লেখকের প্রয়াণের প্রায় দু-দশক পর প্রকাশিত হয়েছে পরমপুরুষ বিবেকানন্দ। তারকনাথ ঘোষ এ পাণ্ডুলিপি যে প্রকাশকের কাছে দিয়েছিলেন, তা আর উদ্ধার করা যায়নি। লেখকের খাতা-পত্র থেকে বিকল্প প্রতিলিপি অনুসারে এই বই প্রকাশ করা হয়েছে বলে ভূমিকায় জানিয়েছেন লেখককন্যা। তারকনাথ ঘোষের যে মুখবন্ধটি বইয়ের গোড়ায় রয়েছে, তাতে তিনি শুরুতেই স্বীকার করে নিয়েছেন যে এটি কোনো গবেষণাগ্রন্থ নয়। কোনো বিশ্লেষণও এতে নেই। বিবেকানন্দর ব্যক্তিসত্তাকে স্পর্শ করার আকাঙ্ক্ষা থেকে এই বইয়ের অবতারণা, তাও বলেছেন তিনি। তাঁর অভীষ্ট পাঠক সাধারণকে বিবেকানন্দ সম্পর্কে আগ্রহী করে তোলা।
বইটিতে মোট বারোটি অধ্যায় রয়েছে। তবে ছাপার ভুলের কারণে সূচিপত্রে তেরোটি অধ্যায়ের হিসেব দেখা গেলেও, ২৩৯ পৃ্ষ্ঠায় শুরু দশম অধ্যায় সূচিপত্রে অনুপস্থিত। অধ্যায়গুলির নাম উল্লেখ বইটি সম্পর্কে প্রাথমিক একটা ধারণা দিতে পারে।
প্রথম অধ্যায় - পরিব্রজন: প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় অধ্যায় - ভারতপথিক
তৃতীয় অধ্যায় - আবির্ভাব: অভিযাত্রা
চতুর্থ অধ্যায় - আঘাত-সংঘাত: উত্তরণ
পঞ্চম অধ্যায় - বিশ্ব আচার্য: উন্মেষ ও প্রকাশ
ষষ্ঠ অধ্যায় - ইংল্যান্ডে
সপ্তম অধ্যায় - আমেরিকা: শেষ চারমাস
অষ্টম অধ্যায় - পুনশ্চ ইংল্যান্ড: প্রত্যাবর্তন
নবম অধ্যায় - সংবর্ধন: সংগ্রাম
দশম অধ্যায় - পরিক্রমা: হিমালয়
একাদশ অধ্যায় - পাশ্চাত্য: উত্তরপর্ব
দ্বাদশ অধ্যায় - সংবৃতি
ত্রয়োদশ অধ্যায় - অন্তরঙ্গ কথা: উপসংস্কৃতি
গ্রন্থলেখক ভক্তিরসে জারিত মানুষ হলেও বোধলোপী নন। তিনি বিনয় সহকারে নিজেকে ভূমিকায় উপস্থাপন করলেও, এ গ্রন্থের বিন্যাসে যে মুন্সিয়ানার ছাপ রেখেছেন তা বিবেকানন্দ চর্চায় জরুরি ও কাঙ্ক্ষিত সংযোজন।
করোনাভাইরাস অতিমারি আর লকডাউন, এ এসেছে হাত ধরাধরি করে। মধ্যবিত্ত, উচ্চমধ্যবিত্ত মানুষের কাছে এ অতিমারি এনে দিয়েছিল সময়, যা কাটাবার উপায় ছিল অজানা। ফলে অনেকেই বিভিন্ন উপায় খুঁজে নিয়েছেন। তার অন্যতম নিজেকে খোঁজা, নানাবিধ মাধ্যমে। লেখালিখি তার অন্যতম।
এবং স্বভাবতই এ ধরনের লেখালিখিতে বড়ো জায়গা জুড়ে থেকেছে করোনাই।
এক হলেও হতে পারে করোনা-আক্রান্তের দিনলিপি এমনই এক কেতাব।
বইয়ের গোড়ায় কৈফিয়ত শীর্ষক কয়েক লাইনে লেখক শৈবাল দত্ত বলেই দিয়েছেন “ঘরবন্দী জীবনে যখন অসহায়তা কাটানোর আর কোনোই উপায় ছিল না, তখন কব্জির খিল খুলতে লেখাটা ধরি।”
২০ মার্চ থেকে ৬ জুন পর্যন্ত লেখা দিনলিপির সমাহার এই বই। মোট ২০টি এন্ট্রি। এতে লেখক নিজের মনের নানাবিধ ভাবের কথা লিখেছেন। অধিকাংশই সমাজসচেতন ভাব। ১ মে-র এন্ট্রিতে একটি স্বলিখিত কবিতাও রয়েছে। আবার ৮ মে শীর্ষক এন্ট্রিতে জানা যাচ্ছে তিনি লকডাউনেই শিখেছেন থানাটোফোবিয়া নামের গ্রিক শব্দ। আর-একদিনের এন্ট্রিতে তিনি জনৈক ব্যক্তির সঙ্গে সংলাপে মত ব্যক্ত করছেন, ঢোঁড়াইচরিত মানস উপন্যাসের নোবেল পাওয়া উচিত ছিল। আবার শুরুর দিকে নেতানিয়াহুর কাণ্ডকারখানাও তাঁকে তাড়িত করে, যার জেরে সে তথ্য তিনি ডায়েরিতে লিখে রাখেন।
এর আগে আরও সাতটি বই লিখেছেন শৈবাল দত্ত। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের জনগণনা দফতরে কর্মরত ছিলেন।