এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ক্ষুব্ধ স্বদেশ! রক্তাক্ত  বাংলাদেশ! 

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৫ আগস্ট ২০২৪ | ১১১৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • জীবনে এমন সময় এর আগে আর আসে নাই। এমন কঠিন সময় দেখতে হবে এইটা কল্পনাতীত ছিল। এবং এখন আর অবাক হচ্ছি না কিছুতেই। অধিক শোকে পাথর অবস্থা আমাদের। এখন কোন যুক্তি, কোন তর্ক, কোন বিশ্বাস, কোন আদর্শই আর কাজ করছে না। তবে কষ্ট বেশি হচ্ছে বিশ্বাসের জন্যই। আমি আশাবাদী মানুষ। মানুষের উপরে আমার অগাদ বিশ্বাস। সেই মানুষ কীভাবে পারে এমন হিংস্র হয়ে যেতে? দুইদিন আগে এক সাথে চায়ের দোকানে আড্ডা মেরেছে, আজকে একজন আরেকজনের রক্ত পানের জন্য মুখোমুখি! বাচ্চা ছেলে সব, জীবনটা বুঝলই না, জানলই না জীবন কত সুন্দর। পঙ্গপালের মত ঝাঁপিয়ে পড়ছে। কোন বিচার বুদ্ধি নাই, কোন হিসাব নাই। জাস্ট আগুনে ঝাপ দিচ্ছে। 

    আগুনে ঝাপ দিচ্ছে না দেওয়াচ্ছে এই প্রশ্ন এখন কুৎসিত শোনাবে। কিন্তু এই প্রশ্ন না তুললেই না যে! এই কয়েকদিন ধরে একটা পক্ষ ছাত্রদের প্রতিটা সময় উস্কে দিয়েই গেল, দিয়েই গেল! সরকারকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে যে সময়টুকু দরকার তাও দিতে রাজি না। সব এখন লাগবে, এই মুহূর্তে লাগবে। এখনই নেমে যেতে হবে, এখনই ক্ষমতা ছাড়তে হবে! সরকার বা রাষ্ট্র কত বড় একটা বিষয় এইটা বুঝতে হবে না? রাষ্ট্র যন্ত্র কীভাবে কাজ করে জানা আছে? দিনের পর দিন এই একি কাজ দেখতে দেখতে মাথা আর ঠিক থাকে না। আগেরদিন নানান শিল্পী সংস্কৃতির লোক মাঠে নেমে গেল। খুব ভালো। কেউ বলছেন তাদেরকে যে একটু দাঁড়াও ছোট্ট বন্ধু, একটু অপেক্ষা কর? আজকে তো তারা আসেন নাই। আমরা মাইরের সময় নাই, কিন্তু আমরা আছি তোমাদের সাথে। মাইর খাওয়ার কাজটা বন্ধু তোমাদেরই খাইতে হবে। কিন্তু কথা দিচ্ছি আমরা সংহতি জানিয়ে যাব, তোমার লাশ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করব, দেখো বন্ধু, আমরা কথার বরখেলাপ করি না! তোমরা কিন্তু রাজপথ ছাড়বে না।
    আর এদিকে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী  সরকার ভাবছে আমার তো আর হারানর কিছু নাই, বাঁচতে হলে টিকে থাকতে হবেই। কিন্তু আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি এই যন্ত্রণায়। এত গুলা গরু মরলেও কলিজা ফেটে যাইত আমার! মানুষ তো, তাই না? 

    কিছু কথা এখন না বললেই না। সরকারের নানা ভুল তো আছেই, কেউ অস্বীকার করছে না। কিন্তু এখন যা হচ্ছে? গতকালের মৃত্যুর সব দায় সরকারের? আন্দোলনকারীরা যখন জানল আগামীকাল আওয়ামীলীগ কর্মসূচি দিয়েছে, কী দরকার ছিল মুখোমুখি হওয়ার? ছাত্ররা তাদের কর্মসূচি দিয়েছিল দেশে এখন থেকে অসহযোগ আন্দোলন চলবে। আমি দেখে খুশি হয়েছিলাম। অসহযোগ আন্দোলন হচ্ছে দুনিয়ায় যত আন্দোলন আছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর, সবচেয়ে নিরাপদ, সবচেয়ে কার্যকারী একটা পন্থা। ছাত্ররা নিজেদের অবস্থান, নিজেদের বক্তব্য এই কয়দিন পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছে, জনগণ তাদের সমর্থনও দিয়েছে। তাহলে নিজেদের উপড়ে বিশ্বাস হারানো কেন? জনগণকে একটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সবাই নিজের অবস্থান থেকে অসহযোগিতা করবে। কাজে যাবে না, চাকরি করবে না। এইটাকে বলা হয় এমন একটা আন্দোলন যে কোন রক্তপাত ছাড়াই যে কোন সরকার পড়তে বাধ্য। সমস্ত রাজ কর্মচারি, কর্মকর্তা যদি এতে সামিল হয় ওই সরকার দম ফেলার সময় পাবে না, পড়ে যাবে। অবিশ্বাস্য হলেও এইটাই সত্য। কিন্তু আমাদের মহান জেন জি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কিন্তু এর অর্থই জানে না। তারা দেখছে আজকে আওয়ামীলীগ রাস্তায় নামছে, এমন অন্যায় সহ্য করবে তারা? এমন অপমান? ঝাঁপিয়ে পড়ল! শুনেন, যখন আপনে মারতে যাবেন আর তখন মার খেয়ে আসবেন তখন এখানে কান্নাকাটি করে লাভ নাই। আপনে মারতে গেছিলেন, মারতে গিয়ে মরলে এই দায় কে নিবে? আপনে মারামারিই করবেন তাহলে আগেরদিন অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলেন কেন? না ভয় পেয়ে গেছেন যে আন্দোলন আপনাদের হাতে থাকবে না। এতদিন যাদেরকে একটু তুচ্ছ তাচ্ছিল্যই করেছেন, বলেছেন বুড়োদের দিয়ে কিচ্ছু হয় না, এখন অসহযোগ আন্দোলন করতে হলে সেই এদের উপরেই নির্ভর করতে হবে। সাহস পান নাই যে এরা আপনাদের সাথে থাকবে? সেই বিখ্যাত মধ্যবিত্তদের উপরে বিশ্বাস নাই? শুধু মধ্যবিত্ত না, মধ্য বয়স্ক! দুই মিলে ভয়ানক ব্যাপার! এরা যদি সহযোগিতা না করে? যদি জনগণ সাথে না থাকে তাহলে আন্দোলন করতেছেন কোন যুক্তিতে? 

    কেন এমন হল? কারণ যাদের মাথা দ্বারা এই আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে তাদের অসহযোগের মতো গান্ধিবাদি আন্দোলনে পোষাবে না। তাদের এক্ষণ চাই, এক্ষণ, লাশ চাই, যত লাশ তত দ্রুত সরকার পতন, তত তাড়াতাড়ি ক্ষমতা পাওয়ার সম্ভবনা। ছাত্ররা আগেও বুঝে নাই, এখনও বুঝছে না যে তারা শুধুমাত্র গুটি, খেলোয়াড় যে কই বসে খেলছে এইটা হয়ত কল্পনাতেও নাই ওদের। 
    কালকের আগে যে মৃত্যু গুল হয়েছে তাদের লাশ পাওয়া দিয়েই কর্তব্য শেষ না কেউ খোঁজ নিয়েছেন যে তারা আসলে কীভাবে মারা গেছে? কোন অস্বাভাবিকতা নাই কোথাও? ময়নাতদন্তে কেন পাওয়া যাচ্ছে যে পুলিশের গুলিতে অনেকের মৃত্যু হয় নাই? কয়েকটা ভিডিওতে কেন দেখা গেল পুলিশ চলে যাওয়ার পরে হুট করে সিঙ্গেল শটের আওয়াজ আর সাথে সাথে মৃত্যু? যে নারীর মৃত্যু হয়েছে ছয় তালার উপরে, তার গায়ে যে বুলেট লেগেছে ওই বুলেট বারান্দার গ্রিল ফুটো হয়ে লেগেছে। গ্রিলের ওই ছিদ্রের ছবি আসছে পত্রিকায়। দেখা যাচ্ছে বুলেট সোজা আসছে। এখন সোজা কীভাবে গুলি আসা সম্ভব? অবশ্যই দুরের কোন ফ্ল্যাট থেকে কেউ এই গুলি চালিয়েছে। কারা ফ্ল্যাটে রাইফেল নিয়ে বসে আছে?  গতকালেও অনেকেই দেখি বিস্ময় প্রকাশ করেছে যে সবাই শান্তিপূর্ণ বসে আছে, হুট করেই সিঙ্গেল শট মাথায় লেগে পড়ে যাচ্ছে! স্নাইপার দিয়ে গুলি! সব দায় সরকারকে তো দিয়েই দিছেন। খুলি থেকে ঘিলু ছিটকে পড়ার আগে ঘিলুটাকে একটু খাটালে খুব ক্ষতি হবে? একটু ভেবে দেখতে দোষ কী? 

    আন্দোলনকারীরা অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে সরে গেছে, শুধু তাই না এখন পর্যন্ত এই সরকার চলে গেলে কী হবে তার কোন জবাবও দেয়নি। এখন পর্যন্ত জবাব পাওয়া গেছে আসিফ নজরুল গং থেকে। জাতীয় সরকার গঠন হবে ব্লা ব্লা ব্লা! আসিফ নজরুল, নতুন রাহাবার ছাত্রদের। এখন ছাত্রদের দশা হয়েছে এমন যে যে একটু মিস্তি কথা বলছে সেই তাদের লোক। এখন অত দোষ খুঁজলে চলে? বৃহত্তর স্বার্থে ছোটখাটো ব্যাপারকে নজরে আনা যাবে না! কিন্তু আমাদের সমস্যা আছে, আমরা আবার কোন কোন শকুন এর আগে আমাদের পতাকাকে খামচে ধরেছে তাদের ঠিকুজি নিয়ে রাখছি। আমরা জানি শহিদ জননী জাহানারা ইমামের সাথে এই বেইমান কী করছে! আজকে খুব জ্ঞান দিচ্ছে বরাহ শাবক! 

    জাতীয় সরকার করেন সমস্যা নাই কিন্তু তা পরে আবার আন্তর্জাতিক সরকার না হয়ে যায় আবার! দেখা গেল পর্দার আড়াল থেকে নানান কিচ্ছা বের হচ্ছে আর সবাইকেই ভাগ দিতে হচ্ছে ক্ষমতার।  এই কয়দিন তো কত কিছুই দেখলাম। কলেমা লেখা পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে আছে এমন ছাত্রও তো দেখলাম। দেখলাম হিন্দুদের গালি দিয়ে স্লোগান, ভারত পাঠায় দেওয়া স্লোগান। দেখলাম মুখোস খুলে সরাসরি আমি রাজাকার স্লোগান নিয়ে উল্লাস করা। নিজেকে শিবির কর্মী হিসেবে গর্বিত হতে দেখলাম। দেখলাম সাইদির নাম নেওয়া হচ্ছে যে তিনি আজকে থাকলে কত খুশি হতেন! এগুলা আমারা দেখছি, আপনারা আছেন ক্ষমতা নেওয়ার মতো বড় বড় ব্যাপারে ব্যস্ত, আপনাদের এদিকে দেখার সময় কই? 

    জেন জিকে নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই নাই। ওরা এখন আক্রান্ত, মনে হবে আমি তাদের প্রতি বেশিই রুষ্ট, এই জন্য লেখি নাই এই মহান জেন জি নিয়ে। সারা বছর এদের যন্ত্রণায় থাকা যায় না। বিন্দুমাত্র আগ্রহ নাই বাংলা সংস্কৃতি সম্পর্কে। পয়লা বৈশাখে এদের সাথে যুদ্ধ করতে হয়, বিজয় দিবস, শহিদ দিবস, স্বাধীনতা দিবসে এদের সাথে তর্ক করতে হয়। প্রায় প্রতি বছর নিয়ম করে লিখতে হয় শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার সাথে পূজার কোন সম্পর্ক নাই। আমি শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে কোন কিছু চাচ্ছি না শহিদ মিনারের কাছে। এই ফুল শুধুই শ্রদ্ধা জানান। কে শোনে কার কথা? হারাম হারাম বলে চিৎকার করে সব সময়। পয়লা বৈশাখ  হারাম। যে পালন করবে জাহান্নামে যাবে! এরাই এগুলা প্রচার করে সারা বছর। টাকনুর উপরে প্যান্ট পরার স্টাইল নিয়া আসছে এরাই। নানান ঢঙের বোরকা, নানান রঙের বোরকা, হিজাব দেশে ছেয়ে গেছে। কই আমাদের সময় তো ছিল না। আমাদের বন্ধু বান্ধবীরা তো পরে নাই, পরে না। তোমরা কোন ধর্ম পালন কর তাইলে? এই প্রজন্মই নানান হুজুরদেরকে ইউটিউবের সুপার স্টার বানায় দিছে। 
    যে নারী আজকে ভাবছে কী দারুণ পরিবেশ, সবাই এক সাথে আন্দোলন করছে, কেউ বলছে না তোমার ওড়না কই? তোমার পোশাক এমন কেন? সে যদি এখন ভাবে যে এই আন্দোলন এই সবও পরিবর্তন করে দিবে তাহলে তার মাথার চিকিৎসা আগে করান উচিত না? প্রথম ঝাপটাই লাগবে নারীর গায়ে। ভাবছেন এরপরে সুখী সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ এসে হাজির হয়ে যাবে? জাতীয় সরকার হোক আর যাই হোক, হা করে আছে অনেকেই, বামেরাও হা করেছে, শরিয়া আইন চাই বলারাও হাত তুলে দাঁড়িয়েছে। যে যত বড় খেলোয়াড়ই হোক, এই সরকার পতন হলে লাভের গুড়ের বড় একটা অংশ যে জামাত খাবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ রাইখেন না। 

    আন্দোলন শুরুর পর থেকেই সরকার বিপদে পড়েছে যে ঢাল হিসেবে সাধারণ ছাত্ররা ছিল। পুলিশের বাড়াবাড়ি হোক, সরকারের নির্বুদ্ধিতাই হোক, লাশ পড়েছে, আন্দোলনের চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেছে। সরকার বাধ্য হয়েছে হাত গুটিয়ে নিতে। আর্মি নামিয়েও আর্মিকে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। কেন? কোমলমতি ছাত্রদের সাথে এমন করা যাবে না। এই কোমলমতি ছাত্ররা কী করল? ঢাকায় কুমিল্লার এক ছাত্র ধরা পড়েছে। খুব বেশি হলে ১৭/১৮ বছর বয়স। মাসুম একটা চেহারা। ওর মোবাইল থেকে পুলিশ পেয়েছে পুলিশ পিটিয়ে মারার স্বীকারোক্তি! ছবি তুলেছে, উল্লাস করেছে, বন্ধুদের জানিয়েছে যে পিটিয়ে পুলিশ মেরেছে সে! 
    ছাত্র হলেই সে নিষ্পাপ, শিশু এই ধারণা না করাই ভালো। হোলি আর্টিজেনে যারা ঠাণ্ডা মাথায় খুন গুল করেছিল তাদের বয়স কেমন ছিল? তারাও তো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই ছিল। কোল্ড ব্লাডেড মার্ডারার সব গুলা।    
    জাতীয় সরকারের চেহারাটা দেখতে পারলে ভালো হত। আমরা দেখতাম কোন সেই মহা জ্ঞানী, মহা প্রজ্ঞাবান যে এই দেশকে লাইনে এনে ফেলবে! আমাদের মতো দেশের অর্থনীতি ঠিক রাখা আলাদীনের দৈত্য ছাড়া একটু কঠিনই হয়ে যাবে। সরকার যে এদিক ওদিক দৌড়া দৌড়ই করছে এমনে এমনেই না। সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে এই বিপদ। সরকারের দায় তো আছেই, কিন্তু সব দায় সরকারকে দিলেই হবে? আমাদেরকে এখন জালানি কিনতে হয় চার পাঁচ গুন বেশি দিয়ে, করোনা, ইউক্রেন যুদ্ধ এমন অনেক কিছুই পুরো দুনিয়াকেই টালমাটাল করে দিচ্ছে। এর মধ্যে আমাদের দেশের ঐতিহাসিক সব নেতা, মানুষ। তিনশ জন সংসদ সদস্য। কেউ তিনশ জন সৎ মানুষ খুঁজে এনে দিক যারা সংসদ চালাবে! 

    শেষ করি। মেজাজ খুব খারাপ হয়ে আছে। বিপ্লব বিল্পব খেলা শুরু করেছে! আমরা দেখি নাই আরব বসন্তের নামে কী হয়েছে? লিবিয়ার স্বাস্থ্য সেবাকে বিশ্ব সেরা বলত, সেই লিবিয়া, সিরিয়া, মিশর, তিউনিসিয়া! কী দেশ গুলর কী অবস্থা এখন। ইরাকও একই কাতারের জিনিস, কিংবা ইরান। বিপ্লবের আগের ইরানের চেহারা দেখেন আর এখন দেখেন। না, এখন নারীদের চেহারা দেখা গেলেই সর্বনাশ! পুলিশে দিবে, হয়ত মেরেই ফেলবে। কি দারুণ না? 

    গতকাল বঙ্গবন্ধুর মুরালে কালি মাখানো হয়েছে, ভাস্কর্য ভাঙ্গা হয়েছে। আচ্ছা, ছাত্র আন্দোলন ছিল কোটা নিয়ে, কোটা থেকে গণ্ডগোল শুরু, মারামারি, জখম, শেষে মৃত্যু। মৃত্যুর বদলা নিতে তীব্র আন্দোলন, আরও মৃত্যু, আরও আন্দোলন। শেষে এত মৃত্যুর বিচার চাওয়া, এরপরে সরকারের পতন চাওয়া। এইটাই তো টাইম লাইন? এইখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতি রাগের কারণ কী? আমি জানি কেন। কারণ আপনাদের হাত হতে সামনে আমাদেরকে শহিদ মিনারও পাহারা দিয়ে রাখতে হবে, এইটা আমি দিনের আলোর মতো সত্য বলেই মনে করি। আসুক বিএনপি, জামাত। তখনও যখন আমরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলব, স্বাধীনতার কথা বলব, বঙ্গবন্ধুর কথা বলব তখন হয়ত মনে হবে আমরা সরকার দলের লোক না। এখন সরকারের সুরের সাথে আমাদের সুর মিলে বলে মনে হয় এরা সরকারের পক্ষের লোক। কিন্তু আমরা এইসব কথা আগেও বলছি, এখন বলছি সামনে বলব। বিএনপি আমলে টিভি ক্যামেরার সামনে বলছিলাম যেই আসুক কোন যুদ্ধাপরাধী যেন না জিতে এইটাই চাওয়া! ওই সাংবাদিক কয়েকবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে জিজ্ঞাস করছিল, আমি ওইটাই বলছি বারবার। এখন হয়ত ওইদিন আবার আসছে। আসছে যে তা নিশ্চিত। বিএনপির ছেলেপেলেরা, নেতারা অনেকদিন ক্ষমতার বাহিরে, তারা একটা ক্ষুধা নিয়ে বসে আছে। কিন্তু জামাত বসে আছে ভিন্ন কিছুর জন্য। ওরা নিবে প্রতিশোধ! এতগুলা রাজাকারের ফাঁসি হইছে এই দেশে, এইটার নির্মম প্রতিশোধ নিবে এবার। কামারুজ্জামানের এলাকায় বসে এতদিন লিখে গেছি।সরাসরি কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধেও তো লিখছি কত। কেউ লিস্ট করছে কি না জানি না। এতদিন সব দলের লোকজনই ফেসবুকে স্থান দিয়ে বসে ছিলাম। ওরাও সুবোধ বালক হয়েই ছিল। কিন্তু সুবোধ যে বালক নাই, সুবোধের যে এখন বিপুল চাহিদা, সে যে কী কী করবে বলে কল্পনা করে রেখেছে কে জানে। আজকে শেরপুরের বুকে যা হয়ে গেল তার পরে মুশকিল আসলে বিশ্বাস করা কাওকে। তাণ্ডব চালিয়েছে। এদেরকে আমি চিনি, কেউই তথাকথিত ছাত্র না। আওয়ামীলীগ নেতার একটা রেস্টুরেন্ট আছে, ওইটাতে হামলা করেছে, খাইছে বসে, ফ্রিজ খালি করে খাইছে। পরে আগুন লাগায় দিছে। ওই রেস্টুরেন্টেই শেরপুর জেলার ছাত্রদলের সভাপতিকে পরিবার নিয়ে খাইতে দেখছি বহুবার! কাজেই জানি না কে কী মনে নিয়ে বসে আছে। ভাগ্যে তো বিশ্বাস করি না, হাকুনা মাতাটা বা কে সেরা সেরা ছাড়া আর কিছু বলার নাই আসলে। 

    জ্ঞান দাও প্রভু, ক্ষমা কর, রক্ষা কর দেশটাকে।  

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৫ আগস্ট ২০২৪ | ১১১৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • . | ০৫ আগস্ট ২০২৪ ১৬:১৩535784
  • আপাতত। কিন্তু যুদ্ধ এখনও শেষ হয় নাই।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন