এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  রাজনীতি

  • ইজরায়েল-ফিলিস্তিন নামকরণের দ্বন্দ্ব আর তিনযুগের তিনটি সংঘাত

    সুদীপ্ত পাল
    আলোচনা | রাজনীতি | ২২ নভেম্বর ২০২৩ | ১১৪৮ বার পঠিত
  • ছবি:হীরেন সিংহরায়


    ইজরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত তিনযুগে তিনবার হয়েছে। এই সমস্যাগুলোর একটার থেকে অন্যটা পুরোপুরি স্বতন্ত্র, তাদের কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই। কিন্তু একটার মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব অন্যটার উপরে ব্যাপকভাবে পড়েছে - তাও কয়েক হাজার বছরের ব্যবধানে। ইতিহাসের আসল মজাটা এখানেই। শুধু নামকরণ বা নাম বদল থেকেও অদ্ভুত ঐতিহাসিক জটিলতা সৃষ্টি হয়।

    প্রথম সংঘাতগুলির বিবরণ আছে ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ তানাখ-এ। অনুমেয় যে প্রথম খৃষ্টপূর্ব সহস্রাব্দে এই সংঘাতগুলি হয়। তবে এই ফিলিস্তিন জাতির সঙ্গে আধুনিক ফিলিস্তিন জাতির কোনো সম্পর্ক নেই। ঐ ফিলিস্তিন জাতি কারা ছিল তাও স্পষ্ট জানা নেই- তবে অনুমেয় যে তারা গ্ৰিক ছিল- অন্ততঃ তাদের উৎস ছিল গ্ৰিসে। তাহলে বর্তমান ফিলিস্তিন জাতির নাম ঐ জাতির নামে কী করে হল? তার জন্য বুঝতে হবে দ্বিতীয় সংঘাতের কাহিনী।

    দ্বিতীয় সংঘাত হয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে। তবে এই সংঘাত দুই জাতির মধ্যে নয়। এখানে ইহুদীদের বিরোধ একটা নামের সাথে।

    রোম সম্রাট হেদ্রিয়ান ইহুদীদের হেনস্থা করতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেন-
    এক, পুরুষের খতনা দেয়া নিষিদ্ধকরণ। খতনা ছিল ইহুদীদের ধর্মীয় আচার, প্রায় ট্রাইবাল আইডেন্টিটির মতো- এতে তারা চটে যাবে স্বাভাবিক।
    দুই, জেরুজালেমে তিনি রোমান সনাতনী দেবদেবীদের মন্দির স্থাপন করেন - যার মধ্যে জুপিটার ও টাইকির মন্দির উল্লেখযোগ্য। একেশ্বরবাদী ইহুদীদেরকে রাগানোর এটা একটা পদ্ধতি ছিল। ইহুদীদের মন্দিরস্থলে তিনি জুপিটার এবং নিজের মূর্তি বসান।
    তিন, উপরের ঘটনাগুলোর ফলশ্রুতি হিসেবে ইহুদীরা রোমসম্রাটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে যা বার কোখবা বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এর ফলশ্রুতি হিসেবে হেদ্রিয়ান জেরুজালেমে ইহুদীদের প্রবেশ নিষেধ করেন, যা কয়েক শতাব্দী ধরে নিষিদ্ধ থাকে।
    চার, সবচেয়ে মোক্ষম পদক্ষেপ। ঐ বিদ্রোহ দমন করার পর হেদ্রিয়ান উদ্যোগী হন ইজরায়েল বা ইহুদী নামের সব স্মৃতি মুছে দেয়ার। সেইজন্য তিনি ঐ অঞ্চলের নূতন নাম দেন "সিরিয়া প্যালেস্তিনা"- ইজরায়েলের পুরোনো শত্রু ফিলিস্তিনের নাম অনুসারে। তার আগে ঐ অঞ্চলের নাম ছিল ইউদাইয়া (বা উচ্চারণভেদে জুডিয়া বা য়হুদ) - ইহুদী জাতির নামানুসারে।

    এই ফিলিস্তিন কারা ছিল সেযুগের ইহুদী বা রোমানরা কেউই স্পষ্ট জানত না- কারণ সেটা আরো হাজার বছর পুরোনো গল্প! কিন্তু এই নামকরণ ইহুদীদের আবেগকে চাগাড় দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল- যেটা হেদ্রিয়ান চেয়েছিলেন।

    তৃতীয় সংঘাত, উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে। তার আগে মাঝখানের দেড় হাজার বছরের ইতিহাস জানা জরুরি।

    সেই যে ফিলিস্তিন বা প্যালেস্তাইন নামকরণ হয়েছিল ১৩৪ সাল নাগাদ, সেই নাম সরকারিভাবে ব্যবহার হয়েছে রোমের পতনের এক হাজার বছর পরেও। রোমানরা যে বিভিন্ন প্রদেশের রাজনৈতিক সীমানা তৈরি করেছিল সেই সীমানাগুলো রোমের পতনের পরও ব্যবহার হয়েছে- কিছু অদলবদল করে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যে, তারপর খিলাফত সাম্রাজ্যে আর মামলুক সাম্রাজ্যেও।

    বাইজান্টাইনরা এই অঞ্চলকে তিন ভাগে ভাগ করে প্যালেস্তাইন এক, দুই, তিন নাম দিয়ে শাসন করত। ৬৩৮ সালের পর থেকে খিলাফতের আমলে এই অঞ্চলকে প্যালেস্তাইন (ফলস্তিন) আর জর্ডান (উর্দুন) দুই নামে ভাগ করে শাসন করা হত। একাদশ শতাব্দীর পরে মামলুকরাও এই নামই ব্যবহার করেছে।

    ষোড়শ শতকে ওটোমান তুর্কী শাসন শুরু হয়। ওটোমানরা সরকারি ভাবে ফলস্তিন নাম ব্যবহার করেনি। এই অঞ্চল ওটোমান যুগে প্রথমে বিলায়েত সিরিয়া আর পরে বিলায়েত বেইরুটের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে বেসরকারিভাবে প্যালেস্তাইন বা ফিলিস্তিন নাম প্রচলিত থাকে। ষোড়শ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর বিভিন্ন সাহিত্যে ফলস্তিন নামের প্রয়োগ দেখা যায়। ১৮৯৮ সালের পর নূতন করে ফিলিস্তিন নামের বহুল প্রয়োগ শুরু হয়- জাতীয়তাবাদী ভাবনা থেকে।

    এতো গেল ভৌগোলিক অঞ্চলের নামের কথা, এবার মানুষের নাম বা আত্মপরিচয়ের দিকে তাকানো যাক।

    হেদ্রিয়ানের করা ঐ নামকরণের ফলে ওখানকার স্থানীয় সেমেটিক জনগোষ্ঠীদের নামও ভবিষ্যৎ কালে ফিলিস্তিন হয়ে যাবে- যদিও তাদের সঙ্গে তিন হাজার বছর আগের ফিলিস্তিনদের কোনো সম্পর্ক নেই। হেদ্রিয়ানের সময়কার ফিলিস্তিনবাসীরা নিজেদের পরিচয় দিত আরামাইক, ইহুদী, সামারিটান, নাবাতিয়ান, সিরিয়ান ইত্যাদি নামে- এদের নিজেদের নিজেদের পারম্পরিক ধর্মবিশ্বাস ছিল- এর পাশাপাশি খৃষ্টান ধর্মের বহুল প্রসার হচ্ছিল। ছিল অন্যান্য আব্রাহামী ধর্ম - সামারিটানিজম, ম্যানডেইজম- এগুলো এখনও টিকে আছে খুব অল্প সংখ্যায়।

    রোম সম্রাট কনস্টান্টাইন ৩১৩ অব্দে খৃষ্টান ধর্মের প্রতি সহনশীলতা ঘোষণা করার পর এবং তাঁর মা হেলেনা জেরুসালেমে পবিত্র ক্রস আর যিশুর কবর খুঁজে পাবার পর জেরুসালেমে চার্চ অফ হোলি সেপালকার প্রতিষ্ঠিত হয়- জুপিটারের মন্দির ধ্বংস করে। এর ফলে প্যালেস্তাইন অঞ্চলে খৃষ্টান ধর্মের প্রসার আরো বৃদ্ধি পায়। তবে এই সময়ে ইহুদীদের প্রতি রোমের সহনশীলতাও বৃদ্ধি পায়, আর কনস্টান্টাইন জেরুসালেমে ইহুদীদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে তুলে নেন, তবে সরকারি পেশায় ইহুদীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে। তাছাড়া জেরুসালেমের সমাধিক্ষেত্রগুলো থেকে অনুমান করা যায় চতুর্থ শতকের শেষভাগে জেরুসালেমের জনসংখ্যার একশ শতাংশ খৃষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিল, অর্থাৎ যে ইহুদীরা খৃষ্টান হয়নি তারা শহরে ঢুকতে পারত কিন্তু বসত গড়তে বা কবর দিতে পারত না। পরে খিলাফত ও মামলুক যুগে জেরুসালেমে ইহুদীদের প্রবেশাধিকার ছিল, কিছু পরিমাণ বসতও ছিল।

    সপ্তম শতকে ইসলামের আবির্ভাবের পর ও খিলাফত সাম্রাজ্যের প্রভাবে, আগামী তিন শতাব্দীতে ঝেঁটিয়ে সব ফিলিস্তিনবাসীর নাম হয়ে যায় আরব। আরামাইক, নাবাতিয়ান, সিরিয়ান প্রত্যেকেই নিজেদের সত্তা বিসর্জন দিয়ে ধীরে ধীরে আরব পরিচয় গ্ৰহণ করে। আরামাইক এবং সিরিয়াকের মতো ঐতিহ্যবাহী ভাষাগুলো বিলুপ্ত হয়। তবে ইহুদীরা নিজেদের চিরকাল ইহুদী বলেই পরিচয় দিয়ে এসেছে- ফিলিস্তিন বা আরব নামে পরিচিত হয়নি। সামারিটানরাও নিজেদের পরিচয় ও ধর্ম বজায় রাখে- খুব ছোট সংখ্যায় হলেও। অন্যদিকে ওখানকার মুসলিম এবং খৃষ্টানরা গত এক হাজার বছর ধরে নিজেদের আরব নামে পরিচয় দিয়ে এসেছে এবং তারা এই মুহুর্তে নিজেদের ফিলিস্তিন আরব বলে। খৃষ্টানদের একটা বড় অংশ এবং ইহুদীদেরও একটা অংশ ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়। আরামাইক ভাষার ছোট ছোট কিছু শাখা এখনও টিকে আছে - মূলতঃ সিরিয়ান অর্থোডক্স আর মালকাইট গ্ৰিক চার্চের মাধ্যমে। এই ভাষাগুলোর খুব সামান্য মুসলিম বক্তাও এখনও আছে।

    এছাড়া, বাইজান্টাইন ও খিলাফতের আমলে ইয়েমেন ও আরব উপদ্বীপ‌ থেকে অনেক জনগোষ্ঠী ওখানে আসে, তারাও পরে আরব নামে পরিচিত হয়ে যায়।

    মামলুক ও ব্রিটিশ যুগের মাঝে ওটোমান যুগে দীর্ঘকাল ফিলিস্তিন নামটা ব্যবহার হয়নি এবং এই সময়ে এখানকার আরব খৃষ্টান ও মুসলিমরা নিজেদের হয় আরব হিসেবে চিহ্নিত করেছে, নয়তো খৃষ্টান বা মুসলিম হিসেবে, নয়তো নিজেদের ট্রাইব বা ধর্মীয় শাখার নামে আত্মপরিচয় দিয়েছে। ১৮৯৮ সালের পর থেকে এবং বিশেষ করে ১৯১১ সালে "ফলস্তিন" সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠার পর ফিলিস্তিন আত্মপরিচয় জোরদার হতে থাকে। প্রথমদিকে খৃষ্টানদের মধ্যে ফিলিস্তিন আত্মপরিচয় আর মুসলিমদের মধ্যে আরব আত্মপরিচয় বেশি বলিষ্ঠ ছিল।

    ফিলিস্তিন বা প্যালেস্তাইন কারা বোঝা গেল। এবার দেখা যাক ইজরায়েল কারা। ইজরায়েল বলতে আব্রাহামিক নবী ইয়াকুব বা জেকবকে বোঝায়, এবং তাঁর উত্তরসূরিদের। ইজরায়েল বলতে মোট বারোটা ট্রাইবকে বোঝাতো- যার মধ্যে একমাত্র য়হুদ (বাংলায় ইহুদী, ইংরাজিতে জুডিয়ান) ট্রাইব টিকে আছে। বেঞ্জামিন ট্রাইব ইহুদীদের মধ্যে মিশে গেছে, বাকি দশটি জনগোষ্ঠী হারিয়ে গেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন নিজেদেরকে এই হারিয়ে যাওয়া দশখানা ট্রাইবের একটা বলে দাবি করে- তবে এগুলোর কোনো ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই আর ইজরায়েল সরকার থেকেও মান্যতা দেয়া হয়নি। যেহেতু অন্য দশটি জনগোষ্ঠীর বর্তমানে অস্তিত্ব নেই, তাই ইজরায়েল আর ইহুদী প্রায় সমার্থক হয়ে গেছে।

    ওটোমান সাম্রাজ্যের শেষ যুগে ও তার পতনের পর বিংশ শতকে যে ইজরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যা শুরু হয়েছে সেটা এই আলোচনার বিষয় নয়। আর প্রথম দুটো সংঘাতের সঙ্গে বর্তমান সংঘাতের কোনো সম্পর্ক নেই। তানাখ অনুযায়ী ইহুদীদের সবচেয়ে বড় শত্রুদের একটি হল ফিলিস্তিন। ঐ ফিলিস্তিনের থেকে এই ফিলিস্তিন সম্পূর্ণ আলাদা, তবে কিংবদন্তী আর নামের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব সুদূরপ্রসারী হয়।


    তথ্যসূত্র:

    নিম্নলিখিত উইকি পেজ সমূহ
    - Arabization
    - Church_of_the_Holy_Sepulchre
    - Aelia_Capitolina
    - Syria_Palaestina
    - Judea
    - History_of_Palestine
    - Palaestina_Prima
    - Palaestina_Secunda
    - Ten_Lost_Tribes
    -Administrative_divisions_of_the_Ottoman_Empire
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২২ নভেম্বর ২০২৩ | ১১৪৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • হীরেন সিংহরায় | 85.255.***.*** | ২২ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:০১526390
  • সবিনয় নিবেদন 
    দুয়েকটা কথা ছিল। তানাখ বলতে কি আপনি হিবরু বাইবেলের কথা বলছেন? 
    কনসটানটিন খ্রিস্ট ধর্মের প্রতি সহনশীল শুধু নন তিনি সেই ধর্ম গ্রহন করেন । গ্রিক ভাষায় ক্রিসটিয়ান বাইবেল লেখার জন্য সম্পাদক মনডলী জডো করেন।
    তাঁর মা হেলেনা যিশুর বধ্যভূমি শুধু নয় জন্ম স্থান ও নির্নয় করেন। সেই মোতাবেক তাঁর পুত্র দু জায়গায় 
    গিরজে বানান। 
    জশুয়ার কানান অভিযানের সময় ( বাইবেল মানলে ১৪শ খ্রিস্ট পূর্ব , মাস ও মেনোস) ছটি বিভিন্ন জাতি কানানে ছডিয়ে ছিটিয়ে বাস ও রাজত্ব করতেন। ফিলিসতিনদের পাঁচটি শহর ( গাজা,আশদোদ আশকেলন গাথ এফরন) হিবরু বাইবেলে উল্লিখিত হয়েছে। প্যালেসটাইন ( তার হিবরু নামে) দুশোর বেশিবার । 
    যিশু বাড়িতে আরামাইক বলতেন। 
  • তর্ক  | 136.226.***.*** | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ০০:৩৮526392
  • ইহুদিরাতো আদতে ইরাকের লোক। প্রথম সংঘর্ষ কি তবে ক্যানোনাইট/ ফিলিস্তিনোদের সাথে ইরাকিদের হয়েছিল? এবং সেই ক্যানোনাইটরা আজকের আরব ফিলিস্তিনোদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা - এই কি প্রতিপাদ্য?  
  • itihaser chatro | 103.175.***.*** | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:০১526417
  • @সূদীপ্তবাবু

    "সপ্তম শতকে ইসলামের আবির্ভাবের পর ও খিলাফত সাম্রাজ্যের প্রভাবে, আগামী তিন শতাব্দীতে ঝেঁটিয়ে সব ফিলিস্তিনবাসীর নাম হয়ে যায় আরব। আরামাইক, নাবাতিয়ান, সিরিয়ান প্রত্যেকেই নিজেদের সত্তা বিসর্জন দিয়ে ধীরে ধীরে আরব পরিচয় গ্ৰহণ করে। আরামাইক এবং সিরিয়াকের মতো ঐতিহ্যবাহী ভাষাগুলো বিলুপ্ত হয়। তবে ইহুদীরা নিজেদের চিরকাল ইহুদী বলেই পরিচয় দিয়ে এসেছে - ফিলিস্তিন বা আরব নামে পরিচিত হয়নি।"

    একেবারেই বোঝা যাচ্ছে না এই জায়গাটাতে। আপনি সত্তা বিসর্জন বলতে ঠিক কি বোঝাতে চাইছেন এখানে? আপনি কি ওখানকার মানুষদের ইসলামে ধর্মান্তরণের কথা বলছেন? কিন্তু ইসলাম তো সব ইহুদী নবীকেই এবং যীশুকেও গ্রহণ করেছে নবীর আসনে তাহলে সত্তা বিসর্জন দেবার কি ঘটলো? আর যদি আরবী ভাষার এডোপশনের ব্যাপারে বলেন যে তাহলে ইহুদীরা আরবী ভাষা গ্রহণ করেননি এটা আপনি কোথা থেকে পেলেন? মিশরের বিখ্যাত সুলতান সালাদিনের নিজস্ব চিকিৎসক ছিলেন মোশেস বেন মাইমন নামক এক ইহুদী চিকিস্তক দার্শনিক যিনি ইহুদী জগতে maimonides নামে খ্যাত। তিনি তো আরবীতে সুপন্ডিত ছিলেন বলে শোনা যায়। তার যেসব ছবি বা মূর্তি এখনো প্রচলিত তাতে তাকে তো আরব বলেই মনে হয়।
  • ইতিহাসের ছাত্র  | 103.175.***.*** | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:০৭526418
  • @সুদীপ্ত বাবু

    আপনি একটা কথা বারবার বলবার চেষ্টা করছেন যে মোজেসের সমসাময়িক ফিলিস্তিনী আর রোমান সম্রাট হাড্রিয়ানের সমসাময়িক ফিলিস্তিনীরা এক নন। আচ্ছা এই একই কথা তো ইহুদিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতেই পারে। মোজেসের সমসাময়িক ইহুদিদের ভাষা আর রোমান সম্রাট হাড্রিয়ানের সমসাময়িক ইহুদীদের ভাষা কি একই ছিল? মোজেসের সমসাময়িক ইহুদিদের ধর্মচিন্তা ও রোমান সম্রাট হাড্রিয়ানের সমসাময়িক ইহুদীদের ধর্মচিন্তা যে একই নয় (যেহেতু মাঝখানে বেশ কয়েকটা শতাব্দীর ব্যাবিলোনিয়ান এক্সাইলে ছিলো ইহুদিরা) এটা তো এখন প্রমাণিত। তাহলে কি আপনার কথা অনুযায়ী রোমান সম্রাট হাড্রিয়ানের সমসাময়িক ইহুদীরা নিজেদের আগের সত্তা বিসর্জন দিয়েছিলেন?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন