর কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে আসা, কোভিডের জন্য অর্থনীতির স্লথতা এবং নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা ক্রমেই বেড়ে চলা দেখে মনে হয় আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ভারতের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন তুঙ্গে উঠবে, তারপর তা কমতে থাকবে।

    অনেকদিন ধরেই ভারতের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গড় পিএলএফ বা প্ল্যান্ট লোড ফ্যাক্টর ৬০ শতাংশ বা তার কম। প্রাইভেট সেক্টরে তা আরও কম। কাম্য পিএলএফ হল ৮৫ শতাংশ। সৌর ও বায়ু-বিদ্যুতের দাম কমে আসা এবং কম পিএলএফ-এর জন্যই প্রাইভেট সেক্টর নতুন কেন্দ্র নির্মাণ থেকে সরে গেছে, তবে পাবলিক সেক্টর সরেনি। তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার সেকথা সরকার ছাড়া বাকিরা বুঝেছে। কারণ তা শুধু পরিবেশ, মানুষের স্বাস্থ্য ও উষ্ণায়নের জন্যই ক্ষতিকর নয়, বিদ্যুৎ সেক্টরের আর্থিক ক্ষতির দিক থেকেও হানিকর। অনেক কেন্দ্রের বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তি নেই, যার ফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্ট্রেসড ও স্ট্র্যান্ডেড অ্যাসেট বেড়েছে। এসব দেখে-বুঝেই প্রাইভেট সেক্টর এই ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগ করতে চায় না।
    মাদ্রিদে ২৫তম শীর্ষ সম্মেলনে (সিওপি২৫) নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন চেয়েছিল ২০৫০ সালের মধ্যে নিঃসরণ শূন্যে নিয়ে আসবে। কিন্তু পোল্যান্ড সেই সিদ্ধান্তে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। প্রায় সব দেশই চাইছিল চিন দু-এক বছরের মধ্যে নিঃসরণ সর্বোচ্চ সীমায় নিয়ে আসুক। কারণ ১৯৯৮ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে, ২০ বছরে চিনের বার্ষিক নিঃসরণ ৩২০ কোটি টন থেকে বেড়ে হয়েছে হাজার কোটি টনের বেশি। চিন নিঃসরণ করে পৃথিবীর শতকরা ২৭ ভাগ। নিঃসরণের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে যারা রয়েছে সেই আমেরিকা (১১ শতাংশ), ভারত (৬.৬) ও রাশিয়া (৪.৫) মোট যা নিঃসরণ করে চিন একাই করে তা চেয়ে ঢের বেশি। চিন যদি নিঃসরণ না কমায় তাহলে পৃথিবীর কোনও ভবিষ্যৎ নেই। তাই মাদ্রিদে কয়েকটি দেশের আবেদন ছিল চিন ও ভারত যেন স্বেচ্ছায় নিঃসরণ কম করে। চিনের নিঃসরণ অতি দ্রুত সর্বোচ্চ হওয়া প্রয়োজন, তারপর তা কমিয়ে ফেলা দরকার। কিন্তু চিন জেদ ধরে রইলো, প্যারিস চুক্তিতে যেমন বলা হয়েছে, ২০৩০ সালেই তারা সর্বোচ্চ নিঃসরণ করবে। অথচ চিনের তাপবিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা এখনই প্রায় সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছে। ভারতও পারে, ভারতের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় এক-চতুর্থাংশ কাজে লাগে না। আর্থিকভাবে সেইসব কেন্দ্র বিপন্ন, অনেক কেন্দ্র নন-পারফর্মিং অ্যাসেট হয়ে রয়েছে।

    ২০১৯ সালে বিশ্বে জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, গ্যাস, তেল ইত্যাদি) থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছিল ৬৪ গিগাওয়াট, ২০২০ সালে বেড়েছে ৬০ গিগাওয়াট। আইইএ জানিয়েছে, কয়লায় বিনিয়োগ কমছে। তার মানে তাপবিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতার বৃদ্ধিও কমেছে। ২০১১ সালে উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছিল ৮২ গিগাওয়াট। ২০১৮ সালে কমেছে ২০ গিগাওয়াট। ২০১০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত মোট ২২৭ গিগাওয়াট ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে আরও ১৮৬ গিগাওয়াট ক্ষমতার পুরনো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হবে। তবে বিশ্বের তাপমাত্রা বে-লাগাম বাড়তে দিতে না চাইলে ২০৩০ সালের মধ্যে কয়লার ব্যবহার কমাতে হবে ৮০ শতাংশ, একই সঙ্গে (নব) নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন তুমুল বাড়াতে হবে।

    গ্যাস-বিদ্যুৎ

    গ্যাস থেকে পৃথিবীর শতকরা ২৩ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। ২০২০ সালে কয়লা থেকে উৎপাদিত তাপবিদ্যুৎ কমলেও গ্যাস-বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে ৪০ গিগাওয়াট। বেড়েছে বেশি আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও চিনে। গ্যাস-বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতায় সবচেয়ে আগে রয়েছে আমেরিকা, ৫০০ গিগাওয়াটের বেশি, বিশ্বের ২৮ শতাংশ। আমেরিকার ৪০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ আসে গ্যাস জ্বালিয়ে। ২০২০ সালে সে দেশের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে প্রায় ৮ গিগাওয়াট। মধ্যপ্রাচ্যের গ্যাস-বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২২০ গিগাওয়াট। বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কয়লা নির্ভরতা থেকে মুক্তি চাইছে।

    গ্যাস-বিদ্যুৎ তাপবিদ্যুতের প্রায় অর্ধেক নিঃসরণ করে। তাই আমেরিকার মতো কয়েকটি দেশে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে গ্যাস-বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াচ্ছে বলে তাদের নিঃসরণ কমছে। পৃথিবীতে পরিবর্তনশীল নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন যত বাড়ছে তাপবিদ্যুতের বদলে গ্যাস-বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ছে। ২০১৬ সাল থেকে গ্যাস-বিদ্যুতে বিনিয়োগ কমছিল, ২০১৯ থেকে তা ফের বাড়ছে। গ্যাস-বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিচারে এশিয়ার মধ্যে প্রথম চিন, উৎপাদন ক্ষমতা ৯৬ গিগাওয়াট, ২০২০-তে বেড়েছে প্রায় ৬ গিগাওয়াট। চিন ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের শতকরা প্রায় ৪ ভাগ গ্যাস-বিদ্যুৎ। বিশ্বে ক্রমবর্ধমান গ্যাস-বিদ্যুৎ উৎপাদন তাপবিদ্যুতের উপর চাপ তৈরি করছে।

    নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসার কতটা হল

    ২০২০ সালে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে বিশ্বের শতকরা ২৮ ভাগ বিদ্যুৎ এসেছে। এরমধ্যে জলবিদ্যুতের ভাগ ১৬ শতাংশ। বাকি ১২ শতাংশ আসে অন্য (নব) নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে।
    গত এক দশকে পৃথিবীতে নবায়নযোগ্য শক্তি ও গ্যাস-বিদ্যুতের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। প্রায় প্রতিটি দেশেই সৌর ও বায়ু-বিদ্যুৎ সবচেয়ে সস্তা হয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে সৌর ও বায়ু-বিদ্যুতে জীবাশ্ম জ্বালানির চেয়ে অনেক বেশি বিনিয়োগ হচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে প্রতি বছর এই দুই নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা জীবাশ্ম জ্বালানির চেয়ে বেশি বাড়ছে। ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সৌর ও বায়ু-বিদ্যু্তের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে।

    ২০১৯ সালে জলবিদ্যুৎ বাদে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছিল ১৮১ গিগা-ওয়াট, জীবাশ্ম জ্বালানির ৬৪ গিগা-ওয়াট আর পরমাণু বিদ্যুতের ৮ গিগা-ওয়াট। পৃথিবী কোভিড অতিমারীর কবলে পড়ার পর ২০২০ সালে জলবিদ্যুৎ ছাড়াই নবায়নযোগ্য শক্তি বেড়েছে ২৬০ গিগা-ওয়াট। সৌর-বিদ্যুৎ বেড়েছে ১২৭ গিগা-ওয়াট, বায়ু-বিদ্যুৎ ১১১। আর জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে ৬০ গিগা-ওয়াট।

    ২০২০-র শেষে নবায়নযোগ্য শক্তির মোট উৎপাদন ক্ষমতা হয়েছে ২৭৯৯ গিগা-ওয়াট (১ গিগা-ওয়াট = ১০০০ মেগাওয়াট)। এরমধ্যে জলবিদ্যুৎ ১,২১১ গিগা-ওয়াট (৪৩ শতাংশ), সৌর-বিদ্যুৎ ৭৫৪ এবং বায়ু-বিদ্যুৎ ৭৪৩ গিগা-ওয়াট। শেষ দুইয়ে মিলে এখন মোট বিদ্যুতের প্রায় দশ শতাংশ উৎপাদন করছে। একই সময়ে জীবাশ্ম জ্বালানির মধ্যে সবচেয়ে দূষিত কয়লার ব্যবহার কমেছে প্রায় ১ শতাংশ। সূর্যালোক ও বাতাস কোনওদিন বন্ধ হবে না। ওই দুই ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে বিনিয়োগের সুবিধাও রয়েছে। কয়লা, তেল, গ্যাস ও ইউরেনিয়ামের সরবরাহ সীমিত এবং একবারেই বিপুল বিনিয়োগ করতে হয়।

    ২০২০ সালে চিন জলবিদ্যুতে ব্যয় করেছে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে মোট ব্যয়ের ২০.৫ শতাংশ, বাকি নবায়নযোগ্য শক্তিতে ৬১.৭ এবং পরমাণু বিদ্যুতে ৭.২ শতাংশ, বাকিটা তাপবিদ্যুৎ ও গ্যাস-বিদ্যুতে। সম্প্রতি চিন জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ২০০৫ সালের চেয়ে শতকরা অন্তত ৬৫ ভাগ নিঃসরণ কম করবে এবং ২০৬০ সালের মধ্যে নিঃসরণ পুরোপুরি বন্ধ করবে।
    একই বছর চিনের বায়ু-বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ৩০৮ গিগাওয়াটে পৌঁছেছে, সৌরবিদ্যুতের ক্ষমতা হয়েছে ২৫৩ গিগাওয়াট। বায়ু-বিদ্যুতে চিন বিশ্বে প্রথম, দ্বিতীয় আমেরিকা, তৃতীয় জাপান, চতুর্থ জার্মানি। তবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দেশ মোট যে পরিমাণ বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন করে, চিন একাই তার চেয়ে অনেক বেশি করে। প্রায় একই কথা সৌর-বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও সত্যি।

    ওই বছর (২০২০) আমেরিকার সৌর ও বায়ু-বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে যথাক্রমে ১৬,৫০০ ও ১৭,১০০ মেগাওয়াট। জলবিদ্যুৎসহ নবায়নযোগ্য শক্তি হয়েছে মোট বিদ্যুতের শতকরা ২০ ভাগ। সে দেশে প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে তৈরি হয় শতকরা ৪১ ভাগ বিদ্যুৎ, কয়লা থেকে তাপবিদ্যুৎ ১৯ ভাগ (দশ বছর আগেও হত শতকরা ৪৫ ভাগ), পরমাণু-বিদ্যুৎ শতকরা ২০ ভাগ। আমেরিকায় বিদ্যুতের চাহিদা-বৃদ্ধির হার কম। গ্যাস-বিদ্যুৎ ও নবায়নযোগ্য শক্তির বৃদ্ধি এবং একের পর এক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার জন্যই তাপবিদ্যুতের উৎপাদন কমছে।

    ২০২০ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে (২৭) জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ৩৭ শতাংশ (কয়লা থেকে ১৩ শতাংশ) এবং নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে এসেছে ৩৮ শতাংশ। সৌর ও বায়ু-বিদ্যুৎ -- দুইয়েরই উৎপাদন ক্ষমতা ২০১৫ সালের দ্বিগুণ হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ করাই নয়, একই সময়ে গ্যাস এবং পরমাণু-বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ করা তাদের লক্ষ্য। ওই সময়ের মধ্যে মোট নিঃসরণ ১৯৯০ সালের চেয়ে শতকরা ৫৫ ভাগ কম করতে চায়। বৈদ্যুতিক গাড়ির বাড়তি চাহিদাও তারা মেটাতে চায় নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে। কাজটা খুবই কঠিন এখন দেখা যাক তারা কতটা করতে পারে!

    ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) মতে জলবায়ু বদল থামাতে গেলে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বর্তমান বিনিয়োগ যথেষ্ট নয়, তাপমাত্রার বৃদ্ধি ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নীচে বেঁধে রাখতে হলে ২০২৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বর্তমান হারের দ্বিগুণ বিনিয়োগ করতে হবে। তবে শুধু নবায়নযোগ্য শক্তির বৃদ্ধিই জলবায়ু বদল রোখার জন্য যথেষ্ট নয়, সবুজায়ন বৃদ্ধি করলেও তা হবে না। তা করতে গেলে জীবাশ্ম জ্বালানির দহন বন্ধ করতেই হবে। কেবল কয়লাই নয়, গ্যাস ও জৈবভর পোড়ানোও বন্ধ করতে হবে।

    ব্রিটেনের কার্বন ট্র্যাকার এবং কাউন্সিল অন এনার্জি এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার (সিইইডব্লু) যৌথ ভাবে প্রকাশিত এক স্টাডি রিপোর্ট ‘রিচ দ্য সান’-এ জানিয়েছে যে, উদীয়মান দেশ কম খরচের নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ঝুঁকেছে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ প্রায় চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছেছে। বিশ্বের নব্বই ভাগ অঞ্চলেই নবায়নযোগ্য শক্তি সবচেয়ে সস্তা। এইসব দেশের বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধির মধ্যে ভারতের ভাগ ৯ শতাংশ, আবার আগামী দিনে সম্ভাব্য বৃদ্ধির ২০ শতাংশ। চিনের চাহিদা বৃদ্ধির ভাগ ৫০ শতাংশ, সম্ভাব্য বৃদ্ধির ভাগ ৩৯ শতাংশ। বেশিরভাগ উদীয়মান দেশ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার পেরিয়ে যাবতীয় বৃদ্ধি নবায়নযোগ্য শক্তি থেকেই পেতে চলেছে। ২০১০ সালে ভারতে নবায়নযোগ্য শক্তি ছিল ২০ গিগাওয়াটের কম, ২০২১-এর মে মাসে তা বেড়ে হয়েছে ৯৬ গিগাওয়াট। বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র হিসেবে ধরলে তা হয়েছে ১৪২ গিগাওয়াট বা দেশের মোট বিদ্যুতের ৩৭ শতাংশ।

    গত পাঁচ বছরে পৃথিবীর সৌর ও বায়ু-বিদ্যুতের উৎপাদন দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০২০ সালে সৌর ও বায়ু-বিদ্যুৎ ২৪৩৫ টেরাওয়াট আওয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে, যা এখন মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ, ২০১৫ সালে ছিল ৫ শতাংশ (১০৮৩ টেরাওয়াট আওয়ার)। সৌর ও বায়ু-বিদ্যুৎ উৎপাদনে ডেনমার্ক (৬১ শতাংশ), তারপরই উরুগুয়ে (৪৪ শতাংশ)। এরপর রয়েছে ইউরোপের আয়ারল্যান্ড (৩৫ শতাংশ), জার্মানি (৩৩শতাংশ), ব্রিটেন (২৯শতাংশ), স্পেন (২৯ শতাংশ), গ্রিস (২৭ শতাংশ), পর্তুগাল (২৬শতাংশ)। এছাড়া তুর্কিস্তান (১২শতাংশ), আমেরিকা (১২শতাংশ), ব্রাজিল (১১শতাংশ), জাপান (১০শতাংশ), চিন (৯.৫ শতাংশ), ভারত (৯ শতাংশ)। ২০২০ সালে চিন উৎপাদন করেছে ৭২৮ টেরাওয়াট আওয়ার, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ৫৪০ টেরাওয়াট আওয়ার এবং আমেরিকা ৪৬৯ টেরাওয়াট আওয়ার। তিন বছরে ভিয়েতনামে সৌর ও বায়ু-বিদ্যুতের উৎপাদন অতি দ্রুত বেড়েছে। পাঁচ বছরে চিলি ও দক্ষিণ কোরিয়া উৎপাদন বাড়িয়েছে চারগুণ। চিন, ভারত, ব্রাজিল, মেক্সিকো, তুর্কিস্তান ও উরুগুয়ে বাড়িয়েছে তিনগুণ।

    আইইএ-র মতে ২০৫০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে নিঃসরণ শূন্য করতে পারলেই উষ্ণায়ন ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে মনে রাখতে হবে একই সময়ে সরাসরি বিদ্যুৎ ছাড়া পরিবহন ক্ষেত্র ও তাপ উৎপাদনের চাহিদা মেটাতে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে আড়াইগুণ।

    সাধারণ ভাবে কয়লা ও লিগনাইট থেকে তাপবিদ্যুৎ এবং পরমাণু-বিদ্যুতের উৎপাদন কমছে, বাড়ছে নবায়নযোগ্য শক্তি ও গ্যাস-বিদ্যুৎ। তবে তা উষ্ণায়ন ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট নয়। তাছাড়া তাপবিদ্যুতের তুলনায় গ্যাস-বিদ্যুতের নিঃসরণ অর্ধেকের কম হলেও নিঃসরণ একেবারে বন্ধ হয় না। মনে রাখতে হবে আমরা শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনে নিঃসরণ বন্ধ করা নিয়ে আলোচনা করছি। বিদ্যুৎ ও তাপ উৎপাদনে ২৫ শতাংশ নিঃসরণ হয়। বিদ্যুতের কর্মক্ষমতা অনেকটাই বেড়েছে। তবে পরিবহন, শিল্প, কৃষি ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিঃসরণ হয় ৭৫ শতাংশ, সেসব ক্ষেত্রে অগ্রগতি খুবই কম হয়েছে।





    সূত্রনির্দেশ:

    তাপবিদ্যুৎ থেকে মুক্তির পথ কতদূরে ও গ্যাসবিদ্যুৎ


    1. Global coal plant tracker – end coal, https://endcoal.org/global-coal-plant-tracker/
    2. Summary Statistics - End Coal, https://endcoal.org/global-coal-plant-tracker/summary-statistics/
    3. Electricity Market Report, IEA, December 2020, Report extract, 2020 Global overview: Capacity, supply and emissions, https://www.iea.org/reports/electricity-market-report-december-2020/2020-global-overview-capacity-supply-and-emissions
    4. Rebound in global coal demand in 2021 to be short-lived, but no immediate decline in sight: IEA, ETEnergyWorld, December 18, 2020, https://energy.economictimes.indiatimes.com/news/coal/rebound-in-global-coal-demand-in-2021-to-be-short-lived-but-no-immediate-decline-in-sight-iea/79793938
    5. Manka Behl, Most coal-based power plants coming up are govt owned: Report, TNN,April 17, 2021, https://energy.economictimes.indiatimes.com/news/coal/most-coal-based-power-plants-coming-up-are-govt-owned-report/82111974
    6. Su-Lin Tan, China’s carbon neutral push gathers pace as coal-fired power plants drop below 50 per cent for first time, 20 Feb, 2021, https://www.scmp.com/economy/china-economy/article/3122419/chinas-carbon-neutral-push-gathers-pace-coal-fired-power
    7. Jochen Bittner, The tragedy of Germany’s energy experiment, The New York Times, January 8, 2020, https://www.nytimes.com/2020/01/08/opinion/nuclear-power-germany.html
    8. Su-Lin Tan, China’s carbon neutral push gathers pace as coal-fired power plants drop below 50 per cent for first time, 20 Feb, 2021, https://www.scmp.com/economy/china-economy/article/3122419/chinas-carbon-neutral-push-gathers-pace-coal-fired-power
    9. Isabelle Gerretsen, Bangladesh scraps nine coal power plants as overseas finance dries up, 25/02/2021, https://www.climatechangenews.com/2021/02/25/bangladesh-scraps-nine-coal-power-plants-overseas-finance-dries/
    10. Power sector at a glance ALL INDIA, https://powermin.nic.in/en/content/power-sector-glance-all-india
    11. Charles Kennedy,IEA Head: India’s coal exit cannot happen without financial support, March 03, 2021, https://oilprice.com/Latest-Energy-News/World-News/IEA-Head-Indias-Coal-Exit-Cannot-Happen-Without-Financial-Support.html
    12. PTI, India to meet its Paris agreement commitments ahead of 2030: PM Narendra Modi, March 06, 2021, https://energy.economictimes.indiatimes.com/news/renewable/india-to-meet-its-paris-agreement-commitments-ahead-of-2030-pm-narendra-modi/81359467
    13. Manka Behl, 80 per cent of planned coal power plants in India, four Asian nations, TNN, June 30, 2021, https://energy.economictimes.indiatimes.com/news/coal/80-per-cent-of-planned-coal-power-plants-in-india-four-asian-nations/83979672
    14. Opinion: Germany's new climate targets seal coal phase-out by 2030, ETEnergyworld, July 02, 2021, https://energy.economictimes.indiatimes.com/news/coal/opinion-germanys-new-climate-targets-seal-coal-phase-out-by-2030/83989461
    15. America’s electricity generating capacity, American Public Power Association, https://www.publicpower.org
    16. Electricity Market Report, IEA, December 2020, Report extract, 2020 Global overview: Capacity, supply and emissions, https://www.iea.org/reports/electricity-market-report-december-2020/2020-global-overview-capacity-supply-and-emissions
    17. Natural gas-fired power, more efforts needed, https://www.iea.org/reports/natural-gas-fired-power
    18. Natural gas fired power, tracking report, June 2020, https://www.iea.org/reports/natural-gas-fired-power
    19. Global Energy Statiscal Yearbook 2021, Slight decrease in global power generation in 2020, after a slowdown in 2019, https://yearbook.enerdata.net/electricity/world-electricity-production-statistics.html

    নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসার কতটা হল

    1. World adds record new renewable energy capacity in 2020, 05 April, 2021, irena.org/newsroom
    2. IRENA Outlook 2020,
    3. Renewables 2020, IEA -- analysis and forecast to 2025, Fuel Report, November 2020 https://www.iea.org/reports/renewables-2020
    4. Global electricity review 2021, ember-climate.org/project
    5. N. Sönnichsen, Global cumulative installed wind power capacity from 2001 to 2019 (in megawatts), Apr 28, 2020, https://www.statista.com/statistics/268363/installed-wind-power-capacity-worldwide/
    6. David Vetter, ‘The Urgency Is Immense’: Wind And Solar Power Double In 5 Years, But Countries Are Clinging To Coal, https://www.forbes.com/sites/davidrvetter/2021/03/29/the-urgency-is-immense-wind-and-solar-power-double-in-5-years-but-countries-are-clinging-to-coal/
    7. Jazmin Goodwin, History made: Renewable energy surpassed fossil fuels for European electricity in 2020, CNN Business, January 24, 2021, https://edition.cnn.com/2021/01/24/business/eu-renewable-energy-fossil-fuels/index.html
    8. Common Dreams, 'A Remarkable Story of Resilience and Hope': Renewable Energy Smashes Records in 2020, https://www.livemint.com/industry/energy/india-delays-anti-pollution-rules-for-coal-power-plants-again-11617449438348.html
    9. Joe Bebon, The US added 16.5 GW of PV in 2020, pv magazine USA, February 22, 2021, https://www.pv-magazine.com/2021/02/22/the-us-added-16-5-gw-of-pv-in-2020/
    10. Germany’s renewable share climbs to 46 percent in 2020 – preliminary data; clean energy, Wire, https://www.cleanenergywire.org/news/germanys-renewable-power-share-climbs-46-percent-2020-preliminary-data
    11. France renewable capacity swells to 54.7 GW, 24 September, biz.renews/63340/france-renewables-capacity-swells-to-54.7-GW
    12. James Burgess, China’s wind power capacity could reach 300 GW by 2020, Oilprice.com, https://gwec.net/chinas-wind-power-capacity-could-reach-300gw-2020/
    13. Reuters Staff, December 10, 2020, China solar power capacity growth hits 40GW in 2020-- official, https://www.reuters.com/article/china-solar/china-solar-capacity-growth-hits-40-gw-in-2020-official-idUKL1N2IQ0HJ
    14. Jason Deign, What is going on with China’s crazy energy installation figures? February 02, 2021, https://bit.ly/2TXzltO
    15. G Balachandar, Capacity addition in renewable sector sluggish, February 3, 2021, https://www.thehindubusinessline.com/news/capacity-addition-in-renewable-sector-sluggish/article33741661.ece
    16. Rangoli Agrawal, India likely to miss 2022 renewable energy target by a long way, March 2021, https://www.livemint.com/industry/energy/india-likely-to-miss-2022-renewable-energy-target-by-a-long-way-11614665570933.html
    17. PTI, Have set up an alliance ready to help India achieve its renewable energy goals: US, March 06, 2021, https://energy.economictimes.indiatimes.com/news/renewable/have-set-up-an-alliance-ready-to-help-india-achieve-its-renewable-energy-goals-us/81359744
    18. Victoria Masterson, Renewables were the world’s cheapest source of energy in 2020, report shows, 11 July, 2021, https://theprint.in/environment/renewables-were-the-worlds-cheapest-source-of-energy-in-2020-report-shows/693382/
    19. Esha Roy , ‘Renewables provide 37% of India’s power capacity’, July 15, 2021, https://indianexpress.com/article/india/renewables-provide-37-of-indias-power-capacity-7405194/
    20. Eurostat (online datacode:nrg_ind_peh)



    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৫ আগস্ট ২০২১ | ৫৭৭৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • সুকি | 117.194.***.*** | ০৫ আগস্ট ২০২১ ১৯:২১496469
  • অনেক খেটে তথ্য সংগ্রহ করে লেখা বোঝাই যাচ্ছে - লেখককে ধন্যবাদ।


    "জি-২০ দেশের মধ্যে পাঁচটি দেশের ৭৫ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে -- সৌদি আরবের ১০০, দক্ষিণ আফ্রিকার ৮৬, ইন্দোনেশিয়ার ৮৩, মেক্সিকো ও অস্ট্রেলিয়ার ৭৫ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে কয়লা পুড়িয়ে"


    সৌদি আরব কি ভুল করে ঢুকেছে লিষ্টে? সৌদিতে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুত হয় না, সবই তেল আর গ্যাস থেকে 


     ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর সাসটেনেবেল ডেভেলপমেন্ট (আইআইএসডি) ২০২০ সালে জানিয়েছে যে, তিন জীবাশ্ম জ্বালানি – কয়লা, তেল ও গ্যাসে বছরে ৩৭,০০০ কোটি ডলার ভর্তুকি দেওয়া হয়, আর নবায়নযোগ্য শক্তিতে (সৌর, বায়ু-বিদ্যুৎ জৈবভর, ভূতাপ ইত্যাদি) ১০,০০০ কোটি ডলার। তার মানে মুখে বললেও কয়লা, তেল ও গ্যাসের ব্যবহার সত্যিই বন্ধ হোক তা পৃথিবীর নানা দেশ চায় না। 


    তেল আর গ্যাসে কি ভর্তুকি দেওয়া হয় একটু ব্যখা করলে ভালো হয়। তেল আর গ্যাস বাজারে চলছে মাল সস্তা বলে। এর থেকে সস্তা জিনিস মার্কেটে চলে এলে তেল/গ্যাসের বাজার এমনিতেই কমে যাবে

  • Anindita Roy Saha | ০৬ আগস্ট ২০২১ ২০:৪০496504
  • কিন্তু চিন, ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশ আজও কমন বাট ডিফারেনশিয়েটেড রেসপন্সিবিলিটির কথা বলছে।


    “কিন্তু”কেন? এর পেছনে ঐতিহাসিক দায় ও কারণ তো আছেই। শিল্প বিপ্লব থেকে ধরলে পৃথিবীর সব দেশকে সমান ধরা যায় না। উন্নত অনুন্নত আর উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে যে ব্যবধান তার ফলে এটা ঘটতে বাধ্য। 


    Environmental Economics এ কুজনেৎস কার্ভ একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ধারনা। এই বক্রটি উল্টোনো ইউ এর মতো। অর্থনৈতিক বিকাশের গোড়ার দিকে পরিবেশের ক্ষতি বেশি ও বর্দ্ধমান। ক্রমশ উন্নতির ফলে তা ধীরে ধীরে কমে। উন্নত দেশগুলি অর্থনৈতিক বিকাশের সংগে সংগে উন্নত কারিগরী কৌশল আগে লাভ করে  এবং পরিচ্ছন্ন টেকনোলজীর দিকে এগিয়ে যায়। উন্নয়নশীল দেশের সেখানে পৌঁছতে সময় লাগে। তাই যখন উন্নত দেশগুলি কার্ভটির পতনশীল অংশে পৌঁছে যায় , তখনও উন্নয়নশীল দেশে পুরোনো কারিগরী কৌশল চলতে থাকে , পরিবেশ নোংরা হয়। পরে শুরু করা দেশ  আর আগে শুরু করে এগিয়ে যাওয়া দেশ এক হতে পারে না। আন্তর্জাতিক চুক্তি সকলের জন্য সমান হলে ঐতিহাসিক দায়িত্বশীলতাকে অস্বীকার করা হয়। চীন কিম্বা ভারত বেশী সিওটু এমিশনের দোষে দোষী । কারণ তারা লেট কামার। তাই কমন বাট ডিফেরেনশিয়েটেড দায় থাকাই ন্যায্য। 


    কাউকে পিছনে রাখলে সে তোমারে পিছনে টানবেই। গোটা পৃথিবীকে তার মাশুল দিতে হবে। ঔপনিবেশিক ইতিহাস বাদ দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা টেঁকসই উন্নয়ন বোঝা যায় না। 

  • Ramit Chatterjee | ০৭ আগস্ট ২০২১ ০০:১৬496511
  • সব কিছু মেনে নিয়েও লেট কামার হিসেবে এখানে ছাড় দেওয়া সম্ভব নয় কারণ এখানে পৃথিবীর বাঁচন মরণ সমস্যা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।


    ধরুন দুটো ডাকাত এসে একজনের বাড়ির 65% জিনিস লুটে নিয়ে গেল, পরে আরো দুজন ডাকাত এসে বলল, দেখুন না ওরা আমার জুতো লুকিয়ে রেখে দিয়েছিল তাই দেরি করে এলাম কিন্ততু বাাকি 35% জিনিিস আমাদের দিতে হবেই, সেটাই সঠিক  ভদ্রতা। তা তো আর দেেওয়া যায় না।  ব্যাপার টা   সেরকম।

  • Rajkumar Raychaudhuri | ০৯ আগস্ট ২০২১ ০৭:২৩496583
  • কার্বন প্রাইস নিয়ে একটা শোরগোল উঠেছে। সেটা নিয়ে আলোকপাত করা যায়?

  • Amit | 121.2.***.*** | ০৯ আগস্ট ২০২১ ০৮:২০496584
  • সবাই একলপ্তে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমিয়ে ফেলুক বা কয়লা তেল গ্যাস বন্ধ করে দিক  - ইডিয়ালিস্টিক ভিউপয়েন্ট থেকে এটা মায়াপাতায় ডিম্যান্ড করা যতটা সহজ -প্রাকটিক্যাল দিক দিয়ে ইমপ্লিমেন্ট করা ততটাই কঠিন। আজকে আমেরিকায় পার ক্যাপিটা পেট্রল বা পাওয়ার কনসাম্পশন কি একটা থার্ড ওয়ার্ল্ড দেশের সমান ? আজকে লো পপুলেশন বা হাই পার কাপিটা ইনকাম দিয়ে ওদের পক্ষে রেনেওয়েবলস নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করা যতটা ফিজিবল , একটা গরিব দেশের পক্ষে ততটাই কঠিন। তারা কেন বলির পাঠা হতে রাজি হবে ? ধনী দেশগুলো যদি কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর জন্যে এসব দেশগুলোকে ইনসেনটিভ বা লো কস্ট টেকনোলজি সলুশন না দেয় , জীবনেও এইসব এগ্রিমেন্ট কাজে পরিণত হবেনা। 


    একদিকে এসব দেশে পপুলেশন বাড়ছে , নেট এনার্জি ডিমান্ড বাড়বে , অন্যদিকে জোর করে এখনো আনপ্রোভেন রেনেওয়েবলস এনারজি জোর করে চাপানো হবে -সেটা কি করে হয় ? আজকে যে খেতে পাচ্ছেনা তার কাছে ২০-৩০ বছর পরে পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার গল্প পোষাবে না। 


    আর রেনেওয়েবলস নিয়ে গল্প তো গত ৩০-৪০ বছৰ ধারে চলছে , কিন্তু ইকোনোমিক্যাল সল্যুশন সামনে আসছে কোথায় ?সুকি যেমন বললো , ইকোনোমিক্যাল হলে লোকে এমনিই রেনেওয়েবলস এ শিফট করে যাবে তেল কয়লা ছেড়ে। এতো সাধাসাধির দরকারই নেই ।  

  • dc | 223.226.***.*** | ০৯ আগস্ট ২০২১ ০৮:৫৫496585
  • রিনিউএবলের দাম কিন্তু আস্তে আস্তে কমছে। গত দশ বছরে উইন্ড পাওয়ারের দাম কমেছে ৭০% আর সোলার পাওয়ারের ৮৯%। আর ২০২০ সালে আমেরিকায় নতুন বিদ্যুত উৎপাদন ব্যবস্থার ৭৬% সোলার আর উইন্ড প্ল্যান্ট থেকে এসেছে, অন্যদিকে পুরনো যেসব প্ল্যান্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তার ৮৫% কয়লাঃ 


    https://www.forbes.com/sites/energyinnovation/2020/01/21/renewable-energy-prices-hit-record-lows-how-can-utilities-benefit-from-unstoppable-solar-and-wind/?sh=8dcad6f2c84e

  • Amit | 121.2.***.*** | ০৯ আগস্ট ২০২১ ০৯:৫২496587
  • এটা আম্রিগার ২০২০ সরকারি ডাটা: 


    https://www.eia.gov/tools/faqs/faq.php?id=427&t=3


    এখনো টোটাল এনার্জি জেনারেশন এর < ২০ % আসে রেনেয়াবলস থেকে। >৬০-% আসে ফসিল ফুয়েল , > ২০ % আসে নিউক্লিয়ার থেকে। ওটা ৩০-৩৫ % পৌঁছোক আগে , তারপর তো তুল্যমূল্য আলোচনা হবে। আর কয়লা যেসব বন্ধ হয়েছে , তার বেশির ভাগ রিপ্লেস হয়েছে গ্যাস দিয়ে। 


    রেনেওবলস বাড়ুকনা যত ইচ্ছে  নিজের যোগ্যতায়। কার কোথায় আপত্তি আছে ? তবে শুধু আম্রিগা কেন , অনেক দেশেই এসবে গভট সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে ট্যাক্স পেয়ার্স ফান্ড থেকে। সেক্ষেত্রে ওপেন মার্কেট ক্যাপিটালিজম আর সারভাইভাল প্রিন্সিপল এখানে খাটছেনা। এছাড়াও শুধু ডেভেলপড দেশগুলো বাড়ালে তো গ্লোবাল সমস্যা মিটবেনা। গরিব দেশগুলো এতো সাবসিডি এফোর্ড করতে পারবেনা। 


    আর রেনেয়াবলস মানেই যে পলুশন ফ্রি সেটা কোথা  থেকে এলো ? টারবাইন এয়ার ব্লেড র টাইটানিয়াম হোক বা ব্যাটারির লিথিয়াম - যেসব মাইনিং বা রিফাইনিং প্রসেস থেকে এসব আসছে সেগুলো রীতিমতো পলুটিং ইন্ডাস্ট্রি। সেগুলো ধরাই  হয় না এসবের কার্বন ফুটপ্রিন্ট ক্যাল্কুলেশনে। ধরে দেখা যাক কতটা কম্পিটিটিভ। 

  • Ramit Chatterjee | ০৯ আগস্ট ২০২১ ০৯:৫৫496588
  • দাম অনেক কমেছে বলেই লোকে রিনিউবল এ শিফট করছে। কিন্তু চীন এখনো প্রচুর কয়লা পুড়িয়ে চলেছে, এছাড়া আমেরিকা তেও কয়লা ও তেল লবি ভীষন সক্রিয়। আর আরব দুনিয়ার তেল লবিও তেল আরো অনেকদিন টানতে চাইছে, যত দেরি করে তেলের ডিমান্ড কমবে ওদের তত লাভ।

  • Amit | 121.2.***.*** | ০৯ আগস্ট ২০২১ ১০:২১496590
  • সে ইন্ডিয়ার মাটির তলায় ওরকম তেল থাকলে কি একই জিনিস আমরাও করতামনা ? নেই , জাস্ট সেটাই কারণ। কালকে তেলের তুলনায় রেনেয়াবলস সস্তা আর রিলিয়াবল হলে কেও তেল কিনবেনা  , সে যতই লবি থাক। কালকে টেসলার দাম টয়োটার সাথে এক হয়ে গেলে আমিই ধারদেনা করে হলেও টেসলা কিনবো। 


    আর লবিবাজি কে করে না দুনিয়ায় ? তেল , কয়লা , নিউক্লিয়ার , সোলার , উইন্ড সক্কলের নিজের নিজের লবি আর বাধা পলিটিশিয়ান আছে। যে  যখন জেভাবে এডভান্টেজ নিতে পারে। 

  • dc | 223.226.***.*** | ০৯ আগস্ট ২০২১ ১০:২৪496591
  • এসবই ঠিক কথা। 

  • কৌশিক সাহা | ০৯ আগস্ট ২০২১ ১১:৪০496594
  • @Ramit Chatterjee


    "তা তো আর দেেওয়া যায় না।  ব্যাপার টা   সেরকম।"


    কাকে কী দেয়া ​​​​​​​যাবে ​​​​​​​আর ​​​​​​​কী  দেয়া ​​​​​​​যাবে ​​​​​​​না সেটা স্থির ​​​​​​​করে ​​​​​​​দেবার ​​​​​​​ভার ​​​​​​​ নিশ্চয়ই  প্রথম  দুটি  ডাকাতের  উপর  ছেড়ে  দেয়া  যায়  না।  এমন  ডাকাত  যারা  ১৯৮৪  সালের  এক  শীতের  রাত্রিতে  স্রেফ  বিষ  বাষ্প দিয়ে  ২০ হাজার মানুষ  মেরে  ফেলেছিল।  তাদের তরফে ​​​​​​​কি আপনার কথিত  ​​​​​​​৬৫ শতাংশ ​​​​​​​লুন্ঠিত ​​​​​​​সম্পদ ​​​​​​​ফিরিয়ে ​​​​​​​দেবার ​​​​​​​কোনো লক্ষণ দেখা ​​​​​​​যাচ্ছে?

  • Ramit Chatterjee | ০৯ আগস্ট ২০২১ ১৫:০০496602
  • আমার অন্যালজি টা আবার পড়ুন। আমি একবার ও বলিনি প্রথম     দুটো ডাকাত ঠিক করবে কে কি পাবে। আমি   বলে ছি প্রথম     দু জন 65% লুট করে নিয়েছে।


    বাকিটা দেওয়া না দেওয়া তো গৃহস্বামীর ওপর।

  • অনিন্দিতা | ১০ আগস্ট ২০২১ ০৮:৩৪496619
  • @রমিত,


    আপনি কি বলতে চাইছেন প্রাকৃতিক সম্পদ , মানবসম্পদ   কোন একজন গৃহস্বামীর মালিকানাভুক্ত? 


    কে সেই পৃথিবীর দাদা? 


    যারা অর্ধ সহস্রাব্দ ধরে বাকি দুনিয়াকে লুটে খাচ্ছে?


    সব আন্তর্জাতিক আলোচনা এবং দর কষাকষি যাদের কুক্ষিগত? 


    তাদেরকে আপনার গৃহেরও মালিক হিসেবে মেনে নিচ্ছেন তো? 

  • dc | 223.226.***.*** | ১০ আগস্ট ২০২১ ০৯:০৬496620
  • বাপরে। তাপমাত্রা যে ক্রমে বাড়ছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে। 

  • dc | 223.226.***.*** | ১০ আগস্ট ২০২১ ০৯:০৯496621
  • বিটিডাবলু, গতোকাল তো ইউএন কোড রেড শুনিয়ে দিয়েছে। সি লেভেল কতোটা বাড়ে সেটা হলো আসল প্রশ্ন।  

  • Ramit Chatterjee | ১০ আগস্ট ২০২১ ০৯:৩৬496622
  • @anindita  গৃহস্বামী বলতে আমাদের কথাই হচ্ছে। বাড়ির বাকি 35% জিনিস লুঠ করে নিলে আমরা অর্থাৎ গৃহস্বামীরা রাস্তায় চলে আসব। তাই আমাদের স্বার্থেই বাকি 35% যা পড়ে আছে তা আর লুঠ   করতে দেেওয়া যাবে না।

  • কৌশিক সাহা | ১০ আগস্ট ২০২১ ১৪:৫১496628
  • @Amit


    "আর রেনেয়াবলস মানেই যে পলুশন ফ্রি সেটা কোথা  থেকে এলো ? টারবাইন এয়ার ব্লেড র টাইটানিয়াম হোক বা ব্যাটারির লিথিয়াম - যেসব মাইনিং বা রিফাইনিং প্রসেস থেকে এসব আসছে সেগুলো রীতিমতো পলুটিং ইন্ডাস্ট্রি। "


    যথার্থ ।  তবে  Titanium জাতীয় ভারী ধাতু মিশিয়ে নির্মাণ করলে ৫০ মিটার বা তার বেশি দৈর্ঘের blade  এর ওজন বেড়ে যায় এবং গতিশীল blade এর ডগায় অত্যধিক অপকেন্দ্রিক বলের কারণে blade ভেঙে যাবার সম্ভাবনা থাকে। আজকাল  ২.৫  MW এর বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন    wind turbine এর blade (৪০-৪৫ মিটার এর থেকে বেশি দৈর্ঘ্যের )  carbon তন্তুর  composite দিয়ে তৈরি করা হয়।


    Ref: Characterisation of composites for wind turbine blades, Willett Hugh G., Reinforced Plastics, 56(5), 2012


    আমি সৌরশক্তি উৎপাদক Silicon Photo Voltaic কোষ উৎপাদন পদ্ধতির প্রতি  আপনার দৃষ্টি। আমরা জানি এই  Silicon Photo Voltaic কোষ দ্বারা বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন অধুনা সর্বাধিক প্রচলিত পদ্ধতি। সৌরশক্তি উৎপাদক Solar Farm বেশীর ভাগই এই পদ্ধতি ব্যবহার করে।  আগে যখন সৌরশক্তির বিস্তার কম ছিল তখন Silicon Photo Voltaic কোষ IC chip নির্মাণকারী কোম্পানিদের বাতিল monocrystalline Silicon দিয়ে তৈরী করা হতো। এই ধরণের monocrystalline  Silicon  দিয়ে তৈরী সৌর শক্তি উৎপাদক panel গুলি steel gray রঙের হত এবং প্রতি watt এদের  দাম  $২-$৩ পড়তো। এই অত্যধিক দামের কারণে ২০১৩-১৪ পর্যন্ত সৌরশক্তি তেমন ছড়াতে পারেনি। 


    তারপর  নানা দেশ সৌরশক্তির উৎপাদন বৃদ্ধি করার নীতি প্রণয়ন করায় polycrystalline Silicon Photo Voltaic কোষের ব্যবহার আরম্ভ হয়। এগুলির দাম অনেক কম এবং এদের উৎপাদন পদ্ধতিতে IC chip নির্মাণকারী কোম্পানিদের উপর নির্ভরশীলতা নেই।  আজকাল বাজারে সৌরশক্তি উৎপাদক panel এই নীল রঙের  polycrystalline Silicon Photo Voltaic  ব্যবহার করা হয় এবং watt পিছু $১ এর চেয়ে কম দাম পড়ে। 


    এই polycrystalline Silicon Photo Voltaic কোষ এর উৎপাদনপদ্ধতি অত্যন্ত পরিবেশ দূষক এবং জল ও মৃত্তিকা সম্পদ বিনাশকারী। এই পদ্ধতিতে hydrochloric অম্লের দ্বারা Siliconএর জারণের ফলে Silicon Tetrachloride তৈরী হয় যার কিছু অংশ বর্জ্যপদার্থ রূপে জলে ফেলে দেয়ার কারণে জল বিষাক্ত হয়ে যায়। তারপর পদ্ধতির কিছু ধাপে hydrofluoric অম্ল ব্যবহৃত হয় যা দুর্ঘটনাক্রমে জলে মিশে গেলে পরিপার্শ্বের পক্ষে  অত্যন্ত ক্ষতিকারক হতে পারে। এছাড়া sulphur hexafluoride নামক রাসায়নিক ও অতি বিষাক্ত   cadmium ধাতু এই পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয় যা পার্শ্ববর্তী এলাকার বাতাসে  জলে বা  মৃত্তিকায় প্রবেশ করে সমূহ ক্ষতিসাধন করতে পারে। 


    এ ছাড়াও Silicon Photo Voltaic কোষ  ও panel  উৎপাদন পদ্ধতির নিজস্ব carbon পদচিহ্নের প্রশ্ন তো আছেই। যে এলাকা বা দেশে সৌরশক্তি কোষ  ও panel উৎপাদন করা হচ্ছে সেই এলাকায় তা ব্যবহৃত না হয়ে রপ্তানি হতে পারে। সেক্ষেত্রে আমদানিকারীর carbon পদচিহ্ন কমবে কিন্তু রপ্তানীকারীর বেড়ে যাবে। 


    Ref: Solar Energy Isn’t Always as Green as You Think,  Mulvaney Dustin, IEEE Spectrum, Nov 2014. URL https://spectrum.ieee.org/solar-energy-isnt-always-as-green-as-you-think

  • কৌশিক সাহা | ১০ আগস্ট ২০২১ ১৫:০৪496630
  • @Ramit Chatterjee


    তাহলে কি আমরা খাবার জিনিসও খাবনি ? 


    যারা কমলা রঙের  defoliant ছড়িয়ে গোটা দেশ ও তার নিবাসী সমস্ত জনজাতির বনসম্পদ মৃত্তিকাসম্পদ এবং জনস্বাস্থ্য এক শতাব্দীর জন্য বিনষ্ট করে দিল , তাদেরও গৃহস্বামীর অধিকার আছে বলে  মেনে নিতে হবে? 


    এই যাদের কীর্তি তারা স্থির করে  দেবে আমরা কী খাবো  কী পরবো? 


    Vietnam Still Suffering With Pollutants From Agent Orange | Technology  Networks


    Agent Orange: Collateral Damage in Vietnam • Philip Jones Griffiths •  Magnum Photos


    Agent Orange still haunts Vietnam | United States | Al Jazeera

  • Rajkumar Raychaudhuri | ১১ আগস্ট ২০২১ ০৯:৪৩496652
  • আপনারা লেখার সমালোচনা করুন। কিন্তু সমালোচনা করতে এসে নিজেদের অসীম পাণ্ডিত্যের চোনা দিয়ে বিষয়কে অন্য দিকে নিয়ে যাবেন না। সেটা করতে গেলে পরিবেশ নিয়ে একটা পালটা লেখা দিন। উপভোগ করব।

  • dc | 122.174.***.*** | ১১ আগস্ট ২০২১ ০৯:৫২496653
  • রমিতবাবু যেটা লিখেছেন সেটা খুব পরিষ্কার আর সেনসিবল। "সব কিছু মেনে নিয়েও লেট কামার হিসেবে এখানে ছাড় দেওয়া সম্ভব নয় কারণ এখানে পৃথিবীর বাঁচন মরণ সমস্যা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে" - এটা তো ​​​​​​​একেবারেই ​​​​​​​ঠিক ​​​​​​​মনে ​​​​​​​হচ্ছে। ​​​​​​​এটা সবার ​​​​​​​বুঝতে ​​​​​​​এতো অসুবিধে ​​​​​​​হচ্ছে ​​​​​​​কেন ​​​​​​​কে ​​​​​​​জানে। ​​​​​​​

  • Shomita Banerjee | ১১ আগস্ট ২০২১ ১২:২৪496655
  • প্রচুর পরিশ্রমের ফসল৷ লেখককে অনেক ধন্যবাদ  সহজ ভাবে বিষয়টি বোধগম্য করে তোলার জন্য৷

  • কৌশিক সাহা | ১১ আগস্ট ২০২১ ১৫:৫৮496660
  • @Rajkumar Raychaudhuri


    যেহেতু এটি একটি বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও অর্থনীতি বিষয়ক পান্ডিত্যপূর্ণ লেখা, তাই বৈজ্ঞানিক তথ্য সম্বলিত সমালোচনাকে Peer review ধরে নিতে হবে। এবং যেহেতু   আমার আগের এক পাঠক (Amit) বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে লেখার সমালোচনা করেছেন, অতএব সমরূপ তথ্যদ্বারা তাঁকে সমর্থন করাকে "চোনা" অভিহিত করা অবৈজ্ঞানিক। কঠিন বিষয় সম্বন্ধে আলোচনা বা   সমালোচনা  সবার পক্ষে সহজপাচ্য নাই হতে পারে কিন্তু যে তথ্য দিয়েছি তা প্রাসঙ্গিক।   


    নবায়নযোগ্য শক্তি নিয়ে উচ্ছসিত ন্যাকামি চলছে এবং জীবাশ্ম জ্বালানীকে  গালাগালি করা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই  photovoltaic সৌরশক্তি নামক জাদুদন্ডটির আজকের দৃশ্যমান এবং আগামী  দিনের  সম্ভাব্য  পরিবেশগত  কুপ্রভাব সম্পর্কে অবগত থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সৌরশক্তির  আজকের পরিবেশগত কুপ্রভাব  কথা বাদ দিয়েও প্রশ্ন করা যায়,  আজ থেকে ২৫-৩০ বছর পরে যখন এই সকল সৌরশক্তি প্যানেল এর স্বাভাবিক কার্যকরী জীবন  শেষ হয়ে যাবে,  তখন এই শত  শত  টন silicon এবং তাতে মিশ্রিত  arsenic cadmium tellurium জাতীয় বিষাক্ত উপাদানগুলি কী উপায়ে পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে বর্জন করা হবে? 

  • কৌশিক সাহা | ১১ আগস্ট ২০২১ ১৬:২৬496661
  • @dc 


    আমরা জানি পরিবেশ দূষণ তাৎক্ষণিক প্রভাব নয়, ক্রমসঞ্চিত ভাবে বর্ধনশীল  ।  অতএব  আজকের দূষণ সূচক অঙ্কে   বিগত যুগের কার্যকলাপের ইতিহাস   অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে।  এই কারণেই differentiated responsibilityর কথা বলা হয়েছে। যারা অতীতে নিজেদের উন্নয়ন এবং জঙ্গী আধিপত্য কায়েম করার জন্য যারা পৃথিবীর   পরিবেশকে যদৃচ্ছা  ধ্বংস   করেছে , বিশ্বব্যাপী পরিবেশনীতিতে   কাউকে  ছাড় দেবার   সিদ্ধান্ত নেবার ভার তাদের উপর ন্যস্ত করা   স্বাভাবিক ন্যায় নয়।  

  • dc | 2402:e280:2141:9b:500c:27f1:e61:***:*** | ১১ আগস্ট ২০২১ ১৮:১৫496662
  • কৌশিকবাবু, ডিফারেনসিয়েটেড রেসপনসিবিলিটি তো অবশ্যই ঠিক কথা, সে নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কথা হলো এখন ঘরের ভেতর আগুন লেগে গেছে, পুরো ঘরটাতেই ছড়িয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা, তো সবাই মিলে বালতি বালতি জল ঢালবে নাকি ডিফারেনসিয়েটেড রেসপনসিবিলিটির কথা ভেবে বসে থাকবে? সি লেভেল বাড়তে শুরু করেছে, সে তো সব দেশের জন্যই সমান ভাবে বাড়বে (লোকাল সি লেভেল ইত্যাদির কথা আপাতত ধরছি না)! 

  • Amit | 121.2.***.*** | ১২ আগস্ট ২০২১ ০৩:৪৬496674
  • থ্যাংকু কৌশিক বাবু। আলোচনাতে সায়েন্টিফিক ডাটা এলে তো ভালোই। 


    রিনিউএবলস এনার্জি নিয়ে গাদা গাদা পেপারস বেরোচ্ছে। কিন্তু যে কোনো এনার্জি সেমিনারে এনাদেরকে ডাইরেক্ট প্রসেস এফিসিয়েন্সি -রিলেটিভ কস্ট- ফুটপ্রিন্ট -সার্ভিস লাইফ - ব্যাটারি ডিসপোজাল কস্ট -সলিড্স পলিউশন এসব নিয়ে স্পেসিফিক প্রশ্ন করলেই দেখেছি তেনারা সেই সাজানো ন্যারেটিভে ঢুকে যান। ডাইরেক্ট উত্তর না দিতে পেরে সেই গোল গোল ঘোরা। আমার নিজের অভিজ্ঞতা আছে এসবে  গত কয়েক বছরে  বেশ কয়েকটা সেমিনার  মিটিঙে। 


    আচ্ছা ।একটু ছোট লেভেলে ভাবা যাক।  এসব ডিফারেনসিয়েটেড রেসপনসিবিলিটি ইত্যাদি তো ​​​​​​​অনেক ​​​​​​​বড়ো ​​​​​​​বড়ো ​​​​​​​ব্যাপার। ​​​​​​​একবার ভাবেননা ম্যাংগো লোকের লেভেলে - যে নিজের ঘরের ​​​​​​​সামনের রাস্তায় ​​​​​​​যে ​​​​​​​লোকটা ​​​​​​​কয়লার ​​​​​​​উনুনে ​​​​​​​চা ​​​​​​​বানায় ​​​​​​​বা ​​​​​​​যে ​​​​​​​হকার কেরোসিন ​​​​​​​স্টোভ ​​​​​​​জ্বালিয়ে চা বেচে - ​​​​​​​তাদেরকে কি ​​​​​​​বোঝাবেন ​​​​​​​যে ​​​​​​​ভাই ​​​​​​​তুমি ​​​​​​​কয়লা ​​​​​​​পুড়িয়োনা ,  ২০ ​​​​​​​বছর ​​​​​​​পরে ​​​​​​​সি ​​​​​​​লেভেল বেড়ে ​​​​​​​তোমার ​​​​​​​বাড়ি ​​​​​​​ডুবে ​​​​​​​যাবে ? সে ​​​​​​​একটা ​​​​​​​ভিয়াবল অল্টারনেটিভ ​​​​​​​না ​​​​​​​পেলে তিন ​​​​​​​চার ​​​​​​​পরে ​​​​​​​এমনিই ​​​​​​​না ​​​​​​​খেয়ে ​​​​​​​মারা ​​​​​​​যাবে। তার ​​​​​​​কাছে ​​​​​​​২০-৩০ ​​​​​​​বছরের ​​​​​​​গল্প ​​​​​​​অবান্তর। ​​​​​​​আর ​​​​​​​সে ​​​​​​​শখ ​​​​​​​করে ​​​​​​​কয়লা ​​​​​​​বা ​​​​​​​কেরোসিন পোড়াচ্ছেনা , একটা ​​​​​​​বেটার ​​​​​​​জব ​​​​​​​পেলে ​​​​​​​বা ​​​​​​​অন্য ​​​​​​​কোনো ​​​​​​​স্বাস্থ্যকর ​​​​​​​অল্টারনেটিভ রিসোনাবল ​​​​​​​খরচে পেলে ​​​​​​​সে ​​​​​​​এমনিই ​​​​​​​মুভ ​​​​​​​করে ​​​​​​​যাবে। 


    সেই একই লজিকে ইন্ডিভিজুয়াল লেভেলে যেটা সত্যি গরিব দেশগুলোর জন্যেও অনেকটাই সত্যি। আর যারা এতো গ্লোবাল ওয়ার্মিং  নিয়ে চিন্তিত তাদের কতজন নিজেরা এখনো অবধি পেট্রল বা ডিজেল ব্যক্তিগত গাড়ি চড়া বন্ধ করেছেন ? 

  • dc | 2401:4900:262e:ac24:210d:ab7c:5a19:***:*** | ১২ আগস্ট ২০২১ ০৬:৪৯496675
  • অমিতবাবুর কথায় মনে পড়লো, আমার অনেকদিনের ইচ্ছে একটা টেসলা কেনার। কবে ইন্ডিয়াতে লঞ্চ করবে কে জানে। 

  • Ramit Chatterjee | ১২ আগস্ট ২০২১ ০৮:৫৪496678
  • ডিসি, মডেল 3 না কিনে একেবারে একটা সাইবার ট্রাক কিনে ফেলুন। সবার চোখ ট্যারা হয়ে যাবে।

  • Amit | 121.2.***.*** | ১২ আগস্ট ২০২১ ০৮:৫৯496679
  • কিন্তু সেই টেসলা তো ইন্ডিয়ায় চার্জ হবে থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট র ইলেকট্রিসিটি পুড়িয়ে। তাহলে কিনছেন কেন ? 

  • dc | 122.178.***.*** | ১২ আগস্ট ২০২১ ০৯:১৩496680
  • তাও তো বটে। অর্থাত কিনা যেদিকেই যাই, সমুদ্রে ডুবে মরতেই হবে। 

  • প্রদীপ দত্ত | 2409:4060:2e0f:bb92:1078:eb3a:a196:***:*** | ১২ আগস্ট ২০২১ ১৯:৩৩496694
  • সুকিবাবু একটি ভূল ধরিয়ে দিয়েছেন, ধন্যবাদ। পরিষ্কার করে বলা দরকার ছিল যে  সৌদি আরবে র বিদ্যুুুতের   সবটাই হয়  গ্যাস ও তেল  পুুড়িয়ে।


    কিন্তু অমিতবাবুর কথায় যে উদ্ধত ভঙ্গি তা বিরক্তিকর। তিনি মস্ত পণ্ডিত হলেও তাই। বছর দশেক আগে পর্যন্ত স্কেপটিস্টরা এইভাবে কথা বলতেন, অবশ্য ট্রাম্পের আমলে ফের কেউ কেউ এভাবে কথা বলা শুরু করেছিলেন।  এখন কারো এইরকম ভঙ্গিতে কথা বলা শোনা যায় না। উষ্ণায়ন বা জলবায়ু বদল নিয়ে ভাববো না,  হাত-পা  গুটিয়ে বসে থাকব? অনেককাল ধরে  ৯৭ শতাংশ  জলবায়ু বিজ্ঞানী তা  নিয়ে বিশ্বকে  বিপদের   কথা জানিয়ে চলেছেন। 


    অবশ্য সৌরকোষ উৎপাদনের দূষণ খুবই চিন্তাার বিষয়।  তবে বিষয়টাকে ছোট না  করেও বলি  ইউরেনিয়াম বা  কয়লা  উত্তোলনের  দূষণও  অতি ভয়াবহ। সেসব  আরও ব্যপক বলে বিপদ  অনেক  বেশি।


    লেখাটি তিনি ভাল  করে  পড়েননি।  না হলে আইইএ -র  রেফারেন্সস  দিতে হত না। লেখার  মধ্যে  সেসব  তথ্য রয়েছে।  নবায়নযোগ্য  শক্তির  উপর এতো বিরক্তি  কেন বোঝা দুরুহ। নবায়নযোগ্য  শক্তির  পথ  যদি  পথ  না   হয়  তাহলে পথটা কী? কয়েক বছর ধরে  প্রায় গোটা বিশ্বে  সৌরবিদ্যুৎ সবচেয়ে সস্তা। উৎপাদন ক্ষমতাা  যত বেড়েছে সৌর প্যানেেলের দাম সস্তা হয়েছে।  তাছাড়া   ছাড়া় সৌর বা বায়ুবিদ্যুুতের রানিং কস্ট নেই।


    সবচেয়ে ভাল হত রুফটপ সোলার পাওয়ার সবচেয়ে বেশি বাড়লে। কিন্তু সে অন্য আলোচনার বিষয়। বাকি কথা পরে হবে।


    তবে আইপিসিসির শেষ রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পরও অমিত বাবুর কোনও বিকার নেই। সেটা বেশ অবাক করে। এইরকম ছুটকো- ছাটকা কথা না  বলে যা  বলার বড় করে লিখেে ফেলুুন ন! 


    আমি এই মাধ্যমে লিখতে অনভ্যস্ত, তাই কিছু ভূল থেকে গেল, ক্ষমা করবেন।

  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন