"On her fifteenth birthday, you taught her
how to tie her hair like rope
and smoke it over burning frankincense.
You made her gargle rosewater
and while she coughed, said
Macaanto, girls shouldn't smell
of lonely or empty.
You’re her mother.
Why did you not warn her?
That she will not be loved
if she is covered in continents,
if her teeth are small colonies,
if her stomach is an island,
if her thighs are borders?"
-The Ugly Daughter,Warsan Shire
ওয়ার্সন শায়ার নাইরোবির মেয়ে, সোমালি পরিবারে বেড়ে উঠেছেন এবং এখন ইউকেতে থেকেই লেখালেখি করেন। একাধিক পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে একটি ওয়ার্কশপ চালান যেখানে ব্যক্তিগত ট্রমা থেকে উদ্ধার পাওয়ার কাজে কবিতাকে ব্যবহার করার চেষ্টা হয়। তাঁর কবিতা রূপ -রূপক এসবের বাইরে বেরিয়ে একটা আলাদা জায়গা খুঁজে নেয়। কতটা পারে তা সময় বলবে, চেষ্টা জারি আছে।
কবিতার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে যখন তর্কের ধোঁয়া ওঠে, শায়ার আমাদের ভাবান। একজন কবির মধ্যে কিরকম দম থাকলে, সে তিরিশে পা রেখেই "টিচিং মাই মাদার হাউ টু গিভ বার্থ " -এর মতো একখানা বই লিখে ফেলতে পারে, আমরা জানি না। তীব্র সেন্সুয়ালিটি এবং যন্ত্রণার আখ্যান, যা একইসঙ্গে। একটা ব্যাপার লক্ষ্য করি, জানিনা এ নিয়ে নিশ্চয় লেখালেখি হয়েছে, আমাদের সময়টা যত ঠান্ডা যত অর্থহীন যত মৃত্যুময় হয়ে চলেছে, একদল কবি তত আঁকড়ে ধরছেন অনুভূতিপ্রবণতাকে, কিন্তু একইসঙ্গে, এটা ঠিক আগের যুগের হৃদয় ভেঙে ছড়িয়ে দেওয়ার গল্প আর নেই। রিটা ডাভের কবিতা পড়েছিলুম নেহাত -ই "মহিলা কবিদের লেখায় রূপকের ব্যবহার" শীর্ষক একটি আলোচনাচক্রের সূত্রে। রিটা কিন্তু আগের যুগের কবি, মানে এই আমাদের সমসাময়িক ওয়ার্সন বা ধরুন এডা লিমো এঁদের চেয়ে সিনিয়র পোয়েট। রিটা যখন লেখেন -
"it's neither red/nor sweet/does'nt melt /or turn over,/break or harden/so it can't feel/ pain /yearning regret "
কবিতার নাম "হার্ট টু হার্ট", হৃদয় সম্পর্কে প্রচলিত আবেগমথিত ফ্রেজগুলোকেই তিনি নিয়েছিলেন, শব্দকে পাল্টান নি, অভিমুখ পাল্টেছেন। এই কাব্যিক উচ্চাকাঙ্খা কোথাও পথ দেখায়নি কি পরবর্তী কবিদের? পরিচিত ছবির অপরিচিত ব্যবহার বা এমনকি ব্যবহারটুকুও পরিচিত রেখে অনুমানণাকে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া যা পাঠককে ক্লিশে প্রত্যাশার বাইরে গিয়ে, ঘুম ভেঙে উঠে বসতে বাধ্য করবে? পিকআপ ট্রাকের পেছনে কুকুরের বারংবার দৌড়ের ভ্রান্তি আমরা দেখিনি কি? দেখি, কিন্তু এডা লিমো (ক্যালিফর্নিয়া )-র মতো লেখা হয়ে ওঠেনি :
"and I can still move
my living limbs into the world without too much
pain, can still marvel at how the dog runs straight
toward the pickup trucks break-necking down
the road, because she thinks she loves them,
because she’s sure, without a doubt, that the loud
roaring things will love her back, her soft small self
alive with desire to share her goddamn enthusiasm,
until I yank the leash back to save her because
I want her to survive forever. Don’t die, I say,
and we decide to walk for a bit longer"
রূপ এখানে রূপকে সীমাবদ্ধ থাকেনি। বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভালোবাসার লোভাতুর পাঠক, যে ভ্রান্তির মধ্যে ছুটে যায়, কবি তাকে ভ্রান্তিবিলাসের ভুল করতে দিতে চান না। মায়ের মমতায় লাগাম টেনে ধরেন। কবিতার নাম "দ্য লীশ"। বারংবার এভাবেই, এইসময়ের কবিরা, কবিতার গঠনকে আঘাত করছেন রূপক দিয়ে, আর রূপকের চিরাচরিত অর্থকে ভেঙে তাকে করে তুলছেন বিষয়। কখনো লিঙ্গ রাজনীতি আর প্রকৃতির অস্তিত্বের সংকট এক হয়ে যাচ্ছে শায়ারের কবিতায়। কখনো লিমো আঁকড়ে ধরছেন সিস্টারহুডকে।
এটুকু এসেই, আমাদের মনে হয় : ওহ আবার সেই আইডেন্টিটি পলিটিক্স, আর কীই বা আছে কবিতার ইদানিং ঝাঁপিতে? পুরানে জামানে কি জেইলররা ভুরু কোঁচকান! কোথায় আগের যুগের প্রতিবাদী কবিতারা?
তারাও আছে, কিন্তু ইস্তেহারের পুরোনো শর্ত মেনে নয়। এবং এই অন্যভাবে থাকার শুরু আজ নতুন করে নয়। পাঠক মনে করে দেখুন, পোল্যান্ড থেকে বেরোনো কবিরা ঠিক কিভাবে গৃহীত হতেন দশক আগের সমালোচকসমাজে? অথোরেটেরিয়ান রেজিম থেকে উঠে আসা উজ্জ্বলতম নাম জিম্বোরস্কা, তাঁর "মনোলগ অফ আ ডগ" এর মুখবন্ধ দিতে গিয়ে আমেরিকার কবিতুর্য বিলি কলিন্স বলে বসেন এই কবিতা প্রতিবাদ হয়ে ফেটে পর্বে অমুক তুসুক, যা নিয়ে কবি মহলেই বেশ উষ্মা তৈরি হয়ে গেলো যে এসব জনপ্রিয় জার্গনের আদৌ কী দরকার বাপু। জিম্বরস্কার কবিস্বীকৃতিকে কোনোরকম সন্দেহ না করেও প্রশ্ন ওঠে, কবিতা কি সত্যি কখনো অস্ত্র হয় বা হয়েছে? মানে ঠিক যেভাবে দেখাতে চায় মেরুকরণের রাজনীতি, কবিকে নিজেদের দিকে টেনে নিয়ে? নাকি তার জায়গাটা একটু আলাদা যা চিনতে না পেরে আমরা কবিতার প্রাসঙ্গিকতাকে ওই একই খোপে ঢোকাতে চাই ও বারংবার ব্যর্থ হয়ে নিরাশায় ভুগি। আদতে, সমালোচকদের মধ্যে একটা মাপকাঠি কাজ করেছে চিরকাল, যে, যথেষ্ট দেকার্তিয়ান না হলে, সেইটে আধুনিক রাজনীতির অংশ হয় না। যদিও, যাঁরা জিম্বোর্স্কা পড়েছেন, জানেন, তাঁর লেখার সুর মূলত পাস্কালিয়ান। আবার একইসঙ্গে তার আবেদন মানবিকতা নামক রাশানিলিটির কাছে। বা, আরো স্পষ্টভাবে বললে, ওঁদের সময় থেকেই এই সাদা -কালো, দেকার্তিয়ান ভার্সেস পাস্কালিয়ান এর বেঁধে দেওয়া গন্ডী ছেড়ে বেরোনোর শুরু। যার, সফল প্রয়োগ আমরা, আজ পাচ্ছি, শায়ার - লিমো - ম্যাগি এঁদের লেখায়। এই ছবিকে সাদা-কালোয় বুঝতে চেয়ে লাভ নেই। আইডেন্টিটি পলিটিক্স বলে জলচল করে রাখলেও এক পৃথিবীর ভুল। কবির পারিপার্শ্বিক এখানে পুরোদমে আছে, আছে রাজনৈতিকভাবেই ;
অথচ, এঁরা প্রত্যেকেই কবিতার ফর্ম নিয়ে সচেতন, এন্টিরাইমিং এর প্রয়োগ লোভনীয়, সর্বোপরি এঁদের কবিতা যাকে বলে "রোবাস্ট লিটারেল রিডিং" -এর উপযুক্ত। অর্থাৎ সোজা কথায়, রূপকের প্রয়োগ সম্বন্ধে দীর্ঘ অধ্যয়ন ও চর্চা ছাড়াও পাঠক এখান থেকে একটি স্পষ্ট ছবি পাবেন। এরপর, আগের থেকে যদি অধ্যয়ন থাকে বা পরবর্তীতে আগ্রহী হন, তাহলে তো বাকী দরজা খুলে যাওয়ার উপরি পাওনা রইলোই। এটাই কি তাহলে বর্তমানের ছবি?
অন্যতম অবশ্যই, একমাত্র না। মূলস্রোত না সমান্তরাল সে বিচারেও যাচ্ছি না, কারণ এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য নেহাতই কিছু ছবি সামনে রাখা। এটুকু নিশ্চিত, অমন কোনো স্থির করে দেওয়া পথে কবিতা কোনোদিন চলেনি। কবি তাঁর মাথায় যে ক্যাপসুল বহন করেন তার সঙ্গে সমসময়ের সংঘাত তো ঘটবেই, কিন্তু সংঘাতের কাব্যিক রূপটি, সাময়িকের ব্যাখ্যার সীমায় বাঁধা পড়তে বাধ্য নয়। সিনেমাটিক রিয়ালিটির মতোই পোয়েটিক রাশনালিটির ও একটি পৃথক অস্তিত্ব আছে, যাকে তার মতো করে বোঝার দরকার আছে। পাল্টে যাওয়া চিত্রের পাশাপাশি এই স্বীকারটুকু থাক।
তবে সংঘাত টা সত্যি! যে কবি ট্রমা সেন্টার চালায় সে যদি কবিতার সাহায্যে নাও চালাতো, সে আদতে কবি। যে কবির চাকরি গেলো অতিমারীতে, সেও। যাঁকে জেলবন্দি করে বিনা বিচারে রাষ্ট্রের প্রহসন চলছে, তিনিও। পোয়েটিক রাশনালিটিকে ঘটনাক্রম আক্রমণ করবে, করেছে, প্রকাশের ধরণ যুগের সঙ্গে পাল্টেছে ; মূক -বধির হয়ে যায়নি।
- নাকি বধির হয়েছে স্থান কাল বিশেষে ?
ইতিহাসের ক্যানভাসে দেখেছি একজন দ্রেফ্যুসের ন্যায়বিচার চেয়ে এমিল জোলা স্টাটাস কুও ভেঙে নেবে এসেছিলেন, তরুণ প্রুস্ত সই দিয়েছিলেন সেই চিঠিতে। শাসক নখ -দাঁত বের করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ওঁরা তোয়াক্কা করেন নি। এদেশে, কবি গদরের বিচার চেয়ে কোনো প্রতিষ্ঠিত লেখককে এখনো রা-কাড়তে শোনা যায় নি। আরো নানান সমাজকৰ্মী বিনা বিচারে কারাগারে। সেক্ষেত্রেও কবি ও কবিতা উভয়েই নীরব। কারোর পোয়েটিক রাশানালিটিতে কোনো আঁচড় কাটতে পারছে না আমাদের সমসাময়িক? অতটা হয়তো নয়। তবে, এই চিত্রটিও থাক। ও হ্যাঁ, রাহাত ইন্দোরি বিদায় নিলেন নিজের দাপট শেষদিন অবধি বজায় রেখে, যেটুকু।
এই সময়ের, সব সময়ের চিত্র নিয়েই তো কবিদের জগৎ। এদেশে, রবীন্দ্রনাথের পর আরেকজন ও কবির দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে তদ্রূপ রাজনৈতিক প্ৰতিনিধিত্ব তৈরি হল না। তাঁদের বক্তব্য বা প্রভাব কী থাকবে সহজেই অনুমেয়। তাই বোধহয়, ভারতীয় সমসাময়িক কবির নাম খুঁজতে গিয়ে গুগল সবার ওপরে দেখালো এক ইন্সটা-কবির নাম। সর্বাধিক লাইক পাওয়া কিছু পংক্তি ছেপে তিনি নাম কুড়িয়েছেন। পাঠক নিজদায়িত্বে পড়ে দেখবেন। আপাতত, হিসেবে লেখা থাক। কারণ এও এক চিত্র বৈকি!