এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  অর্থনীতি

  • যারা রাঁধে এবং চুল বাঁধে 

    অনিন্দিতা লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | অর্থনীতি | ১৩ অক্টোবর ২০২৩ | ১০২৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • আমরা যে মেয়েরা শ্রমের বাজারে কাজ করি, আর তার মধ্যে আবার যারা অর্থনীতির চর্চা করি, গত কদিন যাবদ তারা যারপরনাই উচ্ছ্বসিত। এবারের অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার আমাদের জন্য একটা স্বীকৃতি, একটা উৎসাহ, একটা আবার করে জেগে ওঠার দিগ্দর্শন। তিনদিন আগে নোবেল কমিটি ঘোষণা করেছে একজন মহিলা অর্থনীতিবিদের নাম। ক্লডিয়া গোল্ডিন। হ্যাঁ, তিনি প্রথম মহিলা যিনি এককভাবে অর্থনীতির নোবেল জয় করলেন, আর সাকুল্যে তৃতীয়। একজন ৭৭ বছর বয়সী হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা, স্বীকৃতি পেলেন তাঁর সারা জীবনের গবেষণার। অর্থনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন ধারার কাজ তিনি করে চলেছেন গত তিন-চার দশক ধরে। মহিলা শ্রমের দীর্ঘকালীন ধারা, মহিলাদের মজুরি, শ্রমের বাজারে নারী-পুরুষের মজুরিতে পার্থক্য, এগুলিই তাঁর কাজের প্রতিপাদ্য। পুরস্কারের ঘোষণায় বলা হয়েছে, তাঁর মূল অবদান শ্রমের বাজারে দীর্ঘমেয়াদী লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে আলোকপাত ও বিশ্লেষণ। যে বিষয়টা তাত্ত্বিক অর্থনীতিতে অবহেলিত, যে বিষয়কে তাবড় তাবড় অর্থনীতিবিদেরা আভিজাত্যের আওতার বাইরেই রেখে দিয়েছেন চিরটাকাল, সেই নারী-বিষয়ক প্রশ্নগুলিকে শ্রমের বাজারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে মেনে নেওয়া এক নিঃশব্দ বিপ্লব। ক্লডিয়া গোল্ডিন কাজ করেছেন মার্কিন অর্থনীতির ওপর, শতাধিক বছরব্যাপী দীর্ঘ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে। তার অনেকটাই তাদের দেশ ও সমাজের ইতিহাস, আবার অনেকটাই আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্যে আজও প্রাসঙ্গিক। তাই আমরা আনন্দিত, আমরা ভবিষ্যতের সম্ভাবনায় উদ্দীপিত।

    ক্লডিয়ার কাজে মার্কিন মুলুকে মহিলাদের শ্রমের বাজারে যোগদানের পরিসংখ্যান অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে এই সহস্রাব্দ শুরু হওয়া পর্যন্ত ব্যাপ্ত। তাতে দেখা যাচ্ছে যে, মহিলাদের অংশগ্রহণের ধারা কিন্তু সবসময় এক থাকে নি। আজ থেকে মাত্র একশো বছর আগে ১৯২০ সাল নাগাদ পুরো শ্রমদাতাদের মধ্যে মাত্র ২৫% ছিলেন মহিলা। আজকেও মহিলাদের ভাগ পুরুষের চেয়ে কম, কিন্তু আগের চেয়ে বেড়ে তা হয়েছে ৪৬%। অথচ মহিলাদের শ্রমে যোগদানের  শতকরা ভাগ ১৭৯০ সাল নাগাদ ছিল ৬০% । অর্থাৎ এক সময়ে মহিলারা বেশি সংখ্যায় শ্রমের বাজারে অংশ নিতেন, তারপর এই অংশ ক্রমে কমে যায় এবং সব শেষে আবার বাড়ে। এই ওঠাপড়ার ধরণটি ছবি এঁকে দেখালে তা একটি U-আকৃতির বক্র রেখা তৈরি করবে। এই আকারের কারণ অনুসন্ধান এবং বিশ্লেষণ এক অর্থনৈতিক ঐতিহাসিকের দৃষ্টিকোণ থেকে করেছেন ক্লডিয়া। তিনি দেখিয়েছেন, প্রথম যুগে মহিলারা কৃষিকাজে ভরপুর যোগদান করতেন। সেকালে চাষবাসের কাজ চলত মূলত পারিবারিক কাঠামোর মধ্যে, যেমন আমাদের মতো দেশে আজও মোটামুটি চলে। পারিবারিক কাঠামোতে কাজের সুবিধা হলো সেখানে সব সদস্যকে জুড়ে নেওয়া যায়, আর সবাই সেখানে উৎপন্ন শস্যের ভাগ পায়। মজুরি নয়, খাবারদাবার এবং বিভিন্ন সামগ্রীর বন্টন হয় পরিবারের ভেতর। এই ব্যবস্থায় পরিবারের মহিলা সদস্যরাও অনেক শ্রম দিতে পারেন, ঘরকন্নার কাজ সামলানোর সাথে সাথে চাষের জমিতে, ধানের গোলাতে আর সংশ্লিষ্ট কাজকর্মে।

    প্রচলিত সমাজব্যবস্থায় সন্তানের জন্মদান আর প্রতিপালন মূলত মহিলাদের দায়িত্ব বলেই মনে করা হয়। যে সময়ে মহিলারা কৃষিক্ষেত্রে যুক্ত থাকতেন, সে সময়ে এই দায়িত্বটি পালন করা তাঁদের পক্ষে তেমন কঠিন ছিল না কারণ কার্যক্ষেত্র আর ঘর ছিল সংলগ্ন, পরিবারের অন্যান্য  সদস্যরা ছিলেন নানাভাবে যুক্ত। এই সুবিধাটি আর বহাল থাকলো না যখন মহিলারা কৃষি ছেড়ে ধীরে ধীরে শিল্প ক্ষেত্রে ঢুকতে আরম্ভ করলেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্রুত শিল্পায়নের সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের শ্রমের বাজারে অংশগ্রহণের ধারা এবার বদলাতে শুরু হল। শিল্প সংস্থা পারিবারিক নয়, বরং ব্যক্তিগত কাঠামোয় পরিচালিত হয়। সেখানে প্রতিটি শ্রমিক একক, তার মজুরি পাওনা হয়, আর এই সঙ্গে বাঁধা সময় ধরে  উপস্থিতির আবশ্যিকতা থাকে। অর্থনীতির পরিভাষায় কৃষি শ্রমিক ভাগ পায়  গড় অবদান বা উৎপাদকতা (average product) অনুযায়ী, আর শিল্প শ্রমিক পায়  তার প্রান্তিক অবদান বা উৎপাদকতা (marginal product) অনুযায়ী, যার নাম মজুরি। সংগঠিত শিল্প কাঠামোয় তাই এসে পড়ে নানা শর্ত। শিশুর মায়েদের পক্ষে কাজ করায় প্রতিবন্ধকতার এই শুরু। ক্লডিয়া দেখিয়েছেন, মহিলাদের শ্রমের বাজারে অংশগ্রহণের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা মাতৃত্ব। U-আকৃতির বক্ররেখার নিম্নাংশ অর্থাৎ মহিলাদের হ্রাসমান শ্রমদান এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির দ্যোতক। মাতৃত্ব ছাড়াও আরো দুটি কারণ এর সঙ্গে কাজ করে। এক, শিল্প কারখানার কাজে  শারীরিক শক্তি লাগে বেশি, কাজগুলি হয় কঠোর, পরিবেশ হয় প্রায়শই দূষণযুক্ত ও নোংরা। সমাজ তখন মহিলাদের কোমলতা  পেলবতা রক্ষা করতে তাদের কারখানা থেকে দূরে থাকতে প্ররোচিত করে। দুই, মহিলারা মজুরি উপার্জন করলে যে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসে, তা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের আত্মগরিমাকে আঘাত করে। তাই আবারো স্ত্রীদের সরিয়ে রাখা। ফল, বিবাহিত মহিলাদের শ্রমের বাজারে অংশগ্রহণ কমে যাওয়া। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে মার্কিন দেশে এরকম চিত্র ছিল বলেই ক্লডিয়া দেখাচ্ছেন। আর আমরা এ ছবি আজ সামনেই দেখতে পাচ্ছি। 

    অর্থনীতির ছাত্র মাত্রেই জানেন যে অর্থনৈতিক বিকাশের তিনটি মূল পর্ব- প্রাথমিক (primary), মাধ্যমিক (secondary) আর  সেবাক্ষেত্র (services)। এই তিনটি পর্বে জনসংখ্যার বেশির ভাগ পর্যায়ক্রমে এই তিনটি ক্ষেত্রে কর্মরত থাকে। সেই অনুযায়ী অর্থব্যবস্থার স্তরকেও নামাঙ্কিত করা হয়।  ধীরে ধীরে যখন অর্থব্যবস্থা তৃতীয় বা সেবা ক্ষেত্রে পদার্পন করে, তখন সঙ্গে আসে নতুন ভাবনাচিন্তা, পরিবর্ধিত শিক্ষা, পরিবর্তিত সুযোগসুবিধা আর অগ্রসর মানসিকতা। মহিলাদের কাজে যোগদান আবার বাড়তে শুরু করে। এ তো হল তত্ত্ব। বাস্তবে দেখা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মহিলাদের কাজে যোগ দেওয়ার এই নতুন পর্ব শুরু হয় বিংশ শতাব্দীর একটি অন্যতম বৃহৎ ঘটনার ধাক্কায়। তিরিশের দশকের বিশ্বব্যাপী মন্দা। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনেই মেয়েরা তখন বাইরে আসেন।  ইউরোপের ইতিহাস দেখলে আমরা পাব এর সঙ্গে আরো দুটি ঘটনা, বিশ্ব যুদ্ধ। সমরকালীন প্রয়োজনেও মহিলারা তখন শিল্প উৎপাদনে যোগ দিয়েছিলেন। এই তিনটি অনুঘটক পশ্চিমী দুনিয়ায় যুগ পরিবর্তনের সূচনা করেছে  গত শতাব্দীতে।  সেখান থেকেই বাড়তে বাড়তে পূর্বোল্লিখিত ৪৬% সংখ্যাটিতে পৌঁছানো।

    মহিলাদের সংখ্যাবৃদ্ধি কিন্তু নিষ্কন্টক হয়ে আসে নি। বিনা বাধায় এই ধারা প্রবাহিত হচ্ছে, ঘটনাটা কিন্তু তেমন সহজ নয়। এ বিষয়ে ক্লডিয়া দুটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করেছেন। প্রথমত, মাতৃত্বের একটা বড় ভূমিকা এই যুগেও রয়ে গেছে। এককালে যেমন অবিবাহিত মহিলারাই বেশি চাকরি করতেন, তেমন এই যুগেও দেখা গেছে যে প্রথম সন্তানের জন্মের পরে মহিলাদের কাজ ছেড়ে দেওয়ার হার খুব বেশি। অর্থাৎ বিয়ে, পরিবার, সন্তান- এসবের আবর্তেই বাঁধা পড়ে যাচ্ছে মেয়েরা চিরকাল। আমরাও কি দেখি না, ছেলেমেয়ের পড়াশুনা আর বোর্ডের পরীক্ষা উপলক্ষ্যে মায়েদের চাকরি ছেড়ে দেওয়া? দ্বিতীয়ত, আপিসের কাজ বা কারো কারো ভাষায় বাবুকাজ (white collar job) করলেও মহিলাদের বেতন বা মজুরির হার পুরুষের তুলনায় অনেকখানি কম। শুধু অসংগঠিত ক্ষেত্রে মজুরির তারতম্য নয়, সংগঠিত ক্ষেত্রেও এই পার্থক্য প্রকট। আমরা মনে করতে পারি বিলি জিন কিং-এর লড়াই। আমরা ভেবে দেখতে পারি আমাদের আশেপাশে কর্মরত বহু মহিলার অবস্থা। বেতন কম, পদোন্নতি কম, সুযোগ কম। তাছাড়াও পুরুষ সহকর্মীদের অবজ্ঞা, চাকরিতে মেয়েদের নিয়োগের প্রতি অনীহা, এগুলি বেশি পুরোনো নয়, অচেনাও নয়। নারীবিষয়ক কোনো গবেষণার কাজে পুরুষ সহকর্মীদের অনায়াসে বলতে শুনি, এটা তো তোমার বিষয়। এক মহিলা অর্থনীতিবিদ বন্ধুর কাছে শুনেছি gender budgeting নিয়ে কাজ করতে কী প্রবল তাচ্ছিল্যের সম্মুখীন তাকে হতে হয়েছে। অর্থনীতির দুনিয়ায় মহিলা আছেনই বা কজন!  অথচ গজদন্তমিনারে বসা পুরুষদের সংখ্যা অগুনতি। তাঁরা তাত্ত্বিক অর্থনীতির কাজ করেন, গাণিতিক মডেল গড়েন, অমর্ত্য সেনের ভাষায় ‘engineering approach’ নিয়ে খুঁজে বেড়ান মানুষের উন্নয়নের খবর।

    তাই তো ক্লডিয়ার নোবেল জিতে নেওয়া আমাদের মতো মহিলাদের কাছে বড় খবর। আমরা যারা একসাথে রাঁধতে আর চুল বাঁধতে গিয়ে হিমশিম খাই, যাদের খোঁপাও খুলে যায়, ফোড়নটুকুও পুড়ে যায়, ক্লডিয়ার গবেষণা তাদের কাছে নতুন উদ্যম এনে দিল। আমরা আশা রাখি, তাত্ত্বিক অর্থশাস্ত্রের বাজারে এই যে মহিলাটি নিজের জায়গা করে নিলেন, তাতে হয়তো নতুন দিগন্ত খুলবে। এই পুরস্কার শুধু রাজনৈতিকভাবে সঠিক একটি দেখনদারী হয়ে শেষ হয়ে যাবে না। আমরা অপেক্ষা করে থাকবো, মেয়েদের নিয়ে ভাবনা, ইতিহাস নিয়ে চর্চা আর এই দুইয়ের মেলবন্ধন নিশ্চয়ই  আমাদের লিঙ্গসাম্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ক্লডিয়া গোল্ডিনকে অজস্র ধন্যবাদ, অশেষ সম্মান আর নতজানু নমস্কার।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৩ অক্টোবর ২০২৩ | ১০২৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • মোহাম্মদ কাজী মামুন | ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ০০:৩৬524533
  • খুব খুব ভাল লাগল। আশা করি, নতুন নোবেল লরিয়েটকে পরিচিত করানোর পাশাপাশি অনেকেরই চোখ খুলে দেবে যারা এখনো 'যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে' - এর অর্থ খুঁজতে বই দেখেন প্রাত্যহিক জীবনে একটুও তাকান না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই কিছুদিন আগেও বলছিলেন যে একই সাথে অফিস থেকে বাসায় ফিরেছেন স্বামী-স্ত্রী; অথচ কর্তাবাবু গা এলিয়ে দিলেন টিভির সামনের সোফায়,আর হুকুম জারি করলেন চা করে নিয়ে আসতে। রাতের রান্নাবান্না ও ঘরকন্না তো আরো পরে হবে। 

    " এই ব্যবস্থায় পরিবারের মহিলা সদস্যরাও অনেক শ্রম দিতে পারেন, ঘরকন্নার কাজ সামলানোর সাথে সাথে চাষের জমিতে, ধানের গোলাতে আর সংশ্লিষ্ট কাজকর্মে।"
    আচ্ছা এই যে ঘরকন্নার কাজ তাকে ক্লডিয়া গোল্ডিন শ্রমে অন্তর্ভূক্ত করেননি? 
     
    " প্রচলিত সমাজব্যবস্থায় সন্তানের জন্মদান আর প্রতিপালন মূলত মহিলাদের দায়িত্ব বলেই মনে করা হয়।" 
    সন্তান জন্মদান খুব শ্রমসাধ্য ব্যাপার। একেও শ্রমের অন্তর্ভূক্ত করা প্রয়োজন আমার মতে। এছাড়া প্রতিপালন অবশ্যই শ্রমের অন্তর্ভূক্ত হওয়া উচিৎ। 
     
    ''এক, শিল্প কারখানার কাজে  শারীরিক শক্তি লাগে বেশি, কাজগুলি হয় কঠোর, পরিবেশ হয় প্রায়শই দূষণযুক্ত ও নোংরা। সমাজ তখন মহিলাদের কোমলতা  পেলবতা রক্ষা করতে তাদের কারখানা থেকে দূরে থাকতে প্ররোচিত করে। দুই, মহিলারা মজুরি উপার্জন করলে যে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসে, তা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের আত্মগরিমাকে আঘাত করে। তাই আবারো স্ত্রীদের সরিয়ে রাখা।" 

    এ ব্যাপারটি আমাদের দেশেও দেখা যায়। অনেক পুরুষই তাদের বউকে পটের বিবি সাজিয়ে রেখে সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান।  পেলবতা নষ্ট হবে ভেবে বউকে কাজ থেকে বিরত রাখেন। এছাড়া পুরুষতান্ত্রিকতায় আঘাত লাগার বিষয়টিও রয়েছে।  সে পুরুষ সে আয় করবে সে নিয়ন্ত্রণ করবে সব কিছু। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং হল,কিছু নারীও এই পটের বিবি হয়ে থাকাটাকে তাদের জন্য সন্মানজনক ভেবে থাকেন। এ যে এক প্রকার দাসত্ব এ বোধটিই তাদের নেই। 
     
    "তিরিশের দশকের বিশ্বব্যাপী মন্দা। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনেই মেয়েরা তখন বাইরে আসেন।"  
    লকডাউনে যখন  অনেক পরিবার কপর্দকশূন্য হয়ে পড়েছে  নিঃশেষ হয়ে গেছে সব সম্পদ,তখন বাঁচার তাগিদে আমাদের দেশেও ইদানিং কোথাও কোথাও মহিলাদের দোকানদারি করতে দেখা যাচ্ছে।  
     
    "এককালে যেমন অবিবাহিত মহিলারাই বেশি চাকরি করতেন, তেমন এই যুগেও দেখা গেছে যে প্রথম সন্তানের জন্মের পরে মহিলাদের কাজ ছেড়ে দেওয়ার হার খুব বেশি। "
    এও ঘটে আমাদের দেশে। আমার বোনকেই তো চাকরি ছাড়ার ঘোষনা দিতে দেখছি। মা হয়ে চাকরি করতে যে সমস্যার পাহাড় ছিল,তার কিছুটা দূর হয়েছে মাতৃত্বজনিত ছুটি বাড়ানোতে যা এখন ক্ষেত্রবিশেষে নয় মাস আগে ছিল মাত্র তিন মাস। এছাড়া ডে কেয়ারও হয়েছে কোথাও কোথাও। কিন্তু এ খুবই খন্ডিত এক উন্নয়ন। মায়েদের চাকরি এখনো খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠার মত দুঃসাধ্য কাজ। এই জন্যই মনে হয়, কোন ফিমেইল কলিগের সাথে যদি এক সাথে প্রমোশান হয় আমার তাহলে ঐ ফিমেইল কলিগের ত্যাগটা আমার থেকে অবশ্যই বেশি। 
     
    পরিশেষে লেখককে ধন্যবাদ এমন একটি মহৎ লেখা আমাদের উপহার দেয়ার জন্য। 
  • | ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৪524539
  • ক্লডিয়া গোল্ডিনকে অভিনন্দন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পরিচয় করানোর জন্য।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন