এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • সব শহর একবার কেমব্রিজ বারবার

    PRABIRJIT SARKAR লেখকের গ্রাহক হোন
    ৩০ মে ২০২৫ | ৫৯ বার পঠিত
  • সব শহর একবার কেমব্রিজ বারবার
    প্রবীরজিৎ সরকার

    বেশ কয়েকবার ইংল্যান্ড এসেছি। প্যারিস থেকে অক্সফোর্ড গেছি। এক মাস কাটিয়েছি। কিন্তু কেমব্রিজ যাবার সুযোগ হয় নি বহুদিন। টুরিস্ট হিসাবে একদিন যাব ভাবছিলাম। হঠাৎ সুযোগ এসে গেল। কলকাতায় কেমব্রিজের অধ্যাপক এসেছিলেন এক সেমিনারে। উনি আমার কাজকর্মের একটু খোঁজ রাখতেন। উনি কেমব্রিজ যাবার আমন্ত্রণ জানালেন। তবে এক দিনের জন্য। একটা লেকচার দিতে। আমি এত বিখ্যাত নই যে কলকাতা থেকে ভাড়া দিয়ে নিয়ে যাবে একটা লেকচারের জন্য।

    আমি কয়েকবার প্যারিস ভিজিট করেছিলাম। তখন ইংল্যান্ডের কয়েকটা উনিভার্সিটিতে এসে সেমিনার দিয়েছিলাম। এবারও তাই করলাম। গেলাম কেমব্রিজ। ওরা একশ পাউন্ড দিল যাতায়াতের জন্য।

    প্যারিস থেকে ইজিজেটের টিকিট কেটে লুটন এয়ারপোর্ট এলাম। তারপর বাস ধরে কেমব্রিজ। কুইন্স কলেজে রাতে থাকার ব্যবস্থা হল।

    কুইন্স কলেজে সেই কেইন্সের যুগ থেকে বা তার আগে থেকেই একটা সাপ্তাহিক সেমিনার হত। কেইন্স তার জেনারেল থিওরি লেখার সময় ওই নিয়ে ওখানকার কয়েকটা সেমিনারে আলোচনা করেছিলেন। ওখানের ট্র্যাডিশন ছিল ঠিক রাত আটটায় সেমিনার শুরু হবে আর যেই ন টার ঘন্টা বাজবে সেমিনার শেষ হবে। তারপর আগ্রহীরা চাইলে বাইরে কোন বারে গিয়ে মাঝ রাত অব্দি আলোচনা চালিয়ে যেতে পারেন। এর কোন অন্যথা হত না। ঐতিহ্য মানতেই হত।

    কুইন্স কলেজের মূল ফটক দিয়ে ঢুকে একটা কাঠের ব্রিজ পেরিয়ে এই সেমিনার হলে ঢুকতে হয়। এই ব্রিজ অংক কষে এমন ভাবে বানানো হয়েছে যে টুকরো কাঠগুলো কোন পেরেক বা আঠা ছাড়া টাইট ভাবে জুড়ে থাকে। শোনা যায় আইজাক নিউটন এই অংকটা কষেছিলেন। এই ব্রিজ কে বলে ম্যাথেমেটিক্যাল ব্রিজ।

    আমি এই ব্রিজ পেরিয়ে সেমিনার হলে ঢুকে আমার প্যারিসে বসে লেখা নতুন গবেষণা পত্র পেশ করলাম। বেশ কিছু নামী অধ্যাপক ওখানে ছিলেন। তাদের একজন আমায় জিগ্যেস করলেন আমি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়েছি কিনা। আমি না বলাতে উনি বলে উঠলেন এই প্রথম একজনকে এখানে পেপার পড়তে দেখলাম যে ওই কলেজে পড়েনি; তার মানে কলকাতাতে আরো অনেক ভাল কলেজ আছে আমরা খোঁজ রাখি না।

    পরের দিন সকালে ব্রেকফাস্ট করে ট্রেন ধরে উত্তর ইংল্যান্ডের এক উনিভার্সিটি গেলাম লেকচার দিতে। তারপর প্যারিস হয়ে যথাসময়ে কলকাতা ফিরলাম। এক বেলায় কেমব্রিজে কোথাও কিছু ঘোরা হলনা। দেখলাম শুধু ওই কলেজ, ক্যাম নদী আর ওই বিখ্যাত ব্রিজ।

    তবে একটা যোগাযোগ হল। কেমব্রিজে একটা নতুন ধরনের গবেষণা শুরু হয়েছিল। করছিলেন জাজ বিজনেস স্কুল বিল্ডিংয়ে অবস্থিত সেন্টার ফর বিজনেস স্টাডিজের গবেষক আর কেমব্রিজের আইনের অধ্যাপক সাইমন ডিকিন আর তার সঙ্গী সাথীরা। ওরা প্রচুর সরকারি ফান্ড পেয়েছিল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি সংক্রান্ত আইনের ঘোর প্যাচ কে তুলনা করে নম্বর দিয়ে এক ধরণের data তৈরি করছিলেন এই আইন বিশারদরা। কিছু অর্থনীতিবিদকে টিমে নিয়ে ওই dataর বিশ্লেষণ করার চেষ্টা হচ্ছিল। কিন্তু তারা ওই বিশাল data নিয়ে খাবি খেয়ে টিম থেকে বেরিয়ে গেলেন। ওরা আমায় হাল ধরতে বলে তিন মাসের ফেলোশিপ দিল। প্যারিস থেকে ফিরে পরীক্ষার ডিউটি দিয়ে আর খাতা দেখে রওনা দিলাম কেমব্রিজ।

    ওরা প্রথমে কেমব্রিজের অভিজাত এলাকা Newnham এ বেড এন্ড ব্রেকফাস্ট যোগাড় করে দিল। দৈনিক চল্লিশ পাউন্ড। তখন কলকাতা থেকে ব্রিটিশ এয়ার সোজা লন্ডন যেত। ওই ফ্লাইট ধরে এলাম ওই বেড রুমে। লাগোয়া বাথরুম নেই। খরচ বেশি। সাত সকালে পেট ভরে ব্রেক ফাস্ট খাবার অভ্যাস নেই। তাই আমার ভাল লাগছিল না। দেখলাম লাগোয়া বাথরুমওয়ালা ঘর সহজে পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও বেশ দাম। আসলে লোকে নিজের বাড়ির অন্য ঘরগুলো ভাড়া দেয় আর লাগোয়া বাথরুমওয়ালা ঘর (এরা বলে en suite) নিজের জন্য রাখে। এলাকাটা অভিজাত আর আমার অফিসের কাছে। কিন্তু সিটি সেন্টার আর দোকানপাট অনেক দূরে। রাতে বাড়ি ফিরতে একটু ভয় ভয় লাগত। রাস্তাঘাট নির্জন।

    কদিন পর অন্যত্র একটা ছোট ফ্ল্যাট পেলাম কম দামে। কদিন বাদে খালি হবে। পয়সা বাঁচাতে আমি ঘর ছেড়ে দুদিন ইউথ হোস্টেল থেকে সোজা ভেনিস বেড়াতে চলে গেলাম। আগে একবার এক বেলার জন্য গেছিলাম যুগোশ্লাভিয়া থেকে। এবার একটা সস্তা হোটেলে থেকে কদিন থেকে ঘুরলাম। দেখলাম চারিদিকে বাংলাদেশি হকার গিজগিজ করছে। ওরা ভারতের বাঙালিকে বাঙালি বলে স্বীকার করে না। ইন্ডিয়ান বলে আর পাত্তা দেয় না। রাস্তাঘাটের খোঁজ চাইলে বলতে চায় না।

    ভেনিস থেকে ফিরে ওই ফ্ল্যাটে রইলাম। ওটা বাগানের মধ্যে আলাদা করে বানানো। বেশ ঠান্ডা। রাত হলে হিটিং বন্ধ। তবে একাধিক হিটার দিয়েছিল। ওখান থেকে জাজ বিজনেস স্কুলের ছ তলার অফিস বেশ দূর। বাস সার্ভিস ভাল না। তার উপর বাসে উঠলেও অনেক হাঁটতে হত। সময় বাঁচত না কিন্তু টাকা খরচ হত। তাই কদিন বাসে যাতায়াত করে পরে পুরো হেঁটে যাতায়াত করতাম। অনেকেই দেখলাম তাই করে। মেয়েরাও হিলওয়ালা জুতো পরে এত জোরে চলতো! বরফ পিচ্ছিল রাস্তাতেও! সবাই খট খট করে হেঁটে আমায় টপকে যেত। কলকাতার রাস্তা ঘাটে এমন জোরে হাঁটা মেয়ে দেখিনি।

    আমার অফিসে একটা মুম্বাই এলাকার অল্প বয়সী আইন গ্রাজুয়েট মেয়েও বসত। কেমব্রিজে আইনে পি এইচ ডি করে আমাদের প্রজেক্টে যুক্ত হয়েছিল। ওর একটুও ঠান্ডা সহ্য হত না। ও এলেই ঘরটা হিটিং চালিয়ে উনুন বানিয়ে রাখত। তাই মাঝে মাঝে বাইরে গিয়ে গায়ে ঠান্ডা হাওয়া লাগাতাম। ও মেয়েটি যেখানে আগে ভাড়া থাকত তারা ডিপোজিট ফেরত দেয়নি। রোজ তাদের সঙ্গে ফোনে বক বক করত। ওকে ওর বর ও খুব ফোন করত। পড়াশুনা ব্যাহত হত। চাকরি পেয়ে চলে যাবার সময় ওকে আমরা বিদায় সংবর্ধনা দিলাম। একটা বড় কার্ডে সবাই ওর সম্পর্কে লিখছিল। আমি লিখলাম আমি তোমার উষ্ণ সাহচর্য (hot company) মিস করব। ও আসল মানে বুঝেছিল।

    অন্য একটা ফিনল্যান্ডের মেয়েও প্রজেক্টে কাজ করত। ও মাঝে মধ্যে আসত। বেশির ভাগ সময় বাড়িতে থেকে কাজ তার। ও ইকনমিক্সের পি এইচ ডি ছাত্রী ছিল। ওকে কিছু জিজ্ঞেস করলে টানা বলে যেত। কোন কিছু জিজ্ঞেস করার সুযোগ পেতাম না। তাই আমিও বুঝতে পারছিলাম না কিভাবে এগোব। শেষে ওকে বুঝিয়ে সুজিয়ে একটা ড্রাফ্ট লেখালাম কদ্দুর কাজ এগিয়েছে বুঝতে। তারপর আমি কাজ শুরু করে একটা পেপার সম্পুর্ন করলাম।

    এরা এরপর আরো data তৈরি করল। আমি সেই নিয়ে কাজ করতে বছরে দুবার আসতাম। এক সিমেস্টারের পড়ানো শেষ করে পরের সিমেস্টার পড়ানো শুরু করার মধ্যে দেড় দু মাস পেতাম এখানে আসবার জন্য। আবার পুজোর সময়ও আসতাম। কোন কোন বার ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ও এসে এক মাস কাটিয়েছিলাম। আমি শুরুতেই বিশেষ অনুরোধ করে দশ বছরের ভিসা করে নিয়েছিলাম। তখন বেশি টাকা লাগেনি। পরে দশ বছরের ভিসা করতে এক মাসের মাইনে খরচ হয়ে গেছিল। এই ভিসা নিয়ে ঘন ঘন আসতাম। এদের ইম্মিগ্রেশন অফিসার একবার খুব বকেছিল: এত এসো না! ভিসা ক্যান্সেল করে দেব। কেমব্রিজে অনেক গোয়েন্দা ছিল বলে মনে হত। আমার মনে হত আমার কথাবার্তার ভিডিও করত। তাদের উপস্থিতিতে আমি পরিচিত সিনিয়র অধ্যাপকদের এই ইম্মিগ্রেশন অফিসারের হুমকি পাওয়ার অভিজ্ঞতা বলেছিলাম। এরপর হয়তো এই কারণে কেউ আর কিছু বলে নি। আমি যথারীতি ঘন ঘন যাতায়াত করতাম। যাদবপুরে অর্থনীতি বিভাগের হেড হয়েও কেমব্রিজ আসা যাওয়া চলত। অনেক সহকর্মীর ঈর্ষার কারণ ঘটত। একজন ভিসি ছাড়া কেউ ছুটি দিতে কার্পণ্য করেনি। জমানা যাদেরই হোক।

    আমার কেমব্রিজের ফ্ল্যাটে রান্না করার সুযোগ থাকলেও আমি চা বিস্কুট ছাড়া কিছু বাড়িতে খেতাম না। বাড়িতে খাবার রাখতাম না। যতই ঠান্ডা পড়ুক বৃষ্টি হোক আমি পাখিদের মত বাইরে বেরিয়ে খাবার সন্ধান করতাম। হাঁটা চলা হত। এদের বাড়িতে বড় ঠান্ডা রাতের বেলা। হিটিং বন্ধ করে দেয়। আমি স্বল্পকালের জন্য আসি বলে অনেক সময় ঘর ভাড়া পেতাম না। সবাই এক বছরের চুক্তি চাইত। কোন কোন বার কমে বেড এন্ড ব্রেকফাস্ট (en suite) পেয়েছিলাম। কয়েকবার কেমব্রিজের সব চেয়ে পুরোন কলেজ পিটার হাউসে থাকার সুযোগ পেয়েছিলাম। স্বল্প কালের জন্য হলে ওদের ঐতিহ্যবাহী গেস্ট রুমে ফ্রি থাকতে দিয়েছিল। তাই কলেজের ভিতরের মনোরম পরিবেশ দেখতে পেয়েছিলাম। কয়েকবার সাইমন ডিকিন (এখানকার প্রায় সব অধ্যাপক কোন না কলেজের সঙ্গে যুক্ত) পিটার হাউসে প্রফেসরদের খাবার জায়গায় নিয়ে গিয়ে খাইয়েছিল।

    পিটার হাউস সব চেয়ে ধনী আর পুরনো কলেজ।বার শ নয় সালে চালু হয়। সেই হিসাবে ২০০৯ এ এরা আট শ বছর পূর্তি উৎসব করে। কিংস কলেজের সামনে বিরাট লেজার শো করে। আমি তখন উপস্থিত ছিলাম। ছবি তুলেছিলাম আর ভিডিও করেছিলাম।

    অনেক দান করা সম্পত্তি এদের ছিল। এদের ছাত্র সংখ্যা কম। তাই হোস্টেল বা ফ্যামিলি ফ্ল্যাট ফাঁকা থাকতো। টাকার দরকার নেই বলে চাইলেও ভাড়া দিত না। আমাদের প্রজেক্টে যোগ দিয়ে আমেরিকা ফেরত একটা চীনা মেয়ে এরকম ফ্ল্যাট পেয়েছিল। ওই আমায় উৎসাহ দিয়ে আবেদন করিয়েছিল। দেয় নি। এক সিনিয়র আংশিক সময়ের অধ্যাপক পেয়েছিলেন। মনে হয় স্বল্প কালে থাকব বলে কর্তৃপক্ষ গা করে নি।

    কি আর করব! পরবর্তী কালে একাধিক ট্রাভেলজ হোটেলে আগে থাকতে সব টাকা দিয়ে কম দামে ঘর বুক করতাম আঠাশ দিনের জন্য। ঘর ভাড়া পেলে এর চেয়ে অনেক কম লাগত। কিন্তু না পেলে কি করব? তাছাড়া এসেই এক গাদা পাউন্ড ভাড়া ডিপোজিট দিতে হত। বাড়িওয়ালারা তো কার্ড নেবেনা! চেকও নিত না। দেশ থেকে দেড় দু হাজার পাউন্ড ক্যাশ (সব দশ বিশের নোটে) আনতেও ঝামেলা। পঞ্চাশ পাউন্ড নোট দেখলে আবার সন্দেহ। তাই হোটেল বুক করতাম। হোটেলে en suite বাথরুম আর ঠিক মত হিটিং থাকতো। কফি বানানোর কেটলি থাকতো। চাইলে ব্রেকফাস্ট ডিনার মদ কেনা যেত। এরকম তিনটে হোটেলে দাম দেখে ঘুরে ফিরে থাকতাম। অরচার্ড পার্কের হোটেলে থাকলে বাসে যাতায়াত করতে হত। সকাল সাড়ে সাতের গাইডেড বাস ধরতাম। ওটা জ্যাম ছাড়া কয়েক মিনিটে পৌঁছে দিত। তারপরের বাসগুলো জ্যামে পড়ে টাইমে আসত না। ভিড় হত আবার পথে বিশাল জ্যামে পড়ত। রবিবার অনেক বেলায় বাস সার্ভিস শুরু হত আর বিকালেই শেষ বাস চলে যেত। ওদিন খুব অসুবিধা হত।

    কেমব্রিজে মিল লেনে উনিভার্সিটি সেন্টারে (ওটাকে গ্র্যাড প্যাড বা গ্রাজুয়েট সেন্টার ও বলত) লাঞ্চ ডিনার খাবার ব্যবস্থা ছিল। বারও ছিল। পরে বন্ধ হয়ে যায়। লোকে নাকি মদ খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে তাই লোকসান হচ্ছে বলে উঠে যায়। এই সেন্টার সকাল আটটা থেকে রাত এগারোটা অব্দি খোলা থাকে রোজই। ইস্টার আর ক্রিসমাসের সময় শুধু বন্ধ। ওখানে লাঞ্চ ডিনার খেতাম।

    বার যদ্দিন চালু ছিল রাতে বারে বসতাম। সামান্য ড্রিংক করতাম। ওখানে বারম্যান ডেভিডের সঙ্গে আলাপ হয়। বেশ জ্ঞানী আর রসিক। ওখানে একাধিক বয়স্ক অধ্যাপকদের সঙ্গেও আলাপ হয়। পরে আমরা সপ্তাহে একাধিকবার লাঞ্চে মিলিত হতাম। প্রচুর আলোচনা হত। আমাদের এই গ্রূপকে বাইরের লোকেরা মজা করে wise men of গ্র্যাড প্যাড বলতেন।
    ওদের একজন কলিন তার বাড়িতে ডাকতেন। কেমব্রিজ থেকে দূরে বাস রুটে বার হিল বলে এক জায়গায়। উনি গাড়ি যাদের থাকত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদের ওর বাড়ি নিয়ে যাবার আসবার ব্যবস্থা করতেন।

    একবার দশ পনের মাইল দূরে St Ives এলাকায় Dolphin Hotel-এ সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করলাম।

    দুয়েকবার কেম্ব্রিজে ক্রিসমাস কাটিয়েছিলাম। বাইরে খাবার দাবার জুটত না। ম্যাকডোনাল পর্যন্ত বন্ধ! তাই নিক একবার ক্রিসমাস লাঞ্চে বাড়িতে ডেকে খাইয়েছিলেন।

    গ্র্যাড প্যাডের চারতলার কফি শপ থেকে বিস্তীর্ণ প্রান্তর সবুজ গাছ পালা ক্যাম নদী দেখা যেত। আমি সাত সকালে ফাঁকায় এখানে এসে বসতাম। তারপর স্টারবাক্সের মত ভিড়। গুচ্ছের ল্যাপটপ বাবু বিবিদের ভিড়ে এখানে জায়গা পাওয়া যায় না। বছরের বিভিন্ন সময়ে বরফ বৃষ্টি মেঘ রোদ অনুসারে ভিউ পালটাত।

    সকালবেলা ভাড়া বাড়ি বা হোটেল থেকে এখানে এসে রোদ বৃষ্টি তুষার পাত আর মানুষজন দেখতাম। ছবির মত বিশাল ক্যানভাস। মনটা ভাল হয়ে যেত। এখানে খবরের কাগজ পড়তাম। তারপর অফিসে গিয়ে পড়তে বসতাম। কয়েকবার ভিজিটের সময় ইনস্টিটিউটে অফিস জোটে নি। তখন সারাদিন এখানে কাটাতাম। এখানে কম্পিউটার রুম আছে। সেটাই অফিস বানিয়ে কাজ করতাম। আমি এদের এডুরোম ব্যবহার শিখলাম। মোবাইল ল্যাপটপে সেটিং করে রাখলাম। সারা কেমব্রিজে আসে পাশে কলেজ থাকলে মোবাইলে ওয়াইফাই সিগন্যাল পেতাম। বিদেশে সেমিনারে গেলে প্রচুর খরচের মোবাইল রোমিং ইন্টারনেট ব্যবহার না করে এই এডুরোম ব্যবহার করতাম। সম্প্রতি Amherst গিয়েও এটা ব্যবহার করে উপকৃত হয়েছিলাম।
    কেমব্রিজ অনেক সবুজ তেপান্তরের মাঠে ভর্তি। সব সিটি সেন্টার থেকে কয়েক পা দূরে। সেগুলোর মধ্য দিয়ে কোনাকুনি পায়ে চলার পাকা রাস্তা আর সাইকেল চলার ব্যবস্থা। তাই বাস না ধরেও দ্রুত অনেক জায়গায় যাওয়া যায়। শহরের সব সুবিধা নিয়ে গড়া একটা সবুজ গ্রাম বেশির ভাগ এলাকায়।

    অক্সফোর্ড বেশি শহুরে। ওখানে টেমস নদী অনেক দূরে আর সবুজ প্রান্তর অনেক দূরে। একটা কনফারেন্সে কেমব্রিজ থেকে অক্সফোর্ড গিয়ে দুদিন ছিলাম। তখন মনে হল তুলনা করলে কেমব্রিজ বেশি মনোরম।

    কেমব্রিজে বেশ কয়েকটা কলেজের মধ্য দিয়ে ক্যাম নদী প্রবাহিত। নৌ বিহারের ব্যবস্থা আছে। এরা বলে punting । ছাত্র ছাত্রীরা টুরিস্টদের ওই নৌকায় ঘোরায় আর কিছু রোজগার করে।
    এক সময় এই নৌ বিহারের খদ্দের ধরবার জন্য এরা সারা কেমব্রিজে পুরীর পান্ডার মত উৎপাত শুরু করেছিল। পরে কর্তৃপক্ষ এসব বন্ধ করে।

    কলেজগুলো আন্ডারগ্রাজুয়েটদের জন্য রেসিডেন্টিয়াল। টুরিস্ট সিজনে টাকা নিয়ে ঢুকতে দেয়। আমার ফ্যাকাল্টি কার্ড আছে তাই ফ্রি তে ঢুকতে পেতাম। বিকাল বেলা খুব খারাপ আবহাওয়া না থাকলে এই কলেজ ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াতাম। পিছনের গেট দিয়ে ঢুকে ভিতরের মনোরম পরিবেশ উপভোগ করে সামনের দিক দিয়ে বেরোতাম। কখনো উল্টোটা করতাম।

    কয়েকটা কলেজ বাইরের লোকদের লাঞ্চ বা চা কফি কিনে খেতে দিতে আপত্তি করত না। আমাদের বেশি দাম চার্জ করত। একাধিকবার এই কলেজ হলগুলোতে নানা সেমিনারে এসেছিলাম। কেমব্রিজ জার্নাল একবার সেমিনার সংগঠন করেছিল। তাতে আমি একটা পেপার পড়েছিলাম। ওখানে বিখ্যাত ইতালিয়ান অর্থনীতিবিদ Pasenetti কে দেখলাম।

    কেমব্রিজের অর্থনীতি বিভাগে যা সেমিনার হত তাতে যাবার উৎসাহ পাইনি তাই যাইনি। ওদের কিছু দলছুট heterodox গোষ্ঠী বাইরে সেমিনার করত এই সব কলেজ হলে। আমাদের প্রজেক্ট নিয়ে সেমিনার এই কলেজগুলোতে হত। অর্থনীতির একটা গ্রূপ term চলার সময় সপ্তাহে একদিন ভাল ওয়াইন খাইয়ে রাত আটটাতে সেমিনার শুরু করত। এদের প্রচুর ভিড় হত আর অনেক রাত অব্দি চলত। আমি কয়েকবার গেছিলাম। কুইন্স কলেজেও সেমিনার হত। যেতাম। আমি আরো একবার ওখানে সেমিনার দিয়েছিলাম। যারা এই ঐতিহ্যমণ্ডিত সেমিনার চালাতেন তারা অবসর নেবার পর নতুন কেউ দায়িত্ব নেয় নি তাই এই সেমিনার আর হয় না এখন।

    জাজ বিজনেস স্কুলে সেমিনার লেগেই থাকত। সব খবর রাখলে হয়ত রোজই ভাল মন্দ খাওয়া যেত। ওদের সঙ্গে আমাদের বিশেষ ভাল সম্পর্ক ছিল না। ওরা সেন্টার ফর বিজনেস স্টাডিজ কে ওদের বিল্ডিং থেকে উৎখাত করল। ওদের অন্য জায়গায় পুরোন সম্পত্তি ছিল সেখানে পাঠিয়ে দিল।

    অর্থনীতি বিভাগ থেকে উৎখাত heterodox কেমব্রিজ জার্নাল অফ ইকনমিক্সের ও অফিস আমাদের সঙ্গেই ছিল। নতুন জায়গায় স্পেস কম। তবে অনেকের ভালই লাগল। কারণ জাজ বিজনেস স্কুল একটা পরিত্যক্ত হাসপাতাল বিল্ডিং এ গড়ে উঠেছে। নিশুতি রাতে ভুতের উপদ্রব ছিল বলে অনেকে বলেছে। আমি অনেক রাত অব্দি একা কাজ করতাম। তখন কেউ কোথাও নেই অথচ কারা যেন হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে মনে হয়েছে। আমি কিছু দেখিনি আর বিশ্বাস করতাম না। একবার এক রাশিয়ান আমার অফিস শেয়ার করছিল। ও একই কথা বলেছিল। আমি ওকে ভাগাবার জন্য একটু রঙ চড়িয়ে আমার অভিজ্ঞতা বললাম। ও আর কোনদিন অফিসে আসেনি। বাড়িতে বসে কাজ করত।

    কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত অনেক কলেজ নিয়ে গঠিত। তবে সিস্টেম আলাদা।এখানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্লাস লেকচারের ব্যবস্থা করে। একজন অধ্যাপক ধরা যাক অর্থনীতির প্রথম বর্ষের একটা পেপার পড়ান। সব কলেজের প্রথম বর্ষের ছেলে মেয়েরা ওই ক্লাসে আসবে। তাদের সংখ্যা চারশ ও হতে পারে। মাইক থাকে। সিলেবাস অনুসারে তিনি যা পড়ান সেগুলোর জন্য কলেজগুলো তিন চারজনের গ্রূপ করে গ্রূপ পিছু একজন টিউটর নিয়োগ করে। তারা ভাল করে শিখিয়ে পড়িয়ে দেন। এই টিউটর সিনিয়র জুনিয়র যে কোন প্রফেসর হতে পারেন। লোক কম থাকলে adjunct প্রফেসর নিয়োগ করে প্রতিটি গ্রূপকে চোখা করে তোলা হয়। কলকাতায় কলেজগুলো পড়ায় আর অনেকেই টাকা খরচ করে টিউটোরিয়াল হোমে গিয়ে ভাল রেজাল্ট করার জন্য পড়ে। আমাদের গ্র্যাড প্যাড গ্রূপের নিক প্রাক্তন ডিন । তিনি এখন অনেক কলেজের সঙ্গে টিউটর হিসাবে যুক্ত। সাইকেলে করে কলেজে কলেজে পড়াতে যান। ওনার এই সব কলেজে মাসে কদিন অধ্যাপকদের সঙ্গে হাই টেবিলে বসে খাবার অধিকার আছে। এরকম অনেক প্রাক্তনি তাদের কলেজে বছরে কয়েকদিন খাবার অধিকার পান। কিন্তু নিক বেশির ভাগ সময় আমাদের সঙ্গে লাঞ্চ করতেন। যা লিখছি সব ওনার কাছ থেকে শোনা।

    যাদবপুর অর্থনীতি বিভাগের হেড থাকাকালীন আমি একবার কারা ঠিকমত ক্লাস করে নি- ষাট শতাংশ বা তার কম উপস্থিতি- তার তালিকা করে ডিনের আদেশমত টাঙিয়ে দিয়ে কেমব্রিজ রওনা হই। বেরোতে গিয়ে দেখি ডিন সাহেবকে ছাত্র ছাত্রীরা ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। সেই টাটকা স্মৃতি নিয়ে নিককে জিগ্যেস করলাম এখানে ছেলে মেয়েরা ক্লাস না করলে কি করা হয়। উনি যা বললেন শুনে আমি তাজ্জব। এখানে ওরা ক্লাস করে নিজের তাগিদে। দু চারজনের গ্রূপে পড়ানো হয় তাই জানাই যায় কে আসেনি। রেকর্ড রাখতে হয় না। যে আসবে না তার ক্ষতি। এত টাকা পয়সা দিয়ে পড়তে এসেছে। উনি বললেন তোমরা একশ শতাংশ না করে বলছ মোট ষাট শতাংশ ক্লাস করতে হবে! আমি জিগ্যেস করলাম বড় ক্লাসে গোলমাল হয় না? উনি তখন ওনার ডিন হিসাবে একটা অভিজ্ঞতা বললেন। একবার বড় ক্লাসে পিছনে কয়েকজন গোলমাল করছিল। অন্যরা ছবি তুলে ওনার কাছে পাঠায়। উনি কয়েকজন সিনিয়রকে দেখতে পাঠান। তারাও বাইরে থেকে সব দেখে। নিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ পুলিশ নিয়ে ক্লাসের পর ওদের ধরেন। ওরা ক্ষমা চায়। তাই ছেড়ে দেওয়া হয়।

    কেমব্রিজের সব পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে। গ্রাজুয়েট হলেই এম ফিল বা পি এইচ ডি করতে পারে। এইজন্য রাহুল গান্ধী কেমব্রিজ থেকে এম ফিল পড়েছেন অথচ এম এ পড়েন নি কোথাও। এক সময় চারিদিকে জাল ডিগ্রি বলে ওনার ডিগ্রি জাল বলে প্রচার হত।

    কেমব্রিজ MA পড়ায় না। তবে ট্র্যাডিশন অনুযায়ী ওরা কেমব্রিজ অক্সফোর্ড ছাড়া আর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি স্বীকার করে না। এখন অনেক ভাল বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে তাই সেখান থেকে প্রফেসর নিয়োগ করে তাদের MA তে ভর্তি করে। তারপর MA ডিগ্রি দেয়। এই ভাবে ওদের বিশ্ববিদ্যালযের ছাপ দিয়ে নেয়। সবই নিক সাহেবের কাছে শোনা।

    কেমব্রিজে যারা উঁচু ক্লাসে পড়ে মানে এম ফিল পি এইচ ডি করে তারা অনেকেই সস্তায় ঘর ভাড়া করে আসে পাশের গ্রামে থাকে। তারা কলেজে সাধারণত থাকে না। সাইকেল করে আসে। একটা সময় সাইকেল মিছিল শুরু হয়ে যায়। অনেক অভিনব সাইকেল দেখা যায়। মা আর তার বাচ্চা এক সঙ্গে প্যাডেল করছে। বা সামনে প্লাস্টিক ঢাকা বেবিসিটার পিছনে মা কিংবা বাবা সাইকেল চালাচ্ছে। এখানে অবশ্য সাইকেল ভয়ঙ্কর ভাবে চুরি হয়। কেউ কেউ ভাঁজ করা সাইকেল ব্যবহার করে অফিসে নিয়ে রাখে। এখানে সাইকেল চালাতে গিয়ে হেলমেট পরতে হয় ট্রাফিক আইন মানতে হয়। তবে অনেক সময়ই মানে না। জেব্রা ক্রসিংয়ে গায়ের উপর এসে পড়ে। অনেকে ফুটপাথের উপর দিয়ে চালায়। এদের উৎপাত নিয়ে অনেকেই সোচ্চার। পুলিশ মাঝে মাঝে ধর পাকর করে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন