এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • চাঁদনী রাতের কিস্সা

    Arundhati Sarkar Santra লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ০৭ জুন ২০২২ | ১৬৩১ বার পঠিত
  • কোকিলার বড্ড মন খারাপ।
    দুদিন হল কোকিলার মেয়ের শাদি হয়েছে ওর সহেলি আনন্দীর ছেলের সঙ্গে।
    গহনাগাঁটি, ঘাগরাচোলি, মেহেন্দি কুমকুম সব দিয়ে মেয়েকে সাজিয়ে দিয়েছে কোকিলা। কিন্তু বিয়ে দিয়ে, পুরি, লাড্ডু খেয়ে, বহু-বেটা নিয়ে আনন্দী যখন চলে যাচ্ছে, দুঃখে কোকিলার বুকটা ফেটেই যাচ্ছিল।
    আনন্দীকে সে বললেও একবার, ‘ও আনন্দী তোর ছেলে তুই নিয়ে যা, আমার মেয়ে আমার কাছেই থাকুক না।’
    আনন্দী তো কাজল লেপা চোখ ঘুরিয়ে, নাকের নথ নাড়িয়ে বলল, "ও মা সে কি? বেটার বিয়ে দিয়ে বউ ফেলে রেখে যাব! এমন মানুষ আমি নই কোকিলে। অবুরে সবুরে, পালা পাব্বনে, তোর মেয়েকে ঘুরিয়ে নিয়ে যাব খন, ভয় পাসনা তুই।"
    এই বলে সে মল ঝমঝমিয়ে, নথ ঘুরিয়ে বেটাবউ কোলে নিয়ে চলে গেল।
    -“এই তুই পেয়ারি সহেলি? কোকিলার চোখের জলটুকু দেখলি না? পুতুল বলে কি মেয়ে নয়?”
     
    মা বলেছে বটে নতুন পুতুল এনে দেবে, কিন্তু সে ও আজ দুদিন হয়ে গেল।
    দুদিন ধরে মা বড় ব্যস্ত। পিতমপুরা থেকে বনিকের দল রংবেরঙ্গের ধোতি, পিরান, ঘাগরার মোটঘাট নিয়ে যাচ্ছিল দেলোয়ারগড়ের মিনাবাজারে। সেখানে ভারি বেচাকেনা হবার কথা। কিন্তু ওদের কিছুলোকের তবীয়ত খারাপ, তাই কদিনের জন্য কোকিলাদের হাভেলিতে আশ্রয় নিয়েছে। 
    এতজন লোক খাচ্ছে যে, মা’র তাই অনেক কাজ। 
    বড় বড় পাতিলায় রান্না হচ্ছে দাল, চাউল, রোটি, সব্জি। কড়াইতে ফুটছে ঘন দুধ। দুধ একটু ঘন হলেই মা সুজির হালুয়া বানাবে। হাভেলির খাস নউকর নাগিন্দর, দেবেন্দর মাকে হাতে হাতে এগিয়ে দিচ্ছে কড়াই, তেল, মসাল্লা, কিসমিস।       
    কোকিলার দিকে মা তাই নজর দিতে পারেনি তেমন। আজ দুদিন হল কোকিলা সেই মন খারাপ করেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। 
    বেআক্কেলে আনন্দীটা নিজের বাড়িতে নাকি বেটা বহু নিয়ে খুব আসর জমিয়েছে। মহল্লার বাকি মেয়েগুলোও সব জমা হয়েছে সেখানে। শুধু কোকিলাকেই ডাকে নি ওরা।
    মেয়ের মাকে বুঝি যখন তখন জামাই বাড়ি যেতে আছে? ওরা বিকেলবেলাই এসে কোকিলাকে বলে গেছে, ওর মেয়ে কেমন আছে দেখে বলে যাবে ওকে। 
    যা সব মুখপুড়ির দল! মা যখন নতুন পুতুল কিনে দেবে আসিস তোরা একবার।
    কোকিলা নিজের মনেই গুমরে গুমরে ঘুরে বেড়ায়। হাভেলির ঘরে ঘরে লণ্ঠনে আলো জ্বেলে দিয়ে যায় সেবতিবাঈ।    
    বেশ রাত হয়েছে। 
    অন্ধকার নয়, চাঁদনী রাত।
    হাভেলির ছাতের ওপর একটা কুঠুরি আছে।
    ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে সেই কুঠুরিতে উঠে যায় কোকিলা।
    মা ওদিকে মোটেই  যেতে দিতে চায় না। কি নাকি সব পুরনো আর ভাঙ্গাচোরা জিনিসে ঘরটা ভর্তি।  আজ কোকিলা সেই কুঠরি ঘরেই ঢুকে পড়ে।
    সত্যিই তাই। কেবল ধুলো ময়লা, ভাঙা তোরঙ্গ, পা ভাঙা কাঠের ঘোড়া, পিতাজির কয়েকটা পুরনো খাতা। ঘাঁটতে, ঘাঁটতে একটা কাঠের মেয়েপুতুল পেয়েছে কোকিলা।
    ঝেড়ে,মুছে মেয়েপুতুলটাকে নিয়ে নেমে এল কোকিলা। সেবতি এসেছিল এক কটোরি দুধসুজি নিয়ে। কোকিলার আর ভুখ নেই। ও শুয়ে পড়েছে।   
    পুতুলটার নাম আথি।
    কোকিলা বলে, ‘দেখ আথি, কেমন সুন্দর চাঁদ উঠেছে, আমার মেয়েটার জন্য যে কি মন কেমন করছে!’
    আথি বলে, ‘সেই তো, সত্যি খুব সুন্দর চাঁদ উঠেছে। মন খারাপ করিস না,তোকে একটা গল্প বলি শোন।’
    ‘কিসের গল্প আথি?’
    আথি উত্তর দেয়, ‘চাঁদের গল্প। জ্যোৎস্নার গল্প। পৃথিবীর মানুষের গল্পের সঙ্গে  চাঁদের গল্পের খুব মিল বুঝলি? চাঁদের মত করেই তো ইনসানও তো একটু একটু করে ষোলকলায় বেড়ে ওঠে। জোছনা ছড়ায়। সেই জোছনা ভালবাসা হয়ে ভিজিয়ে দেয় আশেপাশের মানুষদের মন। কখনো আবার সেই চাঁদে গ্রহণও লাগে। ঠিক যেমন কখনো কখনো মানুষের জীবনেও সব আঁধারকালো হয়ে যায়।’
    আথি পুতুলটা গল্প বলে এক জ্যোৎস্নামাখা পূর্ণিমা রাতের।
    পূর্ণিমা রাতের শান্ত সাবরি নদী। 
    তাতে চকচকে চাঁদের আলো এসে পড়েছে। নদীর ধারে তাঁবু খাটিয়ে রয়েছে একদল মানুষ। এরা আসছে পশ্চিম থেকে। ওরা তীর্থস্থানের যাত্রী নয়, বানিজ্যের বেসাতি নিয়ে গঞ্জের হাটেও যাচ্ছেনা ওরা।
    ওরা হল গল্প বলিয়ের দল। 
    ছোট ছোট কাঠের পুতুল নিয়ে সাজপোশাক পড়িয়ে, সুতো দিয়ে তাদের নাচিয়ে নাচিয়ে ওরা গল্প বলে। হুরী, পরী, জিন, দৈত্য দানোর দাস্তান নয়, ওরা বলে মানুষেরই জীবনের টুকরো টুকরো গল্প। ওদের ঘরবসতের আশেপাশে যেসব ছোট ছোট খুশি, আনন্দ, কান্না, বেদনার ছবিগুলো ঘুরে ঘুরে বেড়ায়, সেগুলোকেই সুতো দিয়ে জুড়ে জুড়ে গল্প বানায়। সেই গল্পে ওদের গাঁওবুড়োর ছোটবেটা হয়ে যায় রাজপুত্তুর, আর পাশের গাঁয়ের চাষির মেয়ে হয় সুন্দরী কাজলরানী। কাঠপুতলীদের রেশম জড়ির কাপড়ে মুড়ে, টানা টানা চোখ এঁকে, সুতো দিয়ে ঝুলিয়ে গান গেয়ে গেয়ে কাজলরানী আর ছোটকুমারের মহব্বতের গল্প শোনায়। কখনো বলে একাকিনী গাঁয়ের বধূর কিস্সা , যার সোয়ামি তাকে ছেড়ে দূরবিদেশে গেছে বেসাতি করতে। একটা দুষ্টু ভূত সেই সুযোগে নয়ি দুলহনের বর সেজে এসে ঢুকে পড়েছে সেই হাভেলিতে। কাঠের পুতলাগুলো নড়ে নড়ে সেই ভূত মানুষের পিরিতের কিস্সা  শোনায়। এই সব জানা অজানা গপ্পো গুলো ওদের দেশে গাঁয়ে কান পাতলেই শোনা যায় বটে, কিন্তু পুতলাগুলো যখন নেচে, ঘুরে, সুর করে সেগুলো দেখায়, দেখতে আসা লোকগুলো হাঁ করে দেখে, আর হাসতে হাসতে এ ওর গায়ে গড়িয়ে পড়ে।
    কখনো ওরা কাপড়ের ঘোড়া ছুটিয়ে মুখে আওয়াজ তোলে টকা টক, টকা টক, টকা টক তখন মনে হয় বুঝি সত্যি কোন দূরদেশ থেকে ঘোড়সওয়ার ধুলো উড়িয়ে ছুটে আসছে।                                          আবার রাজকন্যের দিকে সুতোয় বোনা কালনাগিনী যখন ফোঁস করে ওঠে, তাকে মিথ্যে বলে কার সাধ্যি? চারপাশে রং বেরঙের কাপড় ঝোলানো, খেলা দেখানোর জায়গাটায় পুতুলগুলো যখন নড়ে চড়ে বেড়ায়, গল্প বলে সে এক ভারি জমজমাট ব্যাপার।
    এবারে ওদের দলের সাথে জুটেছে ভিন গাঁয়ের এক অউরত, রূপান।
    রূপান আর তার মেয়ে। পশ্চিমের শুখার এই দেশ ছেড়ে ওরা চলেছে দখিন পুবে, নবাবের দেশে। সেখানে থাকে রূপান এর বড়ি বহিন। তার জমি জিরেত আছে, অবস্থা ভালো, তার কাছেই চলেছে রূপান। না গিয়ে উপায় নেই তাই বেরিয়ে পড়েছে ওরা। পথে দেখা হয়েছে এই পুতুলনাচের দলের সাথে। ওরাও যাবে ঐদিকেই, পুতুলনাচ দেখাতে দেখাতে, কিস্সা  শোনাতে শোনাতে।
    পুতুলদলের পাণ্ডা রূপান  কে বলে, ‘ছোট মেয়ে নিয়ে কোথায় যাস রে রূপান? কেনই বা যাস?’
    রূপান বলে ‘মজবুরি’।
    এই ‘মজবুরি’ তো চিরকাল নিজেই একটা কিস্সা । রূপান এর মরদ যে ওকে মেয়ে সুদ্ধু ফেলে রেখে চলে গেছে তার কিস্সা ।
    জমি নেই ওদের। বড়ি হাভেলিতে ঘর সাফাই এর কাজে লেগেছিল সে। ওর জওয়ানি বাজি রাখতে হবে তা রূপান জানতোই। কিন্তু সেই অন্ধকার যখন কালো কালো হাত বের করে মেয়েটাকেও গিলতে এলো, রূপান তখন মেয়েটা সেই পাঁকে নামতে দিতে পারেনি। এও এক কিস্সাই বটে।
    ঘরে থাকলেও বিপদ কম নেই। তাই ওরা পথেই নেমে পড়েছে। এখন পথ ওদের কোথায় নিয়ে যায় কে জানে।
    পথে চলতে চলতেই দেখা মিলেছে এই পুতুলদলের। এরা তবে লোক ভালো। মজবুরির ফায়দা তোলে না। 
    পাণ্ডা বলে, ‘‘চল তবে আমাদের সাথে। বুঝলি রূপান, ইনসান ও তো এক কাঠপুতলীই রে। এই আজব দুনিয়ায় ওয়ক্ত কেবল ভালো খারাপের সুতোয় টান দিয়ে তাকে নাচায়। শুধু সেই সুতো চোখে দেখা যায় না, এই যা।’
    রূপান আর ওর মেয়ে ভিড়ে যায় এদের দলে। ওদের নিজেদের তাঁবু নেই। ওদের ঠাই হয়েছে বাক্স-প্যাঁটরা, রং, কাপড়, পুতুলে ভরা জিনিসের তাঁবুটায়, দলের আরো দুএকটা মেয়ের সাথে।তবু একটা আশ্রয় তো বটে। রূপান পুতুলগুলোকে ঝেড়েমুছে, সাজিয়ে গুজিয়ে রাখে। পুতুলের রংবেরঙের কাপড়গুলো যত্ন করে গুছোয়। 
    পুতুল নাচের দল কত নগর, জনপদ, জল জঙ্গল পেরিয়ে চলে। চলতে চলতে আজ ভরা পূর্ণিমায় তাঁবু ফেলেছে সাবরি নদীর ধারে।
    মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়লে রূপান রোজই তাঁবুর বাইরে এসে বসে। আজও বসে আছে। আকাশে থালার মত চাঁদ। নদীর জলে চাঁদের ছবি কেঁপে কেঁপে ভয়ে মরছে, যেন এক্ষুনি ডুবে যাবে। এই নদীর ধারের মাটি বালুমেশানো, আলগা, ঝুরো ঝুরো। সেই মাটিতেও চাঁদের আলো পড়তে মনে হচ্ছে সে আলো বুঝি দুহাত জড়ো করে তুলে নিয়ে নাকের কাছে আনলে সুবাস পাওয়া যাবে। চাঁদের আলো রূপানের বড় ভালো লাগে। তার এই রুক্ষ জীবনে চাঁদের আলোর মায়াটুকু সে যেন সারা গায়ে মেখে নিতে চায়।
    পুতুলনাচের দলের একটা মেয়ে রূপানকে বলে, ‘অত চাঁদের সাথে পিরিত কিসের তোর? চাঁদের নেশা বড় খারাপ, পাগল মনিষ্যিকে চাঁদে টেনে নিয়ে যায় শুনিসনি বুঝি?’
    রূপান হাসে। চাঁদের জোছনায় তার মনটা যেমন ভালো হয়ে যায়, তেমন আর কিছুতে হয়না মোটে।
    আজকের নাচনাটকে মেয়েপুতুলটার নাচ ছিলনা। রূপান তাই মেয়েপুতলাটাকে ভালো করে সাজিয়ে নিয়ে বসে আছে চাঁদের আলোয়। এই মেয়েপুতলাটাকে বড় ভালো লাগে। চাঁদের আলোয় পুতুলটা যেন ওর সাথে গল্প করে, কথা বলে।
    কোকিলা বলে, ‘যাহ্‌ কাঠের পুতুল বুঝি আবার গপ্প করতে পারে?’
    আথি বলে, ‘বা রে, তোর সাথে যদি পারে রূপানের সাথে পারবে না কেন?’
    কোকিলা ফিক করে একটু হাসে।
    আথি বলে, ‘গপ্পোটা শুনবি কি বল?’
    কোকিলা আথিকে জড়িয়ে ধরে চুমো খায়।
    আথি আবার বলতে শুরু করে। মেয়েপুতলাটা কে রূপান বলে, ‘তোরও বুঝি আমার মতো এই চাঁদের আলো ভালো লাগে রে কাঠপুতলী? 
    কাঠপুতলী  বলে তা ভালো লাগে বটে, তবে ঐ গান, আর কিস্সা র তালে তালে নাচ, ঐটে আরও ভালো লাগে। তারপর কেমন উদাস হয়ে পুতলী বলে, ‘আজ তবে নাচের আসরে আমায় নিয়ে গেলনা ওরা। আজকের কিস্সাটা আমার শোনাই হল না।’
    কাঠপুতলী আবার বলে, ‘ও রূপান ওদের কিস্সা টা বল না আমায়’।
    রূপান বলে, ‘বলব, দাঁড়া দিকি, তার আগে তোর একটা নাম দিই। কাঠপুতলী কি একটা নাম হল? সব কাঠের পুতুলই তো কাঠপুতলী। রূপান মাথার চুলের কাঁটা দিয়ে ঘষে ঘষে কাঠপুতুলের ঘাড়ে নাম লিখতে থাকে। 
    রুপান বলে, ভালোই হয়েছে বুঝলি, আজকের গপ্পোটা ভারি দুঃখের। এমন দুঃখের গপ্পে তোর না নাচলেই ভালো। 
    কাঠপুতলীর ঘাড়টা বেঁকানো। ওর ঘাড়ে নাম লিখছে রূপান। কাঠপুতলি ঘাড় বেঁকিয়েই বললে, -“সে আর এমন নতুন কি বললি, সব প্রেমের গপ্পোই ত দুঃখের। দুঃখ না হলে কি আর ভালোবাসা গপ্পো হয়ে ওঠে? যে ভালোবাসা দুঃখের নদী পেরিয়ে আসে সেই তো গপ্পের দুনিয়ার খোঁজ পায় রে। তুই বল না আমায় গপ্পোটা।”
    -“সাহিবানের কিসসাটা কিন্তু শুধু দুঃখের নয়। এ কাহানি একটা জ্বালার, যে জ্বালার শেষ নেই জীবনে এমনকি হয়তো মরণেও। ভালবাসা যেন সাহিবানের ‘রূহ’তে যেন বিষ ঢেলে দিয়ে গেল। সেই বিষের আছরে তার দেহটা হয়তো মরে গেল, কিন্তু রূহটা গেঁথে গেল অন্তহীন অবিশ্বাসের কাঁটায়।” 
    রূপান বিষাদ মাখা গলায় সাহিবানের প্রেমকাহানি বলতে থাকে।
    “ কিসসার শুরুটা ছিল আর সব কটা ভালো বা মন্দ পিরিতির কাহানীর মতোই। দুরন্ত সুন্দরী সাহিবান আর সাজোয়ান তীরন্দাজ মির্জার মহব্বতে খুশি হয় নি কারোরই খানদান। দুজনেরই কাবিলার লোক মার মার করে উঠেছিল ওদের পেয়ার ঠেকাতে। যে কোন ভালো বা মন্দ পেয়ারের কিসসার মতোই সাহিবানের নিকাহ ঠিক হয়ে গিয়েছিল ওদের কাবিলার অন্য একজনের সঙ্গে, আর মির্জার কানে সাহিবানের নামে বিষ ঢেলেছিল ওর খানদানের তাবৎ লোক।
    কাঠপুতলি বলে, “ আচ্ছা তুই যে বারবার ভালো বা মন্দ প্যায়ারের কিসসা বলছিস রূপান, মন্দ পেয়ারটা কি? সব ভালবাসাই তো ভালো রে! 
    রূপান বলে, “কিন্তু আমি যে আমার মরদ কে এতো ভালবাসলাম, সে তবে কেন আমায় ছেড়ে চলে গেল বল? তাই আমি বলি যে পেয়ার এ প্রেমীরা মরলেও পেয়ার জিন্দা থাকে সেইটা হল আচ্ছা পেয়ার, আর যে পেয়ার কিরদাররা জিন্দা রইলো, কিন্তু মহব্বত মরে গেল সেইটে হল মন্দ। তবে আমি আর কতটুকুই বা জানি বল? আমি একটা গাঁয়ের আনপড় মেয়েমানুষ। কিন্তু সাহিবান তা ছিল না। সাহিবান ছিলো পড়ালিখা জানা চৌকশ মেয়ে। কেমন যেন বুদ্ধি করে সে মির্জাকে খবর পাঠিয়ে ছিল তাকে এসে যেতে। আর মির্জাও তো মোটেই ওর বাড়ির লোকের কথায় কান দেয়নি। চুপি চুপি এসে সাহিবানকে নিয়ে দে দৌড়, দে দৌড়……
    রূপানের হাতের মধ্যে খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে পুতুলটা, -“তবে তো এটা ভালো ভালোবাসার গল্প রে!
    -“ তবে সাহিবানের বাপ দাদারা কি আর বসে থাকবে? তারাও রে রে করে ছুটে এসেছে।’’ রূপান বলতে থাকে, - “তাদের তো ইজ্জতের সওয়াল, মির্জা ’র শেষ দেখে তারা ছাড়বে। জানিস তো সব জায়গার পুরুষমানুষ জমিন, ফসল, রূপেয়া সব নিজের আওতায় রাখতে পারে। কোন কাবিলার মেয়েমানুষেরই ক্ষমতা নেই তার থেকে কিছুটা কাউকে দেয়। শুধু ইজ্জতটা তারা মেয়েমানুষের গায়ে এনে চাদরের মত জড়িয়ে দেয়। মেয়েমানুষে একটু নড়লেই ব্যস সেই ইজ্জত এর চাদর পিছলে যাবে, লুট হয়ে যাবে। আর সেই ইজ্জত ফিরিয়ে আনতে গোটা সমাজ রে রে করে ঝাঁপিয়ে পড়বে। তখন নিজেদের মেয়েমানুষটার জানেরও দাম নেই, আর ইচ্ছের তো দাম নেইই।  ”
    কাঠ পুতলী বলে,-“ তারপর?”
    -“ তারপর কত না নদী, পথ, মরু পার হয়ে সাহিবান আর মির্জা’র ঘোড়া দৌড়ে চলেছে, পিছনে ধেয়ে আসছে সাহিবানের বাড়ির লোক। একসময় মিরজা’র পা আর চলেনা, চোখ জুড়িয়ে আসে। সাহিবান বলে, ‘সময় নেই, ওরা ধরতে পারলেই বিপদ।’ মিরজা তো সেয়ানা ধনুর্ধর। সে বলে, ‘ধরতে পারলেই বা কি? তীরের ফলায় সবকটার নাম লেখা আছে।’ সাহিবানের কোলে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে নিদ্রা গেল সে। দূরে শোনা যায়, সাহিবানের ভাই দাদাদের ঘোড়া টকা টক টকা টক। সাহিবানের মনে পড়ে যায় ছোট ভাইটা গরম মোটে সইতে পারে না। সাহিবান কুয়ো থেকে ঠাণ্ডা জল তুলে ভাইটার মুখে জল ঢেলে দেয়। সেও আঁজলা ভরে জল খেতে থাকে… হঠাৎ শিউরে ওঠে সাহিবান, ও যেন দেখতে পায় মির্জার তীরের আঘাতে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গেছে ভাইটার গলা। রক্ত বুঝি ছিটকে এসে লেগেছে সাহিবানের হাতে। 
    অনেক ভাবে সাহিবান, ভাবে আসুক না ওরা, সাহিবান ভাইদাদাদের কাছে মির্জার প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে নেবে। তাদের কোলে পিঠেই তো সে বড় হয়েছে। ওর জন্যেও তো বুক ভরা ভালোবাসা রয়েছে ওদের কাছেও। 
    কিন্তু মির্জা যদি আগেই ভয় পেয়ে তীর চালিয়ে দেয়? তবে? সন্তর্পণে সাহিবান তীরগুলো সরিয়ে রাখে মির্জার হাতের নাগালের বাইরে।  
    একসময় ঘোড়সওয়াররা এসে পড়ে। ওরা তখন আর সাহিবানের ভাই বা দাদা ছিল না ওরা তখন ইজ্জতের রাখয়ালা। সামনে ওরা  দেখেছিল ডাকাত মির্জা আর একটা ইজ্জত এর পোঁটলা। সাহিবানের কথা শুনবে ওরা? 
    দূর থেকেই ওরা তীর চালিয়েছে মির্জাকে লক্ষ্য করে। আর মির্জা? তার তীরের লক্ষ্যে মুহূর্তে ধরাশায়ী করতে পারে ঐ শত্রুপক্ষকে। কিন্তু সে হতভাগা হাতড়ে মরে, সাহিবান তো সেই তীর রেখে এসেছে তার নাগালের বাইরে। 
    মির্জার বুকে, গলায় তীর এসে বেঁধে, রক্ত এসে ভাসিয়ে দেয় সাহিবানের শরীর। শত্রুপক্ষ হাসে হয়ত হা হা……
    আর মির্জা? শেষ নিঃশ্বাসের সঙ্গে সেই অবিশ্বাসিনীর দিকে তাকিয়ে কি বললে কেউ কি জানে? বললে কি, কেন করলি এমন? কেন, কেন?
    সাহিবানের কি হল কে জানে? নাটকে দেখায় বটে সাহিবানও তীরের ফলায় মরেছিল ওখানে।
    তাইই হবে। সাহিবান কে মারতে ওদের তো আর তীরধ্নুকের দরকার ছিলনা। বেচারা মির্জার শেষ চাউনিটুকু কি কম তীক্ষ্ণ ছিল? তাইতেই কি হতভাগি মরে যায় নি?”
    কাঠ পুতলির গলা ধরে এসেছে, “ ইসস খুবই তো মন্দ গল্প রে!”
    -“গল্প মন্দ নয়। পিরিতিই মন্দ, এখেনে যে প্রেমীও মরেছে, পিরিত ও মরেছে।” গল্প বলতে বলতে রূপানের কাঠপুতুলের গায়ে নাম লেখা প্রায় শেষ।
    এমনি সময়ে একটা মেয়ে এসে রূপান কে ডাকে, রূপানের মেয়েটাকে তাঁবুর মধ্যে অনেকক্ষণ সে দেখেনি।
    চাঁদের আলো মরে এসেছে প্রায়। শুধু রূপান নয়, দলের সবাই খুঁজতে থাকে মেয়েটাকে। দিনের সুরজ মুখ দেখানোর আগেই দলের একজন দেখতে পেল, তাঁবু থেকে কিছুটা দূরে নদীর আঘাটায় ঘাড় গুঁজে মরে পড়ে আছে মেয়েটা।
    ঐখানে কেন যে গেছিল?
    মা’র খোঁজে নাকি চাঁদ দেখতে কে জানে !!
    শেষ রাত্তিরে চাঁদ নিজেও ডুবেছে, তার সাথে ওকেও ডেকে নিয়ে গেছে।
    আপঘাতে মরেছে। পরদিন দেহটা নদীর চড়ায় পুঁতে দিলে পুতুলনাচের দলের লোকজন। তার ওপর বুনো ফুল দিয়ে সাজিয়ে দিল কেউ। কেউ একটু চোখের জলও ফেলল। শুধু রূপানবাঈ যেন পাথর। তার চোখে জল নেই। নীরব শুকনো একটা হাহাকার বুকে নিয়ে রূপান শুধু সারা রাতভর জেগে থাকে। কালো কৃষ্ণবর্ণ রাতগুলোয় তার দৃষ্টি ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসে, কিন্তু যে রাতে আকাশে চাঁদ ওঠে, খরখরে চোখে রূপান সেই মায়াভরা কুহকিনীর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলতে থাকে… কেন নিলি, কেন নিলি, কেন নিলি ……
    ‘একি রে কোকিলা তুই কাঁদছিস কেন?’
    আথি কে জড়িয়ে ধরে সত্যি কোকিলা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। রূপানের দুঃখগুলো কোকিলার চোখ দিয়ে জল হয়ে গড়িয়ে পড়ছে বুঝি।
    আথি বলে , ‘এমনি কত দুঃখ সুখের সুতো দিয়েই জীবনটা বোনা রে। কখনো দুঃখের কালো সুতো নকসা কাটে, কখনো আবার হলদে আশার ফুলকারি খোলতাই হয়। সে যাই হোক, পুতুলনাচের দল ঐখানে কদিন রইল। আশেপাশের গঞ্জ, নগরগুলোয় নাচ দেখিয়ে বেড়ালো। তারপর আবার ওদের চলার পালা। এবার পথেই পড়বে রূপানের দিদির ঘর।
    দেখতে দেখতে, চলতে চলতে রূপান একসময় দিদির বাড়ি পৌঁছেই গেল…’।
    এই যাহ্‌। 
    কোকিলা তবে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়েই পড়েছে। চোখের কলে একবিন্দু জল টলটল করছে। বাইরে থেকে চাঁদের আলো এসে পড়ে কোকিলার ঢলোঢলো মুখটা কি মায়া মাখানোই না লাগছে। আথিও কোকিলার বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ে।
     
    ‘ওহ মাঈ, আর একটু শুই না।’
    সকালবেলা কোকিলার মা, মেয়ের ঘুম ভাঙাতে এসেছে। মা না ডাকলে, মেয়ের ঘুম ভাঙ্গেনা মোটে।
    ঘুমজড়ানো গলায় কোকিলা বলে, ‘কাল যে অনেক রাত অব্দি আথি গল্প বলেছে মাঈ । আর একটু শুই…
    কোকিলার মা’র পা ভয়ে হঠাৎ যেন মাটিতে বসে যায়। 
    “আথি”!! এই নামটা তো কোকিলার জানার কথা নয়।
    রূপান তার দিদির বাড়ি এসেছিলো বটে। পুতুলনাচের দলের লোকেরাই ওকে দিয়ে গিয়েছিল।
    তবে এ সেই ছোট্টবেলায় ছেড়ে আসা ছটফটে বোন রূপান নয়।
    এই বদলে যাওয়া, ঝিম ধরা রূপানকে তার দিদি বুঝতে পারে না। কখনো চুপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে থাকে, কখনো আবার একটা কাঠের পুতুল কে জড়িয়ে ধরে বিড়বিড় করে কিসব বলে। আকাশে চাঁদ উঠলে অস্থিরতাটা একটু যেন বেড়ে যায় ছোট বহিনটার। এটাই শেষ নয়, আর কদিনের মধ্যেই দিদির অভিজ্ঞ চোখে রূপানের দেহের পরিবর্তন ধরা পড়েছিল। 
    রূপানের সারা অবয়ব জুড়ে কারো আসার বার্তা। চাঁদ তবে শুধু কেড়েই নেয়নি, ফিরতও দিয়েছে কিছু।
    কিন্তু রূপান কিছুই বলেনি। কে এই সন্তানের বাবা? ওর মরদ? নাকি পুতুলনাচের দলের কেউ? ভালবাসার সন্তান নাকি সেই অন্ধকার বড়ি হাভেলির কারোর লালসার চিহ্ন? চুপ করে যাওয়া রূপান দিদির কোন প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।
    রূপানের কোল জুড়ে এসেছিল ফুটফুটে একটি মেয়ে। 
    রূপান কিন্তু বেঁচে থাকার লড়াই এর হালটা আগে থেকেই ছেড়ে দিয়ে বসে আছে। তাই সন্তান বাঁচলেও মাকে বাঁচানো যায় নি। 
    কিন্তু এই মেয়েটির জন্ম পরিচয় কি? বাবার কি পরিচয় ? দিদিকে এইসব সংকটে ফেলে রেখে রূপান পাড়ি দিয়েছিল চাঁদের দেশে। রূপানের দিদির মনের  বিবেক আর বোধের মাপের কাঁটার লড়াইতে একসময় উঁকি দেয় বহু দিনের একটি চোরা ইচ্ছে। এই ছোট্ট মেয়েটা যেন রূপানের দিদির কোল আলো করতেই এসেছে। হায়দারগড়ের বড় জায়গীরদার তার স্বামী। জমি জিরেত, লোকলস্কর, সোনাদানা তাদের কম নেই, অভাব শুধু একটি সন্তানের। 
    সেই থেকে কোকিলা তার নিজেরই সন্তান। তার বড় আদরের লেড়কি।
    সেই পুতুলনাচের দলের লোকেরা রূপান কে যখন দিয়ে যায়, ওরা এই কাঠপুতলীটাও দিয়ে গেছিলো। দিদি শুনেছে মাঝে মাঝে রূপান ওকে ‘আথি’ বলে ডাকতোও। 
    এত বছর পর কোকিলা পুতুলটা খুঁজে পেয়ে খেলছিল, কিন্তু ঐ নাম তো কোকিলার জানার কথা নয়। অজানা ভয়ে শিউরে ওঠে কোকিলার মাসি।
    অতিপ্রাকৃত কিছু নয়। কাল রাতে খেলতে খেলতে পুতুলটার মাথার নিচের দিকে একটা আঁচড়ের দাগ দেখেছিল কোকিলা। চাঁদের তেরছা আলোয় পড়া যাচ্ছিল ওখানে আঁচড় দিয়ে নাম লেখা আছে ‘আথি।’
    চাঁদ যে কখন কাকে কি দিয়ে যায়, কার থেকে কি নিয়ে যায় বোঝা দায়!!!
     

    (পুতুলনাচের দলের অভিনীত যে গল্পগুলির কথা এই লেখায় রয়েছে সেগুলি মৌলিক নয়। দেশের পশ্চিম থেকে মধ্যপ্রান্তে এইসব লোককথাগুলি শত শত বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে ঘোরে। লেখিকার হৃদয় সেইসব কালজয়ী গল্পের অজানা লেখকদের প্রতি আভূমি প্রণত রইল।
    চিত্র ঋণ :আন্তর্জাল )
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ০৭ জুন ২০২২ | ১৬৩১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:2107:955d:4c73:***:*** | ০৭ জুন ২০২২ ২০:০৭508579
  • ভালো লাগলো। দুঃখী গল্প।
  • Subhabani Biswas | 42.***.*** | ০৮ জুন ২০২২ ১৪:৪১508617
  • ভালো লাগলো 
  • Ranjan Roy | ০৯ জুন ২০২২ ০৬:৩৬508645
  • খুব ভালো।  আরো চাই। 
  • &/ | 151.14.***.*** | ১১ জুন ২০২২ ০১:৩৮508745
  • ভালো লাগল , খুব ভালো লাগল।
  • &/ | 151.14.***.*** | ১৮ জুন ২০২২ ০১:১৭509114
  • আরও লিখবেন এমন। যতবার পড়ি ততবারই ভালো লাগে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন