এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • প্রজেক্ট, কুতুব মিনার ও নাকছাবি

    জয়ন্তী অধিকারী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ | ২৩৫৭ বার পঠিত | রেটিং ৩ (১ জন)
  • (একটু ভূমিকা - গোবু কেবলী কাহিনীর প্রথম পর্ব - “না হাঁচিলে যারে"। বর্তমান গল্পটি দ্বিতীয় পর্ব। বিবাহ কাহিনী "বিয়ে করা যায় না জেনো সহজে" আগে লেখা হয়ে গেছে, কিন্তু সেটি আসলে তৃতীয় পর্ব।)

    বাইশ তারিখ

    “পুরানা কেল্লায় তালাকি দরওয়াজা দেখেচ?"
    "না।"
    "হুমায়ুনের লাইব্রেরি, যেখানে উনি সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে পড়ে পট -- সরি, মারা যান?"
    "না"।
    "ইন্ডিয়া গেট?"
    "না।"
    (অস্পষ্ট কিড়মিড়কিড় আওয়াজ সহ) "ক্যানো ও ও?"
    "কেন না, আমি কোনদিন দিল্লি যাই নি।"
    "সে কী ই ই!! এত্তখানি বয়েস, রিসার্চ করছে অতোচো দিল্লি যায় নি, এমন মানুষ এই প্রথম দেখলাম।"
    "কেন, সব্বাইকে দিল্লি যেতে হবে? যেতেই হবে? লেখা আছে বুঝি ইউনিভার্সিটির আইনে যে রিসার্চারদের আগে দিল্লি যেতে হবে, তারপরে অন্য কাজ?"

    সৌমিত্রসহ গোবুর দুজন চামচা ভারি মন দিয়ে থুতনি সোজা রেখে গোবু কেবলীর ঝগড়া দেখছিল।
    গোবু কেবলীকে আমরা শেষ দেখেছিলাম কফিহাউসে (না হাঁচিলে যারে)।
    গোবুর আকাশনীল শার্ট, নাকে চশমা, আগের সেই তালপাতার সেপাই চেহারা একটু ভারী। কেবলীর হারানো ক্লিপ, রুমাল হাতে নিয়ে সে যথাসম্ভব গম্ভীর গলায় বলেছিল
    “আমাকে দরকার নেই বলেছিলে, তা এইসব সারাজীবন কুড়িয়ে আনবে কে?”
    আর, এককথার মানুষ কেবলী উত্তর দিয়েছিল - “হ্যাঁচ্চো-ও”।
    পাঠিকা/পাঠক ভাবতে পারেন, এর পরেই প্রবল পবনে তরঙ্গ তুলিল, হৃদয় দুলিল, পাগল নাবিক দিগ্বিদিক ভুলিয়ে দিল ইত্যাদি কিন্তু বাস্তবে তা আদৌ ঘটে নি। বলতে কী, সেইদিনের পর এই তাদের দ্বিতীয় ও আকস্মিক সাক্ষাৎ।

    কেবলী রিসার্চ করে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে। গাইড ম্যাডাম কয়েকটি কাজ দিয়ে আজ তাকে প্রেসিডেন্সী কলেজে পাঠিয়েছেন। কাঁধে ঝোলাভর্তি বই, খাতা, কাগজ, ডায়েরি ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে (তখনও ছাত্রছাত্রীদের হাতে হাতে ল্যাপটপ, পেনড্রাইভ থাকত না, কাগজ কলমের যুগ), হাতে দুটি ফাইল আঁকড়ে আধখানা বিনুনি খুলে যাওয়া ইস্ত্রীবিহীন হলুদ শাড়ি পরিহিতা ঘর্মাক্ত কেবলী হনহন করে কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের দিকে যাচ্ছিল। হেনকালে বেকার বিল্ডিংএর সিঁড়ি থেকে সৌমিত্রর বাজখাঁই গলা শোনা গেল,
    "কেবলী, আ-আ-রে এই কেবলীটা, এই যে আমরা এইখেনে, বাদাম নে"--
    কয়েকজন ছাত্রছাত্রী আশেপাশে ছিল, সবাই ফিরে তাকাল, একটি ছেলে দৌড়ে এসে সৌমিত্রর হাতের বিশাল ঠোঙা থেকে বাদাম আর ঝালনুন নিয়েও গেল। কেবলী অসম্ভব অবাক হয়ে দেখল সৌমিত্র ও আর একটি ছেলের সঙ্গে Baker building এর সিঁড়িতে বসে দিল্লির মেডিকেল কলেজের ছাত্র (বা ইনটার্ন বা অন্যকিছু) গোবু গুল্লিগুল্লি চোখে তাকে দেখছে, আর বাদাম চিবোচ্ছে।
    কেবলীর প্রথমেই মনে হল এখন তো কোন ছুটিছাটা নেই, তবে গোবু এখানে কেন? দিল্লির কলেজ থেকে নিশ্চয়ই একে তাইড়ে দিয়েচে, দিতেই পারে।
    কেবলীকে দাঁড়াতে দেখে সৌমিত্রর বত্রিশপাটি বেরিয়ে এল, "আহা, বোস না একটু, কদ্দিন পর দেখা হল, সে এ ই গত সপ্তাহে তোর ল্যাবে গেছিলাম, তারপর এই আজ।"
    "বসতে বলিস না, পজিশন বদলালেই এতসব প্রাচীন পুঁথিপত্র উড়ে যাবে, গুঁড়োগুঁড়ো হয়ে চাদ্দিকে ছড়িয়ে পড়বে, আরও কত কী হবে - ”
    মোটা গলায় গোবুর এমত অভ্যর্থনা শুনে কেবলী অবশ্য বিন্দুমাত্র বিচলিত হয় না, বরং প্রশ্ন করে,
    “তোরা এখানে কী করচিস? নিজেদের কাজকর্ম কি ছেড়ে দিয়েছিস না ছাড়িয়ে দিয়েছে?”
    গোবু ঠিকই বোঝে, প্রশ্নটি কার উদ্দেশ্যে, তড়বড় করে জবাব দেয়,
    “ছাড়িয়ে দেবে কেন, পড়তে পড়তে থকে মানে কেলান্ত হয়ে পড়েছিলাম তো, আর খুব জরুরী কাজও ছিল, তাই দুদিনের জন্য কলকাতা এসেচি।”
    "তা হয়ে গেছে? সেইসব জরুরী কাজ?” কেবলী এমন নিখুঁত ৭৫ ডিগ্রি কোণে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসতে পারে তা সে নিজেই জানতো না।
    "না, না, জরুরী কাজকর্ম কি এত তাড়াতাড়ি হয়, হচ্চে তো, হচ্চে, হয়েই চলেচে।"
    "হ্যাঁ, গোবুদার তো কাল সায়েন্স কলেজেও যাওয়ার প্ল্যান - "
    "ক্যানো ও ও?"
    "কতদিকে কতরকম কাজ থাকে আমার! যাগ্গে, দেখা হল যখন, একটা কথা বলো দেখি, পুরানা কেল্লায় তালাকি দরওয়াজা দেখেচ?"
    এর পরবর্ত্তী সংলাপ আপনারা আগেই শুনেছেন। গবেষণায়, মতান্তরে গোরু খুঁজতে নেমেই প্রথমে দিল্লি চলা আবশ্যিক কিনা, কেবলীর এমত প্রশ্নের উত্তরে গোবু অসাধারণ মিচকে হাসি সহযোগে জানায়,
    "দিল্লি তো যেতেই হবে সক্কলকে, দুদিন আগে আর পরে। যেমন, তোমার গাইড ম্যাম এমাসের বাইশ তারিখের মিটিংএ যাচ্চেন। বলা যায় না, তোমাদেরও নিতে পারেন।"

    কেবলী এত অবাক হয় যে আশ্চর্য হতে ভুলে যায় (ছোট্ভাই শিশুকালে বলত, আমি এত্ত অবাক হলাম যে আচ্চয্য হতে ভুল হয়ে গেল)। ম্যামকে বাইশ তারিখে নতুন প্রজেক্টের প্রেজেন্টেশন দিতে দিল্লি যেতে হবে, এটি মাত্র গতকালই জানা গেছে, কেবলীসহ আরো দুজন গবেষক সঙ্গে যাবে এও ঠিক হয়েছে, সেই প্রেজেন্টেশনের কাজেই কেবলী এখন প্রেসিতে এসেছে, কিন্তু গোবুচন্দ্রের কানে এ খবর যায় কীভাবে? সৌমিত্রও বেশ অবাক হয়, সে দায়িত্ব নিয়ে "সময় সময় পর" কেবলীর খবর গোবুদাকে সাপ্লাই করে থাকে, কিন্তু তাকে ডিঙিয়ে এই ব্রেকিং নিউজ গোবুদা কিভাবে জেনে ফেলল?
    তবে সে বেশিক্ষণ অবাক হয়ে বসে থাকার ফুরসত পায় না। সামনে যে মাঠ তার অন্য দিক দিয়ে দুটি নিরীহ ছেলে যাচ্ছিল, তাদের দেখে হঠাৎ সৌমিত্র অসম্ভব উত্তেজিত হয়ে পিলে চমকানো চিৎকার করে তিড়িংবিড়িং লাফিয়ে ওঠে "ঐ যে, ঐ যে আমাদের ভুশন্ডীর মাঠের কারিয়া পিরেত, ব্যাটা দুদিন রিহার্সালে আসে নি, ধর ধর, ধর শিগগিরই!" সৌমিত্র ভীষণ জোরে দৌড়য়, কারিয়া পিরেতও ছোটে, পরীক্ষা, বাবা, মালাইচাকি ভাঙা দূরাগত এইসব অস্প্ষ্ট শব্দ শোনা যায়।
    "কেমন দিলাম, হুঁ হুঁ, সব জানি" হতভম্ব কেবলীকে চোখ দিয়ে এইসব বলে লাফিয়ে উঠে গোবুও ওদের ধাওয়া করে। যেতে যেতে বলে যায়,
    “কুতুব মিনারটা অবশ্যই দেখে নিও কিন্তু।”

    ভয়ানক হেঁড়ে গলায় ছুটন্ত গোবুর গান (??) ভেসে আসে,

    “আরে ভজুয়াকে বহিনিয়া ভগলুকে বিটিয়া কেকরাসে সাদিয়া হো কেকরাসে হো-ও-ও-ও---,
    আরে ভজুয়াকে বহিনিয়া।”

    কেবলী এখন দিল্লিতে

    কেবলী ও তরুণ (আর একজন গবেষক)কে নিয়ে প্রজ্ঞা ম্যাডাম দিল্লি এসেছেন। INSA গেস্টহাউসে উঠেছেন সকলে। আগামীকাল মিটিং, ম্যাডাম প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশন দেবেন, কেবলী ও তরুণ প্রয়োজনে তথ্য জুগিয়ে দেবে, ধুয়ো ধরবে ও স্লাইড পালটে দেবে।

    চটির স্ট্র্যাপ ছিঁড়ে গেলেও ম্যাডাম টেনশনে অস্থির হন এবং আশা করেন সকলেই তাঁর সঙ্গে সঙ্গে উস্তুমখুস্তুম হয়ে পড়ুক। তিনি নিজের ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানী, অন্তত কুড়িটি প্রজেক্ট পার করেছেন তবু গত সাতদিন ধরে চূড়ান্তরকম নার্ভাস। কেবলী ও তরুণ এখন ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও Problem Description, Lit Review, Rationale, Relevance to State priorities, Financial resources এইরকম সব শব্দ শুনতে পায়। প্লেনজার্নি করে এসেও গতরাত্রে তিনি একফোঁটা ঘুমোন নি, কেবলী ও তরুণকে নিয়ে সারারাত Objectives, S&T component, Methodology, PERT/GANTT chart, Post Project Activities এইসবের মহড়া দিয়েছেন (তরুণ কেবলীকে দেখিয়েছে ম্যাডামের বড়িতুল্য খোঁপাটির নীচে কয়েকগুচ্ছ চুল সেই কলকাতা থেকে উত্তেজনায় খাড়া হয়ে আছে) এবং দুজনকে বগলদাবা করে দশটার মিটিংএ সাড়ে আটটায় এসে উপস্থিত হয়েছেন।

    আস্তে আস্তে মিটিংএর লোকজন আসছেন, হাইহ্যালো চলছে, এরই মধ্যে এক বিশেষজ্ঞ মহিলাকে দেখে প্রজ্ঞা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে গিয়ে ফিসফিস করে ওঠেন,
    "সব্বোনাশ হয়ে গেল, এত পরিশ্রম সব জলে।"
    তরুণ অবশ্য আরো জোরে ফিসফিস করে,
    "কেন ম্যাম?"
    "আরে ঐ যে ডঃ দাশগুপ্ত, সবুজ শাড়ি, লাল চশমা, হীরের দুল, পায়ে বুট। আমি এক মিটিংএ এক্সপার্ট ছিলাম আর ওর এক অখাদ্য প্রজেক্টকে বাতিল করে দিইছিলাম। আজ ও তার শোধ তুলবে না ভাবছ?"

    দাশগুপ্ত ম্যাডামকে অবশ্য তেমন প্রতিহিংসাপরায়ণ মনে হল না মোটেই। তিনি কেবলী ও তরুণকে চমৎকার মিষ্টি হাসি উপহার দিলেন, প্রেজেন্টেশনের পর যখন যথারীতি প্রচন্ড তুলোধোনা চলছে,তখন টুকটাক সাহায্য করতেও চেষ্টা করলেন। প্রজেক্টের সাংঘাতিক চুলচেরা বিচারেরর পর বিচারকরা পড়লেন বাজেট নিয়ে, কী যন্ত্রপাতি কিনবে, কেন কিনবে, কিনে কী করবে লক্ষ লক্ষ প্রশ্ন। মিটিং শেষে হাক্লান্ত অবস্থায় বেরিয়ে কেবলীর মনে পড়ল লীলা মজুমদারের গুপীর লেখা গুপ্তখাতার সেই বিখ্যাত সংলাপ
    “উঃফ, আলজিবভি শুকিয়ে খটখটে হো গিয়া !”

    একটু পরে ম্যাডাম বেরিয়ে এলেন হাসিমুখে, যা খুবই বিরল দৃশ্য। তাঁর মুখে শোনা গেল, বিশেষজ্ঞরা মোটামুটি সন্তুষ্ট, ফলাফল আশাব্যঞ্জক। যার শেষ ভাল, তার সব ভাল।
    ম্যাডামের দুর্লভ হাসি দেখে কেবলী প্রাণপণে বুকে সাহস এনে বলে ফেলল -
    “ম্যাম, আমি আর তরুণ একটু কুতুব মিনার দেখে আসব? অটো নিয়ে চলে যাই, আবার কবে আসা হয় না হয়!”
    প্রেজেন্টেশন ভাল হওয়াতে ম্যাডাম কল্পতরু, "হ্যাঁ, যাও না, লাঞ্চ করে চলে যাও। আমরা যে গাড়িটা ভাড়া করেছি ঐটে নিয়েই যাও। আমি কারো সঙ্গে চলে যাব।”
    দাশগুপ্ত ম্যাডাম উদিত হন, “চলুন চলুন খেতে যাই। আপনার স্কলার দুটি ভারি ভাল, খুব খাটিয়ে, বা: বাঃ।”

    কুতুব মিনার

    ইলতোতমিসের সমাধি, আলাই দরওয়াজা আলাই মিনার, ভারতের প্ৰাচীনতম যে সব মসজিদ এখনও দাঁড়িয়ে আছে, তাদের অন্যতম কুব্বত-উল-ইসলাম মসজিদ এবং শতাব্দী প্রাচীন লৌহস্তম্ভ যাতে এখনও মরচে পড়েনি - কুতুব মিনার প্রাঙ্গণে আশ্চর্য সব দ্রষ্টব্যের যেন শেষ নেই। জন্মাবধি কৃষ্ণনগর, কলকাতা ও বহরমপুর - এই তিনটি শহর ছাড়া কেবলী কোথাও যায়নি, তার চোখে সবই সুবিশাল, সবই মহাবিস্ময়। তবে খুব ভাল করে দেখা হচ্ছে না কারণ তাদের পৌঁছতে আড়াইটে বেজে গেছে, আর ফেব্রুয়ারীর দিল্লিতে তাড়াতাড়ি অন্ধকার নেমে আসে, মিনারও পাঁচটা নাগাদ বন্ধ হয়ে যাবে।
    যথাসম্ভব আশ মিটিয়ে দেখে তরুণ ও কেবলী ভাবল বেরোবার আগে একটু বসে নিই, এখান থেকে প্রায় আড়াইশো ফুট উঁচু কুতুব বড় চমৎকার দেখা যাচ্ছে।

    একটু গুছিয়ে বসেছে কি বসেনি, যেন শূন্য থেকে আবির্ভূত হয়ে শ্রীল শ্রীযুক্ত গোবু মহারাজ ধপাস করে সামনে আসন গ্রহণ করে কেমন হাঁড়িমুখ করে দুজনকে দেখতে লাগলেন।

    সেই কফিহাউসে একটু ভব্যিযুক্ত লেগেছিল, কিন্তু এখন আবার সেই পুরনো অবতারে-রংজ্বলা জিনস, বাবুইবাসা একমাথা চুল আর বোধহয় গত শতাব্দীতে কেনা জ্যালজেলে টিশার্ট-তার বুকের ছবিটা ডায়নোসর বা পাহাড় বা ট্রাক বা গোলাপফুল বা অন্যকিছু, চশমাটি পড়িমড়ি করে নাক আঁকড়ে ঝুলে আছে।
    তরুণের স্মৃতিশক্তি খুব, সে চোখ সরু করে খানিকক্ষণ গোবুকে দেখেই ধরে ফেলল,
    "আপনাকে তো আমি দেখেছি, প্রেসীতে, এই কেবলীদের ক্লাসে, বসে বসে কান নাচাতেন।"
    দিল্লির শেষবিকেলে কুতুবের মাঠে এমন গুণগ্রাহীর দেখা পাওয়া যাবে, তা গোবুরও চিন্তার অতীত ছিল। সে ভারি খুশি হয়ে জানায়,
    "আজকাল আরও ভাল পারি, প্র্যাকটিস মেকস আ ম্যান পারফেক্ট।"
    "আপনিও কি কেমিস্ট্রির নাকি? এখন কোথায় আছেন?"
    "আরে না, না। আমি ওসব অক্সিজেন, অ্যালডিহাইড বুঝি না, অত বুদ্ধি কই? তবে তোমাদের মানে কেমিস্ট্রির লোকজনের মুখে বেশ একটা ইয়ে থাকে, এতক্ষণ দূর থেকে দেখছিলাম, তোমাদের দুটিকে কী সুন্দর মানিয়েছে।"
    এই কথায় তরুণের যা প্রতিক্রিয়া হয়, তা অভাবনীয় বললে কম বলা হয়। শোনামাত্র সে লাফিয়ে তিনহাত দূরে সরে যায়, ও চ্যাঁচাতে থাকে,
    "য্যাঃ, ক্ষী যে বলেন, ম্মোটেই না, পর্ণা আমার চামড়া খুলে ডুগডুগি বাজাবে, আর আর ইয়ে (রোদে শুকোতে দেবে - গোবুর পাদপূরণ), কেবলী হল ইয়ে আমার সহ, সহ, (গোবু উবাচ - সহকর্মী) ওঃ, পর্ণার মা শুনে ফেল্লে তো আরো ইয়ে, ওরে বাবা, আমার পেট খিচিমিচি কচ্ছে রে এ, আমি গাড়িতে গিয়ে বসচি ----"
    কাঁধের থলিটা সব ফেলে তরুণ প্রাণপণ ছুটে পালায়।
    কেবলী বেজায় চটে কিছু বলতে যাবে, তাকে আঙুল নেড়ে থামিয়ে দিয়ে গোবু আবার গম্ভীর হয়ে একটু দম নেয়, আর ঘ্যানঘ্যান করে অবিকল ইতিহাস বই পড়ার ঢঙে বলতে শুরু করে -

    "১১৯২ সালে কুতুবউদ্দিন আইবেক এই কুতুব মিনারের নিৰ্মাণ কাজ আরম্ভ করেছিলে-এ-এ-ন। ইলতোতমিসের রাজত্বকালে মিনারের কাজ শেষ হইয়াছিলো-ও -ও। আলাউদ্দিন খিলজীর রাজত্বকালে প্রাঙ্গণ এবং নির্মাণ নিৰ্মাণকাৰ্য সম্পাদন হ-অ-অ য়। ইসলামিক স্থাপত্য এবং শিল্পকৌশলের এক অনবদ্য প্ৰতিফলন হিসাবে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার বিভাগে --"

    অসহ্য বোধ করে কেবলীও চেল্লায়, "আপনি থামবেন? এইসব শোনাবেন নাকি শুধু?"
    গোবু ভারি দুঃখিত হয়, "একটুখানি বলেছি তো। লৌহস্তম্ভের প্যারাটাও মুখস্ত করে এসেচি, বলব না বলছ?।"
    "ন্না, শুনতে চাই না। এসব ইতিহাসের বইতে আছে, আর বেশি ইতিহাস শুনলে আমার কান কটকট করে।"
    "থাক তবে, শুধু একটা কথা - কুতুব একটু হেলে গেছে, এই দুফুট মত, কিভাবে জান?"
    "কোথায় হেলে গেছে? খালি আজেবাজে কথা!"
    “আরে, বাজে কথা না। আমার মাসী, অতসীমায়া দাশগুপ্ত, একবার কুতুবে হেলান দিয়ে পাঁচমিনিট একটু ঘুমিয়ে নিয়েছিলেন, তারপরেই মিনারটা একটু হেলে যায়, বইপত্র খুলে দেখিয়ে দিতে পারি। তুমি তো দেখেওছো মাসীকে - "
    "আমি কখন দেখলাম?"
    "আরে আজ সকালেই মিটিনে দেখেচো তো, এত তাড়াতাড়ি বিস্মরণ হলে চলবে?"

    কেবলী হতবাক হয়ে এই মহাবিচ্ছুকে দেখে, অনেকগুলো খটকা পরিষ্কার হয়ে যায়। এই সূত্রেই তবে গোবু মিটিংএর দিনক্ষণ জানতে পেরেছিল, আর সেইজন্যেই দাশগুপ্ত ম্যাডাম অমন মিষ্টি করে হাসছিলেন। কী বলে রেখেছে ওঁকে তা গোবুই জানে, মানসম্মান আর রইল না! কেবলী ঠিক করে, একদিন সেও গোবুকে তিড়িতঙ্ক লাগিয়েই ছাড়বে।
    "আচ্ছা, অন্ধকার হয়ে আসছে, এখন যে কথাটা বলতে ডেকেছি, তাড়াতাড়ি বলে ফেলি।"

    গোবুর কাঁধে একটা ঝোলা ছিল, কেবলী সেটি নজর করেনি, এখন গোবু সেটি হাতড়ে হাতড়ে কীসব বের করে বলে, "হাত পাতো, দু হাত, চোখ বোজো, আচ্ছা, আচ্ছা এইবার চোখ খোলো।”
    চোখ খুলে কেবলী দেখে বাঁ হাতে চোখবন্ধ হাসিহাসিমুখ এক টিনের বাঁদর আর ডান হাতে অদ্ভুত সবুজ রঙের পান্না বসানো এক নাকছাবি। সবুজ পাথর ঘিরে তারার মত কুট্টি কুট্টি লাল পাথর জ্বলজ্বল করছে।
    গোবুর হাতে একটি ট্যামটেমি।
    "আমার সঙ্গে ট্যামটেমি বাজাবে? ব্যাগে আর একটা আছে।"
    "বাজানোর ইচ্ছে না থাকলে নাকছাবিটা আমার হাতে ফিরিয়ে দাও। আর বাজাও যদি, তো বাঁদরটা দাও।"
    গোবু হেন বক্তিয়ারেরও সবুজাভ নাকের ডগা, বেগুনী কানের লতি দেখে কেবলী হঠাৎ বোঝে এ ঠিক ট্যামটেমি বাজানো নয়, গভীর কোন দুর্বুদ্ধির ইঙ্গিত।
    "কদ্দিন বাজাতে হবে?"
    "এই যতদিন না আমরা পট থুড়ি বালতিতে লাথি মারি"
    (এইখানে গোবুর মহা বোকামী হল, সে ভাবছিল এই বালতির ব্যাপারটা কেবলী জানবে না, কিন্তু ইংলিশ নভেলের পোকা কেবলীর এসব জলভাত।)
    "নাকছাবি ফেরত দিয়ে দিলে আপনি কী করবেন, বা করবেন না?"
    হঠাৎ গোবু আবার সেইরকম সাপের মন্তরের সুরে ইতিহাস পড়া শুরু করে,
    "মিনারটির উচ্চতা ২৩৮ ফুট, মিনারটির পাদদেশের ব্যাস ৪৭ ফুট এবং শীৰ্ষ অংশের ব্যাস ৯ ফুট।"
    "এর মানে? আপনি কি সত্যি সত্যি পা - "
    "না, না, আমি পাগল না, বলছিলাম সেক্ষেত্রে আমি মিনারে চড়ে ঐ ২৩৮ ফুট থেকে নিচে লাফ দোব, এইরকম প্ল্যান করে রেখেচি।"
    কেবলী চুপ করে তাকিয়ে থাকে-অপরিচিত পরিবেশ, রাত জাগা, টেনশন, সামনে বিশাল কুতুব মিনার, তালুতে পড়ন্ত সূর্যের আলেোয় ঝিকমিক নাকছাবি, দুটো কাঠবেড়ালী চিপসের প্যাকেটের ভেতরের ঝাল মশলা চেটে চেটে খাচ্ছে - সব মিলিয়ে মাথা কেমন তাজ্ঝিম মাজ্ঝিম করে।

    সে আস্তে আস্তে বাঁদরটা গোবুর বাড়ানো হাতে ফিরিয়ে দেয়।
    "ইয়ে হুই না বাত" মিনার ফেরত জনতাকে স্তম্ভিত করে গোবু মহা ফুর্ত্তিতে তিনবার ডিগবাজি খায় -
    "তবে ঐ কথাই রইল।"

    তারপর চ্যাঁচামেচি জোড়ে, "চল, চল শীগগিরই, তরুণ এতক্ষণে গাড়ি নিয়ে চলে গেল কিনা দেখ। কেবল আড্ডা দিলেই চলবে?"
    তরুণের ও নিজের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে পিড়িক পিড়িক করে কান নাচানো, ট্যামটেমি বাজানো, তিনপা হাঁটার পর একটি তুড়ুক লাফ দেওয়া ও রাসভ বিনিন্দিত গলায় চ্যাঁচানো "আজকে আমার মনের মাঝে/ধাঁই ধপাধপ্ তবলা বাজে" - এই সবগুলো কাজ একসঙ্গে করতে করতে গোবু এগোয়।
    মুঠোয় নাকছাবিটি ধরে কেবলীও চলতে থাকে, ল্যাগব্যাগ করে হাঁটতে হাঁটতে এতক্ষণে মনে পড়ে, ১৯৮১ সাল থেকে কুতুবে ঢোকা নিষিদ্ধ, ওপর থেকে লাফিয়ে পড়া দূরস্থান।
    আবারও লীলা মজুমদার মনে পড়ে, ললাটের লিখন এড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব জানবে।
    জীবনটা তবে এমনই কাটুক - এতোলবেতোল, অগো্ছালো, হিসাবহীন।
    মুঠোর মধ্যে সবুজ নাকছাবিটা তো থাকবেই।

    পাগলী, তোমার সঙ্গে ধুলোঝড় জীবন কাটাব
    পাগলী, তোমার সঙ্গে ‘ভোর ভয়োঁ’ কাটাব জীবন
    (জয় গোস্বামী)

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ | ২৩৫৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kumu | ***:*** | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০১:২৮83703
  • থাংকু,থাংকু,নববর্ষের শুভেচ্ছা সহ।
  • ফরিদা | ***:*** | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ১২:৪৮83701
  • লাভলি কুমুদি।
    ফ্যান্টাস্টিক্তম।
  • pinaki | ***:*** | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ১২:৫৯83702
  • উঁহু। ফ্যাবিউলাসেস্ট। :-)
  • সিকি | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৩২83705
  • গোবু সত্যি সত্যি কান নাচাতে পারে নাকি? ওটা তো আমিও পারি!
  • Tim | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫০83706
  • পড়ে এত অবাকরকম ভালো লাগলো যে আশ্চর্য্যরকম হতভম্ব হয়ে গেছি। যাচ্ছেতাইরকম মজার হয়েছে। ঃ-)
  • dc | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫৮83707
  • ফাটাফাটিরকম রোমান্টিক লেখা ঃ)
  • গবু | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৯83708
  • গুঙ্গা!!

    দূর্দান্তম!
  • Ruchira | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৩83709
  • বড্ডই ভালো হয়েছে। আগেরগুলো-ও খুব ভালো ছিলো, তখন লিখে জানানো হয়নি আপনাকে
  • kumu | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৪১83710
  • সকলকে এত এত থাংকু,কষ্ট করে পড়া ও মতামত দেওয়ার জন্য।
    একটি নিবেদন,ট্যামটেমি বাজানোর জায়গাটি আসলে এইরকম ছিল,হয়তো আমারই অসাবধানতায় সেভড হয়নি।

    "গোবুর হাতে একটি ট্যামটেমি।

    "আমার সঙ্গে ট্যামটেমি বাজাবে?ব্যাগে আর একটা আছে।"
    "ট্যামটেমি!!!"
    "হ্যাঁ তো,এই যে এমনি করে,ট্যাং,ট্যাং,ট্যাটাংট্যাং,ট্যাটাংট্যাং"মহোৎসাহে গোবু বাজিয়ে দেখায়।
    "এইরকম করে ট্যামটেমি বাজাব?"
    "না,অন্যভাবেও বাজাতে পারো,ট্যাং,ট্যাটাং,ট্যাং,ট্যাটাং এই রিদমে বাজালেও চলবে।মানে আর কী,ইয়ে,যা তোমার সুবিধে,সেইভাবে,মানে---"

    গোবু হেন বক্তিয়ার কথা খুঁজে পাচ্চে না,একটু তুতলে যাচ্চে,নাক ও কানের লতি বাই রোটেশন সবুজ ও বেগুনী আভা ধারণ করচে,এইসব অদৃষ্টপূর্ব ব্যাপারস্যাপার কেবলীর মত কেবলীরও নজরে পড়ে,কেবলী হঠাৎ বোঝে এ ঠিক ট্যামটেমি বাজানোর কথা নয়, গভীর কোন দুর্বুদ্ধির ইঙ্গিত।"
    আর,তরুণ থলিটলি ফেলে পালিয়েছিল।
    সকলকে চিত্তরঞ্জন পার্কের সন্দেশ।
  • paps | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ১০:২৫83711
  • কুমুদি যদি লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নিতেন তাহলে অনেক প্রিতিষ্ঠিত লেখক/লেখিকার ভাত মারা যেত সন্দেহ নেই।
  • i | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ১১:০৯83712
  • সুন্দর এবং মধুর।
  • aranya | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ১২:১৬83704
  • দূর্দান্ত।

    সমস্যা একটাই, ব্যর্থ প্রেমের অংশীদার-দের, যাদের সারা জীবন সাথে কাটাবার কেহ নাই, কিঞ্চিৎ দুঃখও হতে পারে

    তবে এতই রসোত্তীর্ণ লেখা, স্বীয় জীবন যেমনই হোক, সবারই ভাল লাগবে মনে হয়
  • পুপে | ***:*** | ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:৫২83713
  • এই হল গিয়ে প্রেমের গপ্পো। দারুণ!
  • de | ***:*** | ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ১০:৪৭83714
  • কুমুদির নাটক লেখা উচিত - খুবই ভালো নাটকের উপাদান লেখায় - চিত্রনাট্য টাইপ -

    "সবুজ শাড়ি,লাল চশমা,হীরের দুল,পায়ে বুট" - সারা জন্ম মনে রেখে দেবার মতো বর্ণনা!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন