ইলিশ ব্যাপারটা যে ওভারহাইপড, এরকম কথা এক সময়ে শোনা যেত না। সে ছিল স্যাক্রিলেজতুল্য। যেমন চিতল মাছের মুইঠ্যা। বাঙাল বাড়িতে জন্মালে এবং তেমন প্রতিবেশে বেড়ে ওঠা হলে, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেই জেনে যেতে হয় যে ইলিশ এক মহামূল্যবান, দুর্লভ এবং দেবভোগ্য। নানারকম অপর স্বর উঠে আসার কালে জানা যাচ্ছে, এ সত্য, অন্য অনেক সত্যের মতোই খণ্ড এবং অবস্থাননির্ভর।
রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ‘তোমার ইলিশ, আমার ইলিশ…’ নামের অতিক্ষুদ্রকায় পুস্তকে অবশ্য তেমন কোনো অপর স্বর নেই। লেখক ইলিশপ্রেমী, এবং তাকেই একমাত্র সত্য বলে ধরে নিয়েছেন। বিভিন্ন সময়কালে আনন্দবাজার পত্রিকায় বেরোনো তিনটি লেখার সমাহার এই বই, যাকে ইলিশ সম্পর্কিত প্যামফ্লেট বললেও চলে। শুরুর পুস্তকনাম নিবন্ধটিতে তিনি নারীর জন্য আকুলিবিকুলি করা কিশোরপ্রতিম উচ্ছ্বাসে ইলিশ বর্ণনা করেছেন। দ্বিতীয় নিবন্ধ ‘ইন্দ্রিয়লিখিত শব্দমালা’। এ নিবন্ধে ইলিশ ধরার সময় ও কাল, পরিবেশের সংকটে ইলিশের স্বাদবিপর্যয়ের কথা উল্লিখিত। বাড়ির গিন্নিরা এখন ইলিশ রান্নার সময় পান না বলে খেদোক্তিও রয়েছে এতে। তৃতীয় তথা শেষ নিবন্ধ ‘ইলিশের নাম সত্যবতী’তে লেখক কল্পনার লাগামকে অনিঃশেষ ছুট দিয়ে মহাভারতের সত্যবতীকে ইলিশ হিসেবে কল্পনা করেছেন।
এই ইলিশ সম্পর্কিত পুস্তিকাটির অলংকরণ করেছে হিরণ মিত্র। নিঃসন্দেহে তাঁর চিত্রায়ণ বইটির অহংকার বৃদ্ধি করে।
কালোত্তীর্ণ হবার বাসনা থেকেই লেখকের জন্ম, এমন একটা কথা চালু রয়েছে, এবং তা জনপ্রিয়ও বটে। তবে সব লেখা, কালের গহ্বরে বা কালো ট্রাংকে ফেলে রাখা যায় না, তা বিলাসিতার শামিল এবং গোটা লেখার প্রকল্পকেই নস্যাৎ করে দিতে পারে। ফলে কোনো কোনো সময়ে স্বয়ং লেখককে উদ্যোগী হতে হয় দ্রুতপ্রকাশে, তার মধ্যে দ্রুততাজনিত কিছু সমস্যা, বা খামতি থেকে যেতে পারে জেনেও।
‘করোনা সংকট লকডাউন ও অনুত্তরিত’ কিছু প্রশ্ন এরকমই এক বই। করোনা ভাইরাস ও তজ্জনিত বিশ্ব জোড়া আতঙ্ক পরিবেশ ও বিধিনিষেধ চালু যে আসলে একটি উপরতলার চক্রান্ত মাত্র, এমন একটি বয়ান খুব না হলেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এ সম্পর্কিত বিভিন্ন লেখালিখি সামাজিক মাধ্যমে ও বেশ কিছু ওয়েব পোর্টালে প্রচারিতও হয়েছে। সেসব লেখা কিছু ক্ষেত্রে দু-মলাটের মধ্যে রেখে প্রকাশ পেয়েছে। এই বই সেই তালিকাতেই একটি কৌতূহলোদ্দীপক সংযোজন।
করোনা মহামারিকে নেহাৎ এক অতিমারিমাত্র বলে মানতে লেখক প্রেমভাস্কর নারাজ। তিনি বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মধ্যেকার ফাঁকফোকর ও অন্যান্য কিছু সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয় সামনে রেখে এই অতিমারির ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করতে চেয়েছেন। প্রতিপাদ্য বিষয়টি দ্রুত প্রকাশ করা যে জরুরি এবং তার জন্য যে কিছু তাড়াহুড়ো হয়েছে সে কথা বইয়ের শুরুতেই বলে নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় সংস্করণে কথাশেষ বলে একটি পর্যায় যুক্ত করার অভিপ্রায়ও ব্যক্ত করেছেন লেখক। সার্বিক ভাবে, এ বইতে উত্থাপিত প্রশ্নগুলি অবশ্যই বিশদে চর্চিত হওয়া দরকার।
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় ও ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের লিখিত শুভেচ্ছাবার্তা মুদ্রিত হয়েছে নীলাঞ্জন ভৌমিকের ‘গল্প’ সংকলনে। সংকলনের নাম স্ন্যাপ ড্রাগনের ডানা। লেখকের ভূমিকায় বলা হয়েছে, এটি বেডসাইড রিডিং ল্যাম্প, ব্ল্যাক কফি আর ডার্ক থ্রিলার স্টোরির একটা ইনফিউশন। বাংলা ভাষায় এই ফ্লেভারের গল্প কম। প্রকাশক জানিয়েছেন, এ বই কাব্য নয়, নিছক গল্পসংকলন নয়, কেবলমাত্র রোমহর্ষক থ্রিলারও নয়, তাহলে! ডার্ক ফিচার! হ্যাঁ, সেটা বলা যেতে পারে। ব্লার্ব থেকে জানা যাচ্ছে, লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ঐতিহাসিক শ্রুতিনাটক, স্মৃতিমেদুর রম্যকাব্য। এ ছাড়া একটি গল্পসংকলনও সম্পাদনা করেছেন তিনি। মোট ছ-টি গল্প রয়েছে বইটিতে। শুরুর নামগল্পে করোনা অতিমারির কথা, নামোল্লেখ ব্যাতিরেকে। যার শুরু এক আতঙ্ক থেকে, আতঙ্কের স্বপ্ন থেকে। এক একটি গল্প এক একরকম স্বাদের।
কোনোরকম কর্পোরেট ফান্ডিং ছাড়া সম্পূর্ণরূপে জনতার শ্রম ও অর্থে পরিচালিত এই নন-প্রফিট এবং স্বাধীন উদ্যোগটিকে বাঁচিয়ে রাখতে
গুরুচণ্ডা৯-র গ্রাহক হোন